০৯. তাৎক্ষণিক বক্তৃতা
খুব বেশিদিনের কথা নয়, একদল ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আর সরকারী আমলা কোন এক ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠানের গবেষণাগারের কাজকর্ম সম্পর্কে প্রশংসা করছিলেন। একের পর এক বক্তা গবেষণাগারে রসায়নবিদ আর গবেষকদের আশ্চর্যজনক কর্মধারার বর্ণনা করলেন। তারা শোনালেন গবেষকরা কিভাবে ছোঁয়াচে সব রোগের টীকা তৈরি করছেন, জীবানুর আক্রমণ-রোধে কিভাবে ওষুধ আবিষ্কার করেছেন। তাদের পশু আর মানুষের উপর পরীক্ষা একেবারে নাটকীয়।
একজন সরকারী কর্মচারী রিসার্চ ডিরেক্টরকে বললেন আপনার লোকেরা সত্যিই যাদুকর। আপনি কিছু বলছেন না কেন।
‘আমি একা কথা বলতে পারি, লোকজনের সামনে পারি না’, ভদ্রলোক একটু দুঃখের সঙ্গেই বললেন।
কিছুক্ষণ পরে চেয়ারম্যান বলে উঠলেন, ‘আমরা কিন্তু এখনও আমাদের রিসার্চ ডিরেক্টরের কাছ থেকে কিছু শুনিনি। তিনি বক্তৃতা দিতে চাইছেন না। ঠিক আছে, আমরা তার কাছ থেকে অন্ততঃ দু’চারটে কথা শুনতে চাই।’
ব্যাপারটা ডিরেক্টরের কাছে ফ্যাসাদের মত হয়ে উঠল। তিনি কোন রকমে উঠে দাঁড়িয়ে দু’চারটে কথা বললেন মাত্র। বেশি কথা বলতে না পারার জন্য তিনি ক্ষমা চইলেন–ব্যাস্, এইটুকুই তাঁর বক্তব্য ছিল।
অথচ নিজের কাজে তিনি অত্যন্ত দক্ষ একজন মানুষ। শুধু কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁর আদৌ যোগ্যতা ছিল না! এমন হওয়ার কোন কারণ অবশ্য থাকার কথা নয়। কি করে তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিতে হয় তিনি শিখতে পারতেন। আমার ক্লাসের এমন কোন ছাত্রকে দেখিনি যার পক্ষে এটা শেখা কঠিন। প্রথমেই যা দরকার সেটা ওই ডিরেক্টর কাজে লাগান নি–নিজের পরাজিত মনোভাব জোর করেই দূর করা। কাজটা যতটা কঠিন মনে হোক, মনের জোরেই সে বাধা দূর করা উচিত। আসল প্রয়োজন সাহস।
আপনি হয়তো বলবেন, ‘আমার বক্তব্য যদি আগেই তৈরি করে রাখতাম তাহলে ভাল হত। কিন্তু আচমকা আমাকে কিছু বলতে ডাকা হলে মুখে কথা আসতে চায় না।’
নিজের চিন্তাকে গুছিয়ে নিয়ে হঠাৎ কোন বক্তব্য রাখা অত্যন্ত দরকার হতে পারে-আর সেটা দীর্ঘ পরিশ্রমে তৈরি লম্বা বক্তৃতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আধুনিককালে এধরণের তাৎক্ষণিক বক্তৃতার প্রয়োজন অতি বেশি রকম। বিশেষ করে ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে তো বটেই। বিশেষত আজকের যুগের দ্রুত জীবন-যাত্রার মনকে গুছিয়ে নিয়ে কথা বলার প্রয়োজনীয়তা অসামান্য। আজকের শিল্পজগতে আর এমনকি সরকারী প্রশাসনেও সমস্ত প্রস্তাব একজন মানুষ গ্রহণ করে না, তা গ্রহণ করা হয় কোন সভায় আলোচনা করে। একজন হিসেবে অনেকের বক্তব্য থাকে, আর তাকে তা তাৎক্ষণিক ভাবেই জানাতে হয়। এখানেই তাৎক্ষণিক বক্তব্য রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
১. তাৎক্ষণিক বক্তৃতা অভ্যাস
মোটামুটি যে কোন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, যার কিছুটা আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকে, তিনিই চমৎকার কোন তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিতে পারেন। তাৎক্ষণিক বক্তৃতার অর্থ হল, না তৈরি করে কোন কথা বলা। দ্রুত কথা বলে যাওয়ার পদ্ধতি শেখার বেশ কিছু উপায় আছে। একটা পদ্ধতি হল বিখ্যাত চলচ্চিত্র শিল্পীরা যা করেন সেই পদ্ধতি।
বেশ কয়েক বছর আগে ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্ক আমেরিকান ম্যাগাজিনে একটা প্রবন্ধে বর্ণনা করেন, তিনি চার্লি চ্যাপলিন আর মেরি পিকফোর্ড দু’বছর ধরে প্রত্যেক রাতে একটা খেলা খেলে যেতেন। ব্যাপারটা খেলার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটা আসলে ছিল কথা বলার মত কঠিন শিল্প নিয়ে অনুশীলন করে যাওয়া। খেলাটা সম্বন্ধে ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কস এটাই লিখেছিলেন :
আমাদের প্রত্যেকে একটুকরো কাগজে যে কোন বিষয় লিখতাম। এরপর টুকরোগুলো ভাজ করে মিশিয়ে ফেলতাম। এরপর একজন একটা টুকরো তুলত। তারপরেই তাকে কাগজে লেখা ওই বিষয় নিয়ে ষাট সেকেণ্ড কথা বলতে হত। একই বিষয় আমরা দুবার লিখতাম না। এক রাত্তিরে আমাকে ‘ল্যাম্পের ঢাকা নিয়ে বলতে হয়। একবার চেষ্টা করে দেখুন কেমন সহজ। আমি কোন রকমে উতরে যাই।’
‘কিন্তু আসল ব্যাপার হল খেলাটা আরম্ভ করার পর থেকে আমাদের তিনজনেরই বেশ উন্নতি হয়েছে। নানারকম বিষয়ে আমরা অনেকের চেয়েই বেশি জানি। কিন্তু তার চেয়েও যা ভাল তা হল, আমরা যে কোন বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে কিছু বলার ক্ষমতা অর্জন করেছি। দাঁড়িয়ে কিভাবে চিন্তা করতে হয় আমরা শিখেছি।’
আমাদের পাঠক্রমের ক্লাসে সদস্যদের তাৎক্ষণিক কথা বলতে বলা হয়। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় বুঝেছি এই ধরণের অনুশীলনে দুটো ব্যাপার ঘটে : (১) এতে প্রমাণ হয় ক্লাসের সকলেই দাঁড়িয়ে চিন্তা করতে পারে, আর (২) এই অভিজ্ঞতা তাদের তৈরি করা বক্তৃতা দানের সময় আত্মবিশ্বাস আর মজবুত মন গড়ে তোলার সহায়তা করে। তারা বোঝেন কোন অজ্ঞাত কারণে তৈরি করা ভাষণ যদি মনে পড়ে তাহলে তারা তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিয়ে অবস্থা সামলাতে পারবেন।
আমাদের ক্লাসে তাই কোন না কোন সময়ে তাৎক্ষণিক বক্তব্য রাখতে বলা হয়। তাতে কি হয়? দেখা যায় হয়তো কোন এ্যাকউন্ট্যান্টকে বিজ্ঞাপন নিয়ে বলতে বলা হল। বিজ্ঞাপন বিক্রেতাকে বলা হয় কিণ্ডারগার্টেন নিয়ে কথা বলতে, বা কোন ব্যাঙ্ক ব্যবসায়ীকে বলতে বলা হল কিণ্ডারগার্টেন নিয়ে কথা বলতে, বা কোন ব্যাঙ্ক ব্যবসায়ীকে বলতে বলা হল শিক্ষা সম্পর্কে।
তারা কি মাথা নিচু করে থাকবেন। মোটেই না। যদিও বক্তব্য সম্বন্ধে তাঁর বিশেষজ্ঞ নন, তবুও তাদের জানা তথ্যটুকুই তাঁরা কেবল গুছিয়ে বলার চেষ্টা করবেন। হয়তো কারও কাছে কাজটা কঠিন, আবার কারও কাছে সহজ। আসলে এতে বেশ একটু মজা থাকে। তারা বোঝেন যে বিষয়ে তাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই সে বিষয়েও তাঁদের কথা বলার ক্ষমতা জন্মেছে।
আমার বিশ্বাস আছে তারা যদি এই কাজ পারেন তাহলে যে কেউই তা পারবে–এটা করা সম্ভব ইচ্ছাশক্তি আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে। কেউ চেষ্টা করলেই তা পারবে।
আর একটা পদ্ধতি হল জোড়া লাগানো পদ্ধতি। ব্যাপারটা আমাদের পাঠ্যক্রমের ক্লাসে শেখানো হয়। বেশ সজীব এই পদ্ধতি। ক্লাসের একজন সভ্যকে যে কোন কাহিনী যতটা সম্ভব অদ্ভুতভাবে ঝকমকে করে বলতে বলা হয়। ধরা গেল তিনি বললেন, “আমি সেদিন যখন একটা হেলিকপ্টার চালিয়ে উড়ছিলাম তখন অবাক হয়ে দেখলাম এক ঝাঁক ‘উড়ন্ত চাকি আমার দিকে ধেয়ে আসছে। আমি নামতে শুরু করলাম আর সঙ্গে সঙ্গে কাছাকাছি উড়ন্ত চাকি থেকে একজন ক্ষুদে মানুষ গুলি চালাতে আরম্ভ করল। আমি ….।
ঠিক তখনই একটা ঘন্টা বেজে ওঠে কারণ বক্তার সময় ততক্ষণে শেষ হয়েছে। এবার পরবর্তী বক্তাকে ওই গল্পের জের টেনে যেতে হবে। ক্লাসের সকলে এক এক করে তাদের পালা কাহিনী বলে গেলে এর শেষ হবে হয়তো মঙ্গলগ্রহের কোনো খাল বা কংগ্রেসের হল ঘরে।
আগে থেকে প্রস্তুতি না নিয়ে এই ধরনের কথা বলে যাওয়ার কৌশল শিক্ষা দারুণ শিক্ষণীয় পদ্ধতি। এই পদ্ধতি যত বেশি করে অনুশীলন করা যায় ততই দক্ষতা বাড়তে থাকে। আর তার ফলে যে কেউ ব্যবসা বাণিজ্য, বিক্রয়, সামাজিক মেলামেশা, সভা সমিতি সর্বত্রই সফলতা পেতে পারবেন তাতে কোন সন্দেহের কারণ নেই।
২. তাৎক্ষণিক বক্তব্য রাখতে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন
আপনাকে যখনই কোন অনুষ্ঠান বা সভায় তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে ডাকা হয়, তখন নিশ্চয়ই আপনি যে কোন বিশেষ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করবেন সেটা ধরে নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে যেটা প্রয়োজনীয় তা হল, আপনি যেটুকু সময় কথা বলার জন্য পাবেন সেই সময়টুকুতে আপনি যা বলতে চান সেটা কেমনভাবে সমাধা করবেন। এটা বেশ এক সমস্যা। সবচেয়ে ভালো উপায় হল যে বিষয়ে আপনি বলতে চাইবেন সে সম্পর্কে নিজের মনকে চট করে তৈরি করে ফেলা।
এমন ক্ষেত্রে যা করণীয় সে সম্বন্ধে আমার পরামর্শ হল এই রকম : মনের দিক থেকে যে কোন পরিস্থিতিতে যে কোন সময় তাৎক্ষণিক কথা বলার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন। এটা করার জন্য আপনাকে বেশ একটু চিন্তা করতে হবে। পৃথিবীতে এই ঠিক মত চিন্তা করা কাজটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। তবে আমি নিশ্চিত যে কোন মানুষই তাৎক্ষণিক বক্তা হিসেবে নাম কিনতে বা দক্ষতা অর্জন করতে পারে না যদি না সে আগে থেকে চিন্তা ভাবনা করে জনতা বা শ্রোতাদের মন বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অর্জন করে। একজন দক্ষ বিমান-চালক যেমন আগে থেকেই সবরকম সমস্যা বা পরিস্থিতির একটা আগাম মূল্যায়ন করে নিয়ে নিজেকে যে কোন অবস্থায় মানিয়ে নিতে তৈরি রাখে; বক্তাকেও তাই করতে হয়। তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দেওয়ার আগেও তাই বক্তাকে হাজার হাজার বার এ ধরণের বক্তৃতা অনুশীলন করতে হবে।
তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দেওয়ার কিছু সুবিধাও আছে–যেমন, এই বক্তৃতা তেমন দীর্ঘ হয় না। স্বাভাবিক ভাবেই অল্প সময় ধরে বলতে হয় বলে আপনি সহজেই আপনার বক্তব্য বিষয় ঠিক করতে পারেন। অর্থাৎ অবস্থার পরিস্থিতিতে কোন বিষয় মানানসই হবে। তৈরি হয়ে আসেন নি বলে কখনও মার্জনা চাইতে যাবেন না। এটা সকলেই ধরে নেয় আপনি সময় মত আপনার কথা শুরু করবেন।
৩. যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা উদাহরণ দিন
উদাহরণ দেবেন কেন? প্রশ্নটি স্বাভাবিক। এর তিনটি কারণ আছে :
(১) যেহেতু আপনার পরের কথাটার জন্য কঠিন চিন্তা করা থেকে নিজেকে রেহাই দিতে পারবেন,আর তা হওয়ার কারণ হল অভিজ্ঞতা এমনই জিনিস যে তাৎক্ষণিক কথা বলার সময়েও তা সহজেই মনে পড়বে।
(২) আপনি কথা বলার প্রেরণা বোধ করতে থাকবেন, দেখবেন আপনার প্রথম দিকের সমস্ত দূর্বলতা আর ভয় সহজেই দূর হয়ে যাবে এবং আপনি বক্তব্য বিষয় নিয়ে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠবেন।
(৩) আপনি সহজেই আপনার শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করবেন।
আগেই সপ্তম পরিচ্ছেদে যেমন বলেছি, এই রকম ঘটনার উদাহারণ রাখা হল শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণের নিশ্চিত পথ।
এটা সহজেই দেখা যাবে, আপনার বক্তব্যের মানবিক আকর্ষণের দিকটা সহজেই শ্রোতাদের মনোরঞ্জন করতে সক্ষম হয়। প্রথম কয়েক মুহূর্তেই এর প্রমাণ মিলবে। এইভাবে শ্রোতা আর বক্তব্য মধ্যে যে যোগসূত্র স্থাপন হয় তা সহজেই বজায় রাখা যায়। এই কারণেই আমি উদাহরণ রাখার কথা বলতে চাই।
৪. সজীবতা আর দৃঢ়তার সঙ্গে কথা বলুন
এ বইতে আগে যেমন বলা হয়েছে, আপনি যদি সজীবতা আর দৃঢ়তা মিশিয়ে কথা বলেন, আপনার বাইরের সজীবতা মনের চেহারাও বদলে দেবে। কাউকে বক্তৃতা করার সময় নানাভাবে অঙ্গ সঞ্চালন করতে লক্ষ্য করেছেন কখনও। দেখলে বুঝবেন দক্ষ বক্তা তার অঙ্গ সঞ্চালনও করেন। এর কারণ হল শারীরিক কাজের সঙ্গে মনের একটা অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধ আছে। উইলিয়াম জেমস ও এ কথা স্বীকার করেছেন।
৫. ‘এখনই’ এই নীতি কাজে লাগান
এমন একটা সময় আসবে যখন কেউ হয়তো আপনার কাঁধে হাত রেখে বলতে পারে, কিছু বলুন আপনি।’ বা এমনও হতে পারে কোন জানান না দিয়েই কেউ হয়তো পরবর্তী বক্তা হিসেবে আপনারই নাম করে বসল।
এমন অবস্থায় পড়লে যেন সেই স্টিফেন লী ফকের ঘোড়সওয়ারের দশাই হয়-ঘোড়াটা চারদিকে ছুটতে থাকে। এমন কোন অবস্থায় পড়লে শান্ত থাকবেন। মনে রাখতে হবে, শ্রোতারা নিজেদের কথাই ভাবে। অতএব তিনটে পথ থেকে আপনি তাৎক্ষণিক বক্তৃতার জন্য প্রেরণা পেতে পারেন।
প্রথমতঃ আছে শ্রোতারা। সহজভাবে কথা বলতে গেলে এ কথাটা অনুরোধ করছি ভাল করে মনে রাখবেন। শ্রোতাদের কথা আলোচনা করবেন, তারা সমাজের কি ভাল করেন সে কথাও বলবেন।
এবার দ্বিতীয়টি হল উদ্দেশ্য। কোন্ উদ্দেশ্যে সভা হচ্ছে সেটা যাচাই করা চাই, অর্থাৎ কোন বার্ষিকী, রাজনৈতিক সভা, না সাহিত্য সভা।
শেষ পথ হল, আপনার পূর্ববর্তী বক্তা যা বলে গেছেন তারই জের টেনে কিছু উদাহরণ রাখা। সত্যিকার তাৎক্ষণিক বক্তৃতা হল সেটাই যা সত্যিই করেই তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়া হয়।
৬. তাৎক্ষণিক কথা বলবেন না, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিন
উপরের কথা দুটোর মধ্যে একটু তফাৎ আছে। তাৎক্ষণিক ভঙ্গীতে উল্টোপাল্টা, সঙ্গতিহীন কিছু বলে যাওয়াই তাৎক্ষণিক বক্তৃতা নয়। আপনাকে, আপনার বক্তব্যের মধ্যে সঙ্গতি রাখতে হবে।
এই পরিচ্ছেদে যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সেগুলো মেনে চললে আপনি একজন দক্ষ তাৎক্ষণিক বক্তা হতে পারেন। আপনি যা বলতে ইচ্ছুক তাকে মনে মনে দ্রুত লয়ে সাজিয়ে নিতে চেষ্টা করুন . তারপর তাকে ভাষায় রূপান্তরিত করুন।
বিখ্যাত স্থপতি নির্মাণকারক বেল-গেডেস বলেন, ‘উঠে না দাঁড়ালে তার মনের চিন্তা ভাষায় রূপ দিতে পারে না। কোন জটিল বিষয়ে সহকর্মীদের জানাতে তিনি অনবরত পায়চারি করে থাকেন। এটা দেখা গেছে একবার শুরু করলে পরের কথা সহজেই এসে যায়।‘
আমাদের অনেকের বেলায় কিন্তু ব্যাপারটা আলাদা। আমরা উঠে দাঁড়ালে ঘাবড়ে যাই। কিন্তু চেষ্টা করলেই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব।