সপ্তম অধ্যায়
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের প্রধান অধিনায়ক সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গভঙ্গের সমর্থনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে হোম মেম্বার সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এক বিশেষ ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশের কোনো কোনো মহলে এই আশঙ্কা ছিল হয়তো শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব বাংলাদেশ বিভাগে সম্মত না-ও হতে পারেন। কারণ স্বাধীন বঙ্গদেশ গঠনের আন্দোলনে বাংলার কংগ্রেসের একটি অংশ যুক্ত ছিল। এই অবস্থায় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল-জুন মাসে জওহরলাল নেহরু ও সর্দার প্যাটেলের নিকটে অনেকেই বাংলাদেশ বিভাগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে পত্র লেখেন, টেলিগ্রাম পাঠান ও তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সম্প্রতি সর্দার প্যাটেলের পত্রাবলি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বঙ্গভঙ্গের বিষয়ে অনেক নতুন তথ্য পাওয়া যায়। বাংলার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে প্যাটেলের পত্রালাপ এবং সরকারি স্তরে প্যাটেলের কর্মতৎপরতা লক্ষ করলেই বোঝা যায়, এই সময়ে সর্দার প্যাটেল বাংলাদেশ বিভাগ কার্যকরী করার ব্যাপারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। বঙ্গভঙ্গের সমর্থকেরা প্রধানত তাঁর ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। সর্দার প্যাটেলও তাঁদের নিরাশ করেননি।১১৯
অন্যদিকে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে কংগ্রেস পাঞ্জাব বিভাগের প্রস্তাব গ্রহণ করায় স্বাধীন বঙ্গের সমর্থকেরা উদবিগ্ন হন। তাই ২৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে অখিল দত্ত সর্দার প্যাটেলের নিকট একটি টেলিগ্রাম পাঠিয়ে বলেন, বঙ্গভঙ্গের নীতি ভুল এবং পরাজয়ের মনোভাব থেকেই এই নীতির উদ্ভব। অখিল দত্তের টেলিগ্রামে বলা হয় :
Partition of Bengal is fundamentally wrong on all grounds of political economic cultural linguistic social. It is the outcome of defeatist mentality and is misconceived remedy against communal government in Bengal.১২০
কিন্তু সর্দার প্যাটেল এই মনোভাবের সঙ্গে একমত ছিলেন না।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে বেনামি ইস্তাহার সন্দেহপ্রবণতাকে প্রকট করে। কংগ্রেস মহল থেকে সন্দেহ করা হয়, মুসলিম লিগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা স্বাধীন বঙ্গকে ‘আজাদ পাকিস্তান’ রাষ্ট্র হিসেবে নামকরণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে বেনামে ইস্তাহার প্রকাশ করে বিলি করে। ৩০ এপ্রিল এই ধরনের একটি ইস্তাহার বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের নেতা নীহারেন্দু দত্ত মজুমদারকে পাঠানো হয়। তাতে তাঁকে অবিলম্বে বঙ্গভঙ্গের সমর্থনে প্রচার বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়। এই ইস্তাহারে একথাও বলা হয়, মুসলমান যুবকেরা তাদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে এই ‘আজাদ পাকিস্তান’ অর্জন করবে। স্বভাবতই এইসব ইস্তাহার বঙ্গভঙ্গের সমর্থকদের প্রচারে খুবই সহায়তা করে। ৮মে (১৯৪৭ খ্রি.) নীহারেন্দু দত্ত মজুমদার এই ইস্তাহারের একটি কপি সর্দার প্যাটেলকে পাঠান।১২১ ১৬ মে সর্দার প্যাটেল নীহারেন্দু দত্ত মজুমদারকে লেখেন, এই ইস্তাহারে আমি বিস্মিত হইনি। যারা হিন্দুপ্রধান অঞ্চলকে মুসলিম প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করতে চায় তারা যে-কোনো পন্থা অবলম্বন করেই তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে চেষ্টা করবে। সর্দার প্যাটেBলের পত্রখানি উদ্ধৃত করা হল :
The enclosures of the letter have not come to me as a surprise. Those who wish to include Hindu majority areas in Muslim provinces are bound to resort to all means, fair and foul, to secure their objective. They will create panic and intimidate people. The letters which you have enclosed are only intended to carry out this object.১২২
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে সোহরাওয়ার্দির কয়েকটি মন্তব্যে জাতীয়তাবাদী ও হিন্দু নেতৃবৃন্দ সোহরাওয়ার্দি প্রচারিত স্বাধীন বঙ্গের পরিকল্পনা সম্পর্কে আরও সন্দিহান হন। সোহরাওয়ার্দি যে-কোনো উচ্চ আদর্শের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীন বঙ্গের কথা বলেননি, এই ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়। ১১ মে ইণ্ডিয়ান রেলওয়ে এনকোয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান কে সি নিয়োগী সর্দার প্যাটেলকে জানান, সোহরাওয়ার্দি একটি বিবৃতিতে এই হুমকি দেন যে, বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত হলে কলকাতায় আগুন জ্বলবে।১২৩ তিনি সোহরাওয়ার্দির বিবৃতি থেকে এই অংশ উদ্ধৃত করেন :
A rich prize like this is not easily attained merely by brow-beating statements, and if Calcutta becomes a bone of contention, what will remain of it? In order that it should be a great city and the centre of commerce, trade and industry, it is necessary to have peace and security. Without peace and security the city will be next to nothing. ১২৪
সোহরাওয়ার্দির এই মন্তব্য উল্লেখ করে কে সি নিয়োগী আশা করেন, সর্দার প্যাটেল নিশ্চয়ই ভাইসরয়কে জিজ্ঞেস করবেন যে, তিনি বাংলা সরকারকে কলকাতা শহরটি ধ্বংস করতে দেবেন কি না? কে সি নিয়োগী দাবি করেন, এই বিবৃতির পরে বাংলার বর্তমান মন্ত্রীসভাকে বাতিল করা প্রয়োজন। আর তা বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবার পূর্বেই করা উচিত। কে সি নিয়োগী প্যাটেলকে লেখেন, এখন সকলের চোখই আপনার ওপরে রয়েছে। কারণ আপনিই কার্যকরী পন্থা অবলম্বন করে বাংলা ও কলকাতাকে ধ্বংস ও রক্তপাত থেকে উদ্ধার করতে পারেন। কে সি নিয়োগীর ভাষায় :
It is needless for me to say that all our eyes are turned towards you in the hope that you will not fail to take whatever action is possible to save Bengal and Calcutta from utter ruin and bloodshed.১২৫
কে সি নিয়োগীর পত্রের উত্তরে ১৩ মে প্যাটেল লেখেন, বঙ্গভঙ্গের আন্দোলনের ফলে সোহরাওয়ার্দি অনেকটা বিমর্ষ হয়ে পড়েন। কলকাতা যে পূর্ববঙ্গ থেকে পৃথক হবে তা নিশ্চিত। আমার ভয় হয়, সার্বভৌম স্বাধীন বাংলার দাবি একটি ফাঁদ, আর তাতে এমনকী কিরণশঙ্কর ও শরৎবাবুও ধরা পড়তে পারেন। বাংলার হিন্দুদের রক্ষা করবার একমাত্র পথ হল বাংলাদেশ বিভাগ করা। এইভাবেই মুসলিম লিগের বোধোদয় হতে পারে। আমি সোহরাওয়ার্দির হুমকি সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন। এমনকী দেশভাগের সময়েও সোহরাওয়ার্দি এই হুমকিকে কার্যকরী করার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু আমাদের এই ধরনের দুর্যোগ প্রতিরোধ করার সমস্ত রকমের ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। বর্তমানে প্রস্তাবিত ঘোষণা দু-সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে যাওয়ায় এই ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি থাকবেই। সর্দার প্যাটেল লেখেন :
You must have noticed from the activities of Mr Suhrawardy in Calcutta that he is considerably unnerved by the agitation of partition of Bengal which is sure to separate Calcutta from Eastern Bengal which is destined to be the League portion of Pakistan if it persists in its demand. I am afraid this cry of a sovereign independent Bengal is a trap in which even Kiran Shankar (Roy) may fall with Sarat Babu. The only way to save the Hindus of Bengal is to insist on partition of Bengal and to listen to nothing else. That is the only way to bring the Muslim League in Bengal to its senses.
I am aware of the threat which Suhrawardy has given in his statement and which he may try to execute in the event of partition, but we shall take all possible precautions to prevent such a catastrophe. At present unfortunately the proposed announcement has been postponed for a fortnight and during that period the tension and war of nerves will continue but there is no help.১২৬
১১ মে (১৯৪৭খ্রি.) শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সর্দার প্যাটেলকে লেখেন, স্বাভাবিক কারণেই আমরা চূড়ান্ত পরিণতির জন্য উদবিগ্ন আছি। শরৎচন্দ্র বসু সার্বভৌম বাংলা গঠনের বিষয় নিয়ে সোহরাওয়ার্দির সঙ্গে আলোচনা করে অনেক ক্ষতি করছেন। হিন্দুদের পক্ষ থেকে শরৎবাবু কোনোই সমর্থন পাননি এবং তাঁর একটিও জনসভায় ভাষণ দেবার সাহস হয়নি। আমি আশা করব, আপনি সার্বভৌম বাংলা গঠনের পরিকল্পনার প্রতি কোনোই গুরুত্ব দেবেন না। যদি ক্যাবিনেট মিশনের প্ল্যান অনুযায়ী একটি আলগা কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়, তা হলেও বাংলায় আমাদের কোনো নিরাপত্তা হবে না। পাকিস্তান হোক কি না-হোক, আমরা বাংলাকে দুটো প্রদেশে ভাগ করার দাবি করি। বর্তমানে এই পশ্চিমবঙ্গে গঠিত নতুন প্রদেশের সীমানার মধ্যে বর্ধমান ও প্রেসিডেন্সি ডিভিশন এবং জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পরে সীমানা কমিশন থানাভিত্তিক প্রদেশের চূড়ান্ত রূপ দেবে।
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এই দাবিও করেন, ব্রিটিশ সরকার যে-ঘোষণা করবে তার সঙ্গে বাংলার মন্ত্রীসভা বাতিলের বিষয়ও যুক্ত করতে হবে। তা না হলে নিদারুণ বিপর্যয় হবে। যদি মন্ত্রীসভাকে একদিনের জন্যও থাকতে দেওয়া হয় তা হলে এই প্রদেশের, বিশেষ করে কলকাতার অবস্থা ভয়ানক হবে। যদি আঞ্চলিক মন্ত্রীসভা গঠন করতে দেরি হয়, তাহলে উপদেষ্টামন্ডলী গঠন করে ৯৩ ধারা প্রয়োগ করা যেতে পারে। শ্যামাপ্রসাদ একই ধরনের পত্র জওহরলাল নেহরুকেও পাঠান।১২৭ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় লিখিত পত্রখানি থেকে কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করা হল :
We are naturally extremely anxious about the final developments. Sarat Babu is doing enormous mischief by trying to negotiate with Suhrawardy on the basis of sovereign Bengal. He has no support whatsoever from the Hindus and he dare not address one single public meeting. I hope you will not allow this idea of sovereign Bengal to be considered seriously by anybody…Even if a loose Centre as contemplated under the Cabinet Mission Scheme is established, we shall have no safety whatsoever in Bengal. We demand the creation of two provinces out of the present boundaries of Bengal-Pakistan or no Pakistan.১২৮
এই চিঠির উত্তরে ১৭ মে প্যাটেল শ্যামাপ্রসাদকে লেখেন, আপনার উদবিগ্ন হবার কোনোই কারণ নেই। আমরা ভালোভাবেই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারব। বাংলার হিন্দুরা যদি দৃঢ় থাকেন এবং আমাদের সমর্থন করেন তা হলে তাঁদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হবে। সর্দার প্যাটেলের ভাষায় :
I do not think you need have any worry at all. You can depend on us to deal with the situation effectively and befittingly. The future of Hindus in Bengal is quite safe so long as they stand firm and continue to give us such support as only they can.১২৯
২৩ মে (১৯৪৭ খ্রি.) বিনয়কুমার রায় নামক এক ব্যক্তিকে প্যাটেল তাঁর চিঠির উত্তরে লেখেন, বাংলাকে ভারতীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। যদি অ-মুসলমান জনসাধারণকে বেঁচে থাকতে হয় তাহলে বাংলাকে ভাগ করতেই হবে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বাংলার অবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন। এই চিঠিতে প্যাটেল এই কথাও লেখেন, কংগ্রেস হাইকমাণ্ডের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে কিরণশঙ্কর রায় কিছু করবেন বলে মনে হয় না। প্যাটেল লেখেন :
Bengal cannot be isolated from the Indian Union. Talk of the idea of a sovereign republic of independent Bengal is a trap to induce the unwary and unwise to enter into the parlour of the Muslim League. The Congress working Committee is fully aware of the situation in Bengal, and you need not be afraid at all. Bengal has got to be partitioned, if the non-Muslim population is to survive.১৩০
১৬ মে (১৯৪৭ খ্রি.) শরৎচন্দ্র বসু একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো দপ্তরে নেবার ব্যাপারে অনুরোধ করে সর্দার প্যাটেলকে পত্র লেখেন। ২২ মে সে-বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করার পরে প্যাটেল শরৎবাবুকে লেখেন, আমি এই দেখে দুঃখিত যে, আপনি সারা ভারতের রাজনীতি থেকে নিজেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন এবং এমনকী প্রাদেশিক রাজনীতিতেও আপনি আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছেন না। বর্তমানের সংকটজনক অবস্থায় আমাদের সকলের একসঙ্গে দাঁড়ানো উচিত। আমি আশা করব, আপনি সর্বভারতীয় ও প্রাদেশিক রাজনীতির ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। প্যাটেল লেখেন :
I am sorry to find that you have isolated yourself so completely from all India politics and even in provincial politics you have not kept in touch with us. In these critical times, we cannot afford to be standoffish and must pool our resources and take a united stand. Vital matters which will leave their mark on generations to come have to be settled, and in such settlement it behaves all of us to contribute our best to the combined strength of the Congress. I do hope that you will take a broader share in all-India politics and will keep us in touch with your activities both in regard to all-India and in regard to provincial politics.১৩১
২৭ মে শরৎচন্দ্র বসু এক দীর্ঘ পত্রে প্যাটেলকে তাঁর মনোভাব ব্যক্ত করেন। তিনি লেখেন, গত ডিসেম্বর থেকেই অসুস্থতা ও অন্যান্য কারণে বিব্রত ছিলাম। এর মধ্যে যখনই কিছুটা সুস্থ ছিলাম তখনই আমি রাজনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকি এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ দূর করতে নিজের সময় ও শক্তি নিয়োগ করি। আজকে অবস্থা এমন হয়েছে যে, সাম্প্রদায়িক উন্মত্ততা মুসলিম লিগেই একচেটিয়া ব্যাপার নয়, বৃহৎসংখ্যক হিন্দুদেরও তা আজ গ্রাস করেছে। দেশভাগ সম্পর্কে কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িক উন্মত্ততাকে আরও প্রসারিত করতে সাহায্য করে। তার ফলে হিন্দু মহাসভার শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
শরৎচন্দ্র বসু লেখেন, বিভিন্ন সময়ে আমি আমার ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করেছি। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি কতৃক পাকিস্তানের ও দেশভাগের প্রস্তাব মেনে নেওয়াকে আমি দুর্ভাগ্যজনক মনে করি। আমি শারীরিক কারণে জনসভায় ভাষণ দিতে পারিনি ঠিকই। তা সত্ত্বেও আমি পশ্চিম ও পূর্ববাংলার জনমতের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আছি। একথা ঠিক নয়, বাঙালি হিন্দুরা সবাই দেশভাগ দাবি করেন। এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই পূর্ববঙ্গের বেশিরভাগ হিন্দু দেশভাগের বিরোধী। আর যদি পশ্চিমবঙ্গের কথা ধরা যায়, তা হলে দেখা যাবে এখানে কংগ্রেস হিন্দু মহাসভাকে সমর্থন করায় দেশভাগের আন্দোলন জোরালো হয়েছে। তা ছাড়া ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাস থেকে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার ফলেই হিন্দুদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেশভাগের দাবি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যেই আবদ্ধ আছে। যখন লোকেরা দেশভাগের পূর্ণ গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে, লোকেরা দেখবে যে, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে মাত্র বাংলার এক-তৃতীয়াংশ পড়বে এবং বাংলার সমস্ত হিন্দু জনসাধারণের অর্ধেক এখানে থাকবে, তখন দেশভাগের পক্ষে সমর্থন হ্রাস পাবে। আমি স্বীকার করি, আমাদের একসঙ্গেই দাঁড়াতে হবে। কিন্তু তার সঙ্গে একথাও আমি বলতে চাই, ঐক্যবদ্ধ ভারতের জন্যই আমরা একসঙ্গে দাঁড়াব। আমার আশঙ্কা হয়, বাংলা ও পাঞ্জাব বিভাগসহ ভারত বিভাগের দাবিতে সম্মত হওয়ায় ভবিষ্যৎ বংশধরেরা আমাদের সমালোচনা করবে। প্যাটেলকে লেখা শরৎচন্দ্র বসুর পত্রখানি নিম্নরূপ ছিল :
Isolation from all India politics has not been of my seeking. Health and other circumstances have been conspiring against me since December last. During intervals, when I had a little respite from illness. I did some political work and also devoted some of my time and energy to curbing to some extent communal frenzy. Today the position is that communal frenzy is not the monopoly of the Muslim Leaguers; it has also overtaken large sections of Hindus both Congressites and Mahasabhaites. The Congress stand regarding partition has been taken advantage of by the sections mentioned above to inflame communal passions further. It has also brought back the Hindu Mahasabha to life and considerably strengthened its position.
I have given the public from time to time a very clear indication of my views. I consider it most unfortunate that the Congress Working Committee conceded Pakistan and supported partition. It is true that I have not been able to address public meetings yet for reasons of health; but having been in close touch with public opinion both in West and East Bengal, I can say that it is not a fact that Bengali Hindus unanimously demand partition. As far as East Bengal is concerned, there is not the slightest doubt that the overwhelming majority of Hindus there are opposed to partition. As regards West Bengal, the agitation from partition has gained ground because the Congress came to the aid of the Hindu Mahasabha and also because communal passions have roused among the Hindus on account of the happenings since August last. The demand for partition is more or less confined to the middle classes. When the full implications of partition are realised and when people here find that all that they will get for Western Bengal province will be roughly one-third of the area of Bengal and only about half of the total Hindu population in Bengal, the agitation for partition will surely lose support. I entirely agree with you that we should take a united stand; but I shall say at the same time that the united stand should be for a united Bengal and a united India. Future generations will, I am afraid, condemn us for conceding division of India and supporting partition of Bengal and the Punjab.১৩২
২০ মে (১৯৪৭ খ্রি.)-এর দলিল প্রকাশের পরেই ২১ মে সর্দার প্যাটেল কিরণশঙ্কর রায়কে একটি চিঠিতে লেখেন, খবরের কাগজের ও বিভিন্ন লোকমুখের সংবাদ শুনে মনে হয় কিছু ঘটতে যাচ্ছে কি না সে-বিষয়ে আমরা অন্ধকারে আছি। আপনার ও শরৎবাবুর নাম এইসব অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত আছে। আমি মনে করি, আপনার স্বার্থেই এইসব অভিযোগ বন্ধ করা প্রয়োজন। দেশভাগের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি কংগ্রেস সভ্যের কর্তব্য হল কংগ্রেসের নীতিকে সমর্থন করা। ব্যক্তিগত অভিমতকে সেই নীতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। আশা করি একজন শৃঙ্খলাপরায়ণ কংগ্রেসসেবী হিসেবে আপনি এই পরামর্শ অনুধাবন করবেন। প্যাটেল লেখেন :
We are completely in the dark as to whether anything is transpiring, as is reported in the papers or alleged by various persons. Both your and Sarat Babu’s names are implicated in these allegations, and I feel that it is in your interests to see that such rumours do not gain further currency. These are undoubtedly critical times, and the issue of partition is of paramount importance. It is incumbent on all Congressmen to set aside personal predilections and to stand united on the official policy of the Congress. Individual expression of views must fit into that policy, and there should not be any discordant note. As a disciplined Congressman, I am sure you will appreciate this advice.১৩৩
এই পত্রের পরে কিরণশঙ্কর রায় কংগ্রেসের অফিশিয়াল লাইন অনুসরণ করেন। অবশ্য বঙ্গভঙ্গের ও স্বাধীন বঙ্গ গঠনের বিষয়ে কিরণশঙ্কর রায় দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। প্রথমে তিনি বঙ্গভঙ্গের সমর্থনে উদ্যোগ গ্রহণ করলেও পরে স্বাধীন বঙ্গ গঠনের উদ্দেশ্যে শরৎচন্দ্র, সোহরাওয়ার্দি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনাতেও অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু প্যাটেলের এই পত্রের পরে কিরণশঙ্কর আর স্বাধীন বঙ্গের কথা উচ্চারণ করেননি।
এই সময়ে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের মনে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সম্পর্কে অভিযোগ লক্ষ করা যায়। ২৩ মে (১৯৪৭ খ্রি.) নীহারেন্দু দত্ত মজুমদার একটি পত্রে প্যাটেলকে জানান, বাংলার প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতাদের এমন একটা মনোভাব রয়েছে যে, কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃবৃন্দ বাংলার সমস্যাকে অবহেলা করেন। তাঁরা এই অভিযোগও করেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমস্যা আলোচনার জন্য বাংলার নেতাদের পর্যাপ্ত সময়ও দেন না। নীহারেন্দু দত্ত মজুমদার বাংলার নেতাদের এই মনোভাব প্যাটেলকে জানিয়ে বলেন, এই ধরনের মনোভাব থাকলে খুবই ক্ষতি হবে এবং তা দূর করা একান্ত দরকার। তিনি একথাও বলেন, বেশিরভাগ বাংলার অ-মুসলিম লিগ মহল ভারতীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষপাতী ও সার্বভৌম বাংলার বিরোধী।১৩৪
২৬ মে নীহারেন্দু দত্ত মজুমদারের পত্রের উত্তরে প্যাটেল লেখেন, আমরা বাংলা থেকে নির্বাচিত কনস্টিট্যুয়েন্ট অ্যাসেম্বলির সদস্যদের ও কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখেছি। অবশ্য শরৎবাবুকে বাদ দিয়ে। কারণ তিনি কেন্দ্র থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে একমত হতে না পারায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন।১৩৫ প্যাটেল লেখেন, বাংলার নেতাদের এই কথা ভাবার কোনোই কারণ নেই যে, আমাদের সঙ্গে সমস্যা আলোচনার সময়ে তাঁরা পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। যখন কোনো গ্রূপ বা ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসেন আমরা তো তাঁদের পূর্ণ সুযোগ দিই। অবশ্য আপনি এই মনোভাব প্রকাশ করায় আমি খুশি হয়েছি। কারণ আমরা এই মনোভাব দূর করতে যথাসাধ্য করতে পারব।
প্যাটেল লেখেন, শরৎবাবু ও অন্যান্য ব্যক্তিদের চেষ্টা সত্ত্বেও বাংলা দেখতে পাবে যে তার স্বার্থ ভারতের সঙ্গে যুক্ত থাকলেই রক্ষা করা যাবে। প্যাটেল লেখেন :
I have no doubt that Bengal will see, in spite of all efforts of Sarat Babu or other individuals, that its interests lie in not isolating itself from the rest of India. Let us hope there will be no treachery.১৩৬
২৮ মে (১৯৪৭ খ্রি.) সুরেন্দ্রনাথ সেন নামক একজন অবসরপ্রাপ্ত ডিস্ট্রিক্ট জজ কলকাতা থেকে প্যাটেলকে এক দীর্ঘ পত্রে লেখেন, সার্বভৌম বাংলার সমর্থকেরা বঙ্গভঙ্গের দাবিকে নস্যাৎ করার জন্য খুবই সক্রিয় হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস নেতাও তাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এমনও গুজব শোনা যাচ্ছে, এই উদ্দেশ্যে অনেক অর্থও সংগ্রহ করা হয়েছে। কিছু এজেন্ট মারফত ভয়ভীতি ও নানারকম কথা ছড়ানো হচ্ছে। সুতরাং এদের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে হবে।১৩৭
১ জুন সুরেন্দ্রনাথ সেনকে প্যাটেল জানান, যারা বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনাকে নষ্ট করতে চায় তাদের কার্যাবলি সম্পর্কে আমরাও সচেতন আছি। আমি মনে করি না তারা সফল হবে। মুসলিম লিগের লোকেরা এখন এক জাতির, এক সংস্কৃতির ও এক ভাষার কথা বলে বেড়াচ্ছে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত তারা ভিন্ন জাতির ও ভিন্ন সংস্কৃতির নামে শপথ নেয়। কেউ এই ফাঁদে পা বাড়াবে না। আমি মনে করি না কোনো ভয়ের কারণ আছে। প্যাটেল লেখেন :
We are aware of the danger arising from the activities of some people who are now trying to sabotage the scheme of partition of Bengal. But I do not think that that game will succeed. People in Bengal have seen through the whole game, and it is not likely that except for a few selfish individuals anybody will be taken in by the propaganda that is being carried on in the pompous name of a sovereign Bengal. The League people are now glibly taking of one race, one culture and one language ; till yesterday they were swearing by their being a different nation, having a different language and a different culture. Nobody will fall into this trap in Bengal. Anyway, I do not think there is any cause for apprehension.১৩৮
৩ জুনের (১৯৪৭ খ্রি.) ঘোষণার পরে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। ৫ জুন বেঙ্গল কংগ্রেস অ্যাসেম্বলি পার্টির সহ-সম্পাদক বিমলচন্দ্র সিংহ প্যাটেলের নিকট এক দীর্ঘ পত্রে বাংলার অবস্থা আলোচনা করেন। তিনি লেখেন : বঙ্গভঙ্গের নিশ্চিত সম্ভাবনা দেখে জাতীয়তাবাদীরা উৎফুল্ল, কিন্তু মুসলিম লিগ বিষণ্ণ। নাজিমুদ্দিন সমর্থিত সংবাদপত্রসমূহ ৩ জুনের ঘোষণায় খুশি হলেও, সোহরাওয়ার্দি গ্রূপের কাগজ ‘ইত্তেহাদ’ ৫ জুনের সম্পাদকীয়তে লেখে, বঙ্গভঙ্গ সমর্থন করে জিন্না পূর্ব পাকিস্তানকে পেছন থেকে ছুরি মারেন। বাংলার শিক্ষামন্ত্রী মোয়াজ্জেমউদ্দিন হোসেন বলেন, আমরা চেয়েছিলাম মাংস, কিন্তু পেলাম পাথর। এইসব তথ্য দিয়ে বিমলচন্দ্র সিংহ লেখেন, সুতরাং তাঁদের কথায় বিষণ্ণতার সুর বাজে, যুদ্ধের নয়।১৩৯
৫ জুন (১৯৪৭ খ্রি.) বি. এম. বিড়লা সর্দার প্যাটেলকে লেখেন : ভাইসরয়ের ঘোষণার ফলে অবস্থার যে পরিবর্তন ঘটেছে তাতে আপনারই ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে। তার ফলে হিন্দুদের ভালোই হবে এবং আমরাও সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্ত হতে পারব। ভারতের বিভক্ত অঞ্চলে মুসলিম রাষ্ট্র হবে। আমরাও কি হিন্দু ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম করে হিন্দুস্থানে একটা হিন্দুরাষ্ট্র স্থাপন করার কথা বিবেচনা করতে পারি না? ভবিষ্যতে যে-কোনো আক্রমণের সম্মুখীন হবার জন্য দেশকে শক্তিশালী করতে হবে।
বিড়লা লেখেন, আপনি বঙ্গভঙ্গের প্রশ্নটি মীমাংসা করায় আমি খুবই খুশি হয়েছি। এখন মন্ত্রীসভা গঠনের প্রশ্ন উঠবে। কিরণশঙ্কর রায় পূর্ববঙ্গের লোক এবং সম্প্রতি তিনি যে মনোভাব প্রদর্শন করেন তার ফলে জনসাধারণ তাঁর ওপর খুশি নন। সুতরাং পশ্চিমবঙ্গ অ্যাসেম্বলি পার্টির নেতা নির্বাচন করতে হবে এবং আপনাকে একজন যোগ্য লোককে এই পদের জন্য মনোনীত করতে হবে। যাঁরা আছেন তাঁদের মধ্যে শ্যামাপ্রসাদই শক্তিশালী ব্যক্তি। শরৎচন্দ্র বসুর প্রভাব নষ্ট হয়েছে। আর সুরেন্দ্রমোহন ঘোষের অনুগামীদের সংখ্যাও বেশি নয়। সুতরাং আমি আশা করব, ওয়ার্কিং কমিটি নেতা নির্বাচনের ব্যাপারে যথার্থ পরামর্শ দেবে। বি. এম. বিড়লা লিখিত পত্রখানি উদ্ধৃত করা হল :
Your kind letter of 1 June is to hand. I am so glad to see from the Viceroy’s announcement that things have turned out according to your desire. It is no doubt a very good thing for the Hindus and we will now be free from the communal canker.
The partitioned area, of course, would be a Muslim State. Is not time that we should consider Hindustan as a Hindu State with Hinduism as the state religion? We have also to strengthen the country so that it may be able to face any future aggression.
I am very happy that the Bengal partition question has also been settled by you. The question of ministry would loom large in the near future. Kiran (Shankar Roy) comes from East Bengal and because of his recent attitude people are not very happy with him. But a leader of the Western Bengal Group Assembly Party has to be elected and you have to select a good man for that post. Of the many candidates none is strong enough except Shyama Prasad (Mookerjee) Babu. Sarat has lost his position while Surendra Mohan Ghosh may not be able to command a majority of the following. I hope therefore the Working Committee would give proper advice for the election of the leader of the Assembly Party.১৪০
১০ জুন প্যাটেল বিড়লাকে লেখেন : আমি স্বীকার করি বাংলার নেতৃত্বের প্রশ্নটি জটিল, কিন্তু এই প্রশ্ন প্রধানত বাঙালিদেরই সমাধান করতে হবে। আমি মনে করি না হিন্দুস্থানকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব। আমাদের ভোলা উচিত নয়, এই রাষ্ট্রে অনেক সংখ্যালঘু থাকবে এবং তাদের রক্ষার প্রধান দায়িত্ব আমাদেরই। রাষ্ট্র তো সকলেরই। প্যাটেল লেখেন :
I quite agree that Bengal leadership is very problematic, but that is a question largely for Bengalees to solve.
I do not think it will be possible to consider Hindustan as a Hindu State with Hinduism as the state religion. We must not forget that there are other minorities whose protection is our primary responsibility. The state must exist for all, irrespective of caste or creed.১৪১
১১ জুন (১৯৪৭ খ্রি.) সিমলা থেকে কে সি নিয়োগী বাংলাদেশ বিভাগের বিষয়ের ওপর বাংলার আইনসভার সদস্যদের ভোটগ্রহণের ফলাফল সম্পর্কে উদবেগ প্রকাশ করে প্যাটেলকে লেখেন, আমি সিমলাতে বসেই এমন সব অস্বস্তিকর খবর শুনতে পাই যে, লিগপন্থীরা হিন্দুভোট কেনার জন্য অনেক টাকা খরচ করবে। খুবই দুঃখের কথা যে, এই সময়ে আমি সিমলাতে ইণ্ডিয়ান রেলওয়ে এনকোয়ারি কমিটির কাজে ব্যস্ত থাকায় কলকাতা থেকে দূরে আছি। শরৎ বসুর ও কিরণশঙ্কর রায়ের মনোভাব খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যদি আইনসভার ভোটের ফলাফল ভিন্ন ধরনের হয়, তাহলে তাঁরাই প্রধানত দায়ী হবেন।১৪২
১৩ জুন প্যাটেল কে. সি. নিয়োগীকে লেখেন, বাংলাদেশ বিভাগের প্রশ্নে সদস্যদের ভোটদানের বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করেছি। আমি বিশ্বাস করি সবই ঠিক হবে। প্যাটেল লেখেন :
You need not be anxious about yourself. I am bearing the matter in my mind and will do what I can.
As regards voting on the question of partition, we are taking necessary precautions. I feel confident that it will be all right.১৪৩
এইসব তথ্য থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, সর্দার প্যাটেল শুধু বাংলাদেশ বিভাগের পক্ষপাতী ছিলেন না, তিনি এই দাবিকে কার্যকরী করার ব্যাপারেও এক বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
.
১১৯. Durga Das (Edited), Sardar Patel’s Correspondence 1945-50, vol. IV, Ahmedabad, 1972.
১২০. Ibid, p. 30.
১২১. Ibid, pp. 36-37.
১২২. Ibid, pp. 37.
১২৩. Ibid, p. 38
১২৪. Ibid. Quoted.
১২৫. Ibid, p. 39.
১২৬. Ibid, pp. 39-40.
১২৭. Ibid, pp. 40-41.
১২৮. Ibid, p. 40.
১২৯. Ibid, p. 41.
১৩০. Ibid, pp. 42-43.
১৩১. Ibid, pp. 43-45.
১৩২. Ibid, pp. 45-46.
১৩৩. Ibid, pp. 46-47.
১৩৪. Ibid, pp. 48-49.
১৩৫. Ibid, pp. 49-50.
১৩৬. Ibid, p. 50.
১৩৭. Ibid, pp. 50-51
১৩৮. Ibid, p. 52.
১৩৯. Ibid, pp. 52-54.
১৪০. Ibid, pp. 55-56.
১৪১. Ibid, pp. 56-57.
১৪২. Ibid, pp. 57-58.
১৪৩. Ibid, p 58.