ফাঁসি
দুটো লোককে ফাঁসি দেবে বলে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ আজ উত্তেজিত। ভায়োলেন্স খারাপ লোকেরা করে, ইলিগ্যালি করে। এখন রাষ্ট্র করছে ভায়োলেন্স, লিগ্যালি। চোখের বদলে চোখ নিচ্ছে। দাঁতের বদলে দাঁত নিচ্ছে। রাষ্ট্র বোধহয় ভায়োলেন্স শেখায় মানুষকে, এভাবেই। খুনী আর রাষ্ট্রের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য দেখতে পাই না। কাউকে ফাঁসি দিলেই যে পার্থক্যটা দেখিনা তা নয়, ব্লগার-লেখকদের যারা খুন করেছে তাদের বিরুদ্ধে যখন রাষ্ট্র কোনও ব্যবস্থা নেয় না, বরং খুনীর কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিলে কিন্তু সইবো না, তখনও পার্থক্যটা দেখি না।
ইসলামের জন্য যারা একাত্তরে মানুষ খুন করেছিল, তাদের ফাঁসি হচ্ছে আজ। ইসলামের জন্য যারা ২০১৪/২০১৫ সালে মানুষ খুন করেছে, তাদের বিচার পর্যন্ত হচ্ছে না। এই ইনজাস্টিসটাও কি রাষ্ট্র শেখাচ্ছে না? মানুষকে সভ্য শিক্ষিত সচেতন সংবেদনশীল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রের কি কোনও ভূমিকা আছে? মানবাধিকার সম্পর্কে কিছু শিক্ষা কি রাষ্ট্র কখনও দিয়েছে কাউকে?
মানুষকে খুনী বানাবার সব রকম রসদ মন্ত্র পুঁথি পত্র ওয়াজ খুৎবা দেশে বৈধ। কিন্তু খুন বৈধ নয়। নিতান্তই অক্সিমরন। তারচেয়ে এটা ভালো নয়, খুনী বানিয়ো না কাউকে, খুনও কোরো না কাউকে? অবশ্য আজকাল জঙ্গীবাদ যেভাবে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ছে, একে রোধ করা কী করে সম্ভব, তা হয়তো অনেকেই আমরা জানি না। তবে এটা ভালো বুঝি, ফাঁসি দিয়ে, মেরে, কোনও সমস্যার সত্যিকার সমাধান হয় না। সুশিক্ষাটা ছড়িয়ে পড়া দরকার। বিশ্বময়। ফাঁসি হলো সহজ সমাধান, সুশিক্ষা ছড়ানোটা কঠিন। কঠিনকেই ভালোবাসতে হবে।