1 of 2

১.২৮ আত্ম-সম্মোহন

অষ্টাবিংশ পাঠ
আত্ম
সম্মোহন (Self-Hypnotism)

সমগ্র সম্মোহন বিজ্ঞানের মধ্যে যে সকল তত্ত্ব নিহিত আছে, তন্মধ্যে “আত্ম-সম্মোহন বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা এত অধিক যে, যদি কেহ ইহার সকল বিষয় শিক্ষা না করিয়া কেবল এই বিষয়টিই সুন্দররূপে আয়ত্ত করে, তথাপি তাহার এই বিদ্যা শিক্ষার উদ্দেশ্য অনেক পরিমাণে সফল হইবে। এই বিষয়ের সিদ্ধান্ত মূলক (theoretical) ও ব্যবহারিক (practical) জ্ঞান সকল শ্রেণীর লোকের পক্ষেই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

নিজে নিজকে সম্মোহিত করার নাম “আত্ম-সম্মোহন”। এই অবস্থায় নিজে নিজের প্রতি যে আদেশ দেওয়া যায় উহাকে “অটো-সাজ্জেমান” (auto-suggestion) বলে। বাঙ্গলায় ইহাকে “আত্ম-আদেশ” বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে। কোন সম্মোহনবিৎ কর্তৃক এক ব্যক্তি মোহিত হইলে তাহার যেরূপ অবস্থা হয় (মায়া ও ভ্ৰমাদির অবস্থা) আত্ম-সম্মোহনে সেরূপ অবস্থা কখনও উৎপাদিত হইতে পারেনা। আত্ম-সম্মোহন কেবল কাৰ্যকারকের নিজের আত্মোন্নতির জন্য প্রযুক্ত হইয়া থাকে। ইহা দ্বারা সে নিজের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, বৈষয়িক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের প্রভূত উন্নতি সাধন করিতে পারে।

অটো-সাজ্জো সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকগণের সিদ্ধান্ত এই যে মানুষের মনের সৃষ্টি, ধ্বংস, আকর্ষণ ও বিকর্ষণের শক্তি আছে এবং মানুষ এই শক্তি বলে বহু কাৰ্য সাধন ও উপরোক্ত যাবতীয় বিষয়ের উন্নতি করিতে পারে। যদি সে মনের মধ্যে স্বীয় আকাঙ্খানুযায়ী কোন একটি ভাবকে চিন্তা বা বাক্যের পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি দ্বারা দৃঢ়রূপে অঙ্কিত করিয়া দেয়, তবে তাহার মন সেই ভাবটিকে কার্যে পরিণত করিয়া থাকে। কোন রুগ্ন ব্যক্তি যদি বিশ্বাসের সহিত পুনঃ পুনঃ এইরূপ চিন্তা করে যে, তাহার রোগ ক্রমে ক্রমে আরোগ্য হইতেছে,—দিন দিনই সে অধিকতর সুস্থতা লাভ করিতেছে, তবে তাহার মন উহার অন্তর্নিহিত শক্তি প্রভাবে এই ভাবটি কার্যে পরিণত করিয়া থাকে। যে ব্যক্তি একটি কাৰ্যে নিযুক্ত হইয়া ইচ্ছাপূর্বক বা অজ্ঞাতসারে পুনঃ পুনঃ অকৃতকাৰ্যতার বিষয় চিন্তা করে, সে উহাতে কখনও কৃতকাৰ্য্যতা লাভ করিতে পারে না। যদি কোন মদ্যপায়ী সর্বদা এরূপ চিন্তায় রত থাকে যে, সুরাপানে তাহার শরীর ও মনের ঘোর অনিষ্ট হইতেছে, তাহার অর্থ-সম্পদ নষ্ট হইয়া যাইতেছে এবং সে সমাজে লোকের নিকট অত্যন্ত নিন্দিত হইতেছে, সুতরাং সে এই অনিষ্টকর অভ্যাসকে চিরকালের জন্য পরিত্যাগ করিবে, তবে তাহার মন সুরাপানে বীতস্পৃহ হয় এবং ক্রমে ক্রমে তাহার আসক্তি দূর হইয়া যায়। ব্যবসায় বা চাকরীর উন্নতির জন্য যে সৰ্ব্বদা চিন্তা করে, তাহার তাহাই লাভ হইয়া থাকে। উপযুক্ত প্রণালীতে অটো-সাজ্জো অভ্যাস দ্বারা এইরূপ বহু কাৰ্য্য সাধন করা যায়।

মানুষের মনের এই ক্ষমতা নুতন আবিষ্কৃত হয় নাই। অতি প্রাচীন কালে বৈদিক ঋষিরাই এই সত্য জগতে প্রথম প্রচার করিয়াছিলেন। বর্তমান যুগে তাহা বৈজ্ঞানিক গণের দ্বারা দৃঢ়রূপে সমর্থিত হইতেছে মাত্র। শিক্ষিত ব্যক্তিদিগের অনেকেই হয়ত মনের এই ক্ষমতা প্রত্যক্ষ করিয়াছেন এবং সাধারণ লোকেরাও ইহার প্রতি অল্প বিস্তর আস্থাবান্। যাহারা দৃঢ় বিশ্বাসী হইয়া উপযুক্ত নিয়মে এই আদেশ অভ্যাস করিবে তাহারা যে জীবনে অনেক বিষয়ে সাফল্য লাভ করিতে পারিবে তাহাতে সন্দেহ নাই।

শারীরিক, মানসিক, বৈষয়িক, আধ্যাত্মিক ইত্যাদি বিষয় সমূহের মধ্যে শিক্ষার্থী অগ্রে যে বিষয়ের উন্নতি সাধনের আবশ্যকতা বোধ করিবে, তাহা সে পূর্বে স্থির করিয়া লইবে। তৎপরে বাঞ্ছিত বিষয়ের উন্নতির পরিপন্থী যে সকল রোগ বা মন্দ অভ্যাস তাহার শরীর বা মনের উপর বর্তমানে আধিপত্য করিতেছে, সে গুলি বিদূরিত এবং উন্নতির সহায়ক গুণ গুলি বিকাশ করিতে যত্নবান হইবে। শারীরিক উন্নতির অর্থ শরীরকে রাগ মুক্ত করা স্বাস্থ্যের শ্রীবৃদ্ধি করা। সুতরাং যে স্বাস্থ্যবান তাহার উহা আবশ্যক নাই। কিন্তু যে রুগ্ন সে অটো-সার্জেসান এর অনুশীলন দ্বারা সুস্থ হইতে প্রয়াস পাইবে। যে মানসিক বা আধ্যাত্মিক উন্নতির কামনা করে, সে স্বভাবগত মন্দ অভ্যাস গুলি (প্রত্যেক মানুষেরই কোন না কোন মন্দ অভ্যাস আছে) বিদূরিত করিয়া হৃদয়ের সৎবৃত্তি সকল বিকাশের জন্য চেষ্টিত হইবে। আর যে বৈষয়িক শ্রীবৃদ্ধির অভিলাষী সে তাহার অবলম্বিত কৰ্ম্মের সম্পূর্ণ উপযুক্ততা লাভের নিমিত্ত যত্নবান হইবে। এই সকল বিষয়ের বিস্তৃত আলোচনা “ইচ্ছা শক্তি” পুস্তকে করা হইয়াছে, সুতরাং এস্থানে উহার পুনরুক্তি নিষ্প্রয়োজন।

অটো-সাজ্জেস্‌সান্‌ অভ্যাসের প্রণালী :–কাৰ্যকারক একটি নীরব ও নির্জন গৃহে গমন পূর্বক গায়ের জামা, কাপড় ইত্যাদি গুলি খুব ঢিল করিয়া দিয়া একখানা ইজি চেয়ার বা বিছানায় শয়ন করিবে; তৎপরে সমস্ত শরীরটি সাধ্য মত শিথিল করতঃ, চক্ষু বুজিয়া একাগ্র মনে ঘুমের বিষয় চিন্তা করিবে। যথা—“আমার শরীর অলস ও অবসন্ন হইতেছে, ক্রমে ক্রমে খুব শিথিল ও অসার হইয়া পড়িতেছে,-আমি নড়া-চড় করিতে পারিতেছি না; আমার চক্ষু দৃঢ়রূপে বন্ধ হইয়া গিয়াছে,-মাথা পাথরের মত ভারী হইয়া গিয়াছে,সমস্ত শরীর সম্পূর্ণরূপে অসার ও বলহীন হইয়া গিয়াছে। আমার এখন ঘুম হইবে,—গাঢ় নিদ্রা হইবে; ১০/১২ মিনিটের মধ্যেই আমি গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত হইয়া পড়িব। ঘুম-ঘুম-ঘুম—গভীর নিদ্রা; ঘুম-ঘুম-ঘুম—গভীর নিদ্রা; শান্তিদায়ক নিদ্রা; আরামজনক নিদ্রা” ইত্যাদি। উক্তরূপ চিন্তা করিতে করিতে যখন নিদ্রার উপক্রম হইবে, তখন অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে ও একাগ্র মনে (নিজের প্রতি) নিম্নোক্তরূপ আদেশ প্রদান করিয়া তাহার ধূমপানের অভ্যাস (দৃষ্টান্ত স্বরূপ মনে করা যাউক যে, সে ধূমপায়ী এবং সে এই অভ্যাস দূর করিবার অভিলাষী) বিদূরিত করিবে। যথা“আজ হইতে আমি আর কোনরূপ ধূমপান করিব না—আজ হইতে আমি আর তামাক, সিগারেট, চুরুট, বিড়ি ইত্যাদি কিছুই খাইব না, কখনও খাইব না; ধূম পান করিলে আমার বমি হইবে,—আমার অসুখ করিবে। আমি আর এই কু-অভ্যাসের দাস হইয়া থাকিব না—আমি আজ হইতে এই অভ্যাসকে চিরকালের নিমিত্ত সম্পূর্ণরূপে বিদূরিত করিব। যদি সে এই আদেশ-মন্ত্রটি মনে মনে আবৃত্তি করিতে করিতে নিদ্রিত হইয়া পড়ে ভাল; অন্যথায় উহাকে উত্তমরূপে ১০/১৫ মিনিট আওড়াইবার পর অনুশীলনটি বন্ধ করিবে।

কাৰ্যকারক বিশ্বাসের সহিত প্রত্যহ দুইবার-অসমর্থ হইলে একবার —নিয়মিতরূপে এই অনুশীলনটি অভ্যাস করিবে। সে এই আদেশ-মন্ত্রটি মনে মনে আবৃত্তি করিতে করিতে ঘুমাইয়া পড়িবার চেষ্টা পাইবে; কারণ নিদ্রা হইলে তাহার মন ঘুমন্তাবস্থায় ঐ আদেশানুযায়ী কাৰ্যে রত থাকিবে। যখন সে এই স্বতঃ উৎপাদিত মোহিতাবস্থায় উপনীত হইয়াছে, তখন উক্ত আদেশ-মন্ত্রের বিপরীত অর্থ বোধক কোন চিন্তা মুহূর্তের জন্যও মনে স্থান দিবেনা; কারণ উক্তাবস্থায় মন অত্যন্ত সংবেদ্য হয় বলিয়া, উহা বিরুদ্ধ আদেশের ন্যায় কাৰ্য করতঃ বিপরীত ফল উৎপাদন করিয়া থাকে। এই অনুশীলনটি অভ্যাসের সময় ধূমপান সম্বন্ধে তাহাকে খুব সংযমাবলম্বন করিতে হইবে। কারণ তাহার চিন্তা ও কাৰ্যে ঐক্য না থাকিলে সে ইহাতে সাফল্য লাভ করিতে সমর্থ হইবেনা। সুতরাং সে যেমন মনে চিন্তা করিবে যে, আর ধূমপান করিবেনা; সেইরূপ সে ধূমপানে বিরত থাকিয়া কাৰ্যতঃ ঐ চিন্তার সার্থকতা সম্পাদন করিবে। মনে মনে আদেশ আবৃত্তি করিয়া উহার বিপরীত কাৰ্য্য করিলে সেই আদেশের কোন ফল হয়না। যে চিন্তা করিতেছে, ‘‘আমি আর ধূমপান করিবনা, সে যদি কিছুমাত্র সংযমী না হইয়া অভ্যাস মত যদৃচ্ছাক্রমে ধূম পানে রত থাকে, তবে উহা কেবল অর্থ শূন্য একটা বাক্যে পরিণত হইবে মাত্র। সুতরাং ফল কিছুই লাভ হইবেনা। অনুশীলন করিবার সময় আদেশ-মন্ত্রের বিপরীত কাৰ্য্য করিয়া অনেক লোক ইহাতে বিফল মনোরথ হইয়াছে বলিয়া জানা গিয়াছে। সুতরাং উহা অভ্যাস কালীন কদাপি কেহ ঐরূপ কোন কাৰ্য্য করিবেনা।

ইহার সহিত নিম্নোক্ত অনুশীলনটি অভ্যাস করিলে কাৰ্যকারক অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ের মধ্যেই বাঞ্ছিত ফল লাভে সমর্থ হইবে। সে রাত্রিতে নিদ্রিত হইবার ১৫ মিনিট পূর্বে এবং ভোরে নিদ্রা ভঙ্গের পর (শষ্যা হইতে গাশ্লোখান করার ১০/১৫ মিনিট পূর্বে) শরীরটি সম্পূর্ণরূপে শিথিল করতঃ একাগ্ৰমনে নিয়োক্তরূপ চিন্তা করিবে—“আমি আর ধূমপান করিবনা আমি আর কখনও ধূমপান করিনা; আমার মন হইতে ধূমপানের স্পৃহা সম্পূর্ণরূপে অন্তর্হিত হইয়া গিয়াছে – আমি আর কাহার অনুরোধেই ধূম পান করিবনা;-কোন প্রলোভনই আমাকে সংক্ষল্পচ্যুত করিতে পারিবেন। -আমি সকল প্রকার প্রলোভন জয় করিয়াছি। যাহারা ধূমপান করেন, তাহারা কেমন সুখী! কেমন স্বাধীন! আমি এই বিশ্রী অভ্যাসকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করিয়া তাহাদের মত সুখী হইব। আমি আর এক মুহূর্তও এই নিকৃষ্ট অভ্যাসের দাস হইয়া থাকিবনা; আমি উহাকে চিরকালের নিমিত্ত সম্পূর্ণরূপে বিদূরীত করিতে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছি। প্রতিবারে ১০ হইতে ১৫ মিনিট সময় ব্যয় করতঃ অত্যন্ত নিবিষ্ট চিত্তে উপযুপরি এইরূপ চিন্তা করিবে। পূর্বোক্ত আদেশ-মন্ত্রের সহিত প্রতিদিন নিয়মিতরূপে দুইবার ইহার অনুশীলন করিলে উক্ত অভ্যাস খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিদূরিত হইয়া যাইবে।

কাৰ্য্যকারক ইচ্ছা করিলে পূর্বোক্ত আদেশ-মন্ত্রটি নিমোক্তরূপেও অভ্যাস করিতে পারে। এক টুকরা সাদা কাগজে বড় ও সুস্পষ্টাক্ষরে ঐ আদেশ-মন্ত্রটি লিখিয়া লইয়া বার বার উহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিবে ও উহাকে মনে মনে আওড়াইবে। দিন ও রাত্রির মধ্যে সে যতক্ষণ জাগ্রত থাকিবে ততক্ষণ (ধত অধিকার সম্ভব হয়) এক একবার আধ মিনিটের জন্য উহাকে দেখিবে এবং দুই-তিনবার মনাযোগের সহিত আওড়াইবে। কোন কোন সম্মোহনতত্ত্ববিৎ ইহাকে ১০০ হইতে ১৫ বার পর্যন্ত উক্তরূপে আবৃত্তি করিতে উপদেশ দিয়াছেন; উদ্দেশ্য—সর্বদায় জন্য মনকে উহাতে দৃঢ় সংলগ্ন রাখা। ইহার সহিত পূর্বোক্ত অনুশীলন দুইটিও (নিদ্রা যাইবার পূর্বে ও নিদ্রাভঙ্গের পর কথিতরূপে চিন্তা করা) অভ্যাস করা যাইতে পারে।

কাৰ্যকারক যতদিন উক্ত অভ্যাস সম্পূর্ণরূপে বিদূরিত করিতে সমর্থ না হইবে, ততদিন সে এই প্রণালীর উপর আস্থাবান থাকিয়া গভীর আকাঙ্ক্ষার সহিত প্রতিদিন নিয়মিতরূপে উহা অভ্যাস করিবে; এবং বিশেষ কোন অন্তরায় উপস্থিত না হইলে কোন দিন অনুশীলন বন্ধ রাখিবে না। ইহা দ্বারা সে কত দিনে একটি মন অভ্যাস দূর করিতে কি একটি বোগ আরোগ্য করিতে পারিবে, তাহা নিশ্চিতরূপে বলা কঠিন। যেহেতু তাহার কৃতকাৰ্যতা সমধিক পরিমাণে তাহার রোগ বা অভ্যাসের গুরুত্বের উপর নির্ভর করে। কেহ দুই-তিন দিনে, কেহ এক সপ্তাহে, আবার কেহ কেহ বা দুই-তিন সপ্তাহে বাঞ্ছিত ফল লাভ করিয়া থাকে। একাধিক মন্দ অভ্যাস বর্তমান থাকিলে, উহাদিগকে একটি একটি করিয়া বিদূরিত করিবে; কখনও এক সঙ্গে দুই-তিনটি লইয়া চেষ্টা করিবেনা। এইরূপে সে রোগ বা অভ্যাসের প্রকৃতি অনুযায়ী উপযুক্ত আদেশ মনোনীত করিয়া লইয়া নিয়মিতরূপে উহা অভ্যাস করিবে-দৃঢ় বিশ্বাস ও ধৈর্য্যের সহিত ইহা অনুশীলন করিতে পারিলে সে, নিজের যে কোন রোগ আরোগ্য বা মন্দ অভ্যাস বিদূরিত করিতে সমর্থ হইবে।

কাৰ্যকারক এই প্রণালীতে দুই-তিনটি অভ্যাস দূর করিতে পারিলেই তাহার মনের বল সমধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পাইবে এবং তথন সে অল্পায়াসেই অন্যান্য অনিষ্টকর অভ্যাসগুলির মূলোচ্ছেদ করিতে এবং ইচ্ছা করিলে কাম, ক্রোধ ইত্যাদি রিপুগুলিকেও অধিক পরিমাণে স্বীয় বশে আনিতে পারিবে, যাহা অন্য কোন সহজ উপায়ে সম্পন্ন হইবার আশা নাই। বর্তমান সময়ে দেশের অধিকাংশ বালক ও যুবকগণ যে কতকগুলি জঘণ্য অভ্যাস দ্বারা প্রবল ভাবে আক্রান্ত লইয়া আয়ু-স্বাস্থ্য, স্মৃতি-মেধা ইত্যাদি নষ্ট করিতেছে ও ঘোর নৈতিক পাপে নিমজ্জিত হইতেছে, তাহারা এই প্রণালীতে উহাদের মূলোচ্ছেদ করতঃ জীবনের যথার্থ কল্যাণ সাধন করিতে পারিবে এবং আধ্যাত্মিক উন্নতিকামী ব্যক্তিগণও ইহার সাহায্যে ইন্দ্রিয় জয় করিয়া অভীষ্ট সিদ্ধির পথে অনেক দূর অগ্রসর হইতে সমর্থ হইবেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *