পঞ্চম অধ্যায় : মুসলিম লিগ নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া

পঞ্চম অধ্যায়
 মুসলিম লিগ নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দি কতৃক স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা ঘোষিত হবার কিছুদিনের মধ্যে মুসলিম লিগের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নেতৃত্বে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অবশ্য লিগ নেতৃত্ব প্রথমেই এই পরিকল্পনা সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেননি। এমনকি তাঁরা সোহরাওয়ার্দিকে তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে বাধাও দেননি। সম্ভবত তাঁদের ধারণা ছিল, যদি বাংলাদেশ অবিভক্ত থাকে তা হলে হয়তো এই অঞ্চলকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত রাখা অনেকটা সহজ হবে। এই কারণেই সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলিতে মুসলিম লিগ পার্টির ডেপুটি লিডার ও লিগ হাইকমাণ্ডের সদস্য খাজা নাজিমুদ্দিনের কন্ঠেও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের কথা শোনা যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভাগ করলে বাঙালির স্বার্থের পক্ষে তা ক্ষতিকারক হবে।৭২ তাই কয়েকজন মুসলিম লিগ নেতা সোহরাওয়ার্দি-বসু পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এমনকী বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগ একটি সাব-কমিটি গঠন করে তার উপর এই বিষয় নিয়ে আলোচনার দায়িত্বও অর্পণ করে। বেঙ্গল অ্যাসেম্বলির স্পিকার নুরুল আমিন এই সাব-কমিটির কনভেনর ছিলেন। এই সাব-কমিটি হিন্দু নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্যা নিয়ে আলোচনা চালান। এই সাব-কমিটির সদস্যরা লিগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুগামী ছিলেন। অনেক বিষয়েই তাঁরা সোহরাওয়ার্দির সঙ্গে একমত ছিলেন না।৭৩ তা ছাড়া বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগের সভাপতি মওলানা মোহম্মদ আকরম খাঁ, বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল্লাহ বাহার, স্পিকার নুরুল আমিন, ইউসুফ আলি চৌধুরী, এমএলসি ও হামিদুল হক চৌধুরী, এমএলসি প্রমুখ লিগ নেতা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের (বিশেষ করে জিন্নার) নির্দেশে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগকে পরিচালনা করেন। এই সময়ে বাংলাদেশের মুসলিম লিগের নেতৃত্ব দুটো অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে, যথা— সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রভাবশালী অংশ আকরম খাঁ-র নেতৃত্বে চলেন এবং তাঁরা লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত রাখতে বদ্ধপরিকর হন। আর স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সমর্থক সোহরাওয়ার্দি, আবুল হাশেম ও ফজলুর রহমান ছিলেন সংখ্যালঘিষ্ঠ অংশের নেতা।৭৪ সংখ্যালঘিষ্ঠ অংশ বাংলাদেশের সমস্যাকে সর্বভারতীয় সমস্যা থেকে আলাদা করে তার সমাধানের কথা চিন্তা করেন। আবুল হাশেম লাহোর প্রস্তাবের পাকিস্তান দাবিকেও যেভাবে ব্যাখ্যা করেন তার সঙ্গে জিন্নার ও তাঁর অনুগামীদের বক্তব্যের কোনোই মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সংযোগবিহীন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের প্রতিই সোহরাওয়ার্দি ও আবুল হাশেম গুরুত্ব আরোপ করেন।

কিন্তু জিন্না ও তাঁর অনুগামীরা এই নীতির বিরোধী ছিলেন। একই সময়ে পাঞ্জাব বিভাগের দাবিও উত্থাপিত হয়। তা ছাড়া উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের নেতা ডা. খান সাহেব সার্বভৌম পাঠান রাষ্ট্র গঠনের দাবিও করেন। স্বভাবতই বাংলাদেশ ও পাঞ্জাব বিভাগের ও স্বাধীন পাঠান রাষ্ট্র গঠনের দাবি মূল পাকিস্তান প্রস্তাবকে বিনষ্ট করতে উদ্যত হয়। এই অবস্থায় ৩০ এপ্রিল জিন্না এইসব দাবির বিরোধিতা করে একটি দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ঘৃণা ও তিক্ততা থেকেই পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ বিভাগের দাবি উত্থাপিত হয়েছে। জিন্না পরিষ্কার করেই বলেন, ভারতকে পাকিস্তান ও হিন্দুস্থান নামক দুটো পৃথক রাষ্ট্রে বিভক্ত করতে হবে এবং মুসলমানদের নিজস্ব বাসভূমি পাকিস্তানে পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধ, বেলুচিস্তান, বাংলাদেশ ও অসম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাদবাকি অঞ্চল হিন্দুস্থানের মধ্যে থাকবে। এইভাবে হিন্দু ও মুসলিম দুটো স্বতন্ত্র জাতির জন্য আলাদা রাষ্ট্র স্থাপন করতে হবে। লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের দাবিই জোরালো ভাবে উত্থাপন করেন জিন্না। তিনি এই দুটো রাষ্ট্রের মধ্যে লোক-বিনিময়ের কথাও বলেন। ভারত বিভাগের প্রাক্কালে পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ বিভাগের আন্দোলন শুরু হওয়ায় জিন্না তীব্র ভাষায় তার সমালোচনা করেন। তিনি কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেন, কংগ্রেস হিন্দু মহাসভার সাহায্যে পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ বিভাগের পক্ষে আন্দোলন শুরু করে আপোশ-মীমাংসার পথ নষ্ট করছে। তিনি দাবি করেন, ২০ ফেব্রুয়ারির ঘোষণা অনুযায়ী সমস্ত ক্ষমতা দুটো স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পাকিস্তান ও হিন্দুস্থানে অর্পণ করতে হবে। এই পথেই ভারতের শাসনতান্ত্রিক সমস্যার সমাধান করতে হবে।৭৫ সুতরাং জিন্না পরিষ্কার করেই লাহোর প্রস্তাবের ব্যাখ্যা করে বলেন, অবিভক্ত পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অর্থাৎ বিভক্ত ভারতে অবিভক্ত পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাকিস্তান ও হিন্দুস্থান গঠিত হবার পরে হিন্দু ও মুসলমান যদি নিজ নিজ মাতৃভূমিতে চলে যেতে চায় তারও ব্যবস্থা করতে হবে। জিন্নার এই বক্তব্যের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দি-আবুল হাশেমের বক্তব্যের অমিল লক্ষণীয়। জিন্নার এই বিবৃতির পরে বাংলাদেশে তাঁর অনুগামীরা সমগ্র বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত রাখতে সচেষ্ট হয়। স্বভাবতই তাঁরা সোহরাওয়ার্দি-বসু পরিকল্পনাকে গ্রহণ করতে অসম্মত হন। ৫ মে (১৯৪৭ খ্রি.) মুসলিম লিগ সাব-কমিটির সদস্যরা এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। কয়েকজন হিন্দু নেতার নিকটে তাঁদের বক্তব্য পেশ করার উদ্দেশ্যেই তাঁরা মিলিত হন। কিন্তু এই পরিকল্পনার কয়েকটি বিষয়ের চরিত্র এত সুদূরপ্রসারী ছিল যে, ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে পরামর্শ না করে তাঁরা কোনো মতামত দেননি। এইভাবেই কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে এই সাব-কমিটির বৈঠক শেষ হয়। তারপর থেকে ১১ মে পর্যন্ত আর কোনো হিন্দু নেতার সঙ্গে এই সাব-কমিটির সদস্যদের কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। এই সাব-কমিটির কনভেনর নুরুল আমিন একথাও বলেন, যদি কোনো আলোচনা হিন্দু নেতাদের সঙ্গে হয়ে থাকে তা হলে তা ব্যক্তিগত দায়িত্বেই হয়েছে, মুসলিম লিগের পক্ষ থেকে নয়।৭৬ এইভাবে আকরম খাঁ-র নেতৃত্বে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগ নেতৃত্ব ১১ মে-র (১৯৪৭ খ্রি.) মধ্যে সোহরাওয়ার্দি, আবুল হাশেম ও ফজলুর রহমানকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। তাঁরা সোহরাওয়ার্দির প্রচেষ্টাকে নিতান্তই ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেন।

২৯ এপ্রিল (১৯৪৭ খ্রি.) আবুল হাশেম এক দীর্ঘ বিবৃতিতে যে-মনোভাব ব্যক্ত করেন এবং সোহরাওয়ার্দি যে তত্ত্ব প্রচার করেন তা সমালোচনা করে ৪ মে মওলানা মোহম্মদ আকরম খাঁ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন:

মুসলিম বাংলা লাহোর প্রস্তাবের আদর্শ রূপায়ণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও জিন্নার নেতৃত্বের প্রতি অনুগত। ৩০ এপ্রিল জিন্নার বিবৃতিতে যেভাবে পাঞ্জাব, সিন্ধু, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, বেলুচিস্তান, বাংলা ও অসমসহ একটি সার্বভৌম মুসলিম জাতীয় রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে, তাই হল আমাদের আদর্শ। সুতরাং পাকিস্তানের অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন একটি পৃথক স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্ন অবান্তর। ভারতের মুসলমানেরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি এবং আমাদের উদ্দেশ্য হল একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন করা। সুতরাং আমি পৃথক বঙ্গভূমি গঠনের বিরোধিতা করি। যাঁরা হিন্দু-মুসলমানদের নিয়ে মিলিতভাবে বাঙালি জাতির ও একটি পৃথক সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কথা বলেন, তাঁরা আমাদের শত্রুদের হাতের ক্রীড়নক। যাঁরা প্রকাশ্যেই মুসলিম বাংলাকে পূর্ব ও পশ্চিমের হিন্দু প্রদেশসমূহ দিয়ে পিষে মারতে চান, বাঙালি মুসলমানদের স্বার্থেই মুসলিম জাতীয় রাষ্ট্র থেকে তাঁদের পক্ষে বিচ্ছিন্ন থাকা সম্ভব নয়।৭৭

আকরম খাঁ বলেন, বিভক্ত পাকিস্তান রাষ্ট্রসমূহের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হিন্দুস্থান রাষ্ট্রের শক্তির সামনে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। সুতরাং, প্রকৃত সমাধান হল জিন্না উল্লিখিত ছ-টি ইউনিটসহ একটি শক্তিশালী মুসলিম জাতীয় রাষ্ট্র গঠন করা।

আকরম খাঁ আরও বলেন:

আমি লক্ষ করেছি কোনো কোনো মহল থেকে মুসলমানদের দ্বারা পরিত্যক্ত, অগণতান্ত্রিক ৫০ : ৫০ ফর্মূলা ও যুক্ত নির্বাচন পদ্ধতির কথা প্রচার করা হচ্ছে। আমি দৃঢ়তার সঙ্গেই সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই মুসলিম বাংলা এইসব প্রস্তাব বর্জন করেছে। তা ছাড়া সর্বভারতীয় বিষয়ে কথা বলার অধিকার কেবলমাত্র সারা ভারত মুসলিম লিগের ও জিন্নার রয়েছে। আমি সাবধান করে দিতে চাই, যাঁরা এইসব প্রস্তাবের কথা বলছেন তার পরিণতি খুবই খারাপ হবে। আমি আশা করব, এই বিবৃতির পরে বাঙালি মুসলমানদের প্রকৃত মনোভাব সম্পর্কে আর কোনো ভুল ধারণার অবকাশ থাকবে না।৭৮

পুনরায় ১৪ মে (১৯৪৭ খ্রি.) মওলানা মোহম্মদ আকরম খাঁ শরৎচন্দ্র বসুর ফর্মূলাকে সমালোচনা করে এক দীর্ঘ বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, শরৎচন্দ্র বসুর ফর্মূলা বাঙালি মুসলমানদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে কবর দেবার উদ্দেশ্যেই রচিত। এই ফর্মূলা গ্রহণ করার অর্থ হল পাকিস্তান প্রস্তাবকে ধ্বংস করা এবং সাড়ে তিন কোটি বাঙালি মুসলমানকে ব্রিটিশের হাত থেকে বর্ণহিন্দুদের হাতে অর্পণ করা। একইসঙ্গে এই ফর্মূলা তপশিলি হিন্দুদের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেবে এবং তাঁদের দাসত্বকে স্থায়ী করবে।৭৯

আকরম খাঁ বলেন, বর্ণহিন্দুদের উদ্দেশ্য হল যেকোনো প্রকারেই হোক লিগ মন্ত্রীসভাকে ভেঙে দিয়ে মন্ত্রীসভায় ঢুকে স্বরাষ্ট্র বিভাগ দখল করা, যাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়ে শাসনতন্ত্রের পূর্ণ ক্ষমতায় তাঁরা থাকতে পারেন। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দুর্বল করার উদ্দেশ্যেই বাংলার হিন্দুরা সমতার (parity) দাবি উত্থাপন করেছেন। তাঁরা বলেছেন যে, তাঁদের জীবন, সম্পত্তি, সংস্কৃতি ও সভ্যতা বিপন্ন। সুতরাং, সমতার নীতি প্রয়োগ করে তাঁদের আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। আকরম খাঁ জিজ্ঞেস করেন, যেসব প্রদেশে মুসলমানেরা সংখ্যালঘু সেখানে কি একই নীতি হিন্দুরা প্রয়োগ করতে সম্মত আছেন? লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী তো মুসলমানেরা এই দাবি করতে পারেন।৮০

যুক্ত নির্বাচন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে আকরম খাঁ বলেন যে, বর্তমান অবস্থায় এই প্রস্তাব অবাস্তব। তপশিলি সম্প্রদায় তো পৃথক নির্বাচন প্রথার পক্ষপাতী। মুসলমানেরাও এমন এক নির্বাচন প্রথার সঙ্গে একমত হতে পারেন না যেখানে বর্ণহিন্দুরা তাঁদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাগত প্রভাবের সাহায্যে নির্বাচনকে প্রভাবান্বিত করবেন। বস্তুত যুক্ত নির্বাচন ব্যবস্থা গণতন্ত্রের মূলনীতি বিরোধীই হবে।৮১

ইণ্ডিয়ান ফেডারেশনে যোগদানের বিষয় উল্লেখ করে আকরম খাঁ বলেন, মুসলমানেরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যে, তাঁরা এমন কোনো কেন্দ্রের সঙ্গে যোগসূত্র রাখবেন না যেখানে বর্ণহিন্দুদের প্রাধান্য থাকবে।৮২

আকরম খাঁ বলেন, যেসব পরিকল্পনা পাকিস্তান প্রস্তাবের বিরোধী, মুসলিম লিগ তার বিরোধিতা করবে। উপরন্তু মুসলমানেরা এমন কোনো শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে গ্রহণ করবেন না যার ফলে অসহায় তপশিলি সম্প্রদায়ের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়।৮৩

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভার প্রভাব ক্ষুণ্ণ করবার উদ্দেশ্যে মুসলিম লিগ নেতৃবৃন্দ তপশিলি সম্প্রদায়ের নেতা যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল, দ্বারিক বাড়রি প্রমুখকে তাঁদের সঙ্গে রাখতে সক্ষম হন। এইভাবে তপশিলি সম্প্রদায়ের এক অংশের সঙ্গে লিগের মৈত্রী হয়। লিগ নেতৃবৃন্দ তপশিলি সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষার অনেক প্রতিশ্রুতি তাঁদের দেন। এমনকী লিগের সমর্থনে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল ভারত সরকারের আইনমন্ত্রী হন এবং দ্বারিক বাড়রিও বাংলার একজন মন্ত্রী হন। যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল বাংলার তপশিলি সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। তিনিও বাংলাদেশ বিভাগ সম্পর্কে লিগতত্ত্বের সমর্থক ছিলেন এবং বাংলাদেশ বিভাগের দাবি করায় কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভার বিরুদ্ধে তপশিলি সম্প্রদায়কে সমবেত করতে চেষ্টা করেন। যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের ভূমিকা মুসলিম লিগের শক্তিবৃদ্ধিতে সহায়ক হয়, এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল লিগের সর্বভারতীয় আইন অনুকরণ করে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। হিন্দু মহাসভার নেতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বঙ্গভঙ্গের সমর্থন করায় তিনি মোটেই বিস্মিত হননি। কিন্তু ভাইসরয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের প্রাক্তন সভ্য এন আর সরকার এই দাবি সমর্থন করায় তিনি বিস্মিত হন। তা ছাড়া তিনি এই দেখে বেদনা অনুভব করেন যে, পূর্ববঙ্গের হিন্দু জমিদার কিরণশঙ্কর রায়, পূর্ববঙ্গের হিন্দু জমিদার রায়বাহাদুর সত্যেন্দ্রনাথ দাস এম.এল.এ. (সেন্ট্রাল) ও পূর্ববঙ্গের মস্তবড়ো ব্যবসায়ী এ এম পোদ্দার, এমএলএ (সেন্ট্রাল) বঙ্গভঙ্গ সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন, বঙ্গভঙ্গ সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি পরিষ্কার করেই বলেন, তপশিলি সম্প্রদায় বঙ্গভঙ্গের বিরোধী।৮৪

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মে মাসের শুরুতেই ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ১৫ মে লিগ নেতৃবৃন্দ পাকিস্তান অঞ্চলে ক্ষমতা গ্রহণের জন্য মুসলমানদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন। ১৬ মে সোহরাওয়ার্দি নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা ফিরে আসেন। একই দিনে জিন্না ও মুসলিম লিগ হাইকমাণ্ডের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য মওলানা আকরম খাঁ, নুরুল আমিন, হাবিবুল্লাহ বাহার, ইউসুফ আলি চৌধুরী ও হামিদুল হক চৌধুরী প্লেনে দিল্লি যাত্রা করেন। সেখানে তাঁরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। ১৮ মে জিন্না তাঁদের বলেন, তিনি কাউকেই মুসলিম লিগের পক্ষ থেকে হিন্দু নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালাতে বা এই বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করতে নিযুক্ত করেননি। অর্থাৎ সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের বিষয় নিয়ে সোহরাওয়ার্দি যে আলোচনা হিন্দু নেতাদের সঙ্গে চালাচ্ছেন তা জিন্না বা লিগ নেতৃত্ব কতৃক অনুমোদিত নয়। ১৮ মে দিল্লিতে মওলানা আকরম খাঁ বলেন, বাঙালি মুসলমানেরা বাংলাদেশ বিভাগের বিরোধী। এই বিভাগ কেবলমাত্র বাঙালি মুসলমানদের শবদেহের ওপর কার্যকরী করা সম্ভব হবে। এই বিভাগের নীতি বিবেচনা করা সম্ভব যদি হিন্দু-অধ্যুষিত প্রদেশের যেসব স্থানে মুসলমানেরা সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাস করেন সেখানেও তা প্রয়োগ করা হয়। স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন কোনো প্রস্তাব তাঁর পক্ষে সমর্থন করা সম্ভব নয় যার সঙ্গে সারা ভারত মুসলিম লিগের লাহোর প্রস্তাবের কোনো সঙ্গতি নেই।৮৫ আকরম খাঁ-র ১৮ মে-র বিবৃতি থেকে কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করা হল :

Muslim Bengal is positively against the division of Bengal. I assure everyone concerned with the question of separation that the Muslims of Bengal will fight against it. The partition of Bengal can be effected only over the corpses of the Bengal Muslims. But we may consider the proposal, provided this procedure is adopted as a matter of principle in all small zones and pockets where Muslims are in the minority in Hindu-dominated provinces.

Referring to the question of a sovereign, united Bengal, he said that he would not support any proposal that was not in consonance with the scheme outlined in the Lahore resolution of the All India Muslim league.৮৬

জিন্নার সঙ্গে আলোচনার পর প্রাদেশিক নেতৃবৃন্দ আকরম খাঁ-র নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশের সমস্যা সমাধানে সক্রিয় হন। তাঁরা সোহরাওয়ার্দি, শরৎ বসু, আবুল হাশেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁরা প্রচার করেন, জিন্না সোহরাওয়ার্দি বা অন্য কাউকেই এই ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে হিন্দুদের সঙ্গে আলোচনা করতে নির্দেশ দেননি। সুতরাং, এইসব ব্যক্তি কতৃক প্রচারিত পরিকল্পনার পেছনে কেন্দ্রীয় লিগ নেতৃত্বের কোনো অনুমোদন নেই। তাঁরা বেঙ্গল লিগ ওয়ার্কিং কমিটির সভাতে জিন্নার সঙ্গে তাঁদের আলোচনার রিপোর্ট পেশ করার সময় এইসব কথা বলেন।৮৭

স্বভাবতই তখন থেকে বাংলার মুসলিম লিগ মহলের প্রভাবশালী অংশ আরও তীব্রতার সঙ্গে সোহরাওয়ার্দি ও আবুল হাশেম প্রচারিত পরিকল্পনাকে আক্রমণ করেন। অবশ্য ১৫ মে কেন্দ্রীয় লিগ নেতৃত্ব পাকিস্তান অঞ্চলে ক্ষমতা গ্রহণে মুসলমানদের প্রস্তুত থাকার জন্য যে নির্দেশ দেন তখনই এই আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এই অবস্থায় ১৬ মে (১৯৪৭ খ্রি.) সমালোচকদের উদ্দেশ্য করে আবুল হাশেম একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন:

প্রশ্ন করা হচ্ছে আমাকে কে এইসব প্রস্তাব নিয়ে কথা বলার অধিকার দিয়েছে। আমি তাঁদের বলি, কোনো ভালো কাজ করার জন্য অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। আমার বক্তব্য হিন্দু-মুসলমানদের উদ্দেশ্য করেই রেখেছি, বিশেষ কারও পক্ষ থেকে নয়। আমার প্রস্তাব ছিল, হিন্দু ও মুসলমান উভয়েই ৫০ : ৫০ হারে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুযোগসুবিধা ভোগ করুক। এই মন্তব্যে সমালোচকেরা ক্ষুব্ধ হন। কিন্তু তাঁরা ভুলে যান, বর্তমানে ৫০ : ৫০ হারের নীতিই চালু আছে। প্রথমে মুসলিম লিগ মন্ত্রীসভার আমলে ফজলুল হকের নেতৃত্বে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে চুক্তির ফলেই এই নীতির প্রচলন। অবশ্য অবাধ যুক্ত নির্বাচন পদ্ধতির প্রচলন হলে আইনসভার বা মন্ত্রীসভার আসনের ক্ষেত্রে ৫০ : ৫০ অথবা ৬০ : ৪০ হার প্রয়োগ করার কোনোই প্রয়োজন হবে না। ৫০ : ৫০ হারের কথা চাকরিতে সুযোগের কথা ভেবেই বলা হয়েছে।৮৮

আবুল হাশেম বলেন, কোনো কোনো সমালোচকেরা বলেন, যদি সর্বজনীন ভোটাধিকার ও যুক্ত নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে আইনসভার নির্বাচন হয়, তা হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ক্ষতি হবে। প্রকৃতপক্ষে কেউ যদি এই ব্যবস্থা অনুযায়ী অসুবিধা ভোগ করেন, তাঁরা হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান এবং পূর্ব ও উত্তরবঙ্গের হিন্দু। কোনো কোনো হিন্দু ও মুসলিম নেতা যদিও মনে করেন যুক্ত নির্বাচনপ্রথা হল আদর্শ ব্যবস্থা, তবুও তাঁদের আশঙ্কা হয় এই ব্যবস্থায় এক অংশ অন্য অংশের দ্বারা পীড়িত হবে। যদি এই আশঙ্কা সত্য হয় তা হলে অন্য ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা উচিত যার ফলে আইনসভায় আসন আনুপাতিক হার অনুযায়ী সংরক্ষিত থাকবে, সাম্প্রদায়িক তিক্ততা দূর হবে, দেশদ্রোহীদের নির্বাচনের কোনোই সুযোগ থাকবে না এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রোগ্রাম ভিত্তি করে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করবে।৮৯

আবুল হাশেম বলেন :

আমি উপলব্ধি করতে পারি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশে বিদেশি পুঁজির কী অসুবিধা হবে। আর আমি বিদেশি পুঁজিপতিদের ক্ষমতা সম্পর্কেও খুবই সচেতন। যে-কোনোভাবেই হোক তারা বাংলাদেশকে বিভক্ত ও দুর্বল করতে চেষ্টা করবে। এই অবস্থায় মুসলিম লিগের আলোচনা পরিচালনা কমিটিকে (Negotiation Committee) আমি অনুরোধ করব তাঁরা যেন হিন্দুদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেন। যদি মুসলমান, ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য অধিবাসীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ স্বাধীন মিশর দেশ পাকিস্তান হতে পারে, যদি ঐক্যবদ্ধ ইরান পাকিস্তান হতে পারে, তা হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের নিয়ে সার্বভৌম বাংলাদেশ কেন পাকিস্তানবিরোধী হবে? আমি জানি না, বিভক্ত ও পঙ্গু বাংলায় কী ধরনের পাকিস্তান হবে।৯০

বলা বাহুল্য, আবুল হাশেমের এই আবেদনের প্রতি মুসলিম লিগের প্রাদেশিক নেতৃত্ব কোনোই গুরুত্ব আরোপ করেনি।

.

৭২. Statement by Khwaja Nazimuddin, in Statesman, Wednesday, 23 April, 1947, p. 3.

খাজা নাজিমুদ্দিন বলেন : It is my considered opinion that an independent sovereign Bengal is in the best interests of its people, whether Muslims or non-Muslims, and I am equally certain that partition of the province is fatal to the interests of Bengalees as such I have always maintained that there is no limit to the progress and development of this province and its people if they are in a position to manage their own affairs. Bengal has always received step-motherly treatment from the Centre and the rest of the provinces. Whenever I talk to my Hindu friends their one demand is : let Bengal settle its own affairs. The logical conclusion of this demand is recognition of sovereign status for Bengal. Then and then only can Bengalees settle their own affiars. (Ibid). অবশ্য নাজিমুদ্দিনের চিন্তাধারার সঙ্গে সোহরাওয়ার্দির চিন্তাধারার পার্থক্য ছিল। নাজিমুদ্দিনের ধারণা ছিল, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ কার্যত পাকিস্তানই হবে। অবশ্য এই ধরনের উক্তি তিনি আর কখনো করেননি। কারণ জিন্না এই ধরনের পরিকল্পনার বিরোধী ছিলেন। আর লিয়াকত আলি ও নাজিমুদ্দিন ছিলেন জিন্নার সহযোগী। সুতরাং নাজিমুদ্দিনের এই উক্তিকে একটি বিক্ষিপ্ত উক্তি বলা যায়। সোহরাওয়ার্দির সমর্থকেরা অনেকে বলেন, জিন্না ও লিয়াকত আলি সোহরাওয়ার্দির স্বাধীন বঙ্গভূমি গঠনের পরিকল্পনাকে আশীর্বাদ করেন। কিন্তু জিন্নার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ইস্পাহানি তাঁর গ্রন্থে পরিষ্কার করেই বলেন, জিন্না ও লিয়াকত আলি কখনোই সোহরাওয়ার্দির প্রস্তাবকে সমর্থন করেননি। সোহরাওয়ার্দি জিন্নার অনুমতিও নেননি। ইস্পাহানি একথাও লেখেন, সারা ভারত লিগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা যখন এই প্রস্তাবের সমালোচনা করেন, তখন সোহরাওয়ার্দি একথা কখনোই বলেননি যে, তাঁর সঙ্গে শরৎ বসুর যে আলোচনা হচ্ছে তা জিন্নার অনুমতি নিয়েই হচ্ছে। (vide M A H Ispahani, Quaid-E-Azam Jinnah as I knew him, Karachi, 1966).

৭৩. Statement by Nurul Amin, in Statesman, Monday, 12 May, 1947, p. 5; 13 May, 1947, p. 1, দৈনিক আজাদ, মে, ১৯৪৭।

১৩ মে (১৯৪৭ খ্রি.) বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগের কার্যকরী সম্পাদক মোহম্মদ হবিবুল্লাহ বাহার, এমএলএ একটি বিবৃতিতে বলেন, হিন্দু-মুসলিম সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চালাবার জন্য প্রাদেশিক মুসলিম লিগ ওয়ার্কিং কমিটি মওলানা আকরম খাঁ-র সভাপতিত্বে এবং সোহরাওয়ার্দির উপস্থিতিতে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিই বাংলার ভবিষ্যৎ গঠনতন্ত্র নিয়ে হিন্দু নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। এই কমিটির উদ্দেশ্য হল কোনো ব্যক্তিকেই, তিনি যত উচ্চপদেই থাকুন-না কেন, এই জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে না দেওয়া। বাহার বলেন, তিনি ২৫ মে লিগ ওয়ার্কিং কমিটির সভা কলকাতাতে এবং ৩১ মে লিগ কাউন্সিলের সভা ফরিদপুরে ডেকেছেন। এই সভাগুলোতে হিন্দু-মুসলিম সমস্যার বিষয় আলোচিত হবে। (vide Statement by Mohamed Habibullah Bahar, in Statesman, 14 May, 1947 p. 5.) এই তথ্য থেকে বোঝা যায়, প্রাদেশিক লিগ নেতৃত্ব সোহরাওয়ার্দিকে এই বিষয় নিয়ে হিন্দু নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দিতে চাননি। প্রাদেশিক নেতৃত্ব নিজেদের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা বজায় রাখেন।

৭৪. Statesman. 14 May, 1947, p. 5 ; 15 May; 1947, p. 6; 17 May, 1947, p. 1.

৭৫. Statement by M A Jinnah, in Statesman, 1 May, 1947; দৈনিক আজাদ ১-৩ মে, ১৯৪৭। See Appendix C.

৭৬. Statement by Nurul Amin. In Statesman, 12 May, 1947 p. 5; দৈনিক আজাদ ১২-১৩ মে, ১৯৪৭।

৭৭. Statement by Moulana Mohamed Akram Khan, in Star of India, Monday, 5 May, 1947, p. 2;

৭৮. Ibid ; দৈনিক আজাদ ৫-৬ মে, ১৯৪৭। See Appendix D.

মওলানা মোহম্মদ আকরম খাঁ জাতীয়তাবাদী নেতা থেকে কীভাবে মুসলিম লিগ রাজনীতিতে প্রবেশ করেন, সে-বিষয়ে এক সংক্ষিপ্ত ও তথ্যবহুল আলোচনা ডা. আবুল কাসেম লিখিত বাংলার প্রতিভা (কলকাতা, বৈশাখ ১৩৪৭) নামক পুস্তিকায় পাওয়া যায় (দ্র. পৃষ্ঠা. ৯—২৪)। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে (১২৮৩ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ মাসে) আকরাম খাঁ পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার হাকিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন (ওই, পৃষ্ঠা. ৯)

৭৯. Statement by Moulana Akram Khan, in Statesman, Thursday 15 May 1947, p. 6.

৮০. Ibid.

৮১. Ibid.

৮২. Ibid.

৮৩. Ibid; দৈনিক আজাদ ১৫-১৬ মে, ১৯৪৭। See Appendix E.

৮৪. Statement by J N Mandal, in Statesman 23 April 1947, p. 3. See Appendix F. এই সময়ে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল বাংলার বিভিন্ন জেলাতে সভা করে তপশিলি সম্প্রদায়কে কংগ্রেস, হিন্দু মহাসভার ও বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে সংগঠিত করতে চেষ্টা করেন। এপ্রিল-মে মাসে তিনি বিভিন্ন জেলা সফর করেন।

৮৫. Statement by Moulana Akram Khan, in Statesman, Tuesday, 20 May, 1947, p. 8.

৮৬. Ibid.

৮৭. Ibid. হবিবুল্লাহ বাহার বলেন :

Mr Jinnah told us in unequivocal terms that he did not authorize anyone to make any commitment on behalf of the Muslim League. (Ibid).

৮৮. Statement by Abul Hashim, in Statesman, Saturday, 17 May, 1947, p. 8.

৮৯. Ibid.

৯০. Ibid. See Appendix G.

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *