২১. পুরুষরা কেন যৌনকর্মীদের সাহচর্য চায়

২১. পুরুষরা কেন যৌনকর্মীদের সাহচর্য চায়

মেয়েরা কেন একাধিক পুরুষসঙ্গ বা পুরুষ যৌনকর্মী কামনা করে, সে বিষয়ে আগের অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই অধ্যায়ে আলোচনা করব পুরুষরা অধিক নারী সাহচর্য বা যৌনকর্মীদের কেন কাছে যায়। একাধিক নারীসঙ্গ বা একাধিক পুরুষসঙ্গ যাঁরা চায়, তাঁদের বহুগামী বহুগামিনী বলে। তার আগে আমরা জেনে নেব বহুগামিতার মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ। বহুগামিতা হল মূলত বিবাহ বহির্ভূত যৌন-সম্পর্ক, যা একজন অবিবাহিত ও বিবাহিত উভয়ের পক্ষেই প্রযোজ্য। বিস্তারিতভাবে বললে বহুগামিতা হল পরস্পর সম্মতিক্রমে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে একই জীবনে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করার অভ্যাস কিংবা আকাঙ্ক্ষা। বহুগামিতাকে “সম্মতিসূচক, নৈতিক ও দায়বদ্ধ অ-একগামিতা” হিসাবেও বর্ণনা করা হয়। নিজেকে বহুগামী বলে পরিচয়দাতারা বিশ্বাস করে এমন এক মুক্ত সম্পর্কে যেখানে একগামিতার হিংসাপরায়ণতা নেই, আধিপত্যবাদ নেই। তাদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি কোনো ভালোবাসার সম্পর্কের জন্য যৌন এবং প্রেমঘটিত স্বতন্ত্রতার প্রয়োজন নেই। বহু-অংশীদার সম্পর্ক, অ-একগামিতা, অস্বতন্ত্র যৌন এবং প্রেমঘটিত সম্পর্ক বোঝাতে বহুগামিতা শব্দটি ব্যবহৃত হয়। শব্দটি জড়িত ব্যক্তিদের পছন্দ এবং দর্শন ও নৈতিক মূল্যবোধের উপর। যেমন–ভালোবাসা, ঘনিষ্ঠতা, সততা, নিষ্ঠা, সমতা, পরস্পর যোগাযোগ এবং প্রতিশ্রুতি সহ নানাবিধ বিষয় প্রতিফলিত করে। একজন পুরুষ যখন একাধিক নারীকে বিয়ে বা যৌন-সম্পর্ক করে, তা বোঝাতে সমাজবিজ্ঞানীরা ‘Polygyny’ শব্দটি ব্যবহার করেন। একজন মহিলা যখন একাধিক পুরুষকে বিয়ে বা যৌন-সম্পর্ক করে, তা বোঝাতে সমাজবিজ্ঞানীগণ ‘Polyandry’ শব্দটি ব্যবহার করেন। কিন্তু বাংলায় দুটো শব্দের জন্য আলাদা প্রতিশব্দ না থাকায় ঢালাওভাবে বহুবিবাহ বা বহুগামী বলে। একদা ভারত সহ সব দেশেই সব ধর্মের মধ্যেই বহুবিবাহ করার রীতি বা অভ্যাস ছিল। বহু বছর হল আইন করে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হলেও বহুগামিতা তো রয়েই গেছে। তাকে তো আইন করে দমন করা সম্ভব নয়।

এখন আর একাধিক বিয়ে করার কোনো সুযোগ নেই, সামর্থ্যও নেই। তা সত্ত্বেও বহুবিবাহের প্রচলন ছিল, তখনও মানুষ বহুগামী ছিল এবং একাধিক মহিলার সঙ্গে যৌন-সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সুযোগ ছিল। বহুগামিতার একটি পরিচিত রূপ হল বহুপত্নীকতা। বহুপত্নীক বিবাহবন্ধন সাধারণত একজন স্বামী ও একাধিক স্ত্রীর সমন্বয়ে গড়ে উঠে। অধিকাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা বিশিষ্ট রাষ্ট্র ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বহুবিবাহের বৈধতা দেয়। কিছু ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রও এর বৈধতা দিয়েছে। কিন্তু চারটির বেশি কখনোই নয়, তাও শর্তসাপেক্ষে। অতএব চারটি বিয়ে করে ফেলা মোটেই কাজ নয়। মুসলিম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মের মানুষদের একের অধিক বিয়ে করার অধিকার বর্তমানে নেই। অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় আফ্রিকা মহাদেশে বিশেষত পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলে এর বিস্তৃতি ব্যাপক। এর কারণ হিসাবে পণ্ডিতগণ আফ্রিকায় নারী-পুরুষের সাংখ্যিক অনুপাত এবং দাসপ্রথাকেই দায়ী হিসাবে উল্লেখ করছেন। নৃতত্ত্ববিদ জ্যাক গুঁড়ি অ্যাথনোগ্রাফিক এটালাস ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী বিবাহের তুলনামূলক গবেষণায় উপ-সাহারান আফ্রিকান সমাজগুলির ক্ষেত্রে ব্যাপক খামার বাগান এবং বহুগামিতার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক প্রদর্শন করেন।

মানুষ কি জিনগতভাবেই বহুগামী? সেক্স থেরাপিস্ট গের্টরুড ভোলফ অবশ্য এ ব্যাপারে তাঁর অবস্থান এককথায় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মানুষ জিনগতভাবেই একগামী নয়।” ভোলফের এক-তৃতীয়াংশ ক্লায়েন্টই তাঁর কাছে আসেন প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে। একটি দম্পতি বা যুগলের যে-কোনো একজন অন্য জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, এমন অভিযোগই বেশি। আর অনেক যুগলের কাছেই, যৌনজীবনে সৎ থাকা মানে একগামিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি প্রায়ই এমন মানুষের মুখোমুখি হই, যাঁরা বলেন যে তাঁরা কোনোদিনই প্রতারণা করবেন না। এবং তাঁদের সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি প্রতারণা করেন, তাহলে তাঁকে ক্ষমা করবেন না।” তিনি বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, তাঁদের অনেকে আবার আমার সামনে এসে বসেন, কেন-না, তাঁরা আসলে যৌনজীবনে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।”

অনেক মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, একগামিতার বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত। একটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কি না, সেটা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। আর কারও কারও মতে, একগামিতা আসলে সেকেলে ধারণা, যা শীঘ্রই সমাজ থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে। ভোলফ মনে করেন, একগামিতা হচ্ছে পুরুষের আবিষ্কৃত এক ধারণা, যাকে সাংস্কৃতিক অর্জন বলা যেতে পারে। আর এটা এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারও। ভোলফ তাঁর বই ‘Construction of Adult’-এ মানুষের যৌনাকাঙ্ক্ষার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেখানে তিনি দুই ধরনের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। একটি ধরন হচ্ছে, যেটি পুরোপুরি শারীরিক চাহিদা থেকে সৃষ্ট। এখানে ঘনিষ্ঠতার কোনো ব্যাপার নেই, বরং পুরোটাই শারীরিক চাহিদা। এই সম্পর্ক সাময়িক।

সেটা ছিল পড়ন্ত বিকেল, মদের নেশাটাও বাড়ছিল, মোটের উপর সঙ্গিনীও ছিল আকর্ষণীয়। ফলে হাসিঠাট্টা এক পর্যায়ে চুমুতে রূপ নেয়, যার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে বিছানায়। ম্যাক্স মাঝেমাঝেই এভাবে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। আর এটা কোনো সমস্যা হত না, যদি-না তিনি বিবাহিত হতেন। ম্যাক্স মনে করেন, তাঁর এই যৌনাকাঙ্ক্ষা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও এমনটা করা ঠিক নয়। বর্তমানে ৩০ বছর বয়সি এই নারী বয়স ২০ পেরুনোর পর নানাভাবে যৌনতার স্বাদ নিয়েছেন। কখনো সুইঙ্গার ক্লাব মানে তাৎক্ষণিক সঙ্গী বদলের ক্লাবে গিয়েছেন, কখনো এমন সব স্থানে সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন, যা স্বাভাবিকভাবে ভাবা যায় না। তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল যতটা সম্ভব আনন্দ, উত্তেজনা উপভোগ করা।

আর দ্বিতীয় ধরনের সম্পর্ক হচ্ছে, যেখানে যৌনতার মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া ঘনিষ্ঠতা, যা মানসিকও হতে পারে। ভোল্ফের ভাষায় যাকে বলে, “সংস্কৃতির আদলে যৌনতা।” তাঁর মতে, এ ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একগামিতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে, কেন-না, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যৌনসম্পর্কের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ককে মজবুত করে তোলেন। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় কিটি পার্টির আয়োজন হচ্ছে সর্বত্র। যে পার্টিতে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অদলবদল করে যৌনসঙ্গী করে নিচ্ছে সাময়িক সময়ের জন্য। একঘেঁয়েমি যৌনজীবন থেকে মুক্তি পেতেই এই ধরনের পার্টির গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছে।

গের্টরুড ভোল্ফের কাছে আরও এক ধরনের ক্লায়েন্ট আসেন, যাঁদের যৌনচাহিদা তাঁদের সঙ্গী বা সঙ্গিনী পূরণ করেন না। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, দুজনের চাহিদা ভিন্ন কিংবা একজনের চাহিদা অন্যজনের পছন্দ নয়। সেসব যুগলের ক্ষেত্রে সম্পর্কটা একসময় এমন এক পর্যায়ে চলে যায় যে, তাঁদের কেউ কেউ নিজের চাহিদা পূরণে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। এবং প্রতারণা তাঁদের কাছে অস্বাভাবিক কিছু মনে হয় না। ভোল্ফ মনে করেন, যৌনতা নিয়ে এমন কোনো একক সমাধান নেই, যা সব যুগলের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে। কিছু যুগল এই সমস্যার সমাধানে তাঁদের সম্পর্কটা উন্মুক্ত করে দেন, অর্থাৎ যৌনজীবনে একগামী থাকার ব্যাপারটি বাদ দিয়ে দেন।

ক্যাথরিনা এবং তাঁর ছেলেবন্ধু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, নিজেদের সম্পর্কের বাইরে সাময়িক যৌন সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে তাঁরা একে অপরকে বাধা দেবেন না। ক্যাথরিন অবশ্য জানেন, এভাবে যে পরীক্ষা তাঁরা করেন, সেটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটা কোনো মজার ব্যাপার নয়। তিনি বলেন, “আমার কাছে এই উন্মুক্ত সম্পর্কের অর্থ এই নয় যে, আমি যা খুশি তা-ই করতে পারব।’’ যেহেতু তাঁদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আর কোনো সীমান্ত নেই, তাই তাঁকে নিজের কৃতকর্মের জন্য দায় নিতে হয়। ফলে তিনি এমন কিছু করতে পারেন না, যা তাঁর নিজের এবং তাঁদের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অনেকক্ষেত্রে পরকীয়াও একটি সম্পর্ককে উন্মুক্ত করে দেয়। তবে সেক্ষেত্রে যে এভাবে প্রতারণা করছেন, তাঁর সঙ্গী বা সঙ্গিনী বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে চান না। “পরকীয়া বা উন্মুক্ত সম্পর্ক যা-ই হোক না কেন, যুগলের মধ্যে সেটা সংকট তৈরি করতে পারে। আবার এই সংকটের কারণে একটি সম্পর্ক বৃদ্ধিও পেতে পারে।”—বলেন ভোঙ্ক।

সেক্স থেরাপিস্টের কথা হচ্ছে, “একগামিতাই যেমন সম্পর্কের একমাত্র অর্থবহ ধারণা নয়, আবার একগামিতার ধারণা ব্যর্থও হয়নি। ফলে একটি যুগল কোন্ ধরনের সম্পর্ক গড়বেন, সেটা দিনের শেষে। তাঁদেরই নির্ধারণ করতে হবে, অন্য কেউ সেটা ঠিক করে দিতে পারবে না। কেননা, যৌনতা অবশ্যই একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।” বলেন ভোলফ।

স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে মাত্র ৩ % প্রাণী সামাজিকভাবে একগামী। ১০০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে তিন প্রজাতির প্রাণী মাত্র ১ জন সঙ্গী নিয়ে কাটিয়ে দিতে পারে। মানুষ যথারীতি সেই ৩ শতাংশের মধ্যে পড়ে না। পৃথিবীতে এই মুহূর্তে নারী-পুরুষের সেক্স রেশিও ১ : ১। অর্থাৎ প্রতি ১ জন নারীর বিপরীতে ১ জন পুরুষ। ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যায় হিসাব করলে ১০১ জন পুরুষের বিপরীতে নারী আছে ১০০ জন।

বহুগামিতা অনেক রকমের আছে, কোনটা স্রেফ মানসিক এবং কোনটা আবার দুয়ারে এসে কড়া নাড়ে বাস্তব জীবনে। মানসিক বহুগামিতায় পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ আক্রান্ত। এমন কোনো মানুষ খুঁজলে পাওয়া যাবে না, যিনি নিজের সঙ্গী ব্যতীত অন্য নারী বা পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বা যৌনতার কথা ভাবেননি, যদি সে যৌনক্ষমতারহিত না হন। বাস্তব জীবনের চারপাশে থাকা মানুষ তো বটেই, এমনকি নায়ক-নায়িকাদের নিয়েও কাজ করে বেডরুম-ফ্যান্টাসি। হ্যাঁ, বিবাহিত মানুষদের মাঝেই বরং এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অন্যদিকে বাস্তবের বহুগামিতা থেকেই জন্ম নেয় সম্পর্কের প্রতারণা, বিবাহে পরকীয়া, মন আর সংসারের ভাঙন। কেউ কেউ এই বহুগামিতায় ধরা পড়েন, কেউ পড়েন না। তবে এমন কাজ করার মতো মানুষ সমাজে ভুরি ভুরি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীতে কেন প্রায় প্রতিটি মানুষই বহুগামী কিংবা বহুগামিতার কথা ভাবেন? জবাব লুকিয়ে আছে হয়তো আমাদের জীবনেই–(১) বহুগামিতার প্রথম ও প্রধান কারণটিই হচ্ছে যৌন আকর্ষণ। ভিন্ন ভিন্ন যৌনসঙ্গী পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছা থেকেই মানুষ বহুগামিতায় লিপ্ত হন। অনেকেই আছেন যাঁরা বাস্তবজীবনে লিপ্ত হতে না-পারলেও মানসিকভাবে লিপ্ত হন। পৃথিবীতে পর্নোগ্রাফির বাজার সুলভ হওয়ায় এটাও একটা কারণ। (২) জীবনের পরিস্থিতিও একটা বড়ো কারণ বহুগামিতার পিছনে। অনেক কিছুই ঘটে আমাদের জীবনে, যার ফলে একাধিক সম্পর্কে জড়িত হতে বাধ্য হয়ে যায় মানুষ। প্রেম হোক বা দাম্পত্য, একটি সম্পর্ক চিরকাল নাই-ই টিকতে পারে, আর সেটাই বেশি স্বাভাবিক। যারা সমস্ত বাঁধা পেরিয়ে সম্পর্ক ধরে রাখতে পারেন, তাঁরা আসলে সৌভাগ্যবান। (৩) বহুগামিতার আর-একটা বড়ো কারণ হচ্ছে লিঙ্গ পার্থক্য। স্বভাবতই নারী ও পুরুষ উভয়কে প্রকৃতি বা জিনগতভাবে পৃথকভাবে তৈরি করেছে। পুরুষ যেখানে সর্বদা চায় উন্মুক্ত, দায়িত্বহীন জীবন। তেমনি বেশিরভাগ নারী ঠিক তার বিপরীতে চায় সংসার, সন্তান ও নিরাপত্তা। এই ভিন্ন ভিন্ন চাহিদার কারণে নারী-পুরুষের বনিবনা না-হওয়ার বিষয়টিও চিরন্তন। ফলে বহুগামিতায় ঝুঁকে পড়ে। (৪) সম্পর্ক একঘেঁয়ে হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও বহুগামিতার দিকে মানুষকে ঠেলে দেয়। একই সম্পর্কে দীর্ঘদিন চলার পর স্বভাবতই হারিয়ে ফেলে নতুনত্ব। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরোনো সম্পর্কে নতুনত্ব ধরে রাখার বিষয়ে যত্নশীল হন না জুটিরা। এর ফলেও সম্পর্কে বহুগামিতার ফাঁদ খুলে যায়। (৫) এছাড়াও আরও কিছু কারণ আছে। যেমন স্বামী বা স্ত্রীর যৌনতার অনীহা, অন্যের সঙ্গে তুলনা, ঈর্ষা, ঝগড়াটে স্বভাব বা কাউকে নিজের জন্য যোগ্য মনে না করা ইত্যাদি। তবে দিনশেষে কঠিন সত্য এটাই যে প্রাণী হিসাবে মানুষ বহুগামী, তা সে মানসিকভাবেই হোক কিংবা বাস্তব জীবনে। খুব মানুষই আছেন এই ব্যাপারটির বাইরে। (One Love? Don’t Think So: 4 Gaping Flaws With The Concept Of Monogamy’—Mia Bates)

কাতারের দোহা কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মার্টিন স্টুয়ার্ট এক গবেষণায় ৫০০ পুরুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। এঁদের মধ্যে তিনি ২৭ ধরনের পুরুষের খোঁজ পেয়েছেন। তাঁর ধারণা হয়েছে, বিবর্তনের ধারাই আসলে পুরুষকে প্রতারক করে তুলেছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ বলেছেন, জীবনে কখনো-না-কখনো তাঁরা স্ত্রী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ২৭ শতাংশ উত্তরদাতা এ কাজটি করেছেন তাঁদের বর্তমান সঙ্গিনীর সঙ্গেই। আর তাঁদের সবাই এমন আচরণের পেছনে কোনো না-কোনো যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন। প্রশ্নটি তখনই ওঠে যখন কোনো নারী হঠাৎই আবিষ্কার করেন যে, তাঁর স্বামী বা প্রেমিক অন্য কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন এবং ক্রমাগত মিথ্যে বলে যাচ্ছেন। “আমরা আজ যে আচরণ করছি–অনেক ক্ষেত্রে তার শেকড় প্রোথিত সুদূর অতীতে–আমাদের আদি পুরুষের মধ্যে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়–আদি পুরুষেরা কেন বহুগামী হতেন? বিবর্তনবাদ অনুযায়ী, এর একটি উত্তর হতে পারে প্রজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার তাগিদ।”

স্টুয়ার্টের মতে, বিবর্তনের ধারার পুরুষের মস্তিষ্ক এমনভাবে তৈরি হয়েছে যে, শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অধিকাংশ পুরুষের মধ্যেই কম-বেশি অবিশ্বস্ত হওয়ার প্রবণতা রয়ে গেছে। গবেষণা থেকে জানা যায়, ওই ২৭ ধরনের পুরুষের মধ্যে কোনো কোনো ধরনের পুরুষের অবিশ্বস্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। সুতরাং সম্পর্কে জড়ানোর আগে নারীদের ভাবতে হবে–কোন্ ধরনের পুরুষের সঙ্গে তিনি যাচ্ছেন। স্টুয়ার্টের এই ২৭ ধরনের পুরুষের মধ্যে একটি হল সুযোগসন্ধানী। অর্থাৎ, কারও সঙ্গে শরীরী প্রেমের কোনো সুযোগই এঁরা ছাড়তে চান না। পরিণতি কী হবে–সেটাও তাঁরা ভেবে দেখেন না। আর-এক জাতের পুরুষ আছে, যাঁরা দুর্বলতার সুযোগ নেন। এঁরা সবসময় পরিস্থিতিকে নিজের পক্ষে নিতে চান এবং নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য পরিবারের সদস্য, বন্ধু, স্ত্রী বা সঙ্গিনীর কাছ থেকে দুর্বলতাকে ব্যবহার করে সুবিধা আদায় করেন। স্টুয়ার্ট অবশ্য বলেছেন, সমীক্ষায় তিনি বহু পুরুষ দেখেছেন, যাঁরা এখনও সঙ্গিনীর প্রতি সৎ, বিশ্বস্ত, পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল এবং মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রাখেন।

আমাদের ধনতান্ত্রিক ভোগবাদী দুনিয়ার প্রেক্ষিতে আমরা ক্রমেই পেতেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। তাই প্রাপ্তির কোটা পুরোপুরি পুরণ না-হলেই মনের মধ্যে জমে ওঠা ক্ষোভের বিক্ষুব্ধ বাষ্প অসহিষ্ণু করে তোলে আমাদের। সেই অসহিষ্ণুতার অস্থিরতায় খেয়ালই থাকে না যে, আমার দেওয়ার কোটায় আর একজনের অপ্রাপ্তির ব্যথা বেদনা রয়ে গেল কি না।

বহুগামিতা পুরুষজাতির একচেটিয়া অধিকার নয়। বহুগামিতা নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান আবেদন। নারীর প্রকাশ কম, কারণ সামাজিক ও ধর্মীয় নিগড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। পুরুষের ক্ষেত্রেও সামাজিক ও ধর্মীয় নিগড় থাকলেও পুরুষ সেটা অনেক ক্ষেত্রে জয় করতে পেরেছে। জয় করেছে ঠিকই, তাই সবাইকে বলে বেড়ানোর সাহস পুরুষের নেই। কারণ বহুগামী নারীদের যেমন সমাজ ঘৃণা করে, তেমনি বহুগামী পুরুষকেও সমাজ ঘৃণা করে।

যাই হোক, আমরা এখন দেখব পুরুষরা কেন যৌনকর্মীর কাছে যায়। নারী গবেষক জুলি বিনডেল ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত পুরুষদেরদের যৌনকর্মীর কাছে যাওয়া কারণ নিয়ে একটি প্রবন্ধ লেখেন। ‘The Guardian’ প্রকাশিত “Why men use prostitutes” প্রবন্ধে লিখেছেন—(১) শৈশবের নিঃসঙ্গতা এবং আত্মীয়স্বজন বিশেষ করে মহিলাদের সঙ্গে সেভাবে মিশতে পারার কৌশল না-জানার কারণেও ভিতরে ভিতরে বহুদিনের জিইয়ে রাখা কষ্ট থেকে অনেকেই যৌনকর্মীদের কাছে যায়। এ ব্যাপারে লেখক বলেন–“একজন আমাকে তাঁর শৈশবের নির্মমতা, অবহেলা এবং অন্যদের সঙ্গে বিশেষ করে মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করার ব্যাপায়ে অক্ষমতার অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তিনি সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করা অ্যালেক্সের কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনি একজন যৌনকর্মীর সঙ্গে সহবাস করে তেমন কিছুই পান না তাঁর শুধু শূন্যতায় অনুভুত হয়। কিন্তু তিনি জানেন কীভাবে একজন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হয় তাঁর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে হয়। (২) গণিকাবৃত্তি রোধে তেমন আইন না থাকা বা থাকলেও তাঁর সঠিক বাস্তবায়ন না থাকা টাকার বিনিময়ে সেক্সকর্ম করা অনেক দেশেই আইনের চোখে দোষনীয়। এটাকে খারাপ। চোখে দেখা হয় বিভিন্ন দেশে। গবেষণার মাধ্যমে জানা যায় যে মাত্র ৬ % পুরুষ টাকার বিনিময়ে যৌনকর্মী ব্যবহারের কারণে গ্রেপ্তার হয়। এই কাজ না করার ব্যাপারে সে ধরনের আইন এবং আইন থাকলেও তা বাস্তবায়নের সুষ্ঠু পদক্ষেপ না-থাকার কারণেই অধিকাংশ পুরুষ এসব কাজ করছে বলে গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়। এই গবেষণা চলাকালে সাক্ষাৎকার দেওয়া একজন বলেন—“যদি কোনো নেগেটিভ কিছু ঘটত, তাহলে আপনাকে পুনরায় বিবেচনা করতে শেখাত। আইনটি এখন বাস্তবায়ন হয়নি। এর ফলাফল হিসাবে যদি নেগেটিভ কিছু ঘটতে থাকে তাহলে তা অবশ্যই আমাকে এ কাজ থেকে বিরত রাখবে।” গবেষণায় সাক্ষাৎকার দেওয়া অন্য আর-একজন বলেন—“যদি এই কাজ করার জন্য আমাকে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হত তাহলে আমি কখনোই এ কাজ করতাম না। এই দেশে পুলিশরা পুরুষদের সঙ্গে সুন্দর আচরণই করে যৌনকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হবার পরও।” (৩) স্ত্রী বা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে বোঝাঁপড়ার অভাব থেকে অনেক পুরুষই মহিলাদের সঙ্গে একটি সত্যিকারের সম্পর্ক তৈরি করতে চায় এবং ব্যর্থ হয়ে প্রায় সময়ই হতাশ হয়ে পড়ে। আর সে সম্পর্কের বিকাশ সাধন করতে পারে না। এ ব্যাপারে গবেষণায় সাক্ষাৎকার দেওয়া একজন বলেন—“এটা শুধুমাত্র একটা যৌনকর্ম, কোনো আবেগ-প্রেম নয়। এটা গ্রহণ করতে হয় প্রস্তুত থাকতে হবে, নয়তো একেবারে না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাঁরা স্ত্রী বা গার্লফ্রেন্ডের মতো নয়।” এই গবেষণায় বব নামক একজন আরও পরিষ্কারভাবে বলেন যে, তাঁরা টাকার বিনিময়ে যৌনকর্মীর সঙ্গে সহবাস করে, যাতে তাঁরা নিজেকে এনকাউন্টার থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বব বলেন—“দেখুন, পুরুষরা নারীকে (যৌনকর্মী) টাকা দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করে, কারণ এক্ষেত্রে সে যা খুশি তাই করতে পারে বা যাকে খুশি ব্যবহার করতে পারে। অধিকাংশ পুরুষই যৌনকর্মীদের কাছে এজন্য যায় যে, তারা তাদের সাথে এমন আচরণও করতে পারে বা পেতে পারে যা সত্যিকারের ভালো মহিলারা পছন্দ বা সহ্য করতে পারবে না।” (৪) অন্য নারীদের ধর্ষিতা হওয়া থেকে বাঁচাতে গবেষক জুলি বিনডেল বলেন, এই গবেষণার পর একটা আশ্চর্যজনক ফলাফল পাই যে, অধিকাংশ পুরুষই মনে করেন যে তাঁরা যদি টাকার বিনিময়ে যৌনকর্মীর কাছে না-যেত, তাহলে তাদের যৌন তাড়না মেটাতে প্রয়োজনে তাঁদেরকে অন্য নারীদের ধর্ষণ করতে হত। এমনকি একজন আমাকে বলেই ফেললেন যে—“কখনও তুমি কাউকে ধর্ষণ করতে পারো, কাজেই তাঁর পরিবর্তে যৌনকর্মীর কাছে যাওয়া ভালো।” গবেষক জুলি বিনডেল তাঁর আর্টিকেলে এই বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে বলেন—“সেক্সের জন্য মরিয়া হয়ে উঠা একজন পুরুষ যে এই খারাপভাবেও যৌনকর্ম সাধন করতে চায়, তাঁর যৌনকর্ম করার ব্যবস্থা থাকা উচিত, তা–হলে সে কাউকে ধর্ষণ করতে পারে।” জুলি বিনডেল বলেছেন, “অভিজ্ঞতা থেকে আমার একটা বিষয় মনে হয়েছে যে, প্রত্যেক পুরুষই একজন পটেনশিয়াল ধর্ষক।” (৫) আর-এক শ্রেণির পুরুষ আছে, তাঁরাও যৌনপল্লিতে যান। তাঁরা হলেন ইমপোটেন্ট পুরুষ, যৌন অক্ষম পুরুষ। কেন-না যৌনপল্লিতে পৌঁছে গিয়ে যৌনকর্মীকে ন্যায্য মূল্য চুকিয়ে দিলেই একটা নারীর নগ্ন শরীর পেয়ে যায় সে। শরীর না উঠলে কী হয়, মন তো নারী-শরীর চায়। যৌনপল্লির নারীকে যৌনসুখ দেওয়ার কোনো দায় থাকে না কোনো পুরুষেরই। এক্ষেত্রেও অন্যথা হয় না। যৌনকর্মীদের টাকা দিলেই হল। টাকা পেলে যৌনকর্মীদেরও কোনো দাবি নেই, দাবি থাকেও না। ভালোবাসার নারীকে যৌনসুখ দিতেই হয়। ধর্মপত্নীকে যৌনসুখ দিতেই হয়। তাঁরা মানবে কেন? কিন্তু ইমপোটেন্ট পুরুষের তো সেটা দিতে অপারগ। ইমপোটেন্ট যুবকরা যেমন যৌনপল্লিতে যায়, তেমনি লোল-চামড়ার দাঁত ফোকলা যৌন-অক্ষম বৃদ্ধরাও যৌনপল্লিতে যায়। চতুর বৃদ্ধরা অবশ্য যৌনবর্ধক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল সেবন করে যায়, যাতে দণ্ড সোজা করে যৌনকর্মটা করে বাহবা দেখাতে পারে।  

বাংলাদেশী বিশিষ্ট গবেষক এবং লেখক আখতার হামিদ খান একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত যৌনকর্মীদের গণিকালয়ে আসার কারণ নিয়ে লেখা “কেন এরা এ পথে আসে” শিরোনামের একটি প্রবন্ধে বাংলাদেশী পুরুষদের যৌনকর্মীদের কাছে যাওয়ার তিনটি কারণ উল্লেখ করেন। কারণ তিনটি হচ্ছে—(১) ব্লু-ফিল্ম, পর্নোসাহিত্য ও অশ্লীল ম্যাগাজিন পুরুষদের যৌন উত্তেজনার অন্যতম কারণ। ব্লু-ফিল্ম, অশ্লীল ম্যাগাজিন ও তথাকথিত যৌন উত্তেজক গল্প-উপন্যাস এবং বিদেশি যৌন উত্তেজক ছায়াছবির ব্যাপক ছড়াছড়ি যুবকদের দেহমনে কামনার আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তখনোই তাঁরা অবৈধ নারী সংসর্গ কামনায় পাগলপারা হয়ে ওঠে। যে কোনো উপায়ে নারী ধর্ষণের চেষ্টা করে, না-পারলে ছোটে যৌনকর্মীর সন্ধানে। প্রশ্ন উঠতে পায়ে, বহু আগে যখন ব্লু-ফিল্ম আবিষ্কার হয়নি, তখনও তো যৌনপল্লি ছিল। প্রথমত তখন ব্লু-ফিল্ম না-থাকলেও পর্নোসাহিত্য, যৌন উত্তেজক পেইটিং ও চারুশিল্পের অস্তিত্ব ছিল। শত শত বছর আগের উলঙ্গ ভাস্কর্য, নগ্ন নারী চিত্র ও নারী-পুরুষের যৌন মিলনের বহু চিত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। দ্বিতীয়, পর্নোছবি ছাড়াও তখন যৌন উত্তেজক অন্যান্য কারণগুলো তখনও ছিল। কেননা জৈবিক তাড়না তো প্রকৃতিগত। (২) দেরিতে বিয়ে করা বা হওয়াও একটি কারণ। যৌবনের তাড়না স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃতিগত। এ জন্যই বিয়ের ব্যবস্থা। কিন্তু যে-কোনো কারণে হোক বিয়ে করতে দেরি হলে বয়সের দাবি তো তার অধিকার ছাড়বে না। তাই যৌবনের স্বাভাবিক তাড়নায় যুবকরা বাধ্য হয় যৌনকর্মীর সন্ধান করতে করতে যৌনপল্লিতে পৌঁছে যাওয়া ছাত্র, যুবক ও স্ত্রীসঙ্গহীন পুরুষরাই অধিকহারে গণিকাগমন করে থাকে। (৩) যে কারণই থাক, যত কারণই থাক ধর্মহীনতা ও নৈতিকতার অবক্ষয় সকল অপকর্মের মূল কারণ। তা যেমন যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, অন্যান্য ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য। মজার ব্যাপার হল, অনেকে আছেন, যারা গণিকাবৃত্তির বিরুদ্ধে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে বেড়ান, আবার তাঁরাই রাতের আঁধারে খদ্দের হয়ে ভেজা বেড়ালের মতো মাথা গুঁজে ঢোকেন যৌনপল্লিতে অথবা হোটেলে বা অন্য কোনোখানে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *