রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চলে যাওয়ার পর আবু জাহল বললো, “হে কুরাইশ, শোন! মুহাম্মাদ বিছুতেই তার নীতি ত্যাগ করতে রাজী নয়। আমাদের ধর্মের সামালোচনা, আমাদের পূর্বপুরুষদের নিন্দা, আমাদের বুদ্ধিমত্তাকে নির্বুদ্ধতা বলে বিবেচনা করা এবং আমাদের দেব-দেবীকে গালমন্দ করার বদ্ধমূল স্বভাব সো কিছুতেই পরিহার করবে না। আমি আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করছি, কাল যত বড় পাথর আমি উত্তোলন করতে পারি, হাতে নিয়ে তার অপেক্ষায় থাকবো। নামাযে যখনই সে সিজদায় যাবে, তখনই সেই পাথর দিয়ে আমি মাথা গুড়িয়ে দেবো। এরপর যা হয় হবে। তোমরা আমাকে বিচারে সোপর্দ কর কিংবা রক্ষা কর, সেটা তোমাদের বিবেচ্য। বনু আবদ মানাফ যা ভালো মনে করে তাই করবে।” সবাই কললো, “আল্লাহর শপথ আমরা কিছুতেই তোমাকে বিচারের জন্য সোপর্দ করবো না তুমি যা সংকল্প করেছো তা করে ফেলো।”
পরদির আবু জাহল সত্যি সত্যি প্রকা- একখানা পাথর নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অপেক্ষায় বসে রইলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও নিত্যকার অভ্যাস মত নামায পড়তে গেলেন। মক্কায় বাস করলেও তিনি সিরিয়ার দিকে মুখ করে নামায পড়তেন। রুকনে ইয়ামানী ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে এমনভাবে দাঁড়িয়ে নামায পড়তেন যে, কা’বা তাঁর ও সিরিয়ার মাঝখানে পড়তো। তিনি নামাযে দাঁড়ালেন। আর কুরাইশরা তাদের সম্মেলন স্থলে বসে আবু জাহল কি করে সেজন্য অধীর আগ্রহে প্রহন গুনতে লাগলো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদায় গেলেন তখন আবু জাহল পাথর উত্তেলন করে তাঁর দিকে এগিয়ে গেল। তার কাছে যেতেই পরাজিত, ভীত-বিহ্বল ও বিবণর্ষ চেহারা নিয়ে ফিরে এলা। তার হাত দুটো যেন পাথরের ওপর নিথর ও নিশ্চল হয়ে গিয়েছে। সে পাথরখানা দূরে ছুড়ে ফেলে দিল। এসময় কুরাইশদের কয়েকজন তার দিকে এগিয়ে গেল এবং বললো, “হে আবুল হাকাম, তোমার কী হলো?” সে বললো, “আমি মুহাম্মাদরে কাছে চলে গিয়েছিলাম এবং গতরাতে তোমাদের কাছে যে সংকল্প ব্যক্ত করেছিলাম, তাই কার্যকর করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু যে মাত্র তার কাছে গিয়েছি অমনি একটা প্রকা- ও ভয়ংকর উট তার ও আমার মধ্যে আড়াল হয়ে দাঁড়ালো। আল্লাহর শপথ, আম কখনো এমন ভয়ংকর চুঁট, ঘাড় ও দাঁতওয়ালা উট দেখিনি। উটটা আমাকে খেয়ে ফেলতে উদ্যত হেয়ছিলো।”