মেছো গান

মেছো গান

শীতকালেতে গাছের পাতা পড়বে যখন ঝ’রে
গানটা আমি গাইব তোমার কানে,
বসন্তেতে সবুজ কচি ধরলে গাছের ’পরে
তোমায় ডেকে বলব গানের মানে।
গ্রীষ্মকালে গাঁয়ের মাটি উঠবে যখন তেতে
গানের মানে ঢুকবে তোমার মাথায়,
শরৎকালের সোনার ফসল ফললে পরে ক্ষেতে
গানটা লিখে রাখতে পার খাতায়॥
তবে শোনো—মাৎলার উত্তরে আছে যত মৎস্যেরা
পত্তর লিখে দিনু, ‘শুনো ওহে বৎসেরা—’
মৎস্যের বৎসেরা খৎ পাওয়া মাত্তর
উত্তর দিল মোরে সত্বর সত্বর।
জবাবেতে বললে তারা অবাক ক’রে মোরে—
‘তুমি যেটা বলছ সেটা করব কেমন ক’রে?’
আমি তখন পালটা তাদের দিয়ে দিলাম জবাব—
‘করতে হবেই। ভেবেছ কী? তোমরা বুঝি নবাব?’
এবার তারা মুচকি হেসে জানায় মোরে লিখে—
‘মেজাজ যদি দেখাও তবে পড়বে বেগতিকে।’
এই হবে উত্তর কেউ কি তা জানত?
‘ধুত্তর’ বলে তাই করি চক্রান্ত।
কংসের পাত্তর নিয়ে যাই কলেতে,
রাত্তির হলে পরে ভরি তায় জলেতে।
এমন সময় এক বুড়ো এসে বলে—
‘মাছেরা যে ঘুম দেয় ডাঙাতে।’
আমি বলি, ‘চট্‌ ক’রে যাও দিকি চ’লে,
দেখো যদি পার ঘুম ভাঙাতে।’
বুড়ো দেখি আছে ঠিক সেইভাবে দাঁড়িয়ে,
বলি, ‘কী হে শুনতে কি পাচ্ছ?’
তাই শুনে পাক খেয়ে বলে দাড়ি নাড়িয়ে,
‘কেন বাপু খামখা চেঁচাচ্ছ?’
তার পরে চুপচাপ ভেবেটেবে নিয়ে
বলে, ‘যেতে পারতাম ঠিকই—’
আমি বলি, ‘থাক্‌ থাক্‌, কাজ নেই গিয়ে।
এই বেলা স’রে পড়ো দিকি!’
এইবার হাতে নিয়ে মোক্ষম হাতুড়ি
চলো যাই দেখে আসি মৎস্যের চাতুরি।
গিয়ে দেখি—ওমা, একি, নেই কোন সন্দ’
দরজাটা ভেতরের দিক থেকে বন্ধ!
ভেঙে তবে ঢুকব কি? ভেবে আমি দম নিই,
যেই ঠেলা দিতে যাব, দেখলাম অমনি—

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *