আম্রপালী – ৪

০৪.

আট দিনের মাথায় এল চিঠিখানা। কলেজ থেকে ফেরার পথে লেটারবক্সে নজরে পড়ল খামটা। ওঁর নিজের হস্তাক্ষরে লেখা সলিল মিত্রের নামাঙ্কিত লেফাফা। সেটা বার করতে করতে পিছন থেকে রামু জানালো, মামাবাবু এসেছেন। যাদুকর যেভাবে হাতসাফাই করে তেমনি দ্রুতগতিতে চিঠিখানা উনি লুকিয়ে ফেললেন পাঞ্জাবির পাশ-পকেটে। জানতে চাইলেন, মামাবাবু কোথায়? প্রত্যাশিত জবাবই পেলেন : মাজির কামরায়।

জগদীশ প্রণতির চেয়ে বছরতিনেকের ছোট। সপ্তাহে অন্তত একবার অফিসফের্তা গল্পগাছা করে যায়। এখানেই চা-খাবার খেয়ে সন্ধ্যা ঘনালে বাড়ি ফেরে। তখন বাসের ভিড়ও কমে যায়। মাঝে মাঝে ছুটির দিনে অসীমা আর তোতনকে নিয়ে আসে। সেদিন দুপুরে এখানেই আহারাদি করে। সেই দিনগুলি প্রণতির ভারি আনন্দের। স্তব্ধ বাড়িটা একদিনের জন্য মুখর হয়ে ওঠে। আগে সেসব দিনে চাঁদুর মায়ের মুখখানা ঘঁড়িপানা হত। এখন হয় না। প্রণতি কায়দাটা শিখে ফেলেছে। বলে, চাঁদুর জন্য একটা মাছ, আর একবাটি পায়েস নিয়ে যেও চাঁদুর্মা।

তালুকদার এ ঘরে এসে দেখলেন রামু মামাবাবুকে চা-জলখাবার দিয়ে ইতিপূর্বেই যথারীতি আপ্যায়ন করেছে।

জগদীশ চায়ের কাপটা নামিয়ে একটা সিগারেট ধরাতে ব্যস্ত।

তালুকদার বললেন, ধূমপানের বিরুদ্ধে এত এত প্রচার, তবুও ঐ বদভ্যাসটা কেন ছাড়তে পার না–বল তো জগু?

একমুখ ধোঁয়া ছেড়ে জগদীশ বললেন, এন-এথবার কথাটা বললে জামাইবাবু, ‘হোয়্যার এন টেন্ডস্ টু ইনফিনিটি’! এ মাইনাস-ওয়ানেথবার তোমাকে বলেছি যে, তোমার এ উপদেশ পৌনঃপুনিকতা দোষে অতিদুষ্ট। তবু তুমি বদভ্যাসটা কেন ছাড়তে পার না বলত? তুমি বরং আমার একটা প্রশ্নের জবাব দাও দিকিন?

–কী?

–সলিল মিত্র ব্যক্তিটি কে?

যেন রিফ্লেক্স অ্যাকশন!

প্রত্যুত্তর ঠোঁটের আগায় : আমার এক প্রাক্তন ছাত্র। কেন?

শুধু তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তিই নয়, ওঁর ‘আই কিউ’ ফেনমেনাল। প্রশ্নমাত্র কম্পুটারের দ্রুততায় বুঝে নিলেন : জগদীশ অহেতুক কৌতূহলে লেটার-বক্সে উঁকি মেরে দেখেছে, বাড়ির ভিতরে আসার আগে। কাঁচের ভিতর দিয়ে নামটা যে পড়া যাচ্ছিল তা অনুমাননির্ভর নয়, স্বচক্ষে দেখা।

বললেন, কেন সলিলকে কী দরকার?

–না, তাই জিজ্ঞেস করছি। লেটার-বক্সে দেখলাম কিনা–অচেনা নাম।

অধ্যাপক তালুকদার অন্যমনস্কতার অভিনয় করে পাঞ্জাবির পাশ-পকেট থেকে লেফাফাখানা বার করে দেখে আবার পকেটেই রাখলেন।

বললেন, বেচারি থাকে ধাপধাড়া গোবিন্দপুরে। চিঠি ডেলিভারি হতে দেরী হয়। তাই এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নাম লেখাবার পর আমাকে বলেছে…. যাক সে কথা। তোতনরা কেমন আছে?

‘খেজুরে-গল্প’ কিছুটা চালিয়ে গা ধোওয়ার অছিলায় ঢুকে গেলেন বাথরুমে।

কিন্তু এ কী?

খামের গর্ভে রয়েছে তাঁর নিজেরই লেখা চিঠিখানা! অর্থাৎ যে চিঠি লিখেছেন সলিল মিত্র H.D. 31-কে।

তার অর্থ? চিঠিখানা ও ফেরত দিল কেন?

রুদ্ধদ্বার স্নানকক্ষে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে রইলেন কয়েকটা মুহূর্ত। তীক্ষ্ণবুদ্ধির পণ্ডিতটি কোনো কার্যকারণ-সূত্রের সন্ধান পেলেন না। ও যদি যোগাযোগ করতে না চায়–তা তো নাই চাইতে পারে–উনি বিবাহিত, প্রৌঢ়-কিন্তু সেক্ষেত্রে মেয়েটির পক্ষে স্বাভাবিক হত খামটা ছিঁড়ে ফেলা। অথবা বাস্তববুদ্ধি প্রখর হলে সাবধানে ‘সেলফ অ্যাড্রেসড’ খামের অব্যবহৃত ডাক-টিকিটটা জলে ভিজিয়ে খুলে নেবার পর খামটা ছিঁড়ে ফেলা।

হঠাৎ একটা কথা খেয়াল হল। উল্টোপিঠটা দেখলেন। তাই বল। একই কাগজের বিপরীতপ্রান্তে গোটা গোটা মেয়েলি হরফে লেখা :

“কবিবরেষু,

“অহোবত! কী সৌভাগ্য! একে সাহিত্যিক, তায় কবি! তুমি আমার বিজ্ঞপ্তিবসনের খাঁজে খাঁজে এক নম্বর, দু-নম্বর কী অনুমানের খোঁজ করেছ তার আমি কী বুঝব? লেখক হিসাবে তোমার জানা উচিত : এই বিশ্বপ্রপঞ্চের আধখানা কে বানিয়েছে তা আমরা জানি না, কিন্তু বাকি আধখানার সৃষ্টিকর্তা আমরাই—’আপন মনের মাধুরী মিশায়ে…’

“কৌতূহল যদি পুরোপুরি মিটে গিয়ে থাকে তাহলে এই কাগজখানার দাহকার্য সম্পন্ন কর–দুজনের ইস্তাক্ষরেরই সহমরণে সদগতি লাভ হবে। সেজন্যই তোমার চিঠির উল্টোদিকে এই বিপরীত-বিহার। আর কৌতূহলের ছিঁটেফোঁটা যদি এখনো বাকি থাকে তাহলে নিচের নম্বরে রিং করতে পার। উপন্যাসের ভাল প্লটই পাবে। গ্যারান্টিড। তোমার প্রকাশক তোমাকে কী হারে রয়্যালটি দেন আমার জানা নেই কিন্তু আমি কি আমার ‘প্রকাশক’-এর কাছে বিনামূল্যে বিকাবো? তাতেও রাজি–যদি কবি কালিদাসের শর্তটা মেনে নাও। অর্থাৎ যদি প্রকাশের আগে আমিই হই তোমার পাণ্ডুলিপির প্রথম পাঠিকা।

ইতি—

মালিনী।”

সন্দেহ দোলায়-দোলায় দোলায়মানা কুয়াশার যে রহস্যময় আবরণ একটা ছিল, ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল তা।

না, H.D.31–হ্যাঁ তাই, ‘মালিনী’ ওর নাম নয়, কায়দা করে ছদ্মনাম নেওয়া, কাব্য করে–যেহেতু, কবি কালিদাসের নামে প্রচলিত গল্পে তাঁর প্রথম শ্রোতার নাম : মালিনী।

মোট কথা মেয়েটি জীবনসঙ্গী খুঁজছে না আদৌ।

সহজ, সরল, ভদ্র ভাষায়: ‘রূপোপজীবিনী’।

হয়তো ‘পত্রমিতালী’র সম্পাদক জানেন, অথবা জানেন না, আন্দাজ করেন–আপত্তি করেন না।

কিন্তু ঐ মেয়েটি–ঐ জাতের পাঁচজন ‘অড-উইমেন আউট’ই–’পত্রমিতালী’ পত্রিকাকে দেহবিজ্ঞপ্তির উপাদান হিসাবে গ্রহণ করেছে। জীবনসঙ্গীর সন্ধানী হলে ‘বিবাহিত প্রৌঢ়’ মানুষটাকে সে আদৌ পাত্তা দিত না।

কিন্তু যদি সত্যিই ও পত্ৰবন্ধুত্বের অভিলাষী হয়? না, তা হতে পারে না। সেক্ষেত্রে নিজের ‘ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক্স’ ওভাবে বিজ্ঞাপিত করত না।

তাছাড়া ওর চিঠির খাঁজে খাঁজেও যে যৌন ইঙ্গিত! ‘প্রকাশক’ কথাটাতে ‘সিঙ্গল কোট মার্ক দিয়ে বিশেষ ব্যঞ্জনা দিতে চেয়েছে। চিঠির কাগজের উল্টো দিকে লেখাটাকে বলেছে : ‘বিপরীত-বিহার’। এবার সিঙ্গল-কোট দেয়নি। অর্থাৎ সরলার্থই গ্রাহ্য : বিপরীত প্রান্তে ভ্রমণ।

মানছেন, সব মানছেন, তবু নিজের কাছে একটা কথা স্বীকার করতেই হবে, মেয়েটি ‘সাধারণী’ নয়, রাজনটীরা যেমন চৌষট্টি কলার মধ্যে বিশেষ করে শিখত পত্ররচনা, জাপানের ‘গেইসা’রা যেমন বাক্যের টানাপোড়েনে একটা কুহকীমায়া রচনায় বিশেষ শিক্ষাপ্রাপ্তা, ও-ও যেন তাই। আর সেজন্যই বিকোবার আগে ‘মূল্যের’ প্রশ্নটা কায়দা করে তুলেছে। ‘মূল্য’ অর্থাৎ ‘অর্থমূল্য’। কিন্তু সেজন্য কি ওকে দোষ দেওয়া যায়? সলিল মিত্র তো নিজে থেকেই বলেছিলেন, মনোমত একটা গল্পের প্লট পেলে ওকে যথাযোগ্য সম্মানদক্ষিণা দেবেন। এক্ষেত্রে ‘ফিজ’ আর ‘সম্মানদক্ষিণার’ ফারাক কী? দুটোই তো রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের প্রতিশ্রুতির পরিমাপের মূল্যায়নে।

তবে হ্যাঁ, চিঠি শেষ করার আগে সে আরও একটি প্রস্তাব দিয়েছে। অর্থাৎ যদি তাকে কবি কালিদাসের মালিনী হবার অধিকার দেওয়া যায়। যদি সলিল মিত্র উপন্যাসটি লিখে প্রকাশক বা পূজা সংখ্যার সম্পাদকের হাতে তুলে দেবার আগে পাণ্ডুলিপিটি ওকে সর্বপ্রথম পড়তে দেন!

এ কথা ও কেন বলল? ও তো সলিল মিত্রের কোনো লেখা পড়েনি। মালিনী যেমন ছদ্মনাম, এ-তরফের ‘সলিল মিত্র’ও তো তাই।

তাহলে? প্রথম দর্শনে প্রেম হয়। বাস্তবে হোক না হোক, রোমিও জুলিয়েটে হয়। তাই বলে প্রথম পত্রপাঠে প্রেম! একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না, স্যার?

কালিদাসের ‘মালিনী’ সম্বন্ধেই বা আমরা কতটুকু জানি? সেটাও তো কল্পকথা।

কবি বিনিদ্র রজনীর পরিশ্রমে কাব্য রচনা করতেন–শকুন্তলা, কুমারসম্ভব, মেঘদূতম–আর ঘোর-ঘোর প্রাগূষা লগ্নে রাজার প্রাসাদে ফুল-জোগানোর পথে থমকে থেমে যেত মালিনী, এসে বসত ওঁর সদর দরজার সামনে। পাখির কূজন তখনো জাগেনি বনদেবীর শাখায় শাখায়। বলত, পড়ুন, আর্যপুত্র, কাল রাত্রে কাহিনী কোন পথে মোড় নিল?

কালিদাস শুকতারাকে সাক্ষী রেখে সেই ঘৃতপ্রদীপ-জ্বলা আধো-অন্ধকারে আবৃত্তি করে শোনাতেন সদ্য রচিত দশ-বিশটি শ্লোক।

হয়তো বা তা রতিরঙ্গরসের অকপট বর্ণনা।

দেহদর্পণে দেহাতীতের প্রতিচ্ছায়া।

ইতিহাস বলেনি, লাজে-রাঙা মালিনী মাঝপথে বাধা দিয়ে বলে উঠেছিল কিনা–ক্ষান্ত হন আর্যপুত্র! এ বর্ণনা স্বয়ংপাঠ্য, আবৃত্তির যোগ্য নয়। অন্তত, ঘৃতপ্রদীপজ্বলা জনান্তিকে–

ইতিহাসে একথাও বলেনি, প্রত্যুত্তরে কবি কালিদাস ফুৎকারে ঘৃতপ্রদীপ শিখাকে নির্বাপিত করে প্রায়ান্ধকারে কামোদ্দীপিতা মালিনীর লজ্জাহারণ করেছিলেন কিনা।

তাছাড়া ইতিহাস এ কথাও বলেনি যে, কবিপত্নী কক্ষান্তরে নিদ্রাগতা।

তিনি দীর্ঘদিন এবং দীর্ঘতর রাত্রি শয্যালীনা–রতিরঙ্গসুখবঞ্চিতা।

জানবার যেটুকু ছিল জেনেছেন, কিন্তু তাই বলে কৌতূহল কি ফুরিয়ে গেছে? এমন আমন্ত্রণ পাওয়ার পর?–কবি কালিদাসের ভাষায়–যাকে বলে ‘বিবৃত জঘনাং কো বিহাতুম সমর্থঃ?’

টেলিফোনটা তুলে নিয়ে ডায়াল করলেন।

–হ্যালো? …ইয়েস স্পিকিং! হুম ড্যু য়ু ওয়ান্ট প্লীজ?

তালুকদার ইংরেজিতে বললেন, ‘মালিনী’ নামে একটি মেয়ে…

–ডিয়ার মি! কবি! বলুন কীভাবে আপনার সেবা করতে পারি? হ্যাঁ, আমি মালিনীই বলছি।

–তুমি আমাকে একটি প্লট দিতে প্রতিশ্রুত…

–শুধু প্লট? বেণীর সঙ্গে মাথা দিতেও যে প্রস্তুত! তোমারে যা পারিব না দিতে সে কার্পণ্য চিরকাল আমারেই রহিবে বঞ্চিতে! বল, কবি! কবে, কখন শুভাগমন ঘটবে?

–কত দূরে? কোথায় যেতে হবে?

অল্প কথায় ঠিকানা আর পথনির্দেশ জানিয়ে দিল। ‘মেঘচুম্বিত অ্যাপার্টমেন্টস্’ দক্ষিণ কলকাতাতে। বেশি দূরে নয় যোধপুর পার্ক থেকে। সদ্যনির্মিত অ্যাপার্টমেন্ট হাউস। সব ফ্লাটে এখনও কোয়াপারেটিভ মেম্বারদের শুভাগমন ঘটেনি। ওর ফ্ল্যাট নং এইট/টোয়েন্টি। অর্থাৎ আটতলায় বিশ নম্বর দরজা। লিফট আছে। স্বয়ংক্রিয়। সর্বদা চলন্ত। লোডশেডিং-নির্ভর নয়। ‘পশ’ এলাকা।

–এবার বল কখন আসছ? কবে?

–শুভস্য শীঘ্রং। ধর কাল।

–সরি! কাল সন্ধ্যায় আমি এনগেজড।

–সন্ধ্যায় নয়। দুপুরে। দুটোয় ‘অফ’ হচ্ছি, ধর আড়াইটেয়। তাহলে?

–তুমি কি কলেজে পড়াও?

অসাবধানে কথাটা বলে ফেলেছেন। তৎক্ষণাৎ প্রতিপ্রশ্ন করেন, তোমার নাম কি মালিনী?

–অল রাইট! অল রাইট! প্রফেসর সলিল মিত্র। বেলা দুটোয় যখন তুমি ‘অফ’ হচ্ছ, তখন আড়াইটেতেই–অ্যাসুমিং তুমি দমদম মতিঝিল বা বি. টি. রোডের ‘স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিট্যুটে’ ‘অফ’ হচ্ছ না! তাহলে আধঘণ্টাই যথেষ্ট, দুপুরবেলা।

–ডোর-বেল বাজালে যে সাড়া দেবে তাকে কী বলব? ‘মালিনীকে’ ডেকে দিতে?

–ঠিক দুটো ত্রিশে হলে আমি নিজেই দোর খুলে দেব।

–আর যানজটে যদি পৌনে তিনটে বেজে যায়?

–দেখবে, খোলা দরজায় দুটি কপাট দুহাতে ধরে মালিনী পনেরো মিনিট অধীর আগ্রহে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে, আর্যপুত্রের প্রতীক্ষায়।

এ কী হল? এ কী হচ্ছে? তিন কুড়ি পাড়ি দেবার ব্রাহ্মমুহর্তে এ কোন জাতের ধাষ্টামো? নলচের আড়ালটা কার দৃষ্টিপথে দিচ্ছেন? নিজের বিবেক? পূজা-সংখ্যার জন্য একটা নভেলেটের প্লট অনুসন্ধানে এই জাতের অভিসার? ন্যাকামির একটা সীমা থাকবে তো?

কিন্তু তেলাপোকার টানে মোহগ্রস্ত কাঁচপোকার মতো, উনি যেন চলেছেন নিয়তি নির্দিষ্ট সর্বনাশের পথে। পরিচয় জানতে আর কিছু বাকি নেই। আলট্রা-মডার্ন সফিস্টিকেটেড কল-গ্যের্ল। মালটিস্টোরিড অ্যাপার্টমেন্টে আপয়েন্টমেন্ট করে খদ্দের ‘বসায়’। একবার শয্যাসঙ্গিনী হবার দক্ষিণামূল্য কত? কিন্তু উনি তো মেয়েটিকে স্পর্শমাত্র করবেন না?

উনি তো শুধু জানতে চান–কেন? কেন? কেন?

ত্রিশ বছর বয়স, একশ ছেষট্টি সে. মি. উচ্চতা। ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স : 36 24-37, ডিভোর্সি এবং চাকুরিজীবী এসবই শোনা কথা–হেয়ার-সে। কিন্তু মেয়েটি কথাবার্তা, পত্ররচনায় তো যাকে বলে, ‘এ-ওয়ান’। টেলিফোনে ইংরেজিতে সামান্যই আলাপচারি হয়েছে, কিন্তু তার ভিতরেই মনে হয়েছে, মেয়েটি কনভেন্ট-লালিতা। এমন একটি সর্বগুণান্বিতা রমণীরত্ন কী হেতুতে বেছে নিল এই জীবিকা? কেন সে কারও সহধর্মিণী নয়, কেন সে নয় কারও ‘মা’? দেশকে, দশকে, আগামী প্রজন্মকে সে কী দিয়ে যাচ্ছে? শুধুই ইন্দ্রিয়জ কামনা-বাসনার রিরংসা-পুরীষ?

–কেন?–কেন?–কেন?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *