ষড়যন্ত্র
রাজধানীর কাছেই গিজায় যেখানে পিরামিড তৈরির কাজ হচ্ছিলো সেখানে ধুলির মেঘের আস্তরণ বেশ জমাট বেঁধে গিয়েছিলো। বিচ্ছিন্ন মানুষের দল এক ঘূর্ণায়মান কুয়াশাচ্ছন্ন আশায় এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করছিলো যে ধুলির এই আস্তরণ থেকে পিরামিডের একটি সত্যিকার আকৃতি খুব শিগগির বের হয়ে আসবে। কিন্তু যখন সূর্যাস্ত হলো আর কাজে বিরতি পড়লো, ঘুর্ণায়মান ধূসর ধুলির স্তর নিচে নামতে লাগলো তখন পিরামিডের জন্য ঘের দেওয়া নির্দিষ্ট জায়গাটা দেখা গেলো আগের মতোই, অন্যসব পরিত্যাক্ত ভূখণ্ডের মতো।
যা হোক, প্রাসাদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সভায়ও এই একটা বিষয় শুধু সাঁতরে বেড়াচ্ছিলো।
রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠকে প্রধান স্থপতি ও পরিকল্পনাকারী এবং সভার প্রধান হিসেবে হেমিউনি ঘোষণা দিলো যে, খুব শিগির পিরামিডের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এমন কি সেটা বর্ষা আসার আগেই।
যা হোক, রাজধানীর আশপাশের বাসিন্দারা আশা করছিলো যে এমন কিছু একটা চিহ্নের যার মাধ্যমে তারা হঠাৎ করেই দেখতে পাবে ধুলোর সেই আস্তরণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে পিরামিডের কোনো বার্তাবাহী।
এক সন্ধ্যায় অস্পষ্ট এবং অনিশ্চিত একটা গুজব ছড়িয়ে পড়লো।
খুব সকালে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো চাপা উত্তেজনা নিয়ে দ্রুতগতিতে রাস্তা দিয়ে ছুটে গেলো। ধর্মীয় পিঠস্থানগুলো সারা সকাল বন্ধ থাকলো।
ঠিক দুপুরে সবার মুখে মুখে ভয়াবহ সেই গুজবটা রটে গেলো : ‘ষড়যন্ত্র! কোথাও ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
হঠাৎ করে সাথে সাথে পুরো শহর যেনো থমকে গেলো।
খবর ছড়িয়ে পড়লো যে, আক্কাদিও সুমেরিয়ান সৈন্যরা মেমসির দরজায় চলে এসেছে। কেউ কেউ বললো, নীলনদের দখল নিয়ে নিয়েছে আর মিশরকে নীলনদ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এ খবরগুলো তুমুল উত্তেজনা তৈরি করলো।
রাজধানীর মূল পথগুলো রাত নামার সাথে সাথেই নীরব পরিত্যাক্ত হয়ে গেলো। লোকেরা পেছনের রাস্তা দিয়ে একে অপরকে না চেনার ভান করে গোপনে ছোটাছুটি করে নিরাপদ জায়গায় চলে যাচ্ছিলো।
সুমেরিয়ান এমবাসির চিমনির উপর দিয়ে তামাক পাতার ধোঁয়া বের হচ্ছিলো। গোয়েন্দারা কোনো খবর পাওয়া মাত্রই খবর! খবর! বলে চিৎকার করে খরগোশের মতো পুলিশ ফাঁড়ির দিকে ছুটছে।
আগুনের ফুলকির মতো ষড়যন্ত্রের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো।
এ সবকিছুই হঠাৎ করে নিরীহ একটা বিষয় থেকে ঘটে গেলো। একটা কৃষ্ণ অগ্নিপাথর যার কথা প্রায় সকলেই ভুলে গিয়েছিলো সেটা নাকি হঠাৎ করে সাকারা মরুভূমিতে পাওয়া গিয়েছে। পূর্ণিমার রাতেও এই পাথর থেকে তীব্র আলোক রশ্মি বের হতে দেখা গেছে তাকে মনে করা হয় অমঙ্গলের প্রতীক। পরে বোঝা গেলো এ সব কিছু ছিলো পূর্ব পরিকল্পিত। এ পাথরের রশ্মি পিরামিডের ভেতর ঢুকাতে পারলে তার অমঙ্গল আর কেউ ঠেকাতে পারবে না। এই ঘটনার দায়ে প্রধান যাদুকর হোরেমহেবকে সন্দেহ করা হলো। সে যখন অপেক্ষা করছিলো কখন তাকে বন্দি করা হবে তখন উজির সাহাথোরকেও এই তালিকায় আনা হলো। এটা যখন শুরু হচ্ছিলো তখন কর্তৃপক্ষ দু জন পরামর্শক হোটেপ আর ডিডোমিসিকে কারাগারে পাঠালো।
যা হোক মন্ত্রি আনটেফকে গ্রেফতার করার পর এটা পরিষ্কার হয়ে গেলো যে, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং এ হলো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চলমান এক গভীর ষঢ়যন্ত্র।
পুরো দেশ ভয়ে কেঁপে উঠলো।
চিওপস নিজেও বিষয়টার তদন্ত নিয়ে খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। তিনি কঠোর নির্দেশ দিলেন যে, ষড়যন্ত্রের পুরো বিষয়টা নিয়ে আলোর মধ্যে অতি শিগগির নিয়ে আসা হয়।
গোয়েন্দা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লো। তারা পার্শ্ববর্তী শত্রু রাষ্ট্র সুমেরীতেও ঢুকে পড়লো তদন্তের জন্য। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা সেখানে বসে অনেক শলা পরামর্শ করছিলো।
বেশ দীর্ঘ সময়ের জন্য সকলের মনের ভেতর অন্যসব চিন্তা দূর হয়ে শুধু নতুন এ ষড়যন্ত্রের বিষয় নিয়েই মেতে থাকলো।
অনেকের ধারণা হলো আসলে এ সব ষড়যন্ত্র কিছু না, হয়তো এটা এক ধরনের ভুয়া কিছু কিংবা অন্য কোনো কৌশল।
কারণ চিওপস নিজে তখনো যুবক ছিলেন এবং যেটা তৈরি হতে যাচ্ছে সেই পিরামিড তৈরির খুব ইচ্ছেও তার ছিলো না।
‘তোমার কি মাথা ঠিক আছে? নাকি তুমি পাগল হওয়ার ভান করছো। পিরামিড তৈরির কোনো সিদ্ধান্তই যদি না থাকে তাহলে এই যে এতো বড় পাথর আনা হয়েছে এগুলোর কী হবে। আর এতো পরিশ্রম করে এতো টাকা খরচ করে পিরামিডের জন্য রাস্তা-ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে এগুলো কি সব বৃথা যাবে।’
‘হ্যা আমি মনে করি এ সব ভুয়া। শুধু তাই না, আমার বিশ্বাস তুমি অজ্ঞ লোকদের একজন। একটা বিষয় চিন্তা করো আর মনে করার চেষ্টা করো, রাজপ্রাসাদের ছাদ থেকে সবাই চিৎকার করে বলছিলো পিরামিড! পিরামিড!। কিন্তু কোথায় এখন সেই পিরামিড! কোনো বুড়ো অথচ পিরাডিমটা এখনো তৈরি হয় নি। এর কারণ অনেকেই এটা চায় না। তারা সবাই চিৎকার করে বলেছে পিরামিড! পিরামিড! কিন্তু তাদের মনের ভেতর ছিলো ষড়যন্ত্র।’
এ সমস্ত গুজব আর সাধারণ মানুষের কথা-বার্তা সম্রাটের সামনে যখন ভালোভাবে পৌঁছলো তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে, একটা ভাষণ দিবেন। আর অবশ্যই তিনি যেভাবেই হোক এ ষড়যন্ত্রের মূল উৎপাটন করে ছাড়বেন।
বিচারসভা আর অত্যাচার এবং জিজ্ঞাসাবাদের গোপন কুঠুরি সন্দেহ ভাজনদের দিয়ে ভরে গেলো। সব লোকজন নিদারুণ এক মানসিক যন্ত্রণা আর চাপা ভয়ের মধ্যে দিন কাটাতে লাগলো। হাজার হাজার মানুষ ধারণা করলো তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। অনেককে গ্রেফতার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নানা রকম কষ্ট দেওয়া হলো আবার অনেককে রাস্তা-ঘাট প্রাসাদ তৈরির শ্রমিকদের দলে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো।
কে জানে কতোদিন এ দুঃস্বপ্নের প্রহর চলতে থাকবে। কবে সম্রাট চিওপসের নিজের হস্তক্ষেপে এ যাতনা শেষ হবে।
‘তো পিরামিড কি আসলেই তৈরি হতে যাচ্ছে না, কি হবে না? এ সব কবে বন্ধ হবে?’ রাজপ্রাসাদ থেকে একটা বার্তা পৌঁছানো হলো হেমিউনির কাছে।
উত্তরে রাজ প্রাসাদে খবর গেলো, ‘কিন্তু মহামান্য এ জিজ্ঞাসাবাদ পিরামিড তৈরির অংশ।’
যদিও অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিলো পিরামিড তৈরির মূল কৌশল তখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয় নি।
বর্ষার দ্বিতীয় মাসে হেমিউনি পুনরায় দ্বিতীয়বারের মতো তার স্থাপত্যবিদ দলটিকে নিয়ে বসলো। পিরামিডের মডেলটি ঠিক সেখানেই ছিলো যেখানে তারা সর্বশেষ মিটিংএর সময় পিরামিডটাকে রেখেছিলো। এর উপরে ধুলোর আস্তরণ দেখে বোঝা যায় এর প্রতি সবার একটা অবজ্ঞা আছে। যদিও পিরামিডের প্রতিকৃতিটা দেখতে একটু কৃষ্ণকায় লাগছিলো কিন্তু তারপরেও এর থেকে একটা নরম দুর্বল আলো বের হয়ে আসছিলো।
হেমিউনি তার হাতের ছড়িটা পিরামিডের মডেলের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আনছিলো। তাকে খুব একটা আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ মনে হচ্ছিলো না। বাকি সবাইকেই খুব একটা সহজ মনে হচ্ছিলো না। মনে হয় যা ঘটে গেছে তা নিয়ে সবাই বেশ চিন্তিত। তাদের মন কেমন ভারাক্রান্ত।
তারা পিরামিড তৈরির নানা কলা-কৌশল, পদ্ধতি, এর বড় বড় পাথর স্থানান্তর, শবদেহ যে ঘরে রাখা হবে তার নির্মাণ শৈলীসহ নানা বিষয় আলোচনা করছিলো। কিন্তু তাদের মনের চোখে তখন অন্য আরেকটা দৃশ্য বার বার ভেসে উঠছিলো। আর সেটা হলো ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা। সেটা আর কতো বড় হবে। আর কাকে সেখানে অন্তর্ভূক্তি করা হবে।
হেমিউনি অনেক কিছু ভাবলো। আর তার সদস্য স্থাপত্যবিদরা কিছুক্ষণ তাদের মাথাগুলো বিজ্ঞের মতো নাড়া চাড়া করে আবার পিরামিড তৈরির পুরোনো কলা-কৌশলে মন দিলো।
তারা পিরামিডের কেন্দ্র বিন্দুতে পাথরের ওজন কী পরিমাণ হবে, পিরামিডের ভেতর ভুয়ো পথ কোথায় যাবে, পাথরগুলো কীভাবে স্থাপন করা হবে এ সমস্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলো ঠিকই কিন্তু তাদের সেই আলোচনা তেমন জমে উঠছিলো না। ষড়যন্ত্রের ধোঁয়াটে আতঙ্ক তাদের চিন্তা-ভাবনা আর মনোযোগকে বাধাগ্রস্ত করছিলো।
একটা সময় এসে তাদের মনে হলো তারা কখনো এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবে না।
মানসিক এ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় তৃতীয় সভায় হেমিউনি যখন তার সহকারী স্থাপত্যবিদ এবং অন্যান্য পরিকল্পনাকারীদের নিয়ে সভায় বসলেন তখন লক্ষ্য করলেন যে সেখানে সরকারি তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রধান এবং তার সহকারী এসে উপস্থিত হয়েছে।
হেমিউনি বুঝতে পারলেন কেন তার উপস্থিত স্থাপত্যবিদরা সহজ স্বাভাবিকভাবে সভায় কথা বলতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী এবং মিশরের প্রধান স্থাপত্যবিদ হেমিউনি ক্রোধে প্রায় উন্মত্ত হয়ে তদন্তকারী প্রধান কর্মকর্তার দিকে তাকিয়ে বেশ চিৎকার করে বললেন, ‘হেই তুমি এখানে কী চাও? এখানে তোমার কোনো কাজ নেই।’
তদন্ত কর্মকর্তার প্রধান তার কাঁধটাকে একটু ঝাঁকালো যেনো সে হেমিউনের প্রশ্নটা বুঝতে পারে নি। কোথায় যেনো গোলমাল হয়েছে।
কিন্তু হেমিউনি যখন পুনরায় চিৎকার করে বললো, ‘বের হয়ে যাও এই সভা থেকে।’ তখন সে তার সহকারীকে নিয়ে লেজগুটিয়ে বের হয়ে গেলো।
সমস্ত কিছু ছাপিয়ে পিরামিড নির্মাণের বিষয়টাই আবার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসলো। পিরামিড তৈরিতে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যে ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছিলো হেমিউনি প্রথমে সেটা টের পেয়ে কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলো। ফলে যখন হেমিউনিকে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করার বিষয়টা গুজব আকারে ছড়াতে শুরু করলো তখন পিরামিড তৈরির সাথে জড়িত সব স্থাপত্যবিদদের দুঃশ্চিন্তা অনেকাংশে কেটে গেলো।
সমাধি সৌধের কাজের গতি যখন বেশ তোড়জোড় করে আবার শুরু হলো এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল নির্মাণ কর্মকর্তারা আবার নিজেদের নিরাপদ ভেবে স্বস্তি পেতে শুরু করলো তখনই ঘটলো নতুন আরেক বিপত্তি। তাদের সুখ বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। নতুন আরেক গুজব আর ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া গেলো যা আগেরটার চেয়েও ভীতিপ্রদ এবং বিপদজনক।
এ ষড়যন্ত্রের কোপানলে স্বয়ং হেমিউনিকে ফেলা হলো। কেউ কেউ অভিযোগ তুললো যে পিরামিড নিয়ে যে ধীরগতির কাজ এবং অব্যবস্থাপনা তা হেমিউনির ষড়যন্ত্রেরই একটা অংশ।
আবার কেউ বললো পিরামিড নিয়ে হেমিউনির পুরো পরিকল্পনায়ই বড় ধরনের গলদ ছিলো। তাই এটা শুরু হওয়ার পর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
তৃতীয় আরেকটা গ্রুপ জোর দিয়ে বললো পিরামিড নির্মাণ নিয়ে সমস্ত পরিকল্পনাই ভুল ছিলো। পিরামিডের স্থান নির্বাচন, রাস্তা নির্মাণ, যেখান থেকে পিরামিডের জন্য পাথর সংগ্রহ করা হবে সেই পাথরের গিরিখাদ নির্বাচন সব কিছুই ভুল ছিলো। ফলে পিরামিড নির্মাণ কখনো শেষ হবে না।
কিন্তু সমস্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের পর এ সমস্ত অভিযোগকারীদের মুখ বন্ধ হয়ে গেলো। কারণ কোনোভাবেই পিরামিড নির্মাণের কাজ বন্ধ করা যাবে না। যেহেতু রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে ইতোমধ্যে এর নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে দেওয়া হয়েছে তাই নির্মাণ চালিয়েই যেতে হবে।
সমস্ত খবরই ফারাও চিওপসের কাছে সময়মতো পৌঁছে যেতো। কোনো কিছুই তার চোখের আড়ালে ছিলো না। ফলে ছিদ্রান্বেষীদের এ সমস্ত গুজব বাতাসে একটু ধুলো-ময়লা ছাড়া আর বেশি কিছু ছড়াতে পারলো না।
সমস্ত সংশয় অতিক্রম করার পর এক সকালে লোকমুখে এবং বাতাসে এই ফিসফিস ছড়িয়ে পড়লো যে পিরামিড নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধনের দিন ঘনিয়ে আসছে। তবে এর বেশি কিছু কেউ বলতে পারলো না। পরবর্তী সকালে ঢোলের বাদ্যের তালে তালে সবাই বুঝতে পারলো শুভ উদ্বোধনের অনুষ্ঠান চুড়ান্তভাবে হতে যাচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফারাও চিওপস সশরীরে উপস্থিত হলেন।
মন্ত্রিসভার নতুন কিছু মুখ প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে হাজির হলো। প্রধান পুরোহিত রিহোটোপ দলের সামনে হেঁটে আসছিলো। বৈদেশিক রাষ্ট্রদূতরা অন্য আরেকটা সারিতে অপেক্ষা করছিলো।
অতিথিদের মধ্যে আমন্ত্রিত একজন বয়স্ক অতিথি হঠাৎ করে বললো, ‘পিরামিড? তুমি বলতে চাচ্ছো এটা এখনো শেষ হয় নি?”
এক ধরনের দুঃখ আর বেদনা নিয়ে বুড়ো অতিথির এ মন্তব্য সবাই শুনলো। সবাই আশা করছিলো যে পিরামিডটা পুরোপুরি নির্মিত না হয়ে ইতোমধ্যে যদি অর্ধেকও তৈরি হয়ে যেতো তাহলে ভালো হতো।
কিন্তু উপস্থিত সবাই আরো বিস্মিত হলো যখন মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেওয়া হলো যে, পিরামিডের নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা তাদের চোখের সামনেই হতে যাচ্ছে এবং সেটা হবে আগের সব পিরামিড থেকে আকার ও আকৃতিতে দ্বিগুণ।