০৬. অল্প কথায় কাজ আদায়
প্রথম মহাযুদ্ধের সময় একজন বিখ্যাত ইংরাজ বিশপ আপটন শিবিরে সেনাবাহিনীর সামনে কিছু বলেছিলেন। সৈন্যরা টেঞ্চে চলেছিল–তাদের খুব অল্পসংখ্যকেরই ধারণা ছিল তাদের কেন পাঠানো হচ্ছে। আমি জানি–আঁমি তাদের প্রশ্ন করেছিলাম। তাসত্ত্বেও বিশপ ওদের কাছে আন্তর্জাতিক শান্তির আর সার্বিয়ার এক মুঠো আলোর অধিকার সম্পর্কে বলেন। আশ্চর্য ব্যাপার হল ওদের অর্ধেকও জানত না সার্বিয়া কোন শহর না কোন রোগের নাম। বিশপ যদি নীহারিকা পুঞ্জ সম্বন্ধে বক্তৃতা করতেন তাহলেও চলত। তা যাই হোক একজন সৈন্যও ঘর ছেড়ে যায়নি তিনি যতক্ষণ কথা বলেন–প্রতি দরজায় তাদের পথ আটকানোর জন্য মিলিটারি পুলিশ পাহারায় ছিল।
আমি ওই বিশপকে ছোট করছি না। তিনি অত্যন্ত জ্ঞানী তবে গির্জায় তাঁকে ভালো মানাত। তিনি ওই সেনাদের কাছে একেবারে ব্যর্থই হলেন। কিন্তু কেন? আসলে তিনি তাঁর বক্তৃতার মূল উদ্দেশ্য কি জানতেন না, আর জানতেন না কাজটা সমাধানের প্রকৃষ্ট পথ কি।
বক্তৃতার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আপনাদের ধারণা কি রকম? সেটা হবে এই : বক্তা উপলব্ধি করুন বা নাই করুন প্রত্যেক বক্তৃতারই চারটি প্রধান উদ্দেশ্য থাকে। সেগুলি কি?
সেই চারটি উদ্দেশ্য হল এই : ১। কাউকে কাজে প্ররোচিত করা বা কাজে লাগান। ২। খবর জানানো। ৩। নিশ্চিন্ত করা আর বিশ্বাস জন্মানো। ৪। মনোরঞ্জন করা।
আসুন উপরের ওই চারটি উদ্দেশ্য কী রকম তা আব্রাহাম লিঙ্কনের বক্তার জীবন থেকে কতকগুলো উদাহরণ তুলে দেখা যাক।
অনেক লোকেরই জানা আছে যে আব্রাহাম লিঙ্কন একবার বালির চড়ায় বা অন্য কোথাও আটকে পড়া নৌকা তোলার একটা উপায় বের করে সেটা পেটেন্ট করে নিয়েছিলেন। তিনি আইনের অফিসের কাছে একজন যন্ত্রবিদের অফিসে কাজ করে ওই যন্ত্রটার মডেল তৈরী করেছিলেন। বন্ধুরা এসে ওই যন্ত্র দেখতে চাইলে আমাদের সামনেই লিঙ্কন তার কার্যকারিতা বুঝিয়ে দিতেন। তাঁর ওই ভাবে বোঝানোর আসল উদ্দেশ্যই ছিল খবর জানানো।
গেটিসবার্গে তিনি যখন তার পর পর দুটি উদ্বোধনী ভাষণ অনুষ্ঠানে তার অমর বক্তৃতা দান করেন আর হেনরী ক্লে মারা যাওয়ার পর তাঁর জীবনী নিয়ে যা বলেন–সবই তিনি করেন মানুষের মনে প্রভাব ফেলে বিশ্বাস উৎপাদন করতেই।
লিঙ্কন জুরিদের সামনে যখন কথা বলতেন তখন তিনি তার স্বপক্ষে মত আদায় করতে পারতেন। তার রাজনীতি সংক্রান্ত ভাষণে তিনি ভোট অর্জনের চেষ্টা করতেন। এক্ষেত্রে তাঁর উদ্দেশ্য থাকত কাজ আদায়।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দুবছর পরে লিঙ্কন আবিষ্কার সম্বন্ধে একটা ভাষণ তৈরী করেন। সেক্ষেত্রে তার উদ্দেশ্য ছিল মনোরঞ্জন করা। অন্তত বলা যায় এটাই তার উদ্দেশ্য হতে পারত। তবে দুঃখের কথা তাতে সেরকম সাফল্য তিনি পাননি। জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে তিনি একেবারে ব্যর্থ-ব্যাপারটা বেশ হতাশারও বটে। একবার কোন শহরে তাঁর ভাষণ শুনতে একজন শ্রোতাও হাজির হন নি।
তাসত্ত্বেও কিন্তু অন্যান্য বহু বক্তৃতায় তিনি দারুণ সাফল্য অর্জন করেন। তার কয়েকটা তো মানুষের ইতিহাসে প্রায় অমরত্ব লাভ করেছে। কেন? তার প্রধান কারণই হল তার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে লিঙ্কনের বেশ পরিস্কার একটা ধারণা ছিল আর কী করে তা অর্জন করতে হবে তিনি জানতেন।
বহু বক্তাই এসব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয় আর চরম দুঃখের শিকারও হয়।
একটা উদাহরণ দিচ্ছি : মার্কিন কংগ্রেসের একজন কংগ্রেস সভ্য নিউইয়র্কের কোন সভায় সভা ত্যাগ করতে বাধ্য হন, কারণ শ্রোতারা তাঁকে টিটকারী মারতে শুরু করে। ব্যাপারটা এই : তিনি জেনে বা না জেনেই হোক শ্রোতাদের কিছু জ্ঞান দিতে চেয়েছিলেন। শ্রোতারা কোন জ্ঞান লাভ করানো বরদাস্ত করতে পারেনি। তারা চাইছিল মনোরঞ্জন। তারা প্রথম দিকে ধৈর্য ধরেই বক্তৃতাটা শুনতে চাইলো, তাদের ধারণা ছিল আসল ব্যাপার এরপরেই আসবে। কিন্তু তা আর এলোনা-ফলে শ্রোতাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। একজন তার বিরক্তি প্রকাশ করতেই বাকিরা হাজার হাজার শ্রোতা চিৎকার, শিস দেওয়া
আরম্ভ করে। শ্রোতারা আর সহ্য করতে রাজি হয়নি। বক্তা শ্রোতাদের ওই অবস্থা দেখেও বক্তৃতা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। ফলে শ্রোতারা এবার ক্ষেপে প্রায় লড়াই লাগিয়ে দিল। তাদের চিৎকারে বক্তার গলা চাপা পড়ে গেল, এমন কি বিশ হাত দূরেও তার গলা শোনা গেল না। ভদ্রলোক এবার অপমানিত, হতাশ আর মনমরা হয়ে সভা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলেন।
এই ঘটনা থেকে সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তাই শ্রোতাদের দেখে আর উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত হয়েই আপনার বক্তব্য বিষয় ঠিক বেছে নেওয়া উচিত। কংগ্রেসের সদস্যটি যদি আগেই জেনে নিতেন তার বক্তব্য ওই শ্রোতাদের যোগ্য হবে তাহলে তিনি বিপদে পড়তেন না। তাছাড়া সভাটি যদি কোন রাজনৈতিক বিষয়ের হত তাহলে হয়তো এমন অবস্থা হত না। আগে বলা চারটি উদ্দেশ্য দেখে নিয়ে তবেই বক্তব্য রাখতে এগোনো উচিত।
বক্তৃতা তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্যই এই পরিচ্ছেদ। এর আর এক উদ্দেশ্য হল কাজ আদায় করার জন্য ছোট ছোট বক্তৃতা। পরের তিনটি পরিচ্ছেদে থাকবে বাকি প্রধান উদ্দেশ্য গুলো : অবহিত করা খবর জানানো, নিশ্চিত করা ও বিশ্বাস জন্মানো আর মনোরঞ্জন। প্রতিটি উদ্দেশ্যেরই চাই আলাদা ধরণের ব্যবস্থাপত্র, কারণ প্রতিটির সামনে থাকে বিশেষ ধরণের বাধার প্রাচীর। এগুলো অতিক্রম করা চাই।
এবার প্রথমে আসুন শ্রোতাদের কিভাবে কাজে উদ্বুদ্ধ করা যায় তাই দেখা যাক। এই বিষয়ে শ্রোতাদের কাজে উদ্বুদ্ধ করার কোন সফল পদ্ধতি আছে কি? নাকি নিছকই এটা কথার কথা।
আমার মনে পড়ছে ত্রিশের দশকে যখন সহকারীদের নিয়ে সারা দেশে ক্লাস আরম্ভ করতে ব্যবস্থা করি। আমাদের সংখ্যা অনেক ছিল বলে প্রত্যেক ক্লাসের সভ্যর জন্য মাত্র আড়াই মিনিট সময় নির্দিষ্ট করা হয়। অবশ্য এই সময় সীমা বেঁধে দেওয়ার কোন অসুবিধা হয়নি যেহেতু সকলেরই আসল উদ্দেশ্য ছিল মনোরঞ্জন করা বা কিছু বিষয় জানানো। কিন্তু যখন কাজে লাগানোর ব্যাপারটা এলো তখন অন্য ব্যাপার ঘটল। কাজে লাগানোর বক্তৃতায় কোন ফলই হতে চাইলো না যখন আমরা সেই অ্যারিষ্টটলের আমল থেকে চালু বক্তৃতার পুরনো পদ্ধতি কাজে লাগাতে গেলাম। অতএব বোঝা গেল শ্রোতাদের কাজে উদ্বুদ্ধ করতে নিশ্চিত কোন পথ পেতে গেলে নতুন কোন উপায় এই দুই মিনিটের বক্তৃতায় চাই।
আমরা এজন্য শিকাগো, লস এঞ্জেলস আর নিউইয়র্কে সভা করলাম। আমাদের শিক্ষকদের কাছে নানা আবেদন রাখলাম। এধরণের বক্তৃতার বিষয়বস্তু জোগাড় করতে সব চেষ্টাই আমরা চালালাম।
আমরা হতাশ হইনি। নানা ধরনের ওই সব আলোচনার মধ্য দিয়ে একটা যাদুকরী ফর্মূলা আবিষ্কার সম্ভব হল। সে সব আমরা আমাদের ক্লাসে ব্যবহার শুরু করলাম-আর এখনও তা ব্যবহার করা হয়ে চলেছে। সেই ম্যাজিক ফরমূলাটি কী? ভারি সহজ ব্যাপার আর সেটা এই : যে উদাহরণ রাখতে চাইছেন সে বিষয়ে খুঁটিনাটি বর্ণনাসহ কথা শুরু করুন। তারপর বেশ স্পষ্টভাবে আপনার ইচ্ছা প্রকাশ করুন-শ্রোতাদের কোন্ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে চান। তৃতীয়ত আপনার এই উপদেশের বা বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি রাখুন-শ্রোতাদের পক্ষে এর উপযোগিতা কতখানি।
এই ফর্মুলাটি আমাদের গতিময় অত্যাধুনিক জীবন ধারার সঙ্গে একান্ত উপযোগী। বক্তাদের পক্ষে এখন ধীর, দীর্ঘায়িত ভাষণ শুরু কখনই সম্ভবপর হয় না। অপর পক্ষে শ্রোতাদের মধ্যে থাকে ব্যস্ত মানুষ–এই কারণেই বক্তাকে সরাসরি সহজ, সরলভাবে তার বক্তব্য রাখতেই হবে।
এই যাদু ফর্মূলা কাজে লাগানোর সময় বক্তাকে বিশেষ ভাবেই সতর্ক থাকতে হবে যাতে নীচে বর্ণিত পথে কখনও বক্তব্য রাখতে চাওয়া না হয়। যেমন—’আমার কথাগুলো তেমন ভাবে তৈরী করে আসতে পারিনি’, বা ‘আমাকে যখন বলার জন্য বেছে নেওয়া হল বুঝতে পারিনি আমাকে কেন নেওয়া হল’। মনে রাখবেন শ্রোতারা কখনই এধরণের মার্জনা চাওয়া বা অজুহাত পছন্দ করে না। তারা চায় কাজ। এই যাদু ফর্মূলার মধ্য দিয়ে আপনি তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসটিই দিতে পারবেন।
এই যাদু ফর্মূলা কার্যকরী হওয়ার একটা কারণও আছে। এ অতি আদর্শ। কারণ এই ফর্মুলা ছোট আকারের ভাষণ বা বক্তব্যর পক্ষেই যোগ্য যেহেতু এর মধ্যে বেশ একটু রহস্য জড়ানো থাকে। শ্রোতা আপনার বলা কাহিনীতে পছন্দমত জিনিসই খুঁজে পায়-দু-তিন মিনিটের ওই ভাষণ তাকে উত্তেজিতও করে তোলে। আবার আপনার শুরু করার মধ্যে কোন ত্রুটি বা ভুল পথ থাকলে উল্টোটাই ঘটে যেতে পারে। যেমন ধরুন, কোন সভায় আপনি যদি এই বলে শুরু করেন : ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আমি এখানে এসেছি আপনাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পাঁচ ডলার করে আদায় করতে, তাহলে সভাস্থল ছেড়ে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যাবে।
এবার দেখুন ঠিক এমনই কোন সমাজসেবামূলক কাজে লেল্যাণ্ড কোম্পানী রাষ্ট্রসঙ্রে পক্ষে শিশুদের জন্য কিভাবে সাহায্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হন :
‘আমার প্রার্থনা একাজ যেন আবার করতে না হয়। কোন শিশু আর মৃত্যুর মাঝখানে মাত্র একটা বাদাম-এর চেয়ে দুঃখজনক চিন্তা আর কি আছে? আশা করি আপনাকে একাজ কখনও করতে হবে না আর তার স্মৃতিকে পালন করতেও হবে না। আপনারা যদি জানুয়ারী মাসের কোন একদিন এথেন্সের শিশুদের কণ্ঠস্বর শুনতেন আর তাদের দৃষ্টি লক্ষ্য করতেন। …অথচ তাদের জন্য একটিন বাদাম ছাড়া আর কিছুই রেখে আসতে পারিনি। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি অস্থি চর্মসার শিশুদের নিয়ে তাদের মায়েরা আমার কাছে ঠেলাঠেলি করে এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে।’
‘তাদের উন্মত্ততা আমাকে যেন ভাসিয়ে দিতে চাইছিল। আমার চোখের সামনে শুধু শত শত মেলে ধরা হাত। সে হাত ভিক্ষা চাইছিল। কিন্তু আমি শুধু কতকগুলো বাদাম ছাড়া আর কিছুই দিতে পারলাম না।…হ্যাঁ, এ অভিজ্ঞতা যেন আপনাদের কারও না হয়।’
এই যাদু ফর্মুলা ব্যবসা সংক্রান্ত লেখাতেও কাজে লাগাতে পারা যায়। এছাড়াও সহকর্মী আর অধঃস্তন কর্মীদের উপদেশ দানেও কাজে লাগানো চলে। মেয়েরা তাদের সন্তানদের কোন বিষয়ে শিক্ষা দিতেও এটিকে কাজে লাগাতে পারেন। এর এক সার্বজনীন আবেদন রয়েছে। আপনার দৈনন্দিন জীবনের নানা ক্ষেত্রেও দেখবেন মনস্তত্ত্বের দিকে এর আবেদন অনস্বীকার্য।
এমন কি বিজ্ঞাপনের কাজেও এই ফর্মুলার আবেদন অস্বীকার করার উপায় নেই। এভারেডী ব্যাটারী প্রতিষ্ঠান ইদানীং এই যাদু ফর্মুলা কাজে লাগিয়ে দূরদর্শনে কিছু অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছেন। এই অনুষ্ঠানে কোন বিশেষ একজনের একরাতের অভিজ্ঞতা, যেমন তার গাড়ি উল্টে যাওয়ার বিষয়ে বর্ণনা দেয়। এই বর্ণনা দেওয়ার পর সেই মানুষটি জানায় কিভাবে গাড়ির হেডলাইটের আলোর সাহায্য পেলেন-সেই আলো অবশ্যই এভারেডী ব্যাটারীর সাহায্যে জ্বলেছিল। এরপর ঘোষক জানায়, এভারেডী ব্যাটারী কিনে বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। আমার অবশ্য জানা নেই এই অনুষ্ঠান দেখে এভারেডী ব্যাটারীর বিক্রি কি পরিমাণে বেড়েছে, তবে এটা জানি এই যাদু ফর্মুলায় দর্শকরা জানতে পারেন এমন অবস্থায় কি করতে হবে। এরই বা মূল্য কম কি। এই ফর্মূলাতেই জানা যাবে কি করণীয় বা কি করা উচিত নয়।
১। নিজের জীবনের কোন ঘটনা বর্ণনা করুন
আপনার বক্তব্যের বেশির ভাগ অংশই জুড়ে থাকবে এই জীবন কাহিনীর টুকরো কথা। এই কথা বলার মধ্য দিয়ে আপনি শ্রোতাদের শোনাবেন আপনার অভিজ্ঞতার কাহিনী যা থেকে শিক্ষালাভ করেছেন। মনস্তত্ববিদরা বলেন আমরা দুটো পথে শিক্ষালাভ করি : এক কার্যকারীতার লিখনে, যাতে পরপর ঘটমান বহু ঘটনা আমাদের ব্যবহারিক জীবনধারা বদলে দিতে পারে। আর দুই, ফলাফলের নিয়মে, যাতে যে কোন একটি মাত্র ঘটনাও জীবনের মধ্যে বিরাট পরিবর্তন এনে দিতে পারে। আমরা সকলেই আমাদের জীবনে এধরণের অভিজ্ঞতা লাভ করি। এসব ঘটনার কথা আমাদের হাতড়ে বেড়াতে হয় না কারণ সেগুলো আমাদের স্মৃতির উপরের স্তরেই ভাসমান অবস্থায় থাকে। আমাদের ব্যবহার অনেকটাই এই অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। এই সব ঘটে যাওয়া ঘটনাকে পুরোপুরি জীবন্তভাবে বর্ণনা করে আমরা অন্যদের ব্যবহার প্রভাবিত বা বদল করতে পারি। এর একটা আশ্চর্য রকম কারণ বর্তমান–যেহেতু ওই ঘটনার শরিক হলে মানুষের যা হত, কথায় হুবহু বর্ণনা করলে অনেকটা সেই অভিজ্ঞতাই হয় মানুষের। অতএব আপনি যখন আপনার জীবনের সেই ঘটনা বর্ণনা করবেন তখন এমন সজীব করে তুলবেন যে বর্ণনাকে যেন শ্রোতারাও সেই অভিজ্ঞতার স্বাদ পায়। এজন্য আপনাকে অনেক ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে–আর সেটা নির্ভর করবে আপনি কতটা জীবন্ত করতে পারেন আপনার বক্তব্য তারই উপর।
নিচে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তা থেকে আপনার কার্যকারী ছোট্ট কথিকা স্পষ্ট, আবেগময় আর অর্থময় হয়ে উঠতে পারবে।
ব্যক্তিগত কোন অভিজ্ঞতা থেকে উদাহরণ রাখুন
ঘটনামূলক কোন উদাহরণ যদি এমন কোন উদাহরণ হয় যা আপনার জীবনে বেশ নাটকীয় প্রভাব ফেলেছে। তাহলে তার শক্তি এক্ষেত্রে হয় চমৎকার। সে ঘটনা হয়তো অল্প কোন সময়ের তবুও তা যেন আপনার জীবনে এমন ছাপ রাখে যা থেকে আপনি অবস্মিরণীয় কোন শিক্ষাই পেয়ে থাকতে পারেন। খুব বেশি দিন নয়, আমাদেরই একজন আমাদের ক্লাসে এই রকম একটা উদাহরণ রাখেন। ঘটনাটা তার জীবনের–নৌকা উল্টে যাওয়ার পর তার সাঁতারে জীবন বাঁচানোর চেষ্টার ভীতিকর কাহিনী। আমার ধারণা তার কাহিনী শোনার পর প্রত্যেক শ্রোতাই এ ধরণের অবস্থায় পড়লে বক্তার মতই উল্টো নৌকার উপর পড়ে থেকে সাহায্যের অপেক্ষা করতে চাইবে। আর একজন শোনান খড় মাড়াই করার কোন উল্টে পড়া কল আর এক শিশুর কাহিনী। বর্ণনাটা এতই জীবন্ত হয়েছিল যে আমার মনে গেঁথে আছে। তাই শ্রোতাদের মতই আমরা সকলেই নিশ্চয় বাড়িতে ওই ফল সম্বন্ধে সতর্কতা অবলম্বন করতে চেয়েছি। আমাদের ক্লাসে আরও এমন অনেক কাহিনী শোনা গেছে। এমন এক কাহিনী ছিল রান্নাঘরের গ্যাস থেকে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কাহিনী। আমার বিশ্বাস ওই কাহিনী শুনে অনেকেই হাতের কাছে আগুন নেভানোর যন্ত্র রেখে দেবার ব্যবস্থা করেছেন।
এই কারণেই বলছি আপনার জীবনের চিত্তাকর্ষক যে কোন ঘটনার সজীব বর্ণনার অদ্ভুত মাদকতাময় ক্ষমতা থাকে। শ্রোতাদের মন আকর্ষণ করা যায় এটা দিয়ে। এর কারণ আপনি শ্রোতাদের বলবেন এমন অবস্থায় পড়লে কি করা দরকার।
খুঁটিনাটি বর্ণনা দিয়ে কথা শুরু করুন
উদাহরণ দিয়ে কথিকা শুরু করার কারণ হল চট করে শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করা। দেখা গেছে বহু বক্তাই একাজে গোড়াতেই ব্যর্থ হন যেহেতু তারা নানা রকম বাড়তি বক্তব্য রাখতে চান, কৌশল করতে চান, মাঝে মাঝে মার্জনা চান। শ্রোতারা এসব পছন্দ করে না। যেমন ধরুন কেউ যদি বলেন, বক্তৃতা দিতে আমি তেমন অভিজ্ঞ নই,-এ ধরণের কথা অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এছাড়াও অন্য কিছু পথ এড়িয়ে চলা ভালো। যেমন, ধরুন : যে ঘটনা সম্পর্কে বলবেন সে সম্বন্ধে ভালো তৈরি না থাকা বা কোন উপদেশ দান করেই শুরু করা।
“জনসংযোগের সহজ পদ্ধতি”
এবার এ বিষয়ে কি করণীয় তা বিখ্যাত সাময়িক পত্র আর সংবাদপত্রের লেখকদের কাছে শুনুন : ‘১৯৪২ সালে আমায় এক হাসপাতালের শয্যায় আশ্রয় নিতে হয়’ বা ‘গতকাল আমার স্ত্রী যখন কফি ঢালছিলেন…’, বা ‘গত জুলাইতে আমি যখন ৪২ নং হাইওয়ে ধরে জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলাম…’, এই ধরণের কথা দিয়ে বক্তব্য শুরু করলে ফল লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
আসলে আপনি যদি আপনার কথিকা এমন সমস্ত কথা দিয়ে শুরু করেন যাতে এই সব প্রশ্নের অর্থাৎ কে? কখন? কোথায়? কি? কিভাবে? বা কেন-উত্তর থাকে, তাহলে জানবেন সেটা হবে সেই প্রাচীনতম পদ্ধতি। অর্থাৎ এর মধ্যে থাকছে একটি গল্পের সম্ভাবনা। অনেকদিন আগে’-এই কথা দিয়ে সুরু করলে দেখতে পাবেন শিশুদের কল্পনার জগৎ কেমনভাবে খুলে যায়। বয়স্কদের ব্যাপারেও তাই ভুলবেন না। প্রথম কথা দিয়ে তাদেরও আপনি জয় করতে পারেন।
হাসির গল্প দিয়ে শুরু করবেন না।
এটা অত্যন্ত দুঃখের কথা যে নতুন কোন উঠতি বক্তা প্রায়ই ভাবে বক্তা হিসেবে একটু মজার চরিত্র হওয়াই ভালো। তার মধ্যে হয়তো কোন রকম সরলতার চিহ্নও নেই, অথচ মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই তার মনে হয় বুঝি স্বয়ং মার্ক টোয়েনই ভর করেছে তার উপর। অতএব সে তথাকথিত কোন হাসির গল্প দিয়ে বক্তৃতা আরম্ভ করতে যায়। বিশেষ করে সময়টা যদি নৈশভোজনের পর হয়। ফল কি রকম হয় এতে? ফলে হয় কুড়ির মধ্যে ঊনিশ বারই চরম ব্যর্থতা-অর্থাৎ শ্রোতাদের আগ্রহ জাগেনা।
এর কারণ হল মানুষকে প্রাণ খুলে হাসানো সবচেয়ে কঠিন কাজ–এজন্য দরকার নিরবচ্ছিন্ন অধিকার। এ অনেকটাই নির্ভর করে ব্যক্তিগত চরিত্রের আর ব্যক্তিত্বের উপর। এ অনেকটা জন্মগত ক্ষমতা-সকলের এ ক্ষমতা থাকে না। কোন হাসির গল্প হাসির উদ্রেক করবেই এর কোন নির্দিষ্ট কারণ কখনও থাকে না–কারণ এ গল্প বলার সার্থকতা নির্ভর করছে বক্তার বলার ভঙ্গির উপর। মার্ক টোয়েনের পক্ষে যা সম্ভব অপরের পক্ষে তা কখনই সম্ভব নয়। মনে রাখা দরকার কোন গল্প বলে মার্ক টোয়েন যেভাবে খ্যাতি অর্জন করেন অন্যের পক্ষে তা আকাশ কুসুম।
লিঙ্কন যে কাহিনী শুনিয়ে একদিন বিখ্যাত হন সে কাহিনী পড়ে নিতে পারেন আপনারা। লিঙ্কনের কাহিনী শোনার জন্য মানুষ বহু মাইল দূর থেকে চলে আসত। সারারাত ধরেই তারা তা শোনার অপেক্ষায় থাকত।
শ্রোতাদের সহজে খুশি করার একটা পথ হল নিজের সম্পর্কে ঠাট্টা করা। বিখ্যাত বক্তা এডউইন জেমস ক্যাটেল বলেছেন তিনি জীবনে কখনও মজার কোন কাহিনী শোনান নি। তাঁর মতে যে কোন কাহিনীকে হতে হবে প্রয়োজনীয়, বিশ্বাসযোগ্য।
তাহলে কি শুরু করা দরকার গুরুগম্ভীর কোন বিষয় দিয়ে? না, তাও নয়। এমন বিষয় দিয়ে শুরু করুন যা শ্রোতাদের মনোমত হতে পারে, যার বৈশিষ্ট্য আছে, যাতে আগ্রহ জাগে।
২. নিজের বক্তব্য রাখুন, শ্রোতাদের কাছে কি চান
বলুন কাজ আদায় করার জন্য যে উদাহরণ রাখলেন, তাতে আপনার সময়ের তিন চতুর্থাংশ খরচ হয়ে গেছে। ধরুন আপনি দু’মিনিট কথা বলেছেন। তাহলে আপনার হাতে আর বিশ সেকেণ্ডই আছে যাতে শ্রোতাদের কাছে যে বক্তব্য রেখেছেন তাদের কাছে কাজ পেতে, তার পুরো ফল লাভের জন্য। বিশদ বর্ণনার সময় আর নেই। এখন সরাসরি কাজের সময় উপস্থিত এ হল সংবাদপত্রের ঠিক বিপরীত কাজ। প্রথমেই হেডলাইন যা দিয়ে আপনি প্রথমে দেবেন কাহিনীর সার বস্তু। তারপর ওই হেডলাইন দিয়ে কাজের আবেদন জানাবেন। এটা তিনটি নিয়ম মেনে চলা যায় :
আপনার মন্তব্য সংক্ষিপ্ত আর নির্দিষ্ট করুন
শ্রোতাদের কাছে কি চাইছেন স্পষ্ট করুন। শ্রোতারা যখন স্বচ্ছভাবে সব বুঝতে পারবে তখনই কাজ হবে। যেমন ধরুন পরোক্ষ কোন ইঙ্গিত দিলে তাতে কাজ হয় না। যেমন এরকম বললে কাজ হবে না : স্থানীয় অনাথ আশ্রমে আপনারা সাহায্য দিলে উপকার হয়। বরং যদি সরাসরি প্রত্যক্ষ কোন কাজের বিষয় বলা যায়, যেমন : আগামী রবিবার অনাথ আশ্রমে পঁচিশটি ছেলেকে চড়ুইভাতি করাতে নিয়ে যাবেন আপনারা এতে ঢের বেশি সাড়া মেলে। যেমন ধরুন যদি বলা যায় : আপনাদের দাদু-দিদিমাদের দেখাশোনা করা উচিত। বরং যদি বলেন : ‘প্রতি সপ্তাহ শেষে দাদু-দিদিমাকে দেখে আসুন’, তাহলে অনেক কাজ হবে।
সহজ করে বলুন, কাজ হবে
বক্তব্যের বিষয় যাই হোক না কেন, তাকে শ্রোতাদের কাছে গ্রহণ যোগ্য হওয়ার কাজটি নির্ভর করে বক্তারই ভঙ্গির উপর। বক্তাকে এমন ভাবে তা বলতে হবে যাতে শ্রোতারা সহজে কাজে উদ্বুদ্ধ হয়। মনে করুন আপনি চাইছেন শ্রোতাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলার কাজ করতে। এটা করতে হলে এরকম কখনই বলবেন না : এই মুহূর্ত থেকে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে চেষ্টা করুন। এটা এতই সাধারণ কথা যে কাজে লাগানো শক্ত। বরং বলতে পারেন : ‘কোন অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হলে পরের পাঁচ মিনিট তার নাম অন্তত পাঁচবার মনে করুন। এ হল সরাসরি কাজে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান।
যে সব বক্তারা বর্ণনামূলক কাজের ব্যাখ্যা করেন তারা অন্যদের চেয়ে ঢের ভালভাবে শ্রোতাদের কাজে নিয়োজিত করতে পারেন। আপনি যে কথা বলবেন সেটা নঙর্থকভাবে বা সোজাসুজি বলবেন তা নির্ভর করছে শ্রোতাদের মনোভাবের উপর। নঙর্থক দিক থেকে বক্তব্য পেশ করলে দেখা গেছে শ্রোতাদের মধ্যে তার প্রতিক্রিয়া হয় অনেক বেশি। কিছুদিন আগে ইলেকট্রিক বাল্ব বিক্রির কোন এক বিজ্ঞাপনে এই রকম নর্থক কথা কাজে লাগানো হয় এইভাবে : বাল্ব চুরি করা উচিত নয়।
প্রত্যয়ী ভঙ্গীতে দৃঢ়ভাবে বক্তব্য রাখবেন
যে কথা বলতে চান সেটাই আপনার মূল সূত্র। অতএব সেটা এমনভাবে শ্রোতাদের সামনে রাখবেন যেন তার পিছনে প্রত্যয় আর দৃঢ়তা থাকে। খবরের কাগজে যেমন হেডলাইন থাকে, তারপর থাকে বর্ণনা। ঠিক সেই ভাবেই আপনার বক্তব্যের সারটুকু আগেই দৃঢ়ভাবে বলে ফেলুন। শ্রোতাদের মাঝে আপনার ছাপ ফেলতেই হবে, তাই কাজটা এমনভাবে করবেন যেন শ্রোতারা আপনার আন্তরিকতা সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হতে পারে। এভাবে বলতে পারলে সেই যাদুকরী ফর্মূলার তৃতীয় ধাপ চমৎকার কাজে লাগানো হয়ে যাবে।
৩। শ্রোতাদের চাহিদা মত ব্যাখ্যা রাখবেন
একাজ করার সময়ও চাই ছোট করে বলার ক্ষমতা আর সূক্ষ্মতা। এই ব্যাখ্যা করার কাজে বক্তাকে শ্রোতাদের জানাতে হবে তারা এ থেকে কি ধরণের শিক্ষা লাভ করতে পারে বা পুরস্কার পেতে পারে।
মনে রাখা চাই ব্যাখ্যাটি যেন বক্তব্য অনুযায়ী হয়
জনসংযোগের ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অনেক কথাই বলা হয়েছে। এই বিষয়টি বিশাল আর অপরকে কাজে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরও তাতে সন্দেহ নেই। এই পরিচ্ছদে, যে ছোট কথিকায় শ্রোতাদের উদ্বুদ্ধ করা যায় সম্পর্কে বলা হচ্ছে তাতে অল্পকথায় বেশি লাভের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। মনে রাখবেন উদাহরণ হিসেবে যা বলবেন আপনার শ্রোতাদের কাছে চাহিদাও যেন তার সঙ্গে মিল রেখেই বলা হয়। যেমন ধরুন, পুরনো গাড়ি কিনে আপনার যা অর্থকরী লাভ হয়েছে এবং তার উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া চাই শ্রোতাদের একাজ করলে তাদের কি লাভ হবে।
মনে রাখবেন একটি মাত্র ব্যাখ্যাই শুধু দিতে হবে
বেশিরভাগ বিক্রয় প্রতিনিধিই তার পণ্যসামগ্রী সম্বন্ধে অন্তত আধ ডজন ব্যাখ্যা দিয়ে বলতে পারেন তার পণ্য কেন কেনা উচিত। আপনার ব্যাপারেও ঠিক তাই হতে পারে–অর্থাৎ আপনার বক্তব্য যে ঠিক তার জন্য আপনিও অন্তত আধ ডজন কথা বলতে পারেন। তবু এটা ঠিক যে সব কটি কারণের মধ্যে মাত্র সেরা একটিই বেছে নিয়ে তাই বলা উচিত। এই একটার উপর নির্ভর করেই আপনার বক্তব্য প্রমাণ করতে হবে। বিজ্ঞাপনের যেমন কোন পণ্য সম্পর্কে এককথায় অনেকখানি বলা যায়। আপনার কথার সমর্থনেও তাই করতে হবে। এই বিজ্ঞাপন যদি ভাল করে কয়েকবার পড়েন তা হলেই কথাটির সারমর্ম বুঝতে অসুবিধা হবে না। বিজ্ঞাপনের ব্যাপারটা এই কাজে সত্যিই সার্থক-এগুলো লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন যে একটা বিজ্ঞাপনে নানা সুবিধার কথা কেউ বলে না। এক্ষেত্রে একটা বিষয়েই জোর দেওয়া হয়।
বেতার, দূরদর্শন বা খবরের কাগজের বিজ্ঞাপন খুঁটিয়ে দেখলেই আশ্চর্য হয়ে যাবেন যে সেই যাদু ফর্মূলা তারা কেমন সুন্দরভাবেই কাজে লাগায়। কোন পণ্য কেনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করাই কিন্তু ওই বিজ্ঞাপনের আসল উদ্দেশ্য।
এধরণের উদাহরণ অবশ্য অন্যভাবেও দেওয়া যায়। যেমন কোন উদাহরণ দেখিয়ে, কোন কিছু করে ‘দেখিয়ে, ইত্যাদির মাধ্যমে। এই সম্পর্কে তেরো পরিচ্ছেদের দীর্ঘ বক্তৃতার কথায় বলা হবে। এক্ষেত্রে অর্থাৎ ছোট্ট কথিকার ব্যাপারে যেটায় ব্যক্তিগত ছোট্ট উদাহরণ রাখা হয়। সেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই শ্রোতাদের উদ্যোগী হতে খুবই কার্যকর ভূমিকা নেয়।