1 of 2

সাবধান! সাপ আছে (২)

সাবধান! সাপ আছে (২)

চায়ের কাপে লম্বা এক চুমুক দিয়ে বিনু বলল, আজ তোকে একটা সাপের গল্প শোনাব…। ওর কথায় আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। একইসঙ্গে মনে হল, ছোট্ট খোলা জানলাটা দিয়ে কুলকুল করে ঠান্ডা হাওয়া ঘরে ঢুকে পড়ল। তারপর সাপের মতো এঁকেবেঁকে ছড়িয়ে পড়তে লাগল স্যাঁতসেঁতে ঘরটায়।

বিনুর কাণ্ডই এইরকম। হুটহাট করে উদ্ভট সব মন্তব্য করে বসে। সবসময় বলে ওর গল্পগুলো নাকি সত্যি। কে জানে! তবে ওর গল্পগুলো বেশিরভাগ সময়েই অস্বস্তিকর। অথচ শুনতেও মন চায়।

সন্ধে পেরিয়ে রাত হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে নিশাচর সরীসৃপের মতো শীতেরও তেজ বেড়েছে। বিনুদের পুরোনো ধাঁচের বাড়িতে দুজনে বসে আড্ডা মারছিলাম। ও দিন দশেকের জন্য কলকাতায় এসেছে। এসেই আমাকে টেলিফোন : ডে অ্যান্ড নাইট আড্ডা মারবি তো চলে আয়…।

আমি জিগ্যেস করলাম, অ্যাদ্দিন কলকাতা ছেড়ে কোথায় ছিলি?

ভুবনবটুয়া ও হেসে জবাব দিল।

ও যে দেশের কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ায় সে ও-ই জানে! যেমন নাম-না-শোনা ওই ভুবনবটুয়া থেকে দশদিনের জন্যে কলকাতায় এসেছে, দশদিন পর তেমনই কোনও নাম-না-শোনা জায়গার দিকে রওনা হয়ে যাবে। ও ভারি বিচিত্র। মাঝে-মাঝে মনে হয়, ওর ভিতরে বোধহয় কোনও গোলমাল আছে। কিন্তু এত সত্ত্বেও আমার এই উড়ে বেড়ানো, ঘুরে বেড়ানো বন্ধুকে আমার চমৎকার লাগে। আবার ওকে আমি ভয়ও পাই–ওর অদ্ভুত সব গল্পের জন্যে।

গোটা বাড়িতে আমরা একা। বিনুই একটু আগে চা-জলখাবারের ব্যবস্থা করেছে। বলেছে, যদি এখানে রাতটা থেকে যাস তাহলে রসেবশে থাকার ব্যবস্থা করব।

আমি হাতজোড় করে হেসে বলেছি, মাফ করো, ভাই, আমি তোমার মতো রসিক নই। তারপর হাতঘড়ির দিকে একনজর তাকিয়ে আরও বলেছি, রাত বাড়ছে, তুমি তাড়াতাড়ি তোমার গপ্পোটা শুরু করো।

বিনু সেদিন যে-গল্পটা আমাকে বলেছিল সেটা শোনার পর থেকে আমি একেবারে বদলে গেছি। আমার বুকের ভিতরে কেমন একটা ভয় ঢুকে গেছে। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে জেগে উঠি, সারা শরীরের কুলকুল করে ঘাম দেয়। কেন জানি না, বিনুর কথাগুলো আমি আজগুবি বলে উড়িয়ে দিতে পারিনি বিশেষ করে ওর শেষ কথাগুলো।

বিনু ওর গল্পটা বলতে শুরু করল।

.

কৃষ্ণা প্রথম যেদিন ব্যাপারটা দ্যাখে সেদিন ও দিশেহারা পাগল হয়ে গিয়েছিল। নিজের চোখকে ও বিশ্বাস করতে পারেনি। সারা গা শিউরে উঠেছিল আতঙ্কে ঘৃণায়। গলা শুকিয়ে কাঠ, আর একইসঙ্গে দমবন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মুখের ভিতরে জিভটা মনে হচ্ছিল নেহাতই খসখসে শুকনো চামড়ার একটা টুকরো।

সবচেয়ে আশ্চর্যের এই যে, বিয়ের চার বছরে কোনওদিন ব্যাপারটা ওর নজরে পড়েনি। অথবা অংশুমান কখনও ওকে এ-বিষয়ে কিছু বলেনি।

কৃষ্ণা বরফে গড়া মূর্তির মতো তিন হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা অংশুমানকে দেখছিল। অংশুমান টেলিফোনে কথা বলছে, আর মাঝে মাঝেই গলা ছেড়ে হেসে উঠছে।

একটু আগেই যখন ফোনটা বেজে উঠেছিল তখন কৃষ্ণাই ফোন ধরেছিল। তারপর অংশুমানের দিকে রিসিভার এগিয়ে দিয়ে বলেছে, তোমার ফোন।

আজ রবিবার ছুটির দিন। তাই ওরা দুজনেই বেলা করে উঠেছে। তারপর রোজকার কাজ সেরে ব্রেকফাস্ট নিয়ে বসতে বসতে সাড়ে নটা বেজে গেছে। ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে খবরের কাগজ পড়ছিল অংশুমান। সেই সময়েই টেলিফোনটা বেজে উঠেছে।

অংশুমানের ডান কানের দিকে স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে ছিল কৃষ্ণা। এইরকম একটা অসম্ভব দৃশ্য ওর চোখ অথবা মস্তিষ্ক বাস্তব বলে মেনে নিতে পারছিল না। আতঙ্কে ও কয়েক পা পিছিয়ে যেতে চাইছিল, কিন্তু ব্যাপারটা হয়ে দাঁড়াল অতিপরিচিত সেই দুঃস্বপ্নের মতো যখন লোকে প্রাণভয়ে ছুটে পালাতে চায়, অথচ পারে না।

রিসিভারটা অংশুমান বাঁকানে চেপে ধরেছিল। তখনই ওর ডান কানের ফুটো দিয়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এসেছে লালায় ভেজা হিলহিলে চকচকে একটা সরীসৃপের লেজ।

লেজটার রং উজ্জ্বল সবুজ–তার ওপরে হলুদ আর কালো বুটি। কৃষ্ণার কড়ে আঙুলের মতো সরু লিকলিকে তার শরীর।

এই রঙের কোনও সাপ সত্যি-সত্যি আছে কি না কৃষ্ণা জানে না। তবে লেজটাকে দেখে প্রথমে ওর সাপের কথাই মনে হয়েছে–অন্য কোনও সরীসৃপের কথা মাথায় আসেনি।

লেজটা অংশুমানের কানের ফুটো দিয়ে প্রায় চার-পাঁচ ইঞ্চি বেরিয়ে এসেছে। সেই অবস্থায় ছুঁচোলো লেজের ডগাটা এপাশ-ওপাশ মোচড় দিয়ে নড়ছে, শূন্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

অংশুমান কিন্তু একইরকম নির্বিকার ভঙ্গিতে ফোনে কথা বলে যাচ্ছিল। ফুর্তির গলায় হাসছিল। বোধহয় ওর কোনও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলছিল।

কৃষ্ণা পাথর হয়ে গিয়ে স্বামীকে দেখছিল, আর সেইসঙ্গে ভয়ংকর হিলহিলে সবুজ সাপটা দেখছিল। সাপের লেজটা যেন কোন এক অলৌকিক উপায়ে ওকে বশ করে ফেলেছিল।

একটা প্রাণান্তকর চিৎকার বহুক্ষণ ধরেই কৃষ্ণার নাভির কাছ থেকে উঠে গলা দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। অংশুমান কথা শেষ করে রিসিভার নামিয়ে রাখার পরই সেটা বাইরে বেরিয়ে এল।

অনেকক্ষণ জলের নীচে ডুবে থাকার পর মানুষ যেভাবে ভেসে ওঠে, ঠিক সেভাবেই তীব্র তীক্ষ্ণ চিৎকারটা বেরিয়ে এল কৃষ্ণার ঠোঁট চিরে।

সাপ! সাপ! সাপ।

কোথায়? প্রশ্নটা করে অংশুমান অবাক হয়ে তাকাল কৃষ্ণার দিকে।

কৃষ্ণা হাঁপাতে-হাঁপাতে কোনওরকমে বলল, তোমার কানে তোমার ওই কানটায়…।

 হতভম্ব অংশুমান হাত বাড়াল ওর ডান কানের দিকে।

কিন্তু কৃষ্ণা অবাক হয়ে দেখল, অংশুমানের ছোঁয়া এড়িয়ে সাপের লেজটা সড়সড় করে ঢুকে গেল কানের ভিতরে। ফলে অংশুমান কিছুই টের পেল না। বরং ও কৃষ্ণাকে আশ্বস্ত করতে ডান কানের ভিতরে কড়ে আঙুল ঢুকিয়ে কয়েকবার মোচড় দিল। তারপর দরাজ গলায় হেসে উঠে বলল, লাইব্রেরি থেকে উলটোপালটা সব বই এনে পড়ছ বুঝি?

কৃষ্ণা অবাক চোখে ওর সুপুরুষ স্বামীকে দেখছিল। ভালোবেসে বিয়ে করা এই মানুষটার মানে আজ থেকে কি তা হলে পালটে গেল! এই চার বছরে ও একটুও বুঝতে পারেনি এই মানুষটার ভিতরে একটা সাপ আছে!

অংশুমান খাওয়ার টেবিলে ফিরে এসে আবার খবরের কাগজ নিয়ে বসল। তারপর হালকা গলায় বলল, আমার এই কানটা ভীষণ চুলকোচ্ছে। রান্নার ঝামেলা মিটলে একটু কানখোঁচানি দিয়ে দেখে দিয়ো তো।

অংশুমানের কানে ময়লা জমলে কৃষ্ণাই সবসময় পরিষ্কার করে দেয়। এই একটা ব্যাপারে অংশুমান এখনও বাচ্চা ছেলে রয়ে গেছে।

কিন্তু এখন অংশুমান ওর ডান কানটা দেখিয়েছে–যে কানে একটু আগেই ওই সাপটা ঢুকে পড়ে আস্তানা গেড়েছে।

কল্পনায় কান পরিষ্কার করার দৃশ্যটা কৃষ্ণা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিল। ও অংশুমানের কানের সুড়ঙ্গ বরাবর দেখতে চেষ্টা করছে। তারপর তামার তৈরি কানখোঁচানিটা ধীরে ধীরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে সুড়ঙ্গের ভিতরে, এদিক-ওদিক নাড়াচ্ছে। ঠিক তখনই সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে হিংস্র ফোঁস-ফোঁস শব্দ ভেসে এল। তারপর কানখোঁচানিটা ভিতর থেকে কেউ টেনে ধরল। কৃষ্ণা প্রাণপণে টেনেও ওটাকে বের করে নিতে পারছে না। টানাপোড়েনের সে এক অদ্ভুত লড়াই!

কৃষ্ণার গায়ে কাঁটা দিল। ও শিউরে উঠে বলল, তুমি নিজে দেখে নিয়ো। আমার ভয় করছে, আমি পারব না।

অংশুমান হেসে বলল, তোমার এই মিছিমিছি ভয়ের কোনও মানে হয় না…

ঠিক সেই মুহূর্তে কৃষ্ণার নজর গেল অংশুমানের ডান কানের দিকে। সবুজ লেজের ডগাটা আবার বেরিয়ে এসে উঁকি মেরে ওকে দেখছে, আর থেকে থেকেই সামান্য ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। অনেকটা যেন কোনও বাচ্চা ছেলের টুকি দেওয়ার মতো।

কৃষ্ণা এক ভয়ংকর চিৎকার করে উঠতেই লেজের ডগাটা টুক করে ঢুকে পড়ল কানের ভিতরে।

এই ঘটনার পর থেকেই কৃষ্ণা অংশুমানকে ভয় পেতে শুরু করল। অংশুমান টেলিফোনে কথা বলার সময় ও কিছুতেই সেদিকে তাকাত না। অন্য ঘরে নিজের শোয়ার ব্যবস্থা করল। স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সময় ও বারবারই তাকাত তার কানের দিকে। আর ভাবত, সবুজ রঙের ঠান্ডা শরীর নিয়ে লালায় ভেজা সাপটা কখন আবার বাইরে বেরিয়ে আসবে। এইরকম অদ্ভুত একটা ভয় ওকে পাগল করে তুলল।

এরপর আর একদিন কৃষ্ণা সাপটাকে দেখতে পেয়েছিল।

শীতের দুপুরে অংশুমান নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। মাথার কাছের জানলা দিয়ে একফালি রোদ এসে পড়েছে দেওয়ালে।

ঘুমোলে অংশুমানের সামান্য নাক ডাকে। এখনও তার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। কৃষ্ণা ঘরে এসেছিল আলনা থেকে ওর একটা শাড়ি নিতে। তখনই ও দেখতে পেল সাপটাকে।

ধবধবে সাদা বালিশের ওপরে সাপটা ঘুরে বেড়াচ্ছে!

অংশুমান চিত হয়ে শুয়ে ছিল। ফলে অতি সহজেই সবুজ লিকলিকে সাপটা বেরিয়ে এসেছে ওর কানের ফুটো দিয়ে। ওটার শরীরের প্রায় ফুটখানেক বালিশের ওপরে দিব্যি নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে। তবে এবারেও সেই লেজের দিকটা। বাকি অংশটা লুকিয়ে রয়েছে অংশুমানের শরীরের ভিতরে।

কৃষ্ণার মনে হল, সাপটা যেন কিছু খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু লেজের দিক দিয়ে কোনও সরীসৃপ কি কখনও কিছু খুঁজে বেড়ায়।

কয়েক সেকেন্ড স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল কৃষ্ণা। ওর বুকের ভিতরে কেউ যেন নুন আর বরফের হিমমিশ্রণ ছড়িয়ে দিচ্ছিল। ওর চোখের নজর ঝাপসা হয়ে গেল। গোটা ঘরটা উজ্জ্বল সবুজ রঙে ভরে গেল, তার মাঝে-মাঝে হলুদ আর কালো বুটি।

তারপর যে-চিৎকার কৃষ্ণার গলা দিয়ে বেরিয়ে এল তাকে মানুষের চিৎকার বলা যায় না। সে-চিৎকার কোনও পশু, অথবা পিশাচের।

পরক্ষণেই কৃষ্ণা চেতনা হারিয়ে ফেলেছিল।

অংশুমান চমকে জেগে উঠেছিল। ওর চেষ্টায় মিনিটদশেকের মধ্যেই কৃষ্ণার জ্ঞান ফিরে এসেছিল। কিন্তু এরপর একটি মুহূর্তও ও অংশুমানের ফ্ল্যাটে থাকতে চায়নি।

অংশুমান ওকে অনেক বুঝিয়েছে, অনেক কান্নাকাটি করেছে, কিন্তু কৃষ্ণাকে ও ধরে রাখতে পারেনি। কৃষ্ণা সুটকেস গুছিয়ে নিয়ে চলে গেছে ওর মায়ের কাছে।

অংশুমানের মনে হয়েছিল কৃষ্ণার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই ও সাইকিয়াট্রিস্ট দেখানোর কথাও বলেছিল, কিন্তু কৃষ্ণা তাতে আগুনের শিখার মতো ফুঁসে উঠেছিল।

লুকিয়ে থাকা একটা সাপ শেষ পর্যন্ত ওদের ভালোবাসার বিয়েটাকে তছনছ করে দিল।

.

গল্প শেষ করে থামল বিনু। ওর মুখে কেমন যেন এক মলিন বিষণ্ণ ছাপ। টিউব লাইটের আলো তেরছাভাবে ওর মুখে এসে পড়েছে। ও এমন এক শূন্য দৃষ্টিতে দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে ছিল, যেন কৃষ্ণা-অংশুমানের ঘটনাটা এখনও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে।

একটা থমথমে অস্বস্তি ঘরের মধ্যে জাঁকিয়ে বসেছিল। সেটা হালকা করার চেষ্টায় আমি বললাম, তোর এই গল্প বিশ্বাস করা যায় না। একেবারে আজগুবি। কারও কান দিয়ে কখনও সাপের লেজ বেরোতে পারে!

বিনু মলিনভাবে হাসল, বলল, বিশ্বাস কর, যা বললাম তার এক ফোঁটাও মিথ্যে নয়। ওই সময়ে কৃষ্ণাকে আমি দেখেছি…ওর চেহারা আধখানা হয়ে গিয়েছিল…ওর দিকে তাকানো যেত না…।

ঠিক তখনই বিনুর কানের দিকে আমার নজর গেল।

ওর বা কোন দিয়ে ধীরে-ধীরে বেরিয়ে এসেছে একটা সরীসৃপের লেজ। লালায় ভেজা কালো হলুদ ডোরাকাটা চকচকে তার দেহ। ওটা কখনও সড়সড় করে বেরিয়ে এসে লম্বায় বাড়ছে, কখনও আবার ঢুকে পড়ছে বিনুর কানের ভিতরে। অথচ বিনু কিছুই টের পাচ্ছে না। আপনমনে বিড়বিড় করে কথা বলে যাচ্ছে।

আমি ভিতু নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে-ভয়ংকর চিৎকার আমার গলা দিয়ে বেরিয়ে এল তাকে মানুষের চিৎকার বলে চিনে নেওয়া খুব শক্ত। আমি আঙুল তুলে বিনুর কানের দিকে দেখালাম। একটা জান্তব গোঙানির শব্দ বেরিয়ে এল আমার মুখ দিয়ে। জড়ানো গলায় কোনওরকমে বললাম, বিনু! সাপ! সাপ!

বিনু নরমভাবে হেসে হাত বাড়াল নিজের বাঁ কানের দিকে। কিন্তু সাপটার লেজের দিকে কি চোখ আছে? ওটা বিনুর হাতের নাগালকে একচুলের জন্যে ফাঁকি দিয়ে নিঃশব্দে সড়সড় করে ঢুকে গেল কানের ভিতরে।

আমি ভয়ার্ত চোখে বিনুর দিকে তাকিয়ে পাথরের মূর্তি হয়ে বসে রইলাম। আমার বুকের ভিতরে এক অস্থির কঁপুনি শুরু হল। মাথার ভিতরে যুক্তি-তর্ক-বিজ্ঞান সবকিছু কেমন যেন জট পাকিয়ে যাচ্ছিল।

বিনু আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, তুইও সাপ দেখছিস! আসল ব্যাপারটা কী জানিস? আমাদের প্রত্যেকের ভেতরে একটা করে সাপ আছে। কারও কারও বেলায় সেটা দেখা যায়, আর অন্যদের বেলায় দেখা যায় না…।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *