দ্বিতীয় দিন – সন্ধ্যা

সন্ধ্যা ৬টা 

মলুদ ফাউইকে যতবারই দেখে, ততবারই ধোঁকা খায় ক্যামিল। চেহারা দেখেই মনেই হয় না এই লোক এতো বড় অপরাধী। যদিও শুধু নামের মাঝেই মরোক্কান পরিচয় বেঁচে আছে, তাছাড়া চেহারায় এর কোনো ছাপই নেই। প্রায় তিন পুরুষ ধরে নানান জাতির সাথে মেলামেশার ফল খুবই বিস্ময়কর। এভাবেই উত্তর আফ্রিকার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলেছে তারা। মলুদের মুখ সেই ইতিহাসেরই প্রতিচ্ছবি। হালকা বাদামী চুল, লম্বা নাক, চওড়া চোয়াল, নীল-সবুজ চোখ। তবে চোয়ালে থাকা ক্ষতের দাগ তার চেহারায় ভিন্ন এক মাত্রা দিয়েছে। বয়স ত্রিশ থেকে চল্লিশের মাঝামাঝি হবে। যদিও তার বয়স অনুমান করা কষ্টসাধ্য। পুলিশের ফাইল ঘাটতে শুরু করলো ক্যামিল। সেখান থেকে জানতে পারলো, ছোট বেলা থেকেই অপরাধ জগতে জড়িত সে। তার বয়স সাইত্রিশ বছর। 

ক্যামিলের বিপরীতে বেশ আরাম করে বসে আছে সে, তবে চোখ সরাচ্ছে না। যেন চোখ সরালে পিস্তল বের করবে ক্যামিল। তবে জেল থেকে এখানে নিয়ে আসায় কিছুটা বিরক্ত মনে হলো তাকে। দশ বছরের সাজা হলেও পরবর্তীতে তা সাত বছরে নেমে আসে। ইতোমধ্যে দুই বছর পার করে ফেলেছে সে। 

ক্যামিলের অপ্রত্যাশিত আগমনে বেশ বিষ্মিত হয়েছে ফাউই। কোনো পুলিশ অফিসারকে বিশ্বাস না করার মন্ত্রে দীক্ষিত সে। তাই হাত গুটিয়ে সোজা হয়ে বসে রইলো। এখন পর্যন্ত উপস্থিত কেউই কোনো কথা বলেনি। কিন্তু চোখের ভঙ্গিতে অনেক কিছুই বলা হয়ে গেছে। 

কারাগারে কোনো কিছু গোপন থাকে না। কোনো বন্দির সাথে কেউ দেখা করতে আসতে না আসতেই কারাগার জুড়ে সে খবর ছড়িয়ে যায়। ফাউই এর মত মাগির দালালের কাছে ক্রিমিনাল ব্রিগেডের এক অফিসারের কী দরকার? 

শেষমেশ একেক জন একেক রকমের রসালো খবর ছড়ানো শুরু করবে। গুজবের সাথে বিভিন্ন দলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট থাকে। তাই দলের স্বার্থে গুজবের ধরনও পাল্টে যায়। তৈরি হবে ভুল তথ্যের জটিল এক জাল। 

ঠিক এই কারণেই এখানে এসেছে ক্যামিল। ফাউই এর দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে সে। কিছুই করার দরকার নেই তার। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব চলছে। এমনকি আঙুল তোলার কষ্টটুকুও করতে হবে না তার। 

কিন্তু, এই নিরবতা বড্ড অস্বস্তিকর। 

এখনো শক্ত হয়ে বসে আছে ফাউই। ক্যামিলও নড়ছে না। তবে ভাবছে, কমিশনারের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হওয়ার সময় এর নামটাই কেন মাথায় এলো। অবচেতনভাবেই নিজের পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু মস্তিষ্কের সচেতন অংশের তাল মেলাতে একটু সময় লাগলো। ভিনসেন্ট হ্যাফনার অবধি পৌঁছানোর সবচেয়ে দ্রুত পথ এটাই। 

দুর্গম এক পথ বেছে নিয়েছে ক্যামিল। এর শেষ দেখতে চাইলে কষ্ট করেই তা অর্জন করতে হবে। দমবন্ধকরা এক অনুভূতি হলো তার। ফাউই এমন এক নজরে তাকিয়ে না থাকলে উঠে গিয়ে জানালা খুলে দিতো। কারাগারে আসলেই দমবন্ধ করা অনুভূতি হয় ক্যামিলের। 

বড় করে কয়েকবার শ্বাস নিলো ক্যামিল 

কতোটা আত্মবিশ্বাসের সাথে ‘সন্দেহভাজন তিনজনের’ কথা বলেছিল, সে কথা মনে পড়লো ক্যামিলের। তার মস্তিষ্ক অত্যন্ত দ্রুত কাজ করে। একটা কথা বলার পর, সেটার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে। এই বিষয়টা, সে এতোক্ষণে বুঝতে পারলো। 

ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলছে। দমবন্ধকরা এই রুমে না বলা কথাগুলোই যেন বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। 

শুরুতে ফাউই ভেবেছিল, দুইজনের মাঝে কে আগে ভেঙে পড়ে সেটার পরীক্ষা চলছে। পুলিশের অত্যন্ত সস্তা কৌশল। ভেরহোভেনের মত একজন অফিসার, এমন কৌশলের আশ্রয় নেয়ার বেশ বিস্মিত সে। তারমানে, ঘটনা অন্যকিছু। যেহেতু ফাউই বেশ চালাকচতুর, তাই একটা সিদ্ধান্তে নিলো সে। পায়ের দিকে ঝুঁকে গেল। 

এমন কিছুই আশা করছিল ক্যামিল। তাই ওদিকে তাকানোরও প্রয়োজন বোধ করলো না। এদিকে নিজের লাভের কথা ভেবেই কাজ করছে ফাউই। 

দুইজনেই অপেক্ষা করলো। দশ মিনিট। পনেরো মিনিট। বিশ মিনিট। এরপরেই এই নিরবতার সমাপ্তির ইঙ্গিত দিলো ক্যামিল। টেবিলের উপর হাত রাখলো সে। 

“এটা ভাবার কোনো কারণে নেই যে আমি বিরক্ত কিংবা অন্য কিছু…” 

উঠে দাঁড়ালো ক্যামিল। এখনো বসে আছে ফাউই। বিকট এক হাসি দিলো সে। 

“আপনার হয়ে কী করতে হবে আমার? বার্তাবাহকের কাজ?” 

দরজার কাছে গিয়ে তাতে টোকা দিলো ক্যামিল। যাতে করে কেউ এসে দরজা খুলে দেয়। 

“বলতে গেলে, তাই।” 

“আর, এর বিনিময়ে আমি কী পাবো?” 

চমকে উঠলো ক্যামিল । 

“কী…? তুই আবার কী চাস?” 

দরজা খুলে গেল। নিরাপত্তারক্ষী একটু সরে গিয়ে বের হবার জায়গা দিলো ক্যামিলকে। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে রইলো সে। 

“আমাদের আলাপচারিতা বেশ জমে উঠেছিল। মলুদ, যা বলতে চাইছিলাম…তোকে যে লোকটা ফাঁসিয়ে দিলো…ধুর, নামটা যেন কী? একটু আগেও তো মনে ছিল…”

*** 

ফাউইয়ের বিরুদ্ধে কে ষড়যন্ত্র করেছিল, তা সে নিজেও জানে না। জানার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ওই একটা নামের জন্য আরো চার বছর জেল খাটতে রাজি আছে সে। একথা সবাই জানে। কিন্তু 

ওই লোককে খুঁজে পেলে ফাউই কী করবে, তা কেউ জানে না। 

মাথা নাড়লো সে। দুজনের মাঝে অলিখিত এক চুক্তি হয়ে গেছে।

এটাই ক্যামিলের প্রথম বার্তা ।

আর ফাউইয়ের সাথে দেখা করার পর এখন বলাই যায়, এক খুনির সাথে চুক্তি করেছি আমি। 

যদি ওই লোকের নাম বলে দেই, তাহলে আমি যা বলবো তাই করবে ফাউই। 

ওই নামের বিনিময়ে, তোকেও খুঁজে বের করে দেবে ফাউই। আর কিছু বুঝে উঠার আগেই, তোর অবধি পৌঁছে যাবে ও। 

তাই, এখন থেকেই নিজের দিন গুণতে শুরু কর। 

.

সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ 

নিজের ডেস্কে বসে আছে ক্যামিল। সহকর্মীরা একটু পর পর দরজায় উঁকি দিচ্ছে। কেউ হাত নাড়ছে। কমিশনার যে তাকে ঝাড়ি দিয়েছে একথা সবাই জানে। আপাতত এই বিষয়েই আলাপ আলোচনা চলছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ‘জাতিগত শুদ্ধতাসাধন’ অপারেশনে অংশ নেয়া অফিসারগণ। তাদের অবশ্য চিন্তার কিছু নেই। ইতোমধ্যে ক্যামিলকে সরানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে কমিশনার, এমন কথাও বাতাসে ভাসছে। পরিস্থিত তো খুবই খারাপ। কিন্তু ক্যামিল আসলে এমন কী করলো? এর উত্তর কেউ জানে বলে মনে হচ্ছে না। এমনকি লুইস পর্যন্ত একটা কথা বলেনি এই বিষয়ে। তাই নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ছে-তার মতো একজন অফিসার, কিছু না কিছু তো একটা করেছেই, যাতে রাগে ফুঁসছে কমিশনার। তদন্তকারী ম্যাজিস্ট্রেট তো এই অপারেশনে জড়িতে সবাইকে জেরা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনকি কন্ট্রোলার জেনারেল লা গুয়েনও মুখ গোমরা করে বসে আছে। এদিকে চায়ের কাপে ঝড় তোলার মত, রিপোর্ট টাইপ করছে ক্যামিল। দেখে মনে হচ্ছে এই দুনিয়ায় তার কেউ নেই। ডাকাতি যেন স্বয়ং তার ঘরেই হয়েছে। আঁতে ঘা লেগেছে তার। সহকর্মীদেও মাঝে কানাঘুষা শুরু হয়ে গেছে; আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। তোর কী মনে হয়? আমারও কোন ধারণা নেই। কিন্তু এটা মানতেই হবে, ব্যাপারটা খুবই অদ্ভুত। 

আসন্ন ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কমানোর জন্য রিপোর্টটা খুব কাজে দেবে, তা ভালোমতোই জানে ক্যামিল। আরেকটু সময় দরকার তার। এমনকি এক বা দুইদিন হলেও চলবে। যদি তার কৌশল কাজে দেয়, তাহলে হ্যাফনারকে খুঁজে পেতে বেশি সময় লাগবে না। 

এই রিপোর্টের পেছনে একটাই উদ্দেশ্য : অতিরিক্ত দুইদিন সময় আদায় করা। 

একবার হ্যাফনারকে হাতে পেলেই সব পরিস্কার হয়ে যাবে। এই কেস জুড়ে এতো ধোঁয়াশা, সব মুছে যাবে। নিজের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ব্যাখ্যার সুযোগ পাবে ক্যামিল। হয়তো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেবে, এমনকি বহিষ্কৃতও হতে পারে। হয়তো চিরদিনের জন্য প্রমোশনের আশা ছেড়ে দিতে হবে। অন্য কোথাও বদলি করে দিতে পারে। কিন্তু এসব নিয়ে খুব একটা চিন্তিত না সে। হ্যাফনার জেলের ভেতর থাকা মানে অ্যানি নিরাপদ। এছাড়া আর কিছুই চাওয়ার নেই তার … 

*** 

জটিল আর গুরুত্বপূর্ণ এই রিপোর্টের জন্য আবারো ডেস্কে বসলো ক্যামিল, যদিও রিপোর্ট তৈরিতে খুব একটা সিদ্ধহস্ত না সে। কিছুক্ষণ আগে স্কেচপ্যাড থেকে ছিড় ফেলা কয়েকটা পৃষ্ঠার কথা মনে পড়লো তার। দোমড়ানো কাগজের টুকরা মেঝে থেকে তুলে নিলো। পেন্সিলে আঁকা হ্যাফনারের পোট্রেট। হাসপাতালের বিছানায় শায়িত অ্যানির স্কেচ। স্কেচটা টেবিলে রেখে গোরিনকে কল দিলো সে। এই নিয়ে তৃতীয়বার ফোন ধরলো না গোরিন। যদি এরপরেও কোনো সাড়া না দেয়, তার মানে ক্যামিলের সাথে কথা বলতে চায় না সে। এদিকে কন্ট্রোলার জেনারেল না গুয়েন কয়েক ঘণ্টা ধরে ক্যামিলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। পরপর চারটা ম্যাসেজও দিয়েছে, ‘এসব কী শুরু করলে, ক্যামিল? তাড়াতাড়ি ফোন দাও আমাকে।’ রেগে আগুন হয়ে আছে সে। অবশ্য তা হওয়ারই কথা। রিপোর্টেও প্রথম লাইন লিখতে না লিখতেই ক্যামিলের ফোন বেজে উঠলো। লা গুয়েন। এবার আর ভুল করলো না ক্যামিল। ফোন ধরেই চোখ বন্ধ করে ফেলল সে। আর হালকা পাতলা নাটুকে কথাবার্তার প্রস্তুতি নিলো ।

কিন্তু লা গুয়েনের কণ্ঠস্বর বেশ শান্ত আর স্বাভাবিক মন হচ্ছে। 

“আমাদের একটু কথা বলা দরকার না, ক্যামিল?” 

চাইলে রাজি হতে পারে কিংবা মানাও করে দিতে পারে ক্যামিল। অনেকদিনের বন্ধু লা গুয়েন, সমস্ত বিপদে ক্যামিলের পাশে থেকেছে। এমন এক বন্ধু, যার জন্য সব করতে পারবে ক্যামিল। কিন্তু কিছুই বলল না সে। 

এমন কিছু মুহূর্ত থাকে, যা পরবর্তীতে জীবনের নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায়। এখন ঠিক এমনই এক মুহূর্ত ক্যামিলের জন্য, তবুও কিছু বলল না সে। 

তবে এমন না যে হুট করেই আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়েছে কিংবা অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগছে ক্যামিল। বরং, পুরোপুরি স্বাছন্দ্যবোধ করছে সে। খালি একটা পৃষ্ঠার কোণায় খুব দ্রুত অ্যানির স্কেচ করে ফেলল। নিজের অলস সময়ে এই কাজ বেশ পছন্দ তার। একটা সময়ে আইরিনের এমন অসংখ্য স্কেচ করেছে ক্যামিল। 

সর্বোচ্চ সহানুভূতিশীল স্বরে কথা বলার চেষ্টা করছে লা গুয়েন। 

“তুমি তো পুরো তোলপাড় করে ফেলেছো। নানা জায়গা থেকে আমাকে ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছে কোনো আন্তর্জাতিক অপরাধীর খোঁজ পেয়েছি কি না। পুরো ল্যাজেগোবরে অবস্থা। এমনকি ইনফর্মারদেরও ছাড়োনি। ওরাও আমাকে ফোন দিয়েছিল। একেকজন ইনফর্মার জোগাড় করতে দিনের পর দিন খাটে অফিসাররা। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে ওদের কাজ এক বছর পিছিয়ে দিয়েছো তুমি। আর রাভিচের মৃত্যু পুরো পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে। তাই, এখন আমাকে বলো এসবের পেছনে মূল উদ্দেশ্য কী?” 

এখনো চুপ করে রইলো ক্যামিল। মাথা থেকে অ্যানির চিন্তা কিছুতেই সরাতে পারছে না। 

“তুমি কি আদৌও শুনছো, ক্যামিল?” 

“হ্যাঁ, শুনছি, জেন।” 

“তোমাকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে পারবো কি না, আমি নিজেও জানি না। বুঝতে পারছো তো? ম্যাজিস্ট্রেটকে শান্ত করতে আমার কালোঘাম ছুটছে। তাকে হালকা করে দেখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে একটু আগে। এখনো সময় আছে, আমাকে সব খুলে বলো। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমানো যাবে।” 

পেন্সিলটা রেখে দিলো ক্যামিল। অ্যানির পোট্রেটটা সুন্দর করতে গিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। এমনটাই হওয়ার কথা। স্কেচ সবসময় স্বতঃস্ফূর্ত হতে হবে; বদলানোর চেষ্টা করলেই নষ্ট হয়ে যায়। 

“বিষয়টা ব্যক্তিগত, তাই না, ক্যামিল? ভিক্টিমের সাথে কোনো সম্পর্ক আছে তোমার?” জিজ্ঞেস করলো লাগুয়েন। 

“মোটেই না, জেন, এমন কেন মনে হচ্ছে তোমার?” 

দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো লা গুয়েন। 

“কোনো ঝামেলা হলে, জবাবদিহি আমাকেই করতে হবে।” 

 হুট করেই একটা ভাবনা এলো ক্যামিলের মাথায়। বুঝতে পারলো, এর সাথে শুধু ভালোবাসাই জড়িত না। অন্য কোনো ব্যাপার আছে। ঘন অন্ধকার এক পথ বেছে নিয়েছে সে। যার শেষ কোথায়, তা নিজেও জানে না। কিন্তু এটা ঠিকই বুঝতে পারছে, অ্যানির প্রতি অন্ধ ভালোবাসাই একমাত্র কারন নয়। 

ভেতর থেকে কিছু একটা তাড়না দিচ্ছে তাকে। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে এই পথ পাড়ি দিতে হবে তার। 

মূলত তদন্তের ক্ষেত্রে সারাজীবন যা করে এসেছে, এখনো তাই করছে সে। ঘটনার শেষ দেখার জন্য নাছোড়বান্দার মত লেগে থেকেছে। সমস্ত ধোঁয়াশা দূর না হওয়া পর্যন্ত তার মনে শান্তি আসেনি। 

“যদি এখনো কিছু না বলো,” ক্যামিলের চিন্তায় ছেদ পড়লো, “যদি আমাকেও কোনো ব্যাখ্যা দিতে না পারো, তাহলে আর কিছুই করার থাকবে না। উপরের মহলে পাঠানো ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না মিচার্ডের। 

সেক্ষেত্রে তোমার ব্যাপারে তদন্ত করা ছাড়া…” 

“কী…? কিসের ব্যাপারে তদন্ত?” 

আবারো দীর্ঘশ্বাস ফেলল লা গুয়েন।

“ঠিক আছে। যা খুশি করো তুমি।”

.

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *