১৭. অস্তিত্বের সংগ্রাম

১৭. অস্তিত্বের সংগ্রাম

অস্তিত্বের সগ্রাম হলো এমন একটি চেতনা বা প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করার জীববৈজ্ঞানিক শাস্ত্রে সজ্জিত করে মানবসভ্যতাকে। এই আদর্শ নিহিত আছে ডারউইনীয় তত্ত্বের মধ্যে। এই মতবাদের প্রবক্তা হলেন চার্লস ডারউইনের এক পুত্র। কিন্তু এই মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা হলেন ফ্রানাসি গ্যালটন। যিনি মনে করতেন যে, মানুষের যেকোনো চেতনার অন্তরালে বংশানুক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিদ্যমান। আমাদের সময় বিশেষ করে আমেরিকার বংশানুক্রমকে রাজনীতির পণ্য করা হয়েছে। আমেরিকান রক্ষণশীলেরা মনে করেন যে, মানুষের যেকোনো অভিব্যক্তির অন্তরালে বংশানুক্রমিকতার প্রভাব আছে। পক্ষান্তরে যুক্তিবাদীদের বিশ্বাস শিক্ষাই মানুষদের দেয় তার কাঙ্ক্ষিত মেধা। আমি এই দুটি মতবাদের কোনোটিকেই বিশেষ পরম সত্য বলে মানতে রাজি নই। কেননা এসব কোন পরিসংখ্যান প্রাপ্তব্য নয়, যা দিয়ে আমরা এ দুটি সত্তার পারস্পরিক বিভাজন রেখা টানতে পারি অথবা বলতে পারি যে, বংশানুক্রমে অথবা শিক্ষা-মানব মননের সুচারু বিকাশে কার অবদান বেশি। ইতালীয় বা দক্ষিণ দেশীয় ক্রীতদাসরা কেন যে মানুষ হিসেবে আমেরিকার আদিম অধিবাসীদের চেয়ে সুউন্নত হবে তার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ নেই। যদি এই বিশ্লেষণের মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত যুক্তির অবতারণা করতে হয় তাহলে এক হাজারটি যমজ শিশুকে শৈশবে বিচ্ছিন্ন করে তাদের শিক্ষা দিতে হয় সম্পূর্ণ বিপরীত প্রণালীতে। যেহেতু এটি করা অসম্ভব তাই আমি আমার ধারণা ও অনুমানে বলতে পারি যে, সাধারণত সকলেই কুশিক্ষা দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়; শুধু দু একজন সেই পরিস্থিতির বিভিন্নমুখি দিক দর্শনের মধ্যেও নিজের অস্তিত্বকে বজায় রাখে। আমি বিশ্বাস করি না যে, যেকোনো শিক্ষা একজন সাধারণ ছাত্রকে প্রথম শ্রেণির বুদ্ধিজীবীতে পরিণত করতে পারে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বিদ্যালয় আমাদের আইনস্টাইন করতে পারবে না। আমি বিশ্বাস করি যে, ব্রুনেইতে গ্রামীণ বাতাবরণে নেপোলিয়ান সহপাঠীদের চেয়ে অধিকতর মেধাবী ছিলেন এবং ভবিষ্যতে প্রাপ্তব্যযুক্তিগুলি অর্জন করেছিলেন দুর্বিনীত সন্তানদের ওপর তার মায়ের প্রদত্ত শাসনের পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুধাবনে! তাহলে একথা অনস্বীকার্য যে, ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মধ্যে বেড়ে ওঠা বালকদের অনুধাবনের মাত্রা নিতর হবে। কিন্তু মাথার আকৃতি দেখে যদি আমরা কোনো মানুষের বুদ্ধিদীপ্তির ক্রম নির্ণয় করতে সমর্থ হয়ে থাকি তাহলে এর মধ্যে শিক্ষার কোনো অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে না। নির্বুদ্ধিতা, অসারত্ব, জড়তা, চারিত্রিক দৌর্বল্য প্রভৃতি অভিধানকে আমরা পুরুষানুক্রমিক পরস্পরায় ফলশ্রুতি মনে করতে পারি।

অস্তিত্ববাদের চরমপ্রবক্তারা জোরের সঙ্গে এই কথা বলতে চাইবেন যে, নির্বুদ্ধিতার মতো প্রকৃতিটিও বংশানুক্রমিক। এর বিপরীতক্রমে বলা যেতে পারে যে, শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তিবর্গের সংখ্যা কোনো অংশে কম নয়। কাজেই একথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, পৃথিবীতে উভয় প্রজাতির মানুষ টিকে আছে এবং চালাক স্বভাবের লোকেরা অনেক বেশি শ্রদ্ধাস্পদ।

অস্তিত্ববাদের ওপরে অনেক অহেতুক অকারণ বাক্যরাজি ব্যবহৃত হয়েছে। এর প্রবক্তাদের বেশির ভাগই জীববৈজ্ঞানিক ভিত্তিভূমির ওপর দাঁড়িয়ে সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর রহস্য উন্মোচন করতে চেয়েছেন। যেমন–পবিত্রতা হলো উপার্জনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, দারিদ্র্যের উত্তরাধিকার আইনগত পরিণতি নয়, জৈবিক ঘটনামাত্র এবং যদি আমরা শুধুমাত্র ধনী সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎপাদনের ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ রাখি তাহলে অচিরেই পৃথিবীর সবাই ধনী হয়ে উঠবে। এখানে আমরা ইচ্ছে করে এই সত্যকে স্বীকার করি না যে, দরিদ্রলোকের জনবৃদ্ধির হার ধনীদের চেয়ে বেশি। কিন্তু এর মধ্যে আমি কোনো অসাধারণত্ব দেখতে পাচিছ না এই কারণে যে, আমার মতে ধনীরা কোনো অংশ দরিদ্রদের চেয়ে উত্তম। বর্তমান পৃথিবীতে দরিদ্রদের সংখ্যাবৃদ্ধির হার আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে এবং এখন তা যে বিন্দুতে স্থিতিশীল সেটি হলো নয় বছর আগে ধনীদের জনবৃদ্ধির সংখ্যা। এর অন্তরালে অনেকগুলি কারণ ক্রিয়াশীল আছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, যখন পুলিশ প্রশাসন জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত তথ্যাবলির সঠিক পরিবেশনে অসমর্থ হয় তখন স্বাভাবিক বুদ্ধিদীপ্তির নিম্নে অবস্থানকারী মানুষের পক্ষে এ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, সেখানে অন্যদের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক তৎপরতা অসফল হয়। পক্ষান্তরে, গর্ভনিরোধকের ব্যবহার সম্পর্কে বিকৃত তত্ত্বের অবতারণার ফলেই নিবোধ লোকেরা বুদ্ধিমান লোকেদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বড় পরিবারের সৃষ্টি করে থাকে। এমন ঘটনার অনুপ্রবেশ ঘটেছে যে, সবচেয়ে বোকা ব্যক্তিও জন্মনিয়ন্ত্রণের সংবাদ সহে পরানুখ হয় অথবা গর্ভপাতের স্বপক্ষে যুক্তি আনয়ন করে।

অস্তিত্ববাদের দুটি দিক আছে ধনাত্মক ও ঋনাত্মক। প্রথমটি সু-চেতনার উৎসাহদ্যোতক এবং শেষেরটি কু-চেতনার পরিচয় জ্ঞাপক। এই মুহূর্তে শেষেরটিই বেশি বাস্তব। বিশেষ করে আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে একথা সর্বতোভাবে প্রযুক্ত। এই দুটি দেশেই ব্যাপক নিবীজকরণ পদ্ধতি শুরু হয়েছে। এর বিরুদ্ধে যেকোনো যুক্তির অবতারণাকে সর্বাংশে মেনে নেওয়া যায় না, কেননা কোমল স্বভাবের অধিকারিণী রমণিরা অধিকতর সংখ্যায় অবৈধ সন্তানের জন্মদান করে সমাজের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছেন। যদি সেই সকল রমণিগোষ্ঠীকে বন্ধ্যা করা হতো তাহলে তারা নিজেরাই সবচেয়ে বেশি খুশি হতো। কেননা তারা কোনো আত্মসুখি প্রক্ষোভের দ্বারা গর্ভবতি হয়ে পড়ে না। কোমল স্বভাবযুক্ত পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সমাজ ও সংস্কৃতির পক্ষে ভয়ংকর ক্ষতির উদ্রেককারী এই বিপদের পরিসীমা কমাতে হলে নির্বোধ, ব্যক্তিত্বহীন ও কোমলভাবাপন্ন মানুষের সংখ্যাকে সর্বাংশে কমাতে হবে।

যে সমস্ত ব্যক্তিরা মানসিকভাবে অসম্পূর্ণ শুধু তাদের ক্ষেত্রেই নির্বীজকরণ পদ্ধতির প্রয়োগ সীমাবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। ইডাহো সমাজের মধ্যে প্রচলিত মানসিক অসুস্থ, কঠিন ব্যাধিগ্রস্থ, অপরাধী, নৈতিকভাবে অধঃপতিত এবং যৌন নিপীড়কদের নির্বীজকরণ করার পদ্ধতিকে আমি সমর্থন করতে পারি না যেহেতু শেষ দুটি সম্প্রদায়ের চিহ্নিতকরণ অসারত্বের ওপর নির্ভরশীল এবং ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে তার সংজ্ঞা পাল্টে যায়। তাই ও দুটি সম্প্রদায়কে এর অত্মর্ভূক্ত করা অনুচিত।

ইডাহোদের নিয়মানুসারে সক্রেটিস, প্লেটো, জুলিয়াস সীজার এমনকি সেইন্ট পলকেও নির্বীজকৃত করার সপক্ষে মত আনয়ন করতো। অধিকন্তু স্বভাগত অপরাধীরা একধরনের স্নায়বিক বৈক্যলর শিকার যা তত্ত্বগতভাবে মনোবিশ্লেষণের দ্বারা আরোগ্য প্রাপ্ত হতে পারে। এবং এই বোধটি সম্ভবত বংশানুক্রমিক নয়। ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় এ সংক্রান্ত আইন মনোবিশ্লেষকদের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন থেকেছে। তাই তারা জন্ম-অপরাধীদের চারিত্রিক বিশ্লেষণে সুষ্ঠুভাবে সফল হয় নি। একথা বলা যেত পারে যে, এ ব্যাপারে তারা জ্ঞানার্জনের দিক থেকে তিরিশ বছর পিছিয়ে আছে।

এর থেকে এই সত্য প্রতিভাত হয় যে, এ সকল বিজ্ঞানের উন্নতি সম্পর্কে সম্যক ধারণার অবর্তমানে স্থির প্রযুক্ত উপক্রমণিকা আনয়ন করা এবং তাকে কয়েকটি দশক বাহিত অপ্রতিদ্বন্দ্ব রাখা। অবশেষে তার মধ্যে মিথ্যা চিন্তাভাবনার অনুপ্রবেশ ঘটানো কোনোমতেই সম্ভব নয়। আমার মতে মানসিক দুর্বলতার অন্তরালে লুকিয়ে থাকা কারণগুলি উদ্ভাসিত করতে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি মনস্তত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। কেননা যে ব্যক্তিকে কেউ একজন লম্পট বলে মনে করছে সেই ব্যক্তিই অন্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রদ্ধার আসনে আসীন। এক্ষেত্রে আইনের ব্যাপক প্রচলন প্রয়োজন। এবং এ প্রসঙ্গে আমাদের বর্তমান বৈজ্ঞানিক জ্ঞান যথাযথ নয় তাই বিভিন্ন আমেরিকান রাজ্যে বিজ্ঞানের ছদ্মবেশে নৈতিকতার স্থলন ঘটে চলেছে।

এবার আমি অস্তিত্ববাদের ধনাত্মক দিকগুলির ওপর আলোকপাত করার চেষ্টা করছি, যদিও দুঃখের বিষয়, এর অধিকাংশই হলো ভবিষ্যতের গর্ভে নিহিত। আশাবাদী অস্তিত্ব অসমর্থকরা সক্ষম দম্পতিদের সন্তান বৃদ্ধিকরণে উৎসাহী। যদিও প্রকৃতপক্ষে এর বিপরীত ঘটনাই দেখা দেয়। অত্যধিক বুদ্ধিমান একটি ছেলে পরবর্তী জীবনে সভ্যতার স্বর্ণ শিখরে উন্নিত হয়ে পঁয়তিরিশ থেকে চল্লিশ বছর বয়সের মধ্যে বিবাহ করে, পক্ষান্তরে তারই সমসাময়িকরা তাদের প্রকৃত বাতাবরণের মধ্যে মানুষ হয়ে বুদ্ধির দেদীপ্যমানতার অবর্তমানে পঁচিশ বছর বয়সে বিবাহ করতে বাধ্য হয়। ব্যবহারিক শিক্ষাপদ্ধতির অত্যাধিক ব্যয় বাহুল্যের প্রচন্ড চাপে প্রথমোক্তরা তাদের পরিবারকে সীমায়িত রাখতে বাধ্য হয় যেহেতু তাদের গড়পড়তা বুদ্ধির সূচক অন্যদের চেয়ে বেশি, তাই এই সীমায়িতকরণ সর্বাংশে দুঃখজনক। এই সমস্যার সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে সর্বাংশে অবৈতনিক করা প্রয়োজন। আরও সহজভাবে বলতে গেলে পিতামাতার বুদ্ধি বিচার করে পুরস্কার দেওয়া উচিত, এই ক্ষেত্রে শিশুর বুদ্ধির বিশ্লেষণ অপ্রয়োজনীয়। এর ফলে শিক্ষণের প্রথম প্রহর থেকে শেষপর্যন্ত প্রতিভাদৃপ্ত ছাত্রছাত্রীরা বৌদ্ধিক এবং শারীরিকভাবে নিস্পেষিত হবার সম্ভাবনা থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু ইংল্যান্ড কিংবা আমেরিকার সরকার এমন কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারবে না যা ব্যবহারিক ব্যক্তিদের পরিবার বৃদ্ধিকরণে সহায়ক হবে। এর বিরুদ্ধে যে স্তম্ভটি দাঁড়িয়ে আছে সেটি হলো গণতন্ত্র। অস্তিত্ববাদীরা মনে করে যে, মানুষে মানুষে পার্থক্য আছে। কিন্তু গণতন্ত্র সব মানুষকে সমান মনে করে থাকে। এই কারণে গণতান্ত্রিক দেশে অস্তিত্ববাদী চিন্তাধারার প্রয়োগ অত্যন্ত কঠিন, কেননা সমাজে সাধারণত পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিবর্গের সংখ্যালঘুত্ব দেখা যায় যদিও একথা স্বীকার করা হয় যে, অপেক্ষাকৃত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সংখ্যালঘুভাবে বিদ্যমান। প্রথম ধারণাটি সংখ্যাগুরুদের কাছে স্বস্তিদায়ক, দ্বিতীয়টি অসন্তুষ্টির কারণ। প্রথমটিকে গুরুত্বপূর্ণ করার মধ্যে সংখ্যাগুরুর সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয়টিকে মহত্ত্বম করলে তা অর্জিত হবে না।

প্রত্যেক মানুষ এই মতবাদে বিশ্বাসী যে, বর্তমানে যে বিষয়টি কাল্পনিক চিন্তনের স্তরে অবস্থান করেছে অদূর ভবিষ্যতে তার অন্তরালে আলোকিত হবে বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ। এমন একজন কৃষকের চিন্তাধারার কথা কল্পনা করুন যাকে বলা হয়েছে। সে যেন তার প্রতিটি মেষশাবককে সমভাবে প্রতিপালন করে। এমনভাবেই তার পূর্ববর্তী প্রজন্মের নারী কর্তৃক উৎসারিত দুধের ধারাবাহিক যোগানের জন্যে তাদের সযত্নে প্রতিপালন করা হয়। যেহেতু এই প্রজাতির কাছে বিজ্ঞান, শিল্পকলা অথবা যুদ্ধের মতো চেতনার কোনো মূল্য নেই, তাই একমাত্র স্ত্রীদের ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য মেধা আরোপিত হয়, পুরুষরা এক্ষেত্রে তাদের প্রতিভার সংবাহকমাত্র। বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি দ্বারা সমস্ত পৃহপালিত পশুর অবস্থানকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করা হয়েছে। কিন্তু মানবজাতিকে বোধহয় একই প্রযুক্তির প্রয়োগশীলতা দ্বারা ঈস্পিত ফলোভে নিয়ন্ত্রিত করা সম্ভব নয়। অবশ্য এক্ষেত্রে আমরা আমাদের আকাক্ষা সম্পর্কে নিঃসন্দেহ নই। যদি আমরা শারীরিক শক্তির জন্যে উৎপাদনে ব্রতি হই তাহলে বৌদ্ধিক তীক্ষ্মতা কমতে বাধ্য। পক্ষান্তরে যদি আমরা মানসিক ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে সচেষ্ট হই তাহলে রোগাক্রান্ত জাতকের জন্ম হবে।

যদি আমরা এ দুটি চেতনার সুসামঞ্জস্য বিন্যাস ঘটাতে পারি তাহলে শিল্পসত্তার মৃত্যু ঘটবে। এর কারণ প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাব। এই কারণে এই মুহূর্তে অস্তিত্ববাদীদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা উচিত নয়। কিন্তু আগামী একশো বছরের মধ্যে বংশানুক্রমিকতা ও জীব-রসায়ন সম্পর্কিত বিজ্ঞানের যে অভাবিত উন্নতি সাধিত হবে তার দ্বারা আমরা এমন এক মানবজাতির জন্ম দিতে পারব যা বর্তমানের চেয়ে অনেকাংশে উন্নততর হবে।

এক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ কুশলতার জন্য অধিকতর বেশিমাত্রায় তার্কিক ও যুক্তিবাদী মননশীলতার অধিকারী হওয়া প্রয়োজন। যদি আমাদের বিজ্ঞান সম্মত উৎপাদনশীলতাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হয় তাহলে প্রতি প্রজন্মের অন্তর্গত দুই শতাংশ পুরুষ এবং পঁচিশ শতাংশ নারীকে অবশিষ্ট জনগোষ্ঠী থেকে পৃথক রাখতে হবে। কৌমার্যের প্রথম প্রহরে ঘটানো হবে এমন এক পরীক্ষা যার অসাফল্য এনে দেবে নির্বীজকরণের অভিশাপ। সেক্ষেত্রে পিতা তার পুত্রের প্রতি আর কোনো অনুভূতি দ্বারা আবিষ্ট হবে না। এবং মাতা পরিণতহবে নিপুণা পেশাদারী মাতৃত্বের প্রতাঁকে। আমি জানি না যে, সত্যিই কোনোদিন এ ধরনের অবস্থার উদ্ভব হবে কিনা। কিন্তু একথা স্বীকার করতে আমি দ্বিধাগ্রস্ত নই যে, এটাই হলো আমার স্বপ্নের পৃথিবী।

কিন্তু প্রয়োগ নৈপুণ্যের পরিপাট্যে এই পদ্ধতি স্মরণযোগ্য ফলশ্রুতি ঘটাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আমরা জাপানের কথা আলোচনা করতে পারি। তিনটি প্রজন্মের অবসানে অধিকাংশ জাপানী পুরুষেরা এডিসনের মতো সুচতুর এবং পুরস্কার পাবার নির্ভরশীল থাকে তাহলে তারা রণক্ষেত্রে জাপানের মোকাবিলায় অপারগ হবে। একথা নিঃসন্দেহ যে, জাপানীরা ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করে অন্যদেশ থেকে সৈন্য নিয়োগ করবে এবং যা তাদের করায়ত্ত নেই সেই যুদ্ধজয় সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ওপর নির্ভর করবে। এই ধরনের পদ্ধতিতে যুব অবস্থায় রাষ্ট্রের প্রতি অন্ধ আনুগত্যের বীজ উপ্ত করা সম্ভব। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা অসম্ভব বলে কি মনে হতে পারে?

আর এক ধরনের অস্তিত্ববাদী আছে যারা রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞাপিত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধনীভূত হতে আগ্রহী। এরা মনে করে কোনো একটি জাতি বা রাষ্ট্র (যার মধ্যে এই লেখক অন্তর্ভুক্ত) অন্য জাতিগোষ্ঠী অপেক্ষা অনেকাংশে শ্রেয় এবং পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিবর্গের আত্মাহুতিতে স্বীয় সমরশক্তির বৃদ্ধিকরণে উন্মুখ। এই অবস্থার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো সংযুক্ত রাষ্ট্রে নরডিক উপস্থাপনা। দীর্ঘ লড়াই-এর মাধ্যমে যা অভিবাসন আইনের নৈতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই ধরনের অস্তিত্ববাদীরা ডারউইনের সর্বোত্তমের বেঁচে থাকার অধিকারকে স্বীকার করে নিয়েছে। কিন্তু এই মতবাদের প্রবক্তাদের অনেকে ডারউইনবাদকে আইনবিরুদ্ধ বলে মনে করে। জাতিগত অস্তিত্ববাদের রাজনৈতিক প্রচারের মধ্যে অনভিপ্রেত বস্তুর উপস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু এ সত্য বিস্মৃত হয়ে আসুন আমরা এর সদর্থক দিকগুলি সম্বন্ধে আলোচনা করি।

একথা অনস্বীকার্য যে, কোনো একটি জাতিগোষ্ঠী অপর মানবগোষ্ঠী অপেক্ষা সর্বাংশে শ্ৰেয় যদি উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের জনগোষ্ঠী তাদের আদিম অধিবাসীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো তাহলে তারা মানবসভ্যতাকে এত বেশি পরিপুষ্ট করতে পারতো না। একথা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, নিগ্রোরা শ্বেতকায়দের চেয়ে নিকৃষ্টতর যেহেতু গ্রীষ্মপ্রধান দেশে তারা হলো অপরিহার্য শ্রমিক। যখন আমরা ইউরোপের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে আলোচনা করি তখন রাজনৈতিক কু-সংস্কারাচ্ছন্নতায় আমরা আচ্ছাদিত হই। এসব ক্ষেত্রে জাতিগত অস্তিত্ববাদ হলো উগ্র স্বাজাত্যবোধের দ্যোতক।

জুলিয়াস উলফ এক সারণীর মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, পৃথিবীর কোথায় কোন দেশে হাজারপ্রতি জন্মহার মৃত্যুর চেয়ে বেশি। ফ্রান্সের ক্ষেত্রে এটি হলো সর্বনিম্ন (৯১.৩), এর পরের স্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (৪.০), তারপর সুইডেন (৫.৮), বৃটিশ শাসিত ভারত (৫.৯), সুইজারল্যান্ড (৬.২), ইংল্যান্ড (৬.২), জার্মানি (৭.৮), ইতালি (১০.০), জাপান (১৪.৬), রাশিয়া (১৯.৫) এবং পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে আগে ইকুয়েডর (২৩.১)। যেহেতু চীনের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান প্রাপ্তব্য নয় সেহেতু চীনকে এই আলোচনা থেকে বাদ রাখতে হয়েছে। উলফ এই সিদ্ধান্ত করেছেন যে, অদূর অভিষ্যতে পশ্চিমা পৃথিবী রাশিয়া, চীন ও জাপান দ্বারা গঠিত পূর্ব পৃথিবীর জনসংখ্যার চাপে পিষ্ট হবে। আমি ইকুয়েডরের উদাহরণ দিয়ে তার এই মতবাদ খন্ডন করতে চাইছি না। বরং আমি লন্ডনের ধনী-দরিদ্রের পারস্পরিক জন্মহার সংক্রান্ত তার তত্ত্বের কথা বলতে চাইছি। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, শেষোক্তদের জন্মহার কয়েক বছর পূর্বের প্রথমোক্তদের জন্মহারের চেয়ে কম। পূর্ব পৃথিবীর ক্ষেত্রেও দীর্ঘতর সময় বিরতিতে একই কথা প্রযোজ্য। পশ্চিমীকরণের সাথে সাথে জন্মহারের অনিবার্য পতন দেখা যাবে। শিল্পসমৃদ্ধির মূলকথা হলো পরিকল্পিত পরিবারের উপস্থাপনা। তাই আমরা এই সত্যে অবিচলিত থাকতে বাধ্য হই যে, শুধু যে কেবলমাত্র প্রাচ্যের আধিপত্য সূচিত হবে যা প্রাচ্যও সাম্রাজ্যবোধের ভয় উদ্রেককারী তাই নয় কিন্তু একথা মনে করার কোনো বাস্তব কারণ নেই যে, এ ঘটনা অনিবার্যভাবে ঘটবে। যুদ্ধে জাতিগুলি এই অসার তত্ত্বের আস্ফালনে পরস্পরের বিরুদ্ধে রণসাজে সজ্জিত হবে যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের কার্যধারা কোনো আন্তর্জাতিক প্রশাসন কর্তৃক আরোপিত ধনবৃদ্ধির গ্রহণযোগ্য সীমানা ধারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

.

দুটি পূর্ববর্তী ঘটনার মতো এক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিক উন্নতি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অর্জন করেছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের উদ্দেশ্য সাধনে বিজ্ঞান অনেকাংশে দায়ী যদি আমাদের উদ্দেশ্য কু-প্রযুক্ত হয় তাহলে তার ফলশ্রুতি দুঃখজনক হতে বাধ্য। যদি পৃথিবী ঘৃণা ও যুদ্ধের বাতাবরণে আবৃত থাকে তাহলে বৈজ্ঞানিক অভীক্ষার উত্তরণ একে আরও বেশি ভয়ানক করে তুলবে। তাই মানবসভ্যতার অন্যতম আকৃতি হওয়া উচিত এইসব অনভিপ্রেত চেতনার অবমূল্যায়ন অনেকাংশে যার অস্তিত্ব কু-প্রযুক্ত যৌন নৈতিকতা এবং অসম যৌনশিক্ষার ওপর নির্ভরশীল। তাই সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য একটি নব্য ও শ্রেয়তর নৈতিকতা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আমাদের অন্যতম চাহিদা হলো যৌননৈতিকতার অবমূল্যায়ন।

ব্যক্তিগত নীতিশিক্ষার দৃষ্টিভঙ্গিতে যৌননৈতিকতা যদি বিজ্ঞানসম্মত ও কুসংস্কারমুক্ত হয় তাহলে তাকে আমরা অস্তিত্ববাদীদের সংগ্রামের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করতে পারি। তাই যৌনসঙ্গমের ওপর বর্তমানে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল অপসৃত হলে মানব ও মানবী ফলশ্রুতি সংক্রান্ত গম্ভীর আলোচনা ব্যতিরেকে কখনই শরীর সম্পর্কে প্রবৃত্ত হবে না। গর্ভনিরোধক ব্যাপক ব্যবহারের ফলে পিতৃত্ব ও মাতৃত্বকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে। এখন তা আর যৌনসহবাসের অবিনার্য ফলশ্রুতি নয়। বিভিন্ন অর্থনৈতিক কারণে (যা আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি) শিশুর ওপর আরোপিত পিতার কর্তব্যের গুরুত্বপূর্ণতা ক্রমেই কমে আসছে, বিশেষ করে তার শিক্ষা ও পরিচর্যার বিষয়। তাই আমরা এ সত্যকে কেন মেনে নেবো না যে,এবার থেকে রমণিরা এমন পুরুষকেই তার সন্তানের পিতা হিসেবে নির্বাচন করবে, যে একাধারে তার প্রেমিক ও সখা। তাই অদূর ভবিষ্যতে নারীরা তাদের স্বীয় আনন্দকে বিসর্জিত না করে অস্তিত্ববাদী অনুধাবনে তাদের সন্তানদের পিতা নির্বাচন করবে এবং সাধারণ যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলিকে উড়িয়ে দেবে মুক্ত বাতায়নে। পুরুষের ক্ষেত্রে তাদের সন্তানের মাতা। নির্বাচনের কাজটি অপেক্ষাকৃত সহজতর। যেহেতু সন্তান উৎপাদনই যৌন ঘটনার একমাত্র ফলশ্রুতি হিসেবে গণ্য হচ্ছে না তাই নৈতিকতার দ্বিমুখি সত্তা জন্ম নিচ্ছে। একদিকে অবাধ প্রেমের বিচ্ছুরণ অন্যদিকে শিশু উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমকালের চেয়ে অধিকমাত্রায় আরোপিত নৈতিক নিয়মনীতির বিন্যাস।

তবে বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গিতে এই বিচার রোধের বিশ্লেষণ সম্ভব নয়। যেহেতু শিশু উৎপাদনের ঘটনাটি আর আগের মতো পূণ্যদ্যোতক থাকবে না। তাই কোনো পাদরি কর্তৃক উচ্চারিত কয়েকটি শব্দের দ্যোতনা অথবা আইনবিশারদ দ্বারা সৃষ্ট কোনো দলিলের গুরুত্ব ক্রমেই হ্রাস পাবে কারণ তারা নবজাতকের স্বাস্থ্য অথবা বুদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। আগামী দিনের নিয়ন্ত্রক বিষয় হবে মানব-মানবীর পারস্পরিক সমঝোতা, বংশানুক্রমিকতার রূপান্তর এবং কাক্ষিত সন্তান লাভ। যেহেতু বিজ্ঞান ক্রমশই এই সমস্যার সমাধানে নিজেকে আরও বেশি নিয়োজিত করছে তাই অস্তিত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ কুশলতার ব্যবহারিক নৈকট্য ক্রমেই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে। শ্রেষ্ঠ উত্তরাধিকারপ্রাপ্ত পুরুষরা পিতা হিসেবে কাম্য হবে, পক্ষান্তরে প্রেমিক হিসেবে গ্রহণযোগ্য পুরুষ পিতৃত্বের মাপকাঠিতে পরাজিত হবে। যদিও বিবাহ নামক অসার সম্পর্ক এখন পর্যন্ত এই ঘটনাকে মানবপ্রকৃতির পরিপন্থি হিসেবে চিন্তা করে অস্তিত্ববাদের ব্যবহারিক সম্ভাবনাগুলিকে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রিত করেছে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে যে এই বোধটি চালু থাকবে তা ভাবার কোনো কারণ নেই যেহেতু গর্ভনিরোধকের ব্যাপক ব্যবহার উৎপাদন বিহীন যৌন সম্পর্কের দ্বার করেছে উন্মুক্ত এবং অতীতে পিতা ও সন্তানের মধ্যে যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের হীরকদ্যুতি বিচ্ছুরিত হতো তার ঔজ্জ্বল্য অনেকাংশে কমে এসেছে। নীতিবাগীশরা বিবাহ নামক ঘটনার সঙ্গে যে গাম্ভীর্য ও সুউচ্চ সামাজিক উদ্দেশ্যের মেলবন্ধন ঘটাতে সমর্থ হয়েছিলেন, নৈতিকতার বৈজ্ঞানিকীকরণে তা কেবলমাত্র উৎপাদনশীলতায় সংশ্লিষ্ট হবে।

প্রথমে যে অস্তিত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল কয়েকজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের ব্যক্তিগত নৈতিকতার প্রতিফলনে তা ক্রমঃ প্রসারিত হয়ে আইন গ্রাহ্য হয়ে উঠবে এবং কাঙ্ক্ষিত পিতৃত্বকে আর্থিক পুরস্কারে স্বীকৃত করবে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পিতৃত্বকে দেবে আর্থিক শাস্তি।

আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত প্রক্ষোভের মধ্যে বিজ্ঞানের অনুপ্রবেশকে নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করা যায়। কিন্তু সুদীর্ঘ কাল ধরে আমরা ধর্মের কুসংস্কার দ্বারা যেভাবে শাসিত হয়েছি তার তুলনায় এই ঘটনা কিছুই নয়। কেননা বিজ্ঞান হলো এ পৃথিবীর নব্য পথিক। এর অন্তরালে ধর্মের মতো কর্তৃত্বব্যঞ্জক বোধ ও ঐতিহ্য অনুসৃত প্রথার প্রতিফলন নেই। কিন্তু ধীরে ধীরে বিজ্ঞান ও তার প্রয়োগশীলতার মধ্যে কর্তৃত্বের জন্ম দেবে এবং ধর্ম সম্পর্কে মানুষের মনের মধ্যে যে ভয় মিশ্রিত কৌতূহল আছে তারই উপছায়া সৃষ্টি করবে। যদি আমরা সমগ্র সমাজের উন্নতিকল্পে ব্রতি হই তাহলে একজন সাধারণ মানুষকে শুধুই তার চেতনা বিক্ষুব্ধ মুহূর্তের নিয়ন্ত্রণে রাখলে চলবে না, একে করে তুলতে হবে স্বীকৃত নৈতিকতার অঙ্গীভূত যা কেবলমাত্র আর্থিক পুরস্কার কিংবা দন্ডবিধানে ব্রতি হবে না, যা সুবিস্তৃত হবে তাচ্ছিল্যের পরিমাপ্যে।

সভ্যতার ঊষাকাল থেকে ধর্মের সাযুজ্য বিদ্যমান যেখানে বিজ্ঞানের বয়স হলো মাত্র চারশো বছর। তাই বিজ্ঞান যখন প্রাচীন সর্বমুখী হবে কথন সেও ধর্মের স্থান অর্জন করবে। তাই আমি এখন পরিস্থিতি অবলোকন করতে পারছি যখন মানবমুক্তির সাধকরা বৈজ্ঞানিক বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। তবে বিশৃঙ্খলাই যদি কাম্য হয় তা বিজ্ঞানসম্মত হওয়া উচিত।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *