1 of 2

১.১৭ পাত্রকে নিদ্রিত করা সম্বন্ধে বিশেষ উপদেশ

সপ্তদশ পাঠ
পাত্রকে নিদ্রিত করা সম্বন্ধে বিশেষ উপদেশ

সম্মোহন নিদ্ৰাকৰ্ষণ করিতে পূর্ববর্তী পাঠে যে কয়েকটি নিয়ম প্রদত্ত হইয়াছে, উহাদের যে কোন একটির সাহায্যেই সকল লোককে অনায়াসে নিদ্রিত করা যাইবে, শিক্ষার্থী কখনও এরূপ মনে করিবে না। কোন একটি বা দুইটি নির্দিষ্ট নিয়মের সাহায্যে সকল লোককে নিদ্রিত করা যায় না; কারণ সকল মানুষের প্রকৃতি একরূপ নহে। কোন একটি নির্দিষ্ট নিয়মের সাহায্যে শিক্ষার্থী কয়েক ব্যক্তিকে নিদ্রিত করিতে সমর্থ হইলে, উহা যে সকল প্রকৃতির লোকের উপরই তুল্যরূপে কাৰ্যকরী হইবে, তাহার কোন নিশ্চয়তা নাই। তবে কোন একটি নিয়মের সাহায্যে সে অনেক লোককে নিদ্রিত করিয়া থাকিলে, নূতন পাত্রের উপর সর্বাগ্রে সেই নিয়মটি প্রয়োগ করিতে পারে। যদি ঐ নিয়মটি তাহার উপর কার্যকর হয়, ভালই; নতুবা অন্য কোন একটি বা দুইটি নিয়ম প্রয়োগ করিবে এবং আবশ্যক হইলে চার-পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন নিয়মও তাহার উপর প্রয়োগ করা যাইতে পারে। কিন্তু চার-পাঁচটি বিভিন্ন নিয়মের প্রয়োগও বিফল হইলে, তখন তাহাকে লইয়া আর অধিক চেষ্টা করিবে না। সম্মোহন বিজ্ঞানে “সৰ্ববোগহর মহৌষধির ন্যায় এযাবৎ এমন কোন নিয়ম-প্রণালী আবিষ্কৃত হয় নাই, যাহা দ্বারা সকল লোককেই মুহূর্ত মধ্যে মোহিত করা যায়। যে একটি নিয়মের প্রয়োগে এক ব্যক্তি গভীর নিদ্রায় অভিভূত হয়, ঠিক সেই নিয়মের প্রয়োগে হয়ত অপর এক ব্যক্তির একটু তন্দ্রাও হয় না। সুতরাং কিরূপ প্রকৃতির লোকের উপর কোন নিয়ম কাৰ্যকরী হইবে, তাহা সম্যক্‌রূপে বুঝাইয়া দেওয়া কঠিন। শিক্ষার্থী কয়েকটি বিভিন্ন প্রকৃতির লোক নিদ্রিত করোন্তর অভিজ্ঞতা লাভ করিতে পারিলে, সে নিজেই উহা উপলব্ধি করিতে সমর্থ হইবে।

পাত্রকে নিদ্রিত করিবার সময় কাৰ্য্যকারক তাহার নাসিকা-মূলে স্থির দৃষ্টি স্থাপন করিয়া, শরীরের উপর পাস প্রয়োগ ও তৎসঙ্গে ঘুমের আদেশ দিবে। সে যে সকল পাস ব্যবহার করিবে, উহারা যে রকমেরই হউক, খুব ধীর ভাবে প্রদান করিবে। ঘুমের আদেশগুলির কিয়দংশ গম্ভীর ও আদেশ সূচক এবং অপরাংশ একঘেয়ে সুরে হইবে। কারণ ক্রমাগত একঘেয়ে সুর কর্ণরন্ধের ভিতর দিয়া মস্তিষ্কে প্রবেশ করতঃ উহাতে বিশেষ রকমের একটি অনুভূতি উৎপাদন করে এবং সেই অনুভূতি আবার সম্মোহনবিদের ইচ্ছাশক্তি ও পাত্রের একাগ্রতার সাহায্যে তীক্ষ্ণতর হইয়া শীঘ্র নিদ্ৰাকৰ্ষণ করিয়া থাকে। ঝিঝি পোক। সমুহের ঝির ঝি রবে ও ভেককুলের একঘেয়ে আর্তনাদে বহুলোক নিদ্রাভিভূত হইয়া পড়ে। আমাদের দেশে স্ত্রীলোকেরা যে এক রকমের ছড়া ব্যবহার করে, উহার একঘেয়ে সুরেই শিশুদিগের নিদ্ৰাকৰ্ষণ হইয়া থাকে। নিদ্রিত হইবার সময় পাত্র যেমন একাগ্রমনে ঘুমের বিষয় চিন্তা করিবে, কাৰ্য্যকারকও সেইরূপ মৌখিক আদেশের সঙ্গে একাগ্র মনে এরূপ চিন্তা করিবে যে, পাত্র অবশ্য ঘুমাইয়া পড়িবে’, ‘নিশ্চয় তাহার গভীর নিদ্রা হইবে ইত্যাদি।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *