আজাদ হিন্দ

আজাদ হিন্দ

সৈন্যবাহিনীর সর্বময় কর্তৃত্ব গ্রহণের দিন ঘোষিত বিশেষ নির্দেশনামা

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের স্বার্থে আমি আজ হইতে আমাদের সেনাবাহিনীর সরাসরি কর্তৃত্ব গ্রহণ করিলাম।

আমার পক্ষে ইহা আনন্দ ও গর্বের ব্যাপার, কারণ একজন ভারতীয়ের কাছে ভারতের মুক্তি ফৌজের (Army of Liberation) সেনাপতি হওয়া অপেক্ষা আর কোনও বড় সম্মান থাকিতে পারে না। আমি যে কার্যভার গ্রহণ করিতেছি তাহার দায়িত্ব যে কত বড় সে সম্পর্কে আমি সচেতন এবং দায়িত্বের গুরুভার আমি বোধ করিতেছি। প্রার্থনা করি, যে কোনও অবস্থায়, তা যতই কঠিন এবং কষ্টদায়ক হউক না কেন, ভারতের প্রতি আমার কর্তব্য পালনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যেন ভগবান আমাকে দান করেন।

আমি নিজেকে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী আটত্রিশ কোটি দেশবাসীর সেবক বলিয়া মনে করি। আমার কর্তব্য আমি এমনভাবে পালন করিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যাহাতে আটত্রিশ কোটি ভারতবাসীর স্বার্থ আমার হাতে নিরাপদ থাকে এবং প্রত্যেক ভারতবাসী আমার উপর পূর্ণ আস্থা স্থাপন করিতে পারে। প্রকৃত জাতীয়তাবাদ, ন্যায় বিচার এবং নিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করিয়াই ভারতের মুক্তি ফৌজ গঠিত হইতে পারে।

মাতৃভূমির মুক্তির জন্য আসন্ন সংগ্রামে, আটত্রিশ কোটি ভারতবাসীর শুভেচ্ছার উপর স্বাধীন ভারতের সরকার গঠনে এবং ভারতের স্বাধীনতা চিরদিন রক্ষার জন্য আজাদ হিন্দ ফৌজকে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে হইবে। ইহার জন্য আমাদিগকে একটি সৈন্যবাহিনী সংগঠিত করিতে হইবে। এই সৈন্যবাহিনীর লক্ষ্য হইবে মাত্র একটি—ভারতের স্বাধীনতা লাভ, এবং ইচ্ছাও হইবে একটি—ভারতের স্বাধীনতার জন্য কাজ করা কিংবা মৃত্যুবরণ করা। আমরা যখন দাঁড়াইব, আজাদ হিন্দ ফৌজকে গ্রানাইটের প্রাচীরের ন্যায় দাঁড়াইতে হইবে; আমরা যখন অগ্রসর হইব, আজাদ হিন্দ ফৌজকে স্টিম রোলারের ন্যায় চলিতে হইবে।

আমাদের দায়িত্ব বড় সহজ নয়। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী এবং কঠোর হইবে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য যে ন্যায়সঙ্গত এবং তাহা যে অজেয় এ বিষয়ে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। পৃথিবীর জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ ৩৮ কোটি মানুষের স্বাধীন হইবার অধিকার আছে এবং তাহারা স্বাধীনতার মূল্য দিতে এখন প্রস্তুত। পৃথিবীতে এমন কোনও শক্তি নাই যাহা আমাদের স্বাধীনতার জন্মগত অধিকার হইতে বঞ্চিত করিতে পারে।

সহকর্মী, অফিসার এবং সৈন্যগণ! আপনাদের অকুণ্ঠ সহায়তা এবং অটল আনুগত্যের ফলে আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের মুক্তি আনিতে পারিবে। আমি আপনাদের আশ্বাস দিতে চাই যে আমাদেরই চূড়ান্ত জয় হইবে।

আমাদের কার্য ইতিমধ্যে আরম্ভ হইয়াছে। আসুন, “দিল্লী চলো” ধ্বনি করিতে করিতে আমরা সংগ্রাম করিতে থাকি। যতদিন পর্যন্ত নয়াদিল্লীর ভাইসরয়ের প্রাসাদের শীর্ষে আমাদের জাতীয় পতাকা উড্ডীন না হয় এবং ভারতের রাজধানীতে পুরানো লালকেল্লার ভিতরে আজাদ হিন্দ ফৌজ বিজয়সূচক কুচকাওয়াজ না করে ততদিন পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম করিতে হইবে।

২৫ আগস্ট ১৯৪৩

সুভাষচন্দ্র বসু

সর্বাধিনায়ক

অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্র

১৭৫৭ সালে বাংলা দেশে ব্রিটিশদের কাছে প্রথম পরাজয়ের পর ভারতীয় জনগণ একশত বৎসর ধরিয়া অবিরাম প্রচণ্ড সংগ্রাম করিয়াছে। এই সময়কার ইতিহাস অতুলনীয় বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের বহু দৃষ্টান্তে পূর্ণ। ইতিহাসের পৃষ্ঠায় বাংলার সিরাজদৌল্লা এবং মোহনলাল, দক্ষিণ ভারতের হায়দার আলি, টিপু সুলতান ও ভেলু তাম্পি, মহারাষ্ট্রের আপ্পা সাহেব ভোঁসলা ও পেশোয়া বাজীরাও, অযোধ্যার বেগম, পাঞ্জাবের সর্দার শ্যাম সিংহ আতারিওয়ালা এবং সর্বশেষে অন্যান্যদের মধ্যে ঝাঁসীর রানী লক্ষ্মীবাঈ, তাঁতিয়া টোপি, দুমরাঁওয়ের মহারাজ কুনোয়ার সিং, নানা সাহেব এবং আরও বহু বীরের নাম চিরতরে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত রহিয়াছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের পিতৃপুরুষগণ প্রথমে বুঝিতে পারেন নাই যে, সমগ্র ভারতের পক্ষে ব্রিটিশেরা একটি প্রচণ্ড বিপদরূপে উপস্থিত হইয়াছে এবং সেইজন্য তাহারা শত্রুর বিরুদ্ধে মিলিতভাবে দাঁড়ান নাই। পরিশেষে যখন ভারতীয় জনগণ অবস্থার গুরুত্ব বুঝিতে পারিল তখন তাহারা মিলিতভাবে চেষ্টা করিল এবং ১৮৫৭ সালে বাহাদুর শাহের নেতৃত্বে তাহারা স্বাধীন জাতি হিসাবে শেষ সংগ্রাম করিল। যুদ্ধের প্রথম দিকে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য জয় ঘটিলেও, দুর্ভাগ্য এবং ভ্রান্ত নেতৃত্বের জন্য ধীরে ধীরে তাহাদের চরম পরাজয় তথা পরাধীনতা ঘটিল। এতদসত্ত্বেও ঝাঁসীর রানী, তাঁতিয়া টোপি, কুনোয়ার সিং এবং নানা সাহেব জাতির স্মৃতিপটে চিরন্তন নক্ষত্রের ন্যায় দীপ্যমান থাকিয়া আমাদিগকে আরও আত্মত্যাগ এবং সাহস প্রদর্শনের প্রেরণা দিতেছেন।

১৮৫৭ সালের পর ব্রিটিশেরা জোর করিয়া ভারতীয়দের নিরস্ত্র করিয়া দেয় এবং সন্ত্রাস ও পাশবিকতার রাজত্ব সৃষ্টি করিয়া থাকে। ফলে কিছুকাল ভারতীয়রা বশ্যতা স্বীকার করিয়া অবনত হইয়া থাকে। কিন্তু ১৮৮৫ সালে কংগ্রেসের জন্মের পর ভারতের নব জাগরণ হইল। ১৮৮৫ সাল হইতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত ভারতীয় জনগণ তাহাদের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন, প্রচারকার্য, ব্রিটিশ দ্রব্য বর্জন, সন্ত্রাসবাদ, ধ্বংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ ইত্যাদি সর্বপ্রকার উপায় এবং অবশেষে সশস্ত্র আন্দোলনের পথ গ্রহণ করিয়াছে। কিন্তু সবই সাময়িকভাবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। অবশেষে ১৯২০ সালে ব্যর্থতার গ্লানিতে আচ্ছন্ন হইয়া ভারতবাসী যখন নূতন পথের সন্ধান করিতেছিল তখন মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ এবং আইন অমান্যের নূতন অস্ত্র লইয়া অগ্রসর হইয়া আসিলেন।

ইহার পর দুই দশক ধরিয়া ভারতীয়গণ নানাপ্রকার গভীর দেশপ্রেমমূলক কার্য সম্পাদন করিয়াছিল। ভারতের প্রতি গৃহে মুক্তির বার্তা পৌঁছাইয়া দেওয়া হয়। নিজেদের জীবন উদাহরণ হিসাবে দেখাইয়া স্বাধীনতার যোদ্ধারা দেশবাসীকে স্বাধীনতার জন্য নির্যাতন ভোগ, আত্মত্যাগ এবং মৃত্যুবরণ করিতে শিখাইল। কেন্দ্র হইতে সুদূরবর্তী গ্রাম পর্যন্ত জনগণ একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে সঙঘবদ্ধ হইল। এইভাবে ভারতবাসীরা শুধু রাজনৈতিক চেতনাই লাভ করিল না, তাহারা আবার একটি অখণ্ড রাজনৈতিক সত্তায় পরিণত হইল। ইহার পর তাহারা একস্বরে কথা বলিতে পারিল এবং এক সাধারণ লক্ষ্যের জন্য সংগ্রাম করিতে লাগিল। ১৯৩৭ হইতে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত আটটি প্রদেশে কংগ্রেস মন্ত্রিমণ্ডল কাজের দ্বারা প্রমাণ দিল যে, তাহারা প্রস্তুত, নিজেদের শাসনব্যবস্থা নিজেরাই পরিচালনা করিবার ক্ষমতা তাহারা অর্জন করিয়াছে।

এইভাবে বর্তমান বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে ভারতের স্বাধীনতার শেষ সংগ্রামের ক্ষেত্র প্রস্তুত হইয়াছিল। এই যুদ্ধে জার্মানী তার মিত্র দেশগুলির সহায়তায় ইউরোপে আমাদের শত্রুকে ধ্বংস করিয়াছে এবং পূর্ব এশিয়ায় নিপ্পন তার মিত্রদের সহায়তায় আমাদের শত্রুকে ধরাশায়ী করিয়াছে। বিভিন্ন পরিস্থিতি এমন সুন্দরভাবে একত্রিত হওয়ার ফলে স্বাধীনতা লাভের এক আশ্চর্য সুযোগ ভারতবাসীর সামনে উপস্থিত হইয়াছে। বিদেশে ভারতীয়গণও রাজনৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হইয়াছে এবং একটি প্রতিষ্ঠানে সঙ্ঘবদ্ধ হইয়াছে।

আধুনিক কালের ইতিহাসে ইহা নূতন ঘটনা। তাহারা শুধু স্বদেশে তাহাদের দেশবাসীর মতোই একই চিন্তা-ভাবনা করিতেছে না, স্বাধীনতা লাভের পথে তাহারা তাহাদের সহিত সমানতালে চলিতেছে। বিশেষ করিয়া পূর্ব এশিয়ায় আজ কুড়ি লক্ষাধিক ভারতীয় ‘সর্বাত্মক প্রস্তুতি’ (Total Mobilisation) আহ্বানে অনুপ্রাণিত হইয়া একটি সুসংবদ্ধ দল গড়িয়া তুলিয়াছে। তাহাদের সম্মুখে রহিয়াছে সারি সারি ভারতের মুক্তি ফৌজের সমস্ত শ্রেণী, সবার মুখে এক কথা ‘চলো দিল্লী’।

কপট আচরণের দ্বারা ভারতীয়দের একেবারে মরিয়া করিয়া এবং লুটতরাজ করিয়া তাহাদিগকে অনাহার ও মৃত্যুর পথে ঠেলিয়া দিয়া ব্রিটিশ শাসকগণ ভারতবাসীর শুভেচ্ছালাভ হইতে একেবারে বঞ্চিত হইয়াছে, এক্ষণে তাহাদের অবস্থা বিশেষ সঙ্কটজনক। এই বেদনাদায়ক শাসনের শেষ চিহ্নটি দূর করিতে একটিমাত্র অগ্নিস্‌ফুলিঙ্গের প্রয়োজন। সেই স্‌ফুলিঙ্গ প্রজ্জ্বলিত করিবার দায়িত্ব ভারতের মুক্তি ফৌজের। স্বদেশে অসামরিক মানুষের সাগ্রহ সহায়তা, ব্রিটিশ সরকার গঠিত ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর একটি বড় অংশের এবং সাহসী এবং অজেয় বিদেশী শক্তির সমর্থন লাভ করিলেও প্রথম দিকে নিজশক্তির উপর নির্ভর করিয়া ভারতের মুক্তি বাহিনী সাফল্যের সঙ্গে আপন ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করিতে দৃঢ়বিশ্বাসী।

স্বাধীনতার ঊষালগ্ন সমাগতপ্রায়। ভারতীয় জনসাধারণের উচিত এখন একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করা এবং সেই সরকারের পতাকাতলে শেষ যুদ্ধটি শুরু করা। কিন্তু যেহেতু সমস্ত ভারতীয় নেতা কারাগারে বন্দী আছেন এবং স্বদেশে জনসাধারণ সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্র সেজন্য ভারতের মধ্যে কোনও অস্থায়ী সরকার গঠন বা সেই সরকারের নেতৃত্বে কোনও সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করা সম্ভব নয়। সেজন্য পূর্ব এশিয়ার ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগের উচিত, স্বদেশে ও বিদেশে সকল স্বদেশপ্রেমী ভারতীয়দের সমর্থনে এই দায়িত্ব পালন করা—অস্থায়ী আজাদ হিন্দ (স্বাধীন ভারত) সরকার গঠন করা, এবং লীগের দ্বারা সংগঠিত মুক্তি ফৌজ (আর্মি অফ লিবারেশন অথাৎ আজাদ হিন্দ ফৌজ বা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি)-এর সহায়তায় স্বাধীনতার শেষ সংগ্রামটি পরিচালনা করা।

পূর্ব এশিয়ায় ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ এক অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করিয়াছে। এখন আমরা পূর্ণ দায়িত্ব লইয়া আমাদের উপর অর্পিত কর্তব্য পালনে অগ্রসর হইতেছি। ভগবানের নিকট আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের কর্মসম্পাদনে এবং মাতৃভূমির মুক্তির জন্য আমাদের সংগ্রামকে আশীর্বাদ করেন। মাতৃভূমির মুক্তি, কল্যাণসাধন এবং বিশ্বের দরবারে তাহাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য আমরা আমাদের এবং সহকর্মীদের জীবন উৎসর্গ করিতেছি।

অস্থায়ী সরকারের দায়িত্ব হইল ভারতভূমি হইতে ব্রিটিশ ও তাহার মিত্রদের বিতাড়নের জন্য সংগ্রাম শুরু ও পরিচালনা করা। তারপর ভারতীয় জনগণের ইচ্ছাক্রমে ও তাহাদের আস্থাভাজন একটি স্থায়ী আজাদ হিন্দ জাতীয় সরকার গঠন করা। ব্রিটিশ ও তাহাদের মিত্রদের পরাজয়ের পর ভারতভূমিতে স্থায়ী স্বাধীন জাতীয় আজাদ হিন্দ সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী সরকার ভারতীয় জনগণের অছিস্বরূপ দেশের প্রশাসন কার্য চালাইবে।

অস্থায়ী সরকার প্রত্যেক ভারতীয়ের আনুগত্য দাবি করে এবং ইহা আনুগত্য লাভ করিবার যোগ্য। এই সরকার ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সমস্ত নাগরিকের জন্য সমান অধিকার এবং সমান সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিতেছে। এই সরকার দৃঢ়তার সহিত ঘোষণা করিতেছে যে সমগ্র দেশের এবং সমস্ত অঞ্চলের সুখ এবং সমৃদ্ধি বিধান, দেশের সমস্ত সন্তানকে সযত্নে পালন, এবং বিদেশী সরকারের দ্বারা সুকৌশলে সৃষ্ট সকলপ্রকার বিভেদ দূর করিবে।

ঈশ্বরের নাম, এবং অতীত দিনের যে সকল ভারতীয় ভারতের ঐক্যসাধনের জন্য সংগ্রাম করিয়াছেন এবং যে সমস্ত বীর সন্তান নিজ বীরত্ব ও আত্মত্যাগের দ্বারা আমাদের এক মহান ঐতিহ্যের অধিকারী করিয়াছেন তাঁহাদের নাম স্মরণ করিয়া আমরা সমস্ত ভারতীয় জনগণকে আমাদের পতাকাতলে সমবেত হইয়া ভারতের মুক্তিলাভের জন্য সংগ্রাম করিতে আহ্ব‌ান করিতেছি। আমরা ভারতীয়গণকে ব্রিটিশ এবং ভারতে তাহাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে শেষ সংগ্রাম শুরু করিতে আহ্বান করিতেছি। যতদিন না শত্রু ভারতভূমি হইতে বিতাড়িত হয় এবং ভারত আবার একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয় ততদিন পর্যন্ত আমাদের সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে সংগ্রাম করিতে হইবে এবং শেষপর্যন্ত যে আমাদের জয়লাভ হবেই তাতে পূর্ণ বিশ্বাস রাখিতে হইবে।

অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর

সুভাষচন্দ্র বসু

(রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, এবং সমর ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী)

ক্যাপ্টেন মিসেস লক্ষ্মী (নারী সংগঠন)

এস. এ. আয়ার (প্রচার)

লেঃ কঃ এ. সি.-চ্যাটার্জী (অর্থ)

লেঃ কঃ আজিজ, লেঃ কঃ এন. এস. ভগৎ, লেঃ কঃ জে. কে. ভোঁসলে,

লেঃ কঃ গুলজারা সিং, লেঃ কঃ এম. জেড. কিয়ানি

লেঃ কঃ এ. ডি. লোগানাধন, লেঃ কঃ ইসান কাদির,

লেঃ কঃ শাহ নওয়াজ (সৈন্যবাহিনীর প্রতিনিধি)

এ. এম. সহায় (সচিব)।

রাসবিহারী বসু (প্রধান উপদেষ্টা)

করিম গণি, দেবনাথ দাস, ডি. এম. খান, এ. ইয়েলাপ্পা,

জে. থিবি, সদার ঈশ্বর সিং (উপদেষ্টা),

এ. এন, সরকার (আইন উপদেষ্টা)

সায়োনান, ২১ অক্টোবর ১৯৪৩

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *