ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

ইসাইয়া ৪২

১ “আমি আমার দাসের দিকে তাকাই! আমি তাকে সমর্থন করি। সে হচ্ছে সেই জন, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম। আমি তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট। তার ওপর আমি আমার আত্মা রেখেছি। সে ন্যায়সঙ্গত ভাবে জাতিসমূহের বিচার করবে।
২ পথে-ঘাটে সে চিত্কার করবে না। সে তীব্র চিত্কার করবে না অথবা তার গলা লোকদের মধ্যে শোনা যাবে এমন করবে না।
৩ সে ভদ্র হবে। জলাশযের ধারে গজিযে ওঠা আগাছা সে কখনও ভাঙবে না। দুর্বল আগুনকেও সে কখনও নিভিযে দেবে না। সে ন্যায় ভাবে বিচার করবে এবং সত্যকে বের করবে।
৪ পৃথিবীতে ন্যায় বিচার না আনা পর্য়ন্ত সে দুর্বল হবে না, অথবা নিষ্পেষিত হবে না। দূরবর্তী স্থানের লোকরা তার শিক্ষামালায় আস্থাবান হবে।”
৫ প্রভু প্রকৃত ঈশ্বর, তিনিই এই সব বলেছেন। প্রভু আকাশ বানিয়েছেন। তিনি আকাশকে সারা বিশ্বের ওপর ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি পৃথিবীর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তিনি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। পৃথিবীর ওপর যারা হেঁটে বেড়ায তাদের প্রত্যেক লোককে তিনি একটি আত্মা দেন।
৬ “আমি তোমাদের প্রভু, সঠিক কাজ করতে তোমাদের ডেকেছিলাম। আমি তোমাদের হাত ধরেছি। আমি তোমাদের রক্ষা করেছি এবং তোমাদের মাধ্যমে আমি লোকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। তুমি সমস্ত জাতিগুলির জন্য একটি আলোস্বরূপ হবে।
৭ তুমি অন্ধ লোকের চোখ খুলে দেবে এবং তারা সব কিছু দেখতে পাবে। বহুলোক কয়েদখানায বন্দী; তুমি তাদের মুক্ত করে দেবে। বহুলোক বাস করে অন্ধকারে, জেলের থেকে বাইরে আসবার জন্য তাদের তুমি নেতৃত্ব দেবে।
৮ “আমিই প্রভু। আমার নাম য়িহোবা। আমার মহিমা আমি অপরকে দেব না। যে মহিমা আমার পাওয়া উচিত্‌ সেই প্রশংসা মূর্ত্তিদের আমি নিতে দেব না।
৯ শুরুতেই আমি বলেছিলাম, কিছু একটা ঘটবে। এবং ঐসব জিনিস ঘটেছিল। এবং এখন অন্য কিছু ঘটার আগেই, তোমাদের আমি ভবিষ্যতে কি ঘটবে সে সম্বন্ধে জানাব।”
১০ প্রভুর উদ্দেশ্যে গাও নতুন গান। তোমরা দূর দেশের লোকরা, তোমরা দূর দেশের নাবিকরা, তোমরা সমুদ্রের প্রাণীরা, তোমরা দূরবর্তী জায়গার লোকরা প্রভুর প্রশংসা কর!
১১ মরুভূমি ও শহর, পূর্ব ইস্রায়েলের কেদরের গ্রামগুলি প্রভুর প্রশংসা কর। শেলাবাসীরা আনন্দগীত গাও! পর্বতশৃঙ্গ থেকে তোমরা গেযে ওঠ।
১২ তারা প্রভুকে মহিমাম্বিত করুক। দূর দেশের লোকরা প্রভুর প্রশংসা করুক।
১৩ প্রভু বলবান সৈন্যের মত চলে যাবেন! তিনি হবেন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত মানুষের মত। তিনি প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে উঠবেন। তিনি কাঁদবেন, উচ্চস্বরে চিত্কার করবেন এবং তার শএুদের পরাজিত করবেন।
১৪ “দীর্ঘদিন ধরে আমি কিছুই বলিনি। আমি নিজেকে সংযত করে রেখেছিলাম, বলিনি কোন কিছুই। কিন্তু এখন আমি প্রসব করতে যাচ্ছে এমন এক মহিলার মতো চিত্কার করে কাঁদব। আমি জোরে জোরে সশব্দে প্রশ্বাস নেব।
১৫ আমি পাহাড়-পর্বত ধ্বংস করব। আমি সেখানে জন্মানো সমস্ত গাছপালাকে শুকিয়ে দেব। আমি নদীকে পরিণত করব শুকনো জমিতে। আমি জলাশযকে শুকিয়ে দেব।
১৬ তারপর আমি অন্ধদের নেতৃত্ব দেব এক অজানা পথে যে সব স্থানে তারা কখনও যায়নি। অন্ধদের নিয়ে যাব সেই সব স্থানে। তাদের জন্য অন্ধকারকে আলোময় করে দেব। রুক্ষ জমিকে মসৃণ করে তুলব। আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা সবই করব এবং আমার লোকদের ছেড়ে যাব না!
