অশ্বত্থ পাতা ব্রত
ব্রতকাল ও ব্রতচারিণী—চৈত্র মাসের শেষ দিন (চড়ক পূজার দিন) কুমারী অশ্বত্থ পাতা ব্রত গ্রহণ করে সেদিন থেকে সারা বৈশাখ মাস ভোরে কিংবা সকালবেলায় ব্রতপালন করবে। এ ব্রত কয় বৎসর করতে হবে তার খুব বাঁধাবাঁধি নিয়ম নেই। ব্রত উদযাপনের সময় চাই সোনার পাতা পাঁচটি, রূপার ফল একটি, ভুজ্যি পাঁচটি, আর পাঁচ কলসি জল। পাঁচজন ব্রাহ্মণকে খাইয়ে দক্ষিণার সঙ্গে সোনার পাতা, রুপার ফল, এসবও দিতে হয়; অভাবে মূল্য ধরে দেওয়া যায়।
ব্রতের দ্রব্যাদি: পাঁচটি অশ্বত্থ পাতা। তার একটি কচি, একটি কাঁচা, একটি পাকা, একটি শুকনো, আর একটি ঝুরঝুরে হওয়া চাই।
ব্রতানুষ্ঠান: ভোরে কী সকালবেলায় স্নানের সময় পাতা পাঁচটি নিয়ে কুমারী জলে নামবে। তারপর ডুব দেবার সময় সেগুলো মাথায় হাত দিয়ে চেপে ধরে মন্ত্র পড়বে; ডুব থেকে উঠবার সময় হাত সরিয়ে নেবে, পাতা ভেসে যাবে।
ডুব দিবার মন্ত্র:
অশ্বত্থ পাতা, কুঞ্জলতা, শ্যাম পন্ডিতের ঝি, সাকারা সুন্দরী।।
সাত বউ যায় সাত দোলাতে, সাত বেটা যায় সাত ঘোড়াতে।
কর্তা যান গজহস্তীতে, গিন্নি যান রত্ন সিংহাসনে।।
ঠাকুর ঠাকরুণ যান দোলনে।।
ভগবতী বলছেন:
পাকা পাতাটি মাথায় দিলে পাকা চুলে সিঁদুর পরে।
কাঁচা পাতাটি মাথায় দিলে কাঁচা সোনার বর্ণ ঝরে।
শুকনো পাতাটি মাথায় দিলে সুখ-সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়।
ঝুরঝুরে পাতা মাথায় দিলে মণিমুক্তার ঝুড়ি পায়।
উযাইতে পারিলে ইন্দ্রের শচী না পারিলে ভগবানের দাসী।।
কোথাও কোথাও মন্ত্রের প্রথম কয় চরণ (‘অশ্বত্থ পাতা…ঠাকুর ঠাকরুণ যান দোলনে’) বলার পর পাঁচটি মন্ত্র পড়ে পাঁচবার ডুব দেবার বিধি আছে।
মন্ত্র:
ভগবতী বলছেন:
১. পাকা পাতাটি মাথায় দিলে পাকা চুলে সিঁদুর পরে।
২. কাঁচা পাতাটি মাথায় দিলে কাঁচা সোনার বর্ণ ঝরে।
৩. শুকনো পাতাটি মাথায় দিলে সুখ-সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়।
৪. ঝুরঝুরে পাতা মাথায় দিলে মণিমুক্তার ঝুড়ি পায়।
৫. কচি পাতাটি মাথায় দিলে কমল-সম পুত্র কোলে পায়।
তারপর একঘটি জল অশ্বত্থ গাছের গোড়ায় ঢেলে নমস্কার করতে হয়। অশ্বত্থ গাছের গোড়ায় জল ঢালবার সময় বলবে:
উযাইতে পারিলে ইন্দ্রের শচী।
না পারিলে ভগবানের দাসী।।
অশ্বত্থ পাতা ব্রত সমাপ্ত।