লিমেরিক

লিমেরিক

লিমেরিক

কুমীর পিঠে বামনটারে দেখে
বিজ্ঞ লোকে বললে তারে ডেকে,
‘ব্যাপারখানা নয়কো সোজা
হাবভাবে ওর যাচ্ছে বোঝা
ভোরের দিকে দেখবে তোমায় চেখে।’

লিমেরিক

বললে বুড়ো, ‘বোঝো ব্যাপারখানা—
একটা মোরগ, চারটে শালিকছানা,
দুই রকমের হুতোমপ্যাঁচা
একটা বোধহয় হাঁড়িচাঁচা
দাড়ির মধ্যে বেঁধেছে আস্তানা।’

লিমেরিক

মিচ্‌কে বুড়ো চ’ড়ে চিচিং গাছে
হাত-পা ছুঁড়ে তিড়িং তিড়িং নাচে।
বললে অবাক লোকে,
‘আহা, নামাও ধ’রে ওকে;
গাছের দফা শেষ, ও যদি হাঁচে।’

লিমেরিক

এক যে সাহেব তার যে ছিল নাক
দেখলে পরে লাগত লোকের তাক।
হাঁচতে গিয়ে হ্যাঁচ্চো হ্যাঁচ
নাকের মধ্যে লাগল প্যাঁচ।
সাহেব বলে, ‘এইভাবেতেই থাক।’

লিমেরিক

পাগলা গোরু সামলানো যা ঝক্কি,
আমার কথা শুনবে কোনো লোক কি?
কাছে যখন পড়বে এসে
বলবে তারে মিষ্টি হেসে,
‘আমার ওপর রাগ কোরো না লক্ষ্মী!’

লিমেরিক

কেনারাম ব্যাপারীর ভৃত্য
বায়সের সাথে করে নৃত্য।
লোকে বলে, ‘এইভাবে
কাকটার মাথা খাবে।
ঢং দেখে জ্বলে যায় পিত্ত।’

লিমেরিক

শ্যালকের শ্যাম গাংগুলী
হেসে বলে, ‘যাই, ফুল তুলি।’
গিয়ে দেখে বাগানেতে
ফুলগাছে ওত পেতে
বসে আছে রামবুলবুলি।

লিমেরিক

কঞ্জুস বুড়ো বসে গাছে
পাখিদের বলে, ‘আয় কাছে—
তোরা যদি ঠুক্‌রিয়ে
দাড়িগুলো নিস নিয়ে,
নাপিতের খরচাটা বাঁচে।’

লিমেরিক

টিয়ার ঠোঁটে দেখে রঙের বাহার
বেজায় খুশি হরেকৃষ্ণ নাহার।
পরক্ষণেই খেয়ে কামড়
বাবু বলেন, ‘আ মর, আ মর!
এক্ষুনি ছাড়, এ কোন দেশী আহার?’

লিমেরিক

চক্রদহের সত্যভূষণ চাকী
হাঁসের সঙ্গে বড্ড মাখামাখি।
লোকে বলে ব্যাপার দেখে,
‘ওদের সঙ্গে থেকে থেকে
চাকী মশাই হয়ে যাবেন পাখি।’

লিমেরিক

ওই দিকে দেখ দেখি তাকিয়ে—
বিদঘুটে রাক্ষস নাকি এ?
আরে না না এযে হরু
হয়েছে সে এত সরু
মামা তার রাখে তারে পাকিয়ে।

লিমেরিক

এক যে ছিলেন আজব ঢ্যাঙা মোমবাসায়
দেশ বিদেশে ঘোরেন হেঁটে লম্বা পায়;
শেষটা এসে ইন্ডিয়াতে
ভড়কে গিয়ে হিন্দি বাতে
বলেন তিনি, ‘বলব কথা কোন ভাষায়?’

লিমেরিক

কাটমুণ্ডুর এক নেপালি
ঘোড়া থেকে পড়ে হল দুফালি।
আঠা দিয়ে জোড়া লেগে
বলল সে মহা বেগে,
‘তোরা কেন ঘোড়াটাকে ক্ষ্যাপালি?’

লিমেরিক

খুদে বাবু ফুল গাছে ব’সে যেন পক্ষী
মৌমাছি এসে বলে ‘এ তো মহা ঝক্কি!
মধু খাব, সরে যাও!’
বাবু বলে ‘চোপ রাও!
তুমি আছ বলে গাছে বসবে না লোক কি?’

লিমেরিক

চোরের ভয়ে রামনারায়ণ খোট্টা
ঘুমোয় ব’সে বন্ধ ক’রে দোরটা,
এই সুযোগে দুই ইঁদুরে
দিব্যি খেলো পেটটি পুরে
ঝোলানো তার সাধের হ্যাট আর কোটটা।

লিমেরিক

নিকুঞ্জ পাকড়াশী
যেই বাজালো বাঁশী
তক্ষুনি এক কালকেউটে
বুট থেকে তার লাফিয়ে উঠে
বলল, ‘এবার আসি।’

লিমেরিক

কে জানে এ নিশাচর দেখে মোরে কি চোখে!
মোর পাশে দেখে যদি ভাবে অবিবেচকে
এ আমার কেউ হয়,
আমি বলি মোটে নয়—
কোনোখানে মিল নেই মানুষে ও পেচকে।

লিমেরিক

নাকুদার অকালেই পড়ে গেল টাক,
বন্ধুরা বলে ‘ওরে ঢাক্, ওটা ঢাক্।’
নাকু কিনে আনে উইগ
ভেরি ভেরি, ভেরি বিগ—
ঢেকে যায় সব কিছু, বাকি থাকে নাক।

লিমেরিক

যত পাখি আছে মোমবাসাতে
বসে এসে আমার এই নাসাতে
যেই বাজে সাড়ে ছটা
একে একে সব কটা
উড়ে যায় যার যার বাসাতে।

লিমেরিক

লালুবাবু বাড়ি তাঁর লাউডন স্ট্রীট
পাৎলুনে বসে দেখ অতিকায় কীট
তাই দেখে রাম দাঁ
এনে দেন রাম-দাঁ
বলেন, ‘এর এক কোপে কীট হবে ঢিট।’

লিমেরিক

দ্যাখো ভিসুভিয়াসের পরে চড়ি
খুড়ো বলে, ‘যাই, নেমে পড়ি।’
যেই কথা সেই কাজ
তাই দেখ খুড়ো আজ
খুড়ো নয়, খুড়ো-চচ্চড়ি।

লিমেরিক

বাজায় বাঁশি মেমসাহেবে
কেউ আসে না কাছে
সবাই জানে বাঁশির তানে
তিন শূয়োরে নাচে।

লিমেরিক

ওই দেখ চেয়ারেতে বসে
রামখুড়ো মরে আপশোষে
সাধ করে ধরে আনা
পোষা ফড়িং-এর ছানা
আজকাল খুড়োকেই পোষে।

লিমেরিক

নাসিকের সাহেবের
বাহারের নাসিকা,
বাঁশি হয়ে বাজে সেটা
লোকে বলে বাঁশিকা।

লিমেরিক

খেয়ে কাঁকড়ার ঝোল পুরী হোটেলেতে
বাবুবিবি বালুতটে যান হাওয়া খেতে
সেথা মহা সংকট
ধেয়ে আসে কর্কট
দুজনারে চটপট পোরে উদরেতে।

লিমেরিক

কেনারাম সরখেল কলকাতা বাস
কচ্ছপ চড়ে দেশ ভ্রমণের আশ
লোকে তারে বললে
‘এই ভাবে চললে
টালা থেকে টালিগঞ্জ লাগে তিন মাস।’

লিমেরিক

ওই যে দেখ খ্যাঁককুকুরের ছানা
ক্যামবোডিয়ার বাজার থেকে কেনা
মেমসাহেবের পোষা
করলে পরে গোসা
জ্যামরুটি খায় একশো উনিশখানা।

লিমেরিক

যেখানে যে বই আছে পাখি সম্বন্ধে
মন দিয়ে পড়ি সব সক্কাল-সন্ধ্যে
আজ শেষ হবে পড়া, আর বই বাকি নেই
আপশোষ শুধু—এই তল্লাটে পাখি নেই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *