০২. রচনাকাল

০২. রচনাকাল

‘কাণ্ডনুক্ৰমণ’ গ্রন্থে আমরা একটি সময়ানুক্রমণীর সন্ধান পাই, তবে তা তথ্যভিত্তিক কি না সে সম্পর্কে কোনো নিশ্চয়তা নেই। এতে কথিত হয়েছে, বৈশম্পায়ন যজুৰ্বেদীয় শ্রৌত ঐতিহ্যের সূত্রপাত করেছিলেন ; পরে ঐ ঐতিহ্য যথাক্রমে যাস্ক, পৈঙ্গী, তিত্তিরি, উখ ও আত্ৰেয়ের নিকট উপনীত হয়। সমালোচক কীথ্‌ ব্যাকরণগত প্রয়োগগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেছেন যে, যজুর্বেদ সংহিতা ও ঋগ্বেদ একই ভাষাগত স্তর ও কালগত পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে মনে হয় যে, সমগ্রভাবে ঋগ্বেদের তুলনায় যজুর্বেদ সামান্য পরবর্তীকালের রচনা। যদিও ঋগ্বেদের দশম মণ্ডল ও প্রথম মণ্ডলের প্রথমাংশ সম্ভবত যজ্ঞবেদ সংকলনের সমকালীন।

তৈত্তিরীয় সংহিতার পাঠ যেহেতু সবচেয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সর্বজনপরিচিত, তাই তাকে বিশ্লেষণ করে আমরা যজুর্বেদের বিষয়বস্তু ও চরিত্র সম্পর্কে সম্যক ধারণা করতে পারি। পাঁচটি কাণ্ডের রচয়িতা রূপে যথাক্রমে প্ৰজাপতি, সোম, অগ্নি, বিশ্বেদেবাঃ এবং স্বয়ম্ভূর নাম উল্লিখিত হয়েছে। এদের মধ্যে পরবর্তী কালের দুজন দেবতা–প্ৰজাপতি ও স্বয়ম্ভূর উল্লেখ থাকায় একথাই প্ৰতিপন্ন হচ্ছে যে, এই সংহিতা অনেক পরেই রচিত হয়েছে। বিভিন্ন কাণ্ডে বিন্যস্ত বিষয়গুলি পর্যবেক্ষণ করে আমরা অত্যন্ত অপটু সম্পাদনার নিদর্শন পাই। বিভিন্ন যজ্ঞ ও অনুষ্ঠানের বর্ণনা এতই অসংলগ্নভাবে পাঠে নিবেশিত হয়েছে যে, কোথাও কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা সুশৃঙ্খল বিন্যাসের পরিচয় পাওয়া যায় না।