উপসংহার

উপসংহার

আমাদের শক্তিকেন্দ্রগুলোতে রাষ্ট্র-ও-জন-ভাষা বাঙলা কেমন বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছে, তার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এ-পুস্তকে, একটি বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে যে আমাদের শক্তিশালী ব্যক্তিগণ ও শ্রেণীসমূহ নিজেদের স্বার্থ বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনায় বাঙলা ভাষার সাথে প্রত্যেক্ষ-পরোক্ষ সক্রিয়-নিষ্ক্রয় শত্রুতায় লিপ্ত। বাঙলাদেশের শাসক প্রশাসক পরিচালকগণ একটি ক্ষুদ্র শ্রেণী, কিন্তু অত্যন্ত শক্তিমান শ্রেণী, এবং ইংরেজি তাঁদের স্বার্থ-সুবিধার ভাষা। আর বাঙলাদেশের শাসিত-শোষিত জনমণ্ডলি বিশাল হ’লেও প্রত্যক্ষ শক্তিহীন এবং বাঙলা তাঁদের স্বার্থ-সুবিধার ভাষা। রাজনীতিকেরা বিশাল জনমগুলিকে ‘শক্তির উৎস’ ব’লে স্তুতি ক’রে থাকেন, তবে এ-জনমণ্ডলি ‘শক্তির প্রতারিত উৎস’ রূপেই সমাজে বিরাজ করে। শক্তিকেন্দ্রে যাঁদের অবস্থান সে-রাজনীতিক (নির্বাচিত বা অভ্যুত্থিত), প্রশাসক, ব্যবস্থাপক, প্রযুক্তিবিদ প্রভৃতিকে নির্দেশ করা যায় ‘শক্তির পরিণতি রূপে। শক্তির উৎস ও পরিণতিদের মধ্যে নানারকম সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে বাঙলাদেশে- প্রথম সংঘর্ষটি সম্ভবত বাঁধবে ভাষা কেন্দ্র ক’রে; যেমন পাকিস্তানে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটেছিলো উনিশ শো বায়ান্নো সালে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *