০৩৭. ইন্দ্রালয়ে লোমশ ঋষির আগমন

ইন্দ্রের নগরে পার্থ ইন্দ্রের সমান।
নানা অস্ত্র শিক্ষা করিলেন ইন্দ্রস্থান।।
নৃত্য গীত বাদ্য শিখে চিত্রসেন স্থানে।
মাতা ভ্রাতা না দেখিয়া বড় দুঃখ মনে।।
একদিন তথায় লোমশ মহাশয়।
ইন্দ্র দরশন হেতু আসে সুরালয়।।
করযোড়ে প্রণমিল দেব পুরন্দরে।
ইন্দ্রদত্ত দিব্যাসনে বসে মুনিবরে।।
ইন্দ্রের আসনে পার্থে দেখি মুনিবর।
বিস্ময় মানিয়া মুনি ভাবে যে অন্তর।।
যে আসনে বসিতে না পান দেব মুনি।
কোন কর্ম্মে ক্ষত্র হয়ে বসিল ফাল্গুনি।।
ঋষির বিচার জ্ঞাত হয়ে পুরন্দর।
বলিলেন ব্রহ্মঋষি কি ভাব অন্তর।।
মনুষ্য দেখিয়া পার্থে ভ্রম হৈল মনে।
তুমি কি না জান মুনি, পাসরহ কেনে।।
নর নারায়ণ যেই ঋষি পুরাতন।
ভার নিবারনে জন্ম নিলেন দুজন।।
বাসুদেব নারায়ণ অজিত যে বিষ্ণু।
নরঋষি পাণ্ডবের মধ্যে হল জিষ্ণু।।
কুন্তীগর্ভে জন্ম হল আমার অংশেতে।
কেবল মনুষ্য নাম দেবতার হিতে।।
হেথায় আইল অস্ত্র শিক্ষার কারণ।
দেবের অনেক কার্য্য করিবে সাধন।।
নিবাতকবচ দৈত্য নিবসে পাতালে।
তার সম যোদ্ধা নাহি পৃথিবী মণ্ডলে।।
সুরাসুর যত লোক জিনিলেক বলে।
বহুকাল নিবসতি করে রসাতলে।।
তাহারে বধিতে শক্তি ধরে ধনঞ্জয়।
পার্থ বিনা কার শক্তি তার অগ্রে হয়।।
এ হেতু হেথায় পার্থ থাকি কত দিনে।
করিবে গমন পুনঃ মনুষ্য ভবনে।।
আমার আরতি এক শুন তপোধন।
কাম্যক বনেতে তুমি করহ গমন।।
আমার সন্দেশ যুধিষ্ঠিরে যে কহিবে।
অর্জ্জুনের কারণ উৎকণ্ঠা না হইবে।।
পৃথিবীতে তীর্থ যত আছে স্থানে স্থানে।
যত্নের সহিত তথা করে স্নান দান।।
ভীষ্ম দ্রোণ দুই যদি জিনিবার মন।
তীর্থ স্নান করি ধর্ম্ম কর উপার্জ্জন।।
বিষম সঙ্কট স্থানে আছে তীর্থগণ।
আপনি থাকিবা সঙ্গে রক্ষার কারণ।।
স্বীকার করিল মুনি ইন্দ্রের বচন।
ডাকিয়া মুনিরে তবে বলেন অর্জ্জুন।।
চলিলা কাম্যকবনে শুন তপোধন।
ভ্রাতৃস্থানে কহিবেন মোর বিবরণ।।
আপনি থাকিয়া সঙ্গে সব তীর্থে লবে।
যথা যে বিহিত স্নান দান করাইবে।।
রাক্ষস দানবগণ থাকে তীর্থ স্থানে।
সঙ্কটে করিবে রক্ষা সতত আপনে।।
মহাভারতের কথা অমৃতের ধার।
কাশী কহে, ইহা বিনা সুখ নাহি আর।।