এক
কালো ধোঁয়া চোখে পড়ার অনেক আগেই ট্রেন আসার শব্দ শুনতে পেল মার্শাল জো মিলার্ড। পাহাড়গুলোয় প্রতিধ্বনিত হয়ে কয়েকগুণ জোরাল হয়ে উঠেছে আওয়াজ, দূর-দূরান্তে ধেয়ে যাচ্ছে। ট্র্যাকের কাছেই একটা রিজের ওপর চরছে কয়েকটা অ্যান্টিলোপ। কয়েকমুহূর্ত কান খাড়া করে যান্ত্রিক গর্জন শুনল ওগুলো, তারপর কয়েক লাফ দিয়ে রিজ পেরিয়ে চলে গেল চোখের আড়ালে।
রেল ট্র্যাকের ধারে একটা উঁচু মত জায়গায় ঘোড়া থামাল জো মিলার্ড। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছে, ট্রেন চলে যাবার পর ট্র্যাক পেরবে।
লম্বা-চওড়া দেহ মার্শালের। চর্বিহীন। পেশি কিলবিল করছে সারা শরীরে। গায়ের চামড়া তামাটে, বছরের পর বছর রোদে ঘোরার ফল। একটা গরম ট্রাউজার পরেছে সে, শেষ প্রান্ত বুটজুতোর মধ্যে গুঁজে নিয়েছে। গায়ের ছোট হয়ে যাওয়া বেঁটে জ্যাকেটের সবগুলো বোতাম এঁটেছে অক্টোবরের হিমেল হাওয়ার হাত থেকে বাঁচার আশায়। বের করার সময় জ্যাকেটের কোনায় যাতে বেধে না যায় সেজন্য উরুতে নিচু করে সিক্সগান ঝুলিয়েছে সে। হোলস্টার আর সিক্সগানের বাঁট, দুটোই বহু ব্যবহারে মসৃণ। স্ক্যাবার্ডে রাখা পুরনো কারবাইনটা দেখে মনে হয় জিনিসটা তার দাদার আমলের।
জো মিলার্ডের সবকিছুই বুনো পশ্চিমের কঠোর মানুষদের মত। টিকে থাকার জন্য প্রচণ্ড খেটে এবং লড়াই করে অভ্যস্ত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বুনো পশ্চিমের সেই মুক্ত দিনগুলো প্রায় অতীত হয়ে গেছে। পশ্চিমের বন্যতা হার মেনে গিয়েছে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব আর তথাকথিত সভ্যতার কাছে। এখন সমাজের চোখে মার্শাল জো মিলার্ডের মত মানুষরা ফেলে আসা অতীতের স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
একটা পাহাড়ী বাঁক ঘুরে এগিয়ে এল রেলগাড়ি। রোদ লেগে টেণ্ডারে লেখা সোনালী হরফগুলো ঝকমক করে উঠল, গ্র্যাণ্ড মাউন্টিন রেলওয়ে। এঞ্জিনিয়ার ট্র্যাকের পাশে নীরব আগন্তুককে দেখতে পেয়েছে। হুইসল বাজিয়ে শুভেচ্ছা জানাল সে। হাত তুলে প্রত্যুত্তর দিল মিলার্ড। রেল এঞ্জিন তাকে পেরিয়ে যাওয়ার পরও হাতটা নাড়তে থাকল বিরক্ত চেহারায়। কুচকুচে কালো ঘন ধোঁয়া সরাতে চাইছে মুখের কাছ থেকে।
আপনমনে বিড়বিড় করে বিরক্তি প্রকাশ করল জো মিলার্ড। ওর মনে পড়েছে অতীত দিনের স্মৃতি। তখনও এদিকে রেলগাড়ি চালু হয়নি, সতেজ বাতাসে ছিল মিষ্টি গন্ধ। তখনও যান্ত্রিক গর্জন আর শব্দ জট মানুষের কানের বারোটা বাজাত না, প্রাকৃতিক কলগুঞ্জনে নিজেকে মনে হত প্রকৃতিরই অংশ। এমনকি প্রথমদিকের রেলগাড়িগুলোও অত খারাপ ছিল না। ওগুলোতে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হত কাঠ, এখনকারগুলোর মত কয়লা নয়। কাঠের ধোঁয়ায় পাওয়া যেত প্রকৃতির গন্ধ।
চিন্তা ঝেড়ে ফেলে বিশাল কালো স্ট্যালিয়নের পেটে আলতো করে স্পার ছোঁয়াল মার্শাল, ঢাল বেয়ে নেমে রেল ট্র্যাক পেরল। ডানে ঘুরে এগোল ছোট একটা পাহাড়ের দিকে। অসংখ্য পাইন গাছ জন্মেছে ওখানে, ঢালের পেছনে কি আছে কিছু দেখা যায় না গাছগুলোর কারণে।
হঠাৎ সকালের নীরবতা ভেঙে দিল বিকট শব্দ। উপরে কোথাও গর্জে উঠেছে ভারী কোনও অস্ত্র। আপনমনে হাসল মিলার্ড, রাস ধরে ঘোড়া নিয়ন্ত্রণ করে ঢুকে পড়ল পাইনের জঙ্গলে। দু’মিনিট পর পৌঁছে গেল জঙ্গলের ওধারে ছোট একটা ফাঁকা জায়গায়। মজবুত একটা কাঠের কেবিন বানানো হয়েছে একধারে। কাছেই পড়ে আছে প্রাচীন একটা ভাঙা ওয়্যাগনের ধ্বংসাবশেষ। কেবিনের সামনে মাটিতে বেড রোল পেতে রাখা হয়েছে। পাশেই চুলো, বাতাস যাতে না লাগে সেজন্য চারদিকে পাথর দিয়ে ঘের দেয়া। ধোঁয়ায় কালো একটা কফিপট পাথরে ঠেকা দিয়ে আগুনের ওপর বসানো হয়েছে।
কেবিনের পেছনে কোথাও আবার হুঙ্কার ছাড়ল আগ্নেয়াস্ত্র। প্রচণ্ড শব্দে কানে তালা লেগে গেল মিলার্ডের। কানের ওপরের অংশ চুলকাল সে। নড়ে চড়ে বসল স্যাডলে। ভাব দেখে মনে হলো এখনই ডাক দিয়ে দুষ্টুমি করতে মানা করবে বাচ্চা কোনও ছেলেকে।
বেখাপ্পা সাদা গোঁফওয়ালা হালকাপাতলা এক লোক জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এল কেবিনের পেছন ঘুরে। আপন মনে মুখ খিস্তি করছে সে। অস্বাভাবিক লম্বা নলের একটা প্রাচীন বাফেলো গান তার হাতে। ভেলভেটের জ্যাকেট আর স্ট্রাইপের প্যাট পরেছে। বয়েসের ভারে কাপড়ের অণুপরমাণুর বাঁধন খসে যাওয়ার দশা। কানের ওপরে পুরানো একটা স্কার্ফ বেঁধেছে ঠাণ্ডা লাগার ভয়ে। কালো একটা ময়লা হ্যাট চাপিয়েছে মাথায়।
লিয়োনেলের পুরো নাম জানে না কেউ। বিভারের দল মরে সাফ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পাহাড়ে কাটিয়েছে সে। তারপর ফ্রন্টিয়ারের দুর্গগুলোতে শিকারের মাংস সরবরাহ করেছে। সভ্যতা যতই এগিয়ে এসেছে, ততই দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেছে লিয়োনেল। শেষ পর্যন্ত এসে আশ্রয় নিয়েছে লোকালয় থেকে বহুদূরের এই পাহাড়ে। নগরায়নকে ঘৃণা করে বলে লোকে লিয়োনেলকে পাগল ভাবে। সর্বক্ষণ রেগে আছে বুড়ো। অবশ্য মিলার্ড জানে বেশির ভাগটাই বুড়োর ভান। অটুট বন্ধুত্ব ওর লিয়োনেলের সঙ্গে। ওরা দু’জনেই আধুনিক সভ্যতার আগ্রাসী রূপকে অপছন্দ করে বলেই হয়তো পরস্পরকে বুঝতে পারে!
মিলার্ডকে দেখেইনি এমন ভঙ্গিতে পাশ কাটাল লিয়োনেল, রাগে গজগজ করছে, ‘লাল মাথা মুরগি চোর! ওর মাথা উড়িয়ে দেব আমি, হ্যাঁ, উড়িয়েই দেব। ওই লাল শয়তান শেয়াল – ওহ্, শেষ মুরগিটাও নিয়ে গেছে!’
এক নাগাড়ে খিস্তি খেউড় করে চলেছে লিয়োনেল, কিন্তু হাত থেমে নেই। বাফেলো গান রিলোড করে কেবিনের দেয়ালে ঠেস দিয়ে রাখল সে। আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে মিলার্ডের দিকে তাকাল প্রথমবারের মত, তারপর খেঁকিয়ে উঠল, ‘কী হলো, সারাদিন কি বোকার মত কাঠ হয়ে বসে থাকবে না কফির জন্য নামবে!’
টাকরায় শব্দ তুলে ঘোড়া থেকে নামল জো মিলার্ড। চুলোর সামনে গিয়ে বসে পড়ে দু’হাত মেলে দিল আগুনের ওপর। পট নামিয়ে তোবড়ানো দুটো টিনের মগে কফি ঢালল লিয়োনেল।
‘বেশ শীত, না?’ মন্তব্য করল মিলার্ড।
‘শুধু শীত! আমার লেজ থাকলে কাল রাতে ঠাণ্ডায় খসে যেত, জমে গিয়েছিলাম আরেকটু হলে।’ বেডরোলের তলা হাতড়ে বাদামী রঙা একটা জগ বের করল লিয়োনেল, কর্ক খুলে উদার হাতে হুইস্কি ঢালল কফির মগ দুটোয়।
কালচে তরলে ভরা মগ হাতে নিল মিলার্ড, মাথা কাত করে কেবিন দেখাল। ‘ভেতরে ঘুমালেই হয়!’ বুড়োর চেহারা বিকৃত হয়ে উঠতে দেখে হাসল। জানে বুড়ো কী বলবে। লিয়োনেল কখনোই কেবিনের ভেতরে ঘুমায় না। খাঁচায় ঢুকলে নাকি দম বন্ধ হয়ে আসে, চাঁদের আলো দেখা যায় না। এত খেটে মজবুত কেবিন বানিয়েছে থাকার জন্য নয়, দেখতে যে সে কেবিন বানাতে পারে কি না।
‘ফালতু কথা রেখে কফি খাও,’ উপদেশ দিল লিয়োনেল।
মুচকি হাসল মিলার্ড, চুমুক দিল কফিতে। পরমুহূর্তেই চেহারা কুঁচকে গেল তার, চোখ কপালে তুলে কাশতে কাশতে দম নেয়ার চেষ্টা করল প্রাণপণে। কৌতূহলী দৃষ্টিতে ওর বেগুনি হয়ে যাওয়া চেহারা দেখল লিয়োনেল, তারপর মগে চুমুক দিয়ে অনেকখানি কফি গিলে ফেলল নির্বিকার চেহারায়।
শ্বাস ফিরে পেয়ে মিলার্ড বলল, ‘হয় তুমি কফি বানানো ভুলে গেছ, না হয়. হুইস্কি বেশি দিয়ে ফেলেছ! কিংবা এমনও হতে পারে যে এবার তুমি ঠিক মত হুইস্কি বানাতে পারোনি।’
‘তোমার ধারণা ভুল। আসলে আমার ক্রীকের ওপর দিকে বোকা কয়েকটা মাইনার কাজ করছে, সমস্ত বর্জ্য ফেলছে পানিতে। কিছুদিন পর সভ্য মানুষগুলো দুনিয়ার পানি এত ময়লা করে ছাড়বে যে গরুও মুখে নিতে চাইবে না।’
লিয়োনেলকে নির্দ্বিধায় কফির মগে চুমুক দিতে দেখে চেহারা কুঁচকে উঠল মিলার্ডের। জ্যাকেটের হাতায় ঠোঁট মুছে আরামের ঢেকুর তুলল বুড়ো, তারপর জানতে চাইল, ‘হঠাৎ কোন্ কাজে এদিকে এলে, জো?’
‘এমনি,’ শ্রাগ করল মার্শাল। ‘নিয়ম ধরে টহল দিচ্ছে আমার সুইটি।’
নাম ডাকা হলো কেন বোঝার জন্য কান খাড়া করে মালিকের দিকে তাকাল কালো স্ট্যালিয়ন, তারপর মাথা নিচু করে ঘাসে মুখ ডোবাল।
পকেট থেকে সস্তা টোবাকো বের করে অতিথির দিকে বাড়িয়ে ধরল লিয়োনেল। মিলার্ড অল্প একটু নেয়ার পর নিজে বিশাল এক চাকা তামাক মুখে পুরল। বুড়োর চোপসানো গালের একপাশ ফুলে ঢোল হয়ে গেল, তামাকের চাপে ফেটে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
‘আমি ম্ম্ম্ম্…দেখেছি…,’ ভেজা চিউইঙ তামাকে জড়িয়ে যাওয়ায় লিয়োনেলের বাকি কথা বোঝা গেল না। তামাকের ঢেলা অন্য গালে চালান দিয়ে আবার বলার চেষ্টা করল সে, ‘এখানে……
‘আহ্, কী জ্বালাতন!’ অধৈর্য হয়ে বলল মার্শাল মিলার্ড। ‘মুখ থেকে তামাক ফেলে বলো কী বলবে।’
কয়েক চিবুনি দিয়ে একগাদা খয়েরী থুতু আগুনে ফেলল বুড়ো। ‘বলছিলাম এখানে বেশ কয়েকজন মানুষ দেখেছি। গতকাল ভোরে সমতলে ক্যাম্প করেছিল একদল লোক।’
‘কারা ওরা?’
‘জানি না। ওদের কাউকে আগে কখনও দেখিনি।’
‘দেখে কী মনে হলো?’
‘ছোটলোক।’
‘মানে?’ বিরক্তি চেপে জিজ্ঞেস করল জো। ‘কী বলছ পরিষ্কার করে বলো, বুঝতে পারছি না।’
‘বুঝলে না? ওরা ছোট ধরনের ছোটলোক। ভীষণ ছোটলোক বদমাশের দল!’
‘কয়জন? কী করছিল?’
‘বারো-চোদ্দজন হবে। সব ক’জন বিশ্রাম নিচ্ছিল। ভাব দেখে মনে হলো কিছু একটা ঘটাবার অপেক্ষায় আছে।’
কৌতূহলী চেহারায় সামনে ঝুঁকে পড়ল মিলার্ড। এই জনবিরল বন্য এলাকায় একসঙ্গে এত লোকের উপস্থিতি আর যাই হোক, স্বাভাবিক নয়। ‘চিন্তা করে দেখো, লিয়ো,’ বলল সে, ‘মনে করার চেষ্টা করো পরে দেখে চেনা যাবে তেমন কোনও বৈশিষ্ট্য ওদের কারও আছে কি না।’
‘হুম্ম্, কয়েকজনকে পরস্পরের নাম ধরে ডাকতে শুনেছি। একজনের নাম লোকো, আরেকজনের নাম ছিল…ছিল…’ নিভে আসা আগুনে থোক করে এক দলা থুতু ফেলল বুড়ো লিয়োনেল, ডান হাতের তর্জনীতে সাদা গোঁফের প্রান্ত মোচড়াতে লাগল চিন্তিত চেহারায়। ‘মনে পড়ছে না কেন!’ কয়েকবার আনমনে বলার পর হাসি ফুটে উঠল তার মুখে। ‘হ্যাঁ, মনে পড়েছে। ম্যাক দিয়ে নাম। ম্যাক ট্রুডার? ম্যাককে? ম্যাকেনলি? ম্যাককেইন? এরকমই কিছু বলেই তো মনে হয়!’
‘ম্যাকেনলি,’ বলল জো মিলার্ড। উত্তেজনায় মেরুদণ্ড সোজা হয়ে গেছে তার। ‘দেখতে কেমন?’
‘পেছন দিক দেখেছি শুধু।’
‘তা হলে পেছন দিক থেকে দেখতে কেমন সেটাই বলো!’
‘মুমু, বাকি সবার চেয়ে লম্বা; তোমার চেয়েও বোধহয় বেশি হবে। জুতোয় মেক্সিকান স্পার পরে।’
চোখ জোড়া হারানো ধন খুঁজে পাওয়ার আনন্দে চকচক করে উঠল মার্শালের। ‘ওর কাপড় জামা, ঘোড়ার রঙ কী?’
‘সব কালো। এমন কী হোলস্টারও কালো। আমার মনে আছে, কারণ আজকালকার হামবড়া ছোকরাদের মত ঊরুতে সিক্সগান বাঁধে না লোকটা, অস্ত্র ঝোলায় কোমরের বেল্টে।’
উত্তেজনায় মিলার্ডের কপালের এক ধারে রগ লাফাতে লাগল, দু’হাত মুষ্টিবদ্ধ করে সে বলল, ‘জিম ম্যাকেনলি! তুমি ওকেই দেখেছ, লিয়ো, ভুল হতে পারে না কোনও।’
‘জিম ম্যাকেনলি? মানে সেই দুর্ধর্ষ ব্যাংক ডাকাত কিংবদন্তীর জিম ম্যাকেনলি?’
‘তাই তো মনে হচ্ছে।’
‘কিন্তু আমি তো শুনেছিলাম রেড রিভার না কোথায় যেন কয়েক বছর আগে মারা গেছে সে!’
‘আমিও তাই জানতাম,’ গম্ভীর চেহারায় বলল মিলার্ড। ‘কিন্তু ওর ব্যাপারে আগেও আমি ভুল শুনেছি।’
উঠে দাঁড়িয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে ঘোড়ার সামনে পৌঁছে গেল সে। স্ক্যাবার্ড থেকে কারবাইন বের করে চেম্বারে একটা শেল ঢোকাল। আবার কারবাইন ভেতরে ভরে লাফ দিয়ে উঠে বসল স্ট্যালিয়নে, তারপর বলল, ‘কফির জন্য ধন্যবাদ।’
‘জো,’ এগিয়ে এসে বাফেলো গান হাতে ঘোড়ার পাশে দাঁড়াল বুড়ো লিয়োনেল, ‘তোমার বাড়তি অস্ত্র দরকার পড়লে আমাকে শুধু একটা খবর দিয়ো।’
পরস্পরের দিকে উষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল দুই বন্ধু। পনেরো বিশ বছর বয়সের তফাৎ কখনোই ওদের বন্ধুত্বে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। কথা বলল না কেউ, পরস্পরের আশ্বাস অনুভব করল হৃদয় দিয়ে। অবশেষে আলতো করে দু’আঙুলে হ্যাট ছুঁয়ে ঘোড়া ছোটাল মার্শাল জো মিলার্ড। পেছনে দাঁড়িয়ে আপনমনে হাসল বুড়ো লিয়োনেল। ভাবছে, বহুদিন পর বিপদের স্বাদ পাওয়া যাবে আবার।