তিন
কোর্ট রূম থেকে পাহাড়ী লোকরা বেরিয়ে যাওয়ার পর জিমের বন্ধুরা এগিয়ে এসে ওকে ঘিরে দাঁড়াল। টি এল র্যাঞ্চের টেডি ল্যানি সবার আগে পৌঁছুল ওর কাছে।
‘জীবনে কখনও কাউকে এমন পাগলের মত কাণ্ড করতে দেখিনি,’ মন্তব্য করল সে। ‘তোমার কি বেঁচে থাকার কোন ইচ্ছে নেই?’
‘তা আছে।’ হাসল জিম কার্সন। ‘আমি শুধু ওদের দেখিয়েছি যে ওদের পরিকল্পনায় মস্ত গলদ আছে। নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি হলে ঝুঁকি নেয় না স্টিচের মত লোকরা।’
যে ছেলেটা, জনি উডফোর্ড, আততায়ীর হাতে মারা গেছে, তার ভাই বার্ট উডফোর্ড বলল, ‘জিম যা করেছে তা আমার দৃষ্টিতে পুরোদস্তুর লড়াই ঠেকানো।’
মাথা নাড়ল জিম। ‘তা নয়। বলতে পারো স্টিচ মরতে চায়নি।’
‘লেভি এখনও আমাদের হাতে আছে,’ বলল ল্যানি। ‘আমার মনে হয় স্টিচ ওকে আবার মুক্ত করার চেষ্টা করবে। তার আগেই লেভিকে আমাদের ঝুলিয়ে দেয়া দরকার।’
যারা এখনই বন্দির বিচারের রায় কার্যকর করতে চাইছে তাদের উদ্দেশে হাত নেড়ে সতর্ক করল শেরিফ কস্টিগ্যান। পশ্চিমের এসব মানুষের মেজাজ মর্জি ভাল করে জানে সে। রাগী লোক এরা। চট করে সিদ্ধান্ত নেয়। একবার মনস্থির করে ফেললে পিছানো এদের স্বভাবে নেই।
‘যা করার আইনসঙ্গত ভাবে করতে হবে,’ কড়া গলায় বলল সে। ‘বাড়াবাড়ি করলে কেউ পার পাবে না।’ বন্দির দিকে ফিরল। ‘লেভি ফক্স, আমার সঙ্গে জেলে ফিরে যেতে হবে তোমাকে। কোর্ট তার সিদ্ধান্ত নেয়া পর্যন্ত ওখানেই থাকবে তুমি।’
ল্যানির দিকে ফিরল জিম। আরেক ছোট র্যাঞ্চার লুথার কোলের পাশে দাঁড়িয়ে আছে সে।
‘টেডি, আমি লিণ্ডস্টর্মকে খুঁজছি। শহরে আসার পথে ওর খোঁজ পেলাম না। হয়তো কোথাও মরে পড়ে আছে ও। আহতও হয়ে থাকতে পারে। একটা দল গঠন করে সমতল থেকে নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত ওকে খুঁজতে সাহায্য করবে তোমরা? আমি নিজেও পাহাড়ে যাচ্ছি। সবার যাওয়া উচিত হবে না। লড়াই বেধে যেতে পারে।’
‘অবশ্যই!’ ঘন ঘন মাথা ঝাঁকাল টেডি, তারপর জিজ্ঞেস করল, তুমি কি মনে করছ ওকেও মেরে ফেলা হয়েছে?’
‘জানি না। জানতে হবে। ফিরে এসে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব।’ চুপ করে গেল জিম, তারপর একটা চিন্তা মাথায় আসায় বলল, ‘আমি যদি না ফিরি তা হলেও ওকে খোঁজা বাদ দিয়ো না তোমরা।’
জিমের সঙ্গে কয়েক পা এগোল টেডি, নিচু স্বরে বলল, ‘জিম, বুঝতে পারছি তোমার মাথায় কী চলছে। আমরাও বুড়ো ষাঁড় লিণ্ডস্টর্মকে পছন্দ করি, কিন্তু একটা কথা; যদি দেখো যে ওর কিছু হয়ে গেছে, তা হলে মাথা গরম করে একা একা কিছু করতে যেয়ো না। পাহাড়ের ওরা চাইবে তুমি রাগে দিশে হারিয়ে বিপদের মুখোমুখি হও। ওরা তোমাকে কোণঠাসা করতে চাইবে। আমাদের সবাইকে ওরা যতটা ভয় পায়, তার চেয়ে বেশি ভয় পায় ওরা একা তোমাকে। লিণ্ডস্টর্মের খারাপ কিছু ঘটেছে জানলে অপেক্ষা কোরো। আমরা সবাই মিলে করব যা করার। তাতে বিপদের ঝুঁকি কমবে।’
গুঞ্জন করছে বিচার দেখতে আসা জনতা। সেদিকে তাকিয়ে জিম আনমনে বলল, ‘সাবধানে থাকার চেষ্টা করব আমি। ঘরের চারপাশে নজর বুলাল। ‘ভাল কথা, লিণ্ডাকে দেখেছ? ওর এখানে আসার কথা ছিল।’
‘ছিল একটু আগেও। কিছুক্ষণ আগে মিসেস বেনসনের সঙ্গে বেরিয়ে গেল। বোধহয় ফসেটের ওখানে গেছে।’
কোর্ট রূম থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে এল জিম, রাস্তা পার হয়ে ফসেটের দোকানের দিকে পা বাড়াল। স্টোরের সামনে বোর্ডওয়াকে উঠে জানালা দিয়ে দেখল লিণ্ডা আর ড্রেসমেকার মিসেস বেনসন একটা কাপড়ের দিকে গভীর মনোযোগে তাকিয়ে আছে। এবার প্রকাণ্ড শরীরের এক লোকের দিকে মনোযোগ দিল তারা। তার পরনে স্ট্রিপ সুট আর হাতে বিরাট একটা সাদা হ্যাট। মেয়েরা জিমকে এগোতে দেখেছে। তাদের দৃষ্টি অনুসরণ করে ঘুরে তাকাল প্রকাণ্ডদেহী। মহিলাদের কাছ থেকে বিদায় নিল সে, দোকানের বাইরে পা বাড়াল জিমের সঙ্গে একা কথা বলার জন্যে।
বুঝতে জিমের দেরি হলো না যে বার্ড কেলটন ওর সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। ওর সামনে থামল কেলটন। পরস্পরের দিকে তাকাল ওরা। দু’জনই সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দেখছে দু’জনকে।
কেলটনের চেহারা দেখে মনের ভেতর কী চলছে তা বোঝার কোন উপায় নেই। প্রকাণ্ডদেহী লোক সে, সুদর্শন সুপুরুষ। মুখে লেগে আছে চওড়া হাসি। পরনের পোশাক অত্যন্ত দামি, রুচিশীল। আচরণে সবসময় সহজ একটা ভঙ্গি ধরে রাখে সে। বিচলিত হওয়া যেন ধাতেই নেই। সবসময় পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার দুর্লভ একটা গুণ আছে, সেটা বুঝতে অভিজ্ঞ চোখের দেরি হয় না। হাসিটা এমন যে বোঝা যায় মানসিক ভাবে অত্যন্ত প্রশান্তির মাঝে আছে সে।
জিমের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি কিছুই এড়াচ্ছে না। কেলটন এমন এক লোক যার সম্বন্ধে কেউ তেমন কিছু জানে না। অতীত গোপন রেখেছে সে। নিজেকেও আড়াল করে রাখে অন্যের এবং নিজের কাছ থেকে। জটিল চরিত্রের লোক। হয়তো অনুভব করে না যে আসলে সে পুরানো আমলের জলদস্যুদের মতই বেপরোয়া, উদ্ধত এবং দুর্বিনীত একজন সত্যিকারের স্বয়ংসম্পূর্ণ পুরুষমানুষ। প্রচণ্ড তার আকর্ষণ। পাহাড়ের মত তার ব্যক্তিত্ব। চিতার মত ক্ষিপ্র, সিংহের মত সাহসী, গণ্ডারের মত গোঁয়ার, শেয়ালের মত চতুর এবং সাপের মত শীতল। ক্ষমতাশালী হবার সমস্ত গুণাবলী তার মধ্যে বর্তমান।
‘তোমার সঙ্গে কথা ছিল, কার্সন,’ ভরাট মিষ্টি গলায় বলল কেলটন।
‘বলো। আমিও তোমাকে খুঁজছিলাম।’
কথা গুছিয়ে নেয়ার ফাঁকে কার্সনকে দেখছে কেলটন। একটা সিগারেট রোল করে ধরাল জিম, ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে খেয়াল করল কেলটনের চোখের শীতল দৃষ্টিতে অবিশ্বাস আর অবহেলা। হাসিটা প্রথম দর্শনে আন্তরিক মনে হলেও আসলে তা নয়, ওটা মনোভাব লুকানোর কৌশল মাত্র।
নিজের কথা বলার আগে জিমকে বাজিয়ে দেখবে বলে মনস্থির করল কেলটন। ‘আমাকে খুঁজছিলে বললে। কেন খুঁজছিলে?’
‘খুঁজছিলাম আমার ফোরম্যান লিওস্টর্মের কোন খবর তুমি জানো কিনা সেটা জিজ্ঞেস করার জন্যে।’
‘তোমার ফোরম্যান? ওর কথা আমি জানব কী করে!’
‘আমার ধারণা তুমি কিছু জানতেও পারো।’
‘এমন ধারণার কারণ?’
‘কারণ ও ছিল তোমার লোকের বিরুদ্ধে দু’নম্বর সাক্ষী। প্রথমজনকে খুন করা হয়েছে। গাসকেও হয়তো মেরে ফেলা হয়েছে। তুমি কিছু জানো নাকি?’
হাসিটা মুছে গেল কেলটনের মুখ থেকে। মাত্র এক মুহূর্ত, তারপর আবার হাসি ফিরে এল। চোখ সরু হলো সামান্য। বলল, ‘আপাতত অপমানটা আমি ভুলে গেলাম, কার্সন। আপাতত।’
‘আমার প্রশ্নের জবাব দাওনি তুমি।’
‘দেয়ার ইচ্ছে নেই। আপাতত। কিছু কথা আছে তোমার সঙ্গে।’
‘কী বলবে বলো।’
জিম কার্সনকে জরিপ করার ফাঁকে একটা সিগারের গোড়া কেটে ধরাল কেলটন। ধোঁয়া ছেড়ে বলল, ‘আমি মনে করি না আমার ব্যাপারে অন্য কেউ নাক গলাবে আর আমি চুপ করে থাকব। কাউকে কিছু ব্যাখ্যা করাও আমার অভ্যেস নয়। কিন্তু আজকে আমি তোমাকে আমার অবস্থান পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করব বলে ঠিক করেছি। ব্যবসা সম্বন্ধে কিছু কথা বলব তোমাকে।’
শীতল দৃষ্টি কেলটনের চোখে। বোঝা যায় প্রচণ্ড মানসিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাগ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে সে। দেখলে তাকে যেমন সহজ সরল প্রাণ-খোলা লোক মনে হয়, আসলে সে তা নয়।
‘আমি বোকা লোক নই, কার্সন। এটা সত্যি যে আমি পাহাড়ে বাস করি। প্রয়োজনে পাহাড়ী লোকদের চাকরিতেও নিই। জানি ওরা কেমন ধারার মানুষ। ব্যবসা পরিচালনার জন্যে ওদের আমার দরকার। কিন্তু ওরা নিজেদের দায়িত্বে যা করে তার দায় দায়িত্ব আমার নয়। যা বলতে চাইছি তার সারসংক্ষেপ হচ্ছে, আমিও তোমাদের মতই সৎ একজন র্যাঞ্চার। জানি তোমরা গরু হারাচ্ছ। আমিও হারাচ্ছি। জানি যে পাহাড়ী লোকদের প্রতি অবিশ্বাস আছে তোমাদের। কিন্তু আমি পাহাড়ে র্যাঞ্চ করি মানেই এটা ভেবে নেয়া ঠিক হবে না যে আমিও ওদের মতই চোর-বাটপার।’ ভ্রূ নাচাল কেলটন। ‘কি, ঠিক হবে?’
‘তোমার বক্তব্য সত্যি হলে বলতে হয় তোমাকে চোর ভাবা ঠিক হবে না।’
‘আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ সত্য। আমি তোমাদের সঙ্গে বিরোধে যেতে চাই না, কিন্তু তোমরা আমাকে বাধ্য করছ।’
‘কীভাবে?’
‘একসময় লেভি আমার র্যাঞ্চের হয়ে কাজ করত। সে রাসলিং করে ধরা পড়ায় তোমরা ধরে নিচ্ছ যে আমিও একজন রাসলার। ধরে নিচ্ছ আমিই হোতা। তোমাদের ধারণা মোটেই ঠিক নয়। লেভিকে আমি অনেক আগেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছি। তোমাদের হাতে এমন কোন প্রমাণ আছে যে তোমাদের একটা গরুও আমি সরিয়েছি?’
‘তেমন প্রমাণ থাকলে দেরি না করে তোমাকে গাছের ডাল থেকে ঝুলিয়ে দিতাম।’
‘ঠিক। তা হলে প্রমাণ না থাকার পরও আমার সঙ্গে রূঢ় আচরণ কেন করা হবে? আমাদের সবার টিকে থাকার জন্যে এই এলাকা যথেষ্ট বড়।’
‘আর কিছু বলবে তুমি, না এ-ই বলার ছিল?’
‘না, আর কিছু আমার বলার নেই।’
‘বলার জন্যে আমাকে বেছে নেয়ার কারণটা জানতে পারি?’
‘কারণ উপত্যকার সবাই মনে করছে রাসলিঙের সঙ্গে আমি জড়িত। আর সবার মনোভাব গঠনে বড় ভূমিকা রাখছ তুমি।’
‘তুমি কি বলতে চাইছ আমি তোমাকে চোর বলে অভিযুক্ত করছি?’
‘আমি যা বলতে চাইছি তা বলেছি। প্রভাবিত করছ তুমি। সাধারণের মনোভাব আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে। সেজন্যে কাউকে দায়ী করতে হলে তোমাকে করব আমি।’
‘আচ্ছা! তো এব্যাপারে কী করবে বলে ভাবছ তুমি?’
‘আমার ধারণা যতটা সহ্য করা সম্ভব তার চেয়ে বেশিই সহ্য করেছি আমি এরপর তোমাকে মুখোমুখি লড়তে বলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না আমার। তবে এখন আমি এসেছি ব্যবসার কাজে। কারও সঙ্গে বিরোধে যাবার কোন ইচ্ছে আমার আপাতত নেই। সেজন্যেই একজন ভদ্রলোক হিসেবে তোমাকে শেষ বারের মত বলছি-মনে রেখো এ-ই শেষবার। সময় থাকতে আমার বিরুদ্ধে লোক ক্ষ্যাপানো বন্ধ করো, নইলে তোমাকে চুপ করানো ছাড়া আমার সামনে আর কোন উপায় থাকবে না। আমার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে এরপর থেকে সরাসরি তোমাকে দায়ী করব আমি।’
সাবধানে শব্দ গোছাল জিম, তারপর মাপা স্বরে বলল, ‘আমিও তোমাকে শেষবারের মত বলছি, মনে রেখো, এই শেষ বার; আমার অবস্থান পরিষ্কার করে দিচ্ছি। তোমাকে চোর বলে অভিযুক্ত করিনি আমি। জানি না গরু চুরির সঙ্গে তুমি জড়িত কিনা। না জানা পর্যন্ত কিছুই আমি বলছি না। তবে এটা সত্যি যে উপত্যকায় বাছুর হারাচ্ছি আমরা। জেনে রাখো যে এসবের পেছনে কে আছে সেটা আমরা অবশ্যই বের করব। আর যখন জানব যে কে দায়ী, তখন সে যে-ই হোক, তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করব না। প্রয়োজনে পাহাড় থেকে নিয়ে টেক্সাসের সীমান্ত পর্যন্ত প্রতিটা ইঞ্চি খোঁজা হবে। গরুচোরদের ধরা পড়তেই হবে।
‘আমার আরও একটা কথা বলার আছে,’ বলল গম্ভীর কেলটন। ‘পাহাড়ে প্রচুর জমি আমি লীয নিয়েছি। জমিগুলো আমি আমার বলে মনে করি। ওখানে কেউ বিনা অনুমতিতে গেলে তাকে পস্তাতে হবে। সবাইকে জানিয়ে দিয়ো, ভুলেও যাতে কেউ আমার জমিতে না যায়। কাউকে যদি ধরতে পারি তা হলে গুলি করে মারতে দ্বিধা করব না। আমার লোকদের ওপর কাউকে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ থাকবে।’
কঠোর শোনাল জিম কার্সনের কণ্ঠ। ‘প্রয়োজনে যেকোন জমিতে খোঁজা হবে। সেটাই এই এলাকার সাধারণ নিয়ম।’
‘ওই নিয়ম আমার জমিতে খাটবে না। শেষবারের মত বলছি, আমার জমিতে কাউকে দেখা গেলে তাকে আমি অনাহুত এবং শত্রু বলে গণ্য করব। গুলি খেয়ে মরার ইচ্ছে না থাকলে কেউ যেন আমার এলাকায় নাক না গলায়।’
রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কষ্ট হচ্ছে কেলটনের। পুরোপুরি সফল ভাবে আর ওপরের শান্ত ভাবটা ধরে রাখতে পারছে না। জিম কার্সনের কথায় মাত্রাছাড়া আক্রোশ অনুভব করছে বুকের ভেতর।
ইচ্ছে করেই লোকটাকে আরও খেপিয়ে তুলল জিম। শান্ত স্বরে বলল, ‘লুকানোর কিছু থাকলে বরং এখন থেকেই লুকানোর চেষ্টা শুরু করে দাও তুমি। দরকার হলে যেকোন জায়গায় যাব আমরা। গাস লিওস্টর্মকে আমি খুঁজছি, ওর যদি কিছু হয়ে গিয়ে থাকে তা হলে দায়ী লোকটাকে প্রয়োজনে আমি নরক পর্যন্ত ধাওয়া করে বের করব। এখন থেকেই সে-লোকের সাবধান হওয়া প্রয়োজন।’
কেলটনের চোখ থেকে রাগের আগুন ঝরছে। দাঁতে দাঁত পিষল। ঠোঁটে ফুটিয়ে তুলল বাঁকা হাসি। বলল, ‘আমি ধরে নিচ্ছি কথাগুলো বিশেষ কোন উদ্দেশ্য নিয়ে বলোনি তুমি। জেনে রাখো, কোন ধরনের হুমকি দিয়ে লাভ হবে না। …আর, একটা কথা মাথায় গেঁথে নাও, আমার জমিতে প্রবেশ করবে না তোমরা। যদি করো তা হলে সেটা আমি যুদ্ধ ঘোষণা বলে ধরে নেব। সেক্ষেত্রে আমরা র্যাঞ্চহাউস পুড়িয়ে উৎখাত করব তোমাদের।’.
‘আমরা বলতে কাদের কথা বলছ?’ শান্ত স্বরে মৃদু গলায় জিজ্ঞেস করল জিম। ‘পাহাড়ের আউট-লদের?’
‘তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছ, জিম কার্সন।’
‘যদি করিই তো কী করবে তুমি?’
দীর্ঘ একটা মুহূর্ত জিমের চোখে চেয়ে থাকল কেলটন, তারপর সিগারটা নর্দমায় ফেলে দিয়ে ঘুরে দাঁড়াল, গটগট করে হেঁটে চলে গেল হোটেলের দিকে। এখনই মুখোমুখি হওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই তার। আর পরিকল্পনা না করে কিছু করে না সে কখনও।