পুনশ্চ : মধ্য যুগের ফারসি সাহিত্য পাঠ নিয়ে নোট

পুনশ্চ : মধ্য যুগের ফারসি সাহিত্য পাঠ নিয়ে নোট

আওরঙ্গজেবের জীবন ও রাজত্ব বিশাল বিস্তৃত নথিপত্রে বিন্যস্ত হয়ে রয়েছে। ইতিহাস, রাজকীয় আদেশ, খবর প্রতিবেদন, চিঠিপত্র, ভ্রমণকাহিনী ও অন্যান্য দলিল-দস্তাবেজে (এগুলো মূলত লেখা হয়েছে ফারসি ভাষায়) মধ্য যুগের ভারতবর্ষীয় এ সম্রাটকে নিয়ে লিখিত ভাষ্যের বিশাল ভাণ্ডার সৃষ্টি করেছে। তবে ইতিহাসবিদেরা এই প্রাচুর্যপূর্ণ আর্কাইভের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

আওঙ্গজেব সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও ইতিহাসে ইতিহাসবিদদের প্রবেশগম্যতার অভাব রয়েছে। অসংখ্য নথিপত্র কখনো ছাপা সংস্করণের মুখ না দেখে পাণ্ডুলিপির লাইব্রেরিগুলোতে অবহেলিতভাবে পড়ে আছে। দক্ষিণ এশিয়া ও ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব লাইব্রেরিতে যাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞদের বিপুল সময় ও অর্থের প্রয়োজন হয়। আবার অনেক স্থান ফটোগ্রাফির ওপর এমন বিধিনিষেধ রয়েছে যে সেগুলোর আর্কাইভ সামগ্রীর সত্যিকারের ব্যবহার প্রায় অসম্ভব। এছাড়া ভাষাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ । আওরঙ্গজেব সাম্রাজ্যের সরকারি প্রশাসনিক ভাষা ফারসি হওয়ায় এ ভাষাতেই মোগলদের বেশির ভাগ ইতিহাস লেখা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান ভারতে এটি বিদেশী ভাষা । অনেক ইতিহাসবিদের মূল ফারসি পাণ্ডুলিপিগুলো বাদ দিয়ে এর বদলে ইংরেজি অনুবাদের ওপর নির্ভর করার কারণ প্রয়োজনের তাগিদ ও এগুলোর প্রাপ্তি সহজলভ্য হওয়া। এই দৃষ্টিভঙ্গি লাইব্রেরি সামগ্রীর ব্যবহার ব্যাপকভাবে হ্রাস করে। আবার মোগল পাণ্ডুলিপিগুলোর অনেক অনুবাদের মান প্রশ্নবোধক। ভুল অনুবাদ ও সংক্ষিপ্তকরণ রয়েছে ভয়াবহ মাত্রায়। ভুল বা বিভ্রান্তিকর অনুবাদের কিছু কিছু বেশ সুবিধাজনকভাবেই অনুবাদকদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হয়েছে। বিশেষ করে উপনিবেশ যুগের অনুবাদগুলোর কথা বিশেষভাবে বলা যায়। এসব অনুবাদে ইন্দো-মুসলিম সম্রাটদের সবচেয়ে খারাপভাবে উপস্থাপন করতে চাওয়া হয়েছিল যাতে তাদের তুলনায় ব্রিটিশদেরকে শ্রেষ্ঠ মনে হয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ইলিয়ট ও ডসনের হিস্টরি অব ইন্ডিয়া, অ্যাস টোল্ড বাই ইটস ওন হিস্টোরিয়ান্স। এসব বই ব্রিটিশ উপনিবেশবাদ সম্পর্কে জানার বিশাল উৎস হলেও মোগল ভারতবর্ষ সম্পর্কে ভ্রান্ত চিত্র উপস্থাপন করে ।

এমনকি বিশেষজ্ঞরা আওরঙ্গজেব আমলের নথিপত্র দেখার ও পাঠের যদি সুযোগ পানও তখন বড় ধরনের বাধা হিসেবে সামনে আসে এসবের ব্যাখ্যা। কাফি খান (মুন্তাখাব আল-লুবাব) ও মুসতাইদ খানের (মাসির-ই আলমগির মতো আওরঙ্গজেব শাসনকালবিষয়ক তথাকথিত প্রধান প্রধান ইতিহাসবিদের অনেকে লিখেছেন আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর অনেক পরে এবং তারা কয়েক দশক আগে সংঘটিত ঘটনাগুলো পুনঃগঠনের জন্য স্মৃতিকথা ও জনশ্রুতির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করেছেন। এ ধরনের ব্যবস্থার ফলে অগোচরে অনিচ্ছাকৃত ভুল তাদের রচনায় প্রবেশ করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যের সন্ধান পাওয়া গেলে এসব গ্রন্থকে তুলনা করে ভুলগুলো শনাক্ত করা যায়। এমনকি রাজাদেশ ও চিঠিপত্রসহ যেসব নথিপত্র অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য মনে হয়, সেগুলোও প্রায়ই ঘটনাটি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর চিত্র সৃষ্টি করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অনেক নির্দেশ কখনো কার্যকর করা হয়নি ।

অধিকন্তু, মধ্য যুগের অনেক লেখক যথার্থ তথ্য প্রাপ্তি নিয়ে আচ্ছন্নতায় থাকতেন না। বরং এর বিপরীতে আওরঙ্গজেবের আমলে ইতিহাসবিদদের মধ্যে আদর্শ কৌশল ছিল অতীতকে ভ্রমাত্মকভাবে উপস্থাপন করা। এসব ইতিহাসবিদ তারিখ (ফারসি ঘরানার ইতিহাস রচনা) লেখার সময় অতীতকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরার মতোই বাধিত থাকতেন সাহিত্যিক লক্ষ্য হাসিলের জন্য। সাহিত্যিক প্রয়োজনের আলোকে ইতিহাস পরিবর্তন করা ছাড়াও কাফি খানের মতো লেখকেরা ব্যাপক বাগাড়ম্বড়তার আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের এ কৌশল আমাদেরকে তাদের পক্ষপাতিত্বের কথা প্রকাশ করলেও বিশেষ রাজকীয় সিদ্ধান্তটি গ্রহণের নেপথ্য কারণটি অন্ধকারে রেখে দিয়েছেন। অবশ্য এ ধরনের স্তরে স্তরে থাকা অংশগুলো প্রাক-আধুনিক ঐতিহাসিক ভাষ্যগুলোকে বাতিল করে দেয় না। তবে মোগল ইতিহাস দায়িত্বশীলতার সাথে পুনঃনির্মাণের জন্য আমাদেরকে এসব তথ্যের সাহিত্যিক ও ঐতিহাসিক উভয় মান বিচার করে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে ।

বেশির ভাগ আধুনিক ইতিহাসবিদ ফারসি-মাধ্যমের মোগল ইতিহাসের সাথে ইউরোপিয়ান ভ্রমণকাহিনী, হিন্দি ও অন্যান্য স্থানীয় ভাষার রচনাবলী ও (সাধারণভাবে সবচেয়ে কম) সংস্কৃত গ্রন্থরাজিসহ অন্যান্য ভাষার প্রাক-আধুনিক গ্রন্থরাজিকে পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করেন। এসব গ্রন্থে প্রায়ই কল্পনা ও বাস্তবতার মিশ্রণ দেখা যাওয়ায় এগুলোও একই ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। ইউরোপিয়ান ভ্রমণকাহিনীগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ লাভ করে, কারণ মোগল সাম্রাজ্যবিষয়ক অনেক বিশেষজ্ঞ এখনো বুঝতে পারছেন না এসব রচনা আসলে বাস্তব তথ্যের সাদাসিধে বর্ণনা নয়, বরং এগুলো বিশেষ শ্রেণির পাঠকদের (এবং প্রায়ই পুঁজিবাদী বাজার) সামনে রেখে প্রণীত কৌশলী ভাষ্য ।

আধুনিক ইতিহাসবিদেরা ইতিহাসের বই-পত্রগুলো পাঠ করেন কঠোরতার সাথে। এর মানে হলো, আমরা এসব বই-পত্রকে সেগুলোর বৃহত্তর সামাজিক ও সাহিত্যিক প্রেক্ষাপটে স্থাপন করি, গুরুত্ব বিচার করি, প্রমাণ মূল্যায়ন করি, একটি পাণ্ডুলিপিকে অন্যটির সাথে তুলনা করি। ইতিহাসবিদেরা পেইন্টিংস, ভবনরাজি, মুদ্রার মতো প্রমাণগুলোও বিবেচনা করেন। চূড়ান্তভাবে, ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, প্রতিষ্ঠান বা ঘটনার ব্যাখ্যা করার জন্য ইতিহাসবিদেরা একটি নিয়মসম্মতভাবে ধারাবাহিক ভাষ্য নির্মাণের জন্য প্রাথমিক নথিপত্রগুলো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বিবেচনা করেন। ইতিহাস নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করার ব্যাপক অবকাশ আছে, তবে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রায়ই হয় গঠনমূলক। কিন্তু আওরঙ্গজেবের ঐতিহাসিক নথিপত্রগুলো সংগ্রহ, আত্মস্ত করা ও বোধগম্য করার প্রক্রিয়া খুব সহজ নয়।

জীবনীমূলক প্রবন্ধ

আওরঙ্গজেবের এই জীবনীগ্রন্থের ভিত্তি হলো প্রাক-আধুনিক ও আধুনিক উভয় সময়ের পূর্ববর্তী বিশেষজ্ঞদের রচনাবলী। এরপর আমার বিবেচনায় আনা গ্রন্থগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। আমি একই সাথে আওরঙ্গজেব অধ্যয়নের সময়কার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রগুলোর কয়েকটি সম্পর্কে সারসংক্ষেপও দিয়েছি। আমি পাণ্ডুলিপির আর্কাইভগুলো খুব কমই ব্যবহার করেছি, আমার প্রাথমিক নথিপত্র নিয়ে গবেষণা প্রধানত ছাপানো সংস্করণের ওপর নির্ভরশীল ছিল। উদ্ধৃতি ও অন্যান্য বিশেষ তথ্যের জন্য আগ্রহী পাঠকেরা এই অংশের পর থাকা নোটের ওপর নজর বুলাতে পারেন।

আমি আগেই উল্লেখ করেছি, ফারসি ইতিহাসগুলো– আওরঙ্গজেব আলমগিরবিষয়ক আমাদের বিপুল ঐতিহাসিক সম্পদরাশির মূল কাঠামো গঠন করেছে। আওরঙ্গজেবের প্রাথমিক জীবনের প্রধান প্রধান ঘটনা শাহ জাহান আমলের ইতিহাসগুলোতে নথিবদ্ধ হয়ে আছে। এসবের মধ্যে আমি এই গ্রন্থে আব্দুল হামিদ লাহোরির পাদশাহনামা, ইনায়েত খানের শাহজাহাননামা, মোহাম্মদ সালিহ খামবুর আমল-ই-সালিহ, তাবাতাবাইয়ের শাহজাহাননামা থেকেও তথ্য সংগ্রহ করেছি।

আওরঙ্গজেবের আমলে অনেক লোক ইতিহাস রচনা করেছেন। মোহাম্মদ কাজিমের আলমগিরনামা, সম্পাদনা খাদিম হোসাইন ও আবদুল হাই (কলকাতা, ১৮৬৮), আওরঙ্গজেবের শাসনকালের প্রথম ১০ বছরের তথ্য দেয়। এটিই ওই সময়ের একমাত্র সরকারি রাজকীয় ইতিহাস। বখতওয়ার খানের (মৃত্যু ১৬৮৫) মিরাত আল-আলম একটি সার্বজনীন ইতিহাস, যা আওরঙ্গজেব আমলের প্রথম দশকের ঘটনাবলীতে সমৃদ্ধ। সাজিদা আলভি তার পার্সপেকটিভস অন মোগল ইন্ডিয়া গ্রন্থে (করাচি, ২০১২) উল্লেখ করেছেন, বখতওয়ার খানের বইটি এখন খুবই কম পাঠ করা হয়, কিন্তু এ বইয়ে আলমগিরনামায় না পাওয়া অনেক তথ্যের সন্ধান মেলে। আকিল রাজি খানের (মৃত্যু ১৬৯৬/৭) ওয়াকিয়াত-ই আলমগিরি হলো উত্তরাধিকার যুদ্ধের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভাষ্য। আমি মৌলভি জাফর হাসানের সংস্করণটি (দিল্লি, ১৯৪৬ ) ব্যবহার করেছি। এছাড়া হাতিম খানের আলমগিরনামা, মোহাম্মদ মাসুমের তারিখ-ই শাহ শুজাই, আবুল ফজল মামুরির তারিখ-ই আওরঙ্গজেবের মতো অপ্রকাশিত ফারসি ইতিহাস গ্রন্থ রয়েছে। আমি এ বইটি লেখার কাজে এসব গ্রন্থের সহায়তা নিতে পারিনি ।

আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর কয়েক দশকের মধ্যে লেখকেরা অনেক ইতিহাস রচনা করেছেন। কাফি খানের মুন্তাখাব আল-লুবাব (আনুমানিক ১৭৩০) ও সাকি মুস্তাইদ খানের মাইসির-ই আলমগির (১৭১০) অনেক ইতিহাসবিদের কাছে খুবই প্রিয়। এর আংশিক কারণ বই দুটির মইনুল হক (করাচি ১৯৭৫) ও যদুনাথ সরকারের (কলকাতা, ১৯৪৭) ইংরেজি সংস্করণ পাওয়া যায়। এছাড়া বই দুটিতে আওরঙ্গজেবের পুরো আমলের তথ্য থাকার কারণেও জনপ্রিয় পরবর্তীকালে লেখা হওয়ায় এবং আওরঙ্গজেবের নীতিপরায়ণ প্রকাশ্য ভাবমূর্তির ওপর জোর দেওয়া বাগাড়ম্বড়াতার কারণে বই দুটির ব্যাপারে আমি একদিকে যেমন সতর্ককতা অবলম্বন করেছি, অন্য দিকে অন্যান্য সূত্রের সাথে তুলনা করেছি। আমি কাফি খানের ইলিয়ট ও ডাওসনের অনুবাদের সাথে ভিন্ন মত প্রকাশ করছি। জনপ্রিয়তার কারণে আমি যদুনাথ সরকারের মাইসির-ই আলমগিরির অনুবাদের কথা উল্লেখ করেছি। তবে পাঠকদের সতর্ক থাকতে হবে যে যদুনাথের অনুবাদটি অসম্পূর্ণ, এতে ভুল রয়েছে (এই অনুবাদ নিয়ে আরো কিছু তথ্যের জন্য টিলম্যান কুলকের ‘অ্যা মোগল মুনসি অ্যাট ওয়ার্ক’ ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট, পিএইচডি থিসিস, ২০১৬], ১০-১৫, ২০-২২ দেখা যেতে পারে)।

ভীমসেন স্যাক্সেনার তারিখ-ই দিলখুশা দাক্ষিণাত্যের ঘটনাবলীর একটি অমূল্য ভাষ্য। আমি একটি ব্রিটিশ লাইব্রেরি পাণ্ডুলিপির (অর, ২৩) সাথে যদুনাথ সরকারের অনুবাদ তুলনা করেছি এবং কয়েকটি পৃষ্ঠার পুনঃঅনুবাদ করেছি। নগর ব্রাহ্মণ ও যোধপুরের মোগল বেসামরিক কর্মকর্তা ঈশ্বরদাস লিখেছেন ফুতুহাত-ই আলমগিরি, আনুমানিক ১৭০০ সালে (যদুনাথ সরকার ভুল করে সালটি উল্লেখ করেছেন ১৭৩০)। ফুতুহাতে (ভাদোদারা, ১৯৯৫) নিশ্চিতভাবেই কিছু ঐতিহাসিক ভুল আছে, তবে তা সত্ত্বেও এমন কিছু বিবরণ আছে, যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। স্বল্প ব্যবহৃত মিরাত-ই-আহমদি (১৭৫৪) গ্রন্থে আওরঙ্গজেবের গুজরাত আমলের কথা বলা হয়েছে। শাহ নওয়াজ খানের মাইসির আল-উমারা, সম্পাদনা আবদুর রাহিম ও মির্জা আশরাফ আলী (কলকাতা, ১৮৮৮-৯১), ১৭৮০ সাল পর্যন্ত মোগল অভিজাতদের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত দেয়। এছাড়া রয়েছে এইচ বেভারিজ ও বেনী প্রাসাদ (পাটনা, ১৯৭৯) অনূদিত মাইসির আল-উমারাও।

ফারসি ভাষার ইতিহাস ছাড়াও আমি ভূষণের শিবরাজভূষণের (অনুবাদের জন্য অ্যালিসন বাচকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি) মতো বইগুলোসহ সীমিত পরিসরে হিন্দি সাহিত্য ব্যবহার করেছি। আমি জ্ঞান চন্দ্রের সহযোগিতায় জৈন ভাষায় লিখিত বই দেখিছি (এই বিষয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হলো মোহাম্মদ আকরাম লারি আজাদের রিলিজিয়ন অ্যান্ড পলিটিক্স ইন ইন্ডিয়া (দিল্লি, ১৯৯০], ২৩৪-৩৭)। আমি সহায়তার মাধ্যমে শিখ সামগ্রীও কিছুটা ব্যবহার করেছি। আওরঙ্গজেবের জীবনের আরো ব্যাপকভিত্তিক জীবনী রচনার জন্য অন্যান্য হিন্দি গ্রন্থ বিশেষ করে রাজপুত দরবারের গ্রন্থগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া লক্ষ্মীপতির অবদুল্লাকরিত ও নৃপতিনিতিগরবিতাভৃত্তের মতো সংস্কৃত সামগ্রীর সহায়তাও গ্রহণ করা যায়। এগুলোতে আওরঙ্গজেবের মৃত্যু পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাগুলো রয়েছে ।

ইতিহাসবিদদের জন্য ইউরোপিয়ান ভ্রমণকাহিনীগুলো আওরঙ্গজেবের ভারতবর্ষ সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই নির্ভরযোগ্য উৎস। বিশেষ করে নিকোলাও মানুচির স্টোরিয়া ডি মোগর, (অনুবাদ উইলিয়াম আরভিন, লন্ডন, ১৯০৭-০৮), ফ্রাসোয়া বার্নিয়ারের ট্রাভেলস ইন দি মোগল আম্পায়ার (অনুবাদ আর্চিবল্ড কনস্টাবল ও ভিনসেন্ট স্মিথ, অক্সফোর্ড, ১৯১৪) ও জ্যা-বাস্তাইজ টাভারনিয়ারের ভয়েজ (অনুবাদ ভি. বল, লন্ডন, ১৮৮৯)-এর কথা বিশেষভাবে বলা যেতে পারে। এখানে আমি জেমেলি ক্যারেরি, পিটার মুন্ডি, উইলিয়াম নরিস, জন অভিঙ্গটন ও জ্যা ডি থেভেনটের মতো কিছুটা কম জনপ্রিয় ভাষ্যের উদ্ধৃতি দিয়েছি। বিদেশী পর্যটকেরা মোগলদের নিয়ে বড় ধরনের অন্তঃদৃষ্টি তুলে ধরেছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই কোনো কারণ ছাড়াই ভারতীয় নথিপত্রের চেয়ে ইউরোপিয়ান গ্রন্থগুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, ইউরোপিয়ান পর্যটকেরা কিভাবে কল্পকাহিনী ও বাস্তবতার মধ্যে গোলকধাঁধার সৃষ্টি করেছেন তা না বুঝেই

আমি আওরঙ্গজেবের চিঠিপত্রের মাধ্যমে তাকেই তার সম্পর্কে কিছুটা বলার সুযোগ দিয়েছি। এসব চিঠিপত্র ওই সময়ের অনেক মোগল ইতিহাসে তাকে যেভাবে চিত্রিত করা হয়েছে সেই ছবির চেয়ে ভিন্ন ব্যক্তি হিসেবে তাকে উপস্থাপন করে। আওরঙ্গজেব অনেক চিঠি লিখেছিলেন ফারসি ভাষাতে, সম্ভবত দুই হাজার এখনো টিকে আছে। এগুলো নিয়ে বেশ কয়েকটি সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে আদব-ই আলমগিরি, কালিমাত-ই তাইবিয়াত, রাকাইম-ই কারিম ও রুকাত-ই আলমগিরি (আমি ব্যাপকভাবে বিলিমোরিয়ার ইংরেজি অনুবাদ ব্যবহার করেছি, তবে মূল ফারসি ভাষার কাছাকাছি ভাষ্যই প্রয়োগ করেছি। আমি দস্তার আল-আমল আগাহি ও আহকামই-আলমগিরির (এটি আর যদুনাথ সরকারের অ্যানিকডোটেস অব আওরঙ্গজেব নামে প্রকাশিত গ্রন্থটি এক নয়) মতো অপ্রকাশিত সঙ্কলন ব্যবহার করিনি। যদুনাথ সরকারের অ্যানিকডোটেস (কলকাতা, ১৯১৭) প্রলুব্ধ সৃষ্টিকারী গ্রন্থ, এতে আওরঙ্গজেব সম্পর্কে টুকরা টুকরা অনেক রসাল কাহিনী আছে। এতে অবশ্য অনেক ভুল তথ্যও রয়েছে। যদুনাথ সরকারও তা স্বীকার করেছেন, কিছু কিছু পাদটীকায় কয়েকটি ঘটনার সত্য ভাষ্যও উল্লেখ করেছেন। আমি যদুনাথ সরকারের অ্যানিকডোটেস সতর্কতার সাথে ব্যবহার করেছি, আওরঙ্গজেবের কথিত দ্বিতীয় উইল (দেখুন, অ্যানিডোটেস, ৫১-৫৫) এবং এ জাতীয় অনেক সম্ভাব্য বানোয়াট ভাষ্য পুরোপুরি বাদ দিয়েছি।

আওরঙ্গজেবের বক্তব্য ফরমান (রাজকীয় আদেশ) আকারে এবং সেগুলোর রাজোচিত সমান্তরাল নিশান আকারেও আমাদের কাছে এসেছে। আমি হিন্দু মন্দির ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ব্যাপারে বিশেষভাবে নির্ভর করেছি জ্ঞান চন্দ্রের আওরঙ্গজেবের ফরমানবিষয়ক প্রবন্ধগুলোর ওপর। এ ব্যাপারে এস এ আই তিরমিজির মোগল ডকুমেন্টস (দিল্লি, ১৯৯৫)-এর ওপর নজর বুলিয়েছি।

আওরঙ্গজেবের আমলের সংবাদ প্রতিবেদনগুলো (আখবারাত) এখনো অনেক আর্কাইভে টিকে আছে। অবশ্য এই গ্রন্থে সেগুলোর সীমিত ব্যবহার হয়েছে। আমি অন্যান্য বিশেষজ্ঞের প্রতিবেদনের মাধ্যমেই সেগুলোর সাথে পরিচিত হয়েছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মনিষ ফারুকি তার প্রিন্সেস অব দি মোগল এম্পায়ারে (ক্যাম্ব্রিজ, ২০১২) আখবারাত-ই দারবার-ই মাওলা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছেন। এটি আছে কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব ইন্ডিয়ায় ৷

আওরঙ্গজেবের ওপর মাধ্যমিক সাহিত্য বিপুল, তবে যতটা ধারণা করা যেতে পারে, তার চেয়েও ভাসা ভাসা। ঊনিশ শতকে মন্টস্টুয়ার্ট ইলফিনস্টোন (১৮৪১) ও স্ট্যানলি লেন-পুলের (১৮৯৩) রচিত আওরঙ্গজেবের জীবনী ছাপা থাকলেও তা সেকেলে হয়ে পড়েছে। আমি এখানে এ জাতীয় গ্রন্থের ওপর নির্ভর করিনি। আত্ম-প্রতিষ্ঠিত ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকার (১৮৭০-১৯৫৮) বিশ শতকে আওরঙ্গজেবের ওপর সবচেয়ে বেশি গবেষণামূলক কাজ করেছেন । তিনি আওরঙ্গজেবের আমলের অনেক ইতিহাস ও চিঠিপত্র সঙ্কলন ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন, আওরঙ্গজেবের ওপর অনেক বই প্রকাশ করেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে অমূল্য পাঁচ খণ্ডের হিস্টরি অব আওরঙ্গজেব (১৯১২-২৪)। দীর্ঘ সময় ধরে তিনিই ছিলেন আওরঙ্গজেবের ওপর শেষ কথা। যদুনাথ সরকারের সর্বাত্মক প্রয়াসের পরের কয়েক দশকে তুলনামূলকভাবে অনেক কম সংখ্যক বিশেষজ্ঞ এই বাদশাহকে নিয়ে লিখেছেন। বিশেষজ্ঞরা ধীরে ধীরে আওরঙ্গজেবকে অধ্যায়নে ফিরে গেছেন, যদুনাথ সরকার যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তারা বাদশাহকে দেখতে পেয়েছেন ভিন্নভাবে। আমরা সবাই যদুনাথ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ হলেও তার বিশ্লেষণ ব্যাপকভাবে সাম্প্রদায়িকতাপূর্ণ এবং অনেক সময় তাতে ঐতিহাসিক বস্তুনিষ্ঠতার অভাব দেখা যায়। যারা যদুনাথ সরকারের পদ্ধতি ও কৃতিত্ব নিয়ে চিন্তা করতে চান, তাদের উচিত হবে দিপেশ চক্রবর্তীর দি কলিং অব হিস্টরি : স্যার যদুনাথ সরকার অ্যান্ড হিস এম্পায়ার অব ট্রুথ (শিকাগো, ২০১৫) বিবেচনা করা।

আরো সাম্প্রতিক সময়ে আওরঙ্গজেবের ওপর গবেষণা বেড়েছে, আমি এই রচনায় তা গ্রহণ করেছি। আমি ওপরে যেসব বিশেষজ্ঞের নাম উল্লেখ করেছি, তার বাইরে নিম্নোক্তদের লেখা ছিল বিশেষভাবে ফলপ্রসূ : এম আতাহার আলী, সতীশ চন্দ্র, এস এম আজিজুদ্দিন হোসাইন, ইরফান হাবিব, হারবান্স মুখিয়া ও জন রিচার্ডস। আরো অনেক বিশেষজ্ঞ আওরঙ্গজেবের শাসকালের বিশেষ বিষয় সম্পর্কে লিখেছেন। আমার লেখায় তাদের তথ্য ব্যবহার করেছি। এসবের মধ্যে রয়েছেন : ক্যাথেরিন অ্যাশর (স্থাপত্য), রিচার্ড ইটন (মন্দির অবমাননা),

লুই ফেঞ্চ (শিখদের সাথে সম্পর্ক), ইউহানান ফ্রিডম্যান (সরহিন্দি নিষিদ্ধকরণ), যশ গোম্যান্স (যুদ্ধ ও দাক্ষিণাত্যের বছরগুলো), স্টুয়ার্ট গর্ডন (মোগল-মারাঠা সঙ্ঘাত), বি এন গোস্বামী (হিন্দু সন্ন্যাসী), জে এস গ্রেওয়াল (ফতোয়া-ই আলমগিরি), রবার্ট হ্যাঁলিসে (রাজপুতদের সাথে সম্পর্ক), শালিন জৈন (জৈনদের সাথে সম্পর্ক), হেইদি পাওয়েলস (কেশব দেব মন্দির), ক্যাথেরিন বাটলার স্কোফিল্ড (নি ব্রাউন, সঙ্গীত) ও তাইমিয়া জামান (ভীমসেন স্যাক্সেনা)। বিনয় লালের ওয়েবসাইটটি (Manas; http://www.sscnet.wcla.edu/southasia/) আওরঙ্গজেবের শাসনকালের বেশির ভাগ বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত, সহজবোধ্য প্রবন্ধ রয়েছে। মোগল ইতিহাসের বেশ কিছু পর্যালোচনায় বৃহত্তর মোগল প্রকল্পে আওরঙ্গজেবের খাপ খাওয়ানোর বিষয়টি দেখানো হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে মাইকেল এইচ ফিশার, অ্যা শর্ট হিস্টরি অব দি মোগল এম্পায়ার (লন্ডন, ২০১৬), জন এফ রিচার্ডস, দি মোগল এম্পায়ার (ক্যাম্ব্রিজ, ১৯৯৩), ফ্রান্সিস রবিনসন, দি মোগল এম্পেস অ্যান্ড দি ইসলামিক ডাইনাস্টিকস অব ইন্ডিয়া, ইরান অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়া, ১২০৬-১৯২৫ (নিউ ইয়র্ক, ২০০৭)।

এ বইটি লেখার সময় সুপ্রিয়া গান্ধী (দারা শুকোহ), ইয়াল রাইস (পেইন্টিং) ও বেশ কয়েকজন সহকর্মীর অপ্রকাশিত ও প্রকাশিতব্য গ্রন্থ থেকে সহায়তা গ্রহণ করার সুবিধা পেয়েছি। এছাড়া সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ২০১৪ ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর সাউথ-এশিয়ান স্টাডিজ কনফারেন্সে হেইদি পাওয়েলসের আয়োজিত আওরঙ্গজেববিষয়ক প্যানেলের অনেক লেখকের রচনাও দেখেছি। বর্তমান সময়ে আওরঙ্গজেব একটি নতুন করে সৃষ্টি হওয়া ব্যাপক আগ্রহের বিষয়। অনেক বিশেষজ্ঞ শিগগিরই তার ওপর অনেক মাধ্যমিক পর্যায়ের সামগ্রী উপহার দিতে চলেছেন ।

আওরঙ্গজেববিষয়ক নথিপত্রের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়ে বলা শেষ দুটি কথা হলো যথাক্রমে প্রাচুর্যতা ও স্বল্পতা। আওরঙ্গজেব ইতোমধ্যেই সম্ভবত সবচেয়ে প্রামাণিক মোগল সম্রাটে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আখবারাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথিপত্রে প্রবেশগম্যতা গবেষকদের জন্য কঠিন। তাছাড়া আওরঙ্গজেববিষয়ক নতুন নতুন সামগ্রী নিয়মিত আত্মপ্রকাশ করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সম্রাটের একটি তরবারি ২০১১ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাবার্ড থেকে চাঞ্চল্যকরভাবে বের হয়েছে। বেসরকারি বাজারে প্ৰামাণিক সামগ্রী আত্মপ্রকাশ করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৪ সালে ক্রিস্টিসে আওরঙ্গজেবের ইস্যু করা একটি ফরমান ২৭,৫০০ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। আওরঙ্গজেবের ওপর যারা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে চান, তাদের নথিপত্রের অভাবে ভুগতে হবে না ।

অবশ্য সৌখিন পাঠক ও গবেষক উভয়কেই ঐতিহাসিক প্রমাণ ও নিয়মসম্মত ঐতিহাসিক দাবির প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যেসব ব্যক্তি হিন্দু-মুসলিম সঙ্ঘাতের সন্দেহমূলক আধুনিক পরিভাষায় আওরঙ্গজেবের কথিত বর্বরতার ‘প্রমাণ’ উত্থাপন করার দাবি করে থাকেন, তারা প্রায়ই জাল নথিপত্র ও নির্লজ্জ ভুল অনুবাদসহ বিদ্বেষপ্রসূত মিথ্যাচার করছেন। যারা আওরঙ্গজেবের নিন্দা করেন, তাদের অনেকেরই ইতিহাসের নিয়মানুবর্তিতা সম্পর্কে কোনো প্রশিক্ষণ নেই, এমনকি প্রাক-আধুনিক ফারসি ইতিহাস কিভাবে পড়তে হয়, সে সম্পর্কে মৌলিক দক্ষতা পর্যন্ত নেই। লোকরঞ্জক পরিমণ্ডলে বন্যার মতো ছেয়ে যাওয়া আওরঙ্গজেব-সম্পর্কিত সাম্প্রদায়িক ভাষ্য নিয়ে সংশয়প্রবণ হতে হবে। এই জীবনী রচনা করা হয়েছে ঐতিহাসিক ব্যক্তি ও সম্রাট আওরঙ্গজেব আলমগির সম্পর্কে আমাদের মধ্যে বিরাজমান খুবই হালকা জ্ঞানের গভীরতা বাড়ানোর জন্য ।

কৃতজ্ঞতাস্বীকার

আমি এই সংক্ষিপ্ত বইয়ে অনেক ঋণের কৃতিজ্ঞতাস্বীকার করছি। অনেকেই তাদের অপ্রকাশিত গ্রন্থের তথ্য আমাকে জানিয়েছেন, ছবি দিয়ে সাহায্য করেছেন, এই বইয়ের প্রাথমিক পাণ্ডুলিপি পাঠ করেছেন। তাদেরকে উচ্ছ্বসিতভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর সব মতামত, যুক্তি ও ভ্রান্তি কেবল আমার একার।

ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণিত ব্যক্তি আওরঙ্গজেবকে নিয়ে লেখালেখি করা কোনো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নয়। এ ব্যাপারে আমি বিশেষ ঋণ স্বীকার করছি। আমি বইটি লিখব কিনা তা নিয়ে যখন দ্বিধায় ছিলাম, তখন যারা আমাকে উপদেশ দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আপনি জানেন, কে আপনি আর আমি খুবই কৃতজ্ঞ ।

আওরঙ্গজেবের জীবন ও শাসনকালের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ

১৬১৮ : জন্ম

১৬৩৩ : পাগলা হাতির মোকাবিলা

১৬৩৪ : প্রাপ্ত বয়স পূর্তি উদযাপন

১৬৩৭ : প্রথম বিয়ে

১৬৫৩-৫৪ : শিল্পী হিরাবাইয়ের সাথে রোমান্স

১৬৫৭ : প্রথম স্ত্রী দিলরাস বানু বেগমের ইন্তিকাল

১৬৫৭ : শাহজাহানের অসুস্থ হয়ে পড়া, উত্তরাধিকার লড়াই শুরু

১৬৫৭ : সম্রাট হিসেবে প্রথম অভিষেক অনুষ্ঠান

১৬৫৮ : সম্রাট হিসেবে দ্বিতীয় অভিষেক অনুষ্ঠান

১৬৫৯ : দারা শিকোহর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

১৬৬১ : মুরাদ বকসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

১৬৬৩ : রাজা রঘুনাথের মৃত্যু

১৬৬৬ : শাহজাহানের ইন্তিকাল

১৬৬৬ : মোগল দরবার থেকে শিবাজির পলায়ন

১৬৬৭ : ফতোয়া-ই-আলমগিরির রচনা শুরু

১৬৬৯ : সম্রাটের ঝরোকা দর্শন প্রথা বাতিল

১৬৬৯ : বেনারসের বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস

১৬৭৩-৭৪ : লাহোরে বাদশাহি মসজিদের নির্মাণকাজ সমাপ্ত

১৬৭৫ : তেজ বাহাদুরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

১৬৭৯-৮০ : রাঠোর-সিসোদিয়া বিদ্ৰোহ

১৬৭৯ : জিজিয়া কর পুনঃপ্রবর্তন

১৬৭৯ : মোগল অভিজাতদের মধ্যে হিন্দু প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি শুরু

১৬৮০ : শিবাজির মৃত্যু

১৬৮১ : যুবরাজ আকবরের বিদ্রোহ

১৬৮১ : আওরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য যাত্রা

১৬৮৫-৮৬ : বিজাপুর অবরোধ

১৬৮৭ : গোলকোন্ডার পতন

১৬৮৯ : শম্ভুজির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

১৯৯৮ : জিনজির (গিনগি) পতন

১৭০৪ : নির্বাসনে যুবরাজ আকবরের মৃত্যু

১৭০৪ : দাক্ষিণাত্যে জিজিয়া করে ছাড়

১৭০৫ : অমর সিংয়ের ফারসি রামায়ণ আওরঙ্গজেবকে উৎসর্গ

১৭০৭ : আওরঙ্গজেবের ইন্তিকাল

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *