• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত –  ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য

লাইব্রেরি » ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য » মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত –  ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য
মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত -  ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য

মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত –  ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য

আমার স্বর্গত মাতৃদেবী বীণা ভট্টাচার্য
এবং
আমার স্ত্রী শ্রীমতী রেখা ভট্টাচার্য-কে

ভূমিকা

‘দুর্লভ মুহূর্ত কোনও দৈবী মুহূর্ত নয়। হঠাৎ আলোর ঝলকানি লেগে ঝলমল করে চিত্ত— এ জাতীয় কোনও রচনাও নয়। ‘দুর্লভ মুহূর্ত’ বলে সেইগুলিই গ্রহণ করা হয়েছে, যেগুলিতে জীবনের এক একটি পরিণতি, আংশিক অথবা পূর্ণ পরিণতি, বিচিত্রতম অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান গ্রহণ করা হয়েছে। এর আলোচ্য মুহূর্তটি খণ্ড কোনও মুহূর্ত নয়—কীভাবে ধীরে ধীরে মুহূর্তটি ঘনিয়ে এল—ব্যাসদেবের সেই অমর বর্ণনাকে সহজ, সরল ভাষায় উপস্থাপিত করা হয়েছে। কোথাও কোনও বিকৃতি ঘটানো হয়নি। পড়তে পড়তে বিদগ্ধজনেরও ঘটনা সম্পর্কে খটকা লাগবে। কারণ পরিচিত ঘটনার সঙ্গে ব্যাসদেবের কাহিনি মিলবে না।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিখ্যাত নাট্যকাব্য ‘বিদায়-অভিশাপ’ (কচ ও দেবযানী) শেষ করেছিলেন দেবযানীর অভিশাপ ও কচের আশীর্বাদে। শেষ দুটি চরণে রবীন্দ্রনাথের কচ বলেছিলেন—

আমি বর দিনু দেবী, তুমি সুখী হবে।
ভুলে যাবে সর্বগ্লানি বিপুল গৌরবে।

কিন্তু ব্যাসদেবের কাহিনির পটভূমি ও পরিসমাপ্তি ভিন্নতর। দেবতারা বারবার দৈত্যদের পরাজিত ও বধ করেছিলেন। কিন্তু দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য মৃত দৈত্যদের সঞ্জীবনী মন্ত্র দ্বারা জীবিত করে দিচ্ছিলেন। মন্ত্রণার পর দেবতারা গুরু বৃহস্পতির পুত্র কচকে সঞ্জীবনী মন্ত্র শেখার জন্য শুক্রাচার্যের কাছে পাঠালেন। হাজার বছর কচ শুক্রাচার্যের শিষ্য হয়ে থাকলেন। দৈত্যগণ তিনবার তাঁকে বধ করলেন। তিনবারই শুক্রাচার্য তাঁকে পুনরুজ্জীবিত করে দিলেন এবং কচের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে বিদ্যা দান করলেন। কচ স্বর্গে প্রত্যাবর্তনে উদ্‌যোগী হলে, দেবযানী প্রণয়জ্ঞাপন করে তাঁকে গ্রহণ করতে অনুরোধ জানালেন। কচ প্রত্যাখ্যান করলেন। বললেন যে, দেবযানীর প্রার্থনা অসঙ্গত ও অন্যায়। কারণ তিনি ও দেবযানী একই পিতা শুক্রাচার্যের দেহোৎপন্ন। (দৈত্যরা তৃতীয়বার কচকে ভস্মীভূত করে শুক্রাচার্যের সুরার মধ্যে মিশিয়ে দিয়েছিল, দেহ থেকে কচকে নিষ্ক্রান্ত করেন শুক্রাচার্য), সুতরাং দেবযানী তাঁর ভগ্নি। কুপিতা দেবযানী কচকে অভিসম্পাত করেন, তিনি লব্ধ বিদ্যা প্রয়োগ করতে পারবেন না। কচ অত্যন্ত রুষ্ট হন। দেবসমাজের প্রতিনিধি হিসাবে তিনি সহস্ৰ বৰ্ষ সাধনায় এক বিদ্যা লাভ করেছেন, একটি নারীর লালসায় তা মিথ্যা হয়ে যাবে? তিনিও দেবযানীকে অভিসম্পাত করেন যে, দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যের কন্যা হয়েও দেবযানীর কোনও ঋষিপুত্র বা ব্রাহ্মণপুত্রের সঙ্গে বিবাহ হবে না। কচ দেবযানীর অভিশাপের উত্তরে আরও জানান, তিনি বিদ্যা প্রয়োগ করতে না পারলেও, তিনি যাকে শেখাবেন, সে এই বিদ্যা প্রয়োগ করতে পারবে। কচের অভিশাপ ফলেছিল। রাজা যযাতির সঙ্গে দেবযানীর বিবাহ হয়। এই বিবাহজাত বংশই যদুবংশ, যে বংশে কৃষ্ণ জন্মেছিলেন।

ব্যক্তি-পুরুষ হিসাবেই কচকে গ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ব্যক্তি-পুরুষের ক্ষমার সর্বোচ্চ অবস্থা প্রতিফলিত হয়েছে বিশ্বকবির লেখনীতে। কিন্তু ব্যাসদেবের কচ দেব-সমাজের প্রতিনিধি, সমাজ-প্রতিনিধি হিসাবে দেবতাদের বাঞ্ছিত ফলকে তিনি ব্যর্থ করে দিতে পারেন না, তা হলে দেবসমাজের গুরুতর ক্ষতি হবে। তাই ব্যাসদেবের কচ দেবযানীকে অভিসম্পাত করেন। সমাজের শ্রেষ্ঠ বর্ণ থেকে বিচ্যুতির অভিশাপ। পাঠক কোনটি গ্রহণ করবেন, তা পাঠকের নিজস্ব রুচি, কিন্তু ব্যাসদেবের বিচার বর্তমান লেখকের সংগত বোধ হয়েছে।

কালিদাসের অধিকাংশ রচনার সঙ্গে ব্যাসদেব কাহিনির মিল, শুধু কাঠামোতেই। চরিত্ৰ-ঘটনা-পারিপার্শ্বিক কালিদাস ইচ্ছামতো পরিবর্তন করেছেন। কালিদাস কিংবা রবীন্দ্রনাথ মহাকবি ছিলেন। উত্তুঙ্গ কবি-কল্পনায় তাঁরা যা রচনা করেছেন, তা অমরকাব্য হয়েছে। চরিত্রগুলি শ্রদ্ধেয়, অলৌকিক দিব্য চরিত্র হয়েছে। কিন্তু ব্যাসদেব তেমন কিছু করতে চাননি। মানুষের চরিত্রে ভাল-মন্দ দুই আছে। ব্যাসদেব নির্লিপ্ত সাক্ষীর মতো যেমন ঘটেছে, তেমন বর্ণনা দিয়েছেন। এমন ঘটেছে যে, কালিদাস-রবীন্দ্রনাথের কাহিনি অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ব্যাসদেবের কাহিনি পাঠকের অজানা থেকে গেছে।

জার্মান কবিকুলের মহাগুরু গ্যেটে শকুন্তলা সম্পর্কে বলেছিলেন, “কেহ যদি তরুণ বৎসরের ফুল ও পরিণত বৎসরের ফল, কেহ যদি স্বর্গ ও মর্ত্য একত্রে দেখিতে চাও—তাহা হইলে তাহা শকুন্তলায় পাইবে।” এ শকুন্তলা কালিদাসের, ব্যাসদেবের নয়। ব্যাসদেবের শকুন্তলা তপোবন পালিতা, কিন্তু অনভিজ্ঞা নন। তাঁর আত্মসম্মানবোধও প্রখর। পুত্র-জন্মের ন’ বছর পর্যন্ত শকুন্তলা দুষ্মন্তের আগমনের প্রতীক্ষা করেছিলেন। তারপর পিতার অনুমতি নিয়ে পুত্রের হাত ধরে রাজসভায় উপস্থিত হন। দুষ্মন্ত তাঁকে প্রত্যাখ্যান করলে শকুন্তলা তীব্র তীক্ষ্ণ বাক্যে তাঁর সমালোচনা করেন। দীর্ঘভাষণে তিনি দুষ্মন্তকে শিক্ষা দেন যে, ভার্যা কাকে বলে, স্বামীর ধর্ম কী, পুত্র মানুষের কতখানি। শেষ পর্যন্ত তিনি দুষ্মন্তকে বলেন, “আমি অভিসম্পাত করলে তোমার মস্তক শতধা-বিদীর্ণ হবে। তোমাকে অভিশাপ না করেই আমি পুত্রকে নিয়ে চলে যাচ্ছি। তোমার সাহায্য ছাড়াই আমার পুত্র সসাগরা পৃথিবীর অধীশ্বর হবে।” এ শকুন্তলা অনেক সবলা, আপনার ধর্মবোধ, তপশ্চর্যা ও আন্তর-শক্তিতে দীপ্যমানা। কালিদাস দুর্বাসার অভিসম্পাত এনে দুষ্মন্তের চরিত্রের মালিন্য দূর করতে চেয়েছেন, ব্যাসদেবের এমন কোনও দায় নেই। তিনি তৎকালীন রাজাদের চরিত্রকেই উদ্‌ঘাটিত করেছেন।

বিক্রম-উর্বশী নাটকেও কালিদাস ব্যাসদেবের আখ্যানকে পরিবর্তিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথ করেছেন ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্যে। বর্তমান লেখক কাহিনি রচনার ক্ষেত্রে ও পরিণতিতে ব্যাসদেবকে অনেক বেশি অভ্রান্তবোধ করেছেন। ব্যাসদেব দেখিয়েছেন মানুষের কর্মের ফল মানুষকে পৃথিবীতেই পেয়ে যেতে হয়। নিঃসহায়, ভক্তিপ্রণত একলব্যের কাছে, কোনও শিক্ষা তাঁকে না দিয়েও, গুরু দ্রোণ দক্ষিণা চাইলেন। একলব্য কেটে দিলেন তাঁর দক্ষিণ বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ। দ্ৰোণ অস্ত্র ত্যাগ করে প্রায়োপবেশনে বসলে শিষ্য ধৃষ্টদ্যুম্ন কেটে ফেলেন তাঁর মাথা। অতিরিক্ত ভোজনে চলচ্ছক্তিহীন নিষাদদের সেই অবস্থায় রেখে ভীমসেন জতুগৃহে অগ্নি প্রদান করেন। অতিরিক্ত ভোজনে চলচ্ছক্তিহীন হয়ে ভীমসেন মহাপ্রস্থানিক পার্বত্যপথে মৃত্যুমুখে পতিত হন। পাঠক, প্রত্যেক ঘটনা বিচার করে দেখবেন, প্রতিটি ঘটনা কার্য-কারণ সূত্রে গ্রথিত। ব্যাসদেব যেন ভগবানের মতো কর্ম এবং ফল চিত্রিত করে দিয়েছেন।

মহাভারত একটি রত্ন-সাগর। একশোটি কেন, ইচ্ছা করলে যে কোনও লেখক এতে হাজারটি দুর্লভ মুহূর্ত খুঁজে পাবেন। এক বন-পর্বেই শতাধিক দুর্লভ মুহূর্ত পাওয়া যাবে। কিন্তু এর অধিকাংশই আমি ‘নায়ক-যুধিষ্ঠির’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছি। ‘নায়ক-যুধিষ্ঠির’-এ বর্ণনা করা কোনও ঘটনা আমি বর্তমান গ্রন্থে গ্রহণ করিনি। গ্ৰহণ করিনি রাম-সীতার কাহিনি, নল-দময়ন্তীর কাহিনি, সাবিত্রী-সত্যবানের কাহিনি। এগুলি অত্যন্ত দীর্ঘ এবং বহুল-প্রচলিত।

শান্তিপর্ব এবং অনুশাসনপর্বও আমাকে বাদ দিতে হয়েছে। মহাভারতের মধ্যে শান্তিপর্ব যেমন সর্বাপেক্ষা বৃহৎ, তেমনই সর্বাধিক বৈচিত্র্যময় এবং মানুষের প্রয়োজনীয়। কারণ, এতে রাজনীতি, সমাজনীতি, ধর্মনীতি প্রভৃতি সমস্ত নীতিই আছে এবং অনভিমত দর্শনগুলি ও অভিমত অনুসারে খণ্ডিত হয়েছে। নাস্তিক্য দর্শনের আবিষ্কর্তা স্বয়ং বৃহস্পতি। এই কারণে একে বার্হস্পত্য দর্শনও বলা হয়। বৌদ্ধ দর্শনও অত্যন্ত প্রাচীন। ব্যাসদেব আদি পর্বেই ক্ষপণকাখ্য বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর ও বৌদ্ধবিহার এবং বৌদ্ধ-মঠের উল্লেখ করেছেন। অনুশাসনপর্ব শান্তিপর্বেরই অংশবিশেষ। শান্তিপর্বে ইতিহাসের অংশ অধিক এবং অনুশাসনপর্বে ধর্ম অধিক, ইতিহাসের অংশ অল্প। এই দুটি পর্ব অবলম্বনে স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনার প্রয়োজন আছে।

এই একশত দুর্লভ মুহূর্ত পাঠক পাঠ করতে করতে বুঝতে পারবেন, মহাভারত কোনও আকস্মিক কাহিনির গ্রন্থ নয়। সত্যযুগে সমুদ্রমন্থনের পর অমৃত ও লক্ষ্মীকে নিয়ে দেবতা ও দানবদের মধ্যে প্রথম সংঘর্ষ শুরু হয়। বিষ্ণুর মায়ায় দানবেরা পরাজিত হয়। ত্রেতা যুগে দানবেরা স্বর্ণলঙ্কায় অবস্থান করতে থাকে। বিষ্ণুর অংশজাত রামচন্দ্র এবং তাঁর বানর-ভল্লুক (এঁরা অধিকাংশই দেব অংশে জাত) সৈন্যকে আশ্রয় করে আবার মহাযুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং সীতারূপিণী লক্ষ্মীকে উদ্ধার করেন। দ্বাপর যুগে দেব-অংশজাত শক্তিরা পাণ্ডবপক্ষকে অবলম্বন করেন এবং দানব শক্তি কৌরবপক্ষকে অবলম্বন করেন। দেব-অংশে জাত কেউ কেউ অভিশাপবশতও কৌরবপক্ষে চলে যান। সত্যযুগে সংঘর্ষের কারণ ছিল জীবন ও নারী, ত্রেতা যুগে সংঘর্ষের কারণ নারী, দ্বাপরে সংঘর্ষের কাহিনির কারণ জমি। ব্যাসদেব বলেছেন, এই সংঘর্ষ কলিযুগেও হবে।

স্বাভাবিকভাবেই ‘একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত’ নির্বাচনে লেখকের বিচার ও বিবেচনাই কাজ করেছে। মহাভারত রত্ন-সমুদ্র, একথা আগেই বলেছি। মহাভারতের ঘটনাক্রম অনুসরণ করে এর পরিণতি পর্যন্ত বর্তমান একশোটি মুহূর্তে ধরা হয়েছে। পরীক্ষিতের মৃত্যুতে ক্রুদ্ধ পুত্র জনমেজয়ের সর্পসত্র যজ্ঞকাহিনি দিয়ে এর শুরু—পরীক্ষিতের সাম্রাজ্য-লাভ ও যুধিষ্ঠিরের সংসার ত্যাগ পর্যন্ত সম্পূর্ণ বৃত্তটি এই একশোটি কাহিনির মধ্য দিয়ে প্রকাশ করতে চেয়েছি। মুহূর্তগুলির বর্ণনা কোথাও দীর্ঘ, কোথাও অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী এর বর্ণনার দৈর্ঘ্য এসেছে। যেমন দূতরূপে কৃষ্ণের কৌরবসভায় যাত্রা। এর বর্ণনা অত্যন্ত দীর্ঘ। কারণ কৃষ্ণ কৌরবসভায় যাবেন এই শুনে পরশুরাম থেকে মহর্ষি কণ্ব পর্যন্ত বহু দেবর্ষি মহর্ষি হস্তিনাপুর রওনা হলেন। নারীমহলে চাঞ্চল্য দেখা গেল, হস্তিনাপুরের আবাল-বৃদ্ধ-নরনারী অত্যন্ত ঔৎসুক্য প্রকাশ করলেন। এগুলি বাদ দিয়ে শুধু কৌরবসভায় কৃষ্ণকে উপস্থিত করা যায় না।

সমস্ত কাহিনি ব্যাসদেবের মূল মহাভারতকে আশ্রয় করে। এর মধ্যে কোথাও কল্পনা অথবা আধুনিক বিচার নেই। আকর গ্রন্থ হিসাবে আমি পিতামহ হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ-এর গ্রন্থের উপর নির্ভর করেছি।

এর ব্যাখ্যা অংশ আমার নিজস্ব। তার কোথাও ভুল-ত্রুটি থাকলে তার দায় আমার। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে মহাভারত কেবলমাত্র পাঠ্য ও হৃদয়ঙ্গম করার কাব্য নয়। মনন, চিন্তন, নিধিধ্যাসন সম্পূর্ণ যুক্ত না হলে মহাভারত পাঠ সফল হয় না। আমি সেই নিধিধ্যাসনের চেষ্টা করেছি, প্রহরের পর প্রহর উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি, ফল বিচার পাঠকের।

দুর্লভ মুহূর্তগুলির অনেকগুলিতে মৃত্যু বর্ণনা আছে। মৃত্যু মানব-জীবনের স্বাভাবিক পরিণতি। কিন্তু মহাভারতের অধিকাংশ চরিত্রই অসাধারণ। তাই তাঁদের মৃত্যুও এসেছে অ-সাধারণভাবেই। ত্রিলোকবিজয়ী পঞ্চপাণ্ডবের চারজনই পার্বত্য পথে নিঃসঙ্গভাবে মৃত্যুবরণ করলেন। কেউ কাঁদল না তাঁদের জন্য। জন্মদাতা পিতাও এলেন না। এ কাহিনি আমি ‘নায়ক-যুধিষ্ঠির’-এ প্রকাশ করেছি—অনুরূপ মৃত্যুর ঘটনা দুর্লভ মুহূর্তগুলিতে আছে।

সূচিপত্র দেখলেই পাঠক দেখবেন যুধিষ্ঠির সংক্রান্ত কাহিনির সংখ্যা অত্যন্ত অল্প। ‘নায়ক-যুধিষ্ঠির’ গ্রন্থে আমি যুধিষ্ঠিরের জীবনের মূল কাহিনিগুলির বিস্তৃত বিবরণ দিয়েছি। তাই ‘মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্তে’ সেগুলি গ্রহণ করলাম না। ‘নায়ক যুধিষ্ঠির’ এবং ‘মহাভারতের একশোটি দুর্লভ মুহূর্ত’ একত্রে রেখে যিনি পড়বেন, তিনি মহাভারতের মূল ঘটনাগুলির রেখাচিত্র পাবেন, এ বিশ্বাস করি।

প্রত্যেকটি দুর্লভ মুহূর্ত বর্ণনায় এক-একটি শ্লোক গ্রহণ করেছি। এর উদ্দেশ্য একটাই। কাহিনি বর্ণনায় আমরা ব্যাসদেবের সঙ্গে সঙ্গে চলেছি, এই কথাটি সর্বদা মনে রাখা।

মহাভারতকে আমি পুরাণ-কথা বলে চিহ্নিত করতে চাই না। কারণ পৃথিবীতে যদি কোনও গ্রন্থ থাকে, যা চিরকালীন, চিরকালের মানুষের জন্য চিরন্তন সত্য—সে গ্রন্থ ‘মহাভারত’। যেগুলি মানুষের অপ্রয়োজনীয়, সেগুলি বাদ দিয়ে আধুনিকতম মানুষও মহাভারতে তাঁর ভাবনার, চিন্তার, জীবনধারার সব খোরাকই পাবেন। মহাভারত ‘চিরায়ত’ সাহিত্য।

এই গ্রন্থ রচনায় আমাকে অত্যন্ত উৎসাহিত করেছেন আমার বৈবাহিক শ্রীআশুতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্যেষ্ঠা কন্যা কাঁকন ও জামাতা ধ্রুবজ্যোতি খোঁজ রেখেছে রচনার গতির। কনিষ্ঠা কন্যা শাওন, জামাতা কৃষ্ণেন্দু বিভিন্ন প্রশ্ন করেছে। আমার ভ্রাতা অমিতাভ ভট্টাচার্য উৎসাহ দিয়েছে, প্রেরণা দিয়েছে আমার আর এক ভ্রাতা পার্থসারথি ভট্টাচার্য। এঁদের প্রত্যেককে আমার ধন্যবাদ জানাই। এই গুরুভার গ্রন্থরচনার ক্ষেত্রে দুর্ভার সংসার যাত্রা, সংসার পরিচালনা থেকে, আমাকে সর্বদায়িত্ব থেকে, মুক্তি দিয়েছেন আমার স্ত্রী শ্রীমতী রেখা ভট্টাচার্য। তাঁর কথা মহাভারতের নায়ক যুধিষ্ঠির বলে গেছেন—“গৃহে মিত্র ভার্যা”। এরপরে আমার নূতন করে বলা অপ্রয়োজনীয়।

শ্রীধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য
কালীপূজা, ১৪১২, কলকাতা

Book Content

০১. ধৃতরাষ্ট্রের হাহাকার
১০. ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা
২০. স্বয়মাগতা উলূপী
৩০. শিশুপাল-বধ
৪০. পুত্রকামনায় অগস্ত্য-লোপামুদ্রা সম্মিলন
৫০. কীচক-বধ
৬০. ভীষ্মের মৃত্যুর কারণ
৭০. অলৌকিক অর্জুন
৮০. শল্য-বধ
৯০. গান্ধারীর রণক্ষেত্র দর্শন
লেখক: ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্যবইয়ের ধরন: ধর্ম ও দর্শন, প্রবন্ধ ও গবেষণা
মহাভারতের নারী

মহাভারতের নারী – ধীরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.