ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

সামুয়েল ২ – ০২

১ পরে দায়ূদ প্রভুর কাছ থেকে উপদেশ চাইলেন। দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি যিহূদার শহরগুলির কোন একটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব?”প্রভু দায়ূদকে বললেন, “হ্যাঁ।”দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কোথায যাব?”প্রভু বললেন, “হিব্রোণে।”
২ তখন দায়ূদ এবং তাঁর দুই স্ত্রী হিব্রোণে রওনা হলেন। (তাঁর স্ত্রীরা ছিলেন য়িষ্রিযেলের অহীনোযম এবং কর্ম্মিলের নাবলের বিধবা পত্নী অবীগল।)
৩ দায়ূদ তাঁর সঙ্গীগণ এবং তাদের পরিবারকেও সঙ্গে নিলেন। তারা প্রত্যেকে হিব্রোণ এবং নিকটবর্তী শহরগুলিতে বসবাস করতে লাগল।
৪ যিহূদার লোকরা হিব্রোণে এসে দায়ূদকে যিহূদার রাজারূপে অভিষিক্ত করল। তারপর তারা দায়ূদকে বলল, “যাবেশ গিলিয়দের লোকরা শৌলকে কবর দিয়েছে।”
৫ দায়ূদ যাবেশ গিলিয়দের লোকদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন। বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের বলল, “প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন কেননা তোমরা তোমাদের গুরু শৌলের ছাইকবর দিয়ে তার প্রতি দয়া দেখিয়েছ।
৬ প্রভু তোমাদের প্রতি ন্যাযসঙ্গত আচরণ করবেন এবং সদয হবেন। আমিও তোমাদের প্রতি সদয হব।
৭ এখন তোমরা শক্তিশালী ও সাহসী হও। তোমাদের মনিব শৌল নিহত হয়েছেন। কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আমাকে তাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে।”
৮ নেরের পুত্র অব্নের শৌলের সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন। অব্নের শৌলের পুত্র ঈশ্বোশত্‌কে মহনযিমে নিয়ে গেলেন এবং
৯ তাকে গিলিয়দ, অশূরীয়, য়িষিযেল, ইফ্রয়িম, বিন্যামীন এবং সারা ইস্রায়েলের রাজা করে দিলেন।
১০ ঈশ্বোশত্‌ শৌলের পুত্র ছিলেন। যখন তিনি ইস্রায়েলের শাসনভার নেন, তখন তাঁর বয়স ৪০ বছর। তিনি ইস্রায়েলে দুবছর রাজত্ব করেছিলেন। কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী দায়ূদকে অনুসরণ করল।
১১ দায়ূদ ছিলেন হিব্রোণের রাজা। দায়ূদ যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর ওপর সাত বছর ছ’মাস শাসনকার্য় চালিয়েছিলেন।
১২ নেরের পুত্র অব্নের এবং শৌলের পুত্র ইশ্বোশতের কিছু আধিকারিকগণ মহনযিম থেকে গিবিয়োনে গেল।
১৩ সরূযার পুত্র য়োয়াব এবং দায়ূদের আধিকারিকরাও গিবিয়োনে গেল। গিবিয়োনের এক পুকুরের কাছে তাদের দেখা হল। পুকুরের একদিকে অব্নেরের দল এবং অন্যদিকে য়োয়াবের দল বসল।
১৪ অব্নের য়োয়াবকে বলল, “আমাদের তরুণ য়োদ্ধারা উঠে দাঁড়াক এবং তাদের মধ্যে একটা লড়াই হয়ে যাক।”য়োয়াব বলল, “নিশ্চয়ই, লড়াই হোক্।”
১৫ তখন তরুণ য়োদ্ধারা উঠে দাঁড়াল। দুই দেশই, লড়াইয়ের জন্য তাদের কত লোকজন আছে তা গুনে নিল। তারা বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য বারো জনকে বেছে নিলো। অন্যদিকে য়োয়াবের দল দায়ূদের আধিকারিকদের মধ্যে থেকে বারো জনকে বেছে নিল।
১৬ তাদের প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি পক্ষের মাথা আঁকড়ে ধরে তাদের তরবারি দিয়ে পাশে ঢুকিয়ে দিল, তাই তারা একসঙ্গে মাটিতে পড়ে গেল। এই জন্য এই জায়গাকে বলা হয় “ছুরিকা ভূমি।” এটা গিবিয়োনের একটা জায়গা।
১৭ সেই লড়াই একটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধের রূপ নিয়েছিল এবং দায়ূদের লোকজন সেদিন অব্নের এবং ইস্রায়েলীয়দের হারিযে দিয়েছিল।
১৮ সরূযার তিন পুত্র ছিল: য়োয়াব, অবীশয এবং অসাহেল। অসাহেল খুব দ্রুত দৌড়াতে পারত। সে বন্য হরিণের মতই দ্রুতগামী ছিল.
১৯ অসাহেল সোজা অব্নেরের দিকে দৌড়ে গেল এবং তাঁকে তাড়া করল।
২০ অব্নের পিছনে তাকিযে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমিই কি অসাহেল?”অসাহেল বললেন, “হ্যাঁ, আমিই অসাহেল।”
২১ অব্নের অসাহেলকে আঘাত করতে চায নি। তাই, অব্নের অসাহেলকে বলল, “আমাকে তাড়া কর না। বরং একজন তরুণ সৈনিককে তাড়া কর। খুব সহজেই তুমি তার বর্মটি তোমার জন্য পেয়ে যেতে পারো।” কিন্তু অসাহেল অবনেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না।
২২ অব্নের আবার অসাহেলকে বলল, “দাঁড়াও; না হলে আমি তোমাকে হত্যা করতে বাধ্য হব। তাহলে কেমন করে আমি আবার তোমার ভাই য়োয়াবের মুখের দিকে তাকাবো?”
২৩ কিন্তু অসাহেল অব্নেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না। তখন অব্নের তার বর্শার গোড়ার দিকটা অসাহেলের পেটে ঢুকিয়ে দিল। বর্শা তার পেটে ঢুকে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গেল এবং সেখানেই অসাহেলের মৃত্যু হল।অসাহেলের দেহ মাটিতে পড়ে রইলো। সেই রাস্তা দিয়ে যারা ছুটে যাচ্ছিল তারা সবাই অসাহেলকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে পড়লো।
২৪ কিন্তু য়োয়াব এবং অবীশয অব্নেরকে তাড়া করতে লাগল। যখন তারা অম্মা পাহাড়ের কাছে এলো তখন সূর্য় অস্ত যেতে বসেছে। (গিবিয়োন মরুভূমির দিকে যেতে গীহের সামনেই ছিল অম্মা পাহাড়।)
২৫ পর্বতের চূড়ায়, বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা অব্নেরের চারদিকে একত্রিত হল।
২৬ অব্নের চিত্কার করে য়োয়াবকে বলল, “আমরা কি চিরদিন লড়াই করে একে অপরকে হত্যা করে যাবো? তুমি খুব ভালো করেই জানো যে এর পরিণাম হবে শুধুই দুঃখ। এই সব লোকদের বল তারা যেন তাদের নিজের ভাইকে তাড়া না করে।”
২৭ তখন য়োয়াব বলল, “এ কথা বলে তুমি খুব ভালো করলে। যদি তুমি কিছু না বলতে, এই সব লোকরা সকাল পর্য়ন্ত তাদের ভাইকে তাড়া করতে থাকত। ঈশ্বর যেমন আছেন এ কথা যেমন সত্য তেমনি এটাও সত্য।”
২৮ তখন য়োয়াব একটি শিঙা বাজাল এবং তার লোকরা ইস্রায়েলীয়দের পেছনে তাড়া করা বন্ধ করল। তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে আর লড়াই করার চেষ্টাও করল না।
২৯ অব্নের এবং তার অনুগামীরা সারারাত ধরে যর্দন উপত্যকায হেঁটে যর্দন নদী পার হল এবং পরদিন সারা দিন হেঁটে মহানযিমে উপস্থিত হল।
৩০ য়োয়াব অব্নেরকে তাড়া করা থেকে বিরত হল ও ফিরে গেল। য়োয়াব তার লোকদের জড়ো করল এবং জানতে পারল যে অসাহেল সহ দায়ূদের ১৯ জন আধিকারিকরা নিখোঁজ।
৩১ কিন্তু দায়ূদের আধিকারিকরা, অব্নেরের দল থেকে বিন্যামীনের পরিবারের ৩৬০ জনকে হত্যা করেছিল।
৩২ দায়ূদের আধিকারিকরা অসাহেলকে নিয়ে গিয়ে বৈত্‌লেহেমে তার পিতার কবরে কবর দিলো।য়োয়াব এবং তার সঙ্গীরা সারারাত ধরে হেঁটে চলল। যখন তারা হিব্রোণে পৌঁছালো তখন সকালের সূর্য় সবে উঠেছে।