ফের্ডিনান্ট জাওয়ারব্রুখ

ফের্ডিনান্ট জাওয়ারব্রুখ

বৈদ্যরাজ জাওয়ারব্রুখকে নিয়ে আবার সুইজ-জর্মন কাগজে বাদ-প্রতিবাদ আরম্ভ হয়েছে। প্রথম দলের বক্তব্য, সত্যই বৃদ্ধ বয়সে তার মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটেছিল; অন্য দলের বক্তব্য তিনি পূর্ব-বার্লিনের সোভিয়েত কূটনীতির বলির পাঁঠা হয়েছেন। বার্লিনের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল শারিতে; (charite- চ্যারিটি খয়রাতি) প্রতিষ্ঠানের তিনি অধ্যক্ষ ছিলেন, এবং বার্লিন ভাগাভাগির পর শারিতে পড়েছিল পূর্ব-বার্লিনে, রাশান আওতায়।

এই কলকাতা শহরের অন্তত একজন খ্যাতনামা চিকিৎসককে আমি চিনি, যিনি জাওয়ারব্রুখের শিষ্য। তিনি মুনিকে তাঁর কাছে বুকের যক্ষ্মার অপারেশন শেখেন– জাওয়ারব্রুখ বহু বৎসর মুনিক হাসপাতালেরও বড় কর্তা ছিলেন। এছাড়া তাঁর অন্যান্য শিষ্যও হয়তো কলকাতায় আছেন। অবশ্য বুকের, মাথার ও ক্যানসারের সার্জারি নিয়েই যাদের কারবার তাঁরাই জাওয়ারব্রুখের গবেষণার সঙ্গে অল্পাধিক পরিচিত।

জর্মন সার্জন-সমাজ মনে করেন, পৃথিবীর তিনজন সার্জনের নাম করতে হলে জাওয়াব্রুখের নাম কালানুক্রমে তৃতীয়। অন্য দু জন বোধ হয় হিপপোক্রাতেস ও নেপোলিওনের সার্জন–কিন্তু আমি কি চিকিৎসাশাস্ত্র, কি সে শাস্ত্রের ইতিহাস কোনওটারই বিন্দুবিসর্গ জানিনে বলে হলপ খেয়ে কিছুই বলতে পারব না। তদুপরি এ ধরনের নির্ঘন্ট নির্ণয় সব সময়ই কিঞ্চিৎ উদ্দাম হয়ে থাকে– যেরকম পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্য নির্ণয়ে ভিন্ন লোক ভিন্ন নির্ঘণ্ট দেয়।

অতএব অতিশয় সারবান আপত্তি উঠতে পারে, চিকিৎসা-শাস্ত্রের কিছুই যখন আমি জানিনে, তখন হাতের নাগালের বাইরে যে শল্যরাজ জাওয়ারব্রুখ বিরাজ করছেন, তাঁর প্রতি আমি উদ্বাহু হয়েছি কেন? উত্তর অতি সরল। এই শল্যরাজ মৃত্যুর পূর্বে একখানি নাতিবৃহৎ আত্মজীবনী লেখেন–বস্তৃত পুস্তকখানি প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর পর এবং সেটি আদৌ শল্যরাজ বা বৈদ্য-সম্প্রদায়ের উদ্দেশে রচনা হয়নি; রচনা হয়েছে আপনার-আমার মতো মামুলি জনের জন্য। এমনকি সে পুস্তকে ক্যানসার সম্বন্ধে তাঁর দীর্ঘ জীবনব্যাপী গবেষণার ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ যে প্রবন্ধটি উদ্ধৃত করেছেন, সেটিও সাধারণ জনের উদ্দেশে লিখিত, কারণ তিনি সেটি সর্বসাধারণের উপকারার্থে জর্মন রেডিও থেকে বেতারিত করেন। অতি সরল জর্মনে, সর্বপ্রকারের চিকিৎসাসংক্রান্ত পারিভাষিক শব্দ সযত্নে বর্জন করে তিনি এই বেতার-ভাষণটি নির্মাণ করেছিলেন বলে সেটি জর্মনবালকেও বুঝতে পারে– বাংলায় অনুবাদ করলে বঙ্গবালকও বুঝতে পারবে।(১)

কিন্তু এইটেই সর্বপ্রধান বা সর্বশেষ তত্ত্ব নয়। তাঁর আত্মজীবনীর সাহিত্যিক মূল্য আছে, এবং তার লেখার ভিতর দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে তাঁর হাস্যকৌতুকোজ্জ্বল নীল চোখ দুটি প্রকাশ পায়। তার সামান্য একটি উদাহরণ দিই।

ব্যঙ্গরস অতিশয় প্রাচীন রস– করুণ ও বীর রসের সমবয়সী সে। প্রাচীনতম গ্রিক সাহিত্যে তার ভূরি ভূরি নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু অসূয়া সে রসের উৎস বলে আমাদের রসপ্রিয় মনও সেটা সব সময় গ্রহণ করতে পারে না। বিশুদ্ধ হাস্যরস যেটা সৃষ্টি করার জন্য কাউকে পীড়া দিতে হয় না, নট অ্যাট দি কসট অব এনি ওয়ান– আপনার আনন্দে উচ্ছল এবং সেটা ব্যঙ্গরসের বহু পরবর্তী যুগের রস। এবং আমার ব্যক্তিগত শাবাসি সেই হাস্যরসের, সেই ব্যঙ্গরসের উদ্দেশে যেখানে রসস্রষ্টা নিজেকে নিয়ে নিজে হাসেন, নিজেকে ব্যঙ্গ করেন, লাফট অ্যাট হিজ ওন কষ্ট। তারই একটি উদাহরণ দিই :

জাওয়ারব্রুখ বলেছেন, তাঁর সময়কার এক বিখ্যাত চিকিৎসাশাস্ত্রের অধ্যাপক ছাত্রদের মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষা নেওয়ার পর প্রতিবারেই অতিশয় গম্ভীর কণ্ঠে বলতেন, ‘এই পৃথিবীতে বিস্তর গর্দভ নিজেদের ডাক্তাররূপে পরিচয় দিয়ে নির্ভয়ে অগুনতি লোক মেরে বেড়াচ্ছে; তার ওপর যদি আরও একটা গর্দভ বাড়ে তাতে করে কণামাত্র ক্ষতি বৃদ্ধি হবে না। তুমি পরীক্ষা পাস করলে।’ জাওয়ারব্রুখও তাই তার যুগের শিক্ষার্থীদের সম্বন্ধে উচ্চ ধারণা পোষণ করতেন না। কিন্তু অন্তত একবার তাঁর শিক্ষা হয়ে যায় এ বাবদে। জাওয়ারব্রুখ লিখছেন, সকাল দশটায় তিনটি ছেলে আসবে আমার কাছে ভাইভা দিতে। আমি নার্সকে বললুম, ক্যান্ডিডেটরা এলে অমুক রোগীকে পাঠিয়ে দিয়ে তার পেটে ছিল টিউমার। ওরা এলে আমি কাগজপত্র দস্তখত করতে করতে একজনকে বললুম, রুগীকে পরীক্ষা করে বলতে হবে তার কী হয়েছে। আমি কাজে ডুব মারলুম। দশ মিনিট পরে শুধালুম, “কী হল?” ছেলেটা ভয়ে ভয়ে বললে, “কিছুই তো পেলুম না স্যার।” আমি হুঙ্কার দিয়ে বললুম, “গেট আউট”- আর নামে দিলুম ঢ্যারা কেটে। তার পর একই আদেশ দিলুম দু নম্বর ক্যান্ডিডেটকে। একেও যখন শুধালুম, কী পেল সে– সে প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে একই উত্তর দিল। ছাড়লুম আরেক হুঙ্কার, কাটলুম আরেক ঢ্যারা। এবারে তিন নম্বরের পালা। সে-ও যখন ফেল মারলে তখন আমি ছাড়লুম শেষ হঙ্কার। এ ছেলেটি কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে হাওয়া না হয়ে শান্ত কণ্ঠে বললে, “তা হলে আপনি দেখান না স্যার, কী হয়েছে।” কী! এত বড় আস্পদ্দা! দেখাচ্ছি! লম্ফ দিয়ে গেলুম রুগীর কাছে, পেটে দিলুম হাত। ও হরি! কোথায় টিউমার? ভুলে অন্য লোক পাঠিয়েছে নার্স! তখন শুরু হয় আমার আর্তরব। “আরে, আরে, কোথায় গেল সেই দুই ক্যান্ডিডেট। নিয়ে এসে তাদের।” এ স্থলে সে ক্যান্ডিডেট বিশ্ববিখ্যাত জাওয়ারব্রুখকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল, তাকে বোধ হয় আর কোনও পরীক্ষাতে না ফেলে সঙ্গে সঙ্গে পয়লা নম্বরি ডিগ্রি দেওয়া উচিত।’

এ রকম আরও বহু মজার মজার কথা আছে এই অসাধারণ পুস্তকে; বস্তুত পুরো বইখানাই হাস্যরসের কুমকুমে কুমকুমে ভর্তি। পাঠকের চটুল হৃদয়ে একটুখানি চাপ পড়লেই আবীরে আবীরে ছয়লাপ। কিন্তু এর ফাঁকে ফাঁকে আবার ট্র্যাজেডির করুণ রসও আসে বলে সে রস যেন জল এনে দেয় চোখের পাতায়, বুক ভরে দেয়, নিবিড়তর ব্যথায়– আরও বেশি।

একবার একটি মহিলা তাঁর কাছে এসে বললেন, তাঁর নিশ্চয়ই ক্যানসার হয়েছে। ডাক্তার তাঁকে পাঠিয়ে দিলেন ভিন্ন ভিন্ন ল্যাবরেটরিতে যেখানে আধুনিকতম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রোগের জাতগোত্রের বিচার হয়। নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁরা সবাই একবাক্যে সমস্বরে বললেন, ‘ক্যানসার নয়’।

সব শুনে মহিলাটি মাথা নেড়ে বললেন, ‘না, হ্যের প্রফেসর, এটা ক্যানসারই বটে।’

মহিলাটি কয়েক দিন পর আবার এসে ক্যানসারের ফরিয়াদ করলেন। আবার গোড়ার থেকে তাবৎ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হল, আবার নির্ধন্দুনেতিবাচক উত্তর এল। এই করে করে ছ মাস ধরে মহিলাটি আসেন– তাঁর মনে কোনও সন্দেহ নেই, তাঁর উদরবেদনা ক্যানসারজনিত।

শেষটায় জাওয়ারব্রুখ স্থির করলেন, কাটাই যাক পেট। মাদামকে তখন বলতে পারবেন, স্বচক্ষে দেখেছি পেটে কোনও ক্যানসার নেই। কিংবা হয়তো তিনি ভেবেছিলেন, অনেক বর্ষীয়সী মহিলার এই অপারেশন-মেনিয়া থাকে; হয়তো তারা আপন জানা-অজানায় সেন্টার অব অ্যাট্রাকশন বা কৌতূহলের কেন্দ্র হতে চান। তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য তৈরি করা হল।

তার পর কবিরাজ জাওয়ারব্রুখ যা বলেছেন তার মোদ্দা কথা : ‘আমরা তো নিশ্চিন্ত মনে পেট খুললুম। সর্বনাশ! এ কী দেখি! পেট-ভর্তি ক্যানসার! এবং এখন যে চরমে পৌঁছেছে সে অবস্থায় অপারেশনের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। সন্তপ্তচিত্তে আমরা পেট সেলাই করে দিলুম। মহিলা সম্বিতে ফিরলে আমি তাঁকে বললুম, ‘হ্যাঁ, ক্যানসারই ছিল; আমরা সেটা কেটে সরিয়ে দিয়েছি।’

জাওয়ারব্রুখ তার পর বললেন, ‘মহিলাটি প্রথম যেদিন আমার কাছে এসেছিলেন তার সঙ্গে সঙ্গে যদি অপারেশন করতুম, তবে হয়তো তাকে বাঁচাতে পারতুম। কিন্তু প্রশ্ন, আধুনিকতম বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি যখন নঞর্থক উত্তর দেন, তখন শুধুমাত্র রোগীর অনুমানের ওপর নির্ভর করে পেট কাটা যায় কী প্রকারে?’

জাওয়ারব্রুখ সম্বন্ধে ভবিষ্যতে আপনাদের কাছে আরও নিবেদন করার বাসনা রইল। কিন্তু আমার বিশ্বাস, কোনও বাংলাভাষী সার্জন সেটা করলেই ভালো হয়; আমার মতো আনাড়ি তা হলে অনধিকার প্রবেশ থেকে নিষ্কৃতি পায়।

কলকাতা ও বোম্বাইয়ে যেসব ক্যানসার প্রতিষ্ঠান আছে, তাঁরা মাঝে মাঝে খবরের কাগজে বিবৃতি প্রকাশ করে সাধারণ জনকে সাবধান করে দেন, শরীরে কোনও কোনও আকস্মিক বা মন্দগতিতে বর্ধমান পরিবর্তন দেখলে ক্যানসারের সন্দেহ করতে হয়। এগুলো আমি সর্বদাই শ্রদ্ধা ও মনোযোগ সহকারে পড়ি।

ঠিক ওই একই সুবাদে প্রফেসর ডক্টর গেহাইমরাট জাওয়ারব্রুখ অবতরণিকা হিসেবে কয়েকটি কথা বলেছেন এবং আপন বক্তব্য বোঝাতে গিয়ে এমন একটি অত্যুৎকৃষ্ট বিরল তুলনা দিয়েছেন, যেটি ব্যবহার করতে পারলে যে কোনও যশস্বী সাহিত্যিকও শ্লাঘা অনুভব করবেন। বৈদ্যরাজ যা বলেছেন, তার নির্যাস : অধিকাংশ রোগই কোনও না কোনও সাবধানবাণী, ইঙ্গিত, ওয়ার্নিং দিয়ে আসে। যেমন, সামান্য মাথা ধরল– সেইটে ওয়ার্নিং পরের দিন জ্বর হল। কিন্তু ক্যানসার কোনও ওয়ার্নিং তো দেয়ই না, বরঞ্চ সে নিতান্ত নিরপরাধীর মতো দেখা দেয়। যেমন, আপনার জিভে একটি দানা দেখা দিল। সেটাতে কোনও বেদনা নেই, আপনার কোনও অসুবিধে হচ্ছে না, আপনি ভাবলেন, এরকম তো কত দানা এখানে-সেখানে দেখা দেয় আবার মিলিয়ে যায়, এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার বা চিকিৎসকের কাছে যাবার কোনও প্রয়োজন নেই। তার পর সেটা অতি ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল, কিন্তু কোনও বেদনা বা অস্বস্তি নেই বলে আপনি তখনও কোনও প্রতিকার করলেন না। তার পর একদিন ঢোক গিলতে, খাবার গিলতে আপনার অসুবিধা হতে লাগল। আপনি তখন গেলেন ডাক্তারের কাছে, কিন্তু হায়, ততদিনে বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে, তখন আর অপারেশন করা যায় না। আপনি যদি, দানা যখন ছোট ছিল, তখন আসতেন, তবে সার্জন আপনাকে অনায়াসে ক্যানসারমুক্ত করতে পারতেন– অবশ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর। তাই জাওয়ারব্রুখ বলছেন, ‘দানাটি আদৌ অপরিচিত শত্রুরূপে বেদনা যন্ত্রণা সঙ্গে নিয়ে এল না। ক্যানসার এল যেন আপনার কোনও বন্ধুজনের চেহারার সঙ্গে হবহু মিলিয়ে একটি মুখোশ তৈরি করে সেটা পরে। তার পর কাছে এসে হঠাৎ মুখোশ সরিয়ে ফেলে আপনার বুকে মারল ছোরা!’

এরপরই অধ্যাপক কতকগুলো চিহ্নের উল্লেখ করেছেন– এগুলোকে তিনি ওয়ার্নিং বলেননি বটে, কিন্তু সেগুলো দেখলেই তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। জিভেতে বা অন্য কোথাও দানা বা ওই-জাতীয় বস্তু বা পরিবর্তন, কণ্ঠস্বর অকারণে কর্কশ হয়ে যাওয়া, আপনার পেটের অসুখ ছিল না– হঠাৎ আরম্ভ হল দিনের পর দিন পেট খারাপ হতে, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এটা আমার অনধিকার প্রবেশ। আপনার উচিত, আমাদের যে কোনও ক্যানসার প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের সুলিখিত প্রামাণিক বিবৃতি সংগ্রহ করা! বিবৃতিতে সব ক’টা চিহ্নের পরিপূর্ণ (exhaustive) লিস্ট থাকে। আমি এযাবৎ যা লিখেছি সেটা ভুলে গিয়ে ওই বিবৃতি মন দিয়ে পড়বেন। কারণ, এগুলো আমাদের জন্যই লেখা ডাক্তারদের জন্য নয়—(২)

———-

১. এবং এর অনুবাদ করার বাসনা আমার ছিলও অবশ্য সাবধানের মার নেই বলে ক্যানসার-রোগ-বিশেষজ্ঞ আমার ভ্রাতুস্পুত্রীকে দিয়ে সেটি সেনসর করিয়ে নিতুম। এ বেতার-ভাষণটি এখনো আদৌ গাজীমিয়ার বস্তানীতে আশ্রয় নেয়নি, অর্থাৎ আউট-অব-ডেট হয়ে যায়নি। ওই ভ্রাতুস্পুত্রীর আদেশে আমি সর্বাধুনা প্রকাশিত জর্মন-বিশ্বকোষে সবিস্তর লিখিত ক্যানসার প্রবন্ধটি পড়ি। এবং যদিও সব জিনিস বুঝতে পারিনি (বিশেষ করে কুআন্ট থিয়োরি দিয়ে ক্যানসার রোগের কারণ নির্ণয়ের আধুনিক প্রচেষ্টা!) তবু, এটা লক্ষ করলুম যে ক্যানসারের পূর্বাভাস সম্বন্ধে জাওয়ারব্রুখ অজ্ঞজনকে যেসব দিকে লক্ষ রাখতে বলেছেন, সর্বাধুনিক জর্মন-বিশ্বকোষও তাই বলেছেন। ..উল্লেখযোগ্য যে, ক্যানসার গবেষণা আরম্ভ করার পূর্বে জাওয়ারব্রুথ বার্লিনের ইন্ডলজি ডিপার্টমেন্টে গিয়ে খবর নেন, প্রাচীন ভারতীয় বৈদ্যেরা ক্যানসার সম্বন্ধে কী বলে গিয়েছেন।

২. এ-প্রবন্ধ “দেশে” প্রকাশিত হওয়ার পর আমি চিকিৎসক-অচিকিৎসক একাধিক সজ্জন পাঠকের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়েছি, ক্যানসার সম্বন্ধে জাওয়ারব্রুখের প্রাগুক্ত প্রবন্ধটি যেন আমিই অনুবাদ করি। আমি করজোড়ে ক্ষমা ভিক্ষা করছি, কারণ অসুস্থতাবশত আমার দেহে শক্তি মনে উৎসাহ বড়ই হ্রাস পেয়েছে। তবে এটাও নিবেদন, আমৃত্যু দুটি প্রবন্ধ অনুবাদ করতে পারার দুরাশা আমি কখনো সম্পূর্ণ ত্যাগ করব না; ক্যানসার সম্বন্ধে প্রবন্ধটি ও অধ্যাপক ভিন্টারনিত রচিত ক্ষুদ্রাকার রবীন্দ্র-জীবনী।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *