মসলার যুদ্ধ – ৬

ছয়

মীর হুসেন তাঁর কামানবাহী জাহাজগুলো নিয়ে চলে যাওয়ার পর পোর্তুগীজরা সত্যসত্যই প্রাচ্য অঞ্চলের সমুদ্রগুলোর একচ্ছত্র অধীশ্বর হয়ে দাঁড়াল। সেখানে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়াবার মত কোন শক্তিই রইল না।

নৌ-শক্তিকে কিছুতেই ধ্বংস করতে পারে নি তারা। উভয় পক্ষে বহু যুদ্ধবিগ্রহ ঘটেছে। কিন্তু কালিকটের স্বাধীনতা শেষ পর্যন্ত অক্ষুন্ন ছিল। সেই দুর্দিনে কালিকটকে সাহায্য করবার মত আর কেউ ছিল না। শুধু ছিল তাদের দুর্জয় সংকল্প আর তার হিন্দু-মুসলমান প্রজাদের মিলিত প্রতিরোধ। পোর্তুগীজদের আক্রমণের তরঙ্গ বার বার তার কুলে এসে ভেঙ্গে পড়েছে, কিন্তু বার বারই তাকে প্রতিহত হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। ১৫০৯ থেকে ১৫৯৯, এই ৯০ বছরের ইতিহাস দুর্দম প্রতিরোধের ইতিহাস। এই কালিকটে পোর্তুগীজরা সর্বপ্রথম ভারতবর্ষের ভূমি স্পর্শ করেছিল, এই কালিকটের সঙ্গে, জলে-স্থলে বহুবার শক্তি পরীক্ষা করতে হয়েছে তাদের, কিন্তু কালিকট অধিকার করা কোনমতেই সম্ভব হয়ে উঠল না। শুধু তাই নয়, কালিকটের কাছ থেকে বাধা পেয়ে মালাবারের সমুদ্র উপকূলে কোথাও তারা ঘাটি গেড়ে বসতে পারে নি ১৫৯৯ খ্রীষ্টাব্দে দুপক্ষের মধ্যে সন্ধি হয়ে যায়।

কিন্তু তা হলেও যে-উদ্দেশ্যে ওরা ভারতবর্ষে এসেছিল, তা অপূর্ণ রইল না। আরব সাগর, ভারত মহাসাগর এমন কি প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত তাদের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত হোল। ফলে মসলার বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে তাদের হাতে এসে গেল। দেড় শো বছর পর্যন্ত মসলার বাণিজ্য তাদের মুঠোর মধ্যেই ছিল। এই দেড় শো বছর ধরে পোর্তুগাল সমস্ত ইউরোপময় একচেটিয়া ভাবে মসলার ব্যবসা করে চলেছে।

পোর্তুগীজদের এই সমুদ্রে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশী, তার নাম এফনসে অ্যালবুকার্ক। অ্যালবুকার্ক ১৫০৬ খ্রীস্টাব্দে এখানে আসেন। এই সময় ত্রিস্তান দ্য কুনহার নেতৃত্বে পোর্তুগীজদের একটি বাহিনী লোহিত সাগরের বণিকদের বিরুদ্ধে এক অভিযান চালায়। অ্যালবুকার্ক এই বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন। ডন ফ্রান্সেসকো দ্য আলমেইডার পরে তিনি পোর্তুগীজদের অধিকারভুক্ত অঞ্চলের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন।

অ্যালবুকার্কের প্রথম লক্ষ্য হোল একটি দুর্ভেদ্য ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করা। সেখান থেকে তিনি সমস্ত সমুদ্রগুলোর উপর অপ্রতিহত প্রভুত্ব বিস্তার করতে পারবেন। সে সময় পোর্তুগীজদের একমাত্র দুর্গ ছিল কোচিনে। তাও কোচিনের উপকূলে নয়। এই দুর্গ ছিল ছোট একটি দ্বীপের মধ্যে। সেই দ্বীপের আয়তন বর্গ মাইলের মত। অ্যালবুকার্ক বললেন, না, এ দুর্গ দিয়ে চলবে না। তাঁর দৃষ্টি ছিল কালিকটের দিকে। পোর্তুগীজদের জলদস্যুতাসত্তেও কালিকট তখনও মসলা বাণিজ্যের বড় বন্দর। এই দেশে ঘাঁটি করে বসতে পারলে পোর্তুগীজদের সবদিক দিয়ে সুবিধা। ওদিকে পোর্তুগালরাজ ডোম ম্যানুয়েল গর্জচ্ছেন, তোমরা করছি কি? সামান্য একটা কালো মানুষের দেশ, তার কাছে বার বার ঠোক্কর খেয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে, কি লজ্জার কথা! তার সবচেয়ে বড় সামরিক অফিসার যিনি, সেই গ্র্যাণ্ড

মার্শাল অব পোর্তুগালকে তিনি দ্রুত পাঠিয়ে দিলেন ভারতবর্ষে। তার সঙ্গে নির্দেশ এল, যেমন করে পার, জামেরিনের শক্তি চূর্ণ করে কালিকট অধিকার করে নাও।

সবাই বলল, ঠিক কথা। কালিকট অধিকার করতেই হবে। পোর্তুগালের মানমর্যাদাকে কি সমুদ্রের জলে বিসর্জন দিয়ে যাব আমরা? সিদ্ধান্ত হোল, ঝটিকা আক্রমণ করতে হবে, কালিকট যাতে প্রস্তুত হবার সময়টুকু না পায়। পৃথক পৃথক ভাবে দু’টি বহর সাজানো হোল। একটির নাম “ফ্লিট অব পোর্তুগাল”। স্বয়ং মার্শাল তার পরিচালক। অপরটিকে শাসনকর্তা অ্যালবুকার্ক পরিচালিত করবেন।

এই বহরের নাম “ফ্লিট অব ইণ্ডিয়া”। বহু সৈন্য তাঁদের সঙ্গে ছিল কালিকট নামতে বেশী বেগ পেতে হোল না তাদের। এবার আর নৌ-যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ স্থলভূমিতেই হোল! কালিকাটির যোদ্ধারা অদ্ভুত রণপ্রতিভার পরিচয় দিল সেদিন। পোর্তুগীজরা এমন কথা কল্পনাও করতে পারে নি। চূড়ান্ত পরাজয় ঘটল। তাদের। বহু পোর্তুগীজ সৈন্য মারা পড়ল। স্বয়ং গ্র্যাণ্ড মার্শাল অব পোর্তুগাল আর তার ৭০ জন বিশিষ্ট সহচর এই যুদ্ধে প্রাণ দেন। আর অ্যালবুকার্ক বা হাতে ও ঘাড়ে গুরুত্বর আঘাত পান। কামানের গোলার ঘায়ে ধরাশায়ী হয়ে পড়লে তাকে অচৈতন্য অবস্থায় জাহাজে তুলে নিয়ে যায়। শেষের এই সংবাদটুকুর মধ্য দিয়েই প্রকাশ যে, ইতিমধ্যে কালিকটে কামান এসে গেছে। কালিকটে এই প্রথম স্থল যুদ্ধ। এইভাবেই তার পরিণতি ঘটল।

কালিকটের কাছে দুর্ধর্য পোর্তুগীজদের এই চূড়ান্ত পরাজয় সে যুগের এক বিশেষ স্মরণীয় ঘটনা। পোর্তুগীজ বাহিনীকে পরিচালিত করেছিলেন স্বয়ং গ্র্যাণ্ড মার্শাল। কামান ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্রের দিক দিয়ে পোর্তুগীজরা কালিকটের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী ছিল, সে কথা স্বচ্ছন্দেই বলা চলে। কি হিন্দু, কি মুসলমান, প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর মধ্যে একটিও এই চরম দুর্দিনে কালিকটের পাশে এসে দাঁড়ায় নি। তবু কেমন করে এই আশ্চর্য ঘটনা ঘটাল ভাবলে অবাক হয়ে যেতে হয়। নির্ভীক দেশপ্রেম আর আক্রমণকারী নৃশংস শত্রুর প্রতি তীব্র ঘৃণা ছাড়া আর কি তাদের সম্বল ছিল? আর সেই দেশপ্রেম এতই গভীর যে, তার সামনে হিন্দু আর আরবীর ভেদ-বুদ্ধি তুচ্ছ হয়ে মিলিয়ে গেল। দীর্ঘদিন ধরে এই ঐক্যকে তারা দৃঢ়ভাবে বেঁধে রেখেছিল, ধন্য তাদের দেশপ্রেম।

প্রাচ্যের বুকে ঔপনিবেশিকবাদের সেই প্রথম পদপাত কালিকটকে সর্বপ্রথম মোকাবিলা করতে হয়েছে। তার সঙ্গে কালিকটের বীর অধিবাসীরা আপনাদের স্বাধীনতা রক্ষা করবার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে চলেছিল। সেখান থেকেই সাম্রাজ্যবিরোধী সংগ্রাম শুরু। তারপর কত শতাব্দী ধরে দেশে দেশে সেই সংগ্রাম চলে আসছে। আজও সেই সংগ্রাম শেষ হয়ে যায় নি। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের এই শেষ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে কালিকটের সেই বীরদের কথা স্মরণ করে তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানাই।

কালিকট যখন পোর্তুগীজদের সঙ্গে জীবন-মরণ সংগ্রামে লিপ্ত তার প্রতিবেশী রাজ্যগুলো তখন কি করছিল? পোর্তুগীজদের সম্পর্কেই বা তাদের কি মনোভাব ছিল?

উত্তরে তুঙ্গভদ্রা নদী থেকে দক্ষিণে কুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত বিস্তারিত বিশাল হিন্দুরাজ্য বিজয়নগর। তারই একপাশে আরব সমুদ্রের উপকূলে ছোট্ট কালিকট রাজ্য। তুঙ্গভদ্রার উত্তরে এককালের বাহামনী রাজ্য ভেঙ্গে বেরাব, আহমদনগর, বিদর, বিজাপুর ও গোলকুণ্ডা এই পাঁচটি মুসলমান রাজ্য গঠিত হয়। তারও উত্তরে তিনটি মুসলমান রাজ্য গুজরাট, মালব ও খান্দেশ। এর মধ্যে গুজরাট, আহমদনগর, বিজয়নগর ও কালিকট এই ক’টি রাজ্য আরব সাগরের উপকূলে অবস্থিত। সেইজন্যই পোর্তুগীজদের আক্রমণের সঙ্গে এদের সকলের স্বার্থই অল্পাধিক পরিমাণে সংশ্লিষ্ট।

বিজয়নগরের উত্তরে এই সব ক’টা দেশই মুসলমান রাজ্য। সেইজন্যই তার মুসলমান আতঙ্ক এত বেশী যে, যা কিছু ইসলাম-বিদ্বেষী তাকেই তার বন্ধু বলে মনে হয়। এই সূত্র অন্ধের মত অনুসরণ করে চললে সময় সময় স্বখাত সলিলে ডুবে মরতে হয়। এ দৃষ্টান্তের অভাব নেই। পোর্তুগীজরা মুসলমান-বিদ্বেষী একথা আগেই বলেছি। এ কথাটা কোথাও প্রচারিত হতে বাকী ছিল না। পোর্তুগীজরা হজযাত্রীদের বহু জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে, একথা সকলেরই জানা ছিল। কাজেই তাদের মুসলমান-বিদ্বেষের তীব্রতা-সম্পর্কে কোনই সন্দেহ করা যায় না। তা ছাড়া অন্যান্য সম্প্রদায়কে আপাতত নিজের হাতে রাখবার জন্য পোর্তুগীজরা তাদের কথা ও কাজের মধ্য দিয়ে এ কথাটা প্রচার করতেও চেষ্টা করত। সেই জন্যই বিজয়নগর পোর্তুগীজদের আক্রমণটাকে খুশী মনেই গ্রহণ করেছিল। ভেবেছিল, পোর্তুগীজরা পক্ষে থাকলে উত্তরের মুসলমান রাজ্যগুলো- সম্পর্কে তার ভয় করবার মত কিছু থাকবে না।

পোর্তুগীজরা যখন গোয়া দখন করে বসল, বিজয়নগরের রাজা কৃষ্ণদেব রায় সংবাদটাকে সুসংবাদ হিসেবেই গ্রহণ করেছিলেন। মুসলমান বিদ্বেষ ছাড়াও খুশী হবার আরও কারণ ছিল। পোর্তুগীজরা গোয়া দখল করবার ফলে বিদেশ থেকে অস্ত্রশস্ত্র এবং অশ্বারোহী সৈন্যদের জন্য ঘোড়া আমদানী করার সুযোগ পাওয়া গেল। সেইজন্য রাজা কৃষ্ণদের রায়- যে শুধু মনে মনেই খুশী হলেন তা নয়, পোর্তুগীজদের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চললেন। অ্যালবুকার্ক তাঁর রাজ্যের ভাটকল নামক স্থানে একটা বাণিজ্য কুঠি গড়বার জন্য রাজার কাছে অনুমতি চাইলেন। রাজা বিনিময়ে কোন কিছু পাওয়ার আশা না রেখে জায়গাটা এমনিতেই ছেড়ে দিলেন তাকে। অথচ ঠিক সেই সময় পোর্তুগীজদের সঙ্গে হিন্দুরাজ্য কালিকটের কথা মনে করে হিন্দু রাজা কৃষদের রায়ের মন একটুও বিচলিত হোল না।

তুঙ্গভদ্রার উত্তর তীর থেকে শুরু করে গুজরাট পর্যন্ত যে-ক’টা মুসলমান রাজ্য আছে, পোর্তুগীজদের আক্রমণের উত্তরে তাদের দিক থেকেও কোন টু টাঁ শব্দ উঠল না। অথচ পোর্তুগীজদের মুসলমান-বিদ্বেষের কথা তারা তো ভাল করেই জানত। তা ছাড়া গুজরাট বাণিজ্যের দেশ। ক্যাম্বে, সুরাট আর চাওল এই তিনটি বন্দরে বহু বাণিজ্য জাহাজ। এই বাণিজ্যই গুজরাটের প্রধান নির্ভর। এই বাণিজ্যের চাকিকাঠি যদি পোর্তুগীজদের হাতে চলে যায়, এখানকার বণিকদের উপায় হবে কি? এখানকার বণিকেরা কালিকট বন্দর থেকে মসলা এনে তাই নিয়ে দেশে দেশে ব্যবসা করে বেড়াত। তা ছাড়া উত্তর ভারতের নানারকম পণ্য এই বন্দর দিয়ে পাশ্চাত্ত্য দেশগুলোতে রপ্তানি হোত।

এই পোর্তুগীজ পঙ্গপালের দল মসলার গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে এসেছিল। এখানকার মসলা-বাণিজ্যের সঙ্গে সঙ্গে আর সব বাণিজ্যের চাবিকাঠি নিজেদের মুষ্টিগত করবার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠল তারা। সেইজন্য স্থলভাগে সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পরিবর্তে বাণিজ্যপথ সমুদ্রে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার দিকেই তারা বেশী মন দিয়েছিল। বাণিজ্য-নির্ভর গুজরাটের সুলতান এ বিষয়ে কতটা সচেতন ছিলেন, বলা যায় না। কিন্তু তাঁর কার্যকলাপের মধ্যে এই দুরদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায় নি। আমরা আগে দেখেছি, পোর্তুগীজদের বিরুদ্ধে কালিকটকে সাহায্য করবার জন্য মিশরের বহর মীর হুসেনের নেতৃত্বে দিউ দ্বীপে এসে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। দিউ দ্বীপ গুজরাট রাজ্যের অন্তর্গত। গুজরাটের সুলতান তাকে বসবার জায়গা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রতিনিধি দিউর শাসনকর্তা মালিক আয়াজ চর, প্রয়োজনের মুহুর্তে পোর্তুগীজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মিশরীয়দের রসদ সরবরাহ বন্ধ করে দিল। এই বিশ্বাসঘাকতার ফলে বিক্ষুব্ধ মীর হুসেন স্বদেশে ফিরে গেলেন। আর পোর্তুগীজদের পক্ষে তা এক সুবর্ণ সুযোগ হয়ে দাঁড়াল। গুজরাটের সুলতান কি ভেবে এই কাজ করেছিলেন, বলার উপায় নেই। তবে এজাতীয় ঘটনা ভারতবর্ষের ইতিহাসে নতুন কিছু নয়। বৈদেশিক আক্রমণকারীরা অনেক সময়ই এই পন্থায় তাদের প্রবেশের পথ সুগম করে নিয়েছে।

কালিকট অধিকার করতে ব্যর্থ হয়ে অ্যালবুকার্ক এবার গোয়ার দিকে দৃষ্টি ফেরালেন। একটা নির্ভরযোগ্য দুর্গ প্রতিষ্ঠা করা তাদের পক্ষে অবশ্য প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গোয়া বিজাপুর রাজ্যের অন্তর্গত। আরবসাগরের উপকূলে তার অবস্থান।

বিনা যুদ্ধে গোয়া দখল হয়ে গেল, এখানেও সেই বিশ্বাসঘাতকতার খেলা। গোয়ার তুলাজী নামে একজন হিন্দু প্রধান ছিল। তার সাহায্যে অ্যালবুকার্ক গোয়া অধিকার করে বসলেন।

এইভাবে গোয়া দখল করবার পর অ্যালবুকার্ক পোর্তুগালরাজ ডোম ম্যানুয়েলের কাছে এ সম্পর্কে যে-সংবাদ পাঠিয়েছিলেন, তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি লিখেছিলেন, গোয়ায় যে-সমস্ত আরবী ছিল, আমরা তাদের সবাইকে হত্যা করেছি, আমাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পায় নি। আমরা তাদের মসজিদের মধ্যে আটকে রেখে, শেষে সেই মসজিদ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি। ধর্মোন্মাত্তকা মানুষকে কোন্ বরবরতার স্তরে টেনে নিয়ে যেতে পারে, তার যেন সীমা নেই। বিশেষ করে বৈষয়িক স্বার্থ বুদ্ধি যদি তার সঙ্গে সিংশ্লিষ্ট থাকে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *