৬
সময় বয়ে চলল।ফ্রান্সিস তাকিয়েই আছে। আস্তে আস্তে ভেতরের অন্ধকারটা চোখে সয়ে আসতে ফ্রান্সিস আবছা একটা সোনার রত্নখচিত হারের অংশ দেখতে পেল। চোখ সরিয়ে ফ্রান্সিস বলে উঠল-সাজ্জিও–আমার অনুমান নির্ভুল। আপনি তাকিয়ে দেখুন। সাজ্জিও চোখের মত ফোকরটায় চোখ রাখলেন। অন্ধকারটা সয়ে আসতে তিনিও সেই রত্নখচিত হারের একাংশ দেখতে পেলেন। চোখ সরিয়ে এনে সাজ্জিও বললেন ঠিক। রত্নখচিত সোনার হার। কিন্তু শুধু একটা হারই কি চার্লসের সব ধনসম্পদ।
–না–আরো আছে। এই কথা বলে ফ্রান্সিস দুটো চোখের ফোকরে আঙ্গুল ঢুকিয়ে একটু টান দিতেই একটা লম্বাটে কাঠের অংশ উঠে এলো। লম্বাটে ফোকর দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মনিমুক্তোখচিত সোনার অলঙ্কার সোনার চাকতি বেরিয়ে এসে গীর্জার মেঝেয় পড়তে লাগল। সাজ্জিও এই দেখে হতবাক হয়ে সেই অলঙ্কার সোনার চাকতির দিকে তাকিয়ে রইলেন। একটু পরে সম্বিত ফিরে পেয়ে ফ্রান্সিসকে বললেন–ফ্রন্সিস আপনার অসাধারণ অনুমানশক্তির কী বলে প্রশংসা করবো বুঝতে পারছি না।
–ওসবের প্রয়োজন নেই। আপনি এখন এখানে পাহারায় থাকুন। আমরা যাচ্ছি। গাইদাকে দিয়ে রাজা পিটারের কাছে চার্লসের গুপ্ত ধনভাণ্ডার উদ্ধারের কথা জানাচ্ছি। ফ্রান্সিস বলল।
ফ্রান্সিস আর হ্যারি আস্তে আস্তে গীর্জার দরজার দিকে চলল। ওরাতো এরকম ধনসম্পদ উদ্ধার আগেও করেছে। ওরা অভ্যস্ত। তাই সাজ্জিওর মতো ওরা আশ্চর্য হয়ে যায় নি।
চার্লসের প্রাসাদে এলো দু’জনে। গাইদার ঘরে ঢুকে দেখল গাইদা কী লিখছে। হ্যারি বলল–গাইদা এখন সব কাজ রেখে একটা অত্যন্ত দরকারি কথা শুনুন। চার্লসের ধনসম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে। কথাটা গাইদা হাঁ মুখ করে ফ্রান্সিসদের দিকে তাকিয়ে রইল। ফ্রান্সিস হেসে বলল কী? বিশ্বাস হচ্ছে না?
আঁ-না- না মানে–গাইদা আর কথা বলতে পারল না।
গীর্জায় যান। নিজের চোখেই সব দেখুন। তারপর রাজাপিটারকে সংবাদ পাঠান। এখন এটাই আপনার কাজ। হ্যারি বলল।
গাইদা আসন ছেড়ে লাফিয়ে উঠে ছুটল ঘরের বাইরে। তারপর গীর্জাটার দিকে।
গীর্জায় ঢুকে দেখল বেদীর কাছে সাজ্জিও বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছেন। তার সামনে মেঝেয় পড়ে আছে বহু মূল্যবান কিছু অলঙ্কার সোনার চাকতি স্বর্ণমুদ্রা গাইদা হাঁ করে সেদিকে তাকিয়ে রইল। সাজ্জিও এবার বললেন–আপনি যান। প্রথমে কয়েকজন পাহারাদার সৈন্যকে এখানে পাঠান। তারপর মহামান্য রাজা পিটারকে সংবাদ পাঠান যে চার্লসের ধনসম্পদ ফ্রান্সিস আবিষ্কার করেছেন। তিনি যেন যত শীঘ্র সম্ভব এখানে চলে আসেন।
তখন বিকেল। রাজা পিটার আর সেনাপতি মান্দো ঘোড়া ছুটিয়ে এসে হাজির হলেন। সাজ্জিও গীর্জার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রাজাপিটার আর মান্দো ঘোড়া থেকে নামলেন। সাজ্জিও তাঁদের গীর্জার মধ্যে নিয়ে এলেন। সাজ্জিওর নির্দেশে পাহারাদার সৈন্যরা বেদীর ফোকর থেকে সব হীরে মুক্তো বসানো বহু মূল্যবান গয়নাগাটি, সোনার মুদ্রা আর চাকতি বের করে বেদীর ওপর সাজিয়ে রেখেছিল।
রাজা পিটার বেদীর ওপর রাখা সব স্বর্ণসম্পদ অবাক চোখে দেখতে লাগলেন। তিনি স্বপ্নেও ভাবেন নি চার্লসের স্বর্ণসম্পদ উদ্ধার করা যাবে।
সাজ্জিও তখন মৃদুস্বরে রাজা পিটারকে বুঝিয়ে বললেন–কী করে যীশুর একটা উপদেশকে ভিত্তি করে ফ্রান্সিস গুপ্ত স্বর্ণসম্পদ উদ্ধার করেছে। রাজা পিটার সেনাপতি মান্দোকে বললেন–যান ফ্রান্সিসকে ডেকে আনুন।
একটু পরে হ্যারিকে সঙ্গে নিয়ে ফ্রান্সিস এলো। রাজা পিটার হেসে ফ্রান্সিসের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। ফ্রান্সিস হেসে রাজা পিটারের হাত ধরলেন। রাজাপিটার বললেন– তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। কী বলে আমি কৃতজ্ঞতা জানাবো ভেবে পাচ্ছি না।
–তার দরকার নেই মহামান্য রাজা–হ্যারি বলল–ফ্রান্সিস এর আগেও অনেক গুপ্ত ধনভাণ্ডার উদ্ধার করেছে।
–তোমরা চিন্তা করে পরিশ্রম করে এই স্বর্ণসম্পদ উদ্ধার করেছে। গুপ্ত ধনভাণ্ডারের কিছু অংশ তো তোমাদের প্রাপ্য হয়। রাজা পিটার বললেন।
একটি স্বর্ণমুদ্রাও আমরা নেব না। এই ধনসম্পদ আপনার দেশের মানুষের। ফ্রান্সিস বলল।
তবু বলো–তোমরা কী চাও? রাজা পিটার বললেন। আমি আমার বন্ধুদের মুক্তি চাই! ফ্রান্সিস বলল। রাজা হেসে বললেন তোমার অনুরোধের আগেই তোমার বন্ধুরা নিজেরাই দুর্গের দেয়াল ডিঙিয়ে পালিয়েছে।
–সে কি। কেউ মারা যায় নি তো? হ্যারি বলল। রাজা পিটার সেনাপতি মান্দোকে বললেন–আর সব খবর মান্দো বলবেন। মান্দো বলল–আপনার বন্ধুরা গভীর রাতে দুর্গ থেকে পালিয়েছে। এই সংবাদ আমরা ভোরবেলা পেয়েছিলাম। ধরেই নিয়েছিলাম সবাই নিশ্চয়ই আপনাদের জাহাজেই আশ্রয় নিয়েছে। আমরা সমুদ্রতীরে ছুটে গেলাম। কিন্তু কোথাও আপনাদের জাহাজের চিহ্নমাত্র নেই। আপনার বন্ধুরা আমাদের পাহারাদারদের সঙ্গে লড়াই করে নি। সবাইকে জল ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। কাজেই তাদের মারা যাওয়া বা আহত হওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
ফ্রান্সিস নিশ্চিন্ত হল যে শাঙ্কোরা পালিয়েছে। বুদ্ধিমানের মতো কোনো লড়াইয়ে নামে নি।
ফ্রান্সিস বলল–মাননীয় রাজা–আমরা ঠিক জানি আমাদের বন্ধুরা সমুদ্রের কাছাকাছি কোথাও আছে। ওরা অপেক্ষা করছে আমি চার্লসের স্বর্ণসম্পদ উদ্ধার করতে পেরেছে কিনা এটা জানতে।
হতে পারে। রাজা বললেন।
ফ্রান্সিস বলল–আপনাদের সম্পদ তো উদ্ধার হল। আমরা এবার সেন্ট অ্যাঞ্জেলো দুর্গের দিকে যাবো। সমুদ্রতীরে খোঁজাখুঁজি করতে হবে।
হ্যারি বলল–মাননীয় রাজা আমাদের জন্যে যদি একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন। তাহলে খুবই উপকার হয়।
রাজা পিটার সেনাপতি মান্দোকে বললেন গাড়ির কথা।
ফ্রান্সিস আর হ্যারি গীর্জার দরজার দিকে চলল। সাজ্জিও ওদের পেছনে পেছনে এলেন। দরজার বাইরে আস্তে এগিয়ে এসে ফ্রন্সিসের হাত দুটো ধরলেন। বললেন– এত মূল্যবান সম্পদ উদ্ধার করলেন অথচ সম্পদের কিছুই দাবি করলেন না–এতে আমি অবাক হয়ে গেছি। মানুষ যখন যেভাবে হোক ধনী হতে চায় আপনি তখন এত নির্লিপ্ত। এরকম মানুষ আমি দেখিনি। ফ্রান্সিস হেসে বলল–সাজ্জিও–আমি মুখখুসুখখু মানুষ। বাইবেল পড়ি নি। তবে কখনো-সখনো বাইবেল পড়া শুনেছি। প্রভু যীশুর
একটা উপদেশ আমার খুব ভালো লাগে।
–কোনো উপদেশটা? সাজ্জিও বললেন।
সেই উপদেশটা–সূচের ফুটো দিয়ে বরং উট চলে যাবে তবু ধনীরা স্বর্গে ঈশ্বরের রাজ্যে যেতে পারবে না।
–সাবাস ফ্রান্সিস সাজ্জিও বলে উঠলেন–আপনি যীশুর উপদেশ নিজের জীবনেও মেনেছেন ঠিক চার্লসের মতো।
–ঠিক। তাই আমার বরাবর মনে হয়েছে–চার্লসের স্বর্ণসম্পদ রয়েছে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত এই গীর্জার কোথাও। ফ্রান্সিস বলল। তারপর সাজ্জিওর হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিল।
বেশ জমকালো একটা দু-ঘোড়ায় টানা গাড়ি এসে দাঁড়াল। বোঝাই যাচ্ছে– রাজপরিবারের গাড়ি।
গাড়িতে চড়ে ফ্রান্সিস আর হ্যারি অ্যাঞ্জেলো দুর্গে যখন এসে পৌঁছল তখন বেশ রাত।
ওরা সেই রাতটা দুর্গেই কাটাল। দুর্গাধ্যক্ষ ওদের খুব আদর যত্ন করল। ততক্ষণে সারা মাল্টাই জেনে গেছে চার্লসের স্বর্ণসম্পদ উদ্ধারের কাহিনী আর ফ্রান্সিসের কথা।
পরদিন। নিজেদের ঘরেই তখন ফ্রান্সিস আর হ্যারি সকালের খাবার খাচ্ছে। গোল রুটি আর সজির ঝোল। তখনই একজন খ্রীস্টান সাধু দোরগোড়ায় এসে দাঁড়াল। মুখে দাড়ি গোঁফ। সাধু বলল, আর্ত ক্ষুধার্ত। হ্যারি বলল”নিশ্চয়ই আসুন। যারা খাবার দিয়েছিল সেই সৈন্যদের হ্যারি আরো খাবার দিতে বলল।
তিনজনেই খেতে লাগল।
খাওয়া শেষ হলে ফ্রান্সিস ঘাসের বিছানায় শুয়ে পড়ল। বলল–হ্যারি এখন আমাদের জাহাজের খোঁজ পাবো কী করে।
–চলো–সমুদ্রতীরে যাই। খোঁজখবর করি। হ্যারি বলল।
–তাই চলো৷ ফ্রান্সিস উঠে বসে বলল। সাধুটি তখনও বসে আছে। ফ্রন্সিস বলল– তা সাধুবাবা আপনার খাওয়া তো হয়েছে। এবার কী করবেন?
–আপনাদের নিয়ে যাবো। সাধু গম্ভীর মুখে বলল।
–কোথায়? হ্যারি বলল।
–আপনাদের জাহাজে। সাধু বলল একই ভঙ্গীতে।
–এ্যা? হ্যারি তো চমকে উঠল। ফ্রান্সিসও। সাধুবাবা বলছে কি।
–আপনি কী করে আমাদের জাহাজের কথা জানলেন। হ্যারি জিজ্ঞেস করল।
–সেটা পরে জানবেন–সাধু বলল–যদি নিজেদের জাহাজে যেতে চান তাহলে এক্ষুণি আমার সঙ্গে চলুন।
–বেশ চলুন। ফ্রান্সিস উঠে দাঁড়াল। হ্যারিও তৈরি। –ঠিক তখনই দুর্গাধ্যক্ষ ঘরে ঢুকল। হেসে বলল
–আপনাদের ঘুমুতে কোনো অসুবিধা হয় নি তো?
–না না। ফ্রান্সিস বলল।
সকালের খাবার খেয়েছেন তো? দুর্গাধ্যক্ষ বলল।
–হ্যাঁ। হ্যারি বলল।
–হ্যাঁ একটু বেড়াবোটেরাবো। ফ্রান্সিস বলল।
–এখন বাইরে যাবেন? দুর্গাধ্যক্ষ বলল।
সঙ্গে লোক দেব? দুর্গাধ্যক্ষ বলল।
-না-না। ফ্রান্সিস বলল। তারপর হ্যারি বলল চলো। এবার সাধুকে দেখিয়ে হ্যারি দুর্গাধ্যক্ষকে জিজ্ঞেস করল
ইনি কে?
–তা তো জানি না। উনি গত কয়েকদিন ধরেই এখানে সকালে সন্ধেয় আসছেন। খেয়েটেয়ে চলে যান। দুর্গাধ্যক্ষ বলল।
ফ্রান্সিস হ্যারি আর কোনো কথা বলল না। দুর্গের বাইরে চলে এলো। পেছনে সেই সাধু। সাধুকে হ্যারি জিজ্ঞেস করল এবার কোন্ দিকে যাবো? সাধু হঠাৎ হো-হো করে হেসে উঠল। আরে? এতো বিস্কোর গলা। বিস্কো নিজেই আবার গোঁফ দাড়ি-টান দিয়ে খুলে ফেলল। ফ্রান্সিসকে হ্যারিকে জড়িয়ে ধরল। ফ্রান্সিস হাসতে হাসতে বলল–এই সাধুর বেশ নিয়েছিলে কেন? বিস্কো বলল–প্রতিদিন দুবেলা দুর্গে আসতাম তোমাদের খোঁজ নিতে। খোঁজ মানে তোমাদের কথা কাউকে জিজ্ঞেস করতাম না। শুধু দুর্গের ভিতের ঘুরে ঘুরে বেড়াতাম। সাধুর বেশে। কাজেই কেউ কিছু বলতো না।
–আর আমাদের ভয় নেই। ফ্রান্সিস চার্লসের স্বর্ণসম্পদ উদ্ধার করেছে। হ্যারি বলল।
–তাই দুর্গাধ্যক্ষের এত আদর আপ্যায়নের ঘটা। বিস্কো বলল।
–কেন? তোমরা এই খবর পাও নি? ফ্রান্সিস বলল।
না তো এই বেশ ধরে আসতাম। বিস্কো বলল।
এবার বিস্কো ফ্রান্সিস আর হ্যারিকে নিয়ে একটা বনভূমিতে ঢুকল। বেশ ঘন বন। গাছগাছালির জটলা। তারই মধ্যে দিয়ে ওরা চলল।
বনের শেষে দেখল সমুদ্রের খাড়ি। ওদের জাহাজে সেই খাঁড়িতে ভাসছে। তির থেকেই বিস্কো চিৎকার করতে লাগল–ভাইসব–ফ্রান্সিস, হ্যারি ফিরে এসেছে। ফ্রান্সিস চার্লসের গুপ্ত স্বর্ণভাণ্ডার উদ্ধার করেছে। রাজা পিটার আর আমাদের কোনো ক্ষতি করবে না।
বিস্কোর চিৎকার করে কথা বলা জাহাজের বন্ধুরা শুনল। সবাই এসে ভিড় করে দাঁড়াল রেলিঙ ধরে। তার মধ্যে মারিয়াও আছে।
জাহাজ থেকে একটা নৌকা জলে ভাসানো হল। দাঁড় বাইতে বাইতে নৌকা পারের কাছে নিয়ে এলো শাঙ্কো। ফ্রান্সিসরা নৌকায় উঠল। নৌকো গিয়ে জাহাজে লাগল। দড়ির মই ফেলা হল। ফ্রান্সিসরা মই বেয়ে ডেক-এ উঠে এলো। জাহাজে ফ্রান্সিসকে নিয়ে হৈ হৈ পড়ে গেল। ধ্বনি উঠল—ও হো হো–।
মারিয়া হাসতে হাসতে এগিয়ে এলো ফ্রান্সিসের দিকে। ফ্রান্সিস লক্ষ্য করল মারিয়ার চোখ মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে। ফ্রান্সিস বলল–মারিয়া তোমার শরীর ভালো আছে তো?
বেশ ভালো। আমার জন্যে ভেবো না মারিয়া হেসে বলল।
না–মারিয়া–তোমারশরীর ভালো নেই। তুমি যদি বলো তাহলে আর কোথাও আমরা নামবো না। জাহাজ চালিয়ে সোজা দেশে ফিরে যাবো। ফ্রান্সিস বলল।
–ওসব পরে ভেবো। এখন খাবে চলো। মারিয়া বলল।
রাজকুমারী–আমরা আনজুতে রাজার হালে ছিলাম। আমাদের কোনো কষ্ট হয় নি। হ্যারি হেসে বলল।
ফ্রান্সিস বলল–মারিয়া এবারও আমার হাত খালি। মূল্যবান কিছুই আনতে পারিনি।
–তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। মারিয়া বলল। জাহাজে আবার ধ্বনি উঠল—ও হো হো।