ভোরবেলাতে আবার যাত্রা শুরু হল। একটি ঘোড়ার পিঠে জোজো আর সন্তু। আর একটি ঘোড়ায় কাকাবাবু। দুটোর বেশি পাওয়া গেল না। তা ছাড়া জোজো নিজে আলাদা একটা ঘোড়া চালাতেও পারত না।
কাকাবাবু তাঁর ক্রাচ দুটো বেঁধে এক পাশে ঝুলিয়ে নিয়েছেন। একটা পা প্রায় অকেজো হলেও তাঁর ঘোড়া চালাতে অসুবিধে হচ্ছে না। কাকাবাবুকে বেশ খুশি খুশি দেখাচ্ছে, খানিকটা যাওয়ার পর তিনি উৎফুল্ল ভাবে বললেন, দ্যাখ, সন্তু, এখন কি কেউ আর আমাকে খোঁড়া লোক বলতে পারবে? ভাবছি, এরপর থেকে কলকাতা শহরেও একটা ঘোড়ায় চেপে ঘুরলে কেমন হয়। তা হলে আর ক্রাচ লাগবে না। গাড়ি চালাতে গেলেও অ্যাকসিলারেটর, ব্রেক আর ক্লাচ সামলাবার জন্য দুটো পা লাগে। ঘোড়া চালাবার জন্য সে ঝামেলা নেই। এই ঘোড়াটাও বেশ শান্ত। বিখ্যাত বীর তৈমুর লঙও নাকি খোঁড়া ছিল। সেও তো এক পায়ে ঘোড়া ছুটিয়েই কেল্লা ফতে করেছে!
জোজো বলল, জানেন কাকাবাবু, নেপোলিয়ন চলন্ত ঘোড়ার পিঠে শুয়ে পড়ে ঘুমিয়ে নিতেন!
কাকাবাবু বললেন, তাই নাকি?
জোজো বলল, হ্যাঁ! নেপোলিয়ন বিছানায় শুয়ে ঘুমোনো একেবারে পছন্দ করতেন না!
কাকাবাবু বললেন, সেটা নেপোলিয়নের পক্ষে সম্ভব হতে পারে, আমি কিন্তু বাপু ঘোড়ার পিঠে ঘুমোতে পারব না।
সন্তু বলল, জোজো এমনভাবে বলছে, যেন ও নেপোলিয়নকে ঘোড়ার পিঠে শুয়ে পড়তে নিজের চোখে দেখেছে.! না-শুয়ে বুঝি ঘুমোনো যায় না!
জোজো সঙ্গে-সঙ্গে সুর পালটে বলল, আমার এক কাকা আছেন, কানপুরে থাকেন, উনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। এমন কী ঘুমোতে ঘুমোতে হাঁটেন।
কাকাবাবু হাসতে লাগলেন।
তাঁর ঘোড়াটা যাচ্ছে আগে-আগে। ম্যাপ দেখে তিনি মনে-মনে একটা রাস্তা ছকে নিয়েছেন। পাকা রাস্তা এড়িয়ে জঙ্গলের মধ্যদিয়েই এগোতে হবে। অংশুমান চৌধুরীরা গাড়িতে যাবেন, তাঁদের পাকা রাস্তা দিয়েই যেতে হবে, তাঁদের সামনে পড়া চলবে না। অংশুমান চৌধুরীরা দলে ভারী, তাঁদের সঙ্গে অস্ত্রও অনেক বেশি। কাকাবাবুর কাছে রয়েছে শুধু একটি রিভলভার, তাতে মোটে চারখানা গুলি। ওঁদের কাছ থেকে কাকাবাবু রিভলভারটা কেড়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এক্সট্রা গুলি তো আর নেওয়া হয়নি।
আদিবাসীদের একটা মূর্তির জন্য অংশুমান চৌধুরী প্রচুর টাকা খরচ করেছেন, অনেক রকম ব্যবস্থা করেছেন, সুতরাং কাকাবাবু বাধা দিতে গেলে তিনি সহজে ছাড়বেন না।
আগের রাত্তিরটায় নিরামিষ ডাল-ভাত-তরকারি খেয়ে, ভাল করে ঘুমিয়ে নেওয়া হয়েছে। সন্তু আর জোজো হাতি দেখার জন্য জেগে ছিল বেশ কিছুক্ষণ, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাতি আর আসেনি এদিকে, ওরা দূরে গাছপালা ভাঙার মড়মড় শব্দ শুনেছে শুধু।
ধনঞ্জয় পুরোহিত ওদের যত্ন করেছেন খুবই। আসবার সময় তিনি মস্ত এক পোঁটলা ভর্তি চিড়ে আর গুড় দিয়ে দিয়েছেন সঙ্গে, জঙ্গলের মধ্যে অন্য কোথাও খাবার না পাওয়া গেলে এই চিড়ে-গুড় খেয়েই পেট ভরানো যাবে।
এখানে জঙ্গল খুব ঘন নয়, মাঝে-মাঝে পার হতে হচ্ছে ছোট-ছোট টিলা। শোনা যাচ্ছে নানারকম পাখির ডাক। এক জায়গায় দেখা গেল এক ঝাঁক বাঁদর। তারা গাছের ডালে দোল খেতে-খেতে খুব কৌতূহলী, চোখে দেখতে লাগল এই দলটাকে। যেন প্যান্ট-শার্ট পরা মানুষ তারা আগে কখনও দ্যাখেনি।
একটু পরে সন্তু জিজ্ঞেস করল, কাকাবাবু, ওদের দলটা তো আগে আগে এগিয়ে গেছে। তা ছাড়া ওরা গেছে গাড়িতে। এতক্ষণে কি ওরা মূর্তিটা চুরি করে নিয়ে যায়নি?
কাকাবাবু বললেন, ওরা গাড়িতে গেলেও সবটা গাড়িতে যাওয়া যাবে না। তিরাংদের ওই গ্রামটা পাহাড়ের একেবারে ওপরে। বেশ বড় পাহাড়। ওদের তুলনায় আমাদের বরং একটা সুবিধে আছে, আমরা ঘোড়ায় চড়ে পাহাড়ের ওপরে অনেকটা উঠে যেতে পারব।
জোজো বলল, একটা কাজ করলে হয় না? আমাদের পাহাড়ে ওঠার দরকার কী? আমরা পাহাড়টার কাছে পৌঁছে নীচে কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারি। ওদের গাড়িটার আশেপাশে। তারপর ওরা মূর্তিটা চুরি করে নেমে এলে আমরা হঠাৎ ওদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা কেড়ে নেব। ব্যাস! তারপর ওদের গাড়িটাও পেয়ে যেতে পারি!
কাকাবাবু বললেন, তুমি যে এই কথাটা ভাবলে, ওরাও কি এটা ভাবতে পারে না? অন্যপক্ষকে কখনও বোকা ভাবতে নেই। ওরাও পাহাড়ের নীচে, গাড়িটার কাছে কোনও ফাঁদ পেতে রাখতে পারে, আমরা সেখানে পৌঁছলেই আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে আড়াল থেকে! এই জঙ্গলের মধ্যে আমাদের তিনজনকে খুন করে রেখে গেলেও কেউ টের পাবে না।
সন্তু বলল, আমাদের উচিত উলটো দিক দিয়ে ঘুরে যাওয়া!
কাকাবাবু বললেন, আমিও ঠিক সেটাই ভেবে রেখেছি। তিরাংদের গ্রাম যে-পাহাড়টার ওপর, সেটাকে দূর থেকে দেখতে অনেকটা গণ্ডারের মাথার মতন। দেখলেই চেনা যাবে। ধনঞ্জয় পুরুতের একজন আদিবাসী শিষ্যের কাছ থেকে আমি সে পাহাড়ের উলটো দিকে যাওয়ার রাস্তাটাও জেনে নিয়েছি। একটা শর্টকাট আছে।
জোজো বলল, কাকাবাবু, আমার পিসেমশাই আপনাকে একটা কমপিটিশানে নামাতে চেয়েছিলেন, আপনি রাজি হননি তখন। শেষ পর্যন্ত কিন্তু আপনাকে সেই কমপিটিশানে নামতে হল।
কাকাবাবু বললেন, হু, তা ঠিক। আমরা এখন অনায়াসে কলকাতার দিকে রওনা হতে পারতুম। কিন্তু মূর্তিটা সম্পর্কে খুবই কৌতূহল হচ্ছে। এমন কী দামি মূর্তি হতে পারে, যার জন্য পট্টনায়ক, রাও আর অংশুমান চৌধুরী কাঠ-খড় পোড়াচ্ছেন? সেই জন্যই একবার দেখে যেতে চাই।
জোজো বলল, কিন্তু ওদের আগে পৌঁছতে হবে আমাদের।
সন্তু বলল, আমরা তো পৌঁছবই! যদি তা না পারি, আগেই যদি তোর পিসেমশাই মূর্তিটা চুরি করে নিয়ে যায়, তা হলে বারুইপুর পর্যন্ত তাড়া করে যাব!
জঙ্গলটা এক জায়গায় বেশ ঘন হয়ে এসেছিল, হঠাৎ সামনে দেখা গেল একটা মস্ত বড় জলাশয়। অনেকটা হ্রদের মতন। কাকাবাবু ঘোড়া থামিয়ে বললেন, বাঃ, কী সুন্দর! অপূর্ব!
জায়গাটা সত্যি ভারী সুন্দর। জল একেবারে স্বচ্ছ। মাঝখানেও ফুটে আছে অনেক লাল রঙের শালুফুল। একঝাঁক সাদা বক বসে আছে কাছেই। একটা মস্ত বড় শিমুল গাছ থেকে টুপটাপ করে ফুল খসে পড়ছে জলে।
কাকাবাবু বললেন, সন্তু, তোরা এসে একটু ধর তো আমাকে, এখানে একবার নামব।
খোঁড়া পা নিয়ে ঘোড়ায় উঠতে ও নামতে কষ্ট হয় কাকাবাবুর। সন্তু নিজের ঘোড়ার পিঠ থেকে এক লাফে নেমে এল।
জোজো বলল, কাকাবাবু, এখানে থামলেন? আমাদের দেরি হয়ে যাবে না?
কাকাবাবু বললেন, যতই ব্যস্ততা থাক, কোনও সুন্দর জিনিসকে অগ্রাহ্য করতে নেই। সন্তু, তোকে আগে একবার রামায়ণের সেই অংশটার কথা বলেছিলুম না? রাবণ সীতাকে হরণ করে নিয়ে গেছে, সোনার হরিণ মেরে ফিরে এসে সীতাকে না পেয়ে রাম পাগলের মতন খুঁজছেন, খুঁজতে-খুঁজতে পম্পা সরোবরের তীরে এসে রাম মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। সীতার কথা ভুলে গিয়ে তিনি দেখতে লাগলেন সেই দৃশ্য। এই জায়গাটা পম্পা সরোবরের চেয়ে খারাপ কিসে?
ঘোড়া থেকে নেমে কাকাবাবু হ্রদটার তীরে গিয়ে আঁজলা ভরে জল নিয়ে মুখে ছেটালেন। তারপর বললেন, আঃ, কী ঠাণ্ডা জল! এক-এক সময় আমার কী মনে হয় জানিস, সন্তু, এই যতসব বদমাস আর গুণ্ডাদের পেছনে ঘুরে বেড়িয়ে কত সময় নষ্ট করি। তার চেয়ে ওসব ছেড়েছুড়ে এই সব সুন্দর জায়গায় এসে সময় কাটালে কত ভাল লাগত! আজকাল আর ওই সব কাজের ভার নিতেও চাই না, তবু পাকেচক্রে জড়িয়ে পড়তে হয়।
সন্তু বলল, এখানে তো ওই অংশুমান চৌধুরী তোমাকে জোর করে টেনে এনেছে।
কাকাবাবু বললেন, যাই হোক, তবু তো এই একটা সুন্দর জায়গা দেখা গেল।
মুখ-টুখ ধুয়ে, ঘাসের ওপর বসে পড়ে তিনি আবার বললেন, ঘোড়া দুটোকে জল খেতে দে। ওদেরও তো বিশ্রাম দরকার।
তারপর তিনি হাতে-আঁকা ম্যাপটা খুলে দেখতে লাগলেন। সন্তুও ঝুঁকে পড়ে বোঝবার চেষ্টা করল ম্যাপটা। কাকাবাবু আঙুল দিয়ে এক জায়গায় দেখিয়ে বললেন, হ্যাঁ, ওরা বলেছিল, এখানে একটা বড় জলাও থাকবে। উলটো দিকে একটা ছোট পাহাড়। এখান দিয়ে কোনাকুনি যাওয়া যেতে পারে। আমার কী মনে হয় জানিস, সন্তু, এখন তো সবে শীত শেষ হয়েছে, এদিকে এখনও বর্ষা নামেনি, এই হ্রদের জল বেশি হবে না। আমরা ঘোড়া নিয়ে যদি এই হ্রদটা পার হয়ে যেতে পারি, তা হলে অনেকটা সময় বেঁচে যাবে।
যদি বুক-জলের বেশি হয়?
তাতেও ক্ষতি নেই। ঘোড়া সাঁতার কাটতে পারে। আমরাও ড়ুবে যাব। ও, ভাল কথা, তোর বন্ধু জোজো সাঁতার জানে তো?
মনে তো হয় জানে। তবে বিশ্বাস নেই।
জোজো ঘাসের ওপর হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়েছে। সন্তু তাকে ধমক দিয়ে বলল, এই জোজো, তুই আবার যেখানে-সেখানে শুয়ে পড়ছিস? যদি ফের পিঁপড়ে কামড়ায়?
জোজো সঙ্গে-সঙ্গে ধড়মড়িয়ে উঠে বসে বলল, ওরে বাবা, এখানেও পিঁপড়ে আছে নাকি?
শোন, তুই সাঁতার জানিস তো?
সাঁতার? হে, কী বলছিস? কতবার আমি সাঁতারে গঙ্গা এপার ওপার করেছি। একবার বাবার সঙ্গে রাশিয়ায় গিয়ে ক্যাম্পিয়ান সাগরে ঘোরার সময় আমাদের মোটরবোট উল্টে গেল, আমাদের গাইড যে ছিল, সে সাঁতার জানত না, আমি তাকে পিঠে করে নিয়ে গিয়ে বাঁচালুম!
সন্তু হাসি মুখে বলল, তা বেশ করেছিস! এখন আমরা এই লেকটা পেরুব ঘোড়ায় চেপে, ঠিক আছে তো?
জোজো তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলল, এটা ভারী তো একটা লেক, হাঁটুজল হবে কি না সন্দেহ। তবে কিনা, জামা প্যান্ট ভিজে যাবে, শুধু শুধু এটা পার হওয়ার দরকার কী? পাশ দিয়ে গেলেই তো হয়।
ঘোড়া দুটো জল খাচ্ছিল, হঠাৎ এক সঙ্গে মুখ তুলে তাকিয়ে কী যেন দেখার চেষ্টা করল বাঁ দিকে, কান দুটো লটপট করতে লাগল। তারপর পেছন ফিরে ছুট লাগাবার চেষ্টা করতেই কাকাবাবু চেঁচিয়ে উঠলেন, সন্তু, শিগগির ওদের লাগাম ধর!
কাকাবাবু খোঁড়া পা নিয়েও নিজেই লাফিয়ে উঠে একটা ঘোড়ার লাগাম ধরে ফেললেন, অন্য ঘোড়াটাকে সন্তু আর জোজো দুজনে মিলেও আটকাতে পারল না। সে তীরবেগে ছুটে মিলিয়ে গেল জঙ্গলে।
কাকাবাবু বললেন, একটুও সময় নষ্ট করা যাবে না। এই ঘোড়াতেই তিনজন উঠতে হবে।
তিনজন সওয়ার নিয়েই এই ঘোড়াটা তড়বড়িয়ে চলে এল লেকের প্রায় মাঝখানে।
কাকাবাবু ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে বললেন, নিশ্চয়ই কাছাকাছি কোনও হিংস্র জানোয়ার এসেছিল, তাই ঘোড়া দুটো ভয় পেয়েছে। বাঘ-টাঘ হওয়াই সম্ভব।
জোজো অবিশ্বাসের সুরে বলল, দিনের বেলায় বাঘ?
সন্তু বলল, কেন, দিনের বেলা বাঘ বেরুতে পারবে না, এমন কোনও আইন আছে?
কাকাবাবু বললেন, এই জঙ্গলে লেপার্ড আছে জানি। লেপার্ডরা মানুষকে আক্রমণ করতে সাহস পায় না, কিন্তু ওরা ঘোড়ার মাংস খুব ভালবাসে। কিন্তু..একটা ঘোড়া চলে গেল…এখন তিনজনে মিলে এই একটা ঘোড়ায় কী করে যাব? এ বেচারী বেশিক্ষণ আমাদের বইতে পারবে না।
সন্তু বলল, লেকটা পার হওয়ার পর আমি আর জোজো হেঁটে যাব। তুমি ঘোড়ায় যাবে। পাহাড়ে ওঠার সময় তিনজনে এর পিঠে বসে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।
পেছন ফিরে তাকিয়েও ওরা অবশ্য বাঘ বা লেপার্ড দেখতে পেল না। ঘোড়াটা হ্রদ পার হয়ে এসে গা ঝাড়া দিতে লাগল। হ্রদটায় সত্যিই জল বেশি ছিল না। কাকাবাবুর ক্রাচ দুটো ঘোড়াটার সঙ্গেই বাঁধা আছে, চিড়ে-গুড়ের পোঁটলাটা অদৃশ্য হয়ে গেছে অন্য ঘোড়াটার সঙ্গে-সঙ্গে।
কাকাবাবু আপত্তি করলেন না, তিনি একা বসে রইলেন ঘোড়ার পিঠে, সন্তু আর জোজো হাঁটতে লাগল পাশাপাশি। এটাই সুবিধেজনক।
সামনের ছোট টিলাটার পাশ ঘুরে অন্য দিকে যেতেই চোখে পড়ল জঙ্গলের মধ্যে দুএকটা কুঁড়েঘর। ঠিক গ্রাম নয়, সব মিলিয়ে তিনটে মাত্র বাড়ি।
কাকাবাবু বললেন, দুহাত উঁচু করে রাখ। ওরা যেন না ভাবে যে, আমরা এদের শত্রু।
তিনি নিজেও হাত তুললেন মাথার ওপর।
একটা বাড়ির সামনে একটা গাছে হেলান দিয়ে বসে আছে একজন তোক। পাশে তীরধনুক। কিন্তু ঘোড়র পায়ের শব্দ শুনেও লোকটা একবারও নড়ল-চড়ল না, মুখ তুলে তাকালও না।
কাকাবাবু ফিসফিস করে বললেন, লোকটা মরে গেছে নাকি? কেউ ওকে মেরে রেখে গেছে?