ডার্ক ম্যাটার

৫. ডার্ক ম্যাটার

বেশ কয়েক বছর আগের কথা। আমার মেয়ে তখন এক পা দুই পা করে হাঁটতে শিখেছে। নিজের বুস্টার সিটে বসে মজার মজার পরীক্ষা- নিরীক্ষা করত সে। আমি বসে বসে তাকিয়ে দেখতাম, সে তার ডিনার প্লেট থেকে বেশ সাবধানে গোটাকতক ভাজা মটরশুঁটি নিচে ফেলে দিত। প্রতিবারে একটা করে। কোনো মটরশুঁটিই মহাকর্ষের সর্বজনীন আইন অমান্য করতে পারত না। সরাসরি মেঝেতে পড়ে যেত প্রতিটি।

বল হিসেবে মহাকর্ষ বিস্ময়কর, কিন্তু বেশ সমস্যাজনকও বটে।

বিশ্বজগতে বস্তু বা পদার্থকে মহাকর্ষ কীভাবে প্রভাবিত করে, তা ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানী নিউটন ও আইনস্টাইন। তাদের ধারণাগুলো ভাজা মটরশুঁটি, পাকা আপেল, মানুষ, গাছপালা, দানবীয় নক্ষত্র থেকে শুরু করে সব বস্তুতে প্রয়োগ করা যায়। অর্থাৎ আমরা যেসব বস্তু দেখি, স্পর্শ করি, অনুভব করি, গন্ধ পাই এবং মাঝে মাঝে স্বাদ নিই, তার সবকটিতে এই আইন খাটে। নিউটন আর আইনস্টাইনের আইন অনুসারে, মহাবিশ্বের বেশির ভাগ বস্তু বা পদার্থ দৃশ্যত নিখোঁজ। এখানে নিখোঁজ বলতে আমি আসলে মোজা হারিয়ে যাওয়ার মতো কিছু বোঝাচ্ছি না।

কিছু নির্দিষ্ট নক্ষত্র ও গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণ করে জ্যোতিঃপদার্থবিদেরা মহাবিশ্বের দূরবর্তী অংশে মহাকর্ষের ক্ষমতা মাপতে পারেন। সাধারণত কোথাও মহাকর্ষ শক্তিশালী হলে, সেখানে বড় কোনো বস্তু দেখা যায়। কিংবা তার আশপাশে কোনো বড় বস্তু দেখতে পাই। যেমন অতি দানবীয় নক্ষত্র বা একটা কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে মহাকর্ষের প্রভাব হয় বিপুল। মহাবিশ্বের ভেতর দিয়ে চলমান কোনো ক্ষুদ্র পাথরের চারপাশে মহাকর্ষ কেমন? খুব বেশি নয়।

বেশ কয়েক বছর ধরে অবিশ্বাস্য রকম শক্তিশালী মহাকর্ষ ক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতিঃপদার্থবিদেরা। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, সেই শক্তিশালী মহাকর্ষ তৈরি করতে পারে, এমন কোনো দৃশ্যমান বস্তু সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ রকম শক্তিশালী মহাকর্ষ তৈরি করার জন্য সেখানে অবশ্যই কিছু একটা থাকতে হবে। কিন্তু আমরা সেগুলো দেখতে পাই না। সেখানে যেটাই থাকুক না কেন, আমাদের বস্তু বা শক্তির সঙ্গে সেগুলো কোনো রকম মিথস্ক্রিয়া করে না। এখন আমরা চাই, কেউ একজন অন্তত আমাদের বলুক, মহাবিশ্বের সিংহভাগ মহাকর্ষ অন্য কোনো ধরনের বস্তুতে আটকে আছে কি না। কেন সেগুলো আমরা শনাক্ত করতে পারছি না? এ জন্য প্রায় এক শতাব্দী ধরে অপেক্ষা করছি আমরা। শুনলে হয়তো অবাক হবে, মহাবিশ্বে এ ধরনের মহাকর্ষের পরিমাণ ৮৫ শতাংশ।

এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো ক্লু নেই।

*

আমাদের কাছে এটা এখন একটা প্রধান বৈজ্ঞানিক ধাঁধা। প্রথমবার এই ‘নিখোঁজ ভর’-সংক্রান্ত সমস্যাটা জানা গিয়েছিল ১৯৩৭ সালে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত এর কোনো সমাধান আমরা খুঁজে পাইনি। সে সময় কোমা ক্লাস্টার নামে একটা এলাকায় গ্যালাক্সিদের চলাচল নিয়ে গবেষণা করছিলেন সুইস-মার্কিন জ্যোতিঃপদার্থবিদ ফ্রিজ জুইকি। এই মহাজাগতিক প্রতিবেশীর অবস্থান আমাদের পৃথিবী থেকে অনেক দূরে। কোমা ক্লাস্টার থেকে আসা আলোকরশ্মি আমাদের টেলিস্কোপে ধরার পড়ার আগে মহাবিশ্বের ভেতর দিয়ে পাড়ি দেয় ৩০০ মিলিয়ন বছরের পথ। একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে এই কোমা ক্লাস্টারকে ঠাসাঠাসি বলে মনে হয়। প্রায় এক হাজার গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ তার কেন্দ্রের চারপাশে ঘোরে। সেগুলো সব দিকে চলাফেরা করছে। অনেকটা কোনো মৌচাক কেন্দ্র করে মৌমাছিদের ঘোরার মতো। এই ক্লাস্টারকে একত্রে ধরে রেখেছে মহাকর্ষ। আর এই মহাকর্ষের কারণেই সেগুলোর ভেতর থেকে কোনো কিছু ছিটকে বাইরে যেতে পারে না। ক্লাস্টারটার ভেতরে কয়েক ডজন গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণ করে সেখানকার মহাকর্ষ ক্ষেত্রের শক্তিমত্তা মাপলেন জুইকি।

কোমা ক্লাস্টার নামে একগুচ্ছ গ্যালাক্সিতে রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারের প্রমাণ প্ৰথম খুঁজে পান জ্যোতিঃপদার্থবিদ ফ্রিৎজ জুইকি।
কোমা ক্লাস্টার নামে একগুচ্ছ গ্যালাক্সিতে রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারের প্রমাণ প্ৰথম খুঁজে পান জ্যোতিঃপদার্থবিদ ফ্রিৎজ জুইকি।

কিন্তু কিছু একটা ঠিক ছিল না।

হিসাব করে সেখানে মহাকর্ষের পরিমাণ অনেক বেশি পাওয়া গেল। কাজেই ক্লাস্টারটার ভেতরে থাকা সব কটি গ্যালাক্সির ভর যোগ করলেন তিনি। গোটা মহাবিশ্বে কোমা ক্লাস্টার সবচেয়ে বড় ও ভারী ক্লাস্টারের একটি হলেও এর সব গ্যালাক্সির ভরের মোট যোগফলও সব কটি গ্যালাক্সিকে ওইখানে একত্রে ধরে রাখার মতো মহাকর্ষ সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট মনে হলো না।

অন্য কিছু একটা সেখানে আছে।

সেটা এমন কিছু, যেটা তিনি দেখতে পাননি।

জুইকির পর জ্যোতিঃপদার্থবিদেরা আবিষ্কার করলেন, অন্য ক্লাস্টারগুলোতেও একই ধরনের সমস্যা রয়েছে। এরপর জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে এই ‘নিখোঁজ ভর’ রয়ে গেল একটা দীর্ঘমেয়াদি অমীমাংসিত রহস্য হিসেবে।

বর্তমানে এই বস্তুর জন্য আমরা ডার্ক ম্যাটার বা গুপ্তবস্তু পরিভাষাটি ব্যবহার করি।

*

একই রকম দেখতে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। ছোটবেলায় এ রকম একটা অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম আমি। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রাইমারি স্কুলের সহপাঠী থাকত অন্য বিল্ডিংয়ে। তাকে ধন্যবাদ। কারণ, আমাকে দাবা, পোকার আর রিস্ক ও মনোপলি বোর্ডগেম শিখিয়েছিল সে। আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, সে আমাকে শিখিয়েছিল বাইনোকুলার কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। যন্ত্রটা কীভাবে তাক করতে হয় চাঁদ আর নক্ষত্রের দিকে। একসময় আমি বাইনোকুলার বাদ দিয়ে টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে শুরু করি। আরও স্পষ্টভাবে দেখার জন্য আমাদের বাড়ির ছাদ থেকে চলে যাই মরুভূমি বা খোলা সাগরে। এরপর রাতের আকাশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা দৃশ্যাবলির গভীর প্রেমে পড়ে যাই।

