নিতু বলছি – ৯

তুমি কি সত্যিই এখনো আমাকে চাও, না-কি আমার দেহ?

তুমি কি এই প্রশ্নের জন্যই আমাকে এখানে ডেকে এনেছ? না-কি অন্যকিছু! মনে রাখবে, আমিও কিন্তু থানায় জানিয়ে এসেছি।

পুলিশের ভয় আমাকে দেখিও না। সেই এভিডেন্স আমারও আছে। ভুলে যাও-নি নিশ্চয়ই

পুরনো ময়লা ঘাঁটতে আমি এখানে আসিনি। নতুন কিছু বলার থাকলে বল। কিংবা যদি করার সাহস থাকে, তবে…

এখনও সখ মেটেনি তাহলে দেখা যাচ্ছে!

তোমারও তো গরম কমেনি মোটেও? নিজেকে কী ভাব! ক্লিওপেট্রা? হেলেন অব ট্রয়? তোমার মতো অনেক সুন্দরীই দেখেছি জীবনে। আমার পেছনে এখনও অমন ডজন-খানেক ঘুর ঘুর করে।

মে আই নো, সেইসব ফ্রি ক্লিওপেট্রা-হেলেনদের ছেড়ে, আমার জীবনটা ধ্বংস করতে এসেছিলে কেন?

সেইম মিসটেক ইগেইন। উয়ি ডিড, উয়ি এনজয়। শুধু আমি একা নই, তুমিও চেয়েছিলে। আমরা করেছি। আমরা চেয়েছি।

মিথ্যে। সব মিথ্যে। প্রথমে ফেইসবুকে পরিচয়। এরপর মত বিনিময়। ভালো লাগানো। ছবির পর ছবি, স্ট্যাটাসের পর স্ট্যাটাসে কমেন্ট-লাইক দেয়া। হাজার হাজার মেসেজ রিকোয়েস্ট। দেখা করতে চাওয়া। কাছে টানা। রেস্টুরেন্ট-এর পর রেস্টুরেন্টে ঘোরা। এরপর একদিন ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করা! মনে পড়ে, দীর্ঘদিন কী-সব অভিনয় করেছিলে আমার সাথে? আর আমিও গাধার মতো তোমার প্রতিটি কথাকে, সত্য বলে বিশ্বাস করেছিলাম!

তুমি সত্য ধরতে পারোনি। সব ছেলেরাই মেয়েদের ব্যাপারে ইন্টারেস্ট শো করবে। ইট্ ইজ ভেরি লজিক্যাল। মে-ই-বি, ইস ইয়োর ডিফল্ট। তোমার ভুল চিন্তা।

নো, নট মাইন। তুমি সেদিন জোর করেছিলে। বিয়ের মিথ্যে খেলা খেলেছিলে। স্ট্যাম্প, দলিল, ফালতুসব ডকুমেন্ট। কারণ তুমি জান ওইসব দলিলে সই করাকে আইনগতভাবে বিয়ে বলে না। আফসোস, আমি জানতাম না। আমি ভাবতাম এসবই বোধহয় এক ধরনের এগ্রিমেন্ট। পাঁচ বছর পর বিয়ের অঙ্গীকারনামা। সেদিন অনেক কাকুতি-মিনতি করেছিলাম। অনেক কেঁদেছিলাম। বলেছিলাম, বিয়ের পর যা-ইচ্ছে সব হবে। তুমি শোননি। তারপরও যখন শরীর পাওনি, তখন জোর করেছ। আমি পালিয়ে যেতে চাইলে, লোকলজ্জার ভয় দেখিয়েছ। এমনকি আমাদের নোংরা ছবিও ছাড়তে চেয়েছ নেটে।

শোন নিতু, তোমার এইসব বাংলা ছায়াছবি মার্কা ডায়ালগ শোনার জন্য আমি এখানে আসিনি। যদি পার, তোমাদের এই অধ্যক্ষ না ধর্ষক্ষ্য, তাকে ডেকে এইসব বস্তাপচা লেকচার শোনাও।

চুপ্! ওনার সম্পর্কে একটা বাজে কথাও বলবে-না। তোমার মুখে ওনার নাম আনার আগে, মুখ এসিড দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

বাপরে, জায়গামতো তীর লেগেছে দেখছি।

অফকোর্স। হি ডিজার্ভস্ দ্যাট। শোনো আসিফ, তোমার প্রতিশোধ আমার সাথে। স্যারের সাথে নয়।

এ কারণেই তো তীর সঠিক জায়গায় ছোঁড়া! অ্যানিওয়ে, আমি উঠলাম। ইউ টু লিভ ইন ইয়োর ফুল্‌স হেভেন উইথ ওল্ড ফুল্‌স।

থাম, থাম, দাঁড়িয়ে পড়লে কেন? বস। দেখবে-না, যা দেখতে এতদূর এসেছ? আজ তো আমি প্রস্তুত। কমপ্লিট্‌লি রেডি। বিশ্বাস না হয়, আমার শার্টটা খুলেই দেখ। ঠিক আছে, তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। আমিই না হয় একটা একটা করে বোতাম ছিঁড়ছি নিজের। এভাবেই তো সেদিন তোমার হাত দিয়ে ছিঁড়েছিলে আমার জামাটা, তাই না?

হোয়াট রাস্কেল! ইট্স আ ব্ল্যাকমেইলিং। রাফিয়া কোথায়? আমি কিন্তু ওকেও ছাড়ব না। ইট্স দেয়ার রেসিডেন্স।

উহ্, ডোন্ট শাউট আসিফ! সেদিন আমি চিৎকার করেছিলাম। আজ তুমি। রেজাল্ট কিন্তু একই, জিরো। নো হেলপিং। প্লিজ টার্ন ব্যাক। পিছু ফির। আই অ্যাম ফুলি টপ্‌লেস্ নাউ! তোমার ছেঁড়ার আগে, আমি নিজেই নিজের শার্টটা ছিঁড়ে ফেলেছি আজ। হোয়াই সো এক্সাইটেড! পিছু ফিরে দেখ। আমি, সেই আমি। যাকে তুমি বহু আগে চেয়েছ। বহু সাধনায়, বহু ফাঁদ পেতে। আই এম টিল সো হট নাউ

আমাকে বোকা ভেব-না নিতু। তোমাদের দু’জনের সব খেলা ফাঁস হয়ে যাবে। তোমরা ধরা খাবে। সিরিয়াস ধরা। এদেশে থাকতে পারবে-না। রাফিয়া ধনীর মেয়ে। হয়তো বিদেশ গিয়ে বেঁচে যাবে। কিন্তু তুমি লাইফ- টাইম পস্তাবে। রিমেমবার, ওয়ানস্ এগেইন

আমিও কিন্তু এতদিনে তোমার সাথে খেলে খেলে, একটু হলেও চালাক হয়েছি। দেখ-তো আমার খোলা বুকের নিচে এটা কী?

হোয়াট ননসেন্স! এটা কিসের সিডি?

ইয়েস্, নাউ কাম টু দ্যা পয়েন্ট। সওদা হোক সওদাগর। এই বাসায়, এই ঘরে, যতদিন, যেভাবে যেভাবে, তুমি অকাজ-কুকাজ করেছ, সবকিছু প্রচার করে দেয়া হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। মনে আছে তো, তোমার দেয়া সেই পুরনো অস্ত্রের খেলা, বুমেরাং। মনে রেখ, এ দফায় কিন্তু আমরা সতর্ক ছিলাম। ভিডিওতে কেবলমাত্র তোমার ছবি দেখা যাবে। মেয়ের ছবিটি বোঝা যাবে-না। আর যদিও-বা সামান্য টের পাওয়া যায়, তাহলে রাফিয়ার বাবা যে তোমাকে জ্যান্ত মানুষ রাখবেন না, বিষয়টি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ। কি, আরও সময় নেবে? না-কি আরও খেলা খেলবে নতুন করে? সখ মেটেনি! আর হ্যাঁ, প্রয়োজনে পুলিশ পর্যন্ত দৌড়ানো কিংবা তোমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দাঁড় করাতে, একমুহূর্ত সময়ক্ষেপণ করব-না আমি নাচতে যেহেতু নেমেছি, ঘোমটা তো দূরের কথা, পুরো পোশাক ছুঁড়ে দর্শক মাতাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা হবে-না আমার। নিজেকে নিঃশেষ করে হলেও, তোমার শেষটুকু দেখতে চাই আমি। ইউ নো, দিস ইজ আ কোয়েশ্চেন অ্যাবাউট মাই অনারেবল লর্ড, দি রেজা স্যার। কি, এগ্রি?

টি ইট্স আ ব্ল্যাকমেইলিং। আই ডু। আই এগ্রি। বল কী কী করতে হবে? ঝামেলা পোষানোর মতো মানুষ আসিফ নয়।

গুড, ভেরি গুড। লেট্স হ্যাভ সাম আন্ডারস্ট্যান্ডিং। মিউঁচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ড। গিভ অ্যান্ড টেক। তুমি তোমার সমস্ত ‘ফ্যালাসি প্ল্যান’ আজ থেকে তুলে নাও। তোমার যত চামচা, কেনা দাসী-রক্ষিতা আছে, তাদের সবাইকে একটা একটা করে অভিযোগ উঠিয়ে নিতে বল। নতুবা…

.

পুলিশ রেজা স্যারকে ছেড়ে দিয়েছে।

শুধু তাই নয়, স্কুলেও আবার যোগ দিয়েছেন তিনি। যথারীতি স্ব-পদে সসম্মানে। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি কেউ। আমাদের পুরো স্কুল জুড়ে আজ তাই ঈদের আনন্দ।

মজার ঘটনা হল, যে শাড়ি নিয়ে পুরো মিডিয়াজুড়ে এত তোলপাড়, মেডিকেল রিপোর্টে তা অপ্রাসঙ্গিক প্রমাণিত হয়েছে। সেই শাড়িতে বিন্দুমাত্র আঁচড় নেই রেজা স্যারের। আঁচলের এক অংশে যেটুকু ছেঁড়া, তা জোরপূর্বক নয়। বরং ইচ্ছেপূর্বক বল ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন। এমনকি একটি জাতীয় দেনিক এই নিয়ে বিশাল এক প্রতিবেদন তৈরি করেছে প্রথম পাতায়। যার শিরোনাম, ছেঁড়া শাড়ির ভাইস-প্রিন্সিপাল। সেখানে আবার শাড়ির একটা ছবিও ছেপেছে তারা। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দু’টো কিশোরী হাত, অত্যন্ত সুকৌশল ব্লেড দিয়ে কাঁটছে ব্লাউজের পেছনে জড়ানো অংশ। কোনো একটি অনুষ্ঠানের ভেতর। ছবিটি গোপন সূত্র হতে সংগৃহীত বলে, প্রতিবেদক এর সপক্ষে কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশে অপারগতা জানিয়েছেন।

পুরো বিষয়টিতে সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হল, আমাদের কালাপেত্নী নিজে! আমাদের স্কুলের ভাইস-প্রিন্সিপাল শবনাম মুশতারি ওরফে কালাপেত্নী মিস্ সম্পূর্ণ অভিযোগ স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে উঠিয়ে নিয়েছেন পুলিশের কাছ থেকে। এমনকি এটাও স্বীকার করেছেন যে, কে বা কারা যেন তাকে দিয়ে, জোর করে ওই অভিযোগ তৈরি করিয়েছিল। অন্যথায় তার জীবননাশের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল চক্রান্তকারীরা। তার কথা অনুযায়ী, একধরনের লোভ দেখানো হয়েছিল তাকে। বলা হয়েছিল যে, স্যারের অবর্তমানে তাকেই বানানো হবে পরবর্তী প্রিন্সিপাল।

পুলিশ কালাপেত্নীকে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল এবং মানহানির দায়ে গ্রেফতার করলেও, পরে আবার ছেড়ে দেয়। কারণ আমাদের মহামানব স্যার না-কি নিজে, উচ্চপদস্থ কাউকে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে, তার জামিন করান। এবং সকল অপরাধ থেকে মুক্তিদানের আবেদন করেন।

রাফিয়ার দেয়া সর্বশেষ চমক অনুযায়ী, কালাপেত্নী না-কি নিজেই একবার স্কুলে এসেছিলেন। সবার কাছে ক্ষমা চাইতে। এবং চাকরি থেকে রিজাইন দিতে। জনাব দেবতা অধ্যক্ষ তাকে শতসহস্র অনুরোধে রিজাইনের পরিবর্তে রি-জয়েনে বহাল রাখেন। এবং তার বিরুদ্ধে কাউকে কিছু না- বলার জোর সুপারিশ করেন।

.

এই পুরো নাটকটা অবশ্য বিন্দুমাত্র দেখা হয়নি আমার।

শুধু রাফিয়ার কাছ থেকে শোনা হয়েছে। তা-ও টেলিফোনে। গভীর রাতে। কারণ আমি গতকাল ও আজ, এই দুইদিন স্কুলে যাইনি।

বাবা আমার স্কুলগমনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

আর নয়! তিনি তার দায়িত্বের শেষ অংশ হিসেবে মেয়েকে বিয়ে দিতে চান।

সবচেয়ে বড় কথা হল, আমি নিজেও স্কুলে যেতে রাজি হইনি কারণ, পিতলা পিসু’র এইসব ন্যাকামি আর সবার কাছে দেবতামি সাজা, আমার দেখতে অসহ্য লাগবে। তাছাড়া আজ সন্ধ্যায় আমার একটা স্পেশাল প্রোগ্রাম আছে। স্পেশাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট। একটা মেয়ের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অ্যাপয়েন্টমেন্ট। আজ আমাকে দেখতে আসবে। হুঁ, ছেলে অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেন। আই.টি ইঞ্জিনিয়ার। পুরো ছয়ফুট এক। উজ্জ্বল গাত্রবর্ণ। সুতরাং তার জন্য সেজেগুজে নিজেকে পণ্য বানাব, না-তো-কি ওই বুড়ো পিসু’র ভামগিরি দেখতে যাব! তাছাড়া শরীর, মন কিংবা ছবিঘটিত সকল সমস্যাই আমার সমাধান হয়ে গেছে। আমি এখন বাধ্যানুগত পিতামাতার একজন সমস্যামুক্ত সন্তান।

রাফিয়া সম্ভবত ইউনেস্কো অ্যাওয়ার্ডের কথা মন থেকে ভুলে যেতে পারেনি। তাই সে ভুল করেই হোক কিংবা স্বেচ্ছায়, পিস’কে আমার বিয়ের সংবাদ জানিয়ে দিয়েছে। সম্ভবত বান্ধবীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করে, শারমিন আক্তারের মতো আমেরিকান ফার্স্ট-লেডির কাছ থেকে ইন্টারন্যাশনাল উমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড নেয়ার ইচ্ছে তারও আছে।

বিকেল থেকে আমার মোবাইলে কমপক্ষে গোটা বিশেক মিস্ড কল হয়ে আছে। প্রতিটি পিসু’র নাম্বার থেকে। একবার সুইড অফ করতে চাইলেও, সাইলেন্ট করে রেখেছি আমি। কারণ, মোবাইল বন্ধ পাওয়ার চেয়ে, কাউকে কল করে না-ধরার জন্য অপেক্ষা করানোটা, অধিক বেদনার। সুতরাং কাউকে অপেক্ষা করানোর কষ্টটা, অন্তত একটু হলেও এবার বুঝুক কেউ একজন।

ধৈর্যহীন হয়ে পিসু শেষমেষ সন্ধ্যানাগাদ বাবার মোবাইলে একবার কল করে। যথারীতি বিটিভি’র নাটকের স্টাইলে বাল্যবিবাহ রোধে বাবাকে উপদেশ দেয়। উপদেশ শব্দটা এজন্য ব্যবহার করলাম, কারণ আমি জানি, কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করার পাবলিক পিসু নয়। সম্ভবত কোনো এক বিশেষ সুযোগে আমাকেও ফোনে চেয়েছিল সে।

বাবা আমার কান পর্যন্ত মোবাইল এনে দিলেও, আমি ঠাণ্ডা মাথায় রিজেক্ট করি। সোজা ভাষায় বাবাকে উত্তর দেই, এখন কিভাবে কথা বলব! দেখছ না, ইঞ্জিনিয়ার সাহেব একা ঘরে বসে আছেন, আমার সাথে আলাদাভাবে কথা বলার জন্য। তুমি বরং স্যারকে বিষয়টা বুঝিয়ে বল যে, নিতু ব্যস্ত। ছেলের সাথে কথা বলছে।

.

সবচেয়ে অবাক কাণ্ড তখন ঘটল, যখন রাত দশটা নাগাদ পিসু নিজেই এল আমাদের বাসায়।

সরাসরি কথা বলতে চায় আমার সাথে। আমাকে বোঝাবে!

মা এসে অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে বলতে লাগলেন, তোদের প্রিন্সিপাল স্যার এসেছেন। ড্রয়িংরুমে বসে আছেন।

আমি তখনও সাজগোজ খুলিনি। চাইলেই একবার দেখিয়ে আসতে পারি পিসুকে। আমার এই পরীসদৃশ্য রূপ। কিন্তু কেন যেন যেতে ইচ্ছে করছে না আজ। আমি চিরাচরিত মিথ্যার আশ্রয় নিলাম।

প্লিজ মা, আমার মাথা, ব্যথায় ছিঁড়ে পড়ে যাচ্ছে! সারাদিন, এমনকি সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক কাজ করেছি। এখন অন্তত রেহাই দাও!

তোর সাথে কী না-কী ইমার্জেন্সি কথা বলতে চান। অন্তত একবারের জন্য হলেও দোয়া নিয়ে আয়। কথা বল।

দয়া করে তোমরা ওনার সাথে কথা বল। দোয়া নাও। পারলে ওনাকে দিয়ে ছোট-খাটো মিলাদ পড়াও।

দ্যাখ নিতু, উনি তোর সাথে কথা বলতে চাচ্ছেন। বিষয়টিতে তোর মত আছে, না-কি আমরা জোর করছি, জানতে চাচ্ছেন।

মা একটু শক্তভাবে বললেন কথাগুলো।

আমি আবারও ঠাণ্ডাভাবেই উত্তর দিলাম।

ওহ্ মা! আমাদের মহামানবকে বল, যা হচ্ছে তা সব আমার ইচ্ছেতেই হচ্ছে। নো জোর-জবরদস্তি।

এটা কোন্ ধরনের ভদ্রতা নিতু! অন্তত চা-নাস্তাটা-তো নিয়ে যাবি নিজ হাতে।

আমি হেসে ফেললাম।

ভালো কথা মনে করেছ মা। চা-নাস্তা! হ্যাঁ, যাবার আগে ওনাকে একগ্লাস কোক আর একটা কেক অবশ্যই খেতে দেবে কিন্তু 1

বলেই মা’র মুখের ওপর ঠাস্ করে দরজা লাগিয়ে দিলাম আমি।

মনে মনে বললাম, মনে আছে জনাব পিস স্যার। কোনো একদিন আমিও এরকম আপনার কাছে গিয়েছিলাম। আপনি শোনেননি। বলেছিলেন বেড়ালছানার ‘কিটেন কিটেন গেইম’। নাউ ইউ ডু আ ওল্ড ফ্যাট হুইসকার্স ‘ক্যাট্-র্যাট্’ গেইম। নট্ উইথ তেলাপোকা, বাট উইথ ইন্দুর। দি র‍্যাট। সাহস থাকলে কোক ঢেলে কার্পেট ভিজিয়ে চলে যেও।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *