অধ্যায় ১৫: সেপ্টেম্বর – অক্টোবর
সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি মাসে কুড়ি হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ট্রেনিং দানের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রবাসী প্রশাসনের জন্য এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। প্রথম থেকেই বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বল্প সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাকে মনোনয়ন দেওয়া একটি জটিল সমস্যা ছিল। উপযুক্ত এই সব যুবকদের আলাদা আশ্রয় এবং তাদের দৈহিক সুস্থতা ও মানসিক উদ্দীপনা বজায় রাখার জন্য জুনের প্রথম সপ্তাহে ‘যুব শিবির স্থাপনের স্কীম অনুমোদিত হয়। জুনের শেষ সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতা শুরুর অব্যবহিত পর দেশের যুব সম্প্রদায় যখন পাকিস্তানী বাহিনীর বিশেষ আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত হয়, তখন থেকে আরও অধিক সংখ্যায় তারা ভারতে পালিয়ে আসতে থাকে। ফলে ট্রেনিং প্রার্থী এই অতিরিক্ত যুবকদের সাময়িক আশ্রয়স্থল হিসাবে ২৪টি যুব শিবির প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার প্রচেষ্টা ছাড়াও ‘যুব অভ্যর্থনা শিবির স্থাপনের কাজ চলতে থাকে। যুব শিবিরের বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি অধ্যাপক ইউসুফ আলীর ১লা আগস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, যুব শিবির স্থাপনের কাজ খুবই মন্থরগতিতে অগ্রসর হলেও, ঐ সময়ের মধ্যে প্রায় ৬৭টি ‘অভ্যর্থনা শিবির স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়। আর এক রিপোর্টে দেখা যায়, ১২ই আগস্ট পর্যন্ত স্থাপিত যুব শিবিরের সংখ্যা ছিল মাত্র ১১টি।
প্রয়োজনীয় স্ক্রীনিং-এর পর গড়পড়তা ৫০০ যুবককে ‘অভ্যর্থনা শিবিরে’ গ্রহণ করা হত, পরে তাদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে ১,০০০টি আসনবিশিষ্ট ‘যুব শিবিরে স্থানান্তরিত করা হত। সবশেষে এই ‘যুব শিবির থেকেই সশস্ত্র ট্রেনিংয়ের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীতদের ‘ট্রেনিং শিবিরে পাঠানো হত। এই পর্যায়ক্রমিক স্ক্রীনিং এর মাধ্যমে দৈহিক ও চারিত্রিক যোগ্যতার ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করার যে সুযোগ ছিল তা পূর্ব বর্ণিত রাজনৈতিক কারণে বহুলাংশে ব্যর্থ হয়। রিক্রুটমেন্ট ও ট্রেনিং ব্যবস্থার মৌলিক দুর্বলতার সংশোধন না করে কেবল ‘যুব শিবির’ ও ‘অভ্যর্থনা শিবিরে’র দ্রুত সংখ্যা বাড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যাবৃদ্ধির প্রয়োজন মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। অবশ্য ১৫, ১৬ই এবং ২১শে সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র, সাহায্য ও পুনর্বাসন মন্ত্রী কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘যুব শিবিরের বোর্ড অব কন্ট্রোল’ এবং কেন্দ্রীয় সাহায্য ও পুনর্বাসন কমিটির যুগ্ম অধিবেশনে যুব শিবির ব্যবস্থাপনা উন্নত করার উদ্দেশ্যে কিছু প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। যুব শিবিরের ডিরেক্টর এবং তার প্রশাসনিক সহকর্মীদের প্রচেষ্টায় সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ সমগ্র সীমান্ত অঞ্চল বরাবর ২৪টি ‘যুব শিবির এবং ১০০টি ‘অভ্যর্থনা শিবির স্থাপনের লক্ষ্য অর্জিত হয়।
বস্তুত কেবল যুব ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নয়, প্রবাসী সরকারের প্রশাসন বিভাগ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক উল্লেখযোগ্য দক্ষতার মান স্থাপনে সক্ষম হন। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে এক নির্বাসিত জনসমষ্টির মধ্য থেকে নাতিক্ষুদ্র প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা এবং এক যুক্তিসঙ্গত দক্ষতার মানে তাদেরকে সক্রিয় ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করে তোলা যে কোন বিচারেই এক প্রশংসাযোগ্য দৃষ্টান্ত। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আওয়ামী লীগের উপদলীয় সংঘাত তীব্রতর হয়ে উঠলেও, এর ফলে সরকারের কাঠামো যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েনি সম্ভবত তার একটি কারণ ছিল নির্দলীয় প্রশাসন বিভাগের কর্তব্যবোধ এবং অপর কারণ ছিল, রাজনৈতিক ঝড়ঝাঁপটা থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সফল প্রয়াস। ‘অধিকাংশ প্রশাসনিক দফতরে আওয়ামী লীগ আদর্শে বিশ্বাসী নয়, এমন সব অফিসারদের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অথবা সরকারী প্রশাসনের প্রতিটি শাখা আওয়ামী লীগের দলীয় ব্যবস্থাধীনে আনার জন্য পরিষদ সদস্যদের এক উল্লেখযোগ্য অংশ যখন ‘পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী বা দলীয় কমিটি নিয়োগের দাবীতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন, তখন প্রকৃতপক্ষে একা তাজউদ্দিন এই দাবীকে প্রতিহত করেন, যাতে রাজনৈতিক দলাদলি প্রশাসন বিভাগের উপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে। তবে সমগ্র প্রশাসনিক তৎপরতাকে অধিকতর সমন্বিত এবং বিশেষত প্রচারমাধ্যমকে ফলপ্রসূ করার জন্য কিছু অভিজ্ঞ ও প্রবীণ অফিসারের যে প্রয়োজন তাজউদ্দিন বোধ করতেন, অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তা অপূর্ণ থাকে ।
জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ‘পরিকল্পনা সেল’ গঠিত হওয়ার পর যুদ্ধোত্তর জরুরী সরবরাহ, শরণার্থী পুনর্বাসন, আর্থ সামাজিক পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক সংস্কারের মত অত্যন্ত জরুরী, প্রাসঙ্গিক এমনকি মধ্যমেয়াদী কয়েকটি বিষয়ে নীতি ও কর্মসূচীর পরিকল্পনা শুরু করেন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে কিছু সংখ্যক অভিজ্ঞ বাঙালী কূটনীতিক বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য পরিবর্তন করার পর বাংলাদেশের কূটনেতিক তৎপরতা বৃদ্ধির এক অসামান্য সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু আগস্টের শেষ দিক থেকে নিক্সন প্রশাসনের বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে খোন্দকার মোশতাক ও মাহবুব আলম চাষী উভয়েই উত্তরোত্তর জড়িত হয়ে পড়ায়, বাংলাদেশের এই কূটনীতিকরা যে যথাযথভাবে পরিচালিত হয়েছিলেন বা তাদের কুশলতার যে পূর্ণ সদ্ব্যবহার ঘটেছিল, এমন মনে করার কোন ভিত্তি নেই। মুক্তিসংগ্রামের বৃহত্তর রণনৈতিক আয়োজন সম্পর্কে এদের অবহিত করে, এদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার মূল অংশকে তৃতীয় বিশ্বে কেন্দ্রীভূত করলেও বরং ডিসেম্বরে সাধারণ পরিষদের ভোট বাংলাদেশের পক্ষে হয়ত অপেক্ষাকৃত সম্মানজনক হত। বস্তুত এই সব কূটনীতিকদের কিভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে, তার সামান্য খবরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এসে পৌঁছাত এবং যা পাঠানো হত সেগুলি তৃতীয় বা দ্বিতীয় শ্রেণীর গুরুত্বের অধিক ছিল না। তবু সমগ্র অবস্থার বিচারে অক্টোবরের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সরকার অন্তত প্রশাসনিক দিক থেকে বহুলাংশেই সক্ষম ও সংহত।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ঐ কথা ঠিক প্রযোজ্য না হলেও, সেখানেও অক্টোবরের প্রথম থেকেই উন্নতির লক্ষণ স্পষ্ট। নিক্সন প্রশাসনের অন্তর্ঘাতী প্রচেষ্টা আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং তাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের রণনৈতিক আয়োজনের আন্তর্জাতিক দিক প্রত্যাশিত পথে এগিয়ে চলায় তাজউদ্দিন আশাবাদী ছিলেন যে, মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায় পরিস্ফুট হওয়া মাত্রই উপদলীয় বিরোধিতার সমাধান সহজ হয়ে আসবে। সামরিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিয়মিত বাহিনীর সীমান্ত তৎপরতা নানা কারণে স্তিমিত। দেশের ভিতরে রাজনৈতিক অবকাঠামো এবং একীভূত কমান্ডব্যবস্থা না থাকায় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপের সমাবেশ সত্ত্বেও তাদের সম্ভাব্য তৎপরতার ফলাফল অজ্ঞাত। বস্তুত সশস্ত্র তৎপরতার কোন বড় চিহ্ন তখনও বিশেষ ছিল না।
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। ১০ই অক্টোবর ডেমরায় বোমা বিস্ফোরণ, ১১ই অক্টোবর তেজগাও বিমানবন্দরের উদ্দেশে অসফল মর্টার আক্রমণ, ১৩ই অক্টোবর টঙ্গীর অদূরে রেলগাড়ী সমেত রেল-ব্রীজের ধ্বংসসাধন এবং তার পর থেকে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সরকারী অফিস ও ব্যাংকে বোমা বিস্ফোরণ, বিভিন্ন স্থানে টহলদার অথবা অবস্থানরত বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে মুক্তিযুদ্ধের যে নতুন পর্যায় শুরু হয়, ক্রমশ তা অক্টোবরের শেষ নাগাদ দখলদার সৈন্যদের ক্ষয়ক্ষতি ও উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি করে। ইতিপূর্বে জুন ও আগস্ট মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে রেল ও সড়ক ব্রীজ এবং যানবাহনের প্রভূত ক্ষতিসাধিত হয়। এর ফলে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমার্ধে পরিচালিত US-AID-এর এক সার্ভে অনুযায়ী-স্থলপথে পরিবহনের হার আগের তুলনায় এক-দশমাংশে নেমে আসে। এগুলি প্রয়োজনীয় মেরামত সম্পন্ন হওয়ার আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন আক্রমণ দখলদার বাহিনীর অভ্যন্তরীণ চলাচলের ক্ষমতাকে আরও সঙ্কুচিত করতে শুরু করে। এর পাশাপাশি ১৫ই আগস্ট থেকে সামুদ্রিক জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌযানের বিরুদ্ধে যে দুঃসাহসিক তৎপরতা শুরু হয়েছিল ১৯ ও ২৬শে সেপ্টেম্বরে এবং ১লা অক্টোবরে তা আরও ক্ষতিসাধন করে চলে। এর ফলে বিশেষত বাণিজ্যিক নৌমহলে আতঙ্কের সঞ্চার ঘটে এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দখলদার সৈন্যদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা উত্তরোত্তর কষ্টকর হয়ে ওঠে।
একই সময় সীমান্ত অঞ্চলে সৈন্য চলাচল, অবস্থান ও যোগাযোগের উপযোগী সামরিক অবকাঠামো তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়ে আসায়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত সমাবেশ দ্রুত অগ্রসর হতে থাকে এবং বাংলাদেশ ও ভারতীয় বাহিনীর মিলিত অভিযান পাকিস্তানের অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটির (B.O.P) ধ্বংস সাধনে নিয়োজিত হয়। ফলে অক্টোবরের শেষ নাগাদ সর্বমোট ৩৭০টি সীমান্ত ঘাঁটির মধ্যে মাত্র ৯০টি টিকে থাকে। কিন্তু কোন কোন অভিযানে একাধিক ভারতীয় ব্যাটালিয়ান অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও, পাকিস্তানের সুরক্ষিত সীমান্ত ঘাঁটিগুলির জোরাল প্রতিরোধ ক্ষমতা দৃষ্ট হয়। ফলে গৃহীতব্য রণকৌশল সম্পর্কে একটি মূল্যায়ন উপলব্ধি ঘটে: সম্মুখ সমরে এই সব সুদৃঢ় সীমান্ত ঘাঁটি পরাভূত করা যেহেতু খুবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, সেহেতু এই সব ঘাঁটি পাশ কাটিয়ে ঢাকার দিকে এগিয়ে যাওয়াই দ্রুত বিজয় লাভের অন্যতম মূল পূর্বশর্ত।
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশের ভিতরে মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতা এবং দেশের সীমান্তে মিলিত বাহিনীর যে আক্রমণ শুরু হয়, তা মূলত ছিল জুন-জুলাই মাসে অর্জিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই পরিচালিত। ভিতর ও বাহির উভয় দিক থেকে একযোগে পাকিস্তানী বাহিনীর উপর চাপ সৃষ্টি হলে তারা যে ভিতরের প্রয়োজন অনেকখানি উপেক্ষা করেই সীমান্ত অবধি বিস্তৃত হয়ে পড়ে এবং তার ফলে গেরিলা তৎপরতার সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়াও দখলদার বাহিনী যে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে পড়ে তা এ সময়েই পরিলক্ষিত হয়। ছোট বড় কোন প্রকার ভূখণ্ড হারানো রাজনৈতিক কারণে পাকিস্তানীদের মেনে নেওয়া সম্ভব নয় এবং এর জন্য নিজেদের একীভূত শক্তিকে খণ্ড-বিখণ্ড করতেও যে তাদের কোন দ্বিধা নেই, তিন মাস পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম তৎপরতাকালেই তা স্পষ্ট হয়েছিল। এবার তফাৎ প্রথমত, ছিল এই যে, একটি নির্দিষ্ট সামরিক লক্ষ্যের অভিমুখে সংখ্যায় অল্প বাংলাদেশ বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য কয়েক গুণ বড় ও শক্তিশালী ভারতীয় সৈন্য সীমান্ত অঞ্চল বরাবর চাপ সৃষ্টির কাজে তৎপর হয়; এবং দ্বিতীয়ত, দেশের ভিতরে বিরামহীন ঢেউয়ের মত সশস্ত্র তরুণের দল যাতে পিছন থেকে শত্রুর শক্তিক্ষয় করে যেতে পারে তার ব্যবস্থাদিও সম্পন্ন করা হয়। অক্টোবরের শেষে এই যুগ্ম তৎপরতা দখলদার পাকিস্তানী সৈন্যদের জন্য এক সঙ্গীন অবস্থার সৃষ্টি করে। ফলে বড় রকমের বহিরাক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা তাদের লোপ পায়।
১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান কেবল পশ্চিম রণাঙ্গনের যুদ্ধের জন্যই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। ১৯৭১-এর ২৫শে মার্চ থেকে নিরস্ত্র বাঙালীদের নিপীড়ন ও হত্যার জন্য পক্ষকালের মধ্যে আরো দুই ডিভিশন সৈন্য নিয়ে এসে গোটা পূর্বাঞ্চলকে বধ্যভূমিতে রূপান্তরিত করার সময় সম্ভবত তারা কল্পনাও করে উঠতে পারেনি যে, এই নির্বুদ্ধিতার মূল্য হিসাবে শীঘ্রই তাদেরকে তিন রণাঙ্গনে যুদ্ধের দায়িত্ব নিতে হবে পশ্চিমাঞ্চলে, পূর্বাঞ্চলের সীমান্তে এবং পূর্বাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ জনপদে।