ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

ইসাইয়া ৪১

১ প্রভু বলেন, “দূরবর্তী দেশগুলি শান্ত হও, আমার কাছে এসো। জাতিগুলি পুনরায় শক্তিমান হয়ে উঠুক। আমার কাছে এসে কথা বল। আমরা এক সঙ্গে বসে ঠিক করে নেব কে ঠিক কেই বা বেঠিক।
২ আমাকে এইসব প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: পূর্ব থেকে আসা লোকটিকে কে জাগিয়েছিল? তিনি যেখানেই যান, ন্যায় তাঁর সঙ্গে আছে। তিনি তাঁর তরবারি দিয়ে জাতিগুলিকে পরাস্ত করেন। তারা ধূলো বালিতে পরিণত হয়। তিনি তার ধনুকের সাহায্য রাজাদের পরাজিত করেন। তারা বাতাসে উড়ে যাওয়া খড়কুটোর মতো পালিয়ে যায়।
৩ তিনি সেনাদের ধাওযা করেন, কিন্তু কখনও আঘাত পান না। যেখানে তিনি কখনও যাননি সে সব স্থানে যাবেন।
৪ এসব ঘটনার কারণ কে? কে এই সব করেছেন। কে প্রথম থেকেই সব মানুষকে ডাক দিয়েছিল? আমি প্রভু, এসব করেছিলাম। আমি প্রভু, আমিই প্রথম, আমিই শেষ।
৫ তোমরা, দূরবর্তী স্থানের লোকরা তাকাও। ভীত হও! তোমরা পৃথিবীর দূরবর্তী স্থানের লোকেরা ভয়ে কাঁপো। এখানে এসে আমার কথা শোন।” এবং তারা এসেছিল।
৬ “শ্রমিকেরা একে অন্যকে সাহায্য করে। শক্তিশালী হতে একে অন্যকে উত্সাহ দেয়।
৭ এক জন কর্মী মূর্ত্তি বানানোর জন্য কাঠ কাটে। সে স্বর্ণকারদের উত্সাহিত করে। অন্য শ্রমিক হাতুড়ি দিয়ে ধাতুকে মসৃণ করে তোলে। তারপর সেই কর্মীটি অন্য কর্মীকে ভারী ধাতব খোপের মধ্যে ধাতুটি ঢেলে তাকে পিটিযে বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরি করার জন্য উত্সাহিত করে। ঐ শেষ শ্রমিকটি ধাতব কাজের সম্বন্ধে বলে: ‘এইটি ভালো। এটি খুলে আসবে না।’ তারপর সে মূর্ত্তিটিকে পেরেক দিয়ে কোন একটি ভিত্তির ওপর এমন ভাবে বসিযে দেয় যাতে সেটা নড়তে বা পড়তে না পারে!”
৮ প্রভু বলেন: “ইস্রায়েল, তুমি আমার দাস। যাকোব, তোমাকে আমি বেছে নিয়েছি। তুমি অব্রাহামের পরিবার থেকে এসেছ যে আমাকে ভালবাসত।
৯ তুমি বহু দূরের দেশে ছিলে, কিন্তু আমি তোমার কাছে পৌঁছে যাই। আমি তোমাকে দূরস্থান থেকে ডেকেছিলাম। আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি আমার সেবক। আমি তোমাকে বেছে নিয়েছি এবং আমি তোমাকে বাতিল করিনি।
১০ চিন্তিত হযো না, আমি তোমার সঙ্গে আছি। ভীত হবে না, আমি তোমার ঈশ্বর। আমি তোমাকে শক্তিশালী করব। তোমাকে সাহায্য করব। তোমাকে আমার ভাল দক্ষিণ হস্ত দিয়ে সমর্থন দেব।
১১ দেখো, কিছু লোক তোমার ওপর রুদ্ধ। কিন্তু তারা লজ্জিত হবে। যারা তোমার সঙ্গে তর্ক করে তারা হেরে যাবে এবং অদৃশ্য হবে।
১২ যারা তোমার বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের তুমি খুঁজবে কিন্তু দেখতে পাবে না। যে সব লোক তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল তারা সকলেই পুরোপুরি ভাবে অদৃশ্য হয়ে যাবে।
১৩ আমি প্রভু তোমার ঈশ্বর, তোমার ডান হাত ধরে আমি আছি। এবং আমি তোমাকে বলি: ভীত হবে না! আমি তোমাকে সাহায্য করব।
১৪ মূল্যবান যিহূদা ভীত হবে না! আমার প্রিয ইস্রায়েলের লোকরা ভয়চকিত হবে না! আমি সত্যিই তোমাদের সাহায্য করব।” প্রভু নিজেই ঐসব বলেন। ইস্রায়েলের পবিত্রতম (ঈশ্বর) যিনি রক্ষাকর্তা তিনিই এই সব বলেছেন:
১৫ “দেখ, আমি তোমাকে একটা নতুন শস্য মাড়া য়ন্ত্রের মতো বানিয়েছি। সেই য়ন্ত্রের অনেকগুলো ধারালো ছুরি আছে। কৃষকরা এই সব ব্যবহার করে খোসা ভাঙার কাজে, যাতে তারা শস্য থেকে আলাদা হতে পারে। তুমি পর্বতগুলিকে ঐ শস্য মাড়ার মতো ভেঙে ফেলবে।
১৬ তুমি তাদের বাতাসে ছুঁড়ে ফেলবে। বাতাস তাদের বয়ে নিয়ে দূরে চলে যাবে এবং বিক্ষিপ্ত করবে। তখন তুমি খুশী হবে এবং প্রভুর মধ্যে স্থিত হয়ে আনন্দ করবে। ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বরের জন্য তুমি গর্বিত হবে।”
১৭ “দরিদ্র ও অভাবী লোকরা জলের জন্য খোঁজ করবে। কিন্তু তারা খুঁজে পাবে না। তারা তৃষ্ণার্ত, তাদের জিহবা শুষ্ক। আমি, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাদের প্রার্থনার জবাব দেব। আমি তাদের ত্যাগ করব না, মরতে দেব না।
১৮ আমি শুকনো পাহাড়ের ওপর দিয়ে নদীকে প্রবাহিত করাব। উপত্যকায় উপত্যকায় বইয়ে দেব জলভরা নদী। মরুকে করে তুলব জলে ভরা হ্রদ। জলপ্রবাহ বয়ে যাবে শুকনো ভূমিতে।
১৯ মরুভূমিতে গাছ জন্মাবে। সেখানে থাকবে এরস, বাবলা, জলপাই, তাশূর, দেবদারু ও পাইন গাছ।
২০ লোকরা এই জিনিসগুলি দেখবে। এবং তারা জানতে পারবে প্রভুই এই কর্ম করেছেন। মানুষ এই সব দেখতে পাবে, তারা বুঝতে শুরু করবে যে ইস্রায়েলের পবিত্রতম (ঈশ্বর) এগুলি সৃষ্টি করেছেন।”
২১ যাকোবের রাজা প্রভু বলেন, “এস। আমাকে তোমার যুক্তি বল। আমাকে তোমরা প্রমাণ দেখাও এবং আমরা ঠিক করে দেব কোনটা সঠিক।
২২ তোমাদের মূর্ত্তিদের এসে আমাদের বলা উচিত্‌ কি ঘটেছে।“শুরুতে কি কি ঘটেছিল? ভবিষ্যতে কি ঘটবে? বলুক আমাদের! আমরা তাদের কাছ থেকে শুনব। তখন আমরা জানতে পারব পরে কি ঘটবে।
২৩ পরে কি কি ঘটবে তা তোমরা আমাদের জানাও। তারপর আমরা তোমাদের সত্যিকারের দেবতা বলে বিশ্বাস করব। কিছু কর! ভাল না হয় মন্দ কিছু একটা করে দেখাও! তখন আমরা মেনে নেব তুমি জীবন্ত এবং তোমাকেই আমরা মেনে চলব।
২৪ “দেখো। তোমরা মূর্ত্তিরা আসলে কিছুই নও। তোমরা কিছুই করতে পারবে না! যে কোন অকর্মণ্য লোকই তোমার পূজা করতে চাইবে।”
২৫ “আমি উত্তর দিকে একটি লোককে জাগালাম। সে পূর্বদিক থেকে, যেখানে সূর্য়োদয হয়, সেখান থেকে আসছে। সে আমার নাম জপ করে। যে মানুষ ঘট তৈরী করে সে ভিজে মাটির ওপর দিয়ে হাঁটে। ঠিক একই রকম ভাবে এই বিশেষ লোকটি রাজাদের পদদলিত করে।”
২৬ কে আমাদের এই সব ঘটার আগেই বলেছিল? তাকেই আমাদের ঈশ্বর বলা উচিত্‌। তোমাদের মধ্যে কোন মূর্ত্তি কি এইসব বলেছিল? না! সেই সব মূর্ত্তিদের কেউই কিছু বলতে পারে নি। সেই সব মূর্ত্তিরা কোন কথাই বলতে পারে নি। তারা তোমাদের কোন কথা শুনতেও পায় নি।
২৭ আমি প্রভু, সর্বপ্রথম সিয়োনকে এই সব ঘটনার কথা বলি। আমি জেরুশালেমে এই বার্তা নিয়ে এক জন বার্তাবাহক পাঠিয়েছিলাম: “দেখ তোমাদের লোকরা ফিরে আসছে।”
২৮ আমি ঐসব মূর্ত্তিদের দেখেছিলাম। তারা কেউই কোন কিছু বলার মত যথেষ্ট জ্ঞানী নয়। আমি তাদের প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু তারা কোন উত্তর দিতে পারেনি।
২৯ এই সব দেবতারা আসলে কিছু নয়। তারা কিছুই করতে পারে না। সেই সব মূর্ত্তিগুলি আসলে একেবারে মূল্যহীন।