1 of 3

০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখলেন একদিকে তাঁর সাহাবীদের ওপর অসহনীয় নির্যাতন চলছে। অপরদিকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বিশেষ মর্যাদা লাভ ও আবু তালিবের সহায়তা লাভের কারণে তিনি অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জীবন যাপন করছেন। অথচ তিনি তাঁদের ওপর আপতিত যুলুমকে কিছুমাত্র রোধ করতে পারছেন না। এ অবস্থায় তিনি সাহাবীদেরকে বললেন, “তোমরা যদি আবসিনিয়ায় চলে যাও মন্দ হয় না। সেখানে একজন রাজা আছেন যার রাজত্বে কারো ওপর যুুলুম হয় না। এ দেশটা সত্য ও ন্যায়ের আশ্রয়স্থল। যতদিন এই অসহনীয় পরিস্থতি থেকে আল্লাহ তোমাদের মুক্ত না করেরন ততদিন সেখানে অবস্থান কর।” এই উপদেশ অনুসারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবাগণ কুফরীতে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য হবার আশংকায় এবং নিজের দ্বীন ও ঈমানকে বাঁচানোর তাকিদে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণের জন্য আবিসিনিয়ায় চলে গেলেন। ইসলামের অভ্যুদয়ের পর এটাই প্রথম হিজরাত।

এই হিজরাতের জন্য যাঁরা প্রথম স্বদেশ ত্যাগ করেণ তাঁরা হলেন উসমান ইবনে আফফান ও তাঁর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা রুকাইয়া, আবু হুযাইফা ইবনে উতবা ও তাঁর স্ত্রী সাহলা বিনতে সুহাইল, যুবাইর ইবনুল আওয়াম, মুসআব ইবনে ‘উমাইর, আবদুর রহমান্ ইবনে আউফ, আবু সালামা ইবনে আবদুল আসাদ ও তাঁর স্ত্রী লায়লা বিনতে আবি হাসমা, আবু সাবরা ইবনে আবু বুহম ও সুহাইল ইবনে বাইদা। এই দশজন আবিসিনিয়ায় হিজরাতকারী প্রথম মুসলমান। (ইবনে হিশামের মতে উসমান ইবনে মাযউন ছিলেন দলনেতা।) এরপর দেশত্যাগ করেন জাফর ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তারপর একের পর এক মুসলমানরা সেখানে গিয়ে সমবেত হতে থাকেন। কেউবা সপরিবারে কেউবা পরিবার পরিজন ছেড়ে একাকী। এভাবে যেসব মুসলমান হিজরাত করে আবিসিনিয়ায় গিয়ে বসবাস করা শুরু করেন, তাঁদের সংখ্যা সর্বমোট ৮৩ জনে দাঁড়ায়। অবশ্য যেসব অল্পবয়স্ক শিশু কিশোর তাঁদের সাথে গিয়েছিল কিংবা সেখানে যাওয়ার পর জন্মগ্রহণ করেছিল তারা এ সংখ্যায় অন্তর্ভুক্ত নয়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *