কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১১

১১

টেলিফোনটা রেখে দিলে দীপঙ্কর। মিস্টার ঘোষালের সঙ্গে এতক্ষণ অনেক চিৎকার করেছে।

দীপঙ্করের মাথা থেকে পা পর্যন্ত একেবারে শির-শির করে উঠলো। আশ্চর্য! তার চোখের আড়ালে এত কান্ড ঘটে গেছে পৃথিবীতে। এত অন্যায়, এত অনাচার। প্রথমে যখন মধু বলেছিল তখনও বিশ্বাস হয়নি কথাটা। ভেবেছিল অন্য কেউ। তারপর এতদিন ছুটিতে কেটে গেছে। মা’র মৃত্যুটা একেবারে হঠাৎ বজ্রাঘাতের মত তার জীবনে এসে লেগেছিল। অথচ বাড়িতে ভালো লাগতো না। মনে হতো কোথায় যেন জীবনের ছন্দপতন হয়ে গেছে হঠাৎ। আত্মপরীক্ষার অজ্ঞাতবাসে দীপঙ্কর আবার নিজেকে গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করেছিল। সেদিন হঠাৎ খবরের কাগজটা খুলেই চমকে উঠেছিল সকালবেলা। বর্মা রোগ ক্লোজড্। ঊনিশ শো ছত্রিশ সালে যে-রাস্তা তৈরি হয়েছিল সেই রাস্তা এতদিনে বন্ধ হয়ে গেল। উনিশ শো চল্লিশ সালের জুলাইতে। জাপান য়্যাক্সিদের দলে যোগ দেবার পরেই যুদ্ধের ভয় বেড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে ইন্ডিয়ায় আসবার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট। এখন? এখন কী হবে? ভুবনেশ্বরবাবু আসবেন কী করে?

সিঁড়ির গোড়ায় কাশীর সঙ্গে দেখা। বললে—আবার কোথায় চললেন?

দীপঙ্কর বললে—একবার ঘুরে আসছি—

সকালবেলা। বেলা হয়ে গেছে বেশ। হঠাৎ একটা পোস্ট্যাল্ পিওন সাইকেল চড়ে এসে হাজির। বলেছিল—দীপঙ্কর সেন কার নাম স্যার?

দীপঙ্কর বললে—আমার। আমার চিঠি আছে নাকি?

সত্যিই তো, টেলিগ্রাম করতে যাবে কে আবার তাকে। তার সম্বন্ধে কে এত আগ্রহী।

—আপনি টেলিগ্রাম করেছিলেন বর্মায়? বি মিত্রের নামে?

দীপঙ্কর বললে—হ্যাঁ, কিন্তু সে তো অনেকদিন আগে—

—সে টেলিগ্রাম ফিরে এসেছে—এই নিন্।

—কেন?

পিওন বললে—এই খামটায় সই করে দিন একটা—

দীপঙ্কর সই করে দিলে। তারপর ভাল করে পড়ে দেখলে টেলিগ্রামটা। লেখা রয়েছে—য়্যাড্রেসী নট্ ট্রেসেবল্! ঠিকানায় লোক পাওয়া গেল না! আশ্চর্য তো! অত বড় বিরাট টিম্বার মার্চেন্ট, তাঁর ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যাবে না! যুদ্ধ বেধেছে বলে কি সব ওলোট্-পালোট্ হয়ে যাবে!

সই নিয়ে পিওনটা চলে গেল। পিওনটা যাবার সময় বলে গেল—ভুল ঠিকানা হয়ত, ভাল করে দেখুন —

দীপঙ্কর টেলিগ্রামটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল খানিকক্ষণ! ভুল ঠিকানা কেন হবে? লক্ষ্মীদি যেমন লিখে দিয়েছিল, সেই ঠিকানাতেই টেলিগ্রাম করা হয়েছিল। কোনও ভুল নেই। দীপঙ্কর আবার ওপরে নিজের ঘরে উঠে এল। বাক্সর মধ্যে কাগজপত্র ছিল অনেক। খুঁজে খুঁজে কাগজখানা বের করল। পেন্সিলে লেখা সতীর বাবার ঠিকানা। কোনও ভুল নেই। হয়ত ভালো করে খোঁজেনি পোস্টাপিসের লোক। কিম্বা হয়ত যুদ্ধের সময় পোস্টাপিস বদলে গেছে, থানা বদলে গেছে। লক্ষ্মীদির দেওয়া ঠিকানা তো। লক্ষ্মীদি কতদিন আগে বর্মা ছেড়ে চলে এসেছে। এখনকার বর্মার অবস্থা তো জানে না। তাছাড়া কলকাতাতেও কত সব বদলে গেছে। ময়দানে মিলিটারি ক্যাম্প হয়েছে, মাঠের ওপরে সার-সার মিলিটারি লরী, বেঁটে বেঁটে জিপ্ সাজানো থাকে। সারা কলকাতার চেহারাই বদলে গেছে। লেকের দিকে গেলে আর চেনা যায় না। ছাউনি পড়েছে ফাঁকা জায়গাগুলোতে। ছেলেদের খেলবার মাঠের ওপর শিট্রেঞ্চ খুঁড়েছে। আর গ্রামের ভেতরে কোথায় কী হয়েছে, কে জানে!

লোকে বলে—একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর-এবার মুসোলিনী নামলো, লড়াইটা জমবে—

নরওয়ের রাজা দল-বল মন্ত্রী-পাত্র মিত্র-কোটাল নিয়ে এসে ইংলন্ডে উঠেছে। হিটলারের সেপাইরা প্যারিস নিয়ে নিয়েছে। রাশিয়া লিথুয়ানিয়া নিয়ে নিয়েছে। একে একে সব যাবে। সব যাবে। কেউ রাখতে পারবে না। পৃথিবীর ভূগোলটাই বদলে গেল। নতুন করে আবার গ্লোব তৈরি করতে হবে, নতুন করে অ্যাটলাস আঁকতে হবে, নতুন রং লাগাতে হবে তাতে। কোথায় বর্মার কোন্ কোণে ভুবনেশ্বর মিত্র বিরাট কাঠের ফ্যাক্টরি করছেন, সে কি আর ঠিক তেমনি আছে?

বিকেল বেলা দীপঙ্কর আবার বেরোল। সারাদিন ধরে কোনও কিছু ঠিক করা গেল না। বর্মা রোড বন্ধ হবার সঙ্গে ভুবনেশ্বরবাবুর কলকাতায় আসার কোনও সম্বন্ধ আছে নাকি?

নির্মল পালিত সেদিন ছিল বাড়িতে। অনেক ফাইল-টাইল নিয়ে নাড়া-চাড়া করছে। একজন টাইপিস্ট এক কোণে বসে টাইপ কারছিল কতকগুলো কাগজ। দীপঙ্করের চেহারা দেখে অবাক হয়ে গেল. নির্মল। বললে—কীরে, কী হয়েছে তোর?

—মা মারা গেছে!

নির্মল জিজ্ঞেস করলে—তারপর আছিস্ কেমন?

দীপঙ্কর পকেট থেকে টেলিগ্রামখানা বার করলে। বললে—ভুবনেশ্বরবাবুর নাম শুনেছ তো? মিস্টার মিত্র? সেই ঠিকানায় টেলিগ্রাম পাঠিয়েছিলাম, আজ ফেরত এল, ব্যাপার কী?

নির্মল বললে—দেখি—

বলে হাতে নিলে চিঠিখানা। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখলে। তারপর বললে—ঠিক হয়েছে, ঠিকানা বদলে গিয়েছে—

—কিন্তু ঠিকানা বদলাবে কেন?

নির্মল বললে—আমার এক বার্মার ক্লায়েন্ট আছে, সে চিঠি লিখেছে এই ক’দিন আগে লিখেছে—ওখানে সাউথ-ইস্ট-এশিয়ার ওয়ারফ্রন্ট হচ্ছে একটা। ওটা তো জাপানের আরো কাছে, ওখানেই আগে যুদ্ধ বাধবে, বার্মা যে খুব ভালনারেবল্ স্পট্ ওখানে আরো হিউজ ওয়ার প্রিপারেশন হচ্ছে লিখেছে—

—তাহলে কী করবো? কোথায় তাঁর ঠিকানা পাবো?

নির্মল হঠাৎ বলে উঠলো—বাই-দি-বাই, খবর শুনেছিস, মিসেস ঘোষের পুত্রবধূ- সনাতনবাবুর স্ত্রী রে-সে নাকি তোদের রেলওয়ে অফিসারের ফ্ল্যাটে গিয়ে উঠেছে—

—সে কি? তুমি কী করে জানলে?

দীপঙ্কর চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে উঠলো। উত্তেজনায় আর নিজেকে স্থির রাখতে পারলে না।

—তুই জানিস না? আমি যে কেস টেক-আপ করেছি। এই দ্যাখ—মকদ্দমা হবে। আমি মা-মণিকে বলেছি, আমি ব্রিফ্‌ নেব। বলবো বিশ হাজার টাকার গয়না নিয়ে বাড়ি থেকে অ্যাবসকড্ করেছে। থেফট্, চীটিং—

—কোথায় আছে সতী?

নির্মল বললে-প্যালেস-কোর্টে—

কথাটা কানে যেতেই দীপঙ্কর সোজা চেয়ার থেকে উঠে এসেছিল। চোখের সামনে যেন সমস্ত কলকাতাটা চক্রাকারে ঘুরছিল তখন। নির্মল আরো যেন কত কী বলেছিল, স্পষ্ট করে সে-সব কিছুই কানে যায়নি তখন। সব কথা কানে নেবার মত মানসিক অবস্থাও তখন নয়। প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের বাড়িতে যে-নাটক অভিনয় হচ্ছে, তারই কিছু আভাস দিয়েছির নির্মল। এই-ই তো নির্মল পালিতের সুযোগ। সুবর্ণ সুযোগ। এই সব সুযোগ যদি নির্মল পালিত সদ্ব্যবহার করতে পারে, তাহলে সে-ও তার বাবার মত প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, প্রতিপত্তি করতে পারবে কলকাতা শহরে।

নির্মল পালিত ভেতরে গিয়ে দাঁড়াতেই মা-মণি এলেন। নির্মল পালিত বললে— আমাকে ডেকেছেন মা-মণি?

—হ্যাঁ বাবা, বোস, বলছি তোমাকে—আমার বৌমা তো চলে গেছে জানো। তা জানো আর না-জানো চলে গেছে। তোমার কাছে তো কোনও কথা লুকোলে কাজ চলবে না আমার! তাই সমস্ত বলবো বলেই ডেকেছি—

নির্মল পালিত কী যেন বলতে যাচ্ছিল। মা-মণি বললেন—তুমি চুপ করো, আমি আমার কথাটা আগে বলে নিই!

নির্মল পালিত বললে—আপনি অত হাঁফাচ্ছেন কেন মা-মণি, ধীরে সুস্থে বলুন না! এ তো তাড়াহুড়ো করার কাজ নয়—যা করতে হবে ধীরে সুস্থে ভেবে-চিন্তে করতে হবে—

—না বাবা, ধীরে সুস্থে করবার আর সময় নেই বাবা। আমি বাঁচি কি না-বাঁচি, ঠিক আছে?

—ছি মা-মণি, এত মুষড়ে পড়লে চলবে কেন?

—তা মুষড়ে পড়বো না? তুমি সবটা শুনলে আর এ-কথা বলতে না বাবা। আমার আর বেশি দিন বাঁচতে ইচ্ছে করে না। কার জন্যে আর টাকা-কড়ি আগ্‌লাবো? কে আছে আমার? আর কদ্দিন ভূতের ব্যাগার খাটবো বলতে পারো? পেটের শত্তুর বড় শত্তুর। সেই নিজের পেটের ছেলে আজ আমার শত্তুর হলো বাবা? এও আমার কপালে ছিল। বউ না- হয় পরের ঘরের মেয়ে, তার দোষ নেই, সে তো মুখে লাথি-ঝাঁটা মারবেই। নিজের পেটের ছেলেই যদি অমন করে বলতে পারে তো বউ তো বলবেই, হাজার বার বলবে- লক্ষ বার বলবে—তাহলে আমি কার জন্যে এত করি বাবা? কার ভালোর জন্যে করি? আমার কি কম জ্বালা—

সত্যিই ঘোষ-বাড়ির বিধবা গৃহিণীর অনেক জ্বালা। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারে না, কিন্তু ভেতরের খবর ক’জন রাখে! ক’জন বাড়ির ভেতরে ঢুকতে পায়! ঝি-চাকর পর্যন্ত আমায় দেখে মুখ-নাড়া দেয় বাবা। আমি নাকি বৌকাকী, আমি নাকি বৌখাগী শাশুড়ী!

—ছি ছি মা-মণি! এমন কথাও লোকে বলে! আপনার মত শাশুড়ী ক’টা পাওয়া যায় মা-মণি? আর কেউ না-চিনুক, আমি তো চিনি আপনাকে। আপনার মত গিন্নী পেলে কলকাতার সব সংসার সোনা হয়ে যেত মা-মণি। সোনা হয়ে যেত! তাহলে আর হাইকোর্টে এত মামলা-মকদ্দমাও হতো না আর আমাদের প্রোফেশনেও এত আনডিজায়ারেবল্ লোককে আসতে হতো না!

তারপর কাজের কথায় আসে নির্মল। বলে—তা আমাকে কী করতে হবে বলুন? মামলা? আপনার জন্যে আমি সব ঝামেলা নিতে পারি মা-মণি!

—শুধু মামলা নয় বাবা। আরো কাজ আছে, উইল করতে হবে।

নির্মল পালিত এতদিন এই সুযোগই খুঁজছিল। বললে—উইল্ করতে বলেন করতে পারি। কিন্তু কার নামে উইল্ করবেন? আপনার ছেলের নামে করবেন?

মা-মণি মুখ বাঁকালেন। বললে-রক্ষে করো বাবা, নিজের ছেলে শেষকালে আমায় লাথি মারবে, সে আমার সহ্য হবে না, তার চেয়ে আমি ভাগাড়ে মরে পড়ে থাকবো তা- ও ভাল—খুব শিক্ষা হয়েছে বাবা আমার —

—তাহলে এক কাজ করুন না?

—কী কাজ?

নির্মল পালিত বললে—একটা ট্রাস্ট করে যান না—ট্রাস্ট্ করলে আপনার প্রপার্টি কেউ নষ্ট করতে পারবে না, আপনি যেমন-ভাবে টাকা খরচ করতে বলে যাবেন, সেইভাবে খরচ করবে তারা। তা আমি নিজে তার ভার নিতে পারি। আমিও নিজে সেই ট্রাস্টি-বোর্ডের চেয়ারম্যান হতে পারি—আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন তো আর চুরি- জোচ্চুরি চলবে না—

—আমার ছেলে?

—আপনার ছেলেকে আপনি ত্যাজ্য করে যান্—! আমি আপনার ছেলেকে ট্রাস্টে হাত দিতে দেব না। সে আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলবোখন, আপনার কোনও চিন্তা নেই—আপনার ছেলে বা ছেলের-বউ—

—ছেলের বউ-এর কথা ছেড়ে দাও বাবা, তার নাম আর মুখে এনো না আমার সামনে।

নির্মল পালিত বললে—তাহলে আপনি মামলা করুন, ছেলের বউ-এর নামে মামলা করুন—

—মামলা হয়?

–কেন হবে না!

—কী বলে মামলা করবো?

নির্মল পালিত বললে—কেন? বলুন যে আপনার পুত্রবধূ পাঁচ হাজার টাকার গয়না নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে—

মা-মণি নিজের মনেই যেন কিছুক্ষণ ভাবলেন। তারপর বললেন—তা বেশ তো, তাই মামলা করো, তবে পাঁচ হাজার কেন, দশ হাজার টাকার গয়নার জন্যে মামলা করে দাও। কী রকম খরচা পড়বে?

নির্মল পালিত হো হো করে হেসে উঠলো। বললে—আপনি দেখছি আমাকেও বিশ্বাস করেন না—

মা-মণি বললেন—না বাবা, হয়েছে কী, এমন মনের অবস্থা হয়েছে যে কাউকেই আমার বিশ্বাস হয় না আর—নিজের পেটের ছেলে যার এমন করতে পারে তার অবস্থাটা একবার ভাবো দিকিনি তুমি? আমি কি সাধ করে তোমায় ডেকে পাঠিয়েছি বাবা, প্রাণের দায়ে ডেকেছি—

সত্যিই প্রাণের দায় মা-মণির। নিজের ঘরে বসে বসে মতলব আঁটেন সারাদিন। কত সাধের সংসার তাঁর। কত দিক দেখে, কত আট-ঘাট বেঁধে এই সংসারকে এতদিন চালিয়ে এসেছেন এই জন্যে? যাক্, সব পুড়ে-ঝুড়ে যাক্, গোল্লায় যাক্।

সরকারবাবু দোর-গোড়ায় এসে ডাকে—মা-মণি—

মা-মণি ঝাঁজিয়ে ওঠেন—কী? আবার কী সরকারবাবু? তোমাদের কী সময়-অসময় জ্ঞান নেই?

—আজ্ঞে, বউবাজারের বাড়িতে ছাদ ফেটে জল পড়ছে—সারাতে বলছিল—

মা-মণি রেগে চিৎকার করে ওঠেন—সারানো হবে না, বলে দিও যা করতে পারে করুক ওরা, মামলা করুক। আমিও মামলা করতে জানি, বাড়ি আমার, পারে তো নিজেরা সারিয়ে নিক, আর না-পারে তো বাড়ি ছেড়ে দিক, আমি সারাবো না—

সনাতনবাবু খেতে বসে দেখলেন। বললেন—মা-মণি খাবে না?

শম্ভু ছিল কাছে। সনাতনবাবু মা’র ঘরের কাছে গিয়ে বললেন—মা, খাবে না?

মা-মণি প্রথমবার উত্তর দেননি। আর একবার বলতেই বললেন—খোকা, তুমি বিরক্ত কোর না আমাকে, আমার ক্ষিদে নেই—

সনাতনবাবু আর দ্বিতীয়বার অনুরোধ করলেন না। সোজা এসে খেয়ে নিয়ে উঠে আবার নিজের ঘরে গেলেন। তারপর দরজা বন্ধ করে দিলেন ঘরের।

মা-মণি শম্ভুকে ডাকলেন। বললেন—আবার আমার সঙ্গে দাদাবাবুকে খেতে দিয়েছিস্, খবরদার বলছি, কাল থেকে আমাকে আলাদা খাবার দিবি। বাতাসীর মাকে বলে দিস্—বার বার বলে দিয়েছি, তবু হুঁশ হয় না তোদের—

নির্মল পালিত ব্যারিস্টার-য়্যাট-ল এতদিন ঘাস কাটবার জন্যে এ-বাড়িতে আসেনি। বাড়ি থেকে যাবার আগে বললে—যতক্ষণ আমি আছি কিছু ভাববেন না আপনি মা-মণি, দেখবেন আপনার ছেলে ছেলের-বউ সব এসে আপনার পায়ে মাথা খুঁড়বে—তবে আমি ছাড়বো, জানেন, ইংরিজীতে একটা কথা আছে— Mammon is the largest slave-holder in the world—তা দেখুন না, আমি কেমন করে জব্দ করি ওদের—

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *