২। আন্না ইউনিভার্সিটিতে আমার নবম বক্তৃতা

২. আন্না ইউনিভার্সিটিতে আমার নবম বক্তৃতা

তরুণদের প্রজ্জ্বলিত মন
সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পদ
বিশ্ব জমিনে, বিশ্ব মহাকাশে
আর বিশ্ব তলে।

.

জামুন গাছে বসা হলুদ পাখিটির গান আমার প্রাত:ভ্রমণকে আনন্দদায়ক করে তুললো। আমি আমার উদ্যানে মাঝে মধ্যে জোড়ায় জোড়ায় হর্নবিল পাখির ওড়াউড়ি দেখার চেষ্টা করে থাকি। রাষ্ট্রপতিভবনের পর দশ নম্বর রাজাজী মার্গে আমার আবাসস্থল। আমাকে জানানো হয়েছিল, এক সময় ওই বাড়িটাতে নতুন দিল্লির স্থপতি এডুইন লুটিয়েনস বসবাস করতেন। সময় বহে যায় বাতাসের মতো। আমি ভারত ও বিদেশে শিক্ষাদান আর গবেষণা কর্মে নিয়োজিত থাকি। ক্লাসরুমে উৎসাহী আর উদ্দীপ্ত তরুণ-তরুণীদেরকে পেয়ে আমিও শক্তি সঞ্চয় করি।

লোকজন ভারতের উন্নয়নের মিশনকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে এই আশায় শেষ পাঁচ বছর আমি অসীম আশায় বুক বেঁধে ছিলাম। আমি আশায় ছিলাম যে তারা তাদের করণীয় কাজ করার কথা আমাকে জানাবে। রাষ্ট্রপতি থাকাকালের অনেক ঘটনা আমার মানসপটে ভাস্বর হয়ে আছে। সেই ঘটনাগুলোর মধ্যে বৈচিত্র্যময় এই দেশের নানা বৈচিত্র্যেরই প্রতিফলন অবশ্যই ছিল। বিষয়গুলো গৌরবান্বিত অতীত ও চ্যালেঞ্জিং বর্তমানের মেলবন্ধনে ভাস্বর ছিল। একটা বার্তা কিন্তু বিষয়গুলোর মধ্যে প্রতিভাত হয়েছিলঃ ২০২০ সালে ভারত উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে পৌঁছাবে।

.

২০০২ সালের ১০ জুনের সকালে আন্না ইউনিভার্সিটির পরিবেশ অন্যান্য দিনের সকালের মতোই সুন্দর ছিল। আমি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০১ এর জুন মাস পর্যন্ত কাজ করেছিলাম। শান্ত স্নিগ্ধ বিশাল ক্যাম্পাসে প্রফেসর এবং অনুসন্ধিৎসু ছাত্রছাত্রীদের সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষকতা ও গবেষণার কাজ করে আমার সময় আনন্দের সাথে কেটেছিল। কর্তৃপক্ষ আমার ক্লাসের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নির্ধারিত করে দিয়েছিল ষাট জন। আমার প্রত্যেকটা লেকচারে ক্লাসরুমে ৩৫০ জন ছাত্রছাত্রীরও বেশি উপস্থিত থাকতো। ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় ছিল না। তরুণ-তরুণীদের আশা-আকাঙ্খাকে হৃদয়াঙ্গম করা ও আমার ন্যাশনাল মিশনগুলো থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে তাদের সঙ্গে শেয়ার করা আমার উদ্দেশ্য ছিল। পোস্ট গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে দেওয়া আমার দশটা লেকচারের তথ্যাদি তাদের কাছে প্রকাশ করার ইচ্ছাও আমার ছিল।

ন্যাশনাল মিশনের দ্বারা আমি কি অর্থ করেছিলাম? আমি স্পেস লঞ্চ ভিইকল, এসএলভি-৩, আইজিএমডিপি (ইন্ট্রাগ্রেটেড গাইডেড মিসাইল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম), দ্য ১৯৯৮ নিউক্লিয়ার টেস্টস, এবং দ্য ইন্ডিয়া ২০২০ রিপোর্ট প্রিপিয়ার্ড বাই টিএফএসি (টেকনোলজি ইনফরমেশন, ফোরকাস্টটিং এন্ড অ্যাসেসমেন্ট কাউন্সিল)। এগুলো ছিল জাতির উন্নয়নের পরিমাপযোগ্য মাপকাঠি। ৪০ কেজি ওজনের রোহিনী নামের দেশীয় উপগ্রহটিকে পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে প্রেরণই এসএলভি-৩ প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য ছিল। উপগ্রহটির সাহায্যে আইনোস্ফেরিক পরিমাপ করা সম্ভব হবে। আইজিএমডিপি এর উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধকৌশলগত মাল্টিপ্লিয়ার মিশাইল সিস্টেম গড়ে তোলা। অগ্নি ভি মিশাইল হচ্ছে আইজিএমডিপি এর সর্বশেষ সফলতা। ১১ এবং ১৩ মে ১৯৯৮ তারিখে এর নিউক্লিয়ার টেস্ট করা হয়। ফলশ্রুতিতে ভারত একটা নিউক্লিয়ার রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে। টিআইএফএসি হচ্ছে ভারতকে ২০২০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার রোড ম্যাপ।

আমার নবম লেকচারটির টাইটেল ছিল ‘ভিশন টু মিশন’, কয়েকটি কেস স্টাডিও এই লেকচারের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আমার বক্তৃতা শেষ করার পর আমাকে অসংখ্য প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। আমার ক্লাসের সময় এক ঘন্টা থেকে বাড়িয়ে দু’ঘন্টা করা হয়। বক্তৃতা দেবার পর আমি আমার অফিসে ফিরে আসি। অন্য আর একদিন একদল রিচার্স স্টুডেন্ট আমার ওখানে লাঞ্চ করেন। রাঁধুনি প্রাসাংগাম হাসি মুখে আমাদেরকে সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করে। লাঞ্চের পরে আমি পরবর্তী ক্লাসের জন্য প্রস্তুতি নিলাম। সন্ধ্যার দিকে আমি আমার রুমে ফিরে এলাম।

ফিরে আসা মাত্রই আন্না ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর এ কল্যানিধি আমার সাথে মিলিত হলেন। তিনি আমাকে বললেন যে দিনের বেলা তার অফিস আমার সাথে কথা বলার জন্য অনেক টেলিফোন কল করেছেন। তিনি চলে যাবার পর আমি আমার রুমে ফিরে গেলাম। আমি টেলিফোন বাজতে শুনলাম। রিসিভার কানে লাগাতেই অপর প্রান্ত থেকে একটা কন্ঠ আমাকে বললেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনার সাথে কথা বলতে চান।’ প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছি এমন সময় অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু আমার সেল ফোনে কল করলেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটা টেলিফোন পাবেন। আপনি অনুগ্রহ করে নেতি বাচক জবাব দেবেন না।

যখন আমি নাইডুর সাথে কথা বলছিলাম তখনই প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর টেলিফোন কল পেলাম। প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘কালাম, আপনার একাডেমিক জীবন কেমন চলছে?’

‘চমৎকার,’ আমি জবাবে বললাম।

বাজপেয়ী বলে চললেন, ‘আপনার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ খবর আছে। আমি এইমাত্র সমস্ত কোয়ালিশন পার্টির নেতাদের এক বিশেষ সভা থেকে আসছি। আমরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে জাতি চায় আপনি রাষ্ট্রপতি হোন। আজ রাতে এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে যাচ্ছি। আমি আপনার সম্মতি পেতে চাই। আমি প্রত্যাশা করি আপনি এ বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ বলবেন, অবশ্যই ‘না’ বলবেন না। বাজপেয়ীর নেতৃত্বে প্রায় দু’ডজন পার্টির সমন্বয়ে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক এ্যালায়েন্স (এনডিএ) গঠিত। সবসময় তাদের মধ্যে মতের অমিল হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

রুমে ঢুকে বসবার মতো সময় হাতে পেলাম না। ভবিষ্যতের নানা ভাবনা আমার সামনে হাজির হলো। সব সময়ই আমাকে ঘিরে ছাত্র ও শিক্ষকরা থাকলেও পার্লামেন্টে জাতির উদ্দেশ্যে একটা ভিশন পেশ করার ইচ্ছে আমার আছে। বেশ দিন থেকেই আমার মনের মধ্যে একটা উন্নয়নের রূপরেখা ঘুরপাক খাচ্ছিল। আমি বললাম, ‘বাজপেয়িজী (আমি তাকে সাধারণত এই বলেই সম্বোধন করতাম।) আমাকে সিদ্ধান্ত নেবার জন্য কি দুই ঘন্টা সময় দিতে পারবেন? রাষ্ট্রপতি পদে আমাকে মনোনয়ন দিতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সকলেই একমত আছে কিনা সেটাও আমার জানা প্রয়োজন।’

বাজপেয়ী বললেন, ‘আপনি রাজি থাকার পরই আমরা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবো।’ পরবর্তী দু’ঘন্টা আমি আমার ঘনিষ্ঠবন্ধুদের কাছে তিরিশটি টেলিফোন কল করলাম। তাদের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লোকজন, সিভিল সার্ভিসের বন্ধুরা এবং রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টরাও ছিলেন। একটা মত এলো যে আমি শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডেরর সঙ্গে লিপ্ত। আমি ওই কাজের প্রতি নিবেদিত ও অনুরক্তও বটে। ওই কর্মকান্ড থেকে সরে আসা আমার উচিত নয়। দ্বিতীয় মতামতটা ছিল জাতি ও পার্লামেন্টের সামনে ভারতকে ২০২০ সালের লক্ষ্যে পৌঁছে দেবার জন্য আমার চিন্তা চেতনাকে তুলে ধরার এটাই অপূর্ব সুযোগ। ঠিক ঠিক দু’ঘন্টা পরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে বললাম, ‘বাজপেয়িজী, খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ মিশনের জন্য আমি এটা গ্রহণ করছি। তবে সমস্ত দলের প্রার্থী হিসাবে পদটি গ্রহণ করাটাই আমি বেশি পছন্দ করি।’

তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা এজন্য অবশ্যই কাজ করবো, আপনাকে ধন্যবাদ।’

অবশ্যই খবরটা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়লো। আমি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হতে রাজি আছি এই খবরটা পনেরো মিনিটের মধ্যে সারাদেশে জানাজানি হয়ে গেল। তাৎক্ষণিকভাবে আমার কাছে অসংখ্য টেলিফোন আসতে শুরু করলো। আমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলো। আমার রুমে অনেক ভিজিটরও উপস্থিত হলেন।

ওই দিনই রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী পছন্দের বিষয়ে বাজপেয়ী বিরোধী দলের নেতা সোনিয়া গান্ধীর সাথে পরামর্শ করলেন। মিসেস গান্ধী জিজ্ঞেস করলেন এনডিএ এর পছন্দ চূড়ান্ত কিনা। প্রধানমন্ত্রী তার প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব দিলেন। তার দলের সদস্য ও কোয়ালিশনের শরিকদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে ১৭ জুন ২০০২ তারিখে আমাকে প্রার্থী হিসাবে মিসেস গান্ধী ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (আইএনসি) সমর্থন ঘোষণা করলেন। আমি বাম দলগুলোরও সমর্থন প্রত্যাশা করছিলাম। কিন্তু তারা নিজেদের প্রার্থী দিল। আমি রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হবার সিদ্ধান্ত নেওয়া মাত্র অসংখ্য পত্র আমার কাছে আসতে শুরু করলো। মিডিয়াতে অনেক কথা উঠলো। তারা জিজ্ঞেস করলো, কিভাবে একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি বিশেষ করে একজন বিজ্ঞানী জাতির রাষ্ট্রপতি হন?

.

রাষ্ট্রপতির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দেবার পর ১৮ জুন ছিল আশর প্রেস কনফারেন্স। সাংবাদিকরা আমাকে গুজরাট ইস্যু,(রাষ্ট্রটির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কিভাবে মোকাবিলা করা বিষয়ক) অযোধ্যা ইস্যু, (রাম জন্মভূমি ইস্যু যা সর্বদাই খবরের বিষয় ছিল।), নিউক্লিয়ার টেস্ট ও রাষ্ট্রপতিভবনে আমার পরিকল্পনা সম্বন্ধে আমাকে অনেক প্রশ্ন করা হলো। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমি বললাম, সঠিক আর যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ভারতের প্রয়োজন শিক্ষিত রাজনৈতিক শ্রেণির। অযোধ্যা ইস্যু সম্পর্কে আমি বললাম, এখন প্রয়োজন শিক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে সামাজিক বৈষম্য হ্রাস পাবে। আমি রাষ্ট্রপতিভবনের জাকজমক হ্রাস করে সহজ সরল অনুষঙ্গের আবহ সৃষ্টি করবো বলে তাদের কাছে কথা দিলাম। কোন সমস্যার উদ্ভব ঘটলে রাষ্ট্রপতি হিসাবে আমি দেশের প্রধান প্রধান সংসদীয় বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করবো। ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির শাসন সম্পর্কে কতিপয় লোকের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে জনগণ কী চায় তার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আমি ১০ জুলাই চেন্নাই থেকে এশিয়াড ভিলেজে আমার ফ্লাটে ফেরার সময় আমার ইলেকশন ক্যাম্পেনের পুরোদস্তুর প্রস্তুতি চলছিল। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রমোদ মহাজন আমার ইলেকশন এজেন্ট হলেন। আমি আমার ফ্লাটে একটি ক্যাম্প স্থাপন করলাম। ওটা বড় ধরনের ফ্লাট না হলেও ওখানে কিছুটা সুযোগ সুবিধা ছিল। আমি আমার ফ্লাটে একটা ভিজিটরস রুম বানালাম। কনফারেন্স হলকে সাজানো হলো। পরে একটা ইলেট্রোনিক ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়। সমস্ত তথ্যাদি ইলেকট্রোনিক যন্ত্রপাতিতে রাখা হতে লাগলো। রাষ্ট্রপতি হিসাবে আমার ভিশন জ্ঞাপনপূর্বক ভোট প্রার্থনা করে লোকসভা এবং রাজ্যসভার প্রায় ৮০০ সদস্যের কাছে পাঠানোর জন্য একটা পত্রের ড্রাফ্ট তৈরি করা হলো। মহাজনের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রত্যেক রাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজের মেম্বারদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে মিলিত না হয়ে আমি তাদের কাছে পত্রগুলো প্রেরণ করলাম। ফলশ্রুতিতে ১৮ জুলাই অনেক ব্যবধানে বিজিত হিসাবে আমাকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা করা হলো।

সারাদিন আমি বহু সংখ্যক দর্শনার্থী ও মিডিয়া কর্মীর সাথে মিলিত হলাম। শিশুদের সাথে মিলিত হয়ে তাদের বিভিন্ন ইস্যু সম্পর্কে আমি জ্ঞাত হলাম। এশিয়াড ভিলেজের ফ্লাট নম্বর ৮৩৩ মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ঊঠলো। ২৫ জুলাই এর শপথ অনুষ্ঠানে গেস্টদের তালিকা তৈরি করা হলো। পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে আসন সংখ্যা মাত্র ১০০০। এছাড়া দুই হাউসের অফিসকর্মী, হোম ও অন্যান্য মিনিস্ট্রির আমলা ও বিদায়ী রাষ্ট্রপতি কে. আর নারায়ণ-এর অতিথির জন্য মাত্র ১০০ আসন ছিল। সেই আসনকে আমরা ১৫০ এর মতো সংখ্যাতে উন্নিত করলাম। ১৫০ টি আসনেও তাদের স্থান সংকুলানের সমস্যা হলো। পারিবারিক গেস্টদের সংখ্যা সাইত্রিশ। আমার বয়োজ্যেষ্ঠ ফিজিকস টিচার প্রফেসর চিন্নাদুরাই উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাজ ইন্‌স্টিটিউট অব টেকনোলজির প্রফেসর কে. ভি. পানদালাই ও পকশী ভেন্কাটাসুব্রাহ্মনিয়াম, রামেশ্বরম মসজিদের ইমাম নুরুল খুদা, রামেশ্বরম চার্চের যাজক রেভ. এ. জি. লিওনার্ড, অরবিন্দ আই ইনস্টিটিউট এর বিখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. জি. ভেনকাটাস্বামী। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ড্যান্সার সোনাল মানসিংহ। এছাড়াও শিল্পপতি, সাংবাদিক, ব্যক্তিগত বন্ধুরাও ছিলেন। অতিথিদের তালিকায় দেশের সমস্ত রাজ্য থেকে ১০০ জন শিশুও ছিল। তাদেরকে পৃথকভাবে বসবার ব্যবস্থা করা হলো। তাদেরকে সিনিয়র এডিসিদের তত্ত্বাবধানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। দিনটা গরমের হলেও প্রত্যেকেই আনুষ্ঠানিক পোশাকে ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন।

[আমার দেশের সহজ সরল লোকজনের বিজ্ঞতায় ভরা সরলতা সর্বদাই আমাকে দৃঢ় বিশ্বাস দান করে, যা থেকে আমার দেশ শান্তি আর সমৃদ্ধিতে সেরা হবে।]

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *