নীললোহিতের চোখের সামনে – ১৫

১৫

রূপকথার বইয়ের ছবিতে ছাড়া ছেলেবেলায় আমি একজন মাত্র রাজকুমারী দেখেছিলাম। রাজকুমারী বলতে এখনো আমার চোখে সেই তারই মুখ ভেসে ওঠে।

শোভাবাজারে একটি বাড়িতে আমরা ছেলেবেলায় খেলতে যেতাম। বাড়ির ছাদে বাতাবী লেবু নিয়ে ফুটবল খেলা কিংবা গলিতে ক্যাম্বিস বল দিয়ে ক্রিকেট কিংবা দুপুরবেলা ক্যারাম খেলার স্তর পেরিয়ে তখন আমরা ক্লাব করতে শিখেছি। প্রত্যেক বিকেলবেলা ক্লাবের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা না-হলে এবং মাঝে-মাঝে ক্লাবের কার্য পরিচালনা সম্পর্কে মিটিং-এ না-বসতে পারলে তখন আর রাত্রে ঘুম আসতে চাইতনা। তখন আমরা ক্লাস সিক্স-সেভেনে পড়ি, টিফিনের পয়সা জমিয়ে ক্লাবের জন্য ব্যাডমিন্টনের জন্য নেট আর চারখানা র‍্যাকেট কিনে ফেলেছি, ছোটকাকা যেদিন আমাদের ক্লাবকে একটা তিননম্বরের নতুন ফুটবল কিনে দিলেন সেদিন আর আমাদের আনন্দের শেষ নেই, ছোটকাকাকে বললাম, ‘বল যখন দিয়েছ, তখন একটা পাম্পারও কিনে দিতে হবে। নিজেদের পাম্পার না-থাকলে ফুটবল খেলায় কোন সুখই থাকেনা।’

কিন্তু মুশকিল হচ্ছে এই, আমাদের পাড়াতে যে একটিমাত্র মাঠ, সেটা ছিল দাদাদের বয়েসীদের ক্লাবের দখলে। আমরা দুপুরের দিকে একটু-আধটু সেখানে খেলার সুযোগ পেলেও বিকেলের দিকে দাদারা এসে পড়ত হৈ-হৈ করে। গাঁট্টা মেরে আমাদের বিদায় করে দিত।

সুতরাং আমরা ঘুরতে-ঘুরতে শোভাবাজারের সেই বাড়িটা বার করেছিলাম। রাজা অমুকচন্দ্র সিংহের বাড়ি—সেকালের বিরাট প্রাসাদ, দরজার সামনে একজন অশ্বারোহীর পাথরের মূর্তি, দরজা পেরিয়ে প্রশস্ত ঢাকাবারান্দায় কীরকম যেন সোঁদা-সোঁদা গন্ধ, মাথার ওপর অগুন্তি ত্রিশিরা কাচ বসানো ঝাড়লণ্ঠন, একপাশে শ্বেতপাথরের ঠাকুর দালানে অস্পষ্ট অসংখ্য তেলরঙের ছবি, লোকে বলত সেটা সেজো রাজার বাড়ি। বড় রাজা কিংবা মেজো রাজার বাড়িতে কখনো আমার ঢোকার সৌভাগ্য হয়নি, কিন্তু সেই তেরো বছর বয়েসে—ঐ সেজো রাজার বাড়িই আমার চোখে অফুরন্ত বিস্ময়ের ভাণ্ডার, যত রাজ্যের রূপকথা আর ইতিহাসের কাহিনীর সব রাজবাড়ি আমি ঐ বাড়িটির মধ্যে প্রত্যক্ষ করতাম, প্রত্যেক দিনই সেই বাড়িতে ঢুকতে আমার গা ছমছম করত।

সেই বাড়ির মধ্যে বিশাল উঠোন, একটা প্রমাণ সাইজের ফুটবল গ্রাউন্ডের প্রায়-সমান, সবুজ তকতকে ঘাসে ঢাকা। আমাদের দলের অবনী ছিল খুব তুখোড় ছেলে, সে নাকি স্বয়ং সেজো রাজার পিসতুতো শালার কাছ থেকে আমাদের খেলার অনুমতি নিয়ে এসেছিল। সেইসব দিনে আমরা কারুর স্ত্রীর ভাইকেও শালা বলে উচ্চারণ করতাম না, ঐ কথাটা ছিল খারাপ কথা, আমার মেজোমামা সম্পর্কে একজন পাড়ার লোক একদিন আমার মুখের ওপর ‘তোর বাবার শালা’ বলায় আমি একেবারে কুঁকড়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক, সেই রাজবাড়িতে লোকজন ছিল খুবই কম, অবনীর কথা শুনে আমরা ভেতরে ঢুকেছিলাম, কেউ কোন আপত্তি করেনি। মাঝে-মাঝে শুধু একজন বাবরি চুলওয়ালা বুড়ো এসে আমাদের খেলা দেখত, আর আমাদের কারুকে ডেকে বলত, ‘খোকা, বেশ তো তোমার মুখখানা, বেশ তো ছুটতে পার তুমি, যাও তো ছুটে মোড়ের পানের দোকানে বলে এসো তো একডজন সোডা দিয়ে যেতে!’ তিনিই ছিলেন পিসতুতো শালাবাবু। আমার বাবাকে দেখেছি মাঝে-মাঝে হজমের গণ্ডগোল হলে একটা সোডা আনিয়ে খেতেন। ভাবতাম, ওরা তো রাজবাড়ির লোক—ওদের বোধহয় হজমের গণ্ডগোল সারতে একডজন সোডা লাগে।

সেই বাড়িতেই আমি আমার জীবনের প্রথম রাজকুমারীকে দেখি। উঠোনের দক্ষিণ দিকে একটা কারুকার্য-করা ঝুলবারান্দা ছিল—সেইখানে’ তিনি মাঝে-মাঝে পড়ন্ত বিকেলবেলা এসে দাঁড়াতেন। আরও অন্যদিকেও বারান্দা ছিল, কিন্তু তিনি শুধু ঐখানেই দাঁড়াতেন, ঐ দক্ষিণদিকে—যেখানে শেষসূর্যের বাঁকা রশ্মি পড়ে। রূপকথায় পড়েছিলাম—সেই এক মায়া রাজপুরী আছে—যার সব ঘরে যাওয়া যায়, কিন্তু দক্ষিণদিকে যাওয়া নিষেধ। আমি ঐ রাজকুমারীকে শুধু সেই দক্ষিণদিকেই দাঁড়ানো দেখে এক অদ্ভুত ভয়-মেশানো রোমাঞ্চ অনুভব করতাম। পুরোনো শঙ্খের মতন গায়ের রং, একমাথা কোঁকড়া চুল, তাঁর বয়েস তখন সতেরো-আঠেরোর বেশি নয়, পৃথিবীর সব রূপকথার নায়িকার মুখে আমি ঐ রাজকুমারীর মুখ বসিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি শুধু বারান্দায় কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে চলে যেতেন।

প্রথমদিন তাকে দেখে আমি অবশ্য ভয়ই পেয়েছিলাম। খুব বেশি সুন্দর জিনিশ দেখলে প্রথমটায় আমার বরাবরই ভয় করে। তাছাড়া অন্য ভয়ও ছিল। আমি অবনীকে ফিসফিস করে বলেছিলাম, ‘অবনী, আমরা খেলছি বলে কিছু বলবে না তো?’

অবনী বলত, ‘ভ্যাট। ও তো নন্দিনী, ও আবার কী বলবে রে?’

-যদি ওর বাবাকে বলে দেন?

-ওর বাবা তো মরে ভূত হয়ে গেছে! ও তো সেজোবাবুর ভাইয়ের মেয়ে!

আর সেজোবাবু, তিনি কত রাত্তিরে ফেরেন তার ঠিক আছে! যা-যা অবনীটা যেন কী, কথায় কোন রসকষ নেই। রাজা না-বলে বলত বাবু।

অবনীর ভাবভঙ্গি যেন সবজান্তার মতো। অবনী যখন এসব কথা বলত তখন ওর গলার আওয়াজ ঠিক ওর বাবার মতন শোনাত। অবনীই একদিন বলেছিল ওসব রাজা-ফাজা আজকাল আর চলে না, ধারের চোটে তো সব বন্ধক পড়ে আছে।

যাই হোক, রাজার মেয়ে না হোক তবু তো রাজবাড়ির মেয়ে, আমার চোখে তবু তো রাজবাড়ির মেয়ে, আমার চোখে তবু নন্দিনী ছিলেন রাজকুমারী। অমন রূপসী আমি আর কখনো দেখিনি, রাজকুমারী ছাড়া ওরকম রূপ হয়না। দক্ষিণের কারুকার্য-করা বারান্দায় ওঁকে দেখলেই আমি পলকহীনভাবে তাকিয়ে থাকতাম খেলাটেলা ভুলে। ওঁর রূপের মধ্যে একটা অপরূপ গাম্ভীর্য ছিল। আমাদের ক্লাবের সবাই যে তখন কচিছেলে তাও নয়, দু-একজনের বেশ গোঁপ উঠেছে, এবং আমি চিরকালই একটা ভীতু-ভীতু হলেও আমাদের অনেকেই তখন রাস্তায় স্কুলের মেয়েদের দেখে সিটি মারতে শিখেছে। তবে নন্দিনীর দিকে সেরকম করার সাহস আর কারুর ছিলনা। একমাত্র আমারই সাহস ছিল নন্দিনীর দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে থাকার।

নন্দিনীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগও আমিই পেয়েছিলাম। সেদিন দুরন্ত হাওয়ায় আমাদের ব্যাডমিন্টন খেলা একবারে পণ্ড, পালকের বলটি এদিক-ওদিক . উড়ে যাচ্ছে— আমরা হাসাহাসি করছি। এমন সময় দক্ষিণের বারান্দা থেকে একটা ব্লাউজ উড়ে এসে মাঠে পড়ল। নন্দিনী এসে বারান্দায় দাঁড়ালেন, রাজকুমারী তো, তাই আমাদের বললেননা সেটা দিয়ে আসতে, শুধু কণ্ঠস্বর একটু উচ্চে তুলে ডাকলেন, শ্রীমন্ত! বুঝলাম চাকরকে ডাকছেন। অবনী আমায় বলল, ‘এই নীলু, যা না, জামাটা দিয়ে আয়-না! ঐ যে পাশ দিয়ে সিঁড়ি।’

কী বোকা অবনীটা, অমন সুযোগ পেয়েও নিজে না নিয়ে আমাকে দিয়ে দিল। আমি তৎক্ষণাৎ জামাটা তুলে সিঁড়ির দিকে ছুটলাম।

সিঁড়িটা অন্ধকার, দেয়ালের গায়ে হাত দিলে ঠাণ্ডা লাগে। উঠোনের আলো থেকে হঠাৎ সেই অন্ধকার সিঁড়িতে আসায় আমার যেন চোখ ধাঁধিয়ে গেল, আমার চারপাশে শুধু অন্ধকার। তখন আমি ভাবলাম, আমায় তো কেউ দেখতে পাচ্ছে না। সেইজন্য খুব সাবধানে গোপনে আমি ব্লাউজটা নাকের কাছে এনে গন্ধ নিয়েছিলাম—রাজকুমারীর শরীরের ঘ্রাণ। জানিনা, সেই ব্লাউজে শুধু সাবানের গন্ধ ছাড়া আর-কিছু গন্ধ ছিল কি না। কিন্তু আমি স্পষ্ট রাজকুমারীর ঘ্রাণই পেয়েছিলাম, সে ঘ্রাণ আজও নাকে লেগে আছে।

সিঁড়ি দিয়ে ওঠার মুখেই নন্দিনী দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি হাত বাড়িয়ে জামাটা দিলাম। তিনি সেটা নেবার পর তবুও আমি দাঁড়িয়ে রইলাম বোকার মতন। ভেতরের ঘরে একটি পুরুষ কণ্ঠ কাকে যেন ধমকাচ্ছে, একটি নারীকণ্ঠ কাঁদছে। আমি তবু দাঁড়িয়ে রইলাম। নন্দিনী এবার আমার দিকে অল্প হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে।’

ঐ তো একটিবার আমার দিকে চেয়ে হেসেছিলেন, ঐ তো একটিমাত্র কথা বলেছিলেন—সেজন্য নন্দিনীর আমাকে মনে থাকবে কেন? কিন্তু আমার মনে আছে, আমার মনে আছে নন্দিনীর মুখ, তাঁর কণ্ঠস্বর। তাই অতবছর পরও আমি একপলক দেখেই একটা কথা শুনেই চিনতে পেরেছিলাম। চিনতে পেরে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম।

পনেরো-কুড়িবছর কেটে গেছে, আমাদের সেসব ছেলেবেলার জীবন কোথায় হারিয়ে গেছে, পুরোনো পাড়া ছেড়ে চলে গেছি অনেকদিন। একবার যেন দেখেছিলাম সেই রাজবাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে, কোন এক মারোয়াড়ি সেটা কিনে নিয়ে হলদে-সবুজ ক্যাটকেটে রং লাগিয়েছে, সিংহদ্বারে লাগিয়েছে কোলাপসিবল গেট কিন্তু এখন ওসব নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় কোথায়? এখন পৃথিবীর রড়—বড় সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি তাহলেও অতদিন পর নন্দিনীকে ঐ অবস্থায় দেখে আঁৎকে না-উঠে পারলামনা।

নীলরতন হাসপাতালের সামনে নন্দিনীকে দেখলাম একটা রিক্সাওয়ালার সঙ্গে ঝগড়া করতে। রিক্সাওয়ালা চেঁচাচ্ছে—না মাইজী ষাট নয়া বোলা হ্যায়—। নন্দিনী তাকে ধমকে বলছেন, নেই আট আনা দিয়া। আমি একমুহূর্তেই চিনতে পারলাম। নন্দিনীর পরনে একখানা সাধারণ শাড়ি সন্ধেবেলায় পড়ন্ত রোদ্দুরের রেখায় ওঁকে যেমন দেখেছি—তার তুলনায় এখন দুপুরের কটকটে রোদ্দুরে ওঁর মুখ অনেক সাধারণ, কিছুটা ম্লান ও কর্কশ, নাকের ওপর সামান্য মেছেতা হয়েছে, তবু সেই রাজকুমারী, সেই নন্দিনী, কোন ভুল নেই। আমার খুব মন খারাপ লাগল।

পরক্ষণেই ভাবলাম খারাপ কী আছে, রাজকুমারী পথে নেমে এসেছেন আর—পাঁচজনের মতন। আর-পাঁচজনের মতনই তাঁকে দুপুরের রোদ্দুর সইতে হচ্ছে —এই তো স্বাভাবিক। কিন্তু নন্দিনীদের বাড়িতে জুড়িগাড়ি-ছিল, এখন তাঁকে রিক্সা চড়তে দেখে দুঃখ পাইনি, দুঃখ পেয়েছি সামান্য দশনয়া পয়সা নিয়ে দরাদরি করতে দেখে। মোহর ছুঁড়ে দেবার কথা ছিল ওঁর তার বদলে—নন্দিনী তখনও নাছোড়, তিনি রিক্সাওয়ালাকে ভাঙা হিন্দিতে বলছেন এই তো থোড়া দূর এর জন্য ষাট নয়া? না, আট আনাসে যাস্তি নেই দেগা। রিক্সাওয়ালা ক্রমশ গলা চড়াচ্ছে—তাতে বোঝা যায়, ঝগড়া অনেকক্ষণ চলছে—।

আমার মনের মধ্যে একমাত্র একজন রাজকুমারীর মুখ ছিল, তাকেও এরকম ভেঙে দেওয়া তোমার উচিত না নন্দিনী। আমি এখন আর রূপকথার জগতে নেই, তবু হৃদয় থেকে সব রাজকুমারীদের নির্বাসনও তো দিতে পারি না। নন্দিনী, এরচেয়ে ছেলেবেলায় তোমাকে না-দেখলেই ভালো হতো। তাহলে অদেখা রাজকুমারীরা কোনদিন রিক্সাওয়ালার সঙ্গে আমার সামনে দরাদরি করতনা।

এইসময় একটা ছোট ঘটনা ঘটল। ট্রামকে পাশ কাটাতে গিয়ে একটা বিশাল মোটর গাড়ি রাস্তার ধার ঘেষে এসে সেই দাঁড়ানো রিক্সাটাকে আস্তে ছুঁয়ে গেল। রিক্সাটা সঙ্গে-সঙ্গে এসে পড়ল নন্দিনীর গায়। আমি সাহায্যের জন্য এগিয়ে গেলাম। তার আগেই মোটরগাড়িটা থেমেছে, টুপি মাথায় একজন মারোয়াড়ি নেমে এসে রিক্সাওয়ালার দিকে ভ্রূক্ষেপ না-করে নন্দিনীর দিকে সোনা বাঁধানো দাঁতে হেসে বলল, ‘এক্সকুজ মি, আই আম স্যারি, মাফ কিজিয়ে আই আম ওফুলি স্যারি, আপকো চোঠ লাগা?’

নন্দিনী অন্যদিকে তাকিয়ে বলল, ‘না।’ মারোয়াড়িটি তবুও বিগলিত হেসে বলল, ‘আপনাকে বাড়ি পৌঁছায়ে দিস্যি চলেন না? এসব রিক্সাওয়ালারা হয়েছে এমন হারামি—।’ নন্দিনী আবার বলল, ‘না, থাক্ দরকার নেই, আমি এখানেই এসেছি।’ লোকটি তবু বললে, ‘হামি গিল্টি ফিল করসি। আপনি কাজ সারিয়ে লিন, হামি আপনাকে বাড়িমে পৌঁসায়ে।’

হঠাৎ নন্দিনী সোজা হয়ে উঠল, তীব্র গলায় বলল, ‘আপনি অত কাছে এসে কথা বলছেন কেন? সরে যান। ঐ রিক্সাওয়ালার সঙ্গে কথা বলুন আপনি।’ মারোয়াড়িটি সঙ্গে-সঙ্গে নুনের ছিটে-লাগা কেঁচোর মতন গুটিয়ে গেল। সেই মুহূর্তে, ক্ষীণ হলেও, আমি আর-একবার নন্দিনীর মুখে রাজকুমারীর মহিমান্বিত রূপের ঝিলিক দেখতে পেলাম।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *