ভুতুড়ে সাঁকোর রহস্য – ৫

পাঁচ

হলের আয়নায় নিজেকে পরখ করছে ডন, এসময় মিসেস ম্যাকলিন সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে এলেন পিচরঙা পোশাক পরে।

‘দারুণ লাগছে তোমাদেরকে!’ সাজপোশাক দেখে ছেলেদের উদ্দেশে স্নেহের হাসি হেসে বললেন তিনি।

‘আপনাকেও অপূর্ব লাগছে, মিসেস ম্যাকলিন,’ সপ্রশংস কণ্ঠে বলে উঠল ডন। অন্যরাও তাঁর তারিফ করল।

‘ধন্যবাদ,’ খুশিমনে বললেন তিনি।

ওরা সবাই পটলাক ডিনারের জন্য তৈরি। কিশোর পরেছে নীল শার্ট আর কালো প্যান্ট। মুসা টি-শার্ট আর জিন্স। রবিন সাদা শার্ট আর ট্যান প্যান্ট। এবং ডনের পরনে হাফ হাতা শার্ট আর শর্টস্।

এসময়, ঢাকনি দেয়া এক ডিশ হাতে কিচেন থেকে বেরিয়ে এল মনিকা। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ক্রিমরঙা হেডব্যাণ্ড পরেছে ও। ওর পেছন পেছন এলেন কুঁচিদার নীল পোশাক পরা এমিলি।

‘দুর্দান্ত লাগছে তোমাকে, এমিলি।’ প্রশংসা ঝরল মিসেস ম্যাকলিনের কণ্ঠে

‘তাই?’ খুশিয়াল কণ্ঠে বললেন এমিলি। তোমাকে তো আরও বেশি সুন্দর লাগছে! … পটলাকের জন্যে মনি পাস্তা সালাদ বানিয়েছে,’ গাড়ির দিকে চলেছে সবাই, সগর্বে বললেন এমিলি।

‘খাইছে, তোমার রান্না করতে ভাল লাগে, মনিকা?’ মুসা শুধাল।

মাথা ঝাঁকিয়ে সায় জানাল মনিকা।

‘আমি ভাল রাঁধতে পারি না,’ বলল। ‘শিখছি।’

‘মনি বিনয় করছে,’ গাড়িপথ থেকে গাড়ি বেরিয়ে যেতেই বললেন মিসেস ম্যাকলিন। আমি চেখে দেখেছি-অপূর্ব!’

‘গন্ধটা কিন্তু দারুণ!’ পিছনের আসন থেকে বলল ডন। এমিলি আর মিসেস ম্যাকলিনের মাঝে বসা মনিকা কাঁধের ওপর দিয়ে চেয়ে মৃদু হাসল।

‘কাল আমি কুকি বানাব,’ বলল। ‘তুমি চাইলে ওগুলোয় নকশা করতে আমাকে সাহায্য করতে পার।’

‘সে আর বলতে!’ ডন এক পায়ে খাড়া।

যাক, মনিকা অন্তত ডনের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করছে, ভাবল রবিন।

‘রুবি আমাদের সাথে গেলে ভাল হত,’ গ্রামীণ লোকালয় ভেদ করে গাড়ি চলেছে, এসময় বললেন এমিলি। ও এখানকার কাউকে চেনে না। ওকে কিছু মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতাম, কিন্তু ও আসতে চাইল না, বলল তারচেয়ে ঘরে বসে কাজ করবে।’

‘মেয়েটা খুব কাজপাগল,’ মন্তব্য করলেন মিসেস ম্যাকলিন। এমিলি সায় দিয়ে বললেন, ‘যাকগে, তোমরা কেউ আমার টেপ রেকর্ডারটা পেলে জানিয়ো কিন্তু, রুবি আর আমার গবেষণার কাজে লাগে ওটা।’

‘সে কী! ওটা এখনও পাওনি, এমিলি?’ মিসেস ম্যাকলিন চমকে গেছেন রীতিমত।

‘না।’

‘আমরা খুঁজব ওটা,’ কথা দিল রবিন। অন্যরা সবাই একমত হলো।

‘খাইছে, মনিকা,’ বলল মুসা, ‘হারানো জিনিসের কথায় মনে পড়ল, তুমি কি একটা হেডব্যাণ্ড হারিয়েছ? রেশমী সুতোর কাজ করা সবুজ এক হেডব্যাণ্ড?’

পাঁই করে সিটে ঘুরে বসল মনিকা।

‘হ্যাঁ তো, তুমি পেয়েছ নাকি ওটা?’

হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল মুসা।

‘আজ পিকনিকে গিয়ে খুঁজে পাই জিনিসটা।’

‘বাঁচলাম, বাবা!’ সোল্লাসে বলে উঠল মনিকা। ‘ওটা আমার সবচেয়ে প্রিয়।’

ছেলেরা পরস্পর মুখ তাকাতাকি করল। মনিকা বলেছিল কখনওই বনে যায় না। ওদেরকে মিথ্যে বলল কেন মেয়েটা?

ঠিক সেসময়, কমিউনিটি সেন্টারের ব্যস্ত পার্কিং লটে গাড়ি ঢোকালেন এমিলি।

‘খাইছে, পটলাকের জন্যে অন্যরা কে কী আনছেন তা-ই ভাবছি,’ বলে উঠল মুসা। মহা উত্তেজিত।

‘এটা বলতে পারি, ফাঁকা স্থানে গাড়ি পার্ক করে বললেন এমিলি, ‘ফেরার সময় তোমার পেটে আর জায়গা থাকবে না!’

মুসা লাফিয়ে নামল গাড়ি থেকে।

‘চলো, যাই,’ বলে, দ্রুত দরজার দিকে পা বাড়াল। হেসে উঠল কিশোর।

‘খাওয়ার পাগল!’

ভিড়ে ভিড়াক্কার সেন্টারের ভেতরে লম্বা এক টেবিলে সাজানো হরেক পদের খাবার। লোকজন ওখান থেকে মন মত ঠাণ্ডা-গরম খাবার তুলে নিচ্ছে পাতে। মনিকা ওর ডিশটা রাখতে গেল টেবিলে।

‘খাইছে, এর মধ্যেই অনেক পটলাকার হাজির হয়ে গেছে দেখছি,’ বলে চারপাশে চোখ বোলাল মুসা। ‘আমাদের জন্যে কিছু থাকলে হয়।’

রবিন মুচকি হাসল মুসার উদ্দেশে।

‘চিন্তা কোরো না, মুসা। খাবারের অভাব নেই।’

গালে এক হাত রাখলেন এমিলি।

‘হায়, ঈশ্বর, এখানেও সেই লোক!’ গলা খাট করে বললেন। মিসেস ম্যাকলিন আর ছেলেরা এমিলির দিকে চাইল, তারপর তাঁর দৃষ্টি অনুসরণ করল। এক কোণে ছোট্ট এক টেবিলে বসে ডিনার খাচ্ছেন গোল্ড রিমের চশমা পরা এক লোক। গ্রাহাম ব্রাউন!

‘চিন্তার কিছু নেই। আমরা দূরে-দূরে থাকব,’ বান্ধবীকে আশ্বস্ত করলেন মিসেস ম্যাকলিন।

কিশোর লক্ষ করল মুসার নজর বুফে টেবিলের দিকে।

‘ওখানে এখনও অনেক খাবার আছে, মুসা,’ মজা করে বলল। ‘চিন্তা নেই।

মুসার দিকে চেয়ে স্মিত হাসলেন এমিলি।

‘খিদে পেয়েছে?’

‘একটু-একটু, বলে আশান্বিত দৃষ্টিতে ওঁর দিকে চাইল মুসা। ‘খাওয়ার সময় হয়েছে?’

হেসে উঠলেন এমিলি।

‘যাও।’

ছেলেরা বুফের দিকে দ্রুত পায়ে এগোল, ওদিকে এমিলি আর মিসেস ম্যাকলিন অন্য অতিথিদের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দিলেন। টেবিল ঘিরে ধীর পায়ে ঘুরছে মানুষের যে সারিটি, সেটিকে অনুসরণ করল ছেলেরা। নানা পদের পছন্দসই খাবার প্লেটে তুলে নিয়ে, ছোট্ট এক টেবিলে রসল ওরা।

‘উম,’ বলে মুখে খাবার চালান করল রবিন। ‘মনিকার পাস্তা সালাদটা খেয়েছ? দারুণ টেস্টি কিন্তু।’

মাথা ঝাঁকাল কিশোর।

‘আবার নেব ওটা।’

‘সবাই একসাথে তাকিয়ো না,’ বলল মুসা, তবে গ্রাহাম ব্রাউন কিন্তু একা নন।’

ছেলেরা একে-একে চাইল। গ্রাহামের উল্টোদিকে বসে রয়েছেন কাঁচা-পাকা চুলের এক মহিলা। গভীর আলোচনায় মগ্ন মনে হলো দু’জনকে।

‘ওটা ডরোথি না?’ চমকিত কণ্ঠে বলল রবিন, চেষ্টা করল ওদিকে না চাইতে।

‘গ্যাস স্টেশনের সেই মহিলা?’ ডনের প্রশ্ন।

আরেক নজর দেখার জন্য চকিতে ঘাড় কাত করে চাইল মুসা।

‘হ্যাঁ, ঠিকই বলেছ, রবিন।’

‘কীসের এত আলাপ তাঁদের?’ বলল কিশোর।

কিন্তু এমিলি আর মিসেস ম্যাকলিন ওদের সঙ্গে যোগ দিতেই, ছেলেরা গ্রাহাম ব্রাউনের কথা বেমালুম ভুলে গেল। মনিকাও ছিল তাদের পেছনে। খোশমেজাজে ডিনার সারল সবাই মিলে। এমনকী মনিকার মুখখানাও হাসিতে ঝলমল করল প্রায় পুরোটা সময়।

মুসা দ্বিতীয় দফায় চকোলেট কেক সাঁটাচ্ছে এসময় ওর চোখে পড়ল কে যেন হাত নাড়ছে।

‘এমিলি, কেউ মনে হয় আপনার মনোযোগ কাড়তে চাইছে।’ ক’টেবিল দূরে বসা এক লোকের উদ্দেশে আলতো মাথা ঝাঁকাল।

‘হ্যাঁ, তাই, মুসা।’ মৃদু হেসে পাল্টা হাত নাড়লেন এমিলি। ‘ওটা জিমি কোনস। আমার বাসা মেরামতের কাজটা ও-ই করেছিল।’

বছর ত্রিশের এক যুবক এগিয়ে এল। মাথায় বালিরঙা চুল তার, গায়ের রং সোনালী।

‘কেমন আছেন, এমিলি?’ হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘মনিকা, ভাল আছ তো?’

‘আমরা ভাল, আপনি কেমন, জিমি?’ বলে হাত মেলালেন এমিলি, এবার মিসেস ম্যাকলিন আর ছেলেদের পরিচয় করিয়ে দিলেন জিমির সঙ্গে।

‘ভরপেট খেয়েছি,’ সবাইকে হ্যালো বলার পর বলল জিমি। ‘এত ভাল-ভাল খাবার খাওয়ার সুযোগ আমার কপালে কমই জোটে।

স্মিত হাসলেন এমিলি।

‘কাজ-কর্ম কেমন চলছে?’

‘খারাপ না,’ জানাল জিমি। ‘শীঘ্রি সব দেনা শুধতে পারব-তারপর শুধু স্বচ্ছন্দে এগিয়ে চলা।’

এমিলিকে বিস্মিত দেখাল।

‘এত অল্প সময়েই!’

প্রসঙ্গ পাল্টে ছেলেদের দিকে নজর ফেরাল জিমি।

‘তা কেমন লাগছে তোমাদের এমিলির ওখানে?’

হাসি খেলে গেল ডনের মুখে।

‘আমরা একটা রহস্যের সমাধান করছি,’ বলল। চকচক করছে ওর চোখজোড়া।

‘তাই?’ জিমি রীতিমত হতচকিত।

‘চেষ্টা করছি আরকী, বলল কিশোর।

অল্প হাসলেন এমিলি।

‘আপনাকে এব্যাপারে জানাব একসময়, জিমি

‘আচ্ছা।’ অস্বস্তির সঙ্গে হেসে চকিতে হাতঘড়ি দেখে নিল জিমি। ‘ওরে, বাবা, অনেক বাজে, আমি চলি। আশা করি তোমরা প্রাচীন রহস্যটার কিনারা করতে পারবে, বলল, লোকটার ভাবখানা এমন যেন মানে মানে সরে পড়তে পারলে বাঁচে

রবিন জিমির গমনপথের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল, তাজ্জব বনে গেছে। কেউ তো একবারও বলেনি ওটা প্রাচীন রহস্য। তাহলে লোকটা জানল কীভাবে?

.

সে রাতে, ছেলেরা বিছানায় যাওয়ার পর, মুসা জেগে জেগে ইটন’স লুপের কথা ভাবছিল। আসলে কী ওটা? সারাদিন সূত্রের সন্ধানে চোখ-কান খোলা রেখেছে ওরা। কিন্তু রহস্যটা সমাধানে কাজে আসবে এমন কোন কিছুই পায়নি। ধাঁধাটার মধ্যেই কি এর জবাব রয়ে গেছে?

শেষটা যখন শুরু,
আর শুরু যখন শেষ,
তুমি ইটন’স লুপের জট খুললে,
শুকরিয়া অশেষ।

মুখস্থ হয়ে যাওয়া ছড়াটা আওড়াচ্ছে মনে-মনে, হঠাৎই কিছু একটা শুনল মুসা। শব্দটা কীসের? কী হতে পারে এটা খাইছে, দাঁড়াও! চিনতে পেরেছে ও আওয়াজটা!

আলগোছে বিছানা ছাড়ল মুসা। রবিনকে মৃদু ঝাঁকুনি দিল।

‘রবিন,’ ডাকল ফিসফিস করে। ‘রবিন, ওঠো। ডন ঠিকই বলেছিল!’

তড়াক করে বিছানায় উঠে বসল রবিন।

‘কী…?’ ঘুমজড়িত গলায় বলল।

‘পাথরের ওপর দিয়ে ঝরনার বয়ে চলার শব্দ!’ মুসা বলে উঠল, গায়ে কাঁটা দিচ্ছে ওর। বাহু জোড়া ঘষল শিহরন তাড়াতে, ‘শোনো।’

মুহূর্তখানেক নিস্পন্দ বসে রইল রবিন। এবার বলল, ‘কই, আমি তো কিছু শুনতে পাচ্ছি না- আরি!’

বন্ধুর দিকে চাইল মুসা।

‘শুনলে?’

রবিন আস্তে-আস্তে মাথা ঝাঁকাল। মুহূর্তের জন্য, মুখে রা ফুটল না ওর। কিন্তু শীঘ্রি সামলে নিল। এক ঝটকায় বিছানা থেকে নেমে পড়ল। জানালার কাছে গিয়ে বাইরে চাইল। চোখে ‘পড়ল শুধু ঘুটঘুটে অন্ধকার।

‘খাইছে, ওটা কি সত্যিই চ্যাটারিং বোনসের ভূত, রবিন?’ মুসা এসে দাঁড়িয়েছে রবিনের পেছনে।

‘কী বলব বুঝতে পারছি না,’ চাপাস্বরে বলল নথি। ‘তবে একটা কথা ঠিক। এখানে আসলেই অদ্ভুতুড়ে কোন ঘটনা ঘটছে!’

রবিনের দিকে চাইল মুসা। জবাবে মাথা ওপর-নিচ করল রবিন। ডনকে দেয়া কথা মনে আছে দু’জনেরই। এখন তদন্তের পালা।

ওরা হল-এ পা রাখতেই, আরেকটি দরজা খুলে গেল। উদয় হলো কিশোর আর ডন।

‘তুমি ঠিকই বলেছিলে, ডন,’ বলল মুসা। ‘এইমাত্র আমরাও শব্দটা শুনেছি।’.

‘ওটা ওই চ্যাটারিং বোস্ ঝরনাটার ভূত,’ বলল ডন। ‘কিশোরভাইও শুনেছে।’

‘শব্দ পেয়েছি ঠিক, শুধরে দিয়ে, সবাইকে পেছনে নিয়ে সিঁড়ি ভাঙতে লাগল কিশোর। কিন্তু তার মানে এই নয় যে বাইরে, রাতের আঁধারে একটা ভূত ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

কিচেনে ঢুকে, পেছনের দরজায় এক আংটা থেকে ঝোলা লম্বা ফ্ল্যাশলাইটটা পাড়ল কিশোর। এবার চাইল ডনের উদ্দেশে।

‘বাইরে গেলে তোমার ভয় করবে না তো, ডন? ঠিক করে বলো।’

‘করবে না,’ সাহস ভরে বলল ডন।

মাথা ঝাঁকিয়ে, দরজা খুলল কিশোর এবং ওরা সবাই এক সারে বেরিয়ে এল। দরজাটা পেছনে ভেজিয়ে, সন্তর্পণে বারান্দার নড়বড়ে সিঁড়ির ধাপগুলো ভাঙতে লাগল ছেলেরা। সতর্ক রইল ক্যাঁচকোঁচ শব্দ যেন না হয়। এবার ঘাসের ওপর দিয়ে ফ্ল্যাশলাইটের আলো বুলিয়ে এনে, সাঁকোটার দিকে এগোতে লাগল ওরা আলতো পায়ে দ্রুত প্রবহমান পানির শব্দ লক্ষ্য করে। হঠাৎই থমকে দাঁড়াল ডন। অন্যরা দেখেনি এমন কিছু একটা চোখে পড়েছে ওর।

‘কেউ আছে ওখানে, বলল ফিসফিস করে।

সত্যিই, সাঁকোটার কাছে নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে এক ছায়ামূর্তি। কিশোর ওপরদিকে তাক করে ধরল ফ্ল্যাশলাইটটা।

‘কে ওখানে?’ চেঁচিয়ে উঠল।

ছেলেরা ধাওয়া দিতেই, ডন কীসে যেন পা বেধে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। ও হাঁচড়ে পাঁচড়ে উঠে না দাঁড়ানো অবধি অপেক্ষা করল বড়রা। কিন্তু ধেয়ে যখন গেল সবাই মিলে, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

সেতুর ওপর যে ছিল সে উধাও।