১৭ কিন্তু কেউ কেউ আমাকে মেনে চলা বন্ধ করেছে। ঐসব লোকদের সোনায বাঁধানো মূর্ত্তি আছে। তারা ঐসব মূর্ত্তিদের বলে, ‘তোমরাই আমাদের দেবতা।’ যে লোকরা তাদের মূর্ত্তিগুলিতে আস্থা রাখে, তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং লজ্জা পাবে।
১৮ “তোমরা, বধির লোকরা আমার কথা তোমাদের শোনা উচিত্‌। অন্ধ লোকরা, তোমাদের আমাকে দেখা এবং আমার দিকে তাকানো উচিত্‌।”
১৯ সারা পৃথিবীতে আমার সেবক (ইস্রায়েলের লোকজন) সব চেয়ে অন্ধ। যে বার্তাবাহককে আমি পৃথিবীতে পাঠিয়েছি সেই সবচেয়ে বধির। যে লোকটির সঙ্গে আমি বন্দোবস্ত করেছিলাম, প্রভুর দাস সে-ই সবচেয়ে বেশী অন্ধ।
২০ আমার দাস অনেক মহান জিনিষ দেখেছে, কিন্তু সে সেসবের প্রতি মনোযোগ দেয় না। সে কানে শুনতে পায় কিন্তু সে মানতে চায় না।”
২১ প্রভু চান তাঁর সেবকরা ভাল হোক। প্রভু চান তাঁর আশ্চর্য়্য়জনক শিক্ষামালাকে তারা শ্রদ্ধা করুক।
২২ কিন্তু লোকগুলিকে দেখো। অন্য লোকরা তাদের পরাজিত করেছে। এবং তাদের জিনিস চুরি করে নিয়েছে। প্রতিটি যুবক ভীত। তারা জেলে বন্দী। লোকরা তাদের সব টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। তাদের রক্ষা করার কেউ নেই। অন্যরা তাদের টাকা নিয়ে নিয়েছে। এই টাকা ফিরিয়ে দিয়ে যাও। একথা বলার মতোও কেউ নেই।”
২৩ তোমাদের কেউ কি ঈশ্বরের বাক্য শুনেছিলে? না! কিন্তু তোমাদের উচিত্‌ কাছ থেকে তাঁর কথা শোনা, এবং যা ঘটেছে সে সম্পর্কে মনোযোগ দেওয়া।
২৪ যাকোব ও ইস্রায়েল থেকে লোকদের ধনসম্পদ নিতে কে দিয়েছিল? প্রভুই তাদের এসব কাজ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছিলাম। তাই প্রভু আমাদের ধনসম্পদ নিয়ে নিতে লোকদের অনুমতি দিয়েছিলেন। ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর বিধির প্রতি মনোযোগ দেয় নি। প্রভু যে ভাবে চেয়ে ছিলেন সে ভাবে ইস্রায়েলের লোকরা জীবনযাপন করেনি।
২৫ তাই প্রভু তাদের ওপর রুদ্ধ হন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী যুদ্ধ ঘটিযেছিলেন। এমন হয়েছিল ঠিক যেন ইস্রায়েলের লোকরা আগুন দিয়ে ঘেরা ছিল। কিন্তু তারা কি ঘটছিল তা জানত না। ঘটনাটা ছিল তাদের পুড়ে যাওয়ার মতোই। কিন্তু যা ঘটছিল তারা তা বোঝার চেষ্টা করেনি।