ঝিল্লীপক্ষ পতঙ্গ : বোলতা
তোমরা নিশ্চয়ই বোল্তা দেখিয়াছ। বোল্তা হল্দে রঙের পোকা; খুব পাত্লা চারিখানা ডানা লইয়া খাবারের দোকানে ক্রমাগত ঘুরিয়া বেড়ায়। পাখীরা যেমন ডানা গুটাইয়া ডালে বসে, ইহারা প্রায়ই সে-রকমে ডানা গুটাইয়া কোনো জায়গায় বসে না। যখন স্থির হইয়া দাঁড়ায়, তখন ডানা কয়েকখানিকে শরীরের উপরে উঁচু করিয়া রাখে। বোল্তার দল বাগানের গাছের ডালে, কখনো তোমাদের ঘরের কড়িকাঠে, কখনো দরজা বা জানালার মাথায় চাক বাঁধে। ইহা তোমরা দেখ নাই কি? চাকের বোল্তারা কিন্তু ডানা গুটাইয়া চাকে চলা-ফেরা করে।
বোল্তার লেজের শেষে হুল থাকে। তাই কাছে আসিলেই লোকে হুলের ভয়ে তাহাদিগকে তাড়াইয়া দেয়।
আমাদের দেশে সর্ব্বদা যে হল্দে রঙের বোল্তা দেখা যায়, এখানে তাহার একটা ছবি দিলাম। ছবিতে বোল্তার মাথা, বুক, ও লেজ স্পষ্ট দেখিতে পাইবে। ইহাদের বুক ও লেজের মধ্যের অংশটা খুব সরু। ছয়খানা পা ও মাথায় দুটা শুঁয়ো আছে এবং দুটি বড় বড় চোখও আছে। এই চোখ প্রজাপতিদেরই চোখের মত। একএকটি চোখ হাজার হাজার ছোট ছোট চোখ মিলিয়া প্রস্তুত। তা ছাড়া আরো তিনটি ছোট চোখ ইহাদের মাথার উপরে লাগানো থাকে। একটু ভালো করিয়া পরীক্ষা করিলে খালি চোখেই তোমরা ঐ তিনটি চোখ বোল্তার মাথার উপরে দেখিতে পাইবে। বোল্তার দেহের ভিতরে প্রজাপতিদের মতই সরু নল লাগানো থাকে, তাহা দিয়া ইহারা নিশ্বাস টানে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে আমাদের বুক যেমন উঠা-নামা করে বোল্তার লেজ সেই রকম তালে তালে উঠা-নামা করে। বাতাস টানিবার ছিদ্র ইহাদের লেজের আংটির গোড়ায় সাজানো থাকে। তাই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে লেজ উঠা-নামা করে।
তোমরা বোল্তার পা যদি অণুবীক্ষণ যন্ত্র বা আতসী কাচ দিয়া পরীক্ষা করিতে পার, তবে দেখিবে, পায়ে চিরুণীর মত কতকগুলি দাঁত লাগানো রহিয়াছে। মাথায় ধূলা-বালি লাগিলে আমরা যেমন চিরুণী দিয়া মাথা পরিষ্কার করি, মুখের শুঁয়ো দুটিতে কিছু লাগিলে বোল্তারা পায়ের ঐ চিরুণী দিয়া শুঁয়ো সাফ্ করে।
বোল্তার চাক্ তোমরা অনেক দেখিয়াছ। ইহার প্রত্যেক ছিদ্রটি ছয়কোণা এবং ঠিক গায়ে-গায়ে লাগানো। ইহাতে জায়গার একটুও অপব্যয় হয় না। প্রত্যেক ছিদ্রের দেওয়ালগুলি পাশের ছিদ্রগুলির দেওয়ালের কাজ করে। যদি ছিদ্রগুলি গোলাকার থাকিত, তাহা হইলে সেগুলির দেওয়ালকে কখনই গায়ে-গায়ে লাগানো যাইত না।
পৌষ-মাঘ মাসের শীতে আমাদের দেশে বোল্তা প্রায়ই দেখা যায় না। এই দুইটি মাস বোল্তাদের দুই-চারিটি, দেওয়ালের ফাটালে বা অন্য কোনো নির্জ্জন জায়গায় মড়ার মত পড়িয়া থাকে। তার পরে ফাগুনের হাওয়া গায়ে লাগিলেই তাহারা বাহির হইয়া চাক তৈয়ারির জোগাড় দেখে।
তোমরা যদি ভালো করিয়া নজর রাখ তবে দেখিবে, বোল্তারা যখন কোনো জায়গায় প্রথম চাক বাঁধিতে সুরু করে, তখন সেখানে অনেক বোল্তা থাকে না। একটি বা দুইটি চারিদিকে ঘুরিয়া মনের মত জায়গা ঠিক করে এবং সেখানে ঐ একটি বা দুইটিতে মিলিয়াই চাক বাঁধা সুরু করিয়া দেয়। ইহারা স্ত্রী-বোল্তা;—পেটের ভিতরে অনেক ডিম বোঝাই রাখিয়া ইহারা চাকের পত্তন করে। চাকে দুই তিনটি ছিদ্র তৈয়ারি হইলেই তাহারা ছিদ্রে একএকটা ডিম পাড়িতে থাকে। ডিমগুলি একটু লম্বা ধরণের এবং সাদা। চাকের উপর দিক্টা সকল সময়েই মাটির দিকে মুখ করিয়া ঝুলিতে থাকে। ইহাতে বৃষ্টির জল বা রৌদ্রের তাপ কখনই চাকের ছিদ্রে পড়ে না; ডিমগুলি বেশ ভালো অবস্থাতেই থাকে। তার পরে চাক যে ছিঁড়িয়া পড়িবে, তাহারো ভয় থাকে না। মোটা তারের মত এক রকম বোঁটা তৈয়ার করিয়া বোল্তারা তাহা গাছের ডালে বা দরজা-জানালায় লাগায় এবং পরে এই বোঁটার গায়ে ঝুলাইয়া চাক বাঁধে। তোমরা যদি বোল্তার চাক কাছে পাও, তাহা হইলে দেখিয়ো চাকের বোঁটা কত শক্ত। চাকের ভার যদি দশ পনেরো সের হয়, তবুও সেই বোঁটা ছিড়িয়া চাক মাটিতে পড়ে না।
বোল্তারা কি জিনিস দিয়া চাক বাঁধে, তোমরা বোধ হয় এখন তাহাই জানিতে চাহিতেছ। কাগজ কি জিনিস দিয়া তৈয়ার হয়, তোমরা তাহা জান না কি? কয়েক রকম কাঠ ও ঘাস কলে পিষিয়া প্রথমে মাড়ের মত করা হয়। পরে তাহাই জমাট করিলে কাগজ হইয়া পড়ে। বোল্তারা কাগজের মতই এক রকম জিনিস দিয়া চাক প্রস্তুত করে। তাহাদের দাঁত বড় ধারালো,—ঠিক যেন করাত। গাছের শুক্নো ডাল-পালা তাহারা সেই করাতের মত দাঁত দিয়া গুঁড়া করে; তার পরে মুখের লালা মিশাইয়া তাহা কাদার মত করে এবং শেষে তাহা দিয়া চাক বাঁধে। তোমরা যদি চাকের খানিকটা ছিঁড়িয়া দেখ, তাহা হইলে জিনিসটাকে ঠিক্ আমাদের বাজারের বাদামি রঙের মোটা কাগজ বলিয়া মনে করিবে। কাগজ জলে ভিজিলে গলিয়া যায়। কিন্তু বোল্তার মুখের লালার এমনি গুণ যে, তাহা দিয়া যে কাগজের মত জিনিস প্রস্তুত হয় তাহা জলে ভিজিলে গলিয়া যায় না। শুনা যায়, চীন-দেশের লোকেরা নাকি হাজার হাজার বৎসর আগে কাগজ তৈয়ারির কৌশল বাহির করিয়াছিল। কিন্তু চীনেদের আগেও বোল্তারা কাগজ তৈয়ারি করিয়া চাক বাঁধিয়া আসিতেছে। কথাটা আশ্চর্য্য নয় কি?
যাহা হউক, বোল্তারা চাকের মধ্যে যে ছোট ডিম পাড়ে, তাহা হইতে বাচ্চা বাহির হইতে আট দশ দিন কাটিয়া যায়। এই সময়ের মধ্যে তাহারা চাকে অনেক নূতন ঘর জুড়িয়া এবং ঘরের ছিদ্রগুলিকে গভীর করিয়া চাকখানিকে বেশ বড় করে। কিন্তু তখনো চাকে দুই তিনটি বোল্তাই দেখা যায়। এই সময়ে বোল্তাদের হাতে অনেক কাজ থাকে। চাক তৈয়ারি ও বাচ্চাদের আদর-যত্ন ইত্যাদি সকলি তাহাদিগকে করিতে হয়। অন্য পতঙ্গের ডিম হইতে শুঁয়ো-পোকার মত বাচ্চা বাহির হইলে, বাচ্চারা কচি পাতায় ও ডালে বেড়াইয়া নিজেদের খাবার নিজেরাই জোগাড় করিয়া লয়। কিন্তু বোল্তার বাচ্চারা তাহা পারে না। সাধারণ শুঁয়ো-পোকাদের মত ইহাদের পা থাকে না; কাজেই চাকের ছিদ্র হইতে তাহারা বাহির হইতে পারে না। পাখীরা যেমন মুখে করিয়া খাবার আনিয়া বাচ্চাদের পেট ভরায়, বোল্তারা ঠিক সেই রকমে বাচ্চাদিগকে খাবার দেয়। অন্য পতঙ্গের বাচ্চা, ফড়িং, ছোট গোবরে-পোকা বোল্তাদের প্রধান খাদ্য। তা ছাড়া মিষ্ট জিনিসও ইহারা বেশ ভালবাসে। দোকানের যেখানে চিনি-বোঝাই বস্তা থাকে, সেখানে, সমস্ত দিনই বোল্তারা ভন্-ভন্ করিয়া ঘুরে এবং চিনি চাটিয়া খায়। তা ছাড়া পাকা ও মিষ্ট ফলের রসও ইহারা খাইতে ভালবাসে। বোল্তার জিভ্ আছে, কিন্তু তাহা আমাদের জিভের মত নয়। মুখের উপর ও নীচের ওষ্ঠের কতকগুলি শুঁয়ো একত্র হইয়া জিহ্বার কাজ চালায়। ইহা দিয়াই তাহারা তরল জিনিস চাটিয়া খায়।
ছোট ছেলেমেয়েগুলিকে মা যাহা ইচ্ছা খাইতে দেন না। যাহা খাইতে ভালো এবং সহজে হজম হয়, সেই সকল খাদ্য দিয়া মা শিশুদের পালন করেন। বোল্তার মা, বাচ্চাদের পালন করিবার সময়ে ঠিক্ তাহাই করে। খুব ভালো ভালো নরম পোকা-মাকড় নিজের দাঁত দিয়া চিবাইয়া সে বাচ্চাদের মুখের কাছে ধরে এবং তাহা খাইয়া বাচ্চারা বড় হয়।
এই রকমে পনেরো কুড়ি দিন আহার করিয়া বোল্তার বাচ্চারা পুত্তলির অবস্থায় আসিয়া দাঁড়ায়। তখন ইহারা চাকের ছিদ্রের তলায় নামিয়া যায় এবং মুখ হইতে এক রকম লালা বাহির করিয়া ছিদ্রের মুখ ঢাকিয়া ফেলে। বোল্তার চাক পরীক্ষা করিলে তোমরা তাহার কতকগুলি ছিদ্রকে এই রকমে ঢাকা দেখিতে পাইবে; ইহাদের সবগুলিই পুত্তলি-বোঝাই থাকে। পুত্তলি-অবস্থায় বাচ্চাদের খাওয়ার দরকার হয় না, তখন তাহারা একটু নিরিবিলি থাকিয়া শরীরটাকে বদ্লাইয়া সম্পূর্ণ পতঙ্গের আকারে আনিতে চায়। কাজেই ছিদ্রের মুখ বন্ধ রাখিয়া ইহারা বেশ ভালোই থাকে।
যাহা হউক, ঐরকমে প্রায় আট দশ দিন বদ্ধ থাকিলে সেই শুঁয়ো-পোকার আকারের বাচ্চাদের ডানা গজায়, চোখ ফোটে, পা বাহির হয় এবং গায়ের রঙ্ বদ্লায়। যাহা আগে মুড়ির মত পোকা ছিল, তাহা এই সময়ে বোল্তার আকার পাইয়া যায়। এই রকমে চেহারা বদ্লাইলে বাচ্চারা আর বদ্ধ ঘরে থাকিতে চায় না, তখন ঢাকনি কাটিয়া তাহারা বাহিরে আসে এবং দুই চারিবার ডানা ঝাড়া দিয়া একটু-আধটু উড়িতে আরম্ভ করে। ইহার পরে তাহারা আর কাহারো উপরে নির্ভর করে না, চাকের অপর বোল্তাদের মত কাজে লাগিয়া যায়। বোল্তার চাকের ছিদ্র কখনই শূন্য থাকে না। বাচ্চারা বড় হইয়া বাহির হইলেই, বোল্তারা শূন্য ছিদ্রে নূতন ডিম পাড়ে। অনেক প্রাণীর আাকার জন্মকালে ছোট থাকে, এবং বয়সের সঙ্গে একটু একটু বাড়িয়া শেষে তাহা বড় হইয়া পড়ে। বোল্তাদের পাখা উঠিবার সময়ে যে আকার থাকে, বয়সের সঙ্গে তাহা কখনই বাড়ে না। এই সময়কার আকারই উহাদের সম্পূর্ণ আকার।
আমরা সচরাচর যে-সব প্রাণী দেখিতে পাই, তাহাদের মধ্যে কতক স্ত্রী এবং কতক পুরুষ হইয়া জন্মে। কিন্তু কতকগুলি পতঙ্গের মধ্যে স্ত্রী ও পুরুষ ছাড়া আর এক জাতি দেখা যায়। ইহারা কর্ম্মী অর্থাৎ কুলি-মজুর বা দাসীর দল। দিবারাত্রি খাটিয়া ঘর তৈয়ারি করা, ঘরে পাহারা দেওয়া ও বাচ্চাদের আদর-যত্ন করাই ইহাদের কাজ। ইহাদের বাচ্চা হয় না, অথচ তাহাদিগকে পুরুষও বলা যায় না। বোল্তাদের মধ্যে স্ত্রী, পুরুষ ও কর্ম্মী এই তিন জাতিই আছে। যে হুলের ভয়ে আমরা চাকের কাছে যাই না, তাহা কেবল স্ত্রী ও কর্ম্মী বোল্তাদেরই লেজে লাগানো থাকে। পুরুষ বোল্তারা বড় নিরীহ প্রাণী। তাহাদের পিছনে হুল নাই; গায়ে ছাড়িয়া দিলে বা হাত দিয়া নাড়াচাড়া করিলে একটুও হুল ফুটায় না। কিন্তু ইহাদের মত অকর্ম্মা প্রাণী বোধ হয় পৃথিবীতে খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। তাহারা চাক তৈয়ারি বা বাচ্চাদের যত্ন করার কাজে একটুও সাহায্য করে না। কেবল দরোয়ানের মত বসিয়া বসিয়া চাকে পাহারা দেওয়া ও যে-সব বাচ্চা চাকে মারা যায়, তাহাদিগকে ফেলিয়া দেওয়াই ইহাদের কাজ।
যাহা হউক, নূতন চাকে বোল্তাদের যে-সকল বাচ্চা হয়, তাহাদের মধ্যে স্ত্রী বা অকর্ম্মা পুরুষ খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। সকলেই বড় বড় হুলওয়ালা কর্ম্মী হইয়া জন্মে এবং তাড়াতাড়ি চাকগুলিকে বড় করিয়া তুলে। পুরানো স্ত্রী-বোল্তারা তখন ডিম-পাড়ার কাজেই সর্ব্বদা ব্যস্ত থাকে। এই রকমে এক একটা চাকে কখনো কখনো তিন চারি শত বোল্তা একত্র বাস করে। ইহাদের সকলেই নিজেদের কাজ করিয়া যায়; পরস্পরের মধ্যে প্রায়ই ঝগ্ড়াঝাঁটি করে না।
সাত-আট মাস এই রকমে চাকের কাজ চলিলে যখন শীতকাল আসে, তখন বোল্তাদের দল-ভাঙার সময় উপস্থিত হয়। এই সময়ে চাকে আর কর্ম্মী বোল্তা জন্মে না; ডিম হইতে কেবল স্ত্রী ও পুরুষ বোল্তা বাহির হইতে আরম্ভ করে। ইহারা বড় হইয়া আর চাকের দিকে তাকায় না। স্ত্রী ও পুরুষেরা দলে দলে চাক ছাড়িয়া দূরে উড়িয়া বেড়াইতে আরম্ভ করে এবং কয়েক দিনের মধ্যে পুরুষেরা মরিয়া যায়। স্ত্রীদের মধ্যে যাহারা বাঁচিয়া থাকে, তাহারা পেট-ভরা ডিম লইয়া দেওয়ালের ফাটালে বা চালের বাতায় লুকাইয়া শীত কাটায়। এদিকে চাক প্রায় খালি হইতে আরম্ভ করে; কারণ কর্ম্মী বোল্তা আর চাকে জন্মে না। পুরানো কর্ম্মী বোল্তারা আর চুপ করিয়া চাকে বসিয়া থাকিতে পারে না। তখন তাহাদের বড়-আদরের বাচ্চাগুলিকে মুখে করিয়া চাক ছাড়িয়া যে-দিকে ইচ্ছা বাহির হইয়া পড়ে। কিন্তু তাহারা কোনো জায়গাতেই আশ্রয় পায় না। শেষে ইহাদের সকলেই কেহ জলে ডুবিয়া, কেহ শীতে থাকিয়া, কেহ আগুনে ঝাঁপাইয়া মারা যায়। এত যত্নের চাকখানা এই রকমে খালি হইয়া পড়ে। তোমরা খোঁজ করিলে এই রকম খালি বোল্তার চাক অনেক জায়গায় দেখিতে পাইবে।
শীত চলিয়া গেলে বোল্তারা প্রায়ই পুরানো চাকে বাস করে না। যে দু-দশটা স্ত্রী বোল্তা এদিকে ওদিকে লুকাইয়া শীত কাটায়, তাহারা গরম পড়িলেই গা ঝাড়া দিয়া বাহির হয় এবং মনের মত ভালো জায়গায় নূতন চাক তৈয়ার করিয়া সেখানে ডিম পাড়িতে সুরু করে।