দরিয়া-ই-নুর – ১১

অধ্যায় ১১

আশেক যখন পাভেলের রুফটপ রেস্টুরেন্টে পৌছাল ততক্ষণে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বেজে গেছে।

সামান্য কিছুটা দেরি হয়েছে বলে অস্থির হয়ে তিন বার ফোন দিয়েছিল তার বন্ধু। আশেকের সঙ্গে আছে মহামূল্যবান দরিয়া-ই- নুর। পথে কোনো অঘটন ঘটলো না তো—এই আশঙ্কা হচ্ছিল তার।

রেস্টুরেন্টটা এখন বেশ জমজমাট। আশেক কাচের দরজা ঠেলে অফিসে ঢুকতেই ডেস্কে বসে থাকা পাভেল হেসে বলল, “উফ! আমি তো চিন্তায় শ্যাষ!”

“এত টেনশনের কী আছে!” পকেট থেকে ছোট্ট একটা বাক্স বের করলো। নীল রঙের ভেলভেটের কাপড় দিয়ে মোড়ানো বাক্সটা খুলে দেখালো বন্ধুকে। “এই যে, দরিয়া-ই-নুর!”

বিস্ফারিত চোখে চেয়ে রইলো পাভেল। চারকোণা আকৃতির হীরাটার আকার ম্যাচবক্সের চেয়ে সামান্য ছোট, একটা বাজুবন্দে বসানো। তার চারপাশে আছে দশটি ডিম্বাকৃতির ছোট ছোট হীরকখণ্ড।

বাক্সটা নিজের হাতে নিয়ে নিলো পাভেল। “আমি কখনও আসল হীরা দেখি নাই!”

মুচকি হাসলো আশেক। “আমিও না।“

“চাইর দিকে যে পাথরগুলা আছে, ওইগুলা কীসের?”

“ওইগুলাও হীরা।”

বিস্ময়ে তাকালো পাভেল। “ছোটগুলাও হীরা? কও কী!

মাথা নেড়ে বন্ধুকে আশ্বস্ত করলো মির্জা। “ছোট হীরাগুলি খুইলা রাখতে চাইছিলাম, ওইগুলা আলাদা বেচলে কয়েক লাখ টাকা পাইতাম।“

“তাইলে করলা না কেন?”

আশেক কিছু বলার আগেই তার ফোনে একটা কল এলো।

“হ্যালো?” পাভেলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো সে। “হুম, আমি ধানমণ্ডিতে আছি…আবাহনী মাঠের সামনে?…আচ্ছা, আইতাছি।”

“বায়ার?” উৎসুক হয়ে জানতে চাইলো পাভেল।

“না, তার লোক। আমি এহন যাই। টাকাগুলা ঠিকঠাক আছে কি না চেক করার পর বায়ারে নিয়া আসুম। রওনা দিবার আগে ফোন দিমু তোমারে।” উঠে দাঁড়াল আশেক।

পাভেল হাত বাড়িয়ে দিলো। “গুড লাক, দোস্ত।”

প্রসন্ন হাসি দিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেল মির্জা আশেক।

মুগ্ধ দৃষ্টিতে দরিয়া-ই-নুরের দিকে চেয়ে রইলো পাভেল। একটু আগেও সে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেনি, আশেক সত্যি সত্যি এটা নিয়ে আসতে পারবে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *