ভবিষ্যতের মানুষ
(বিজ্ঞানের খিচুড়ি)
ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই হ’ল জ্ঞানীর কাজ। পিঁপড়ে মৌমাছি পর্যন্ত যখন ভবিষ্যতের জন্য ব্যতিব্যস্ত, তখন মানুষের কথা বলাই বাহুল্য। ফকীর সন্ন্যাসী যে ঘর বাড়ী ছেড়ে আহার নিদ্রা ভুলে, পাহাড়ে জঙ্গলে চোখ বুঁজে বসে থাকে, সেটা যদি নিতান্ত গঞ্জিকার কৃপায় না হয়, তবে বল্তে হ’বে ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবে। সমস্ত জীব জন্তুর দুটো চোখ সামনে থাকবার মানে হ’ল ভবিষ্যতের দিকে যেন নজর থাকে। অতীতের ভাবনা ভেবে কোন লাভ নেই। পণ্ডিতেরা ত বলে গেছেন “গতস্য শোচনা নাস্তি।” আর বর্তমান সে ত নেই বলেই হয়। এই যেটা বৰ্তমান, সেটা এই কথা বলতে বলতে অতীত হয়ে গেল। কাজেই নদীর তরঙ্গ গণ আর বর্তমানের চিন্তা করা সমানই অনর্থক। ভবিষ্যৎটা হচ্ছে আসল জিনিস। সেটা কখন শেষ হয় না। তাই ভবিষ্যতের মানব কেমন হবে সেটা একবার ভেবে দেখা যাক।
বলছি অতীতের ভাবনা ভেবে কোন লাভ নেই। কিন্তু অতীতকে অগ্রাহ্য করা চলে না। অতি হচ্ছে বুনিয়াদ, আর ভবিষ্যৎ হ’চ্ছে উপরের গঠন। ভবিষ্যৎকে বুঝতে হলে অতীত দিয়েই বুঝতে হবে। ভবিষ্যতের মানুষ কেমন হবে জানতে গেলে, মানুষের অতীত কাহিনী একটু আলোচনা করা দরকার।
আজকাল প্রমাণ ছাড়া কেউ কোন কথা শুনতে চান না। কিন্তু প্রমাণ যে কোন জিনিসটা, সেইটে হচ্ছে একটা মহাতকের বিষয়। কেউ ধৰ্ম্মের প্রমাণকে সবচেয়ে ভ্রান্ত ও অকাট্য প্রমাণ মনে করেন। কেউ বলেন, বিজ্ঞানের প্রমাণই সেরা প্রমাণ! তার উপর আর কোনও প্রমাণ নেই। এ ক্ষেত্রে আমার কথা এই যে, যখন এটা তারহীন টেলিগ্রাফ ও এয়ারোপ্লেন জেপেলিনের যুগ, তখন বিজ্ঞানের প্রমাণকেই বড় আসন দিতে হবে। অন্য পক্ষে শাস্ত্রকে অমান্য করলে চলবে না। যখন দরকার হবে তখন শাস্ত্রীয় প্রমাণও বিজ্ঞানের সহচর রূপে আসবে। আমার এই নিবন্ধে আমি দুকুল রক্ষা করে চল্তেই চেষ্টা করব। এখন
সুবৰ্ণসদৃশং পুষ্পং ফলে রত্নং ভবিষ্যতি ।
আশয়া সেবিতস্তরুঃ ফলেন ঝনঝনায়তে।।
না হ’লেই বাঁচি।
অতীত যুগের অর্থাৎ বহু কোটি বৎসরের আগে মানুষ ছিল কেমন ? বিজ্ঞান বলে, ওরাংওটান বা শিম্পাঞ্জী শ্রেণীর এক রকম জীব। সমস্ত গায়ে বড় বড় লোম। হাত দুটো প্রায় পায়ের সমান লম্বা। গাছের ডাল কিংবা পাহাড়ের গর্ত বাসস্থান। ফলমূল পাতা প্রধান আহার। আঃ উঃ হাঃ এই ধরণের শব্দ গুলিই ভাষা। হাত পায়ের ইশারা অনেক সময় ভাষার অভাব দূর করে। এই রকম এক জীব ছিল মানুষের পূর্বপুরুষ। এই হ’ল বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত।
এর শাস্ত্রীয় প্রমাণও আছে। রামায়ণে আছে, ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র বানর-সৈন্য নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এখানকার পণ্ডিতে বলেন, বানর কি, না অসভ্য জাতি। ‘আমি সে কথা শুনতে চাই নে। যখন সেই সকল বানরের লেজের কথা রামায়ণে মহর্ষি বাল্মীকি
স্পষ্ট করে বলে গেছেন, তখন সেটা অস্বীকার করা চলে না। তা হলে রামায়ণ থেকে প্রমাণ হ’ল যে, বিজ্ঞানের নরপিতাই ক্রমে সভ্য হয়ে ত্রেতাযুগে দু’ পায়ে হাঁটুতে আর কথা বলতে শিখেছিল, যদিও লেজটা তখনও সমূলে বিনষ্ট হয় নি।
দেখুন প্রথমে আমরা ছেলেপুলেদিগকে একটু দুরন্ত দেখিলে বলি, ছোঁড়াটা একেবারে বাঁদর। তখন আমরা অবশ্য ভাবি না যে, আমরা পূর্বপুরুষেরই নাম কীর্তন করছি। সাহেবরাও অনেক সময়ে পূর্বপুরুষের নামে আমাদিগকে আদর করে বান্দর লোগ বলে থাকেন।
আরও কতকগুলি মূল্যবান প্রমাণ আমি সংগ্রহ করেছি। তবে ইউরোপ আমেরিকার কোন জর্ণালে ছাপা হবে, বা জানাতে হবে, আজও তা নিশ্চয় করতে পারি নি। আর বাংলা কাগজে বেরুলে কেই বা বুঝবে, আর কেইবা আদর করবে, ভেবে বাংলা কাগজে তা প্রকাশ করি নি। কারণ, উলুবনে মুক্ত ছড়ান বিজ্ঞদের নিষেধ। তবে আজ এই বিদ্বজ্জনপ্ররিত মজলিসে আপনাদের সামনে সেগুলি প্রকাশ করতে আমার কোনও আপত্তি নেই।
দেখুন, আমরা নিতান্ত রাগলে বংশদণ্ড বা বংশশাখা ব্যবহার করি। ওরাংওটান নাকি রাগলে গাছের ডাল ভেঙে আততায়ীকে ছুড়ে ছুড়ে মারে। কোনও অস্ত্র না পেলে আমরা অন্ততঃপক্ষে আঁচড়ে কামড়ে দি। এটিও একটি বলবৎ প্রমাণ। তার পর দেখুন, আমরা ফরাশ, তাকিয়া, গদি ছেড়ে কাষ্ঠাসনের অধিক পক্ষপাতী। ইহাতে শাখামৃগের সহিত আমাদের একত্ব নিঃসন্দেহ প্রমাণিত হয়। আরও দেখুন, আমরা ফলমূল বেশী পছন্দ করি। তার মধ্যে কদলা আবার অনেকের বিশেষ প্রিয়। বলুন এগুলি আমাদের বৈজ্ঞানিক অর্থাৎ বিজ্ঞানসম্মত (আজকাল ইক প্রত্যয় যোগে অনেক নতুন শব্দ হচ্ছে, যথা রাজনীতিক, সাহিত্যিক ইত্যাদি) পূর্বপুরুষগণের আচারের পক্ষপাতিত্ব কিনা? তার পর সর্বাপেক্ষা অকাট্য প্রমাণ এই যে, আমাদের আৰ্য পূর্বপুরুষগণ ৫০ বৎসরের বেশী বয়স হলে বনে যেতেন। সেখানে গিয়ে ফল মূল পাতা খেয়ে কাটাতেন। পূর্বপুরুষের প্রতি মমতাই যে এর একমাত্র কারণ, তা কে না বল্বে ? তা না হলে এমন সোনার ভারত ছেড়ে ভারচ্ছাড়া সাহেব সুবোরা হোম হোম সুইট হোম !!! ব’লে কোথাকার ঠাণ্ডা হিম-কনকনে দেশের জন্য হাহুতাশ করেন! এখন বোধ হয় বুঝতে পারলেন, বক্তিয়ার খিলজির মত কখনও কখনও কেউ যে আজানুলম্বিত বাহু হয়ে থাকে, সেটা অস্বাভাবিক নয়, বরং সেটা খুবই স্বাভাবিক।
মানবের পূর্ব্বপুরুষ সম্বন্ধে যথেষ্ট প্রমাণ পেলেন। এখন ভবিষ্যতের মানুষ কেমন হবে, দেখা যাক, এই অতীতের মানুষ থেকে তার কিছু প্রমাণ পাওয়া যায় কি না। এটা বুঝতে গেলে একটু মাথা ঘামাবার দরকার হবে। প্রথমে দেখতে হবে, কিরূপে সেই চতুস্ত জব এই জীবশ্রেষ্ঠ দ্বিপদ দ্বিহস্ত জীবে পরিণত হল।
যখন আমাদের বৈজ্ঞানিক পূর্বপুরুষগণ ডালে ডালে বাস করতেন, তখন হাত পা চারিটিরই বিশেষ দরকার হত। মধ্যে মধ্যে লেজেরও আবশ্যকতা পড়ে যেত। তার পর যখন যুগ-পরিবহনের সঙ্গে সঙ্গে গাছ পালা কম হয়ে গেল, যে গাছ পালা এখন কয়লা রূপে পরিণত হয়েছে, তখন তারা মাটিতেই চলা ফেরা করতে বাধ্য হ’ল। মাটিতে চলতে চলতে পা যেমন মজবুত ও মাংসল হয়ে এল, হাতও তেমনি সরু আর ছোট হয়ে গেল। লেজের দরকার না থাকায় সেটাও ছোট হয়ে গেল। তখন glacial period বরফ যুগ। সেই বরফের উপর ঘেঁসড়াতে ঘেঁসড়াতে যেটুকু লেজ ছিল, সেটা একেবারে লোপ পেলে। তার পর শুকনা কাঠ ঘতে ঘসূতে যখন আগুন তৈরি করতে তারা শিখলে, আর আগুনে পুড়িয়ে ঝলসে খেতে আরম্ভ করলে, তখন দাঁতও সরু তীক্ষ্ণ থেকে ক্রমে চওড়া হয়ে গেল। তারপর শীত বর্ষা থেকে বাঁচবার জন্য যখন তারা গাছের ছাল বা জন্তুর চামড়া ব্যবহার করতে লাগল, তখন লোমের আর দরকার থলি না। কাজেই সেটা ছোট, সরু বা ক্রমে লুপ্ত হয়ে গেল। এই রকম করে ক্রমে ক্রমে আমাদের এই সভ্য ভব্য জীবের আবির্ভাব হ’ল। এটা যে দুই এক হাজার বৎসরে হয়েছে তা নয়।
বহু হাজার বৎসরে এই পরিবর্তন হয়েছে। আপনারা দেখলেন, এই পরিবর্তনের গোড়ায় হচ্ছে প্রকৃতির মিতব্যয়িতা। প্রকৃতি যখন দেখেন কোন জিনিসের দরকার নেই, ক্রমে ক্রমে সেটির অস্তিত্ব থাকে না। প্রকৃতিতে ফাজিল জিনিস একটিও দেখতে পাবেন না। আরও আপনারা দেখলেন, যখন যেটি আবশ্যক, প্রকৃতি তখন সেটি যোগাড় করে দিতে বেশ মজবুত। আরও একটা জিনিস দেখবার বিষয় যে, প্রকৃতি তাড়াতাড়ি কোন জিনিস তৈরী করা মোটেই পছন্দ করেন না। প্রকৃতি সমস্তই ধীরে অথচ নিশ্চিত ভাবে করে থাকেন।
এখন প্রকৃতির এই রীতি দেখে ভাবী কালের মানুষ কেমন হবে, অনুমান করা যাক।
কালিদাস না কি বাণীর মুখ থেকে বন্দনা আরম্ভ করে ছিলেন, তাই কুস্থানে তাঁর অপঘাত মৃত্যু হয়। তাই আমি এই নর-দেবতার ভবিষ্যৎ মূৰ্ত্তি বর্ণনা করতে পা থেকেই শুরু করব।
আগে লোকে দশ বিশ ক্রোশ অনায়াসে চলে যেত। তাদের পায়ের জোরও ছিল কম নয়। এখন পায়ে হাটা একটা নিতান্ত চাষাড়ে ব্যাপার ; যার পয়সা নেই, সেই হাটে ; ভাগ্যবান পুরুষ মাটিতে বড় একটা পা দেন না। যানের সংখ্যা দেখুন, ডাঙ্গায়–গোরুর গাড়ী, ঘোড়ার গাড়ী, রেলের গাড়ী, মোটর গাড়ী, দু-চাকার গাড়ী, তিনচাকার গাড়ী, মোটর সাইকেল, ঘোড়া, উট, হাতী, খচ্চর, চমরী; জলে-নৌকা, স্টীমার, ভাসা জাহাজ, ডুবে জাহাজ ; আকাশে-বাইপ্লেন, মনোপ্লেন, জেপিলিন। পরে আরও কত কি হবে। কাজেই পায়ের ব্যবহার না থাকায় পা শুকিয়ে গিয়ে, পরে ষাড়ের বাটের মত কিংবা ছাগলের গলার ঘুণ্টির মত দুটো নাম মাত্র জিনিস হয়ে থাকবে।
এখন হাতের কথা। পূর্বে যে সকল জিনিস হাতে গড়তে হত, এখন সে সব কলেই হচ্ছে। লাঙল চষা, ধান কাটা, ধান ভানা, কাপড় বোনা, কাপড় কাচা, সূতা কাটা, সেলাই করা, লেখা,-এমন কি লোক খুন করা পৰ্য্যন্ত কলে হচ্ছে। কাজেই উৰ্দ্ধবাহু মুনির হাতের মত হাত দুটোও শুকিয়ে গিয়ে পায়ের দশা পাবে। তবে কল চালাবার জন্য হাতের আঙুল ক’টা খুব বড় আর জোৱাল হবে।
এখন মুখ আর পেট। সমস্ত দুনিয়াটাকে চালাচ্চে কে ? এর যদি খাঁটি তথ্য জানতে চান, তবে শুনুন। যদি এই পেট জিনিসটা না থাকত, তবে সংসার করবার এত ঝক্কি থাকত না। সংসারই থাকত না। সকলেই জ্ঞানী, গুণী, পরমধাৰ্ম্মিক, যোগী ঋষি হয়ে যেত। পৃথিবীর যত বড় বড় লড়াই হয়েছে, তা প্রায় পেট নিয়ে। দেখুন, সেই সত্য যুগের দেবাসুরের যুদ্ধ থেকে একালের য়ুরোপের হালের লড়াইয়ের গোড়ায় এই এক জিনিস। কিন্তু ভবিষ্যতের মানুষের পেট থাকবে না, পেটের চিন্তাও থাকবে না। খাওয়ার জন্য কত যোগাড় যন্ত্র ! আবার সেই খাওয়াতেও কত ঝঞ্ঝাট—চিবাও, গেল, হজম কর, তারপর তার সার জিনিস শরীরে লাগাও, অসার জিনিস শরীরের দুই দোর দিয়ে বার করে ফেল! কত হাঙ্গামা ! বিজ্ঞান এ সব হাঙ্গামা মিটিয়ে দেবে। শরীরের জন্য অম্লজান, উদজান প্রভৃতি যে কয়েকটি জিনিসের দরকার, সব গুলিই বায়ুরূপে পাওয়া যেতে পারে। তখন গাল দিয়ে না খেয়ে, নাক দিয়ে নিশ্বাস টেনে নিলেই, শরীরের অভাব ঘুচে যাবে।
আগেকার মুনিরা অনেকে বায়ুভক্ষক হয়ে থাকতেন। এখন আমরা বেশ বুঝতে পারছি, তাঁরা খাদ্যদ্রব্য বায়ুরূপে নাসিকার পথে সেবন করতেন। হাওয়া টেনে টেনে নাকের ছেদ। দুটো যেমন ফনেলের মত বড় হয়ে যাবে, তেমনি পেটটা তুড়ে ডুবড়ে তোবড়ান লাউয়ের মত চুপসে যাবে। মুখের গহ্বর আর এত বড় থাকবে না। তবে আমরা ক্রমে যেমন বাক্যবাগীশ হয়ে পড়ছি, তাতে মুখ একেবারে বন্ধ করতে পারব না। তবে মুখটা কথা বলার পক্ষেই হ!! কবে। সেটার আকার হবে—যেমন পারসী কবিরা তারিফ করেন—পেস্তার দানার মত।
এখন চোখ দুটো কেমন হবে দেখা যাক। আমাদের বাপ দাদারা চশমা কেমন জিনিস, অনেকেই হয়ত জানতেন না। আর তার দরকার ছিল না। আমরা এখন দরকারে, বে-দরকারে চশমা ব্যবহার করে চোখ দুটোর এক রকম মাথাই খাচ্ছি। তারপর অণুবীক্ষণ দূরবীক্ষণে দেখতে গেলে চোখকে সঙ্কোচ করতে হয়। এই রকম করে ক’রে কালে চোখ-দুটো ছোট হয়ে জ্যামিতির বিন্দুর আকার, না হয় তার চেয়ে কিছু বড় হয়ে থাকবে।
তবে মাথাটা হবে শরীরের সর্বস্ব। একটা প্রকাণ্ড বিরাট জিনিস,-একটা জালাবিশেষ। মস্তিষ্কের কাজ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। আগে লোকে বড় জোর পৃথিবীর কথাই ভাবত, এখন মঙ্গল গ্রহে লোক আছে কিনা, চাদের অপর পিঠে কি আছে, শুক্র গ্রহে লোক থাকা সম্ভব কিনা, এই সমস্ত দুনিয়া-ছাড়া বিষয় ভাবতে আরম্ভ করেছে। কাজেই চিন্তার বিষয় বেড়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে মস্তিষ্ক চৰ্চ্চা খুব বেশীই হবে। সেই জন্য মাথাটাও প্রকাণ্ড হয়ে যাবে।
আমি চিত্রকর নই, নচেৎ ভবিষ্যতের মানুষের একটি চিত্ৰ আপনাদিগকে দিতে পারতাম। এখন আপনাদিগকে একটা আভাস দিচ্ছি। ঐ যে পূর্ণিমার চাঁদ দেখেন, ঐটাকে খাসা কল্পনা করে, যদি তাতে সরু দু’খানা পা, আর সরু দু’খানা হাত, আর হাতে প্রকাণ্ড কতকগুলি আল কল্পনা করতে পারেন, তবে ভবিষ্যতের মানুষের ছবি কথঞ্চিৎ বুঝতে পারবেন। যদি বলেন, ঐটার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ত শুলাম, এখন শাস্ত্রীয় প্রমাণ কোথায় ? তবে আমি বলি-দেখুন সত্য যুগে মানুষ ছিল ২১ হাত, ত্রেতায় হ’ল ১৪ হাত, দ্বাপরে ৭ হাত। তা হলে আমরা দেখছি প্রত্যেক যুগে ৭হাত করে মানুষ কমে যাচ্ছে। এখন সোজা জমা খরচ-দ্বাপরে যদি ৭ হাত থাকে, তবে কলির শেষে অবশ্যই ৭ থেকে ৭ বাদ গেলে ০ থাকবে। মানুষ ঐ (০) শূন্যর মতনই হবে। কলিকালে ৩০ হাত মানবদেহের কথা যা বলা হয়েছে, তা কলির মাঝখানের কথা, শেষে কিন্তু শূন্যাকার। মাথাটা প্রকাণ্ড হবে, সুতরাং মানুষকে তখন শূন্যাকার দেখাবে কিনা, আৰ্য্য ঋষিরা সেটার ইঙ্গিত করে গেছেন। এখন যদি কারও এই বৈজ্ঞানিক বিবৃত্তি ভাল না লাগে, তবে তাকে করযোড়ে বলি–
নিম্মলয়সি ভুবনতলং
সততাক্ষিপ্তেব পরবলেন।
খলরদনে সম্মার্জ্জনি!
তদপি চ ভীতিৰ্ভবৎস্পর্শেন।