আমরা এখন বুঝতে পারছি, এদের কেন সর্পিল ছায়াপথ বলা হয়, তাই না? এই একটা ছায়াপথেই এক ট্রিলিয়ন নক্ষত্র থাকতে পারে।
আমরা এখন বুঝতে পারছি, এদের কেন সর্পিল ছায়াপথ বলা হয়, তাই না? এই একটা ছায়াপথেই এক ট্রিলিয়ন নক্ষত্র থাকতে পারে।

আকাশে আমরা কী দেখি, জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু শুধু সেটাই নয়। আমরা কী কী দেখতে পাই না, সেটা নিয়েও কাজ করে এই বিজ্ঞান।

ফ্রিজ জুইকি এমন এক বস্তুর উপস্থিতির প্রমাণ পান, যেটা তিনি ক্লাস্টার বা গ্যালাক্সিগুচ্ছের ভেতর দেখতে পাননি। অনেক বছর পর, ১৯৭৬ সালে ওয়াশিংটনের কার্নেগি ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্সের ভেরা রুবিন আবিষ্কার করেন, গ্যালাক্সিগুলোর ভেতর নিখোঁজ ভর লুকিয়ে আছে। তিনি স্পাইরাল গ্যালাক্সি বা সর্পিল ছায়াপথ নিয়ে গবেষণা করছিলেন তখন। সমতল, ডিস্ক-আকৃতির এ গ্যালাক্সিগুলো নক্ষত্রদের আস্তানা। গ্যালাক্সিগুলোর কেন্দ্রে উজ্জ্বল স্ফীতি দেখা যায়। আবার বাইরের দিকের বাহুতে ঠাসাঠাসি করে থাকে অসংখ্য নক্ষত্র। সৰ্পিল ছায়াপথগুলোর চারপাশে ওই সব নক্ষত্র কত জোরে ছুটছে, তা নির্ণয়ের চেষ্টা করেন রুবিন। প্রথমে তিনি যা আশা করছিলেন, সেটাই পেলেন। দেখা গেল, মহাকর্ষের কারণে ছায়াপথে আটকে আছে দূরের নক্ষত্রগুলো। আবার নক্ষত্রগুলো ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে যত দূরে, সেগুলো কেন্দ্রের কাছের নক্ষত্রগুলোর চেয়ে তত বেশি দ্রুত ছুটছে।

ছবিতে দেখানো এ রকম গুপ্তবস্তুর বলয় নিয়ে গবেষণা করে মহাবিশ্বে নিখোঁজ ভরের আরও কিছু প্রমাণ পান ভেরা রুবিন।
ছবিতে দেখানো এ রকম গুপ্তবস্তুর বলয় নিয়ে গবেষণা করে মহাবিশ্বে নিখোঁজ ভরের আরও কিছু প্রমাণ পান ভেরা রুবিন।

তারপরও রুবিন ওই ডিস্কের বাইরের এলাকায় চোখ রাখলেন। ছায়াপথের বাইরের এই অংশে কিছু উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং নিঃসঙ্গ গ্যাসীয় মেঘ ঘোরাফেরা করছে। এসব বস্তু ও ছায়াপথের ডিস্কের কিনারার মাঝখানে দৃশ্যমান পদার্থ ছিল অতি অল্প। তাই তাদের শক্তভাবে ঘূর্ণমান গ্যালাক্সিটির সঙ্গে ধরে রাখার মতো কিছুই সেখানে ছিল না। কাজেই নিয়ম অনুযায়ী, গ্যালাক্সিটি থেকে তাদের দূরত্ব যত বাড়বে, তাদের গতিবেগও তত কমে যাওয়া উচিত। কিন্তু কোনো কারণে আসলে তাদের গতি ছিল অনেক বেশি।

গুপ্তবস্তুর গোয়েন্দা
ছেলেবেলায় নিজের শোবার ঘরের জানালা দিয়ে আকাশভরা তারা দেখতেন ভেরা রুবিন। এরপর কার্ডবোর্ড টিউব দিয়ে নিজের জন্য প্রথম একটা টেলিস্কোপ তৈরি করেন। ছোটবেলা থেকে এতে আগ্রহী হন তিনি। কলেজ শেষ করার পর অ্যাস্ট্রোফিজিকসে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানাল, তাদের প্রোগ্রামে নারীদের নেওয়া হয় না। কিন্তু এতেও দমলেন না ভেরা রুবিন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন। এরপর গবেষণা করে প্রমাণ করলেন যে গুপ্তবস্তুর অস্তিত্ব সত্যিই আছে। অনেকে বিশ্বাস করে, কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রুবিনকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত ছিল। বিজ্ঞানের এই সেরা পুরস্কার দেওয়া হয় দারুণ কোনো কিছু আবিষ্কারের জন্য। আর গ্যালাক্সিগুলোকে আঠার মতো একত্রে আটকে রাখা রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার বা গুপ্তবস্তুর মতো এমন মূল্যবান আবিষ্কার আর কী হতে পারে?

রুবিন সঠিকভাবে কারণ দেখিয়ে বললেন, গ্যালাক্সি কেন্দ্র থেকে এসব দূরবর্তী অঞ্চলে অবশ্যই ডার্ক ম্যাটারের মতো কোনো কিছু লুকিয়ে আছে। আর দূরের এই বস্তুগুলো গ্যালাক্সির সঙ্গে আটকে আছে ওই অদৃশ্য বস্তুর কারণেই। প্রতিটি সর্পিল ছায়াপথের দৃশ্যমান কিনারার বাইরের দিকে বস্তুগুলো লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করেন তিনি। এই গবেষণার জন্য রুবিনের ধন্যবাদ প্রাপ্য। এই রহস্যময় এলাকাকে আমরা এখন বলি ডার্ক ম্যাটার হ্যালোস বা গুপ্তবস্তুর বলয়।

এই বলয় সমস্যা আমাদের নাকের নিচে, মানে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেও আছে। গ্যালাক্সি থেকে গ্যালাক্সি এবং ক্লাস্টার থেকে ক্লাস্টারের মধ্যে থাকা বস্তুর সম্মিলিত ভর এবং তাদের মহাকর্ষের শক্তিমত্তার ওপর ভিত্তি করে তাদের যে ভর থাকা উচিত, এই দুই ভরের পার্থক্যের পরিমাণ বিপুল। মহাজাগতিক গুপ্তবস্তুর মোট মহাকর্ষ সব দৃশ্যমান বস্তুর মহাকর্ষের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি। অন্যভাবে বলা যায়, সাধারণ বস্তুর চেয়ে গুপ্তবস্তুর পরিমাণ ছয় গুণ বেশি।

*

তাহলে ডার্ক ম্যাটার কী?

আমরা জানি, এটা প্রোটন, নিউট্রন ও অন্যান্য কণার মতো আমাদের পরিচিত সাধারণ পদার্থ দিয়ে তৈরি হতে পারে না। আবার কৃষ্ণগহ্বর এবং অন্যান্য মহাজাগতিক অদ্ভুতুড়ে বস্তুকেও বাদ দেওয়া যায়। তাহলে ডার্ক ম্যাটার কি কেবল গ্রহাণু বা ধূমকেতু হতে পারে? কিংবা মহাকাশে কি অনেক ভবঘুরে গ্রহ চলাফেরা করছে, যারা কোনো সৌরজগতে একত্র হয়ে আছে? তাদের সবার ভর আছে, কিন্তু গ্রহগুলোর কারও নিজস্ব আলো নেই। আমাদের ডিটেক্টরে তারা ডার্ক বা গুপ্ত। এই অর্থে, তারা খাপ খায়। কিন্তু তাদের সংখ্যা অনেক হতে পারে না। কাজেই ভবঘুরে গ্রহের কথাও আমরা বাতিল করতে পারি

আমরা এটাও জানি, আমাদের গ্রহ বা হ্যামবার্গার যেসব কণা দিয়ে তৈরি, তা দিয়ে ডার্ক ম্যাটার তৈরি হতে পারে না। কারণ, একই নিয়ম মানে না সেগুলো। আবার আমাদের বিশ্বে যে বলগুলো কণাগুলোকে একত্র করে রাখে, ডার্ক ম্যাটারের ক্ষেত্রে খাটে না সেই বল। ডার্ক ম্যাটার শুধু একটা বলই মান্য করে বলে মনে হয়। সেটা হলো মহাকর্ষ।

হয়তো এই বস্তু আসলে কোনো সমস্যা নয়। এমনও হতে পারে যে তাদের মহাকর্ষও হয়তো আমরা বুঝতে পারছি না। হয়তো নিউটনই ভুল। ভুল হতে পারেন আইনস্টাইনও। পাঠক, হয়তো তুমিই একদিন কোনো আপেলবাগানের পাশ দিয়ে তোমার স্বচালিত রোবটিক কারে চলতে গিয়ে হঠাৎ আবিষ্কার করবে, মহাকর্ষ আসলে কীভাবে কাজ করে। তার আগপর্যন্ত আমাদের কাছে যেসব তথ্য আছে, তা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত যেটুকু বুঝতে পেরেছি, ডার্ক ম্যাটার আসলে এমন কোনো বস্তু নয়, যাকে ডার্ক বা কালোই হতে হবে। বরং সেটা একেবারেই অন্য কিছুও হতে পারে।

*

তবে দুশ্চিন্তা কোরো না। রাতের বেলা তুমি যখন পা টিপে টিপে বাথরুমে যাবে, তখন ডার্ক ম্যাটার তোমার মাথায় আঘাত করতে যাবে না। এমনকি তোমার স্কুলে ভিড়ে ঠাসা হল পেরিয়ে এক ক্লাস থেকে আরেক ক্লাসে যেতেও কোনো ডার্ক ম্যাটারের স্তূপের ওপর দিয়ে তোমাকে হেঁটে যেতে হবে না। অবশ্য তোমার ক্লাসের বিজ্ঞান কম জানা কোনো সহপাঠীর সঙ্গে হঠাৎ হোঁচট খেলে সে যদি উপহাস করে, তাহলে তাকে এই অজুহাত দিতে পারো। ডার্ক ম্যাটার থাকে গ্যালাক্সিগুলোতে আর গ্যালাক্সি ক্লাস্টারে। চাঁদ বা গ্রহের মতো ছোটখাটো বস্তুতে ডার্ক ম্যাটারের কোনো প্রভাব দেখা যায় না। আমাদের পায়ের নিচে থাকা পদার্থ দিয়ে পৃথিবীর মহাকর্ষকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা যায়। অন্তত এখানে নিউটন ভুল বলেননি।

তাহলে ডার্ক ম্যাটার কী দিয়ে তৈরি? এই পদার্থ সম্পর্কে আমরা কী জানি? সাধারণ বা স্বাভাবিক পদার্থের অণুগুলো, অর্থাৎ অতিক্ষুদ্র বালুদানা থেকে শুরু করে বড় বড় মহাকাশের পাথর পর্যন্ত সবকিছু একত্র হয় এবং বিভিন্ন আকৃতির হয়। কিন্তু ডার্ক ম্যাটার তা হয় না। তাই যদি হতো, তাহলে মহাবিশ্বের আমরা ডার্ক ম্যাটারের ফুটকি ফুটকি দেখতে খণ্ড খণ্ড গুচ্ছ খুঁজে পেতাম।

সে ক্ষেত্রে আমরা ডার্ক ম্যাটারের ধূমকেতুও দেখতাম।

ডার্ক ম্যাটারের তৈরি গ্রহ থাকত।

ডার্ক ম্যাটারের গ্যালাক্সি থাকত।

আমরা যতটুকু বলতে পারি, সেটা হলো ব্যাপারটা আসলে এ রকম নয়। আমরা যেসব পদার্থ সম্পর্কে জানি এবং যেসব পদার্থ পছন্দ করি, অর্থাৎ নক্ষত্র, গ্রহ ও জীব—সেগুলো আসলে অনেক বড়, অদৃশ্য মহাজাগতিক কোনো কেকের অতি সামান্য অংশমাত্ৰ।

*

এটা যে আসলে কী, তা আমরা এখনো জানি না। কিন্তু এটুকু জানি যে আমাদের ডার্ক ম্যাটারের প্রয়োজন আছে। সব সময়ই এর দরকার ছিল।

মহাবিস্ফোরণের প্রথম অর্ধমিলিয়ন বছর বা ৫ লাখ বছর পর ( ১৪ বিলিয়ন বছরের মহাজাগতিক ইতিহাস যাকে চোখের পলক ফেলার মতো মনে হবে) মহাবিশ্বে পদার্থগুলো পরস্পরের কাছাকাছি আসতে শুরু করে। এভাবে একধরনের আলগা গুচ্ছ তৈরি করতে শুরু করল সেগুলো। এই গুচ্ছগুলোই পরে পরিণত হলো গ্যালাক্সিদের ক্লাস্টার বা সুপারক্লাস্টারে। কিন্তু পরবর্তী অর্ধমিলিয়ন বছরে মহাবিশ্বের আকার দ্বিগুণ হয়ে গেল এবং এরপরও মহাবিশ্ব বড় হতে থাকল। এই বেড়ে ওঠার কালে দুটি প্রভাব পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছিল।

মহাকর্ষ সবকিছুকে একত্র করতে কাজ করছিল।

কিন্তু প্রসারণশীল মহাবিশ্ব সবকিছুকে পরস্পরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।

এভাবে সাধারণ পদার্থের মহাকর্ষ এই যুদ্ধে কোনোভাবেই জিততে পারত না। তাই সে সময় আমাদের মহাকর্ষের শক্তিমত্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল ডার্ক ম্যাটার। কাজেই ডার্ক ম্যাটার ছাড়া আমরা এমন এক মহাবিশ্বে থাকতাম, যেখানে কোনো কাঠামো থাকত না।

কোনো ক্লাস্টার থাকত না।

থাকত না কোনো গ্যালাক্সি।

কোনো নক্ষত্রও থাকত না।

একইভাবে থাকত না কোনো গ্রহও।

মানুষও থাকত না।

কাজেই ডার্ক ম্যাটার ছাড়া আসলে আমরা আজ এখানে থাকতাম না।

*

সুতরাং ডার্ক ম্যাটার আমাদের ফ্রেনেমি বা বক্র। মানে ফ্রেন্ড+এনিমি (বন্ধু+শত্রু)। ওগুলো আসলে কী, সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। সেদিক থেকে বললে, এটা একধরনের বিরক্তিকর বিষয়। কিন্তু এদের আমাদের ভীষণভাবে প্রয়োজন। আমরা যেসব বিষয় বুঝি না, কিন্তু তবু তাতে নির্ভর করতে বাধ্য হই, সেসব বিষয়ে বিজ্ঞানীরা সাধারণত খানিকটা অস্বস্তিবোধ করেন। কিন্তু আমাদের যদি তা করতেই হয়, তবে তা করব। আর ডার্ক ম্যাটার প্রথম কোনো বিষয় নয় যে রহস্যময় বস্তুর ওপর বিজ্ঞানীদের নির্ভর করতে হচ্ছে, যার ওপর আমরা বাধ্য হয়ে নির্ভর করছি। এর আগেও এ রকম কিছু বিষয় ছিল।

যেমন উনিশ শতকে সূর্যের শক্তি উৎপাদনের পরিমাণ মাপেন বিজ্ঞানীরা। তাতে দেখা গেল, আমাদের ঋতু ও জলবায়ুতে এর প্রভাব রয়েছে। তাঁরা জানতেন, সূর্য আমাদের উষ্ণ রাখে এবং জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির জোগানও দেয়। কিন্তু মার্গারেট বার্বিজ নামের এক নারী ও তাঁর সহকর্মীরা সেটা আবিষ্কারের আগপর্যন্ত বিজ্ঞানীরা জানতেন না, সূর্য আসলে কীভাবে কাজ করে। বার্বিজের আগে, বিজ্ঞানীদের কাছে সূর্য ছিল ডার্ক ম্যাটারের মতো রহস্যময়। কিছু বিজ্ঞানী এমনও প্রস্তাব করেছিলেন যে সূর্য হলো একটা জ্বলন্ত কয়লার স্তূপ।

সূর্য জ্বলে কেন?
আমাদের সূর্যের মতো নক্ষত্রের জীবন শুরু হয়েছিল দানবীয় গ্যাস মেঘ হিসেবে। মহাকর্ষ এই গ্যাসীয় মেঘকে চুপসে দিয়ে ক্রমেই সংকুচিত করে তাকে ছোট থেকে আরও ছোট বানিয়ে দিয়েছিল। এভাবে ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সেটা। কিছু গ্যাসীয় মেঘের চুপসে যাওয়া থেমে গিয়ে একটা দানবীয় উজ্জ্বল ভরের বস্তু হিসেবে রয়ে যায়। কিন্তু অন্যগুলো যেমন যেটা একসময় আমাদের সূর্যে পরিণত হয়েছিল, তারা এতই বড় ছিল যে একসময় থার্মোনিউক্লিয়ার ফিউশন নামের একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় তাদের ভেতর। এ প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের হাইড্রোজেন অণুগুলো পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে একত্র হয় কিংবা সংযোজিত হয় (ফিউজ)। এরপর এখান থেকে বেরিয়ে আসে বিপুল শক্তি। এই সংঘর্ষ থেকে যে শক্তি বেরিয়ে আসে, তা মহাকর্ষের বিপরীতে কাজ করে। ফলে গ্যাসীয় মেঘকে আরও চুপসে যাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে সূর্যকে জ্বলে উঠতে পর্যাপ্ত শক্তিও জোগান দিতে থাকে।

সে রকম ডার্ক ম্যাটার বা গুপ্তবস্তু একটা অদ্ভুত ধারণা, কিন্তু এটা গড়ে উঠেছে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। ভেরা রুবিন ও ফ্রিজ জুইকির গবেষণার কারণে এই বস্তু যে ওখানে আছে, তা ধরে নিয়েছি আমরা। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি দূরের যেসব নক্ষত্র আবিষ্কার করছেন, ডার্ক ম্যাটারও সেগুলোর মতোই সত্য। আমাদের সৌরজগতের বাইরের এসব গ্রহ বা বহিঃসৌরগ্রহ (এক্সোপ্লানেট) কখনো চোখে দেখা বা ছোঁয়া কিংবা অনুভবও করেননি কোনো বিজ্ঞানী। কিন্তু বিজ্ঞান শুধু চোখে দেখার ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠেনি। অদৃশ্য কোনো প্রভাব পরিমাপ করেও অনেক কিছু আবিষ্কার করে বিজ্ঞান। বিশেষ করে আমাদের চোখের চেয়েও এসব যন্ত্রপাতি অনেক বেশি শক্তিশালী ও সংবেদনশীল। আমরা জানি, এসব বহিঃসৌরগ্রহ সত্যি। কারণ, নিজ নিজ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরা ওই সব গ্রহকে চমৎকার সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আমরা গবেষণা করে দেখেছি। এসব নক্ষত্র পরীক্ষা করে এই গ্রহদের অস্তিত্বের পক্ষে শক্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে।

*

আমরা হয়তো আবিষ্কার করব, ডার্ক ম্যাটার কোনো পদার্থ দিয়ে নয়, অন্য কিছু দিয়ে গঠিত। এটাই সবচেয়ে বাজে ব্যাপার হতে পারে। এর মাধ্যমে আমরা কি অন্য কোনো ডাইমেনশন বা মাত্রা থেকে আসা বলগুলোর কোনো প্রভাব দেখতে পাচ্ছি? (ওখানেই কি আমাদের হারিয়ে যাওয়া সব মোজা চলে গেছে নাকি?) আমরা কি আমাদের পরিচিত সাধারণ পদার্থগুলোর স্বাভাবিক মহাকর্ষ অনুভব করছি, যা আমাদের পার্শ্ববর্তী কোনো ভুতুড়ে মহাবিশ্ব থেকে আসছে? সেটি যদি হয়ে থাকে, তাহলে বৃহৎ কোনো মাল্টিভার্সের অসীম মহাবিশ্বের সমাবেশের মধ্যে একটামাত্র হতে পারে এটি। সেখানে হয়তো পৃথিবীর অসীমসংখ্যক সংস্করণও থাকতে পারে। কে জানে, তোমারও হয়তো অসীমসংখ্যক সংস্করণ আছে সেখানে।

ব্যাপারটা শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হয়। কিন্তু পৃথিবী যে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে—প্রথমবার এ রকম প্রস্তাব পেশ করার সময় যতটা পাগলাটে মনে হয়েছিল, এটা কি তার চেয়েও বেশি পাগলাটে? অতীতে এ প্রস্তাবের আগে সবাই মনে করত পৃথিবী হলো মহাবিশ্বের কেন্দ্র। সেকালে সবাই ভাবত, আকাশ আসলে বিশাল একটা গম্বুজ। আগের চেয়ে এখন আমরা অনেক ভালো জানি। আমরা জানি, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে কোটি কোটি নক্ষত্রের মধ্যে সূর্য হলো একটি সাধারণ নক্ষত্র। আবার এটাও জানি, কোটি কোটি গ্যালাক্সির মধ্যে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি একটি। এমনকি আমাদের বাসস্থান পৃথিবী বিশেষ কোনো গ্রহ নয়। কিন্তু এককালে আমরা তেমনই ভাবতাম। একসময় পৃথিবী সম্পর্কে আমাদের যে রকম ভুল ধারণা ছিল, ডার্ক ম্যাটার নিয়েও হয়তো আমরা তেমন কোনো ভুল ভাবছি।

*

কিছু বিজ্ঞানী সন্দেহ করেন, ডার্ক ম্যাটার আসলে ভুতুড়ে কিছু কণা দিয়ে গঠিত। সেসব ভুতুড়ে কণা আমরা এখনো আবিষ্কার করে উঠতে পারিনি। বিজ্ঞানীদের এই দলটি বিশাল আকৃতির যন্ত্র ব্যবহার করে পৃথিবীতে সামান্য পরিমাণ ডার্ক ম্যাটার তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ যন্ত্রের নাম পার্টিকেল অ্যাকসিলারেটর। এদিকে মাটির গভীরে গবেষণাগারের ডিজাইন করেছেন আরেক দল বিজ্ঞানী। ডার্ক ম্যাটার যদি মহাকাশে ঘুরে বেড়ায় এবং তার মধ্যে থেকে কিছু পরিমাণ যদি পৃথিবীর কাছে আসে, তাহলে মাটির গভীরের এই ল্যাবে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব। আবারও বলছি, এসব শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু একবার নিউট্রিনো নামের ভুতুড়ে একটা কণার ক্ষেত্রে এ ধরনের সাফল্য পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

১৯৩০ সালের দিকে বিজ্ঞানীরা পরমাণুকে বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কয়েকজন নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ এমন এক ক্ষুদ্র কণার কথা ভাবলেন, যাদের ভর খুবই সামান্য কিংবা কোনো ভর নেই। প্রথম দিকে তাঁদের কাছে এই কণার অস্তিত্বের কোনো সরাসরি প্রমাণ ছিল না। কিন্তু নির্দিষ্ট পরমাণু অজানা কোনো প্রক্রিয়ায় শক্তি নিঃসরণ করে। এতে কিছু বিজ্ঞানী বললেন, এর জন্য এসব অজানা কণা দায়ী। এসব কণা পরমাণু থেকে শক্তি বের করে নিয়ে আসছে। এ সম্পর্কে কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ না থাকলেও নিউট্রিনো নামের একটা কণার কথা অনুমান করলেন ওই বিজ্ঞানীরা। এটি এমন এক কণা, যারা পদার্থের সঙ্গে তেমন মিথস্ক্রিয়া করে না বললেই চলে। কয়েক দশক পর, আরেক দল বিজ্ঞানী প্ৰমাণ করলেন যে এসব কণার অস্তিত্ব আসলেই আছে। এরপর আরও কিছু পরীক্ষায় নিউট্রিনো শনাক্ত ও গণনা করা হয়। সূর্য থেকে প্রতি সেকেন্ডে এক শ বিলিয়ন নিউট্রিনো তোমার দেহের বুড়ো আঙুল সমান প্রতিটি অংশের ভেতর দিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু তারা তোমার কিছুই করছে না।

 মাটির নিচে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অ্যাটম স্ম্যাশারের অংশ এটি। বিজ্ঞানীরা রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার নিয়ে গবেষণা করতে এ ডিটেক্টর ব্যবহার করেন।
মাটির নিচে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অ্যাটম স্ম্যাশারের অংশ এটি। বিজ্ঞানীরা রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার নিয়ে গবেষণা করতে এ ডিটেক্টর ব্যবহার করেন।

যে ঘটনার শুরু একটা বৈজ্ঞানিক ধারণা দিয়ে, অর্থাৎ এমন একটা ব্যাখ্যা, যা দিয়ে কিছু বোঝা যায় না, সেটাই কিন্তু একসময় সত্যি বলে প্রমাণিত হলো। নিউট্রিনোর ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, হয়তো একইভাবে আমরা ডার্ক ম্যাটার শনাক্ত করার উপায় কোনো একদিন খুঁজে পাব। কিংবা আমরা হয়তো ডার্ক ম্যাটারের কণাগুলো আবিষ্কার করব আরও চমকপ্রদ কোনো উপায়ে। সেগুলো হয়তো একেবারেই ভিন্ন কিছু হবে। সেগুলো নতুন ও অনাবিষ্কৃত কোনো বলও ব্যবহার করে থাকতে পারে।

আপাতত আমাদের অবশ্যই ডার্ক ম্যাটারকে ধরে রাখতে হবে একটা অদ্ভুত, অদৃশ্য বন্ধু হিসেবে। মহাবিশ্বের অদ্ভুত আচরণ ব্যাখ্যা করে যেতে হবে একে ব্যবহার করে। এটি একাই কৌতূহলী অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্টের পর্যাপ্ত কাজের জোগান দিতে পারবে। কিন্তু মহাজাগতিক অমীমাংসিত রহস্য হিসেবে কেবল এই ডার্ক ম্যাটারই নয়, আমাদের কাছে রয়েছে সমাধান করার মতো আরেকটা আকর্ষণীয় ধাঁধা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *