ঝিঁঝিঁ – ২০

২০

“এই জায়গাটা কলকাতায়। একটা হাউজিং কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সের নাম এলিট সিটি এনক্লেভ”।

কম্পিউটার মণিটরে এলিট সিটি এনক্লেভের ছবিটা দেখিয়ে বলল লতিফ।

শুভ্র চমকে উঠল। ঝিঁঝিঁর নির্দেশে এখানেই তো সে সুলেখাকে ফলো করতে গিয়ে গেছিল!

কিছু বলল না সে। মনোযোগ দেওয়ার ভান করল।

লতিফ বলল “আজ থেকে ঠিক তিন দিন বাদে, তোমায় কলকাতায় এন্ট্রি দেওয়া হবে এলিট সিটি এনক্লেভে আমাদের আস্তানায়। তোমার সঙ্গে থাকবে রণি, জুবের আর মোশারফ। এই তিনজনই বাঙলা খুব ভাল বলতে পারে। বাঙ্গাল অ্যাক্সেন্টে না। কলকাতা অ্যাক্সেন্টে। তোমার অ্যাক্সেন্টের সঙ্গে এদের কোন পার্থক্য নেই। এরা ওয়েল ট্রেইনড। রণি এবং জুবের নর্থ কলকাতায় সার্ভে করবে সেদিন বিকেল থেকে। তুমি আর মোশারফ যাবে সাউথে। ঠিক কী সার্ভে করলে, আমাদের রিপোর্ট করবে। বাকি ছ জন যাবে তার পরের দিন। দশজনের টিম। একটা শহরকে নাড়িয়ে দেবার পক্ষে যথেষ্ট”।

শেষের দিকে লতিফের গলাটা ঠান্ডা শোনাল।

শুভ্র বলল “সার্ভে মানে বুঝলাম না ঠিক”।

লতিফ শুভ্রর দিকে তাকিয়ে হাসল “তেমন কিছু না। তুমি আর মোশারফ কাজি নজরুল মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোয় উঠবে। রণি, জুবের দমদম থেকে। ওরা নর্থের দিক থেকে প্রতিটা স্টেশনে নামবে। বেরোবে। তোমরা সাউথের দিক থেকে। কোথায় পুলিশ সিকিউরিটি সব থেকে কম থাকে, কোন স্টেশনে পুলিশ ব্যাক আপ সব থেকে দেরীতে আসে, কোথায় অ্যাটাক করলে সব থেকে বেশি মানুষ মারা যাবে, আমাদের সে রিপোর্ট চাই। তোমরা চারজন নেতাজী ভবন স্টেশনে মিট করবে সব স্টেশন দেখা হয়ে যাবার পরে। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে এলিট সিটি এনক্লেভে যাবে। এই সার্ভের রেজাল্টটা আমরা জানি, কিন্তু আমি চাই প্রতিটা স্টেশন ঘুরে তোমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ুক”।

শুভ্র বোঝার চেষ্টা করছিল এই প্ল্যানের ভয়াবহতাটা। তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল।

লতিফ বলল “আমরা জানি তোমাদের আর্মস ট্রেনিঙটা কমপ্লিট হয় নি। প্ল্যানটা একমাস পরে ছিল। কিন্তু আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছে আর দেরী করা যাবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিশন কমপ্লিট করতে হবে। কাল থেকে সারাদিন তোমাদের আপৎকালীন ভিত্তিতে আর্মস ট্রেনিং দেওয়া হবে। দশটা ছেলে, প্রত্যেকের টার্গেট থাকবে দশজন করে মানুষ। প্রতিটা শহরে একশো জন মানুষ করে মোট এক হাজার মানুষ। এর বেশি হলে ক্ষতি নেই। কম যেন না হয়। তুমি প্রস্তুত তো আতিক? শেষ মুহূর্তে ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাবে না তো?”

শুভ্র কোন মতে বলল “না, পিছিয়ে যাব না”।

লতিফের দু চোখ জ্বলে উঠল “মনে রাখবে, শুধু একটা দিন আমাদের বার্তা ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে পৃথিবীর সর্বত্র পৌঁছে দেবে। এই একটা দিনে তুমিই তোমার প্রভু। তোমার প্রতিটা বুলেট জবাব দেবে সেই লোকগুলোকে যারা আমাদের প্রতিমুহূর্তে হেয় করে এসেছে। ছোট দেখিয়ে এসেছে। আমাদের কষ্ট দিয়েছে। আমাদের ঘর ছাড়া করেছে। দুশমনের গুলিতে জন্নত নসীব হবার আগে প্রতিটা দুশমনকে জবাব দিয়ে যেতে হবে আতিক”।

লতিফ মাউস নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে একটা ভিডিও চালাল। আফগানিস্তানে আমেরিকান বোম্বিং এর ভিডিও। লতিফ বলল “তুমি আমাকে যে মেইলটা করেছিলে তাতে এই ঘটনাটার কথা বলেছিলে মনে আছে? আফগানিস্তানে থাকা আমাদের নিরীহ ভাইবোনেদের এরা অবলীলায় খুন করেছে। এই ইন্ডিয়া এদের সাপোর্ট করেছিল। গুজরাট ভুলে গেলে চলবে? কাশ্মীরে কীভাবে ওরা দিনের পর দিন আমাদের ভাইদের খুন করছে। মা বোনেদের রেপ করছে। তোমার প্রতিটা বুলেট যেন ওদের সব কিছুর উত্তর হয়ে ওঠে আতিক। এদের কোন ভাবেই কোন রকম দয়া দেখিও না, পারবে না?”

উত্তেজনায় লতিফ শুভ্রর হাত শক্ত করে ধরল।

শুভ্র মাথা নাড়ল “পারব”।

লতিফের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল “আমি জানি তুমি পারবে আতিক। আল্লাহর খাস বান্দা তুমি”।

শুভ্র চুপ করে রইল।

#

দুপুর বেলায় খাবার পরে শুভ্রকে আরেকটা ঘরে নিয়ে যাওয়া হল। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর। একটা ঝকঝকে পরিষ্কার খাট। শুভ্রর দেখেই ঘুম পেয়ে গেল। শরীর, মন দুটোই ভারাক্রান্ত হয়েছিল, শুভ্র কোন মতে শুয়ে পড়ল।

চোখ দুটো বুজতে যাবে এমন সময় মাথার ঝিঁঝিঁ ডেকে উঠল।

“শুভ্র”।

শুভ্র বলল “বলুন”।

“ওদের প্ল্যান বুঝতে পারছ? ওরা একদিনে গোটা দেশটাকে নাড়িয়ে দিতে চায়”।

 শুভ্র বলল “আপনারা কে বা কারা, কিছু না জেনে আমি আর কিছু বলব না। আপনাদের জন্য আমার আজকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হল”।

“আচ্ছা শুভ্র, একটা কথা বল তো, কোনটা হলে তুমি খুশি হতে? মেট্রো থেকে নেমে হঠাৎ কোন অজ্ঞাত আততায়ীর বন্দুকের সামনে পড়তে, না কিছু নিরীহ মানুষকে এদের হাত থেকে বাঁচাতে পারলে?”

শুভ্র বলল “আমি নিজের বাড়িতে, নিজের খাটে শুয়ে থাকতে পারলে সব থেকে বেশি খুশি হতাম”।

“স্বাভাবিক, প্রতিটা মানুষ তাই ভাবে বটে শুভ্র। যতক্ষণ না নিজের ঘাড়ে বিপদটা এসে পড়ছে, মানুষ কিছুতেই ভাবতে পারে না, সেও অন্যকে বাঁচাতে পারে”।

শুভ্র একটু চুপ করে থেকে বলল “আমাকে দিয়ে কী করাতে চান বলুন?”

“তুমি যার কাছে ট্রেনিং করছ সেই উসমানকে এফ বি আই খুঁজছে গত দশ বছর ধরে। জানো?”

শুভ্র বলল “না”।

“লতিফ এখন ইন্ডিয়ার মোস্ট ওয়ান্টেড। পুনে ব্লাস্ট কান্ডে ওর ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ”।

শুভ্র বলল “আমি এসব শুনে কী করব?তাছাড়া লতিফ কলকাতা গেছিল তো। ওকে তখন ধরা হল না কেন?”

“এই জন্যই তোমাকে বলছি, কারণ উসমান বা লতিফ এবারে কেউই ইন্ডিয়ায় ঢুকবে না। ওরা আর রিস্ক নেবে না। লতিফকে ধরা হয় নি কারণ ও নাম ভাঁড়িয়ে গেছিল। ভেবেছিল আমরা কিছুই জানতে পারব না। আমরা ওকে সেফ প্যাসেজ দিয়েছিলাম যাতে তুমি ওখানে পৌঁছতে পার। তোমাদের মত ছেলেদের দিয়ে ওরা অপারেশনটা কমপ্লিট করতে চাইছে। তুমি জানো এখন তুমি কাদের ক্যাম্পে আছো?”

শুভ্র বলল “কাদের?”

ওপাশ থেকে ভেসে এল “আই এস আই এস”।

শুভ্রর মাথাটা ঘুরে উঠল।

(ক্রমশ)

ঝিঁঝিঁ

২১

“শুভ্র। শুনতে পাচ্ছ?”

শুভ্রর মাথায় ঝিঁঝিঁটা ডেকে উঠল আবার।

শুভ্রর মাথা কাজ করছিল না আই এস আই এসের নাম শুনে। কোনমতে বলল “হ্যাঁ, বলুন”।

“তুমি বুঝতে পারছ এদের মিশন কতটা ভয়াবহ?”

শুভ্রর রাগ হল এবার। বলল “বুঝতে পারছি, কিন্তু আমাকে এখানে কেন আনা হল, সেটা আমি এখনও বুঝে উঠতে পারি নি”।

“তোমাকে সব বলা হবে। তার আগে ওরা তোমাকে যে যে প্ল্যানগুলো বলবে তার সবগুলো মন দিয়ে শুনবে। আমরা তোমার এরিয়ার ফ্রিকোয়েন্সি এখনও পুরোপুরি কন্ট্রোলে আনতে পারি নি যার ফলে এখনও সব কথা ঠিক ঠাক আমাদের কাছে আসছে না। তুমি আমাদের জানাও ওদের প্ল্যান কী?”

শুভ্র কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, ঘরের দরজা ঠেলে সুলেখা ঢুকল দেখে সে চুপ করে গেল। নার্সের পোশাক পরে এসেছে সুলেখা। হাতে একটা ট্রে। ট্রের মধ্যে একটা প্লেটে ফল আর এক গ্লাস দুধ। তার সামনের টেবিলে রেখে বলল “খেয়ে নাও”।

শুভ্র বলল “আমার খিদে নেই”।

সুলেখা তার দিকে তাকিয়ে যন্ত্রের মত বলল “লতিফ স্যার পাঠিয়েছেন। বলেছেন তোমাকে খেয়ে তৈরী হতে। বেরোবেন”।

আর একটাও কথা না বলে সুলেখা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

শুভ্রর মাথায় ঝিঁঝিঁটা আবার ডেকে উঠল “তোমাকে কোথাও একটা নিয়ে যাবে লতিফ?”

শুভ্র বলল “হ্যাঁ। তাই বলল। ফল আর দুধ দিয়ে গেছে, খেয়ে নিতে বলল”।

ঝিঁঝিঁ বলল ‘ঠিক আছে, খেয়ে নাও। আমরা শুনছি’।

শুভ্র বলল “আপনারা কারা?”

ঝিঁঝিঁ বলল “একদিন নিশ্চয়ই জানবে। খেয়ে নিয়ে বেরোও তাড়াতাড়ি”।

মাথার ঝিম ভাবটা থেমে গেল।

শুভ্র আর কিছু ভাবল না। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখল লতিফ তার ঘরের দিকেই আসছিল। তাকে দেখে খুশি হয়ে বলল “তুমি তৈরী?”

শুভ্র বলল “হ্যাঁ”।

লতিফ বলল “এসো”।

লতিফের পেছন পেছন শুভ্র হাঁটতে থাকল। বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে গাড়ি বারান্দায় একটা বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। লতিফ বলল “ওঠো”।

শুভ্র বলল “কোথায় যাব?”

লতিফ বলল “চল। গিয়ে দেখবে”।

শুভ্র গাড়িতে উঠল। আরামদায়ক সিট। বোঝাই যাচ্ছে, গাড়ির দাম অনেক।

লতিফ গাড়িতে ওঠার পর গাড়িটা স্টার্ট দিল।

লতিফ বলল “তোমার বাবা মার জন্য মন খারাপ লাগছে না তো আতিক?”

লতিফের প্রশ্নে একটু চমকেই স্বাভাবিক হল শুভ্র। বলল “না”।

লতিফ বলল “গুড। আমরা তোমার বাড়ির খোঁজ নিয়েছি। তারা ভালই আছেন। আর তোমার কে একজন আছে না, তোমার গার্লফ্রেন্ড না কী, তার খোঁজও নিয়েছি। সেও ভাল আছে”।

গাড়িটা গেটে এসে দাঁড়াতে গেট খুলে গেল। গাড়ি বাইরের রাস্তায় উঠল।

শুভ্র বুঝল লতিফেরাও তার সম্পর্কে সব খবর নিয়েছে। সে খানিকটা ঘাবড়ালেও চুপ করে থাকল।

লতিফ বলল “কয়েক বছর আগে আমি আফগানিস্তানে ছিলাম, জানো আতিক। আমেরিকানরা আমাকে প্রায় ধরে ফেলেছিল। কীভাবে জানো? আমার সঙ্গে যে ছেলেটাকে নিয়ে গেছিলাম, সে বাড়িতে ফোন করে লোকেশন বলে দিয়েছিল। এফ বি আই ফোন ট্রাপ করত। ধরেই ফেলেছিল প্রায়। কুরবানি দিয়েছিলাম ছেলেটাকে নিজের হাতে”।

লতিফ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। শুভ্র বুঝতে পারল না লতিফ তাকে এই কথাগুলো কেন শোনাচ্ছে।

বাকি পথ লতিফ আর কোন কথা বলল না। আধঘন্টা যাওয়ার পরে একটা ছোট বাজার মত জায়গায় তাদের গাড়িটা এসে দাঁড়াল। লতিফ বলল “সামনে একটা আই এস ডি বুথ আছে। সিকিওর লাইন। তুমি চাইলে ওখান থেকে তোমার বাড়ি কিংবা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা বলে আসতে পারো”।

শুভ্রর মার মুখটা মনে পড়ে গেল হঠাৎ করে। ফোন করতে ইচ্ছা করছিল খুব। অনেক কষ্টে সে ইচ্ছা দমন করে সে বলল “দরকার নেই। আমার কারো সঙ্গে কথা বলার দরকার নেই। পৃথিবীতে আমার কাছের বলে কেউ নেই। এখানে আসার আগে আমি সবাইকে দূরে সরিয়ে রেখে এসেছিলাম’।

লতিফ কয়েক সেকেন্ড তার দিকে তাকিয়ে তার কাঁধে চাপড় মেরে বলল “একজন সত্যিকারের মুজাহিদিনের কাছে আমি এই কথাটাই শুনতে চেয়েছিলাম। আমি জানতাম তুমি ঠিক এই কথাই বলবে। যাও, গাড়ি থেকে নেমে বুথের পাশের দোকানে যাও। ওরা তোমাকে একটা ব্যাগ দেবে। নিয়ে আসো”।

শুভ্র চুপচাপ গাড়ি থেকে নামল। আইএসডি বুথের সামনে সে দাঁড়াতে গিয়েও দাঁড়াল না। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলাল। বুথের পাশে একটা দোকানে সে গিয়ে দাঁড়াল। একটা লোক সন্দিগ্ধ চোখে একবার লতিফের গাড়ি, আরেকবার তার দিকে তাকিয়ে একটা ভারি কিট ব্যাগ তার দিকে এগিয়ে গেল। শুভ্রর বেশ কষ্ট হল ব্যাগটাকে গাড়িতে নিয়ে আসতে।

গাড়িতে শুভ্র উঠতে লতিফ ড্রাইভারকে গাড়ি স্টার্ট দিতে বলল। খানিকটা রাস্তা যাবার পর লতিফ ব্যাগটা খুলে তার থেকে একটা বড় মেশিনগান বের করে হেসে বলল “ইনশা আল্লাহ, তোমাদের খেলনা এসে গেছে”।

(ক্রমশ)

ঝিঁঝিঁ

২২

ব্যাগটার মধ্যে একগাদা লাইট মেশিনগান।

লতিফ পরম স্নেহে সেগুলোয় হাত বুলিয়ে শুভ্রকে বলল “আমাদের প্রিয় ভাই পাঠিয়েছে বেইরুট থেকে পাঠিয়েছে আমাদের মিশনের জন্য। একটু ঘুরপথে আনতে হয় এখানে। মাদ্রাসায় সরাসরি আনলে কী হয় আশা করি বুঝতে পারছ”।

শুভ্র মাথা নাড়ল।

পাহাড়ি অঞ্চল। রাস্তা খুব একটা ভাল না। মাঝে মাঝেই গর্ত পড়ছে। লতিফ বলল “সূরা ইউনুস জানো?”

শুভ্র বলল “জানি না”।

লতিফ বলল ‘শিখে নিও। যে কোন বিপদে পড়লে সূরা ইউনুস পড়বে, দেখবে বিপদ থেকে মুক্তি পাবে”।

শুভ্র উত্তর দিল না। তার মনে হল সূরা ইউনুস জানলে ভালই হত। অন্তত এখন যে বিপদে পড়েছে তার থেকে বেরনো যেত।

কিছুক্ষণ পরেই লতিফের গাড়ি তাদের বাউন্ডারিতে চলে এল। গাড়ি দাঁড়াতেই দুজন ছেলে দৌড়ে এসে লতিফের থেকে ব্যাগটা নিল। লতিফ শুভ্রকে বলল “তুমি ঘুরতে চাইলে ঘুরতে পারো। দেখে নাও। এখানে তো আর বেশিদিন থাকতে হবে না”।

লতিফ চলে গেল।

শুভ্র দেখল বিল্ডিং এর সামনের মাঠে চারটে ছেলে রোদের মধ্যেও জোরে দৌড়চ্ছে। তাদের গায়ে সেনার পোশাক। উসমানের মুখে হুইসল। যখন দুবার হুইসল বাজাচ্ছে, ছেলেগুলো সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ছে। একবার হুইসল দিলে ছেলেগুলো প্রবল উৎসাহে দৌড়তে শুরু করছে।

শুভ্র মাঠের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়েছিল এমন সময় মাথায় ঝিঁঝিঁ ডেকে উঠল “শুভ্র”

শুভ্র ফিসফিস করে বলল “বলুন”।

“কোথায় নিয়ে গেছিল তোমায়?”

“অস্ত্র আনতে। একগাদা বন্দুক এসেছে ব্যাগে করে”।

“ক’টা?”

“জানি না। গুণি নি, কুড়িটা তো কম করে হবেই”।

“মাত্র কুড়িটা? বাকি আশিটা?”

“জানি না”।

“আচ্ছা। তুমি এখন কোথায় আছো? বিল্ডিং এর ভিতরে না বাইরে”?

শুভ্র বলল “বাইরে”।

“গুড। আমাকে বল জায়গাটা কী রকম?”

শুভ্র ভালভাবে চারদিক দেখে বলল ‘অনেকটা জায়গা নিয়ে তৈরী বিল্ডিং। একগাদা ছোট ছোট ঘর। বেশ কয়েকটা ঘরে কম্পিউটার সেট আপ আছে। এই বিল্ডিং এর ভেতরে ছোট হাসপাতালও আছে। লাগোয়া মসজিদ”।

“জানি। ওই মসজিদের আড়ালেই এই ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা এই কাজগুলো করছে। বাংলাদেশ সরকার কিছুতেই কনভিন্স হচ্ছে না এই জায়গাটা নিয়ে। তাদের ধারণা ভারত নজরদারির নাম করে বাংলাদেশের ওপর অধিকার ফলাবে”।

শুভ্র অবাক হয়ে বলল “আপনি কে প্লিজ বলবেন?”

“সব জেনে যাবে সময় হলে শুধু মনে রেখো, এত বড় একটা বিল্ডিঙে, এত লোকের মাঝে তুমি একমাত্র চেষ্টা করে যাচ্ছ অনেকগুলো মানুষকে বাঁচানোর। সামনের দিন ভাল আসছে না শুভ্র। যদি ওরা সফলভাবে নিজেদের প্ল্যান এক্সিকিউট করতে পারে তাহলে কী হতে পারে বুঝতে পারছ?”

“আমি কিছু জানি না। কিছু বুঝতে পারছি না”।

“তোমাকে কিছু জানতে বুঝতে হবে না। শুধু একটা কোড মনে রাখবে। কোহিনূর”।

শুভ্র কিছু একটা বলতে যাবে, এমন সময় দেখল যে চারটে ছেলে দৌড়চ্ছিল, তার মধ্যে একটা ছেলে তার দিকে দৌড়তে দৌড়তে এসে বলল “তোমাকে উসমান স্যার ডাকছেন”।

মাথার ঝিঁঝিঁটা থেমে গেল। শুভ্র ধীর পায়ে উসমানের দিকে এগোচ্ছিল এমন সময় উসমান জোরে হুইসেল বাজাল। ইঙ্গিতে তাকে বলল দৌড়ে ওর কাছে যেতে।

শুভ্রর কান্তি ছিল শরীরে। তবু সে দৌড়নোর চেষ্টা করল।

মাঠের মধ্যে একটা ইট ছিল সে দেখে নি। তড়িঘড়ি দৌড়তে গিয়ে পড়ে গেল। ছেলেগুলোর মধ্যে একটা ছেলে সশব্দে হেসে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে উসমান এগিয়ে গিয়ে ছেলেটার পেটে জোরে একটা লাথি মারল। ছেলেটা শব্দ করে মাটিতে বসে পড়ল।

উসমান এগিয়ে এসে তাকে হাত ধরে তুলল। ইঙ্গিত করে বলল মাঠের চারপাশে দৌড়তে। শুভ্র দাঁড়াল না। দৌড়তে শুরু করল।

উসমান সশব্দে দুবার হুইসল বাজাল। শুভ্র দাঁড়িয়ে পড়ল। আবার হুইসল বাজাল। শুভ্র মাঠটা পুরো প্রদক্ষিণ করে উসমানের কাছে আসতেই উসমান দুটো হুইসল দিলে শুভ্র দাঁড়িয়ে পড়ল। সে হাঁফাচ্ছিল। কিন্তু দেখল উসমান খুশি হয়েছে। তার পিঠ চাপড়ে দিল। যে ছেলেটা মার খেয়েছে সে তীব্র ঘেন্নার চোখে শুভ্রর দিকে তাকিয়ে রইল।

(ক্রমশ)

ঝিঁঝিঁ

২৩

উসমানের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে শুভ্র সেখানে আর দাঁড়াল না। বিল্ডিংয়ের চারপাশ মাটির রাস্তায় ঘেরা। সে জোর পায়ে হেঁটে উসমানের চোখের আড়াল হল। উসমান সম্পর্কে তার একটা ভয় কাজ করে। লোকটার অত্যাচার করার ক্ষমতা অপরিসীম।

ভেতর থেকে আরবী সঙ্গীত ভেসে আসছে। শুভ্র হাঁটতে হাঁটতে বিল্ডিংয়ের পিছন দিকে গেল। এই প্রথম জায়গাটা দেখার সুযোগ পেল সে ঠিক ভাবে। দেখে বোঝাই যাচ্ছে অনেক টাকা খরচ করে এ জায়গাটা তৈরী। বিল্ডিংয়ের পিছনের বাউন্ডারি পার হলেই ঘন জঙ্গল শুরু। উঁচু উঁচু প্রাচীর। বেশ কয়েকজন লোক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরছে।

একটা ছোট বাগান দেখতে পেল। বেশ কয়েকটা ফুল গাছ তাতে। শুভ্রর বাড়ির কথা মনে পড়ল। মা এভাবে বাগান করে। মা কী করছে এখন? তার চিন্তায় নিশ্চয়ই পাগল হয়ে গেছে।

আর বাবা? বাবার মত করে ঝিঁঝিঁ তাকে ডাকছিল কেন?

এ ক’দিন তাকে ঘিরে যা চলছে তার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না। মনে হচ্ছে যেন কোন দুঃস্বপ্ন দেখছে সে। টিভিতে বা ইন্টারনেটে জঙ্গি ঘাটি সম্পর্কে আগে শুনেছিল সে, কিন্তু এরকম জায়গায় যে তাকে স্বশরীরে আসতে হবে তা কোনদিন ভাবতেও পারে নি শুভ্র।

পায়ে কিছু একটা বিঁধেছিল। শুভ্র নিচু হয়ে সেটা দেখার জন্য বসল।

প্রায় তখনই পিঠে কেউ সজোরে একটা লাথি মারল। শুভ্র মুখ থুবড়ে পড়ল।

পিছন থেকে হো হো করে হাসির আওয়াজ পাওয়া গেল। শুভ্র ঘুরে দেখল উসমানের ওখানে যে ছেলেগুলো ছিল তাদের দুজন। একজন উর্দুতে তাকে বলল “কী রে চুহা, তুই নাকি টিম লিডার? কোত্থেকে এসেছিস তুই?

ছেলেদুটো শুভ্রর থেকে বড়। চেহারাতেও। শুভ্র ওঠার চেষ্টা করতেই একটা ছেলে তাকে হাতে লাথি কষাল।

শুভ্র ব্যথায় চিৎকার করে উঠল। দূরে যারা বন্দুক হাতে পাহারা দিচ্ছিল, তারাও হেসে উঠেছে। বোঝা যাচ্ছে মজা পেয়েছে।

শুভ্রর হঠাৎ করে ভীষণ রাগ হল। সে ঘাসের মধ্যে গড়িয়ে ওদের থেকে দূরে গিয়ে উঠে দাঁড়াল। ছেলেদুটো প্রথমে বোঝে নি। ব্যাপারটা ওদের বোধগম্য হতেই দুজনেই তাকে ধরার জন্য এগিয়ে এল। শুভ্র কোন দিকে না তাকিয়ে সপাটে একটা ছেলের পায়ে একটা লাথি কষাল। ছেলেটা জোরে শব্দ করে বসে পড়ল। দ্বিতীয় ছেলেটা কিছু বুঝে উঠবার আগেই শুভ্র ছেলেটার মুখ লক্ষ্য করে পরপর দুটো ঘুষি চালাল।

পাহারাদারেরা মজা পেয়ে গেল। তারা হাততালি দিয়ে তাদের উৎসাহ দিল।

যে ছেলেটাকে শুভ্র লাথি মেরেছে সে উঠতে যেতে শুভ্র ছেলেটার মাথা লক্ষ্য করে লাথি কষাল। ছেলেটা মাটিতে শুয়ে পড়ল। দ্বিতীয় ছেলেটা মাটিতে বসে পড়েছিল। শুভ্র ছাড়ল না। ছেলেটাকে লাথি মারল সজোরে। দুজন ভাবতেও পারে নি শুভ্র তাদের এভাবে আক্রমণ করবে। তারা খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে গেছিল। এ ক’দিনের ঘটনাবলী শুভ্রকে আর কিছু ভাবতেই দিচ্ছিল না। দুজনকেই সমানে মেরে গেল সে। একজন শুয়ে কোঁকাতে লাগল।

শুভ্র দুজনের দিকে তীব্র ঘৃণার চোখে দেখে সে জায়গা ছেড়ে আবার বিল্ডিঙয়ের সামনের দিকে রওনা দিল।

ছেলেদুটো ওখানেই শুয়ে রইল। পাহারাদারেরা হই হই করে তাকে উৎসাহ দিল।

শুভ্র সে দিকে না তাকিয়ে বিল্ডিং এর সামনের দিকে এসে দেখল লতিফ যেন তার জন্যই দাঁড়িয়ে আছে “সাবাশ আতিক, তোমার ওপর আমার এই আশাই ছিল। সিসিটিভিতে সমস্তটাই দেখেছি। বুঝতে পেরেছি, ঠিক লোককে নির্বাচন করতে আমার এবারেও কোন ভুল হয় নি। ইউ হ্যাভ দ্যাট এক্স ফ্যাক্টর ইউ নো”।

শুভ্র হাসার চেষ্টা করল। লতিফ তার পিঠে চাপড় মেরে চলে গেল।

তারই বয়সী একটা ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল একটু দূরে। লতিফ চলে গেলে তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল “ওদের নাম ইউসুফ আর হাকিম। পাকিস্তানের বালুচিস্তানের ছেলে ওরা। একটা বড় মিশনের জন্য ওদের তৈরী করা হচ্ছে। ওদের খুব অহংকার। এখানে অনেককেই জ্বালাতন করেছে ওরা। তুমি ওদের মেরেছ, সাবধানে থেকো, ওরা খুব প্রতিহিংসাপরায়ণ”।

ছেলেটা সন্তর্পণে চারদিকে তাকিয়ে চলে গেল।

শুভ্র অবাক হল। ছেলেটাকে সে আগে দেখেও নি। কেন এত সব কথা বলল তাকে?

(ক্রমশ)

ঝিঁঝিঁ

২৪

শুভ্র মূল বিল্ডিংয়ে ঢুকল। এতদিন তার একটা ভয় কাজ করত। এখন সে নিজেই বুঝতে পারছিল, মনের মধ্যে একটু একটু করে সাহস হচ্ছে।

উসমান লতিফের সঙ্গে কথা বলছিল। তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকল। পিঠ চাপড়ে দিল। লতিফ বলল “উসমান দেখেছেন তুমি কীভাবে ওদের মারলে। তোমার রিফ্লেক্স অ্যাকশন প্রমাণ করেছে আমরা লিডার নির্বাচন করতে কোন ভুল করি নি”।

শুভ্র হাসার চেষ্টা করল। লতিফ বলল “এসো আমাদের সঙ্গে”।

লতিফ আর উসমান এগোল। শুভ্র তাদের পেছন পেছন গেল।

দুজনে কম্পিউটার কক্ষে ঢুকল।

লতিফ শুভ্রর দিকে তাকিয়ে হাসল “একটা সুখবর দিই তোমাকে। কলকাতা মেট্রোর সিসিটিভি অ্যাক্সেস আমরা পেয়ে গেছি। এসো বসো এখানে”।

শুভ্র বসল। লতিফ কম্পিউটারে কয়েক সেকেন্ড খুটখুট করে সিসিটিভি কন্ট্রোল অন করল। একগাদা উইন্ডো ওপেন হল।

লতিফ তার মধ্যে থেকে একটা উইন্ডোতে ক্লিক করলে স্ক্রিণ জুড়ে শুধু সেটার ফুটেজ ভেসে উঠল।

উসমান লতিফকে কিছু একটা বলল। লতিফ তার জবাবে উসমানকেও কিছু বলল। তারপর লতিফ শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল “কবি নজরুল মেট্রো স্টেশন। লাইভ দেখছ আতিক। এই স্টেশনটা আন্ডারগ্রাউন্ড না। জানো আশা করি। দেখো আপাতত স্টেশন ফাঁকা। খুব বেশি হলে এই দিকের প্ল্যাটফর্মে কুড়িজন আছে। এবার দেখো, ঠিক দু মিনিট পর”।

লতিফ ঘড়ির দিকে তাকাল। একটা অদ্ভুত অস্বস্তিকর নীরবতা। ঠিক একশো কুড়ি সেকেন্ড পর দেখা গেল প্ল্যাটফর্মে একটা মেট্রো এসে দাঁড়াল। একগাদা লোক নামল স্টেশনে। লোকজন হুড়মুড় করে চলমান সিঁড়ির দিকে দৌড়ল।

প্ল্যাটফর্মে যারা ছিল তারা ট্রেনে উঠল। মিনিট তিনেকের মধ্যে প্ল্যাটফর্ম আবার ফাঁকা হয়ে গেল।

লতিফ বলল “এবার নিচের ক্যামেরা দেখো”।

লতিফ মেট্রো স্টেশনের নিচের ক্যামেরা দেখাল। দুজন পুলিশ নিজেদের মধ্যে গল্প করছে। আর কাউকে দেখা যাচ্ছে না। লতিফ আবার উসমানকে কিছু বলল।

পরপর সব স্টেশনের সিসিটিভি কন্ট্রোল নিজেরা তীক্ষ্ণ চোখে লক্ষ্য করল।

লতিফ হাসিমুখে শুভ্রর কাঁধে হাত দিয়ে বলল “বুঝতে পারছ ঠিক কোন জায়গাটা থেকে তোমাদের অপারেশন শুরু হবে। এই দুজন, কিংবা কোন স্টেশনে তিনজন। পুলিশ, আর পি এফের সংখ্যা এই সময়ে সবচেয়ে কম থাকে। এরা কোন দিন স্বপ্নেও ভাবতে পারে না কত কিছু হয়ে যেতে পারে”।

শুভ্র বলল “বুঝেছি”।

উসমান স্ক্রিনে হাত দিয়ে কিছু একটা বলল লতিফকে।

লতিফ বলল “এক মিনিটের উইন্ডোতে তোমরা প্রতি স্টেশনে অন্তত পাঁচশো নিরস্ত্র লোক পাচ্ছ। কনভারশন রেট নিজেরাই ঠিক কর যখন অটোমেটিক মেশিনগান ইউজ করবে। এবং…”

লতিফ কথা থামিয়ে চেয়ার ঘুরিয়ে শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল “সুইসাইড মিশনে যখন যাবে, তখন কনভারশান রেট ম্যাক্সিমাম হবে সেটাই স্বাভাবিক। জাস্ট থিংক অ্যাবাউট অফিস টাইম আতিক…”

লতিফ শিস দিয়ে উঠল।

শুভ্র শিউরে উঠল। এই সময়ে প্রায়ই সৌমিতা মেট্রোতে করে বাড়ি ফেরে। তাদের ক্লাসের অপরাজিতা, হিন্দোল, অনির্বাণরা ঠিক এই মেট্রোতেই নামে। এদের মারতে হবে তাকে? ওরা যদি তাকে চিনতে পেরে যায়? অবাক চোখে নিজেদের আততায়ীকে চিনতে পেরে যায়?

শুভ্র আর ভাবতে পারছিল না।

লতিফ মাউস দিয়ে সিসিটিভি স্ক্রিন অফ করে বাংলাদেশ আর পূর্ব ভারতের ম্যাপ খুলল কম্পিউটারে। শুভ্রকে বলল “তোমরা মেঘালয় সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকবে। মেঘালয় থেকে গুয়াহাটি যাবে। সেখান থেকে ফ্লাইটে কলকাতা। সময় খুব কম থাকবে তোমাদের কাছে”।

শুভ্র বলল “আর বাকিরা?”

লতিফ বলল “একইভাবে। টিম লিডার হিসেবে তোমার কর্তব্য হবে সবাই চলে গেলে তারপর কলকাতার ফ্লাইট ধরা। অ্যাম আই ক্লিয়ার?”

শুভ্র মাথা নাড়ল।

লতিফ বলল “দিল্লি, মুম্বই, চন্ডীগড়, কানপুর, ত্রিবান্দ্রম, পানাজি, হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোর আর কলকাতা। দশটা শহরে, একই সঙ্গে, একই সময়ে, বুম”।

লতিফ চোখ বড় বড় করল।

লতিফ বলল “আওয়ার ফার্স্ট অপারেশন। সব থেকে বড় সাক্সেস স্টোরি চাই আমার। পারবে না?”

লতিফের চোখ জ্বলে উঠল।

শুভ্র বলল “পারব”।

লতিফ গর্জে উঠল, “এত আস্তে বললে কী করে হবে? লাউড এন্ড ক্লিয়ার। পারবে?”

শুভ্র চেঁচিয়ে উঠল “পারব”।

লতিফ উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল “ইনশাল্লাহ”।

(ক্রমশ)

ঝিঁঝিঁ

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *