মৃতেরা কথা বলে না – ৭

০৭.

টিনা মুখার্জি বিকেল সওয়া পাঁচটায় মেট্রো সিনেমার উল্টো দিকে তার ক্রিমরঙের মারুতি দাঁড় করাল। সানগ্লাস খুলে দেখে নিল ওদিকটা। এখনও পৌঁছয়নি রঞ্জন। টিনার পনের মিনিট দেরি হয়েছে পর-পর দুজায়গায় জ্যামের জন্য। রঞ্জনও সাউথ থেকে আসবে। তাই তাকেও জ্যামে পড়তে হয়েছে।

এই ভেবে টিনা তার গাড়ি পার্ক করল সানগ্লাস পরেই বসে রইল ড্রাইভিং সিটে। রঞ্জনের ট্যাক্সি করে আসার কথা। ওর গাড়িটা নাকি গ্যারাজে।

টিনার বাবা অনির্বাণ মুখার্জি খ্যাতিমান ডাক্তার। নিজের নার্সিংহোম আছে নিউ আলিপুরে। টিনা একমাত্র সন্তান। টিনার মা ঋতুপর্ণা সমাজ সেবায় ব্যস্ত স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সারাক্ষণ নিজের নিজের ব্যাপারে মেতে থাকলে যা হয়। টিনা স্পয়েল্ড চাইল্ড হিসেবে বেড়ে উঠেছে। দার্জিলিঙে একটা কনভেন্ট স্কুলের ছাত্রী ছিল। প্রায়ই না বলে পালিয়ে আসত। তারপর আত লেখাপড়ায় তাকে ভেড়ানো যায়নি। হিন্দি ফিল্মের হিরোইনরা তার জীবনের আদর্শ। আয়নায় নিজেকে সে সুন্দর দেখে। অন্যেরা তার রূপের প্রশংসা করে। কিছুদিন আগেও তার এক নেপালি বয়ফ্রেন্ড ছিল। সে তাকে ডায়না বলত। কিন্তু একদিন অতর্কিতে চুমু খেয়ে ফেলায় টিনা তাকে চড় মেরে ভাগিয়ে দিয়েছে। হ্যাভ ফানস, বাট নট এনি সেক্স।

রঞ্জনের সঙ্গে টিনার আলাপ হয়েছিল তাদেরই বাড়িতে। মাঝে মাঝে রঞ্জন তার বাবার কাছে আসত। কেন আসত টিনা জানে না। একদিন কথায় কথায় রঞ্জন বলেছিল, আপনার ফটোজেনিক ফেস। ভয়েস সো সুইট! অভিনয় শিখে নিলে আপনার সাকসেস অনিবার্য!

এইভাবে টিনার একটা স্বপ্ন দেখার সূচনা। রঞ্জনকে দেখলেই সে স্বপ্নের মধ্যে ঢুকে যায়। ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় রঞ্জন টেলিফোনে জানিয়েছিল, একটা যোগাযোগ ঘটে গেছে। হংকংয়ের এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার আলাপ হয়েছে। তিনি বিদেশের জন্য টেলিফিল্ম করছেন। বড়রকমের উদ্যোগ। কিন্তু নতুন মুখ চান। ২৮ মার্চ টিনার সঙ্গে তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট করিয়ে দেবে। সেদিনই সকালে সে টিনাকে রিং করে সময় জানাবে।

তারপর গতকাল ২৮ মার্চ সারাদিন প্রতীক্ষা করেও রঞ্জনের পাত্তা নেই। তার নাম্বারও জানা ছিল না টিনার। আজ বেলা একটায় রঞ্জনের ফোন। টিনা! আমি দুঃখিত। মিঃ রঙ্গনাথন ভীষণ ব্যস্ত ছিলেন। আজ বিকেল ৫ টায় তোমার সময় হবে কি?

টিনা কিছু না ভেবেই বলেছিল, কেন হবে না? আমার তো গাড়ি আছে।

তাহলে তুমি মেট্রো সিনেমার উল্টেটাদিকে ঠিক পাঁচটায় আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমার গাড়ি গ্যারাজে। ট্যাক্সি করে যাব। আর একটা কথা। তুমি শাড়ি পরে যাবে কিন্তু!

ঠিক আছে কিন্তু কোথায় নিয়ে যাবে আমাকে?

কেন? মিঃ রঙ্গনাথনের কাছে।

কোথায়?

হোটেল কন্টিনেন্টালে উনি উঠেছেন।

কটায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট?

সন্ধ্যা ৬ টায়।

আমি হোটেলের কোনও ঘরে ঢুকব না কিন্তু!

ওঃ টিনা! আমি জানি তুমি খুব সাবধানী মেয়ে। তবে ভয়ের কিছু নেই। ফাইভস্টার হোটেল। তুমি নিশ্চয় নাম শুনেছ!

আমি লাউঞ্জে বসে কথা বলব।

ও কে! ও কে টিনা তবে উনি ব্যস্ত মানুষ। যদি তখনই তোমার স্ক্রিন টেস্ট করার ব্যবস্থা করেন এবং তুমি যদি পিছিয়ে যাও, তাহলে আমি কিন্তু অপ্রস্তুত হব। ভেবে দেখ।

 কোথায় স্ক্রিন টেস্ট হবে?

পার্ক স্ট্রিট এরিয়ায় ওঁর স্টুডিও আছে।…টিনা? তুমি কি ভয় পাচ্ছ? দেখ, আমি তো সঙ্গেই থাকছি তোমার। আমাকে তোমার বাবা চেনেন। এ একটা বড়, সুযোগ টিনা! তোমার ভবিষ্যৎ কল্পনা করো।

এ সব কথা ইংরেজিতেই হয়েছে। টিনা বাংলা বলে কদাচিৎ। সে রঞ্জনের এই শেষ কথাটাকে গুরুত্ব দিয়েছিল।…

ঘড়ি দেখল টিনা। পাঁচটা কুড়ি বাজে। ফিরে যাবে নাকি?

 সেই সময় হঠাৎ তার মনে হলো, রঞ্জন তার গাড়ি চিনতে না-ও পারে। অজস্র রঙবেরঙের গাড়ি পার্ক করা আছে। একই রঙের মারুতিও কম নেই। টিনা গাড়ি থেকে বেরুল। তারপরই দেখতে পেল রঞ্জনকে। এদিকে-ওদিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে বেচারা। টিনা হাসল।

একটু পরে টিনাকে দেখতে পেল রঞ্জন। হন্তদন্ত হয়ে কাছে এসে বলল, কতক্ষণ এসেছ?

অনেকক্ষণ।

 আমি তো খুঁজে হয়রান। শিগগির।

গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দক্ষিণে ঘোরালো টিনা। কিছুক্ষণ পরে মোড় পেরিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাস করল, হোটেল কনিটেনেন্টাল এ জে সি বোস রোডে না?

হ্যাঁ। কিন্তু মিঃ রঙ্গনাথন শেষ মুহূর্তে জানিয়েছেন ওঁর স্টুডিওতে দেখা হবে।

পার্ক স্ট্রিট?

ওই এরিয়ায়। সামান্য একটু ভেতরে। তোমার উদ্বেগের কারণ নেই। আমি আছি।

পার্ক স্ট্রিটে রঞ্জনের নির্দেশমতো একটা সংকীর্ণ ঘোরালো রাস্তায় ঢুকল টিনা। তারপর রঞ্জন একখানে বলল, এখানেই রাখো।

গলি রাস্তা আলো কম। কোনও রকমে দুটো গড়ি পাশাপাশি যাতায়াত করতে পারে। গাড়ি লক করার পর টিনা বলল, এ কোথায় আনলে আমাকে?

ওঃ টিনা! একটু সাহসী হও। এস।

বাঁদিকে মিটমিটে আলোয় একটা চওড়া দরজা এবং সিঁড়ি দেখা যাচ্ছিল। রঞ্জন বলল, লিট নেই কিন্তু। আমার হাত ধরতে পারো। দোতলায় স্টুডিও। দেখো, সাবধানে।

আমি পারব।

 ও কে!

দোতলায় একটা ঘরের দরজার সামনে পৌঁছে রঞ্জন বলল, এখনও এসে পৌঁছাননি দেখছি! আমাকে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়েছেন। চলো, অপেক্ষা করা যাক।

টিনা দেখল দরজার মাথায় ফলকে লেখা আছে ভিডিওজোন। রঞ্জন দরজা খুলে বাংলায় বলল, আরে বাবা! বাঘের গুহা নয়। রীতিমতো স্টুডিও। দেখতে পাচ্ছ না? সে সুইচ টিপে আলো জ্বালল।

টিনা একটু দ্বিধার সঙ্গে ঢুকল। রঞ্জন দরজা বন্ধ করে বলল, উটকো লোক ঢুকে পড়তে পারে। দরজা বন্ধ করাই ভাল। ওই দেখ, ক্যামেরা রেডি করা আছে। পাশের ঘরে। সে পাশের ঘরের পর্দা তুলে দেখাল। দরজা খোলা ছিল ওঘরের।

দুটো ঘরের মেঝে কার্পেটে ঢাকা। দেওয়ালে অজস্র ছবি সাঁটা আছে। সবই দেশি-বিদেশি চিত্রতারকাদের ছবি। মাঝে মাঝে কয়েকটা নুড ছবিও।

এ ঘরে সোফাসেট, অফিসের মতো সাজানো চেয়ার টেবিল আলমারি। পাশের ঘরে শুধু একটা ডিভান। সেটা শেষ প্রান্তে রাখা। অন্য প্রান্তে একটা মুভি ক্যামেরা। স্ট্যান্ডে চাকা লাগানো।

রঞ্জন বলল, যে কোনও মুহূর্তে মিঃ রঙ্গনাথন এসে পড়বেন। তুমি ওই ডিভানে বসো।

টিনা একটু আড়ষ্টভাবে বসল।

রঞ্জন হাসল। প্রচণ্ড আলো ফেলা হবে তোমার ওপর। সহ্য করতে পারবে তো? দেখাচ্ছি।

সে পটাপট কয়েকটা সুইচ টিপে দিতেই এক হাতে চোখ ঢাকল টিনা।

সে কী! হাত নামাও! বি স্মার্ট অ্যান্ড বিউটিফুল! একটা পোজ নিয়ে বসো।

পাচ্ছ না একটু দ্বিধার সঙ্গে ঢুকল।ভাল। ওই দেখ, ক্যামেন্থল ছিল ওঘরের।

ভীষণ গরম লাগছে!

ফ্যান চালিয়ে দিচ্ছি। বলে সে সুইচ টিপে ফ্যান চালিয়ে দিল।

তবু বড্ড গরম।

 ওটা কিছু না। সয়ে যায়। তুমি কখনও সুটিং দেখনি মনে হচ্ছে?

 নাহ!

শোনো! তোমার কি ড্রিঙ্ক করার অভ্যাস আছে? কখনও ড্রিঙ্ক করেছ?

কেন?

একটু ব্র্যান্ডি বা ওয়াইন খেলে তোমার আর গরম লাগবে না। আড়ষ্টতাও কেটে যাবে। দুএক চুমুক খেয়েই দেখ। আরে বাবা! ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আলোগুলো নিভিয়ে রঞ্জন ফের বলল, ওই দেয়ালে কত স্ক্রিন টেস্ট করা মেয়েদের ছবি। প্রথম-প্রথম ওরা ঠিক তোমার মতো বিহেভ করে। তারপর দিব্যি স্মার্ট হয়ে যায়। দু-তিন চুমুক ড্রিঙ্ক যথেষ্ট। নেশা হয় না। কিন্তু আড়ষ্টতা কেটে যায়।

রঞ্জন দেয়ালের সেলার খুলে একটা গ্লাস এবং একটা ব্র্যান্ডির বোতল বের করল।

টিনা আস্তে বলল, আই লাইক ব্র্যান্ডি!

সো নাইস গার্ল ইউ! সো বিউটিফুল! টেক ইউ ইজি! একটু জল মিশিয়ে দিই। কেমন?

রঞ্জন একটা বোতল থেকে জল ঢেলে দিল গ্লাসের ব্র্যান্ডিতে। তারপর গ্লাসটা টিনার হাতে তুলে দিল। টিনা চুমুক দিল। তারপর দেয়ালের ছবিগুলো দেখতে থাকল। বলল, ওরা কি চান্স পেয়েছে?

সবাই পায়নি। এই যে দেখছ, নীতা সেন। তার প্রথম স্ক্রিন টেস্টের ছবি এটা।

টিনা চোখ বড় করে বলল, নীতা সেন? ইউ মিন–

ইয়া! হাসল রঞ্জন। এখন যার বাজারদর সেভেনটি ফাইভ টু এইট্টি লাখ! বাট মানি ইজ নট দা কোয়েশ্চান!

টিনা পর-পর দুবার চুমুক দিল। তারপর হাসল। লাইট প্লিজ! নাও লেট মি সি, হোয়াট আই ফিল।

রঞ্জন সুইচ টিপলে সেই জোরালো আলোগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ল টিনার ওপর। এবার সে চোখ ঢাকল না। রঞ্জন বলল, একটু কাত হয়ে বসো তো! লেন্সে দেখে নিই। হ্যাঁ, আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। আর শোনো, তোমার হ্যান্ডব্যাগটা ডিভানের ওপাশে নামিয়ে রাখো। দ্যাট লুকস অড!

সে এগিয়ে টিনাকে একপাশে কাত করে বসিয়ে দিল। তারপর ক্যামেরার লেন্সে চোখ রেখে বলল, লেন্সের দিকে তাকিয়ে থাকো। হাসি চাই! ওয়েলডান! এবার গ্লাসে চুমুক দাও!…ও কে!…এবার হ্যাঁ, লজ্জার কিছু নেই। আঁচলটা এমনভাবে ফেলে দাও, যেন নিজে থেকে খসে যাচ্ছে। আই মিন, তুমি তোমার শরীর থেকে মনকে আলাদা করে দাও। কিপ দেম সেপারেট। ও কে?..নাও, ওপেন দা ব্লাউজ! ইয়েস! শো ইওর ভিগারাস র‍্যাদার আই সে ডেঞ্জারাস বডি! অ্যান্ড নাও থিঙ্ক! ইওর মাইন্ড ইজ ইওর বডি। ও কে? ওপেন দা ব্রা ইয়া! গুড! ওয়ান্ডারফুল!…নাও। ওপেন ইওরসেলফ অ্যাজ ইফ এ ফ্লাওয়ার ইজ ব্লসমিং। আন্ডারস্ট্যান্ড?..ও কে! ফাইন! নাও লাই ডাউন অন দা ডিভান কিপ দা লেফট নী আপ!..আপ! আপ! আপ! ওকে!

মুভি ক্যামেরার সুইচ অন করে রেখে রঞ্জন তৈরি হলো সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় কামেরার দিকে পেছন ফিরে সে এগিয়ে গেল ডিভানের দিকে। কোনও বাধা পেল না। টিনার চোখ বন্ধ।

একটু পরে রঞ্জন উঠে এসে ক্যামেরা বন্ধ করল। ফিল্মের ক্যাসেটটা বের করে নিল। এটা আসলে ভি ডি ও ক্যামেরা ও পোশাক পরে সে জোরালো আলোগুলো নিভেয়ে দিল। টিনার কাছে গিয়ে প্যান্টি, ব্রা, সায়া, ব্লাউজ, এবং তারপর শাড়িটা পরানোর চেষ্টা করল। পারল না। শাড়িটা কোনও রকমে জড়িয়ে দিল একুশ বছরের তরুণীর শরীরে।

তারপর সে স্ট্যান্ড থেকে ক্যামেরাটা খুলে একটা ব্যাগে ভরল। কাঁধে ঝুলিয়ে বেরিয়ে এল স্টুডিও থেকে। দরজা ভেজিয়ে রেখে সাবধানে নেমে গেল নিচে।

গলি রাস্তা পেরিয়ে গিয়ে বড় রাস্তায় পৌঁছে রঞ্জন ট্যাক্সি খুঁজতে থাকল।

পাশের ঘরে টেলিফোন বেজে উঠল। কিছুক্ষণ বাজার পর বন্ধ হয়ে গেল। আবার স্তব্ধতা। শিলিং ফ্যানটা শোঁ শোঁ শব্দ করলেও সাউন্ডপ্রুফ স্টুডিওর গভীর স্তব্ধতা সেই শব্দকে গ্রাস করছে। এয়ারকন্ডিশন করার প্ল্যান ছিল রঞ্জনের। কিন্তু রঙ্গনাথন মৃত। মৃতেরা কথা বলে না।

প্রায় আধঘণ্টা পরে টিনা তাকাল। খুব দুর্বল বোধ হলো শরীর। কোথায় শুয়ে আছে বুঝতে পারল না সে। কী একটা স্বপ্ন দেখছিল যেন, ঠিক ফিল্মে যেমন হয়। তার মাথার ওপর একটা ফ্যান ঘুরছে। ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সহসা তার ষষ্ঠেন্দ্রিয় সচকিত হলো।

উঠে বসার চেষ্টা করল টিনা। কিন্তু মাথা টলমল করছে। দৃষ্টিতে আচ্ছন্নতা। সে দুহাতে মুখ ঢেকে কেঁদে ফেলল। ক্রমে তার স্মৃতি ফিরে এল। রঞ্জন রায় তাকে এখানে এনেছিল। এই ডিভানে বসে সে কয়েক চুমুক ড্রিঙ্ক করেছিল। তারপর?

 তারপর আর কিছু মনে পড়ছে না। তবে পরনের শাড়ি, ব্রেসিয়ার, প্যান্টি, ব্লাউজ যে ঠিক মতো সে পরে নেই, এটা বুঝতে পারছে। বুঝতে পারছে আরও কী ঘটেছে।

টিনা সহসা নিজের ওপর খেপে গেল। সেই ক্ষিপ্ততা তার চেতনা প্রখর করল ক্রমশ। এবার সে সাবধানে উঠে দাঁড়িয়ে চাপা হিংস্র কণ্ঠস্বরে বলল, রঞ্জন! ইউ ডার্টি সোয়াইন! সন অফ এ বিচ!

সে পোশাক গুছিয়ে পরে নিল। তারপর দেখল ক্যামেরার স্ট্যান্ডটা আছে মাত্র। তা হলে সে একটা ফাঁদে পা দিয়েছিল।

কিন্তু এখন আর অনুশোচনার মানে হয় না। সাবধানে পা ফেলে টিনা ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সেইসময় মনে পড়ল হ্যান্ডব্যাগটার কথা। ওতে তার গাড়ির চাবি আছে।

ডিভানের ওপাশে মেঝে থেকে ব্যাগটা কুড়িয়ে নিয়ে টলতে টলতে বেরিয়ে গেল টিনা। নিচের রাস্তায় নেমে তার গাড়ির কাছে গিয়ে সে দম নিল। তারপর লক খুলে গাড়িতে ঢুকল। এতক্ষণে সে সুস্থবোধ করল।

কিন্তু টিনা মুখার্জি হয়তো তত সুস্থ ছিল না। তার পায়ের চটি ফেলে এসেছে। স্টুডিওতে। চটি আনতে যাওয়ার অবশ্য মানে হয় না।…

.