রূপকথা নয়!

রূপকথা নয়! 

প্রচণ্ড শীতের রাত। জামাকাপড় ভেদ করে হাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিচ্ছে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। পরমাসুন্দরী এক তরুণী দৃঢ়, দ্রুত পদক্ষেপে এগিয়ে গিয়ে নির্জন এক বাড়ির কড়া নাড়ল। দরজা খুলে দিলো এক যুবক এবং চোখের সামনে সুন্দরী তরুণীকে দেখে সঙ্গে সঙ্গেই দরজা বন্ধ করে দিলো। মেয়েটি রাস্তা থেকে চেঁচিয়ে বলল, “দয়া করে আমাকে আপনার বাড়িতে ঢুকতে দিন। আমি সফরে বেরিয়েছি। ভেবেছিলাম রাত নামার আগেই গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারব। কিন্তু রাত হয়ে গেছে অথচ আমি এখনো মাঝপথে, আমি জানি না আমি কোথায় এসে পড়েছি। এ এলাকার কাউকেই আমি চিনি না। আপনি যদি আমাকে আপনার বাড়িতে আশ্রয় না দেন, আমি ভয় পাচ্ছি, বাইরে থাকলে আমার সাথে। খারাপ কিছু ঘটতে পারে।” “আশেপাশে আরও অনেক বাড়িঘর আছে… আপনি দয়া করে সেগুলোর কোনো একটাতে যান, ইন শা আল্লাহ তারা আপনাকে সাহায্য করবে।” যুবকটি উত্তর দিলো। মেয়েটি চলে গেল। আসলে চলে যাওয়ার ভান করল। হাড় কাঁপানো শীতের রাতে মেয়েটির নির্জন ওই বাড়ির কড়া নাড়, সফরের কথা বলে আশ্রয় প্রার্থনা করা সবই জঘন্য এক প্ল্যানের অংশ। প্ল্যানটা বুঝতে হলে আমাদের পেছনের ঘটনাগুলোও জানতে হবে। এ যুবক ছিল আল্লাহ্ এক তাকওয়াবান বান্দা। সারাদিন রোযা রাখত আর সারা রাত নফল সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহর ভয়ে অশ্রু বিসর্জন দিত। সব। ধরনের হারাম থেকে নিজেকে সযত্নে বাঁচিয়ে রাখত। তার পাড়া-প্রতিবেশীরা খুব একটা সুবিধের ছিল না। হারাম-হালালের কোনো তোয়াক্কা করত না। আড্ডাবাজি, গীবত, পরচর্চা, পরনিন্দা করেই তাদের দিন কাটত। যুবক, পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে খুব একটা মেলামেশা করত না। অধিকাংশ সময়ই সে তার নিজের বাড়িতে বসে আল্লাহর ইবাদাত করত। পাড়া-প্রতিবেশীরা এতে বেশ ক্ষিপ্ত হয়ে গেল। তারা সব সময় এই যুবকের সমালোচনা করত, “দেখ না, এ ব্যাটার ভাব দেখ! আমাদের পাত্তাই দেয় না, আমরা কি মানুষ না? সারাদিন ঘরে বসে বসে তসবিহ টেপে, আমাদের সঙ্গে কোনো মেলামেশাই করে না। চল ব্যাটাকে জন্মের মতো সাধুগিরির শিক্ষা দেই।” 

সবাই মিলে এই যুবকের পদস্খলনের ষড়যন্ত্র করল। সুবহান আল্লাহ! শয়তান সব সময় মানুষকে সরাসরি আক্রমণ করে না। সে মাঝে মাঝে মানুষদের মধ্যেই এমন একটা দল তৈরি করে, যারা অন্য মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করতে উঠেপড়ে লেগে যায়। যুবকের প্রতিবেশীরা গরু খোঁজার মতো করে আশেপাশের এলাকা চষে ফেলল রুপসী, লাস্যময়ী মেয়ের খোঁজে। তারা এমন এক তরুণীর সন্ধান পেল, যে ছিল ওই এলাকার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী। লোকগুলো ওই মেয়েকে প্রস্তাব দিলো, “আমরা চাই, তুমি অমুক এলাকার ওই যুবককে তোমার রূপের ফাঁদে ফেলবে এবং তার পদস্খলন ঘটাবে… তার সাথে যিনা করবে।” “হায় আল্লাহ্! আমি একজন মেয়ে, এমন কাজ আমি কীভাবে করব?” “তুমি আমাদের এ কাজটা করে দাও। বিনিময়ে তুমি যা পাবে তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। তোমাকে ওজন করে তোমার ওজনের সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি স্বর্ণ তোমাকে দেয়া হবে। রাজি?” মেয়েটি কিছুক্ষণ চিন্তা করল। বিবেকের সঙ্গে যুদ্ধ করল বলা যায়। সে ছিল খুবই গরিব। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এক ধাক্কায় এত সম্পদ। করলামই না হয় এ একটা খারাপ কাজ। একবারই তো! নিজেকে বোঝাল সে। “ঠিক আছে। এত করেই বলছ যখন। আমি রাজি।” …যুবকের কথা শুনে মেয়েটি চলে যাবার ভান করল। কিছুক্ষণ পরে সে আবারও দরজায় কড়া নাড়ল। “আমি পাশের বাড়িগুলোতে গিয়েছিলাম কিন্তু তারা কেউ বাড়িতে নেই। বাইরে প্রচণ্ড ঠান্ডা। আমার ভীষণ ভয় করছে, আপনি আমাকে আপনার বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি না দিলে আমি হয়তো ঠান্ডায় মরে যাব! দয়া করে দরজা খুলুন” অনুনয় ঝরে পড়ল মেয়েটির কণ্ঠে। “পাহাড়ের নিচের দিকে আরেকটু নেমে গেলে ওখানে আরও কিছু বাড়ি পাবেন। ইন শা আল্লাহ্ তারা আপনাকে তাদের সাথে থাকতে দেবেন। আমার বাড়িতে শুধু আমি, আর কেউ নেই। আমাদের দুজনের একসাথে থাকা ঠিক হবে না।” যুবকের সরল স্বীকারোক্তি। মেয়েটি চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আবারও ফিরে এল। দরজায় কড়া নাড়ল। আবারও যুবক দরজা খুলল এবং মেয়েটিকে দেখতে পেল। মেয়েটি বলল, “আল্লাহর শপথ! আপনি যদি আমাকে ভেতরে আসার অনুমতি না দেন এবং কোনো পুরুষ যদি আমার সম্ভ্রম ছিনিয়ে নেয়, তবে আল্লাহর শপথ! শেষ বিচারের দিন আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে বলব যে, আপনিই হলেন সেই ব্যক্তি যার কারণে এসব ঘটেছে। আপনার কারণেই আমি ধর্ষিত হয়েছি।” 

যুবকটি যখন আল্লাহর নাম শুনল তখন তাঁর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল, কেননা যখন মুমিনগণের সামনে আল্লাহর নাম স্মরণ করা হয়, তাদের অন্তর কেঁপে ওঠে। যুবক দরজা খুলে সরে দাঁড়াল। 

“আসন, আপনি এ ঘরে রাতটা কাটিয়ে দিন, আমি পাশের ঘরেই থাকছি। দয়া করে আমাকে আর বিরক্ত করবেন না এবং ফজরের ওয়াক্ত হওয়ামাত্রই আমার বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন।” এতটুকু বলেই যুবক পাশের ঘরে চলে গেল। কুরআন তিলাওয়াত শুরু করার আগে সশব্দে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করতে ভুল করল না। যুবকের প্রতিবেশীরা আশেপাশেই ওঁত পেতে ছিল। মেয়েটি বাড়িতে ঢোকার পর ওরা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসতে শুরু করল–”ব্যাটার সাধুগিরি একটু পরেই খতম হয়ে যাবে।” আরও কিছুক্ষণ তীদের এভাবে বসে থাকার ইচ্ছা। তারপর, একেবারে চূড়ান্ত মুহূর্তে যুবকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে যুবক এবং মেয়েটিকে হাতেনাতে ধরার প্ল্যান। যুবকটি নিবিষ্ট মনে কুরআন তিলাওয়াত করছিল। হঠাৎ মেয়েটির ঘর থেকে রক্ত হিম করা একটা চিৎকার ভেসে এল। হাতে একটা বাতি নিয়ে যুবক হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকল। চোখের সামনের দৃশ্য তাকে স্রেফ স্ট্যাচু বানিয়ে দিলো। মেয়েটি শুয়ে আছে বিছানায়। গায়ে একটা সুতো পর্যন্ত নেই। দুচোখে তীব্র কামনা। যুবক জীবনে প্রথমবারের মতো এমন কিছু দেখল, যা সে এর আগে কখনো দেখেনি। সে ভেতরে ভেতরে এমন কিছু অনুভূতির অস্তিত্ব টের পেতে শুরু করল, যা ইতিপূর্বে কখনো অনুভব করেনি। তার মন তাকে এমন কিছু করতে বলল, যা আগে কখনো বলেনি। তাদের অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটি এখন তার সামনে। হাতছানি দিয়ে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে নিষিদ্ধ জগতে হারিয়ে যাওয়ার! কী করবে সে? টগবগে একজন যুবক এই পরিস্থিতিতে কী করে? এলাকাবাসী আগেই বাড়িটি ঘিরে ফেলেছিল। এবার ওরা তাদের বৃত্ত ছোট করে এনে বাড়ির প্রাচীরের গা ঘেঁষে দাঁড়াল। আর মিনিট দুয়েক পরেই দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকবে ওরা। যুবকটি ওই মেয়ের ঘরে ঢোকার পর মেয়েটির চিৎকার বন্ধ। হয়ে গেল। কিছুক্ষণের জন্য নেমে এল রাজ্যের নীরবতা। দূরে একটা নিশাচর পাখি একগাছ থেকে অন্য গাছের উদ্দেশে উড়াল দিলো। গাছের পাতা থেকে ঝরে পড়ল একদলা তুষার। হঠাৎ যুবকের বাড়ি থেকে রক্ত হিম করা চিৎকার ভেসে এল, আবার। মেয়েটির গলা। সে চিৎকার করছে। করছে তো করছেই, থামার কোনো নামগন্ধ নেই। 

এলাকাবাসী আর একমুহূর্ত দেরি না করে দরজায় হামলে পড়ল। তারপর মেয়ে। এবং যুবক দুজনকেই আবিষ্কার করল একই ঘরের মেঝেতে! মেয়েটি তার রূপের ফাঁদে ঠিকই গেঁথে ফেলেছিল যুবকটিকে। মেয়েটির আহ্বানে সাড়া দিতে যুবকটি এক পা দুই পা করে এগোচ্ছিল তার দিকে। কিন্তু এই নাজুক মুহূর্তেও যুবকটি তাঁর রবের কথা, রবের শাস্তির কথা ভুলে যায়নি। মেয়েটির দিকে একটি করে ধাপ আগানোর পর সে তার হাত বাতির আগুনের ওপর ধরছিল এবং নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল, “মনে রাখিস, জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার এই আগুনের চেয়েও বেশি উত্তপ্ত”। তীব্র বেদনায় সে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ছিল। আবারও সে উঠে দাঁড়াচ্ছিল। মেয়েটির দিকে আরেক কদম এগিয়ে যাচ্ছিল… আর যখনই সে মেয়েটির দিকে আগানো শুরু করছিল তখনই সে নিজের হাতকে আগুনে ঠেলে দিয়ে নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল, “মনে রাখিস, জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার আগুনের চেয়েও বেশি তীব্র”। এ অবিশ্বাস্য দৃশ্য মেয়েটি সহ্য করতে পারছিল না। তার প্রথম চিৎকার ছিল পরিকল্পনার অংশ। কিন্তু পরের বার তা ছিল অনুশোচনার, ভয়ের। মেয়েটিকে সেই ঘর হতে সরিয়ে নেয়ার পর যুবক অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে প্রত্যাবর্তন করল আল্লাহ্র (4) নিকট–”ইয়া আল্লাহ্! আমি যে গুনাহ করেছি তার জন্য আমাকে ক্ষমা করুন”। কী ছিল সেই গুনাহ? কী করেছিল সে? সে তো যিনা করা থেকে বিরত ছিল, সে ওই এলাকার সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ের কাছে যাওয়া থেকে বিরত ছিল, সে কি আদৌ কোনো গুনাহ করেছিল! অথচ সে বলল, হে আল্লাহ! মেয়েটির দিকে বাড়ানো আমার সেই পদক্ষেপগুলোর জন্য আমাকে ক্ষমা করুন। 

এই ঘটনা শোনার পর আমি কিছুক্ষণ নিশ্চপ বসে ছিলাম। একবার নিজেকে কল্পনা করুন ওই যুবকের জায়গায়। আপনার তরুণ শরীর, আপনার টগবগে রক্ত, রাতের নিকষ কালো চাদরের আড়ালে এক সুন্দরী স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছে আপনার কাছে। কোথাও কেউ নেই। কাকপক্ষীও টের পাবে না কিছুই, এমন সময় আপনি কী করবেন? কী করাটা স্বাভাবিক? আনন্দে হার্ট এটাক করলেও অবাক হবার কিছু নেই। বাসা খালি পেলে বা একা রুম পেলে আমাদের মাথায় কী চিন্তা ঘোরাফেরা করে? 

পর্ন দেখার বা হস্তমৈথুন করার এই তো সুযোগ! তাই না? লেটস বি অনেস্ট। বাসায় কেউ ছিল না বা রুম ফাঁকা ছিল আর এমন অবস্থায় আমরা পর্ন ভিডিও দেখিনি, হস্তমৈথুন করিনি বা কোনো মেয়েকে নিয়ে সেক্স ফ্যান্টাসিতে ডুবে যাইনি এমন কবার হয়েছে? একবারও কি হয়নি? বুকে হাত রেখে সত্যি কথা বলার সাহসটা কি হবে আমাদের? সুবহান আল্লাহ্! এই ছেলের ঈমানের শেকড় কী গভীর মাটিতে প্রোথিত। গভীর রাতে অপরূপা যুবতী নিষিদ্ধ প্রেমের যে ঝড় তুলেছিল তাতেও বিন্দুমাত্র টলেনি তাঁর ঈমান, যে সুযোগ পেলে বহু পুরুষ বর্তে যেত, যে সুযোগের কথা ভেবে কত তরুণ অস্থিরতায় ভোগে, সেই সুযোগ পাওয়ায় পরেও তী ছুঁড়ে ফেলে দিতে এতটুকু দ্বিধায় ভোগেনি। হায়! আমাদের ঈমান কত ঠুনকো! একাকী রুমে এক অবাস্তব জগতের ধরা যায় না ছোঁয়া যায় না এমন পর্নস্টাররা আমাদের চিন্তায় আসামাত্র আমাদের ঈমান হাওয়া হয়ে যায়। নেটে লগইন করে পর্ন দেখতে, হস্তমৈথুন করতে আমাদের বিন্দুমাত্র দেরি হয় না। পার্কের চিপায়, রিকশার হুডের নিচে, বাসের পেছনের সিটে, লিফটে–আমরা নির্জনতা খুঁজি, লোকাল বাসের ভিড়ে, কনসার্টে আমরা সুযোগ খুঁজি। সারাদিন “জাস্ট ফ্রেন্ড-জাস্ট ফ্রেন্ড”, “ভাইবোন” খেলা খেলে, গভীর রাতে বাথরুমে নিজেদের ঠান্ডা করি। পাপ করতে করতে আমাদের এমন অবস্থা হয়েছে, পাপকে আমরা আর পাপ মনে করি না। হস্তমৈথুন করার পর বা পর্ন দেখার পর আমাদের খারাপ লাগে না। এটা এমন কোনো ব্যাপারই না আমাদের কাছে। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ যুবকও তো আমাদের মতোই রক্তমাংসের মানুষ ছিল। তারও তো আমাদের মতোই একটা হৃদয় ছিল, সে হৃদয়ে কামনা-বাসনা ছিল, ছিল নারীর প্রতি দুর্বোধ্য আকর্ষণ। কিন্তু সেই কামনা-বাসনার কাছে সে মাথানত করেনি। এও আল্লাহর বান্দা, আমরাও আল্লাহর বান্দা, কিন্তু ওর সঙ্গে আমাদের আকাশ-পাতাল পার্থক্য। হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের ছায়ায় বসে ও যখন কাউসারের পানীয় পান করবে, তখন হয়তো রাতের আঁধারে করা পাপের কারণে আমাদের অপমানিত হতে হবে।

এক শায়খের মুখে এক ছেলের কথা শুনেছিলাম, যে প্রতিদিন ১২,০০০ এরও বেশি বার আল্লাহকে স্মরণ করত। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কেন তুমি এত বার আল্লাহকে স্মরণ করো? সে উত্তর দিলো, “যেন আমি আবু হুরাইরাহকে হারাতে পারি। আবু হুরাইরাহর চেয়ে বেশি আল্লাহকে স্মরণ করতে পারি।” আসুন না, আমরাও প্রতিযোগিতায় নামি ওই ছেলের সাথে। সে যদি ডানাকাটা পরীকে উপেক্ষা করতে পারে, তাহলে কেন আমরা সামান্য পর্ন ভিডিও দেখা ছাড়তে পারব না হস্তমৈথুন বন্ধ করতে পারব না?