• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

২.১৬ বহুদিন পরে মামাশ্বশুর-বাড়িতে

লাইব্রেরি » আশাপূর্ণা দেবী » সুবর্ণলতা (১৯৬৭) » ২.১৬ বহুদিন পরে মামাশ্বশুর-বাড়িতে

বহুদিন পরে মামাশ্বশুর-বাড়িতে বেড়াতে এল সুবর্ণ।

বড় ছেলে ভানু সম্প্রতি একটা গাড়ি কিনেছে, বড়বৌ বললো, আপনার ছেলে আসুন না মা, তখন বরং যাবেন–

সুবৰ্ণ তবু ভাড়াটে গাড়ি করেই গেল। বললো, ও বাড়িতে বরাবর। ভাড়াটে গাড়ি করেই গেছি বৌমা, জুড়িগাড়ি থাক।

বৌ বিড়বিড় করে বললো, যত্ন আদর না নিলে আর কে দেবে?

সুবৰ্ণ গাড়িতে গিয়ে উঠলো।

শ্যামাসুন্দরী সমাদর করে ডাকলেন, এসো মা, এসো।

বয়েস কম হয় নি, মুক্তকেশীর থেকে কম হলেও তাঁর দাদার স্ত্রী। তবু শক্ত আছেন দিব্যি। এখনো নিজে রোধে খাচ্ছেন, হেঁটে গঙ্গাস্নানে যাচ্ছেন!

অনেকদিন দেখেনি সুবৰ্ণ, দেখে আশ্চর্য হলো।

প্ৰণাম করে পায়ের ধুলো নিল, হয়তো দু অর্থে।

শ্যামাসুন্দরী কুশল প্রশ্ন করতে লাগলেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে।

ছেলেপুলেরা কেমন আছে? চাপা, চন্নন, পারুল সব ভাল আছে তো? সেই যা তোমার শাশুড়ীর কাজের সময় সকলের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হলো!

এটা ওটা উত্তর দিতে দিতে হঠাৎ একসময় বলে বসে সুবর্ণ, ভাসুর ঠাকুর বাড়ি আছেন?

কে? জগা? শ্যামাসুন্দরী মুখ বাকিয়ে বলেন, থাকবেন না তো যাবে আর কোথায়? এখন তো সর্বক্ষণ বাড়িতেই স্থিতি।… আমার কানের মাথা খেতে যে বাড়ির মধ্যে এক ছাপাখানা খুলে বসে আছেন!

সুবৰ্ণলতা এ খবরে অবাক হয় না।

সুবৰ্ণলতা যেন এ খবর জানে।

শুধু সুবৰ্ণলতার মুখটা একটু উজ্জ্বল দেখায়।

বলে, বেশ চলছে ছাপাখানা? ভাল ছাপা হয়?

জানিনে বাছা—, শ্যামাসুন্দরী অগ্রাহ্যাভরে বলেন, রাতদিন শব্দ তো হচ্ছে। বলে নাকি খুব লাভ হচ্ছে। বলে, বয়েসকালে এ বুদ্ধি হলে লাল হয়ে যেতাম।… সাতজন্মে তো রোজগারের চেষ্টা দেখি নি। ওই ফোঁটা কাটতো আর মালা ঘুরাতো। তাছাড়া পাড়ার লোকের জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে, রোগ, শোক, দুর্গোৎসব। এইসব নিয়েই ছিল, হঠাৎ এই খেয়াল। মাথায় ঢুকিয়েছে ওই নিতাই। নিজের আখের গোছাতেই বোধ হয় এ প্ররোচনা দিয়েছে। বলে, বাড়িখানা থেকে কিছু উসুল করি. তা তোমার সঙ্গের ওই বিয়ের হাতে আবার অন্ত সব কি বৌমা?

সুবৰ্ণ কুণ্ঠিতভাবে বলে, কিছু না, চারটি ফল, আপনি একটু মুখে দেবেন, ভাসুরাঠাকুর একটু—ইয়ে, আপনাকে আজ একটা কথা বলতে এসেছি মামীমা—

শ্যামাসুন্দরী সুবর্ণর কুণ্ঠিত ভাব দেখে আশ্চর্য হন। বলেন, কি গো বাছা?

বলছিলাম কি—ইয়ে–

থেমে যায় সুবর্ণ।

শ্যামাসুন্দরী সমধিক অবাক হন। সুবৰ্ণলতার এমন কুণ্ঠিত মূর্তিা ও তো সদাই সপ্রতিভা। তা ছাড়া কুণ্ঠার মধ্যে কেমন যেন প্রাথী ভাব! টাকা ধার চাওয়ার ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যায়। কিন্তু সুবৰ্ণলতার ক্ষেত্রে তো সে আশঙ্কা ওঠে না।

তবে?

শ্যামাসুন্দরীর প্রশ্নমুখর দৃষ্টির সামনে একটু অপ্রতিভ হাসি হাসে সুবর্ণ। তারপর আঁচলের তলা থেকে একখানা মলাট বাঁধানো মোটা খাতা বার করে বলে ফেলে, ভাসুর ঠাকুর ছাপাখানা খুলেছেন শুনেছিলাম, তাই একটু শখ হয়েছে, সেই ইয়েতেই আসা। আমি তো আর নিজে মুখে বলতে পারবো না, আপনি যদি বলে দেন!

শ্যামাসুন্দরী বার্ধক্যের চোখে কৌতূহল ফুটিয়ে বলেন, কি জন্যে কি বলবো, আমি তো কিছু বুঝতে পারছি না বৌমা!

সুবৰ্ণলতা মৃদু হাসে, বুঝতে পারবেনও না। তাহলে বলি শুনুন, ছেলেবেলা থেকে আমার একটু লেখার শখ আছে, জীবনভোর সকলের অসাক্ষাতে একটু-আধটু লিখেছি, এই পদ্যটদ্য আর কি। এদানীং গল্পটল্পর ধরনেও কিছু লেখা হয়েছে, তবে ছাপাবার কথা স্বপ্নেও ভাবি নি। ভাসুর ঠাকুর ছাপাখানা খুলেছেন শুনে অবধি মনে উদয় হয়েছে, একখানা বই মতো করে যদি ছাপানো যায়। যা খরচা লাগে আমি দেব, শুধু আগে কেউ যেন জানতে না পারে। একেবারে বই হলে জানবে দেখবে। তা আপনি একটু বলে দেখুন না মামীমা, যদি একটু দেখেন এখন ভাসুরিঠাকুর!

প্রৌঢ় সুবৰ্ণলতার চোখে যেন ভাবাকুল অবোধ কিশোরীর দৃষ্টি।

যে সুবৰ্ণলতা সমুদ্রের স্বপ্ন দেখতো—সে সুবৰ্ণলতা কি আজও মরে নি? কোথাও কোনখানে এতটুকু প্ৰাণ আহরণ করে বেঁচে আছে?… কোথায় আছে সেই অফুরন্ত অগ্নি, যা আজীবন বরফজল নিক্ষেপেও নিভে যায় না?

শ্যামাসুন্দরী তবুও বিস্মিত প্রশ্ন করেন, বই ছাপা হবে? কোথায় সেই বই?

সুবৰ্ণ মুদু হেসে বলে, বই তো পরে। ছাপা হবে এই খাতাটা। এইটা না হয় নিয়ে যান ভাসুর ঠাকুরের কাছে, উনি ঠিক বুঝতে পারবেন।

খাতাখানা হাতে নিয়ে উল্টে-পাল্টে দেখে শ্যামাসুন্দরী হতভম্ব গলায় বলেন, এসব লেখা তুমি লিখেছি? এই খাতা-ভর্তি?

ওই তো পাগলামি—, হাসে সুবর্ণ।

নিজের মন থেকে? না কিছু দেখে?

সুবৰ্ণলতা ছেলেমানুষের মত শব্দ করে হেসে ওঠে, নাঃ, দেখে লিখবো কি? তা হলে আর নিজের লেখা হলো কোথায়?

শ্যামাসুন্দরীর বিস্ময় ভাঙে না, তা হ্যাগো মেজবৌমা, এত কথা তোমার মনে মাথায় এলো কি করে?

সুবৰ্ণলতার মুখে আসে, মনে মাথায় আসে, তা লিখতে পারলে এ রকম সহস্ৰখান খাতাতেও কুলোতো না মামীমা। তবে বলে না। সে কথা।

শ্যামাসুন্দরী উঠে যান।

কিছুক্ষণ পরে প্রেসমালিক জগন্নাথচন্দ্র এসে অদূরে দাঁড়ান।

চেহারা প্ৰায় একই রকম আছে, তেমনি আটসাট খাটামুগুরে গড়ন, তেমনি হত্তেলের মত রং, বদলের মধ্যে কিছু চুল পেকেছে।

আগের মতই পরনে একটা লাল ছালটি, গলায় রুদ্রাক্ষ, কপালে রক্তচন্দনের ফোঁটা।

তার মানে এই বেশেই ছাপাখানায় বসেন। তিনি।

এসে দাঁড়িয়ে গলাখ্যাকারি দিয়ে বলেন, মা, জিজ্ঞেস করো তো বৌমাকে, এ হাতের লেখা কার?

ইশারায় উত্তর পেয়ে শ্যামাসুন্দরী মহোৎসাহে বলেন, বললাম তো সবই বৌমার লেখা!

চমৎকার হাতের লেখা তো!

সপ্ৰংশস দৃষ্টিতে খাতার পৃষ্ঠাগুলো উল্টোতে উল্টোতে জগু বলেন, মেয়েছেলেদের হাতের লেখা এমন পাকা! সচরাচর দেখা যায় না। কিসে থেকে নকল করেছেন?

রী বলে ওঠেন, এই দেখো ভূতুড়ে কথা! বললাম যে, এ সমস্ত বৌমা নিজের মন থেকে বানিয়ে বানিয়ে লিখেছে! বই-লিখিয়েরা যেমন লেখে আর কি!

বল কি? এই গদ্য-পদ্য সব?

সব। এখন আবার শ্যামাসুন্দরী জ্ঞানদাত্রী।

জগন্নাথ মহোৎসাহে বলেন, তুমি যে তাজ্জব করে দিলে মা। এতকাল দেখছি, কই এসব তো শুনি নি!

শ্যামাসুন্দরী বলেন, শুনবি কোথা থেকে। মেজবৌমা তো নিজের গুণ জাহির করে বেড়ানো মেয়ে নয়? তোর ছাপাখানার বাত্রা শুনে সাধ হয়েছে, বলছে যা খরচা পড়বে দেবে, তুই শুধু দেখেশুনে–

খরচের কথা আসছে। কোথা থেকে? খরচের কথা! জগু হৈ-হৈ করে ওঠেন, আমার প্রেসে আবার খরচ কি? রেখে দিয়ে যান বৌমা, কালই প্রেসে চড়িয়ে দেব। কিন্তু অবাক হয়ে যাচ্ছি। বৌমার গুণ দেখে। নাঃ, পিসির সংসারের এই মেজবৌমাটি এসেছিলেন সাক্ষাৎ লক্ষ্মী। ভগবান দিয়েছেনও তাই ঢেলে মেপে! মনের গুণেই ধন। বহু ভাগ্যে এমন লক্ষ্মী পেয়েছিল পেবো।

Category: সুবর্ণলতা (১৯৬৭)
পূর্ববর্তী:
« ২.১৫ বৃষোৎসর্গ
পরবর্তী:
২.১৭ কানায় কানায় পূর্ণ মন নিয়ে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