1 of 3

পড়ানো

পড়ানো

উড্রো উইলসন ফেলো হিসেবে আমেরিকার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি কিছুকাল পড়িয়েছিলাম। আগে কখনও তো ছাত্র ছাত্রী পড়াইনি। ওই প্রথম। প্রথম দিকে ক্লাসের চাপ অতিরিক্ত মনে হচ্ছিল।পরে, ধীরে ধীরে সবকিছু সহজ হয়ে গিয়েছিল। আসলে আমার পড়ানোগুলো কোনও সিলেবাস থেকে নয়। এক একটা ক্লাসে একেকটা বিষয় পড়াতাম। এর জন্য আমার কোনও পড়াশোনা করার দরকার হতো না। আমি যা জানি, যে বিষয়ে যতটুকুই আমার জ্ঞান, তা ই বলতে হতো। মানববাদ, নারীবাদ,বর্ণবাদ,শিল্প, সাহিত্য, যুদ্ধ, ধর্ম, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শান্তি– কী ছিল না বিষয়! ছাত্রছাত্রীরা বেশ খুশি ছিল, বেশ উত্তেজিত। আমার কত কত অভিজ্ঞতা যে শেয়ার করেছি। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের দুএকজন ধর্মপ্রাণ প্রধান একসময় আপত্তি জানালেন, তাঁরা উড্রো উইলসন ফেলো প্রোগ্রামে জানিয়ে দিলেন, কী, আমি নাকি ধর্মের সমালোচনাটা বেশি করছি। আমার লেকচার কিছু ছাত্রছাত্রীর ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিচ্ছে। আমার চাকরি নট। ইওরোপের কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে পড়াতে হয়েছে। ধর্ম নিয়ে কনজারভেটিভ আমেরিকার মতো সমস্যা ওখানে নেই। লুক্সেমবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ক্লাস নিয়েছি একদিন। নারীর অধিকার নিয়ে বলতে গিয়ে ধর্মের সমালোচনা করেছি, বিশেষ করে ক্রিশ্চিয়ানিটির। মন দিয়ে শুনেছে সবাই। বুদ্ধিদীপ্ত সব প্রশ্ন করেছে। ক্লাস শেষ হলে আমার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য ব্যাকুল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অনুরোধ করেছেন, ফের কখনও লুক্সেমবার্গ এলে আবার যেন ক্লাস নিই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *