১৩৩১ সাল। আমার জ্ঞাতি (চাচাত) ভ্রাতা আঃ রহিম (রহম আলী) মৃধা বেড়াতে যাবেন তাঁর বেহাই (মৃধা সাবের পুত্র ফজলুর রহমানের শ্বশুর) এমদাদ উল্লা কাজীর বাড়ীতে (কালীগঞ্জ)। মৃধা সাব ছিলেন- ধনে, মানে, জ্ঞানে, গুণে, এ অঞ্চলের সেরা ব্যক্তি। তিনি তার অনান্য কুটুম্ব ও সব জ্ঞাতি ভাইদের দাওয়াত করলেন এবং আমাকেও। অধিকন্তু আমাকে আমার গানের দ্বোহারগণকে নিয়ে যেতে বল্লেন। তিনি যাবেন সেখানে “পয়নামা” নিয়ে খুব ধুমধামের সহিত, সেখানে আমাকে গান করতে হবে। নির্দিষ্ট দিনে যথা সময়ে আমরা কাজী বাড়ী গেলাম এবং সবাই বৈঠকখানা ঘরে বসলাম। ঘরের মধ্যভাগটা -গেদী, বালিশ তাকিয়া ইত্যাদি নানা উপকরনে সাজানো। মৃধা সাব ও আমার অন্যান্য জ্ঞাতি ভাইয়েরা ওখানেই বসলেন। কিন্তু আমাকে বসতে দেওয়া হ’ল বারান্দায়। কারণ-আমি “বয়াতী”। গান করলাম। বাড়ীওয়ালা পুরষ্কার দিলেন দশ টাকা। কথায় বলে “যাক জান, থাক মান”। অর্থাৎ মানহানীর চেয়ে প্রাণহানী ভাল। আত্ম মর্যাদায় আঘাত পেয়ে সেদিন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম-বেঁচে থাকতে আর কখনো গান করব না, চেষ্টা করে দেখব কোনো দিন মৃধা সাবের পাশে বসতে পারি কি-না। (চেষ্টায় সফলতা লাভ করেছিলাম তখন, যখন১৩৩৯ সালে চর বাড়ীয়া ইউনিয়ন বোর্ডের প্রথম পদে নিবাচিত হলাম এবং ১৩৪৩ সালের নির্বাচনেও উভয়ে পুনঃ উহার “সদস্য” পদে নির্বাচিত হলাম। অধিকন্তু আমি হলাম নির্বাচিত “সহ সভাপতি” মৃধা সাব নন। এতদ্ভিন্ন -আমি তার সামনেই সরকার কর্তৃক মনোনিত হয়েছিলাম ১৩৪৬ সালে স্থানীয় ডি, এস বোর্ডের “সদস্য” এবং ১৩৪৮ সালে চর বাড়ীয়া ইউনিয়ন জুট কমিটির “সহ সভাপতি”।)