দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – ১০

অধ্যায় ১০

সন্ধ্যা ছ-টার একটু পরে সবুজ রঙের একটি মার্সিডিজ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংলটে ঢুকে গেলো। কুসানাগিকে সকালেই জানানো হয়েছে, এটা কুনিয়াকি কুড়োর গাড়ি। রাস্তার এপাশের কফিশপের সিটটা থেকে উঠে দাঁড়াল সে, ওয়ালেট থেকে দু’কাপ কফির দাম বের করে টেবিলে রেখে দিলো। দ্বিতীয় কাপটা অবশ্য এখনও প্রায় ভর্তিই আছে।

রাস্তা পার হয়ে অ্যাপার্টমেন্টটার পার্কিংলটে চলে এলো কুসানাগি। বিল্ডিঙটাতে প্রবেশের দুটো পথ, একটা বেজমেন্টে আরেকটা নিচতলায়। দুটোই স্বয়ংক্রিয় লক সিস্টেম দিয়ে নিয়ন্ত্রিত। যারা বেজমেন্টে গাড়ি পার্ক করে তারা সচরাচর এখানকার প্রবেশপথটা দিয়েই ভেতরে যায়। কুডো তার অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকে পড়ার আগেই কুসানাগি তার সাথে কথা বলতে চায়। না-হলে আবার ইন্টারকমে ফোন দিতে হবে, ততক্ষণে নিজেকে সামলে নেবে কুডো। সে সুযোগটা তাকে দিতে চায় না কুসানাগি।

প্রবেশপথটার কাছে গিয়ে দেখলো সে-ই আগে পৌঁছে গেছে সেখানে। দেয়ালে হেলান দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর কুডোর দেখা মিলল। একটা স্যুট পরে আছেন ভদ্রলোক, হাতে দামি ব্রিফকেস। তাকে পাশ কাটিয়েই চলে গেলেন তিনি।

কুডো তার পকেট থেকে চাবি করে দরজায় ঢোকাতে যাবেন এ সময় পেছন থেকে ডাক দিলো কুসানাগি, “মি. কুডো?”

চমকে ঘুরে তাকালেন। আপাদমস্তক ডিটেক্টিভের ওপর নজর বোলালেন একবার, এরপর বললেন, “জি?”

কুসানাগি ব্যাজটা বের করে দেখালো তাকে, “এভাবে বিরক্ত করার জন্যে দুঃখিত। কিন্তু কিছু প্রশ্ন ছিল আপনার কাছে।“

“পুলিশ…মানে, আপনি একজন ডিটেক্টিভ?” কুডো চোখ সরু করে বললেন।

“জি, আমি আসলে মিস ইয়াসুকো হানাওকার ব্যাপারে কথা বলতে চাচ্ছিলাম।”

“কুডোর প্রতিক্রিয়া দেখার জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলো কুসানাগি। কেসটার ব্যাপারে নিশ্চিত জানেন তিনি। যদি চমকে ওঠেন তাহলে বোঝা যাবে কোন সমস্যা আছে। ভুরু কুঁচকে আস্তে করে মাথা নাড়লেন কুডো, “ঠিক আছে। আমার অ্যাপার্টমেন্টে যাবেন? নাকি কোন ক্যাফেতে?”

“আপনার অ্যাপার্টমেন্টে কোন আপত্তি নেই আমার।”

“আচ্ছা, কিন্তু ওদিকটা একটু অগোছালো… “

আসলে যতটা না অগোছালো তার চেয়ে বেশি নিঃসঙ্গ মনে হলো অ্যাপার্টমেন্টটাকে। ফার্নিচার খুবই কম, দুটো দামি চেয়ার চোখে পড়লো তার। একটাতে তাকে বসার ইঙ্গিত করলেন কুডো।

“চা কফি কিছু লাগবে আপনার?” স্যুটটা না খুলেই জিজ্ঞেস করলেন তিনি।

“না, ধন্যবাদ, বেশিক্ষণ থাকবো না আমি।”

“ঠিক আছে,” কুডো বললেন ঠিকই, কিন্তু তা সত্ত্বেও ভেতরে গিয়ে দুটো গ্লাস আর এক বোতল আইস-টি নিয়ে এলেন।

“আপনার পরিবারের কেউ নেই?” কুসানাগি হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করলো।

“আমার স্ত্রী গত বছর মারা গেছেন। একটা ছেলে আছে আমাদের, কিন্তু সে এখন তার দাদা-দাদির সাথে থাকছে,” কুডো ব্যাখ্যা করলেন।

“আচ্ছা। তার মানে একাই থাকেন আপনি?”

“জি,” কুডো নরম স্বরে বললেন। গ্লাসদুটোতে আইস টি ঢেলে একটা কুসানাগির সামনে রাখলেন তিনি। “আপনি…আপনি কি মি. টোগাশির ব্যাপারে কথা বলতে এসেছেন?”

কুসানাগি হাত বাড়িয়ে চায়ের গ্লাসটা নিতে গিয়েও থেমে গেলো। কুডো যদি সরাসরি কাজের কথায় আসতে চান তাহলে এসবে সময় নষ্ট করার কোন মানে হয় না।

“জি, আপনি বোধহয় জানেন, ইয়াসুকো হানাওকার প্রাক্তন স্বামী খুন হয়েছেন।”

“তার সাথে ইয়াসুকোর কোন সম্পর্ক নেই।”

“তাই নাকি?”

“অবশ্যই। বেশ কিছুদিন আগেই ওদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এখন তাকে খুন কেন করতে যাবে সে?”

“আসলে, আপনার সাথে একমত হতে পারলে খুশিই হতাম আমি।”

“তাহলে হচ্ছেন না কেন?”

“দেখুন, ডিভোর্স হওয়ার পরেই যে সব দম্পতি দেখা-সাক্ষাত বন্ধ করে দেয় এমনটা কিন্তু সব সময় হয় না। অনেক সময় দু-জনরে একজন বিচ্ছেদটা মেনে নিতে বেশ কষ্ট পায়। সঙ্গির পিছু অত সহজে ছাড়তে চায় না। এমনকি ডিভোর্স হয়ে যাবার পরেও।

“যাই হোক, আমাকে সে বলেছে টোগাশির সাথে তার অনেক দিন দেখা হয়নি,” কুডো বললেন।

“আপনি কি তার সাথে খুনের ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করেছেন?”

“হ্যা, করেছি। ইয়ে মানে, সেজন্যেই আসলে তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম আমি।”

ইয়াসুকো হানাওকার জবানবন্দির সাথে মিলে যাচ্ছে কথাটা।

“আচ্ছা, ঘটনার আগেও কি মি. হানাওকাকে নিয়ে ভাবতেন আপনি?”

““ভাবতেন’ বলতে ঠিক কি বোঝাতে চাচ্ছেন? যেহেতু আপনি আমার অ্যাপার্টমেন্ট পর্যন্ত চলে এসেছেন সেহেতু ধরে নিচ্ছি তার সাথে আমার সম্পর্কটা কেমন সেটাও ভালোমতই জানেন। ইয়াসুকোর আগের ক্লাবের একজন নিয়মিত কাস্টমার ছিলাম আমি। তার স্বামীর সাথেও দেখা হয়েছিল আমার, যদিও একটা দুর্ঘটনা ছিল ওটা। টিভিতে তার খুন হবার খবর খবরটা দেখে ইয়াসুকোকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি, এজন্যেই তার একটু খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম।”

“আমি শুনেছি, ঐ ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত ছিল আপনার। কিন্তু শুধু এই কারণেই তার সাথে দেখা করতে গেলেন, এটা মেনে নিতে একটু কষ্ট হচ্ছে বৈকি। আপনি তো বড়সড় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত, তাই না?” এরকম চাঁছাছোলাভাবে কথা বলতে কুসানাগির খুব একটা ভালো লাগে না, তারপরও কাজের কারণে বলতে হয়।

কিন্তু এভাবে কথা বলাটা কাজে দিলো। কুডো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি ভেবেছিলাম আপনি ইয়াসুকো হানাওকার সম্পর্কে কথা বলতে এসেছেন। কিন্তু এখন দেখছি আপনার সব প্রশ্নই আমাকে নিয়ে। আমাকে কি সন্দেহ করছেন আপনারা?”

কুসানাগি হেসে হাত নেড়ে বলল, “আরে, না না। এভাবে আপনাকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার জন্যে দুঃখিত। কিন্তু আপনার সম্পর্কে একটু কৌতুহল ছিল আমার, হাজার হলেও মিস হানাওকার সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ আপনি।“

ডিটেক্টিভ বেশ নরম সুরেই কথাগুলো বলল। কিন্তু কুডোর দৃষ্টি নরম হলো না। একবার মাথা নাড়লেন শুধু।

“ঠিক আছে, আপনি আরো কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই বলছি। যতটা সম্ভব খোলাখুলি করেই বলি, ইয়াসুকোকে ভালোবাসি আমি। খুনের ব্যাপারটা শোনার পরে আমার মনে হয়েছে, তার সাথে ঘনিষ্ঠ হবার সঠিক সময় এটাই। এবার সন্তুষ্ট হয়েছেন তো?”

একটা শুকনো হাসি দিলো কুসানাগি। এরপর বলল, “এভাবে বলবেন না দয়া করে।”

“কিন্তু এটাই তো জানতে চেয়েছিলেন আপনি, তাই না?”

“আসলে আমরা জানার চেষ্টা করছি কার কার সাথে মিস হানাওকার যোগাযোগ আছে, এটুকুই।”

“কিন্তু এটাই তো বুঝতে পারছি না আমি। পুলিশ তাকে সন্দেহ করছে কেন?” কুডো মাথা নেড়ে বললেন।

“টোগাশি খুন হবার আগে তার খোঁজ করছিল, তাদের দেখা হবার সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না,” কুসানাগি সাবধানে বলল কথাগুলো। সে আশা করছে এতে হিতে বিপরীত হবে না।

“তার মানে, আপনারা ধরেই নিচ্ছেন সে খুনটা করেছে। ব্যাপারটা পুলিশের জন্যে একটু বেশিই সাদামাটা হয়ে গেলো না?” কুডো নাক দিয়ে একটা আওয়াজ করে বললেন।

“দুঃখিত, আমরা আসলে অতটা জটিল করে ভাবি না সবকিছু। আমাদের কাছে অন্য সন্দেহভাজনের নামও আছে, কিন্তু মিস হানাওকার নাম সন্দেহের তালিকা থেকে এ মুহূর্তে বাদ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি যদি খুনের কেসটা সমাধানে কোন কাজে না-ও আসেন, তার আশেপাশের কেউ কাজে আসতে পারেন।“

“তার আশেপাশে কেউ?” কুডো ভুরু উঁচু করে জিজ্ঞেস করলেন, এরপর এমন ভঙ্গিতে চেয়ারে এলিয়ে পড়লেন যেন কিছু একটা বুঝতে পেরেছেন তিনি। “এটাই তাহলে,” বিড়বিড় করে বললেন।

“এটাই তাহলে মানে কি?”

“আপনাদের ধারণা কাউকে দিয়ে খুনটা করিয়েছে সে, তাই না? এজন্যেই এখানে এসেছেন আপনি। আপনার ধারণা আমিই সেই খুনি।”

“আমরা কিন্তু কোন খুনির কথা বলিনি, তবুও…” ইচ্ছে করেই বাক্যটা শেষ করলো না সে। কুডোর মনে যদি আরো কিছু থেকে থাকে, তাহলে সেটা শুনতে চায় সে।

“আপনারা যদি এখন তার সহযোগির খোঁজেই থাকেন তবে বলবো, আমি বাদেও আরো অনেকের সাথে কথা বলতে হবে আপনাদের। হোস্টেস থাকাকালীন অনেকেই ভক্ত ছিল তার। আর হবেই না কেন? ইয়াসুকো দেখতেও তো দারুণ সুন্দরি। আমি তো শুনেছি ইয়ানোজাওয়াদের ওখানে শুধু তাকে দেখতেই অনেক কাস্টমার আসে।”

“আপনার কাছে যদি তাদের নাম ঠিকানা কিছু থেকে থাকে তাহলে সেগুলো পেলে উপকারই হবে আমার।”

“দুঃখিত, কিন্তু সে ব্যাপারে কোন সাহায্য করতে পারবো না আপনাকে। আর নির্দোষ কাউকে ফাঁসানোর কোন শখও নেই আমার,” কুডো হাত দিয়ে মাছি তাড়ানোর ভঙ্গি করে বললেন। “আমি এতটাও বোকা নই যে, সুন্দরি কেউ এসে কাউকে খুন করার কথা বললেই লাফ দিয়ে রাজি হয়ে যাবো। ইয়াসুকো ওরকম মেয়েও নয়। এখানে এসে আপনার কোন লাভই হলো না… কুসানাগি… না কী যেন বলেছিলেন আপনার নাম? যাই হোক, অন্য কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন ফল হবে বলে মনে হয় না,” বলে উঠে দাঁড়ালেন কুডো। ইঙ্গিতটা পরিস্কার, আর কথা বলতে চাইছেন না তিনি।

কুসানাগিও উঠে দাঁড়াল। নোটবুক আর কলমটা হাতে ধরে রেখেছে অবশ্য এখনও। “মার্চের দশ তারিখে কি অফিসেই ছিলেন আপনি?”

কুডোর চোখজোড়া বড় বড় হয়ে গেলো। দেখে মনে হচ্ছে বিশ্বাস করতে পারছেন না, তাকেই প্রশ্নটা করা হয়েছে, “আমার অ্যালিবাই চাচ্ছেন এখন?”

“জি,” কুসানাগি সরাসরি বলল। কথা ঘোরানোর দরকার নেই আর, যা বোঝার বুঝেই গেছেন কুডো।

“একটু অপেক্ষা করুন তাহলে,” এই বলে ব্রিফকেস থেকে একটা মোটা নোটবুক বের করলেন কুডো, কিছুক্ষণ পাতা উল্টিয়ে বললেন, “ক্যালেন্ডারে ঐদিন কোন বিশেষ কাজের কথা লেখা নেই, তার মানে অফিসেই ছিলাম আমি। ছয়টার দিকে অফিস থেকে বের হয়েছিলাম বোধহয়। আমার কথা বিশ্বাস না হলে কর্মচারিদের কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।“

“আর কাজ শেষে?”

“বললামই তো, লিখে রাখিনি কিছু। তার মানে সেদিন বিশেষ কিছু করিনি। বাসায় এসে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আপনার জন্যে তো অসুবিধা হয়ে গেলো মনে হয়, একা একা থাকি আমি। কাউকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হতে পারবেন বলে মনে হয় না।”

“সেদিনকার ব্যাপারে আরেকটু ভালোমত মনে করার চেষ্টা করে দেখবেন কি? বুঝতেই পারছেন সন্দেহভাজনের তালিকাটা যত ছোট হবে ততই সুবিধা।”

কুডোকে রীতিমত অধৈর্য দেখাচ্ছে এখন। তবুও ক্যালেন্ডারটা আবার খুললেন তিনি। “দশ তারিখ? ওহ্…” বিড়বিড় করে কী যেন বললেন।

“কিছু ঘটেছিল?”

“হ্যা, এক ক্লায়েন্টের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম কাজ শেষে। সন্ধ্যার দিকে…হ্যা, আমাকে ইয়াকিটোরি বারে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।”

“কখন সেটা মনে আছে?”

“তা ঠিক বলতে পারবো না। কিন্তু আমরা নয়টা পর্যন্ত সেখানে ছিলাম, এরপরে বাসায় চলে আসি। এই যে ক্লায়েন্টের ঠিকানা,” এই বলে নোটবুক থেকে একটা কার্ড বের করে দেখালেন তিনি। সেখানে একটা ডিজাইনার অফিসের নাম লেখা।

“ধন্যবাদ,” কার্ডটা না নিয়েই বলল কুসানাগি। “আমার লাগবে না ওটা,” এরপর নোটবুক আর কলম পকেটে ঢুকিয়ে রেখে দরজার দিকে রওনা দিলো সে।

জুতো পরছিল সে, এমন সময় পেছন থেকে কুডো ডাক দিলেন তাকে। “আচ্ছা অফিসার, কত দিন তার ওপর নজর রাখবেন আপনারা?” তার দিকে তাকালো কুসানাগি।

“আমার কথা তো ওভাবেই জেনেছেন আপনারা, তাই না? ওর ওপর নজর রাখার মাধ্যমে? আর আমার পিছু নিয়ে এখান পর্যন্ত এসেছেন?”

“ধরে ফেলেছেন,” কুসানাগি মাথা চুলকে বলল।

“তাহলে কি দয়া করে আমাকে বলবেন কতদিন তার পিছু নেবেন আপনারা?”

হাসবে চিন্তা করেও সেটা বাতিল করে দিলো কুসানাগি। গম্ভীর স্বরে বলল, “যতদিন প্রয়োজন মনে হবে, স্যার।”

কুডোকে দেখে মনে হলো আরো কিছু বলার আছে তার কিন্তু তাকে সে সুযোগ না দিয়ে অ্যাপার্টমেন্টটা থেকে বের হয়ে গেলো কুসানাগি।

রাস্তায় বের হয়ে একটা ট্যাক্সি ডাকলো সে। “ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটি।” ট্যাক্সি ড্রাইভার মাথা নেড়ে সায় জানালে পেছনের সিটে উঠে পড়লো। নোটবুকটা বের করে কুডোর সাথে তার কথোপকথনের অংশটার ওপর নজর বোলাল এবার। তার অ্যালিবাইটা খতিয়ে দেখতে হবে, কিন্তু তার আগেই একটা উপসংহারে পৌছে গেছে-লোকটা নির্দোষ। সত্যি কথাই বলেছে তাকে। আসলেও ইয়াসুকোকে অনেক ভালোবাসেন ভদ্রলোক। কিন্তু একথাও সত্য, কুডো বাদেও ইয়াসুকোকে সাহায্য করার মত লোকের অভাব হবে না।

ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটির সামনের দরজাটা বন্ধ। এখানে সেখানে কিছু আলো জ্বললেও অন্ধকারকে পুরোপুরি দূর করতে পারেনি সেটা। আর রাতের বেলা সুনশান ক্যাম্পাসে কেমন যেন গা শিউরানো একটা ভাব আছে। কুসানাগি সরাসরি সিকিউরিটি অফিসে গিয়ে বলল “ তেরো নম্বর ল্যাবে প্রফেসর ইউকাওয়ার সাথে দেখা করার কথা আমার,” যদিও আসার আগে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে আসেনি সে।

বিজ্ঞান অনুষদের হলরুমগুলো একদম চুপচাপ। তবে কিছু লোকজন যে আছে তখনও সেটা দরজার নিচ দিয়ে বের হওয়া আলো দেখে বোঝা যাচ্ছে। রিসার্চ আর থিসিস প্রজেক্টে কাজ করছে শিক্ষার্থিরা। কুসানাগির মনে পড়লো একবার ইউকাওয়া বলেছিল, সে-ও মাঝেমাঝে ল্যাবে রাত কাটায়।

কুডোর সাথে দেখা করার আগেই সে এখানে আসবে বলে ঠিক করে রেখেছিল। লোকটার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ইউনিভার্সিটিটা বেশি দূরে নয়। আর ইউকাওয়ার কাছে তার কিছু প্রশ্নও আছে।

বেন্টেন-টেইয়ে সে গিয়েছিল কেন? আর ঐ ইশিগামি লোকটার সাথে তার কি কাজ? সে যদি কেসটা সম্পর্কে নতুন কিছু জেনে থাকে তাহলে কুসানাগিও সেটা শুনতে চায়। নাকি ইউকাওয়া তার পুরনো বন্ধুর সাথে আড্ডা দিতেই গিয়েছিল, পথে প্রাইম সাসপেক্টের কর্মস্থলে যাওয়াটা একেবারেই কাকতালিয়?

কুসানাগির মনে হয় না কোন উদ্দেশ্য ছাড়া ইউকাওয়া সেখানে গিয়েছিল। আর এর আগে কুসানাগির কোন কেসের সাথে সে সরাসরি এভাবে জড়িয়ে যায়নি।

তেরো নম্বর ল্যাবের বাইরে একটা চার্ট ঝোলানো থাকে যেখানে লেখা থাকে, কে ভেতরে আছে আর কে নেই। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ইউকাওয়া এখন বাইরে। কুসানাগি মুখ দিয়ে একটা শব্দ করলো। তার মানে কাজ শেষে এখান থেকে সোজাসুজি বাসায় চলে গেছে।

তবুও ল্যাবের দরজাটায় একবার নক করলো সে। চার্টের লেখা অনুযায়ি ভেতরে দু-জন শিক্ষার্থি থাকার কথা এখন।

“ভেতরে আসুন,” মোটা গলায় কেউ একজন বলল। কুসানাগি দরজাটা খুলল। চশমা চোখের এক শিক্ষার্থি ল্যাবের পেছন দিক থেকে বেরিয়ে এলো। তাকে আগেও দেখেছে কুসানাগি।

“প্রফেসর ইউকাওয়া কি বাসায় চলে গেছে?”

শিক্ষার্থি মাথা নেড়ে বলল, “এই তো কিছুক্ষণ আগেই…তার ফোন নম্বর লাগবে?”

“না, আছে আমার কাছে। অত জরুরি কিছু না। এমনি একটু দেখা করতে এসেছিলাম আর কি।”

“ওহ্, আচ্ছা,” ছেলেটা বলল। কুসানাগিকে আগেও এখানে দেখেছে সে বেশ কয়েকবার।

“আমি জানি মাঝে মাঝে অনেক দেরি করে বাসায় ফেরে সে। তাই ভাবলাম ল্যাবেই পাবো হয়তো।”

“সাধারণত তাই করেন, কিন্তু গত দু-তিন দিন ধরেই বেশ আগেভাগে চলে যাচ্ছেন তিনি। আমার মনে হয় আজ কোথাও যাওয়ার কথা তার।“

“তুমি জানো কোথায়?” মনে হয় সেই গণিত শিক্ষকের বাসায়, আন্দাজ করলো কুসানাগি।

“আমি নিশ্চিত নই, তবে শিনোজাকির ব্যাপারে কিছু বলছিলেন তিনি।”

কুসানাগি অবাক হয়ে গেলো, এই জায়গার নাম শুনতে হবে সেটা কল্পনাও করেনি সে, “শিনোজাকি!”

“হ্যা। আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, এখান থেকে শিনোজাকি স্টেশনে যাবার সবচেয়ে কাছের রাস্তা কোনটা।”

“কিন্তু সে তোমাকে বলেনি, কেন সেখানে যাচ্ছে?”

“না, আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি কিছু বলেননি।”

কুসানাগি ছেলেটাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বের হয়ে আসল। সে জানে কিছু একটা গোলমাল আছে, কিন্তু কি সেটা বুঝতে পারছে না। খুনের ঘটনাস্থল থেকে সবচেয়ে কাছের স্টেশন হচ্ছে শিনোজাকি। ইউকাওয়ার সেখানে কি কাজ?

ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়ে মোবাইলফোনটা বের করলো সে। ইউকাওয়াকে কল দিতে গিয়েও ইতস্ততবোধ করে শেষমেষ ফোনটা আবার পকেটে ঢুকিয়ে রাখলো। এখন ডিটেক্টিভ গ্যালেলিওকে কিছু জিজ্ঞেস করা যাবে না। কুসানাগিকে না জানিয়ে কেসটার সাথে তার এভাবে জড়িয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে কিছু একটা বের করতে পেরেছে সে।

আর জিজ্ঞেস করলেও যে বলবে সে সম্ভাবনাও কম। ‘আমি যা-ই করি না কেন, তাতে তোমার কি?’—এটাই বলবে সে।

X

একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসল ইশিগামির ভেতর থেকে। মেক-আপ পরীক্ষার খাতাগুলো দেখছে সে এখন। ভয়ঙ্কর অবস্থা। এবার সে ইচ্ছে করে আগের বারের চেয়ে সোজা প্রশ্ন করেছিল যাতে সবাই পাশ করতে পারে, কিন্তু একটা খাতাতেও সঠিকভাবে কোন সমাধান করা হয়নি। শিক্ষার্থিরা একদমই পড়াশোনা করছে না। তারা জানে, পরীক্ষায় যতই খারাপ করুক না কেন, স্কুল থেকে তাদের পাশ করিয়ে দেয়া হবে। আর বোর্ডও কাউকে আটকে রাখতে চায় না।

তাহলে গণিতের পরীক্ষা নেয়া বন্ধ করে দেয় না কেন তারা? – ইশিগামি ভাবলো। খুব কম ছেলেমেয়েই গণিত ঠিকমত বোঝে এখানে। এদের শিখিয়েও কোন লাভ নেই। কারণ গণিতকে গোণায়ই ধরে না তারা।

খাতা দেখা শেষ করে ঘড়ির দিকে তাকালো। আটটা বাজছে।

জুডো ক্লাবের তালাটা ঠিকমত লাগানো হয়েছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে স্কুল থেকে বের হয়ে গেলো সে। মোড়ে ট্রাফিক লাইটের নিচে দাঁড়িয়ে আছে, এমন সময় এক লোক এগিয়ে আসলো তার দিকে।

“বাসায় যাচ্ছেন নাকি?” লোকটা হেসে জিজ্ঞেস করলো। “অ্যাপার্টমেন্টে যখন পেলাম না তখনই বুঝেছিলাম যে এখানে আছেন আপনি।”

লোকটাকে চিনতে অসুবিধে হলো না ইশিগামির। সিনিয়র হোমিসাইড ডিটেক্টিভ।

“দুঃখিত, আপনি…?”

“আহ্, ভুলে গেছেন দেখছি।”

লোকটা আইডি কার্ড বের করার জন্যে কোটের পকেটে হাত ঢোকালে ইশিগামি হাত নেড়ে নিষেধ করলো তাকে, “না, মনে পড়েছে, আপনি ডিটেক্টিভ কুসানাগি।”

সবুজ রঙের লাইটটা জ্বললে ইশিগামি হাটতে শুরু করলো। কুসানাগি ও আসতে শুরু করলো তার সাথে।

এ এখানে কি করছে? ইউকাওয়া যে প্রস্তাবটা নিয়ে এসেছিল দু-দিন আগে সেটার ব্যাপারে কথা বলতে এসেছে? কিন্তু সে তো না করে দিয়েছিল।

“আপনি কি মানাবু ইউকাওয়া নামে কাউকে চেনেন?” কুসানাগি জিজ্ঞেস করলো।

“হ্যা, চিনি। আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল ও, বলল, আপনি নাকি ওকে আমার কথা বলেছিলেন।”

“আসলে আমিই বলেছিলাম। তাতে যদি আপনার কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে দুঃখিত।”

“কোন সমস্যা হয়নি। ওর সাথে দেখা করতে পেরে ভালোই লেগেছে আমার।”

“আপনারা কি নিয়ে কথা বললেন? আশা করি কিছু মনে করছেন না এভাবে জিজ্ঞেস করলাম দেখে।”

“বেশিরভাগ সময়ই পুরনো দিনগুলো নিয়েই কথা বলেছি আমরা। প্রথম দিন তো এসব নিয়েই আড্ডা দেই।”

“প্রথম দিন?” একপাশের ভুরু উঁচু করে জিজ্ঞেস করলো কুসানাগি। “তার মানে আবার এসেছিল সে?”

“দু-বার দেখা করতে এসেছে। দ্বিতীয়বার আমাকে বলল, আপনি নাকি পাঠিয়েছেন তাকে।“

“আমি পাঠিয়েছি?” কুসানাগি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো। “ঠিক কি বলেছে ও, বলুন তো।“

“ইউকাওয়া বলল, আপনি নাকি তদন্তের ব্যাপারে আমার সাহায্য চাইছেন, আর আপনার হয়ে ও এসেছিল সেটা জানাতে।”

“ওহ্, তদন্তের ব্যাপারে সাহায্যের জন্যে,” কুসানাগি হাটতে হাটতে বলল।

ডিটেক্টিভের গলার অনিশ্চয়তাটুকু ধরতে ইশিগামির বেগ পেতে হলো না। ইউকাওয়াকে পাঠায়নি সে তাহলে।

কুসানাগি বোকার মত হেসে বলল, “আসলে ওর সাথে অনেক কিছু নিয়ে কথা বলি তো তাই মাঝে মাঝে নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই। তা সে কোন ব্যাপারে সাহায্যের কথা বলছিল?”

ইশিগামি বুঝতে পারলো না ইয়াসুকোর নামটা বলবে কিনা। অবশ্য সে যা বলবে তার সাথে নিশ্চয়ই পরে ইউকাওয়ার কথা মিলিয়ে দেখা হবে। বোকা সাজলে চলবে না এখন।

ইশিগামি ইউকাওয়ার অনুরোধের ব্যাপারে সব খুলে বলল।

কুসানাগির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো, “এটা করতে বলেছে সে আপনাকে?” গলা শুনে বোঝাই যাচ্ছে সে নিজেই বিস্মিত হয়ে গেছে। কিন্তু একটু পরেই আবার বলল, “আমিই বলেছিলাম বোধহয় তাকে একথা, হ্যা, এখন মনে পড়ছে। আপনাকে আগে জানাতে এসেছিল কারণ তাহলে আপনার সুবিধা হবে।“

ইশিগামির কাছে মনে হলো কুসানাগি বানিয়ে বানিয়ে বলছে শেষের কথাগুলো। তার মানে ইউকাওয়া স্বেচ্ছায় এসেছিল তার সাথে কেসটার ব্যাপারে কথা বলতে। কি চলছে ওর মনে?

ইশিগামি থেমে কুসানাগির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আপনিও কি আজকে আমাকে সে কথাই জিজ্ঞেস করতে এসেছেন? নাকি অন্য কোন ব্যাপার?”

“না, আমি কেবলই বলতে যাচ্ছিলাম আপনাকে সেটা,” এই বলে পকেট থেকে একটা ছবি বের করলো কুসানাগি। “এই লোকটাকে কি আগে কোথাও দেখেছেন? ছবির কোয়ালিটি অবশ্য অত ভালো না। বেশ দূর থেকে নেয়া হয়েছে এটা।”

সেদিকে দিকে তাকিয়ে একবার ঢোক গিলল ইশিগামি। ছবির লোকটার কথাই তার মাথায় গত কয়েক দিন যাবত ঘুরছে। লোকটার নাম জানে না সে, শুধু এটুকু জানে এ ব্যাটা ইয়াসুকোর খুব ঘনিষ্ঠ।

“মি. ইশিগামি?”

ইশিগামি ঠিক বুঝতে পারলো না কী বলবে। সে না করে দিতে পারে কিন্তু তাতে লোকটার আসল পরিচয় জানা যাবে না।

“দেখে চেনা চেনা লাগছে,” ইশিগামি আস্তে করে বলল। “কে, ইনি?”

“কোথায় দেখেছেন তাকে এটা মনে করতে পারবেন?”

“আসলে আমি ঠিক নিশ্চিত না। প্রতিদিন তো অনেককেই দেখি। আপনি যদি লোকটার নাম অথবা কাজের ঠিকানাটা আমাকে বলেন, তাহলে হয়তো কিছু মনে পড়তে পারে।”

“ওনার নাম কুডো। একটা প্রিন্টিং কোম্পানি চালান তিনি।”

“কুডো?”

“হ্যা,” এই বলে কুসানাগি বানান করে নামটা শোনাল তাকে।

কুডো। ইশিগামি ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকলো। পুলিশ এর পেছনে লেগেছে কেন? ইয়াসুকোর সাথে নিশ্চয়ই কোন সম্পর্ক আছে তার। পুলিশ বোধহয় কোন যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে তাদের মধ্য

“তাহলে? কিছু মনে পড়ছে আপনার?”

“না। কিন্তু তাকে কোথাও দেখেছি আমি,” ইশিগামি মাথা নেড়ে বলল। “আমি দুঃখিত, কিন্তু এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না। ভুলও হতে পারে আমার।“

“ঠিক আছে, সমস্যা নেই,” পকেট থেকে একটা কার্ড বের করতে করতে বলল কুসানাগি। “যদি কিছু মনে পড়ে, দয়া করে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।”

“অবশ্যই। আচ্ছা, সে কি কোনভাবে কেসটার সাথে জড়িত?”

“এ মুহূর্তে সেটা বলা সম্ভব হচ্ছে না আমার পক্ষে। আমরা এখনও খোঁজ খবর নিচ্ছি।”

“তার সাথে কি মিস হানাওকার কোন সম্পর্ক আছে?”

“জি, তাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে,” কুসানাগি ইচ্ছে করেই ওভাবে বলল কথাটা। এরচেয়ে বেশি তথ্য সে জানতে দিতে চায় না লোকটাকে। “আরেকটা কথা, সেদিন ইউকাওয়ার সাথে বেন্টেন-টেইয়ে গিয়েছিলেন আপনি, তাই না?”

ইশিগামি জমে গেলো, প্রশ্নটা এতটাই অপ্রত্যাশিত যে, কী বলবে বুঝে উঠতে পারলো না।

“আপনাদের দু-জনকে সেদিন দেখেছি আমি,” কুসানাগি বলতেই থাকলো। “একটা কাজে সেদিকে গিয়েছিলাম আমি।”

তার মানে বেন্টেন-টেইয়ের ওপর নজর রাখছে ওরা।

“হ্যা, গিয়েছিলাম। ইউকাওয়া বলেছিল ওর একটা লাঞ্চবক্স কিনতে হবে, তাই ওখানে নিয়ে যাই আমি।”

“এত দূরে কেন? স্কুলের কাছের কোন দোকানে কি লাঞ্চবক্স পাওয়া যায় না?”

“সেটা ইউকাওয়াকে জিজ্ঞেস করতে হবে আপনাকে। বেন্টেন-টেইয়ে যাওয়ার বুদ্ধিটা ওর ছিল।”

“আপনারা কি কেসটা নিয়ে কোন আলোচনা করেছিলেন?”

“আপনাকে আগে যেটা বললাম, আপনি নাকি আমার সাহায্য চেয়েছিলেন।”

“ওটা বাদে,” মাথা নেড়ে বলল কুসানাগি। “আপনাকে তো বোধহয় এটা জানিয়েছে সে মাঝে মাঝে কেসের ব্যাপারে ওর সাহায্য নেই আমি। পদার্থবিজ্ঞান ছাড়া অন্য ব্যাপারেও কিন্তু মেধা আছে তার। পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা একজন আদর্শ গোয়েন্দার মত। আমি আসলে ভাবছিলাম এই কেসের ব্যাপারে কিছু হয়তো জানিয়েছে সে আপনাকে।“

ইশিগামি কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে গেলো। তাদের মধ্যে যদি এতই কথা হয়, তাহলে তো তথ্যও আদান প্রদান হবার কথা। কিন্তু ডিটেক্টিভ তাকে কেন জিজ্ঞেস করছে, ইউকাওয়া কেসটা সম্পর্কে কি ভাবছে?

“না, সে ওরকম কিছু বলেনি।”

“আচ্ছা। ঠিক আছে তাহলে, বাসায় যাবার পথে আপনাকে এভাবে বিরক্ত করার জন্যে দুঃখিত।“

কুসানাগি বিদায় জানিয়ে যেদিক দিয়ে এসেছিল সেদিকে হাটা দিলো। ইশিগামি তার চলে যাওয়া দেখতে লাগল পেছন থেকে। কেমন যেন একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি হচ্ছে তার। সাজানো গোছানো একটা সমীকরণে অজানা কোন রাশির আগমন ঘটেছে যেন। যার জন্যে সবকিছু গুবলেট হয়ে যেতে বসেছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *